পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। এছাড়াও দেশটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর থেকে পাঁচটি যুদ্ধবিমানও ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার (১৬ মাইল) দূরে অবস্থিত লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরে ড্রোনটি ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের অন্যান্য শহরে আরও দুটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী গুলি করে একটি ছোট ভারতীয় ড্রোন নামিয়েছে।
তবে ড্রোনটি সশস্ত্র ছিল কি না, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে এপি। ভারত থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
পাঞ্জাবের চকওয়াল জেলার পুলিশ প্রধান গুলাম মুহিউদ্দিন জানান, ওই এলাকার কৃষিজমিতে একটি ড্রোন আছড়ে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তবে ড্রোনটির ভারতের কিনা এ বিষয়ে কিছু জানায়নি তিনি। গুলাম মুহিউদ্দিন বলেন, কর্তৃপক্ষ একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ জব্দ করেছে এবং ড্রোনটির উৎস ও উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
এদিকে, এবার এ হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তান। এ হামলায় নিহতদের প্রতিশোধ নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে কোথায় ও কীভাবে হামলা চালানো হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি।
এছাড়া অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর সীমান্তের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতভর হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।
এদিকে চলমান উত্তেজনার মধ্যে কাশ্মীর সীমান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ভারত। ইউরি ও পুঞ্চের মতো সীমান্ত শহরের কিছু মানুষ স্বেচ্ছায়ই নিজেদের ঘর ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হলে, হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজা থেকে সব ধরনের আক্রমণাত্মক অভিযান এক দশক পর্যন্ত বন্ধ রাখতে এবং তাদের অস্ত্র মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে প্রস্তুত বলে মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে। আলোচনার সঙ্গে পরিচিত এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
আলোচনার সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, গত সপ্তাহে কায়রোতে মিসরীয়, কাতারি এবং তুর্কি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে এই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবটিকে তিনি হামাসের পক্ষ থেকে একটি সারগর্ভ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যার লক্ষ্য হলো—যুদ্ধবিরতি আলোচনার পরবর্তী ধাপে গতি আনা।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রস্তাবটি পরিষ্কার। এর মাধ্যমে হামাস এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে কোনো অস্ত্র ছোড়া হবে না, এবং তারা অস্ত্র মাটির নিচে পুঁতে ফেলার মাধ্যমে তা করবে। তারা গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে সাত থেকে দশ বছরের জন্য একটি হুদনা (ইসলামিক ঐতিহ্যে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে, এবং হামাস এই অস্ত্র ব্যবহার করবে না।’
ওই কর্মকর্তার মতে, মধ্যস্থতাকারী রাষ্ট্রগুলো এই হুদনার গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে এবং এর সম্মতি নিশ্চিত করবে। তিনি জানান, অস্ত্রগুলো গোপন করা হবে এবং মধ্যস্থতাকারীরা সরাসরি হামাসের প্রতিশ্রুতিগুলো তত্ত্বাবধান করবেন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে গাজা নিজেই নিজের কাজে ব্যস্ত থাকবে।’ তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধ, বাস্তুচ্যুতি এবং অবরোধের পর পুনর্গঠন এবং অভ্যন্তরীণ শাসনের দিকে ইঙ্গিত করেন।
হামাস এখন পর্যন্ত একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্বের কর্তৃত্ব ছাড়া তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে অস্বীকার করেছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই আন্দোলন বারবার বলেছে যে, ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে দখলদারিত্ব শেষ হলেই কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র অভিযান বন্ধ হবে।
তবে, এই নতুন প্রস্তাবটি নির্দিষ্টভাবে গাজা নিয়ে, এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে হামাসের সামরিক সক্ষমতা বা রাজনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে এতে কিছু বলা হয়নি, যেখানে গাজা যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, আঞ্চলিক কূটনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণেও এই প্রস্তাবটি তৈরি হয়েছে। তিনি মিসরকে বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, কায়রোর অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে এবং তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, মিসর সম্প্রতি জোর দিয়েছে যে, রাফা ক্রসিংয়ে উভয় দিকেই চলাচল অনুমোদন করতে হবে, যার মধ্যে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনও অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ইসরায়েল কেবল গাজা থেকে প্রস্থান করার অনুমতি দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে গাজার উত্তর ও মধ্যভাগের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক নবায়ন করেছে। হামাসও মধ্যস্থতায় অগ্রগতি খুঁজে পেয়েছে এবং অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। আন্দোলনটি সাধারণ অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য একটি বাস্তববাদী উপায়ে বিশ্বাস করে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে প্রায় তিন দশক পর একজন ডেমোক্র্যাট মেয়র হতে চলেছেন। তারর নাম আইলিন হিগিনস। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) মায়ামির মেয়র নির্বাচনে (রানঅফে) তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্পের শক্ত ঘাঁটি ফ্লোরিডার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মায়ামি হিস্পানিক অধ্যুষিত একটি শহর।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে সিএনএন এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) আইলিন হিগিনসের বিজয়ী হওয়ার কথা জানায়। মায়ামি-ডেড কাউন্টির সাবেক এই কমিশনার সে সময় তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী এমিলিও গঞ্জালেসের থেকে ১৮ শতাংশ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।
মায়ামির মেয়র নির্বাচন সাধারণত দেশব্যাপী খুব একটা মনোযোগ পায় না। আনুষ্ঠানিকভাবে এটি একটি দলনিরপেক্ষ স্থানীয় নির্বাচন। কিন্তু এ বছর মায়ামির মেয়র নির্বাচন জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কারণ, এটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ঘাঁটির মধ্যে ভোটারদের মনোভাব পরীক্ষা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, তিনি মায়ামির প্রথম নারী মেয়র হতে চলেছেন। ১৯৯০–এর দশকের পর হিগিনসই প্রথম কোনো মেয়র প্রার্থী, যিনি হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর বাইরের এবং নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। হিগিনসের বড় ব্যবধানে জয় গত মাসের একাধিক নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের ধারাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। ডেমোক্র্যাটদের জয়ের এই ধারা কংগ্রেসে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিচ্ছে।
রিপাবলিকানদের জন্য ভোটের এই ফলাফল উদ্বেগেরও বটে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের থেকে হিস্পানিক সমর্থন কেড়ে নিয়েছিলেন। এখন সে সমর্থন দুর্বল হয়ে গেছে কি না, এ প্রশ্ন দলটির উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
৬১ বছর বয়সি হিগিনস ১৯৯৭ সালের পর প্রথম ডেমোক্র্যাট, যিনি মায়ামির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। সেবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন হাভিয়ের সুয়ারেজ, যিনি বর্তমান রিপাবলিকান মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজের বাবা।
শুধু তাই নয়, তিনি মায়ামির প্রথম নারী মেয়র হতে চলেছেন। ১৯৯০–এর দশকের পর হিগিনসই প্রথম কোনো মেয়র প্রার্থী, যিনি হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর বাইরের এবং নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।
প্রায় ৪ লাখ ৮৭ হাজার বাসিন্দার শহর মায়ামির সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী হিস্পানিক। এটি মায়ামি-ডেড কাউন্টির অংশ।
মায়ামি মেয়র নির্বাচনে প্রথম দফা ভোট হয় গত ৪ নভেম্বর। হিগিনস ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম হন, ১৮ শতাংশ ভোট নিয়ে তার পরেই ছিলেন গঞ্জালেস। কিন্তু কোনো প্রার্থী সরাসরি জয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এ কারণে ভোট রানঅফে গড়ায়।
হিগিনস বা ৬৮ বছর বয়সি সাবেক সিটি ম্যানেজার ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্নেল গঞ্জালেস কেউ–ই শুরুতেই স্পষ্টভাবে দলগত প্রচারণা চালাননি। কিন্তু বছরের শেষ ভাগে নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচন, নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনসহ আরও কয়েকটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরপর বিজয়ের পর মায়ামির মেয়র নির্বাচন দেশজুড়ে মনোযোগ পায়। এরপর গত ১৭ নভেম্বর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে গঞ্জালেসকে সমর্থন জানান এবং মায়ামির ভোটারদের প্রতি ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে লেখেন, ‘বাইরে বের হন এবং এমিলিওর জন্য ভোট দিন। তিনি কখনো আপনাদের হতাশ করবেন না।’
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি হিগিনসকে সমর্থন জানিয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নেন, কয়েকজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাটও এতে অংশ নেন।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে অবস্থান নেন তার বোনেরা। ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান ধর্মঘটের পর সেখান থেকে তাদের জোরপূর্বক তুলে দেয় পুলিশ। এসময় জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনী। খবর জিও নিউজের।
ইমরান খানের বোন আলিমা খানের নেতৃত্বে চলা এই অবস্থানে যোগ দেন পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা, পিটিআই কেপি প্রাদেশিক সভাপতি জুনায়েদ আকবর খানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। পিটিআই বলেছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাক্ষাতের অনুমতি থাকার কথা হলেও প্রতিবারই কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বোন নরিন খান, আলিমা খান এবং উজমা খানকে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি ইমরাইন খানের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর বিক্ষোভকারীরা কারখানার চেকপয়েন্টে জড়ো হয়।
পুলিশ ইমরান খানের বোনদের কারাগারের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করলে, পিটিআই কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে। এসময় বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের দাবি, আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল, একারণে ব্যারিস্টার গোহর আলি খান এবং ইমরানের বোনদের কারাগারে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।
কারাগারের চেকপয়েন্টে ইমরান খানের পরিবারের সদস্যদের থামিয়ে দেয় পুলিশ। সেখানে আলেমা খান বারবার পিটিআই কর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শত্রু নয়, তারা নিজেরা চাপের মধ্যে আছে।’
ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কার দেওয়ায় ঝড় উঠেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে ঘিরে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফিফার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নিয়ম স্পষ্টভাবে ভঙ্গ করেছেন তিনি। আর এই অভিযোগেই তার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন ফেয়ারস্কয়ার। ইনফান্তিনোর প্রশংসা, সমর্থনমূলক মন্তব্য ও ট্রাম্পকে সম্মাননা প্রদান— সব মিলিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্পকে পুরস্কার দিয়ে কি তবে ‘ফেঁসে’ যাচ্ছেন জিয়ান্নি?
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেয়া ‘ফিফা পিস প্রাইজ’ রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মানবাধিকার সংগঠন ফেয়ারস্কয়ার অভিযোগ করেছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার দেন ইনফান্তিনো। এ ছাড়া তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।
ফেয়ারস্কয়ারের পাঠানো অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ইনফান্তিনো ফিফার নিরপেক্ষতার নিয়ম চারটি ক্ষেত্রে ভঙ্গ করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘কোনও বর্তমান রাজনৈতিক নেতাকে এ ধরনের পুরস্কার দেয়া নিজেই ফিফার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নীতিমালার সুস্পষ্ট ব্যত্যয়’। আরও বলা হয়, ‘ফিফা প্রেসিডেন্ট এককভাবে সংস্থার লক্ষ্য, নীতি, দিকনির্দেশনা কিংবা মূল মূল্যবোধ নির্ধারণের অধিকার রাখেন না।’
পুরস্কার প্রদানের চমকপ্রদ সেই অনুষ্ঠানে ইনফান্তিনো ও ট্রাম্প পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিলেন। আগামী বছর ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই ট্রাম্পকে একটি বড় স্বর্ণখচিত ট্রফি, একটি পদক এবং সনদ তুলে দেন ইনফান্তিনো। তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নেতার কাছ থেকে আমরা এটিই চাই,’ এবং ‘আপনি সবসময় আমার সমর্থন পাবেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট।’
এর আগে চলতি বছরের অক্টোবরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে দেয়া এক পোস্টে ইনফান্তিনো লিখেছিলেন, ট্রাম্প ‘নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য’। পরে গত নভেম্বর মিয়ামির আমেরিকান বিজনেস ফোরামে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, (যুক্তরাষ্ট্রে) ট্রাম্প যা করছেন, আমাদের সবার তা সমর্থন করা উচিত, কারণ আমার মনে হয় সেটা বেশ ভালোই করা হচ্ছে।’
ফেয়ারস্কয়ার আরও অভিযোগ করেছে, ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইনফান্তিনো ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেখানেও ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি তার সমর্থনের ইঙ্গিত রয়েছে।
ফেয়ারস্কয়ারের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নিকোলাস ম্যাকগিহান বলেন, ‘এই অভিযোগ কেবল ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডার প্রতি ইনফান্তিনোর সমর্থন নিয়ে নয়। আরও বড় ব্যাপার হলো, ফিফার অবাস্তব পরিচালন ব্যবস্থা ইনফান্তিনোকে সংগঠনের নিয়ম অমান্য করে এমনভাবে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা বিপজ্জনক এবং বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির স্বার্থের বিরোধী।’
রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ক্রমেই নাকাল হয়ে পড়ছে। এই সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে সেনাবাহিনী থেকে সদস্যদের পলায়ন ও অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি। সরকারি হিসাব অনুসারে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত বা পলাতক; এবং সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
তিমোফ। ইউক্রেনের ৩৬ বছর বয়সি এক অফিস সহায়ক। তার হাতে ও আঙুলে এখনো বেগুনি রঙের ছোট ছোট বেশ কিছু ক্ষত রয়ে গেছে। ছয় মাস আগে সে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে। সে সময়ই হাতে এই ক্ষত তৈরি হয়। কিয়েভের এই যুবক জানান, গত এপ্রিলে তাকে জোর করে সেনাবাহিনীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি পরপর দুবার পালিয়ে এসেছেন।
তিমোফ বলেন, সত্যিকারের লড়াইয়ের জন্য তার প্রশিক্ষণ কতখানি অকার্যকর, তা বুঝেই তিনি পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বুঝতে পারেন, অনিবার্যভাবে তাকে ফ্রন্টলাইনের সৈন্য হতে হবে, যেখানে বেঁচে থাকার কোনো সুযোগ থাকবে না। তিমোফ বলেন, ‘কোনো প্রশিক্ষণই দেওয়া হয় না। আমি প্রথম আক্রমণেই মারা যাব, তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না।’
তিনি দাবি করেন, তার প্রশিক্ষকেরা বেশির ভাগ সময় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে যাতে কেউ পালাতে না পারে, সেই চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। কেন্দ্রটি ছিল কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা একটি তিন মিটার প্রায় ১০ ফুট উঁচু কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে সুরক্ষিত। তিমোফ বলেন, ‘একজন সৈনিক গুলি চালানো শিখল কি না, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। তারা আমাকে একটি বন্দুক দিল, আমি লক্ষ্যের দিকে একটি গুলি ছুড়লাম, আর তারা আমার নামের পাশে একটি টিক চিহ্ন দিয়ে দিল।’ ব্যস প্রশিক্ষণ শেষ।
কর্তৃপক্ষের ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকায় তিমোফে তার পদবি এবং ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখতে অনুরোধ করে। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো পলাতক বা অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ আনা হয়নি। তার ব্যাখ্যা খুব সহজ, ‘দেশের অর্ধেক মানুষ এখন পালাচ্ছে’, আর সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে এত সংখ্যক পলাতককে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই।
অক্টোবরে ইউক্রেনীয় কৌঁসুলিরা জানান, রাশিয়া ২০২২ সালে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন এবং প্রায় ৫৪ হাজার সেনা পলায়ন করেছেন। গত বছর থেকে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি ১ লাখ ৭৬ হাজার এবং পলায়নের ২৫ হাজার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
ইউক্রেনীয় কমান্ডার ভ্যালেন্তিন মাঙ্কো শনিবার ইউক্রেনীয় প্রাভদাকে বলেন, ‘এমনকি রাশিয়ায়ও এত বেশি সৈন্য অনুমতি ছাড়া পালিয়ে যায়।’ পলায়নের এই সংকট ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ক্রমেই চলে যাওয়ার মধ্যে সেনাকর্মীর মারাত্মক অভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
নভেম্বরে রাশিয়ার বাহিনী প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নেয়, যার বেশির ভাগই পূর্ব ইউক্রেনে, আর ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা আবারও থমকে যায়। মাঙ্কো জানান, প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার পুরুষকে সেনাবাহিনীতে নেওয়া হয়, কিন্তু সব সামরিক ইউনিটকে ‘পুনরায় সচল’ করতে দরকার ৭০ হাজার সেনা।
যুদ্ধে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, একজন সেনা সামরিক ইউনিট ছেড়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে পলায়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন এবং তার ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। আর অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতির শাস্তি ১০ বছর পর্যন্ত জেল। অনেকেই জেলকে বেছে নিচ্ছেন।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের সাবেক উপপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর রোমানেনকো বলেন, ‘আমাদের পলাতক সৈন্য এবং অনুমতি ছাড়া চলে যাওয়া সেনার সংখ্যা খুবই বেশি।’ তিনি বলেন, ‘তারা ভাবে—আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে ফ্রন্টলাইনে যাওয়ার চেয়ে জেলে যাওয়া সহজ।’ রোমানেনকো দীর্ঘদিন ধরে কঠোর যুদ্ধকালীন আইন চালু করার এবং পলাতক ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের জন্য কঠোর শাস্তির পক্ষে সওয়াল করছেন। তার বিশ্বাস, তাদের জেলে না পাঠিয়ে ফ্রন্টলাইনে পাঠানো উচিত।
পলায়ন এবং অনুমতি ছাড়া চলে যাওয়ার মধ্যে আইনি পার্থক্য হলো ‘চিরতরে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য।’ তবে ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার প্রথমবার পলায়নকারীদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেছে। যার ফলে তারা কোনো শাস্তি ছাড়াই তাদের ইউনিটে ফিরে আসতে পারে। সামরিক কর্তৃপক্ষ এবং তাদের কমান্ডিং অফিসারদের দয়ার ওপর ভরসা করে প্রায় ৩০ হাজার সেনা ফিরে এসেছেন।
দক্ষিণ ইউক্রেনের একটি সামরিক ইউনিটের এক মনোবিজ্ঞানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘তাদের প্রতি এখন আরও বেশি সহানুভূতি দেখানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, পলায়ন সব সময় মৃত্যুর ভয়ের কারণে হয় না, বরং বেশির ভাগ সময়েই মনোযোগহীন কমান্ডিং অফিসারদের কারণে হয়, যারা তাদের সেনাদের সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলে, তাদের কমান্ডার তাদের ছুটিতে যেতে দেননি, তাদের অসুস্থ আত্মীয়দের দেখতে যেতে দেননি, এমনকি বিয়ে করতেও দেননি।’
এদিকে সামরিক পুলিশ বাহিনীতে লোকবলের মারাত্মক অভাব রয়েছে এবং আদালতের আদেশ ছাড়া তারা কোনো সেনাকে আটক করতে পারে না। ফলে অনুমতি ছাড়া সেনাবাহিনী ছেড়ে যাওয়া কিংবা পালিয়ে যাওয়া সেনারা খুব বেশি ধরাও পড়ছে না।
ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদো বুধবার (১০ ডিসেম্বর) অসলোতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেননি। এমনটা জানিয়েছেন নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক। তার বর্তমান অবস্থান অজানা বলেও জানান তিনি।
মাচাদো তার নিজ দেশে কর্তৃপক্ষের আরোপিত এক দশকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং এক বছরেরও বেশি সময় আত্মগোপনে থাকার পর এই পুরস্কার গ্রহণ করার কথা ছিল। ‘দুর্ভাগ্যবশত তিনি নরওয়েতে নেই এবং দুপুর ১টায় অসলো সিটি হলে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সময় মঞ্চে থাকতে পারেন নি। ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং পুরস্কার সংস্থার স্থায়ী সচিব ক্রিস্টিয়ান বার্গ হার্পভিকেন সম্প্রচারক এনআরকেকে বলেন।
তিনি কোথায় জানতে চাইলে হার্পভিকেন বলেন, ‘আমি জানি না।’
তবে, প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন কোনো বিজয়ী উপস্থিত থাকতে অক্ষম হন, তখন সাধারণত পরিবারের কোনো ঘনিষ্ঠ সদস্য পুরস্কার গ্রহণ করেন এবং বিজয়ীর জায়গায় নোবেল বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। এই ক্ষেত্রে, মাচাদোর মেয়ে আনা করিনা সোসা মাচাদোর জায়গায় আসেন।
অক্টোবরে এই পুরস্কার জেতার পর মাচাদো এটি আংশিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেছিলেন, বলেছিলেন যে ট্রাম্পই এই সম্মানের যোগ্য। নোবেল ইনস্টিটিউটকে আরও প্রশ্ন করা হলে তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
৫৮ বছর বয়সী মাচাদোর অসলো সিটি হলে ওই অনুষ্ঠানে রাজা হ্যারাল্ড, রানী সোনজা এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলি এবং ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়াসহ ল্যাটিন আমেরিকার নেতাদের উপস্থিতিতে এই পুরস্কার গ্রহণ করার কথা ছিল।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর অদূরে একটি এএন-২২ মডেলের সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার আইভানোভো অঞ্চলের ইভানকোভো গ্রামের কাছে ঘটা এই দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটিতে থাকা আরোহীদের কেউই বেঁচে নেই।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, বিমানটিতে সাতজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তবে উড়োজাহাজে মোট কতজন ছিলেন, সে বিষয়ে সরকারিভাবে এখনো নিশ্চিত কোনো সংখ্যা জানানো হয়নি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, বিমানটি মেরামতের কাজ শেষে একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে (টেস্ট ফ্লাইট) ছিল। ঠিক সেই সময়ই মস্কো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত আইভানোভো অঞ্চলে এটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে এবং কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। রুশ দৈনিক কোমারসান্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত এই পুরোনো উড়োজাহাজটিতে সম্ভবত প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে এই দুর্ঘটনা ঘটলেও, এর সঙ্গে যুদ্ধের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় সাবেক বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ নির্মাণে কোটি কোটি রুপি অনুদান জমা পড়েছে। জমা পড়েছে বহু সোনাও। বিশেষ যন্ত্র এনে দুদিন ধরে চলছে রুপি গোনার কাজ। গণনা এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) শেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নগদ টাকার অঙ্কের মধ্যেই ৫ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে। অনেকে স্বর্ণালংকারও দান করেছেন। অনলাইনেও আসছে প্রচুর অর্থ। ফলে সব মিলিয়ে অনুদানের অঙ্ক পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছে মসজিদের অছি পরিষদ। গত শনিবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানস্থলে অনুদান সংগ্রহের জন্য ১১টি স্টিলের বাক্স রাখা হয়েছিল। হাজারও মানুষ সেদিন মসজিদ নির্মাণের জন্য মুক্ত হস্তে দান করেন। সেই থেকে অনুদান এসেই চলেছে।
হুমায়ুনের দাবি, সকলে মুক্ত হস্তে দান করছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, গোনার জন্য যন্ত্র আনতে হয়েছে। দানবাক্সে ৫০০ রুপির নোট থেকে শুরু করে খুচরো পর্যন্ত সবই পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখনো সব টাকা গোনা শেষ হয়নি। কয়েকটি দানবাক্সের গণনা এখনো বাকি। মঙ্গলবারও (৯ ডিসেম্বর) সেই কাজ চলছে। টাকা-গহনার পাশাপাশি অনেকে মসজিদ নির্মাণের জন্য ইট, বালি, পাথরও দান করছেন। হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘এই বাবরি মসজিদ তৈরি করতে তিন বছর সময় লাগবে।’ এ জন্য অর্থের অভাব হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দূর-দূরান্তের হাজারও ভক্ত এই বাবরি মসজিদের জন্য উদার হস্তে দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একজন ভক্ত একাই ৮০ কোটি রুপি অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।’ মসজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা ও রেজিনগরের সংযোগ স্থলে জাতীয় সড়কের পাশে। এর নির্মাণকাজ বন্ধ করতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা হলেও আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করেননি। আইনি বাধা কেটে যাওয়ার পরই আগামী শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। জানা গেছে, মূল মসজিদটি তিন কাঠা জমির ওপর নির্মিত হবে। এ ছাড়া মসজিদ চত্বরের ২৫ কাঠা জমিতে একটি হাসপাতাল ও একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তৈরি হবে পার্কও।
কলকাতায় স্বামীর শেষকৃত্যের জন্য গত সপ্তাহে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে ইন্ডিগোতে ফ্লাইট বুক করেছিলেন মঞ্জুরি। কিন্তু বিলম্ব হতে হতে একসময় তার ফ্লাইট বাতিল হয়।
ভারতের অন্যতম এয়ারলাইন ইন্ডিগোর ব্যবস্থাপনায় ভজঘটের কারণে মঞ্জুরির মতো লাখ লাখ মানুষ বিগত কয়েকদিন ধরে ভুগছেন। ব্যাপক ফ্লাইট সংকটে দেশটির বিমান পরিবহন খাত বহু বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
বিমানযাত্রা সাশ্রয়ী করার মধ্যে দিয়ে ভারতে জনপ্রিয়তা পায় ইন্ডিগো। এই খাতে প্রায় ৬০ শতাংশ শেয়ার থাকার প্রতিষ্ঠানটি যেখানে দৈনিক প্রায় দুহাজার ফ্লাইট পরিচালনাও করেছে, তারা আকস্মিকভাবে এক ৫ ডিসেম্বরই হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে মঞ্জুরির মতো অনেকে যেমন প্রিয়জনের শেষকৃত্য ঠিকমতো করতে পারেননি, তেমনি অনেক মানুষের বিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ পরিকল্পনাও বাতিল হয়ে যায়।
মুডিস রেটিং সংস্থা বলেছে, ফ্লাইট বাতিল, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডি-জিসিএ-র সম্ভাব্য জরিমানা এবং যাত্রীদের টিকিটের অর্থ ফেরতসহ অন্যান্য ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে ইন্ডিগোর উল্লেখযোগ্য আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির এই সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নতুন ক্রু-রোস্টারিং নিয়ম, যেখানে পাইলট ও কেবিন ক্রুর জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের বিধান রাখা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ইন্ডিগো এসব নতুন নিয়মের জন্য পর্যাপ্ত পরিকল্পনা করেনি, ফলে পুরোপুরি বিশ্রাম না পাওয়া কর্মীর অভাবে অর্ধেকের বেশি উড়োজাহাজ হ্যাঙ্গারে পড়ে আছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রাম ৩৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টা করতে হবে এবং রাতের ফ্লাইটে অবতরণ ছয়টির বদলে দুটিতে সীমিত রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন পাইলটরা, যার ভিত্তিতে এই পরিবর্তন আনা হয়।
দুই বছর আগে ভারতীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নিয়ম ঘোষণা করে এবং চলতি বছর জুন ও নভেম্বরে দুই ধাপে এগুলো কার্যকর করার কথা ছিল।
এয়ার ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠান নিয়মগুলো বাস্তবায়নের দাবি করলেও ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা সব শর্ত সম্পূর্ণভাবে পূরণে সক্ষম হয়নি।
বিবিসিকে ফ্লাইট বিশেষজ্ঞ মার্ক মার্টিন বলেন, ‘নিয়ম মানতে হলে কয়েকশ নতুন পাইলটের নিয়োগ এবং ব্যয় বৃদ্ধি পেত। এ জন্যই কি ইন্ডিগো এই গাফিলতি করল!’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়ম মানার জন্য তাদের হাতে কয়েক মাস সময় ছিল। প্রতিযোগীরা মানতে পেরেছে, ইন্ডিগো পারল না কেন?’
একাধিক বিবৃতিতে ইন্ডিগো দুঃখ প্রকাশ করে জানিয়েছে, ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা অপ্রত্যাশিত অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ, খারাপ আবহাওয়া থেকে শুরু করে নতুন নিয়ম বাস্তবায়নে পরিকল্পনার ঘাটতি ফল।
কিন্তু বিবিসির সঙ্গে কথা বলা অন্তত তিনজন ইন্ডিগো পাইলট বলেছেন, ‘এ সংকটের গভীরে রয়েছে ব্যয় সাশ্রয়ের চেষ্টা, এমনকি তা পাইলটদের কম বিশ্রামের বিনিময়ে হলেও।’
দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোম্পানিতে কর্মরত একজন পাইলট বলেন, ‘অনেক শিল্পে ওভারটাইম হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু ফ্লাইটে নিরাপত্তাই মূল এবং ক্লান্তি এখানে নীরব ঘাতক। কখন যে এর প্রভাব পড়ে, টেরই পাওয়া যায় না।’
ব্যয় কমানোর প্রবণতার পাশাপাশি নতুন আন্তর্জাতিক রুট চালুর মতো দ্রুত সম্প্রসারণও ব্যবস্থাপনাকে ‘উপেক্ষা করতে বাধ্য করেছে বলে মন্তব্য করেন বর্তমানে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলা এয়ারলাইন এয়ার ডেকান এর প্রতিষ্ঠাতা জি আর গোপীনাথ।
তিনি লেখেন, ৬০ শতাংশ শেয়ারের অধিকারী ইন্ডিগো এখন প্রায় একাধিপত্য বিস্তার করেছে, যা আসলে উদাসীনতা ডেকে আনে।
গত ১৫ বছরে জেট এয়ারওয়েজ, কিংফিশার, গোএয়ারসহ বহু ভারতীয় এয়ারলাইন বাড়তি জ্বালানি মূল্যের চাপ ও ঋণে ধসে পড়ে। প্রতিযোগীরা একে একে হারিয়ে সরে যাওয়ায় ছোট শহর ও দ্বিতীয় পর্যায়ের রুটে সম্প্রসারণ করে ইন্ডিগো দ্রুত বাজার দখল করে।
এভাবে বাজারের যে পরিবর্তন এসেছে, তা ইন্ডিগোকে এমন এক অবস্থানে এনেছে যা কয়েক দশক ধরে কোনো ভারতীয় এয়ারলাইনের ছিল না।
টানা তিন বছর ধরে সাংবাদিক হত্যায় শীর্ষে আছে ইসরায়েল। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরে গাজায় ২৯ জন সাংবাদিক ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ডিসেম্বর) এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্যারিসভিত্তিক সংগঠনটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, এ বছর বিশ্বজুড়ে ৬৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ২০২৪ সালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ছিল ৬৬।
নিহতদের ৪৩ শতাংশই ইসরায়েলি সেনার হামলায় নিহত হয়েছেন। যার ফলে, ইসরায়েলকে ‘সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় শত্রু’ আখ্যা দেয় আরএসএফ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিহতদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এ বছর সাংবাদিকদের ওপর হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে ২৫ আগস্ট। গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনা হামলা চালালে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স ও এপির দুই প্রদায়কসহ মোট পাঁচ সাংবাদিক নিহত হন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় গণহত্যামূলক হামলা শুরুর পর সব মিলিয়ে ২২০ সাংবাদিক ইসরায়েলি সেনার হাতে প্রাণ দিয়েছেন।
আরএসএফের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যায় টানা তিন বছর ধরে শীর্ষে আছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের পরের অবস্থানে আছে মেক্সিকো। ২০২৫ সালে গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক নিহত হন। বামপন্থি প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবম সাংবাদিকদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও চলতি বছরে নয়জন সাংবাদিক নিহত হন।
তালিকার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দেশ ইউক্রেন ও সুদান। দেশ দুটিতে যথাক্রমে তিন ও চারজন সাংবাদিক নিহত হন।
২০১২ সালে একক বছর হিসেবে সর্বোচ্চ ১৪২ সাংবাদিক নিহত হন। ওই বছর সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এই অস্বাভাবিক সংখ্যার জন্য মূলত দায়ী।
আরএসএফের প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে কারাবন্দি সাংবাদিকদের সংখ্যাও প্রকাশ করেছে।
সাংবাদিকদের আটকে রাখার দিক দিয়ে শীর্ষ দেশগুলো হলো চীন (১২১), রাশিয়া (৪৮) ও মিয়ানমার (৪৭)।
২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ করা তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের ৪৭টি দেশে ৫০৩ জন সাংবাদিককে আটক রাখা হয়েছে।
সুদানের বিমান বাহিনী দেশটির আবাসিক এলাকা, বাজার, স্কুল ও বাস্তুচ্যুতদের শিবির লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। এতে অন্তত ১,৭০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গৃহযুদ্ধ চলাকালে সেখানে বিমান হামলা নিয়ে এক তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
‘সুদান উইটনেস প্রজেক্ট’ বলেছে, সুদানে ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া সাম্প্রতিকতম লড়াইয়ে সরকারি বাহিনী (এসএএফ) যেসব বড় বড় বিমান হামলা চালিয়েছে এবং তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেসব তথ্য নিয়ে তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত করেছে তারা।
তাদের বিশ্লেষণ দেখায়, বিমান বাহিনী জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আনগাইডেড (নিয়ন্ত্রণহীন) বোমা ব্যবহার করেছে। আনগাইডেড বোমা বলতে এমন বোমা বোঝানো হয়, যা নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যে ছোড়া হয় না; বরং আকাশ থেকে ফেলার পর সেটি যেকোনো এলাকায় পড়তে পারে। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।
সুদান উইটনেস প্রজেক্ট শুধু যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা চালানোর ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে যুদ্ধবিমান আছে। কিন্তু তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে কোনো যুদ্ধবিমান নেই।
আরএসএফ আকাশ থেকে হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার করেছে। কিন্তু এ গবেষণায় ড্রোন হামলায় হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
প্রজেক্ট পরিচালনাকারী মার্ক স্নুক বলেন, ‘আমার মনে হয় এসএএফকে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়া উচিত।’
বিবিসির মন্তব্য জানতে চাওয়া অনুরোধের জবাব দেয়নি এসএএফ। তবে তারা পূর্বে দাবি করেছে যে তারা কখনো বেসামরিকদের লক্ষ্য করে না-তাদের বিমান হামলা শুধু আরএসএফের সমাবেশ, অবস্থান ও ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে, যেগুলো বৈধ সামরিক লক্ষ্য হিসেবে স্বীকৃত।
সুদান উইটনেস হলো সেন্টার ফর ইনফরমেশন রেজিলিয়েন্সের (সিআইআর) পরিচালিত একটি উদ্যোগ, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো প্রকাশের কাজ করে। এ প্রকল্পের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তহবিল পেয়েছে তারা।
বিবিসি ওই গবেষণা প্রতিবেদনের একটি আগাম অনুলিপি হাতে পেয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুদান উইটনেস ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত ৩৮৪টি বিমান হামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করেছে। এসব হামলায় ১ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষ নিহত ও ১ হাজার ১২০ জন আহত হয়েছেন। নিহত ও আহত উভয় সংখ্যাই আরও বেশি হতে পারে। কারণ, তারা সর্বনিম্ন সংখ্যা ধরে এ হিসাব করেছে।
সুদান উইটনেস যে ৩৮৪ ঘটনা বিশ্লেষণ করেছে, তার মধ্যে ৩৫টি ঘটনায় বোমাবর্ষণ করা হয় বাজার বা বাণিজ্যিক স্থাপনায়। হামলার সময় ওই সব স্থানে মানুষের ভিড় ছিল। আর ১৯টি হামলা হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
সুদান উইটনেস স্বীকার করেছে, তাদের গবেষণা অসম্পূর্ণ। কারণ, তাদের ফলাফল মোট হামলার সংখ্যার ভিত্তিতে নয়; বরং তাদের কাছে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
কনফ্লিক্ট ইনসাইটস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাস্টিন লিঞ্চ বিবিসিকে বলেন, ‘সুদানের সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকরাই আরএসএফ ও এসএএফের মধ্যেকার লড়াইয়ের প্রধান শিকার।’
তিনি বলেন, ‘সুদানের সংঘাত মূলত বেসামরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। বিমান শক্তি ও ভারী অস্ত্র বেসামরিকদের ওপরই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে, সামরিক লক্ষ্যবস্তুর চেয়ে।’
জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাছাড়া বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন অন্তত ২ হাজার বাড়ির হাজারো বাসিন্দা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে এসব তথ্য জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৫ মিনিটে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়ে সড়ক, অনেক বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায় ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় শীতের রাতে হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। প্রথমে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৬ বলা হলেও পরে তা সংশোধন করা হয়।
জাপানের আবহাওয়া দপ্তর (জেএমএ) বলেছে, আগামী কয়েক দিনে একই মাত্রা বা আরও বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি জানিয়েছেন, অওমোরি উপকূলের এই ভূমিকম্পে ৩০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা গুরুতর। ভূমিকম্পের পর ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত সুনামি ঢেউ দেখা যায়।
জানা গেছে, এই ভূমিকম্পে হোক্কাইদো অঞ্চলে আহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশটির অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, অনেক এলাকায় রাস্তার গায়ে বড় বড় ফাটল দেখা গেছে, কোথাও গাড়ি ধসে যাওয়া গর্তে পড়ে গেছে, আর ভবনের জানালা ভেঙে কাচ ছড়িয়ে পড়েছে।
সরকারি মুখপাত্র মিনোরু কিহারা বলেছেন, প্রাথমিকভাবে একাধিক বাড়িতে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেলেও পরে একটি বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানান, মাটি প্রায় ৩০ সেকেন্ড তীব্রভাবে কেঁপেছিল। একই সঙ্গে স্মার্টফোনে সতর্ক সাইরেন বাজতে থাকে।
অওমোরির হাসিকামি এলাকার বাসিন্দা ডাইকি শিমোহাতা জানান, কম্পনটি ছিল আমাদের জীবনে সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে সবকিছু কাঁপছিল। আমরা দুই বছরের মেয়ে আর এক বছরের ছেলেকে বুকে চেপে ধরে ছিলাম। এই ঘটনায় ২০১১ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের কথা মনে পড়ে যায়।
ভূমিকম্পের পর ২৮ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, অনেক অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র দ্রুতই পূর্ণ হয়ে যায়।
এদিকে, শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রায় ২৭০০ বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। যদিও গতকাল মঙ্গলবার সকালে অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ ফিরে আসে। মাত্র ৪০টির মতো বাড়িতে সংযোগ বিঘ্নিত থাকে।
প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি নাগরিকদের সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহ আবহাওয়া অফিস কিংবা স্থানীয় সরকারের নির্দেশ শুনুন। ঘরের ভারী আসবাবপত্র ঠিকভাবে স্থির আছে কি না দেখুন ও আবার কম্পন অনুভব করলে দ্রুত সরে যাওয়ার প্রস্তুতি রাখুন।
জাপানে ভূমিকম্পের ঝুঁকি
জাপানে ২০১১ সালের ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে আঘাত হানার পর সৃষ্ট সুনামি ১৮,৫০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় ও ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।
চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান করায় জাপান বিশ্বে সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর একটি। দেশটিতে বছরে ১৫০০টিরও বেশি কম্পন অনুভূত হয়।
এ বছর জানুয়ারিতে সরকারি একটি প্যানেল জানায়, জাপানের দক্ষিণের নানকাই ট্রাফ এলাকায় আগামী ৩০ বছরের মধ্যে শক্তিশালী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ৭৫-৮২ শতাংশ। মার্চে সরকারের নতুন হিসাব বলছে, এমন ‘মেগা ভূমিকম্প’ ও সুনামিতে ২ লাখ ৯৮ হাজার মানুষের প্রাণহানি ও ২ ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ কোটি ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে।
ভূমিকম্পের পর শক্তিশালী আফটারশকের আশঙ্কা
জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর দেশজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের পর এলাকাটিতে শক্তিশালী আফটারশকের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, উপকূল থেকে প্রায় ৪৪ মাইল দূরে, প্রায় ৩৩ মাইল গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি। কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে রাজধানী টোকিওতে ৩০ সেকেন্ডেরও বেশি সময় তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভূমিকম্পের আগে জাপান মেটিওরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) সতর্ক করেছিল যে, চলতি সপ্তাহে আট বা তার চেয়েও বেশি মাত্রার বড় ভূমিকম্প ঘটতে পারে। যদিও এটি সত্য হওয়ার আশঙ্কা তারা এক শতাংশ বলে উল্লেখ করেছিল, তবু নিজেদের জীবন রক্ষায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল সংস্থাটি।
ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা
ভূমিকম্পের পরপরই হোক্কাইডো, আওমোরি ও ইওয়াতে উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। তবে আশঙ্কার তুলনায় ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক কম ছিল। ইওয়াতের কুজি বন্দরে ২ দশমিক ৩ ফুট, আর আওমোরি ও হোক্কাইডোতে ১ দশমিক ৩ ফুট উচ্চতার সুনামি ঢেউ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
কয়েক ঘণ্টা পর সতর্কতাটি কমিয়ে সুনামি পরামর্শ জারি করা হয় এবং গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেটিও তুলে নেওয়া হয়।
পরিবহন ও বিদ্যুৎব্যবস্থায় বিঘ্ন
জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি জানান, ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং আরও শক্তিশালী ঝাঁকুনি (আফটারশক) আসার আশঙ্কা রয়েছে। একই সময় প্রধান ক্যাবিনেট সচিব মিনোরু কিহারা জানান, আওমোরিতে আগুন লাগার ঘটনা এবং বেশ কিছু জায়গায় আহতের খবর পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্পে আওমোরি ও ইওয়াতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। ফুকুশিমা থেকে আওমোরি পর্যন্ত দ্রুতগতির ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু মহাসড়কও বন্ধ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আওমোরির মুত্সু শহরে একটি হোটেলসহ বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি গাড়ি ভেঙে যাওয়া সড়কে আটকে আছে।
তবে কিহারা জানিয়েছেন, হিগাশিদোরি ও ওনাগাওয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোন অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়নি। অন্যান্য স্থাপনাগুলোও পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতুন করে সংশোধিত শান্তি পরিকল্পনা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেন। কেননা, দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, রাশিয়ার কাছে কোন ধরনের ভূখণ্ড ছাড় দেওয়া হবে না।
ইউরোপীয় ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেন, ‘ইউক্রেনের কোন অংশ ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের আইনে, সংবিধানে, আন্তর্জাতিক আইনে কোথাও এর অনুমতি নেই। নৈতিকভাবেও আমরা তা করতে পারি না।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সীমান্ত পরিবর্তনের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হলে জনগণের গণভোটের প্রয়োজন হবে।
গত সপ্তাহান্তে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেনের গোপন বৈঠকে যে প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিল, তা কিয়েভ গ্রহণ না করায় এই সংশোধিত পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।
ডাউনিং স্ট্রিট বৈঠক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎসের সঙ্গে ডাউনিং স্ট্রিটে এক জরুরি বৈঠকে অংশ নেন জেলেনস্কি। বৈঠকে নেতারা ইউক্রেনের প্রতি অব্যাহত সমর্থন এবং ‘ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর জোর দেন।
জেলেনস্কি বর্তমানে ইউরোপ সফরে রয়েছেন। তিনি ব্রাসেলসে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেয়েনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে আলোচনা হবে। এসব বৈঠকের লক্ষ্য- যেকোনো শান্তিচুক্তি হলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিতে সক্ষম একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠন।
এদিকে মস্কো দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের আলাপ ‘গঠনমূলক’ ছিল। যদিও ক্রেমলিনের অবস্থানে প্রকাশ্য কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তির পথে প্রধান বাধা জেলেনস্কিই’। এছাড়া তিনি হতাশা প্রকাশ করে জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখনো প্রস্তাবটি পড়েও দেখেননি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এও দাবি করেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ‘সমস্যা নেই’ বলে জানিয়েছে।
ইউক্রেনের আরও দুটি এলাকা দখলের দাবি রাশিয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনের আরও দুটি এলাকা দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। খারকোভ ও দোনেৎস্কের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাইডেড বোমা, ড্রোন ও কিনঝাল মিসাইল ছুঁড়েছে সেনারা। ইউক্রেনের যোগাযোগ ও সামরিক অবকাঠামো এবং জ্বালানি ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে।
দোনেৎস্কের দিমিত্রোভ এলাকায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলেছে বলেও দাবি করেছে। গ্রিশিনো এলাকা থেকে পিছু হটেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। যদিও পুতিন বাহিনীর কাছে নতুন করে ভূখণ্ড হারানোর কথা স্বীকার করেনি কিয়েভ।
প্রতিরক্ষা লাইনে লড়াই অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড জানিয়েছে, পোক্রোভোস্কে রুশ সেনাদের লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে তারা। মিরনোরাদ থেকে পিছু হটেছে রুশ সেনারা। খারকিভের একটি বাঁধ ঘিরেও রুশ সেনারা আটকা পড়েছে বলে দাবি কিয়েভের।