শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৮ ভাদ্র ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে ‘নতুন তথ্য’ জানাল ইরান

মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ (বাঁয়ে) এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৩ মে, ২০২৫ ২১:২৬

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংলাপ নিয়ে নতুন কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন ইরানের রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মজিদ তাখত-রাভাঞ্চি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনায় ইরানি প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য। রাভাঞ্চি জানিয়েছেন, ইরান এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ও সক্ষমতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করেনি।

তিনি বলেন, ‘একটি কাঠামো হিসেবে আমরা উল্লেখ করেছি যে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা, সক্ষমতা ও অনুরূপ পারমাণবিক বিষয়গুলোর ওপর সীমিত সময়ের জন্য কিছু নিষেধাজ্ঞা আমরা বিবেচনা করতে পারি। যেগুলো আস্থা গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে’।

ইরানের এই উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হলে তবেই ইরান এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে রাজি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো একতরফা নয়, বরং পারস্পরিক পদক্ষেপের অংশ। যার মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।’

তাখত-রাভাঞ্চি এ সময় সাম্প্রতিক কিছু গুজবও নাকচ করে দেন। যেখানে বলা হয়েছিল আলোচনায় ২৫ বছরের মতো দীর্ঘ সময়সীমা নির্ধারণ করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সময়সীমা হোক বা সমৃদ্ধকরণের শতকরা হার- এ ধরনের কোনো ধারণাই নিশ্চিত নয়’।

এদিকে, পরমাণু ইস্যু নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র বিষয়ক গবেষণা সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চের (এসপিএনডি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন সিনিয়র কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

ওই তিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের নাম-পরিচয় গোপন রাখলেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এই কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রে ওই তিন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদ ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে এবং যতদিন এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক চুক্তি করতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই চুক্তি থেকে সরে আসে। যার ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে।

এরপর চলতি বছরে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প নিজেই ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরান সরকারও তাতে সাড়া দেয়।

কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক সংলাপ। ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান। সংলাপের চতুর্থ রাউন্ড শেষ হয়েছে সোমবার। আর ওইদিনই তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করল ওয়াশিংটন।


ইন্দোনেশিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩

আপডেটেড ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৭:১৪
বাসস

ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন কেন্দ্র বালিসহ দু’টি দ্বীপে আজ শুক্রবার পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এখনো পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার ডেনপাসার শহর থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মুষলধারে বৃষ্টির পর বালি দ্বীপে বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি)। সেখানে আজ চারজনের লাশ পাওয়া গেছে এবং আরো দু’জন নিখোঁজ রয়েছে।

বালিতে আগেই ১৪ জন এবং ফ্লোরেস দ্বীপে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরপর আজ আবারো চারজনের লাশ পাওয়া গেল।

বিএনপিবি প্রধান সুহারিয়ান্তো বলেন, বন্যাদুর্গতদের খাবার, পোশাক ও বিছানাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

তার অনুমান, এই বন্যায় প্রায় ১ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় একদিনে আরও ৭২ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৪ হাজার ৬০০ ছাড়াল। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়াল ৬৪ হাজার ৬৫৬ জনে।

এদিকে তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম গাজা শহরে বাস্তুচ্যুত পরিবারের তাঁবুতে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে দুটি ফিলিস্তিনি পরিবারের অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।

এছাড়া পশ্চিম গাজা শহরের বহুতলবিশিষ্ট টিবা–২ আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বাহিনী বোমাবর্ষণ করে। আগে থেকেই সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও হামলায় দুইজন নিহত হন।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম গাজার নাসের স্ট্রিটে বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় আরও পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

আরেকটি ড্রোন হামলা হয় আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের কাছে প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে একটি তাঁবুতে। এতে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।

শেখ রাদওয়ান এলাকায় একত্রিত হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি সেনারা। এতে একজন নিহত হন। ওই এলাকায় ধারাবাহিক হামলা চালানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। এতে একজন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। দেইর আল-বালাহ শহরে একটি তাঁবুতে ড্রোন হামলায় এক শিশুর মৃত্যু হয় এবং আরও অনেকে আহত হন।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের জালাল স্ট্রিটে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে চারজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন শিশু।

আনাদোলু বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই অভিযানে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং জনগণ চরম দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।


‘ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হতে পারে সৌদি ও আমিরাত’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম জোর দিয়ে বলেছেন, প্রতিরোধের যোদ্ধারা কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না এবং তারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের সামনে নত হবে না। তিনি দাবি করেন, ‘প্রতিরোধই ইসরায়েলকে থামিয়ে রেখেছে এবং এবার আগ্রাসনের শিকার হতে পারে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিরোধকে সমর্থন করাই হলো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন-ইসরায়েলি আগ্রাসন ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়।’

গত বুধবার মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে কাসেম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘লেবাননের প্রধান সমস্যা হলো এর জনগণের মধ্যে জাতিগত ঐক্য গড়ে ওঠেনি। হিজবুল্লাহ লেবানন এবং তার ভূমির সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তার নেতাদের ত্যাগ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিরোধই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এবং এটি ইসরায়েলকে তার লক্ষ্য অর্জনে বাধা দিচ্ছে।’

কাসেম লেবানন সরকারের প্রতি ইসরায়েলি শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় ইসরায়েল লেবাননকে নিয়ন্ত্রণ করুক’ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল চায় লেবাননের কোনো সামরিক শক্তি না থাকুক।’ তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘হিজবুল্লাহ কোনো মূল্যে আত্মসমর্পণ করবে না।’ হিজবুল্লাহ নেতা আরও বলেন যে, মার্কিন-ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য লেবাননের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।

কাতারের দোহায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে।’ তিনি দাবি করেন, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তেল আবিব যেকোনো সময় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকেও আক্রমণ করতে পারে’ এবং একমাত্র প্রতিরোধই ইসরায়েলকে থামিয়ে রেখেছে। এই খবরটি মেহর নিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।


টুইন টাওয়ারে হামলার ২ যুগ

ইসরায়েল আগেই জানত ভয়াবহতার কথা!
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টুইট টাওয়ারে হামলার প্রায় দুই যুগ পেরিয়ে গেছে। প্রায় ২৪ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি যাত্রীবাহী প্লেন ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে। ওই ঘটনায় প্রাণ হারান কয়েক হাজার মানুষ। এই হামলা ছিল শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর একটি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, গোটা বিশ্ব চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়।

এদিকে মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসন দাবি করেছেন, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার আগেই বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন। একটি প্রামাণ্যচিত্র সিরিজে তিনি এ বিষয়সহ দীর্ঘদিন ধরে চাপা থাকা বহু তথ্যই সামনে আনবেন বলে জানিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার কার্লসন পিয়ার্স মরগানের অনুষ্ঠান আনসেন্সরড নিউজে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের নেতৃত্ব কখনোই ৯/১১ হামলা নিয়ে তাদের মনোভাব লুকায়নি। বরং তারা মনে করত ওই হামলা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করেছে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে একইসঙ্গে চারটি প্লেন ছিনতাই করে। তারপর সেগুলো ব্যবহার করে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে। দুটি প্লেন বিধ্বস্ত করা হয় নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে।

প্রথম প্লেনটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। দ্বিতীয় প্লেনটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় এর কয়েক মিনিট পরেই, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে।

হামলায় দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির ওপরের তলাগুলোতে মানুষজন আটকা পড়ে যায়। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। দুটি ভবনই ছিল ১১০ তলা। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে সেগুলো বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে গুঁড়িয়ে পড়ে।

তৃতীয় প্লেনটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর বিশাল এই পেন্টাগন ভবন।

এরপর, সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ প্লেনটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার একটি মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ প্লেনের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি বিধ্বস্ত করা হয়। ধারণা করা হয়, ছিনতাইকারীরা চতুর্থ প্লেনটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে আঘাত হানতে চেয়েছিল।

ওই হামলার পরই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্যামেরার সামনে বলেছিলেন, এটা আসলে ভালো একটা ঘটনা। কারণ এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে যা নিয়ে আমরা কয়েক দশক ধরে অস্তিত্বের লড়াই করছি।

২০০২ সালে মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যুদ্ধে যেতে গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে কখনো কখনো ‘বোমা মেরে বাধ্য করতে হয়’। তিনি ৯/১১ হামলার সঙ্গে পার্ল হারবারে জাপানি হামলার তুলনা করেছিলেন।

কত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল?

এসব হামলায় সব মিলিয়ে মারা যায় ২ হাজার ৯৭৭ জন। এর মধ্যে অবশ্য ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন নিউইয়র্কের মানুষ। চারটি প্লেনের ২৪৬ জন যাত্রী ও ক্রুর প্রত্যেকেই মারা যান। টুইন টাওয়ারের দুটি ভবনে মারা যান ২ হাজার ৬০৬ জন। তাৎক্ষণিক ও পরে আঘাত থেকে পেন্টাগনের হামলায় প্রাণ হারান ১২৫ জন।

সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল মাত্র দু’বছর। নাম ক্রিস্টিন লি হ্যানসন। বাবা-মায়ের সঙ্গে একটি প্লেনের যাত্রী ছিল সে। নিহত সর্বজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির নাম রবার্ট নর্টন। তার বয়স ছিল ৮২। তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি প্লেনে। স্ত্রী জ্যাকুলিনের সঙ্গে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।

প্রথম প্লেনটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন লোক ছিল। নর্থ টাওয়ারের যে অংশে প্লেন আঘাত করে, তার উপরের কোনো তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেনি। তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে প্লেন আঘাত করে, তার উপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণ নিয়ে বের হতে পেরেছিলেন। হতাহতের মধ্যে ৭৭টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষ ছিলেন। নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় দৌড়ে যান, তাদের মধ্যে মারা যান ৪৪১ জন।

হাজার হাজার মানুষ আহত হন, যারা পরে নানা ধরনের অসুস্থতার শিকার হন। যেমন দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হামলাকারীদের সম্পর্কে কী জানা যায়?

উগ্র মতাদর্শের কথিত ইসলামপন্থি সংগঠন আল-কায়েদা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোকে।

ছিনতাইকারী ছিল মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে, যারা প্লেন ছিনতাই করে হামলা চালায় টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে। আর যে প্লেনটি পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে, তার ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন।

প্রত্যেক দলে একজন ছিনতাইকারীর পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ ছিল। এই ছিনতাইকারীরা তাদের পাইলটের ট্রেনিং নেয় যুক্তরাষ্ট্রেরই একটি ফ্লাইং স্কুলে। ১৫ জন ছিনতাইকারী ছিল সৌদি নাগরিক। এছাড়া দুজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের, একজন মিসরের এবং একজন লেবাননের নাগরিক।

হামলার পর কী প্রতিক্রিয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের?

এই হামলার এক মাসেরও কম সময় পর আল-কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করা এবং ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করার ঘোষণা দিয়ে আফগানিস্তান আক্রমণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্র জোট। যুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায় প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এবং তাকে হত্যা করে।

নাইন ইলেভেন হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী খালিদ শেখ মোহাম্মদকে ২০০৩ সালে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানে। এরপর থেকে তাকে গুয়ান্তানামো বের বন্দিশিবিরে মার্কিন তত্ত্বাবধানে বন্দি রাখা হয়েছে।

আল-কায়েদা এখনো টিকে রয়েছে। আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে গোষ্ঠীটি সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী। তবে আফগানিস্তানের ভেতরেও তারা সক্রিয়। আক্রমণের প্রায় ২০ বছর পর ২০২১ সালে আফগানিস্তান ছেড়ে যায় পশ্চিমা বাহিনী। এরপর দেশটির ক্ষমতা দখল করে আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।


গ্রিসের বিখ্যাত ‘মুন বিচ’-এর কাছে বিতর্কিত হোটেলটির নির্মাণ বন্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গ্রিসের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন দ্বীপ মিলোসের সমুদ্র সৈকতের কাছে একটি বিতর্কিত হোটেল নির্মাণ প্রকল্প কয়েক মাস ধরে বিতর্কের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই সপ্তাহে একথা জানিয়েছে।

গত কয়েক দশক ধরে ব্যাপকভাবে অপরিকল্পিত নির্মাণের পর বেশিরভাগই জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপগুলোর স্থানীয় পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। এরপর থেকেই গ্রিসের বিচার বিভাগ নতুন প্রকল্পগুলোর তদন্ত জোরদার করেছে।

এথেন্স থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

মিলোস পৌর পরিষদ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের নগর পরিকল্পনা বিভাগ সারাকিনিকোর কাছে হোটেলটির নির্মাণ লাইসেন্স বাতিল করেছে। এটি চাঁদের মতো আগ্নেয়গিরির ভূদৃশ্যের জন্য ‘চাঁদের সমুদ্র সৈকত’ নামে পরিচিত।

কাউন্সিল বলেছে, ‘পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে, সব প্রয়োজনীয় অনুমোদন এবং সহায়ক নথিপত্র জমা দেওয়া হয়নি’।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইন এবং পরিবেশগত প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণরূপে মেনে না চললে কোনো নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাবে না’।

হোটেলটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর এই বিতর্ক ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় এবং কর্মকর্তারা নির্মাণের অনুমতিপত্র পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হন।

২০১৯ সালে এথেন্সের অ্যাক্রোপলিসের কাছের বাসিন্দারা গ্রিসের শীর্ষ প্রশাসনিক আদালতে একটি নতুন দশ তলা পাঁচ তারকা হোটেলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জিতেছিলেন। এই হোটেলটি ছিল এলাকার সবচেয়ে উঁচু ভবন। তাই হোটেলটি নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনা হয়েছিল।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে হোটেলের ওপরের দু’টি তলা অপসারণের নির্দেশ দেয়। এখন ২০২৭ সাল থেকে হোটেলটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


জেন-জির আন্দোলনে বিপর্যস্ত নেপাল, হেলিকপ্টারের দড়ি মন্ত্রীদের শেষ আশ্রয়

আপডেটেড ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:৩৬
ওসমান গনি,দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নেপালে সরকারবিরোধী আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়ে দেশটির একাধিক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রীও প্রাণে বাঁচতে বাধ্য হয়েছেন হেলিকপ্টারের দড়ি আঁকড়ে ধরতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, সামরিক।হেলিকপ্টার থেকে ঝোলানো দড়ি ধরে মন্ত্রী ও তাদের পরিবার মরিয়া হয়ে পালাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে একযোগে সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী এবং এমপিদের বাসভবনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তাদের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতে ভাঙচুর এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকসহ আরও কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গভর্নর বিশ্ব পাউডেলের বাসভবনও রক্ষা পায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তেজিত জনতা রাস্তায় ধাওয়া দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলকে মারধর করছে। আরেক ভিডিওতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস প্রধান শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু রানা দেউবাকে বিক্ষোভকারীদের হাতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। সেনারা পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।

এ সময় পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তাকে রেসকিউ করা হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দড়ি বেয়ে বা রেসকিউ বাস্কেটে ঝুলে মন্ত্রীদের এক হোটেলের ছাদে নামিয়ে দিচ্ছে সেনারা। আকাশে তখন ভাসছিল ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ঘিরে। তবে তা দ্রুত দেশজুড়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজধানী কাঠমান্ডুতে সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়।

শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভের তীব্রতায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। বুধবার সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল শুরু করে এবং জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়।

এদিকে, বিক্ষোভে সহিংসতায় জেন-জেড প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবং মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারের দড়ি ধরে পালানোর ভিডিও দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


এবার ইয়েমেনে হামলা চালাল ইসরায়েল, নিহত ৩৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও আল-জাওফ প্রদেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৩১ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বুধবার এ হামলা চালানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানায় আলজাজিরা। এ হামলার একদিন আগে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আলজাজিরা জানায়, সানার আল-তাহরির এলাকার আবাসিক ভবন, একটি চিকিৎসা কেন্দ্র এবং আল-জাওফ প্রদেশের রাজধানী আল-হাজমের সরকারি কমপাউন্ডে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে অনেকেই আটকে থাকতে পারেন।

হুথি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টিভি দাবি করেছে, হামলায় সানার দক্ষিণ-পশ্চিমের স্বাস্থ্য খাতের একটি মেডিকেল সেন্টার এবং আল-হাজমে স্থানীয় সরকারি কার্যালয় লক্ষ্যবস্তু করা হয়। বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন।

হুথি মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারে জানান, ইসরায়েলি হামলা প্রতিহত করতে তারা সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যবহার করেছেন। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে কিছু ইসরায়েলি বিমানকে পিছু হটতে বাধ্য করা হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, কিছু ইসরায়েলি বিমান তাদের অস্ত্র ব্যবহার করার আগেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
তিনি বলেন, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একাধিক সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল নিক্ষেপ করে জায়নবাদী আগ্রাসনের মোকাবিলা করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সানা ও আল-জাওফে হুথি গোষ্ঠীর সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল হুথিদের সামরিক শিবির, সামরিক জনসংযোগ সদর দপ্তর এবং একটি জ্বালানি সংরক্ষণাগার।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, রামন বিমানবন্দরে হুথিদের ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই এ আঘাত হানা হয়েছে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা আমাদের আক্রমণ করবে, আমরা তাদের খুঁজে বের করব এবং জবাব দেব।


ভারত নিয়ে ট্রাম্পের মিশ্র বার্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত যে ঠিক কী করবেন, তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আজ তিনি যা বলছেন, কাল তা বদলে দিচ্ছেন। তিনি যা বলছেন, তার ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে তাঁর উপদেষ্টার কণ্ঠে। ফলে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কযুদ্ধের পরিণতি শেষমেশ কী হবে, তা এখনো অজানা।

যদিও বুধবার সকালটা আরও একবার নতুন আশা জাগিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে ট্রাম্পের টুইট এবং কালক্ষেপ না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইতিবাচক প্রত্যুত্তর বাণিজ্য জটিলতা কাটানোর আশা জোরালো করেছে।

ভোরে (যুক্তরাষ্ট্রের সময় সন্ধ্যা) ট্রাম্প টুইট করে বলেন, ‘আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, দুই দেশের বাণিজ্য বাধা কাটাতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমার খুব ভালো বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা হবে। আমি নিশ্চিত, দুই মহান দেশের জন্যই ভালো হবে, বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে এমন সফল উপসংহারে পৌঁছতে আমাদের অসুবিধা হবে না।’

এক্সে ট্রাম্পের ওই টুইটের উত্তর দিতে মোদিও কালক্ষেপণ করেননি। ‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্বাভাবিক মিত্র’ উল্লেখ করে মোদি লেখেন, ‘দুই দেশের অংশীদারত্বে যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাণিজ্য আলোচনার মধ্য দিয়ে সেই জটিলতা কেটে যাবে। আমাদের প্রতিনিধি দল এই আলোচনা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কাজ করে চলেছে। আমিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় রয়েছি। দুই দেশ ও তার জনগণের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলতর ও সমৃদ্ধশালী করে তুলতে আমরা কাজ করে যাব।’

ট্রাম্পের কাছে ভারত বরাবরই ‘ট্যারিফ কিং’ বা শুল্ক সম্রাট। মার্কিন পণ্য আমদানি রুখতে ভারতের অত্যধিক শুল্ক ও অশুল্ক বাধার বিরুদ্ধে ট্রাম্প বরাবর সরব।

যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে সেই বাধা দূর করতে তিনি ভারতীয় রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তারপর রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ আরও ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা শুল্ক ধার্য করা হয়।

তখন থেকে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র শুল্কযুদ্ধ অব্যাহত। ট্রাম্পকে চাপে রাখতে চীন ও রাশিয়ার দিকে ভারত ঝুঁকেছে। তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে মোদি যোগ দেন। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকও করেন। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করা হবে না, সে কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই ট্রাম্পের দিক থেকে পরপর দুবার বার্তা দেওয়া হয়, যা মোদির কাছে ‘ইতিবাচক’ মনে হয়েছে।

তা সত্ত্বেও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক ঠিক কেমন হতে চলেছে। এর কারণ নানা সময়ে ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টাদের ভিন্নমুখী বার্তা। ট্রাম্প নিজেই কিছুদিন আগে এক বার্তায় বলেছিলেন, ‘মনে হচ্ছে ভারত ও রাশিয়াকে আমরা চীনের গহিন অন্ধকারে হারিয়ে ফেলছি।’

ট্রাম্পের সেই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আবার বলেন, ‘মোদি মহান প্রধানমন্ত্রী। তিনি সব সময় মোদির বন্ধু থাকবেন। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিশেষ ধরনের। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। মোদিও সেই দিনেই ওই মন্তব্যকে ‘ইতিবাচক’ আখ্যা দিয়ে ‘এক্স’ বার্তায় বলেন, ‘ভারত তার প্রতিদান দেবে।’

অথচ ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ভারতকে আক্রমণ করে একনাগাড়ে বিবৃতি দিয়েই চলেছেন। প্রথমে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেন। তারপর বলেন, ভারতের ব্রাহ্মণেরা রাশিয়ার তেল বেচে বড়লোক হচ্ছেন।

নাভারো বলেন, ভারত হলো ক্রেমলিনের হয়ে তেলের অর্থ পাচারকারী। ভারতকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হতে গেলে ভারতকে ঠিকমতো আচরণ করতে হবে। ট্রাম্পও মাঝেমধ্যে ভিন্ন সুরে কথা বলেছেন।

বুধবার ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য করার আগেই ট্রাম্প ইইউকে অন্য রকম পরামর্শ দেন। রয়টার্স সেই খবর দিয়ে জানায়, ট্রাম্প নাকি ইইউ কর্তাদের বলেছেন, চীন ও ভারতের ওপর তারা যেন ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যাতে ওই দুই দেশ রাশিয়া থেকে তেল না কেনে। তাতে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে।

ফলে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা কবে শেষ হবে, পরিণতিই–বা কী হবে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। একের পর এক পরস্পরবিরোধী মন্তব্য সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি করে চলেছে।


ভারতের নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন রাধাকৃষ্ণন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের নতুন উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডিকে হারিয়ে তিনি এ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই আগের উপরাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করায় মধ্যবর্তী ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৭৮১ সদস্যবিশিষ্ট ইলেকটোরাল কলেজ- যেখানে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যরা ভোট দেন- ভোটে রাধাকৃষ্ণন পান ৪৫২টি ভোট।

অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুপ্রিম কোর্ট সাবেক বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডি পেয়েছেন ৩০০ ভোট।

বিবিসি বলছে, দীর্ঘদিনের বিজেপি রাজনীতিক রাধাকৃষ্ণন বর্তমানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিতেও কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তিনি একজন ‘অসাধারণ উপ-রাষ্ট্রপতি’ হবেন এবং ‘সংবিধানিক মূল্যবোধ আরও শক্তিশালী করবেন।’

এই নির্বাচনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কারণ গত জুলাই মাসে জগদীপ ধনখড় হঠাৎ করেই স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। তিনি ২০২২ সালের আগস্টে দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং ২০২৭ সাল পর্যন্ত তার দায়িত্বে থাকার কথা ছিল।

ধনখড় পদত্যাগের পর বিরোধীদের মধ্যে গুঞ্জন ওঠে, হয়তো তার সঙ্গে শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বের সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল। যদিও ধনখড় নিজে বলেছেন, স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তিনি পদ ছাড়ছেন। কংগ্রেস নেতারা দাবি করেছিলেন, পদত্যাগের পেছনে আরও গভীর কারণ রয়েছে।

মোদি এ বিষয়ে শুধু তার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মন্তব্য সীমিত রাখেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘অকারণে বিষয়টি নিয়ে ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে।’

এদিকে মধ্যবর্তী সময়ে নির্বাচিত হলেও রাধাকৃষ্ণন পূর্ণ পাঁচ বছরের জন্য উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে মোট ৭৫৪টি ভোট পড়ে, যার মধ্যে ১৫টি অবৈধ ঘোষিত হয়। বৈধ ভোটের মধ্যে রাধাকৃষ্ণন পান ৪৫২টি, আর রেড্ডি পান ৩০০ ভোট।

৬৮ বছর বয়সী রাধাকৃষ্ণনের জন্ম ১৯৫৭ সালে ভারতের দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ুতে। কৈশোরে তিনি যোগদেন জাতীয় স্বয়ংসেবক সংঘে (আরএসএস), যা বিজেপির আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে পরিচিত। ধীরে ধীরে তিনি বিজেপির বিভিন্ন পদে ওঠেন এবং রাজ্য সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে কোয়েম্বাটুর আসন থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তার বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাব ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ার দক্ষতা নতুন ভূমিকায় সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শপথ নেওয়ার আগে তাকে অবশ্যই মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের পদ ছাড়তে হবে।

ভারতের সাংবিধানিকভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারী হলেন উপরাষ্ট্রপতি। তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে সাময়িকভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন উপরাষ্ট্রপতি।


কাতারে হামলার জন্য নেতানিয়াহুর ওপর অসন্তুষ্ট ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কাতারে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন।

গতকার মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এক ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্রের বিরুদ্ধে অন্য এক মিত্রের আক্রমণে তার কোনও ভূমিকা ছিল না।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, গাজা যুদ্ধের অবসান ও ফিলিস্তিনিদের হাতে বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী উপসাগরীয় রাষ্ট্রটিতে ইসরাইলি হামলার বিষয়ে তাকে আগে থেকে জানানো হয়নি।

ওয়াশিংটনের একটি রেস্তোরাঁয় ব্যতিক্রমী ভ্রমণের সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি পুরো পরিস্থিতি ও হামলা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়েই নিয়ে প্রচণ্ড অখুশি। পরিস্থিতি খুব একটা অনুকূলে নেই। তবে আজ ঘটনা যেভাবে মোড় নিল, সেটা নিয়ে আমরা খুশি না হলেও স্পষ্ট বলছি, আমরা জিম্মিদের ফেরত চাই।

আমিরাত সম্প্রতি ট্রাম্পকে তার প্রেসিডেন্ট বিমান হিসেবে ব্যবহারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ জেট বিমান দিয়েছে, যা একটি বড় নৈতিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘ কাতারে হামলার প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত ছিল, এটি আমার সিদ্ধান্ত ছিল না।’

তিনি বলেন, আমি কাতারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দেখি এবং দেশটিতে আক্রমণের খবর শুনে আমার খুব খারাপ লাগছে।


নেপালে জেন-জি অভ্যুত্থানের নেপথ্যে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি সপ্তাহে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা যখন রাস্তায় নামেন, তখন বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ ও হতাশার প্রকাশ বিস্ফোরণ হয়ে জ্বলে ওঠে। কয়েক দিন আগে প্রধান সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা কেবল তাদের ক্ষোভের আগুনে নাড়া দিয়েছে। নেপালের জেন-জির এ বিক্ষোভ কেবল তাদের নানা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই ছিল না, এটা ছিল তাদের দীর্ঘদিন ধরে চলা সামাজিক বঞ্চনায় ক্ষোভের প্রতিক্রিয়া।

গতকাল মঙ্গলবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। নেপালে রাজতন্ত্র থেকে বের হয়ে গণতন্ত্রে আসার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। এ রূপান্তরের সময়কালে অনেক সামাজিক সমস্যা দানা বাঁধতে থাকে। এ নিয়ে তরুণদের মধ্যে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ। এর জেরেই বিক্ষোভে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি ও তাঁর সরকারের অন্য মন্ত্রীরা পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ নয়। হিসাবনিকাশ কেবল শুরু হয়েছে।

বেকারত্ব ও বৈষম্য

নেপালের সবচেয়ে সমস্যা বেকারত্ব। দেশটির বিপুল সংখ্যক তরুণ বেকারত্বের কারণে জর্জরিত। তারা চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত তিন কোটি জনসংখ্যার পাহাড়ি দেশ নেপালে চাকরি খুঁজে বের করা কঠিন কাজ। ২০২৪ সালে নেপালের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস দেশটির জীবনযাপনের মান নিয়ে জরিপ করে। তখন নেপালে বেকারত্বের হার ছিল ১২ দশমিক ৬ শতাংশ, যা পাঁচ বছর আগের তুলনায় ১ পয়েন্টেরও বেশি।

এ পরিসংখ্যানগুলো সমস্যার তীব্রতাকে তুলে ধরে। এগুলো কেবল আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে, বেশির ভাগ নেপালিকে বাদ দেয়। যারা আনুষ্ঠানিকভাবে চাকরি ছাড়াই কাজ করেন, বেশির ভাগই কৃষিকাজ করেন। বেকারত্ব মূলত তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কেন্দ্রীভূত, যারা চাকরির প্রত্যাশা করেন।

দেশে কাজের সুযোগ না পেয়ে প্রতিদিন শত শত তরুণ-তরুণী মালয়েশিয়া ও পারস্য উপসাগরের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাজ করার জন্য দেশ ছেড়ে যান। এ ছাড়া নেপালের অনেকেই ভারতে কাজের জন্য যান। তারা সেখানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সরকারি তথ্য দেখায়, গত বছর সাত লাখ ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নেপাল ছেড়েছেন। তারা বিভিন্ন দেশে নির্মাণ বা কৃষিকাজ করতে গেছেন।

যেভাবে সূত্রপাত

গত বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় নেপালের কে পি শর্মা অলি সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিষেধাজ্ঞা জনমনে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী, যাদের আমরা জেন-জি বলে চিনি, তাদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। এর প্রতিবাদে গত সোমবার বিক্ষোভ শুরু করেন নেপালের হাজার হাজার মানুষ।

বিক্ষোভ দমনে সরকার কঠোর হলে ওই দিন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৯ জন নিহত হন। আহত হন চার শতাধিক। গতকাল মঙ্গলবার এ নিহত বেড়ে ২২ জনে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়। সেই কারফিউ ভেঙে গতকাল মঙ্গলবার ভোরেই বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা।


নেপালে ১৭ বছরে ১৩ বার সরকার বদল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আবারও সংকটে পড়েছে হিমালয়কন্যা নেপাল। টানা দুই দিনের জেন-জি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। এবার দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। গত ১৭ বছরে দেশটিতে ১৩ বার সরকার বদল হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চলমান এই অস্থিরতা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস। এমনকি ২০০৬ সালের গণআন্দোলনের চেয়েও ভয়াবহ, যখন জনগণের তীব্র বিক্ষোভে নেপালের শেষ রাজা জ্ঞানেদ্র শাহ নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। সেই আন্দোলনে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছিলেন।

এর দুই বছর পর ২০০৮ সালে সংসদের ভোটে নেপালের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং নতুন প্রজাতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।

তবে প্রজাতন্ত্র ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি দেশটিতে। ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭ বছরে নেপাল ইতোমধ্যেই ১৩ বার সরকার পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে।

কাঠমান্ডুর একজন বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম রাজতন্ত্র শেষ হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। কিন্তু বছর ঘুরে বছর শুধু দুর্নীতি, দলবাজি আর ক্ষমতার লড়াই বেড়েছে।

রাজতন্ত্র শেষ হওয়ার পরও দেশে একাংশ এখনো রাজতন্ত্র পুনর্বহালের পক্ষে সক্রিয়। চলতি বছরের মার্চে কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন।

আল-জাজিরা বলছে, অলি পদত্যাগ করলেও রাজনৈতিক সমাধান সহজ নয়। আন্দোলনকারীরা সরকারের বিলুপ্তি দাবি করলে তা দেশটিকে আরও অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত নতুন নেতৃত্ব ও কার্যকর রাজনৈতিক সমঝোতা না এলে নেপাল আবারও দীর্ঘমেয়াদি অস্থিতিশীলতার মুখে পড়তে পারে।


ট্রাম্পের ‘শেষ সতর্কবার্তার’ জবাব দিল হামাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের শর্ত মেনে নিতে হামাসকে ‘শেষ সতর্কবার্তা’ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শর্তগুলো মেনে না নিলে পরিণতি কী হবে, তা-ও সংগঠনটিকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এমন হুঁশিয়ারির পর হামাস বলেছে, দ্রুত আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত আছে তারা।

গাজায় ২৩ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে।

সবশেষ হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজায় বন্দি সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে তারা। তবে পরে ইসরায়েল এর সঙ্গে হামাসের অস্ত্রসমর্পণসহ আরও বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়।

তার পর থেকে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি থমকে ছিল। এর মধ্যে রোববার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ইসরায়েলিরা আমার শর্তগুলো মেনে নিয়েছেন।

এখন হামাসেরও মেনে নেওয়ার সময় এসেছে। মেনে না নিলে পরিণতি কী হবে, সে বিষয়ে হামাসকে আমি সতর্ক করেছি। এটি আমার শেষ সতর্কবার্তা।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের শর্তগুলো কী কী, তা খোলাসা করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগেও একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে ইসরায়েল। তারপরও গাজায় ইসরায়েল হামলা বাড়িয়েছে বৈ কমায়নি। এমনকি আলোচনার মধ্যেই গত মাস থেকে গাজা নগরী দখলে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ট্রাম্পের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। তাদের খবরে বলা হয়েছে, প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় বন্দি সব জিম্মীকে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই মুক্তি দিতে হবে।

বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় ব্যাপক পরিসরে হামলা চালানো বন্ধ রাখবে ইসরায়েল।

এ সময় ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে সংঘাত পুরোপুরি থামানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করা হবে। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় বর্তমানে ৫০ জন জিম্মি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়।

ট্রাম্পের এ প্রস্তাবের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি ইসরায়েল। তবে রোববার হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধের যেকোনো উদ্যোগকে স্বাগত জানায় হামাস।

একই সঙ্গে গাজায় বন্দি সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত আছে তারা। তবে এর বিনিময়ে গাজায় হামলা বন্ধের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে।

গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আর স্বাধীন ফিলিস্তিনিদের নিয়ে এমন একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যারা সংঘাত শেষ হওয়ার পর দ্রুত গাজা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারবে।

এর আগেও একাধিকবার হামাসকে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। শিগগিরই সংঘাত শেষ হবে, এমন পূর্বাভাসও দিয়েছেন। শেষ গত ২৫ আগস্ট তিনি বলেছিলেন যে তিন সপ্তাহের মধ্যে এই সংঘাত ‘চূড়ান্তভাবে শেষ’ হবে।

এ ছাড়া ক্ষমতায় বসার পর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানায় ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিনোদনকেন্দ্র’ গড়ে তোলার কথাও বলেছিলেন তিনি।


banner close