শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
৩ পৌষ ১৪৩২

ধর্মীয়গুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন

ছবি: সংগৃহীত
unb
প্রকাশিত
unb
প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১৯:১৩

ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে তার মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে। ল্যাটিন আমেরিকান ইতিহাসে তিনিই ছিলেন প্রথম কোনো পোপ। এরআগে মহাদেশটি থেকে কোনো পোপ নির্বাচিত হননি। যাপিত জীবনে বিনয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন তিনি। দরিদ্রদের নিয়ে তার উদ্বেগ ও পুঁজিবাদের সমালোচনায় মুখর ছিলেন তিনি। এছাড়া বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও তাকে সরব থাকতে দেখা গেছে।

কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল তার মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর রোমের গির্জাগুলোতে ঘণ্টাধ্বনি বাজানো হয়েছে। কেভিন ফেরেল বলেন, ‘আজ (রবিবার) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে স্বর্গে গমন করেছেন রোমের বিশপ। প্রভু ও তার গির্জার জন্য নিজের পুরো জীবনকে তিনি উৎসর্গ করেছিলেন।’

শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেওয়ায় অসুস্থ হয়ে গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস রোগে আক্রান্ত ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তরুণ বয়সে তার ফুসফুসের একটি অংশ কেটে ফেলতে হয়েছিল।

১৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৩৮ দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় গুরুকে। তার গেল এক যুগের পোপজীবনে এটা ছিল সবচেয়ে বেশি সময়ে হাসপাতালে থাকা।

কিন্তু মৃত্যুর আগের দিন রবিবার ইস্টার সানডেতে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার লোককে আশীর্বাদ জানাতে তিনি সেন্ট পিটার্স চত্বরে আসেন। পোপমোবাইলে—পোপের জন্য বানানো বিশেষ গাড়ি—চড়ে হাজির হলে লোকজন তাকে দেখে উল্লাশ প্রকাশ করেন।

২০১৩ সালের ১৩ মার্চের এক বৃষ্টিভেজা রাতে দুই হাজার বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানে এসে নতুন বাতাসে শ্বাস নেন আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও। এমন এক সময়ে তিনি পোপ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন প্রতিষ্ঠানটির প্রভাব ছিল অনেকটা কমতির দিকে।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আকস্মিক পদত্যাগ করেন পোপ এ্যামিরেটাস ষোড়শ বেনেডিক্ট। ১৪১৫ সালে ত্রয়োদশ গ্রেগরির পর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনি মৃত্যুর আগেই পোপের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন। এরপর নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছিলেন ফ্রান্সিস। কিন্তু তার নেওয়া কিছু প্রগতিশীল পদক্ষেপে রক্ষণশীলদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে।

তাকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় ২০১৮ সালে। তখন চিলিতে ধর্মযাজকের যৌন হয়রানির ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে তিনি ঘটনাটি জোড়াতালি দিয়ে সুরাহা করার চেষ্টা করেন। এতে যারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, তারা ব্যথিত হন এবং পোপের সমালোচনা করেন।

পোপ ফ্রান্সিস ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এ সময় তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করে সবার পক্ষ থেকে তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।


ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, ‘নতুন আইন মূলত যারা ঘৃণা, বিভাজন ও উগ্রবাদ ছড়ায়—তাদের লক্ষ্য করেই আনা হবে।’ তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন ব্যক্তিদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যারা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে। পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থায় ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সহিংসতা উসকে দেওয়া ধর্মীয় বক্তা ও নেতাদের জন্য শাস্তির বিধান ছাড়াও ‘অ্যাগ্রাভেটেড হেট স্পিচ’ নামে অপরাধের একটি নতুন সংজ্ঞা সংযোজন করা হবে। অনলাইনে হুমকি ও হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তি নির্ধারণে বিদ্বেষ ছড়ানোনে গুরুতর উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যালবানিজ বলেন, ‘প্রত্যেক ইহুদি অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত বোধ করার অধিকার রয়েছে।’

এই হামলার পর দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনিতে সাতজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে পুলিশ বলছে, বন্ডাই হামলার সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

এদিকে সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছু সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহুদি কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, কিছু প্রস্তাব ইসরায়েলপন্থি লবির পুরোনো দাবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সহিংস উগ্রবাদ দমনের চেয়ে মতপ্রকাশ সীমিত করতে পারে। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ম্যাক্স কাইজার সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মতাদর্শিক নজরদারি চালানো হলে তা ইহুদিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বদলে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে সরকার আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু ভুল স্বীকার করা নয়, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাও।’


বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ইরাকের ঐতিহাসিক দজলা নদী

ইরাকের প্রাচীন শহর মসুলে দজলা নদীর তীরবর্তী এলাকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পানির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে আসায় পুরোপুরি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে ইরাকের ঐতিহাসিক টাইগ্রিস বা দজলা নদী। একসময় যে নদী মেসোপটেমিয়ার সভ্যতাকে প্রাণ দিয়েছিল, সেই টাইগ্রিস এখন দূষণ ও পানিশূন্যতার দ্বিমুখী সংকটে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, জরুরি ব্যবস্থা না নিলে টাইগ্রিসের প্রবাহ একসময় পুরোপুরি থেমে যেতে পারে।

দক্ষিণ ইরাকের আমারা শহরের বাসিন্দা মানদিয়ান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতা শেখ নিধাম ক্রেইদি আল-সাবাহি বলেন, পানি নেই তো জীবনও নেই।। তার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রবাহমান নদীর পানি ছাড়া অন্য কোন উৎসের পানি পান করা নিষিদ্ধ। তিনি বিশ্বাস করেন, পানি যতদিন প্রবাহমান থাকে, ততদিন তা পবিত্র। কিন্তু বাস্তবতা হলো, টাইগ্রিস হয়তো আর বেশিদিন প্রবাহমান থাকবে না।

টাইগ্রিস (দজলা) ও ইউফ্রেটিস (ফোরাত)- এই দুই নদীই প্রাচীন ‘ফার্টাইল ক্রিসেন্ট’-এর ভিত্তি, যা বর্তমানে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, জর্ডান, মিশর ও তুরস্কের অংশবিশেষ। টাইগ্রিসের উৎপত্তি তুরস্কে, সেখান থেকে এটি ইরাকের প্রধান দুই শহর মসুল ও বাগদাদ অতিক্রম করে ইউফ্রেটিসের সঙ্গে মিলিত হয়ে শাত্ত আল-আরব নামে উপসাগরে গিয়ে পড়ে। এই নদীর অববাহিকায় বসবাস করে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ, যাদের সুপেয় পানি, সেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পকারখানা এই নদীর ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু গত তিন দশকে টাইগ্রিসের পানিপ্রবাহ ভয়াবহভাবে কমেছে। তুরস্ক টাইগ্রিস নদীর উজানে বড় বড় বাঁধ নির্মাণ করায় বাগদাদে পৌঁছানো পানির পরিমাণ প্রায় ৩৩ শতাংশ কমে গেছে। একই সঙ্গে ইরানও যৌথ নদীগুলোর পানি বাঁকিয়ে নেওয়ায় টাইগ্রিসে পানির প্রবাহ আরও হ্রাস পেয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইরাকের ভেতরে পানির অতিরিক্ত ও অব্যবস্থাপনা।

ইরাকের কৃষিখাত একাই অন্তত ৮৫ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করে। জলবায়ু সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। গত কয়েক দশকে ইরাকে বৃষ্টিপাত কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। দেশটি বর্তমানে প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে পানির চাহিদা সরবরাহকে ছাড়িয়ে যাবে।

জানা গেছে, চলতি বছরের গ্রীষ্মে টাইগ্রিসের পানি এতটাই কমে যায় যে অনেক জায়গায় মানুষ হেঁটে নদী পার হতে পেরেছে। নদীর পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় দূষণের মাত্রাও বেড়ে গেছে। নদীর পানিতে শহরের অপরিশোধিত পয়ঃবর্জ্য, কৃষিজ কীটনাশক ও সার, তেলশিল্পের বর্জ্য ও চিকিৎসা বর্জ্য মিশছে।

২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বাগদাদের বিভিন্ন স্থানে টাইগ্রিসের পানির মান ‘খুবই খারাপ’। ২০১৮ সালে দূষিত পানি পান করে দক্ষিণের বাসরা শহরে অন্তত ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হুমাত দিজলা’র প্রতিষ্ঠাতা সালমান খাইরাল্লা বলেন, নদীর পানির গুণগত মান সম্পূর্ণভাবে এর পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। পানি যত কমবে, দূষণ তত বাড়বে।

এই সংকট মোকাবিলায় ইরাক সরকার তুরস্কের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছে। গত নভেম্বরে বাগদাদ ও আঙ্কারা একটি সমঝোতা কাঠামোতে সই করে, যার আওতায় নদীদূষণ রোধ, আধুনিক সেচব্যবস্থা চালু ও পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। তেল দিয়ে পানি অবকাঠামোর বিনিময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে এটি ‘অয়েল-ফর-ওয়াটার’ চুক্তি হিসেবেও পরিচিত। তবে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, চুক্তিটি অস্পষ্ট, আইনি বাধ্যবাধকতাহীন এবং ইরাকের পানিসম্পদের ওপর তুরস্কের প্রভাব বাড়াতে পারে।

পানির অভাবে মানিদিয়ান সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ ইরাকে বসবাস করা এই সম্প্রদায়ের বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বর্তমানে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখের মধ্যে, যার মধ্যে ইরাকে অবশিষ্ট আছে ১০ হাজারেরও কম। অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বা কুর্দিস্তান অঞ্চলে সরে গেছেন।

টাইগ্রিস যদি সত্যিই শুকিয়ে যায়, তাহলে তা শুধু একটি নদীর মৃত্যু নয়, ইরাকের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কোটি মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেমে আসবে ভয়াবহ বিপর্যয়।


ভেনেজুয়েলা ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিকোলাস মাদুরো
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে একটি নৌযানে চালানো সর্বশেষ হামলায় ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড (সাউথকম) জানায়, তাদের চালানো হামলায় ‘৪ জন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন। তবে ধ্বংস করা নৌযানটি মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না, এমন কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ‘মার্কিন আইনপ্রণেতারা ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসন সীমিত করতে আনা প্রস্তাবগুলো খারিজ করার পরই এই ‘প্রাণঘাতী’ হামলার ঘোষণা আসে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড সাউথকম বলেছে, ‘নৌযানটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের জ্ঞাত মাদক চোরাচালানের রুট ধরে যাচ্ছিল আর এটি মাদক পাচার করছিল।’

এই পোস্টের সঙ্গে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেটিতে দেখা গেছে, মার্কিন বাহিনীর হামলায় একটি স্পিডবোট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এ হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরে ২৬টি নৌযানের হামলা চালানোর কথা জানালো ওয়াশিংটন। তাদের এসব হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

আইনি বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযানকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিলেও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ভেনেজুয়েলাভিত্তিক মাদকচক্রসহ কার্টেলগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ ঠেকাতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত বুধবার রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ ২১৩-২১১ ভোটে এমন একটি প্রস্তাব নাকচ করে দেয়, যেখানে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে বা ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল।

আরেকটি প্রস্তাবও ২১৬-২১০ ভোটে বাতিল হয়, যেখানে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ‘পশ্চিম গোলার্ধে প্রেসিডেন্ট ঘোষিত যেকোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের’ বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছিল।

লাতিন আমেরিকার ক্যারিবীয় অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক সমাবেশ ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখানে হাজারো সেনা, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরীবহর, ডজনখানে যুদ্ধজাহাজ ও এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান এবং একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে উৎখাতের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বন্দরে যাতায়াতকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর নৌ-অবরোধের নির্দেশ দেন। ভেনেজুয়েলা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে ‘জঘন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করে এবং এটি দেশের সম্পদ ‘লুটে নেওয়ার’ চেষ্টা বলে অভিযোগ করে। গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে ‘স্কিপার’ নামের একটি তেলবাহী জাহাজে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। পরে জাহাজটিতে বহনকারী তেল খালাস করার জন্য সেটিকে টেক্সাসে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, নৌ-অবরোধ ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলার নৌবাহিনী পেট্রোলিয়ামবাহী জাহাজগুলোকে পাহারা দিতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবার সকালে দেশটির পূর্ব উপকূল থেকে নৌবাহিনীর পাহারায় কয়েকটি জাহাজ যাত্রা করে বলে গণমাধ্যমে তিনটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে।

ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় যুদ্ধের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে, এমন প্রেক্ষাপটে লাতিন আমেরিকার নেতারা এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলায় সহিংসতা ঠেকাতে জাতিসংঘকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। ‘এখনো তারা সক্রিয় নয়। রক্তপাত ঠেকাতে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে,’ বলেন তিনি। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলায় বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন শেইনবাউম।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, ‘লাতিন আমেরিকা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোভাব ও হুমকি আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’ তিনি জানান, চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানান।’

‘আমি ট্রাম্পকে বলেছি, শব্দের শক্তি বন্দুকের শক্তিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। আপনি যদি ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সঠিকভাবে কথা বলতে চান, আমরা সহায়তা করতে পারি। তবে আপনাকে কথা বলতে আগ্রহী ও ধৈর্যশীল হতে হবে,’ বলেন লুলা। ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট মাদুরো জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-অবরোধের নিন্দা জানান বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলার পাশে থাকার ঘোষণা চীনের

ভেনেজুয়েলার বন্দরে যাতায়াতকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর প্রসিডেন্ট ট্রাম্পের অবরোধ আরোপের পর দেশটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে চীন। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ‘একতরফা চাপ ও হয়রানি’ আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করেছে চীন। তবে চীন কীভাবে ভেনেজুয়েলাকে সহায়তা করবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। এমনকি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টকে চীন আশ্রয়ের প্রস্তাব দেবে কি না তাও বলেনি।

গত বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক ফোনালাপে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিলকে বলেন, চীন সব ধরনের একতরফা চাপ ও হয়রানির বিরোধিতা করে এবং দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেয়।

ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও প্রস্থান বন্ধে পূর্ণ নৌ-অবরোধ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই অঞ্চলে মার্কিন সেনা ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।

চীন ভেনেজুয়েলার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা। বিশ্লেষকদের হিসাবে, চীনের মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। ডিসেম্বর মাসে দেশটি প্রতিদিন গড়ে ভেনেজুয়েলা থেকে ৬ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল আমদানি করেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ওয়াং ই যুক্তরাষ্ট্র বা প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি। ভেনেজুয়েলাকে কী ধরনের বা কতটা সহায়তা দেওয়া হতে পারে, সে বিষয়েও তিনি কিছু বলেননি, যদিও এর আগে বেইজিং কারাকাসের সঙ্গে ‘অটুট বন্ধুত্বের’ কথা বলেছিল।


‘ভারতকে এমন শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যা তারা কখনো ভুলবে না’

শাহবাজ শরিফ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তান-ভারত সংঘাতে মোদি সরকারকে এমন একটি শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যা তারা কখনো ভুলবে না।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) খাইবার পাখতুনখোয়ার হারিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ল্যাপটপ স্কিম–২০২৫ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘যুদ্ধে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী জাতির দোয়া ও সমর্থনে বিজয় অর্জন করেছে। তিনি দাবি করেন, ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না।’

গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ভারত অভিযোগ করে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক হত্যার ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত ছিল। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

প্রায় ৮৭ ঘণ্টা স্থায়ী ওই সংঘাতে পাকিস্তান ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ও বহু ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় দুই দেশ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাইবার পাখতুনখোয়ার জনগণকে সাহসী ও আত্মত্যাগী উল্লেখ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা দেশের শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।’

তিনি জানান, ল্যাপটপ স্কিমটি পুরো প্রদেশে সম্প্রসারণ করা হবে এবং দেশের উন্নয়নে যুবসমাজের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থনীতি প্রসঙ্গে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। অর্থনীতি এখন স্থিতিশীলতার পথে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চারটি প্রদেশ একসঙ্গে উন্নত হলে দেশও উন্নত হবে।’


নাইজেরিয়ায় খনিতে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ১২, অপহৃত ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নাইজেরিয়ার প্লাটো রাজ্যের আতোসো গ্রামে একটি খনি স্থাপনায় বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটা এই নৃশংস ঘটনায় হামলাকারীরা তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত আরও পাঁচজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় যুব সংগঠন বেরোম ইয়ুথ মোল্ডার্স-অ্যাসোসিয়েশনের (বিওয়াইএম) প্রধান ডালিওপ সলোমন মাওয়ান্তিরি জানান, মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে খনি শ্রমিকদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা হামলাকারীদের সশস্ত্র ‘ফুলানি মিলিশিয়া’ হিসেবে শনাক্ত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই অঞ্চলে দীর্ঘ দিন ধরে চলা জাতিগত ও ধর্মীয় দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় এই হামলা চালানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ার পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র আলফ্রেড আলাবো হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে খনি এলাকায় এমন আকস্মিক হামলা এবং প্রাণহানির ঘটনায় প্লাটো রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।


ইউরোপে আশ্রয় পাওয়া কঠিন হচ্ছে বাংলাদেশিদের জন্য, ইইউ পার্লামেন্টে কঠোর প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইনপ্রণেতারা অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ আরও সংকুচিত হয়ে আসছে। বুধবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনে অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপের লক্ষ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী আইনপ্রণেতাদের জোটের সমর্থনে পাস হওয়া এই প্রস্তাবের ফলে বাংলাদেশসহ নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য ইইউ ব্লকে আশ্রয়ের দাবি করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে।

অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর একটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেসব দেশকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে বিবেচনা করে, তাদের একটি তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও কোসোভো, কলম্বিয়া, মিসর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিশিয়ার নাম রয়েছে এই ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায়। ইইউর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশকে নিরাপদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার অর্থ হলো, ওই দেশের নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার প্রক্রিয়া এখন থেকে অনেক বেশি জটিল ও কঠোর হবে।

পাস হওয়া অপর প্রস্তাব অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীদের এখন থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো সম্ভব হবে। বিশেষ করে কেউ যদি ‘নিরাপদ’ তালিকাভুক্ত কোনো দেশের বংশোদ্ভূত হন, তবে তাকে তালিকার অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা হতে পারে। চরম ডানপন্থী আইনপ্রণেতা ফ্যাব্রিস লেগেরি এই পদক্ষেপকে ভিত্তিহীন আশ্রয়ের চাপ কমানোর জন্য জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, বামপন্থী আইনপ্রণেতা ড্যামিয়েন কারেমে একে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির জন্য ‘বড়দিনের উপহার’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এর ফলে মেলোনির আশ্রয়প্রার্থীদের আলবেনিয়ায় পাঠানোর যে পরিকল্পনা আইনি জটিলতায় আটকে ছিল, তা বাস্তবায়নের পথ সুগম হতে পারে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইইউর এই নতুন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো হলে আশ্রয়প্রার্থীরা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। তবে ইউরোপীয় কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে, অভিবাসীদের যে দেশেই পাঠানো হোক না কেন, সেই দেশকে অবশ্যই মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। উল্লেখ্য, গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, যার মধ্যে ৪ লাখ ৪০ হাজার জনকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।


মিয়ানমারে নির্বাচনের আগে শত শত মামলা, বিরোধীদের ওপর জান্তার চাপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে সমালোচকরা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার একটি সাজানো প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করছেন। জান্তা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল তুন তুন নাউং জানিয়েছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার অভিযোগে ১৪০টি মামলায় ২২৯ জনকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে আন্দোলনকর্মী, শিল্পী, এমনকি শিশু ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরাও রয়েছেন।

সামরিক শাসনাধীনে প্রণীত নতুন নির্বাচনী আইনে ভোট বর্জন বা নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার যেকোনো কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। নির্বাচনবিরোধী বক্তব্য, উসকানি বা প্রচারপত্র বিলি করলে ৩ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মান্দালয়ে নির্বাচন বর্জনের ডাক দেওয়া বিক্ষোভ থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ৪৯ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে জান্তা মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই নির্বাচন মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে বিদেশিদের সন্তুষ্টি তাদের কাছে গুরুত্বহীন। অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিকে (এনএলডি) আগেই বিলুপ্ত করায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না এবং সু চি বর্তমানে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে ২৮ ডিসেম্বরের পর আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি আরও দুই ধাপে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।


সন্ত্রাসবাদ: পাকিস্তানে ২০২৫ সালে ১০ বছরের রেকর্ডভাঙা মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তানে চলতি বছরে সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহতের সংখ্যা গত ১০ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৩ হাজার ৮২২ জন নিহত হয়েছেন, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ। দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাসবাদ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা সাউথ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টাল (এসএটিপি)-এর এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানের ইতিহাসে ২০১৪ সালে সন্ত্রাসবাদে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫১০ জন নিহত হয়েছিলেন। ওই বছরই পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে ভয়াবহ হামলায় ১৩৪ শিক্ষার্থীসহ ১৫০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৮৫। পরবর্তী বছরগুলোতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ২০২২ সাল থেকে নিহতের সংখ্যা আবারও বাড়তে শুরু করে এবং চার অঙ্কের ঘরে পৌঁছায়। এসএটিপির বিশ্লেষণ মতে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের হার ৭০ দশমিক ৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ায় পাকিস্তানপন্থী নিষিদ্ধ গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ব্যাপক সক্রিয় রয়েছে। ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক সিআরএসএস-এর তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসেই সহিংসতার হার আগের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। পাকিস্তান সরকার অভিযোগ করে আসছে যে আফগান তালেবান টিটিপিকে আশ্রয় ও রসদ যোগাচ্ছে, যদিও আফগানিস্তান সরকার বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।


সিরিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে তুলে নিলো যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের শাসনামলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গৃহযুদ্ধ ও জাতিগত দ্বন্দ্বে বিধ্বস্ত সিরিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম করা এবং দেশ পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই মার্কিন কংগ্রেস এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

দীর্ঘ ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হায়াত তাহরির আল শামস (এইচটিএস)-এর অভিযানের মুখে বাশার আল আসাদ পদত্যাগ করে সপরিবারে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন। এরপর দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন আহমেদ আল শারা। বাশারের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি ও বিদেশি বিনিয়োগসহ বহু কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর সৌদি আরব ও তুরস্কের সুপারিশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন। তবে নতুন সরকার নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার মার্কিন সিনেটে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়, যা ৭৭-২০ ভোটে পাস হয়। বিলটি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরও অনুমোদন পেয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে সিরিয়ার সাধারণ জনগণ দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কাটিয়ে দেশ পুনর্গঠনের প্রকৃত সুযোগ পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন সিনেটর জিয়ান্নে শাহীন। অন্যদিকে, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে একে সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।


ইউরোপীয়দের ধারণা অধিকাংশ অভিবাসীই ‘অবৈধ’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউরোপের সাতটি দেশে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে যে, সেখানকার অধিকাংশ নাগরিক ভুলবশত মনে করেন তাদের দেশে অবস্থানরত বেশিরভাগ অভিবাসীই ‘অবৈধ’ বা অনিয়মিত। বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ পরিচালিত এই জরিপে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, ডেনমার্ক ও পোল্যান্ডের নাগরিকদের মতামত নেওয়া হয়েছে। সরকারি হিসাবে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা মোট বিদেশিদের তুলনায় অনেক কম হলেও, জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ মনে করেন অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যাই বেশি।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ইউরোপীয়দের মধ্যে অভিবাসন বিরোধিতা তীব্র হয়েছে এবং অধিকাংশ মানুষ অভিবাসীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পক্ষে। প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা নতুন অভিবাসী আসা সম্পূর্ণ বন্ধ করা এবং বড় পরিসরে বহিষ্কার কার্যক্রমের পক্ষে মত দিয়েছেন। বিশেষ করে আইন অমান্যকারী, অনিয়মিত এবং বৈধ ভিসা ছাড়া অদক্ষ কর্মীদের বহিষ্কারের বিষয়ে জোরালো সমর্থন পাওয়া গেছে। তবে নিয়ম মেনে চলা আশ্রয়প্রার্থী, শিক্ষার্থী ও দক্ষ পেশাজীবীদের, বিশেষ করে চিকিৎসকদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন তারা।

অর্থনৈতিক কারণের চেয়েও জাতীয় মূল্যবোধ ও সমাজের সঙ্গে অভিবাসীদের মিশতে না পারার বিষয়টি ইউরোপীয়দের উদ্বেগের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ মানুষ অনিয়মিত অভিবাসনকে দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন। নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও ফ্রান্স ও জার্মানির অর্ধেকের বেশি নাগরিক মনে করেন নিয়মিত অভিবাসনের মাত্রাও অতিরিক্ত ছিল। জরিপ সংস্থাটি জানিয়েছে, ইউরোপীয়দের এই ক্ষোভ কেবল পরিসংখ্যানগত ভুল ধারণার ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং এটি তাদের পরিচয় ও জাতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত গভীর উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ।


২০২৫ সালে ৫ লাখ সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন, দাবি রাশিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেন প্রায় ৫ লাখ সেনা হারিয়েছে। বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বোর্ড মিটিংয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রিয়ে বেলৌসোভ এই তথ্য জানান। ওই বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত ছিলেন।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, বিপুল সংখ্যক সেনা হারানোর ফলে ইউক্রেনের পক্ষে সহসাই এই ক্ষতি পুষিয়ে বাহিনী পুনর্গঠন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাপক প্রাণহানির কারণে দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগ্রহ কমে গেছে এবং বাধ্যতামূলক নিয়োগ নিয়ে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।

সেনা সদস্যদের পাশাপাশি ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জামও হারিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। বেলৌসোভের তথ্যমতে, চলতি বছর ইউক্রেন ১ লাখ ৩ হাজারেরও বেশি সমরাস্ত্র ও সরঞ্জাম হারিয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া ৫ হাজার ৫০০টি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় এবং সেনাবাহিনীতে যোগদানের বয়সসীমা ২৭ থেকে কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়েছে। জোরপূর্বক সেনা নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ জনগণ ও কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে রাশিয়ার দেওয়া এই পরিসংখ্যানের বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।


ট্রাম্পের ভাষণে সাফল্যের ফিরিস্তি, কমছে জনসমর্থন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বছরের শেষ প্রান্তে এসে হোয়াইট হাউজ থেকে দেওয়া এক বিরল সন্ধ্যাকালীন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের প্রশাসনের সাফল্যের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দেওয়া এই ভাষণে তিনি দেশের অর্থনীতি ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিজের সাফল্যের দাবি করলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরাসরি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেছেন। তবে ট্রাম্প যখন নিজের সাফল্যের ঢোল পেটাচ্ছেন, তখন সাম্প্রতিক জরিপ বলছে অর্থনীতি সামলানো নিয়ে তার ওপর মার্কিনিদের আস্থা ক্রমশ কমছে।

বক্তব্যের শুরুতেই ট্রাম্প দাবি করেন, ১১ মাস আগে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশ এক বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল, যা এখন তিনি ঠিক করছেন। সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ এবং দ্রব্যমূল্য কমানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বাজারে জিনিসের দাম এখনো বেশি থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি এর দায় চাপান বাইডেনের ঘাড়ে। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন যে, খুব দ্রুততার সঙ্গেই তিনি দাম কমিয়ে আনছেন।

তবে ট্রাম্পের এই দাবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রের মিল পাওয়া যাচ্ছে না। রয়টার্স ও ইপসোস-এর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, মাত্র ৩৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান মনে করেন যে ট্রাম্প অর্থনীতি পরিচালনায় ভালো কাজ করছেন। মূলত ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কনীতির কারণে অর্থনীতিতে নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে এবং বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। আগামী নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে উদ্বেগ ডেমোক্র্যাটদের জন্য রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের পথ তৈরি করতে পারে।

এদিকে ট্রাম্পের এই ভাষণের তীব্র সমালোচনা করেছেন সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল ক্ষমতায় বসেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করবেন, কিন্তু বাস্তবে তিনি তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টো তার সময়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় হু হু করে বেড়েই চলেছে।


ভিক্ষাবৃত্তির দায়ে সৌদি থেকে ২৪ হাজার পাকিস্তানিকে ফেরত, মোট ফিরলেন ৫১ হাজার

আপডেটেড ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২১:৫২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে চলতি বছর (২০২৫) সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৫১ হাজার পাকিস্তানি নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরব থেকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে ২৪ হাজার জনকে। বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ওভারসিজ পাকিস্তানি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) মহাপরিচালক আগা রফিউল্লাহ এই তথ্য প্রকাশ করেছেন।

এফআইএ মহাপরিচালক জানান, সৌদি আরব ছাড়াও একই অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে ৬ হাজার এবং আজারবাইজান থেকে ২ হাজার ৫০০ পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বৈঠকে আরও জানানো হয়, ওমরাহ পালনের নাম করে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টার অভিযোগে অনেককে আটক করা হয়েছে। এসব ব্যক্তির কাছে ওমরাহ পালনের কথা বলা হলেও তল্লাশিতে ইউরোপ ভ্রমণের কাগজপত্র পাওয়া গেছে।

এছাড়া গত তিন মাসে ইরান সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পারাপারের সময় ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। এফআইএ প্রধানের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরে পাকিস্তান থেকে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ বিদেশ ভ্রমণ করেছেন এবং মানবপাচার ও অনিয়মের অভিযোগে এ সংক্রান্ত ২২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


banner close