মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

দুই বছরব্যাপী প্রতিদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতা আছে ইরানের

দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৭ জুলাই, ২০২৫ ২১:৫২

ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এর একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ইরানের এখনো দুই বছর ধরে প্রতিদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর মতো পর্যাপ্ত সামরিক সক্ষমতা রয়েছে।

সোমবার (০৭ জুলাই) মেজর জেনারেল ইব্রাহিম জাব্বারি আধা-সরকারি মেহের নিউজ এজেন্সিকে বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাদের প্রস্তুতির শীর্ষে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে, আমাদের গুদাম, ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং সুযোগ-সুবিধা এত বিশাল যে, আমরা এখনো আমাদের বেশিরভাগ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা এবং কার্যকর ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করতে পারিনি।’

আইআরজিসি উপদেষ্টার ভাষ্য, ‘ইসরায়েল এবং আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষেত্রে, আমরা যদি দুই বছর ধরে প্রতিদিন তাদের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে মারি, তবুও আমাদের স্থাপনাগুলো খালি হবে না।’

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ইরানের মাটিতে বিমান হামলা চালিয়ে আগ্রাসন শুরু করে। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ইরান প্রতিশোধ নেয়।

এরপর নয় দিন ধরে ইসরায়েলি হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়ে যায় ইরান। ২২ জুন ভোরে মার্কিন ভারী বোমারু বিমানগুলো তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ করে এবং সংঘর্ষে প্রবেশ করে।

পরের দিন সন্ধ্যায় তেহরান কাতারে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক বিমানঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। মার্কিন কর্তৃপক্ষের মতে, কোনো হতাহত বা উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি।

এরপর ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল এবং ইরান সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষও জানায়, তারা মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে তাদের অভিযানের সমস্ত উদ্দেশ্য সম্পন্ন করেছে। পরিবর্তে তেহরান বলেছে, তারা আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করে তেল আবিবের ওপর বিজয় অর্জন করেছে।


ইরান ছেড়েছে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার আফগান: আইওএম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম সোমবার জানিয়েছে, তেহরান ৬ জুলাইয়ের মধ্যে কাগজ পত্রবিহীনদের ইরান ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর জুনের শুরু থেকে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার আফগান নাগরিক ইরান থেকে নিজ দেশে ফিরেছেন।

কাবুল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

তেহরান মে মাসের শেষের দিকে ৬ জুলাইয়ের মধ্যে কাগজপত্রবিহীন আফগানদের দেশত্যাগ করার নির্দেশ দেয়।

এই ঘোষণা ইরানে বাসবাসরত প্রায় ষাট লাখ আফগানের মধ্যে চল্লিশ লাখ আফগানের ওপর এর প্রভাব ফেলছে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গত জুনের মাঝামাঝি থেকে সীমান্ত অতিক্রমকারী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কিছু দিন ধরে পশ্চিম হেরাত প্রদেশের ইসলাম কালা দিয়ে প্রায় ৪০হাজার লোক পার হতে দেখা গেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, গত ১ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ৪ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ জন আফগান ইরান থেকে নিজ দেশে ফিরে গেছে।

তিনি আরো বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৬ হাজার ৩শ’ ২৬ জন আফগান ইরান ছেড়েছেন।

অনেকেই কর্তৃপক্ষের চাপ, গ্রেপ্তার ও নির্বাসন এবং দ্রুত দেশত্যাগের তাড়াহুড়োয় ইতিমধ্যেই কিছু অর্থ হারানোর কথা জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক বেসরকারি গোষ্ঠী ও তালেবান কর্মকর্তারা ইরান প্রত্যাবর্তনকারী আফগানদের সহায়তার জন্য আরো তহবিলের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এই অনুপ্রবেশ ইতোমধ্যেই দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত ধাক্কায় জর্জরিত আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

জোরপূর্বক আফগানদের ফেরত না পাঠানোর জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর শুক্রবার (০৪ জুলাই ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আফগানদের ফিরে যেতে বাধ্য করা বা চাপ দেওয়া, এই অঞ্চলে আরো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে এবং আফগানদের ইউরোপের দিকে অগ্রসর হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করবে।’


অগ্রগতি ছাড়াই শেষ ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের আলোচনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কোনো অগ্রগতি ছাড়াই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সর্বশেষ পরোক্ষ যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। স্থানীয় সময় রবিবার (৬ জুলাই) কাতারের দোহায় দুটি আলাদা ভবনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, আলোচনা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে বার্তা ও ব্যাখ্যা বিনিময় হয়, তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আলোচনার পরবর্তী ধাপ সোমবার (৭ জুলাই) আবার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দুপক্ষের মধ্যকার বাধাগুলো দূর করে সমঝোতার পথ খুঁজতে মধ্যস্থতাকারীরা উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দুই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বক্তব্য জানিয়েছে বিবিসি। এতে বলা হয়, ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল ‘যথেষ্ট ক্ষমতাসম্পন্ন’ ছিল না, কারণ তাদের কাছে ‘বাস্তবিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা’ ছিল না।

এমন এক সময় এ আলোচনা চলছে, যখন ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকটি যুদ্ধবিরতি ও গাজায় আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অর্জনের জন্য তিনি তার আলোচকদের ‘পরিষ্কার নির্দেশনা’ দিয়েছেন, যা ইসরায়েলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য।

এদিকে, সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখানোর দাবি করেছে হামাস। তবে এখনও দুপক্ষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যা দূর না হলে চুক্তি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য হামাসের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো—যেকোনো সমঝোতার শেষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা। এ অবস্থানে তারা এখনও অনড়।

তবে নেতানিয়াহুর সরকার এর আগেও এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এখনও ইসরায়েলি অবস্থানে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে রওনা হওয়ার আগে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি এখনো তিনটি লক্ষ্যেই অটল—‘সব জিম্মি, জীবিত ও মৃতদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা; হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে গাজা থেকে উৎখাত করা; এবং গাজা যেন আর কখনোই ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করা।’

কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের জন্য এই পরোক্ষ আলোচনা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত মার্চের আগের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে এ ধরনের নানা উদ্যোগ একই জায়গায় এসে আটকে গেছে।

সেই সময় থেকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র সামরিক অভিযান শুরু করেছে। পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর ১১ সপ্তাহের অবরোধও আরোপ করে, যা কয়েক সপ্তাহ আগে আংশিকভাবে শিথিল করা হয়।

ইসরায়েলি সরকার বলছে, এসব পদক্ষেপ হামাসকে আরও দুর্বল করা এবং তাদেরকে আলোচনায় বসতে ও জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করতেই নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা হামাসের ১৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

তবে গাজায় বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় রবিবার অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

এখন প্রশ্ন হলো— কাতারে চলমান এই আলোচনা কি সত্যিই দুপক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে? আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কি নেতানিয়াহুকে রাজি করাতে পারবেন যে, এই যুদ্ধের ইতি টানতে হবে?

ইসরায়েলের অনেকেই মনে করছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের বাঁচাতে যুদ্ধ বন্ধের মূল্য দেওয়ার এখনই সময়।

শনিবার রাতেও তারা জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এ সময় দ্রুত চুক্তি করে জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান তারা।


ইয়েমেন জুড়ে হুথিদের অবস্থানে ইসরাইলের হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইয়েমেনের হুদাইদা বন্দরনগরীসহ হুথি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন এলাকায় একযোগে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। সোমবার ভোরে দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইয়েমেন থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। যদিও সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, হুথিদের সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। টার্গেটগুলোর মধ্যে ছিল হুদাইদা, রাস ইসা ও সালিফ বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুথিদের বারবার হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার আগে হুথি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন রোববার জানায়, ইসরাইলি শত্রুরা হোদেইদা বন্দর লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। এছাড়া রাস ইসা ও সালিফ বন্দরের পাশাপাশি রাস আল-কাথিব বিদ্যুৎকেন্দ্রেও হামলা হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই স্থানগুলোতে সম্ভাব্য হামলার সতর্ক করার আধ ঘন্টা পরেই হামলা চালানো হয়।

২০২৩ সালে অক্টোবরে হামাসের ইসরাইল আক্রমণের পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকেই ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করছে হুথি বিদ্রোহীরা। গত মার্চে দু’মাসের যুদ্ধবিরতি শেষ হলে গাজায় আবারো সামরিক অভিযান শুরু করে তেল আবিব। তখন থেকে ফের হামলা শুরু করে হুথিরাও।

হুথি বিদ্রোহীদের দাবি, তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এ হামলা চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তারা লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিপিং জাহাজগুলোতেও আক্রমণ করছে।

ইসরাইল বলছে, হুথিদের দখলে থাকা ‘গ্যালাক্সি লিডার’ কার্গো জাহাজেও হামলা চালানো হয়েছে। জাহাজটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে হুথি বিদ্রোহীরা দখলে নেয়। এরপরে রেড সিতে শিপিং ট্র্যাক করার জন্য সেটিতে রাডার ব্যবস্থাও বসায়।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে লোহিত সাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জাহাজগুলোকেও যুক্ত করে বিদ্রোহীরা।

গত মে মাসে হুথিরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। যার ফলে তাদের বিরুদ্ধে চলা তীব্র মার্কিন হামলার অবসান ঘটে। কিন্তু ইসরাইলি জাহাজগুলোতে হামলা অব্যাহত রাখে হুথিরা।


নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার দাবি মাস্কের, ট্রাম্প বললেন ‘হাস্যকর’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক কর ছাড় আইনের জবাবে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হুমকি এবার বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তার এই সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘দেশকে দেউলিয়া করার এই অপচয় ও দুর্নীতির খেলায় আমাদের এখানে আসলে একদলীয় শাসন চলছে, গণতন্ত্র নয়। আজ আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আমেরিকা পার্টি গঠন করা হল।’

একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্ক ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওইজি) নামে পরিচিত সরকারের খরচ কমানো সংস্থার প্রধান ছিলেন। তবে প্রেসিডেন্টের এই কর ছাড় আইন নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন। শুক্রবার এই আইনটি চূড়ান্তভাবে স্বাক্ষরিত হয়।

আইনটি কংগ্রেসে পাস হওয়ার পথে থাকতেই মাস্ক হুমকি দেন, ‘যদি এই বেসামাল খরচের বিল পাস হয়, তাহলে আমি আমেরিকা পার্টি গঠন করব।’

যদিও হোয়াইট হাউসে তার শেষ দিকে মাস্ক বলেছিলেন— ভবিষ্যতে তিনি রাজনীতিতে ‘অনেক কম’ অর্থ ব্যয় করবেন।ি

এদিকে, রবিবার (৬ জুলাই) নিউ জার্সির নিজ বাসা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার আগে মাস্কের এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্কের এই উদ্যোগ পুরোপুরি হাস্যকর।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে আমরা দারুণ সাফল্য অর্জন করেছি। তাছাড়া, ডেমোক্রেটরা তাদের পথ হারিয়েছে, কিন্তু এটা বরাবরই দ্বিদলীয় ব্যবস্থা ছিল। আমার মনে হয় তৃতীয় দল গঠন শুধু বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করবে। এটা মূলত দুই দলের জন্যই তৈরি ব্যবস্থা।’

এ ছাড়া, তৃতীয় দলগুলো কখনোই কার্যকর হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নয়, তবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন টেনে নেওয়া সাধারণত কঠিন। তবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক, যিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পেছনে অন্তত ২৫ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন।

যদি তিনি ২০২৬ সালের কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণ নির্ধারণকারী নির্বাচনে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেন, তবে ভোটের সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে।

তবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার পুনরায় শুরু হওয়া দ্বন্দ্ব মাস্কের জন্য আর্থিকভাবে বিপর্যয়করও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ সরকার থেকে কোটি কোটি ডলারের চুক্তির ওপর নির্ভরশীল তার ব্যবসা এবং তার কোম্পানি টেসলা ইতোমধ্যেই শেয়ারবাজারে ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে মাস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করেছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। রবিবার মাস্ক বা তার রাজনৈতিক কমিটি আমেরিকা পিএসির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

যদিও রবিবার সকালে মাস্ক এক্স পোস্টের মাধ্যমে পার্টি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মতামত নিচ্ছিলেন এবং এই দল ব্যবহার করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সক্রিয় হবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

গত মাসেও ট্রাম্পের বিলের পক্ষে ভোট দেওয়া প্রতিটি কংগ্রেস সদস্যকে তিনি নির্বাচনে পরাজিত করার চেষ্টা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। ওই বিলে ফেডারেল ঘাটতি আরও বাড়াবে বলে সতর্ক করেছিলেন।

এদিকে, রবিবার সিএনএনর ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘ডিওজিউয়ের নীতিগুলো জনপ্রিয় হলেও, ইলন মাস্ক মোটেও জনপ্রিয় ছিলেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, তার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কালকের (শনিবার) ঘোষণায় মোটেই খুশি হননি এবং তাকে তার ব্যবসায় মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করবেন, রাজনীতিতে নয়।’


টেক্সাসে বন্যায় নিহত বেড়ে অর্ধশত, ২৭ কিশোরীসহ নিখোঁজ বহু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১৫টি শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ৫১ ছাড়িয়েছে। স্থানীয় গোয়াডালুপ নদীর উচ্চপ্রবাহের কারণে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এখনও ২৭ কিশোরীসহ বহু মানুষের সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজদের উদ্ধারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান ও এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে এসব তথ্য জানা যায়। স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি ৪৫ মিনিটের মধ্যে ২৬ ফুট বেড়ে গিয়ে মৃত্যু ও বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তারা। মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বহু ঘরবাড়ি, গাড়ি ভেসে গেছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) ভোরে টেক্সাসের কেরি কাউন্টিতে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে। এতে ওই এলাকায় ৪৩ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া, এর আশপাশের বিভিন্ন জেলায় আরও অন্তত ৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউ) কেরি কাউন্টির বিভিন্ন এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি রেখেছে।

গার্ডিয়ান জানায়, গোয়াডালুপ নদীর তীরে ক্যাম্প মিস্টিক নামের খ্রিস্টান মেয়েদের গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে ৭৫০টির বেশি শিশু অবস্থান করছিল। ওই ক্যাম্পের ২৭ কিশোরি এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের জানিয়েছে, বন্যার প্রবল ঢলে ভেসে যাওয়াদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার ও ড্রোনের মাধ্যমে উদ্ধার অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত ৮৫০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ৫টি শিশুর পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

টেক্সাস রাজ্যের জরুরি বিভাগের প্রধান নিম কিড বলেন, ‘প্রতিটি নিখোঁজ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।’

এদিকে, টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেন, ‘নিখোঁজদের কেউ কেউ গাছের ডালে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। আমরা তাদের জীবিত উদ্ধারের জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার, কয়েকশত উদ্ধারকারী দল ও দেশটির সেনাসদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিবারগুলো নিখোঁজ স্বজনদের ছবি দিয়ে সাহায্য চাচ্ছেন।

এদিকে, এত ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য অনেকেই ট্রাম্প প্রশাসনকে দোষারোপ করছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প প্রশাসন আবহাওয়া বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থায় বাজেট ও কর্মী সংখ্যা ব্যাপক কমিয়েছে।

অনেকের অভিযোগ, এর কারণেই পূর্বাভাস ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে সঠিক সময়ে মানুষের কাছে সকর্তবার্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে, স্থানীয় কর্মকর্তারা অভিযোগ করে জানান, তারা এমন ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস পাননি।

তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে স্থানীয় আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তা অ্যাভেরি তোমাসকো দাবি করেন, ‘বিপর্যয়ের ১২ ঘণ্টা আগেই কেরি কাউন্টিতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।’

দেশটির জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউ) বলছে, শুক্রবার রাতেই অন্তত ৩০ হাজার মানুষের জন্য বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তবে, স্থানীয়রা জানান, রাতের আঁধারে পরিস্থিতি এত দ্রুত খারাপের দিকে যাবে, সেটি অনেকেই বুঝে উঠতে পারেননি।

উদ্ধার অভিযান চলতে থাকলেও নিখোঁজ শিশুদের ভাগ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে পরিবারগুলোর। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা রাষ্ট্রীয় ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছি। বন্যাদুর্গতদের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রার্থনা ও সমবেদনা রইল।’

টেক্সাসের হিল কান্ট্রি অঞ্চলের অর্থনীতিতে নদী পর্যটনের বড় ভূমিকা রয়েছে। শতবর্ষ পুরনো গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু ও পর্যটক বেড়াতে আসেন।


ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল 'আমেরিকা পার্টি' গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ওসমান গনি,দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ও টেসলা-স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার) এ তিনি 'আমেরিকা পার্টি' নামে এই নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার কথা জানান।

মাস্কের এই ঘোষণা এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বিরোধের প্রেক্ষাপটে। গত সপ্তাহে তিনি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে "অমানবিক" বলে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন, যা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিবাদই মাস্ককে বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

'আমেরিকা পার্টি'র মূল লক্ষ্য হিসেবে মাস্ক তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন:
১. প্রযুক্তি বান্ধব নীতি
২. অভিবাসন সংস্কার
৩. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে "অকার্যকর ও অতিমাত্রায় বিভাজনমূলক" বলে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, মাস্কের এই নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দুই-দলীয় ব্যবস্থায় এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।রাজনৈতিক মহলে এই ঘোষণা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। রিপাবলিকান নেতারা একে "অভিজাত শ্রেণীর রাজনৈতিক অভিযান" বলে আখ্যায়িত করলেও কিছু প্রগতিশীল নেতা এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৪২% ভোটার নিজেদের স্বতন্ত্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

ঘোষণার পরপরই 'আমেরিকা পার্টি'র ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছাসেবক নিবন্ধন শুরু হয়েছে। মাস্ক আগামী সপ্তাহে দলের বিস্তারিত কর্মসূচি ও কাঠামো প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সারা উইলিয়ামস বলেন, "মাস্কের জনপ্রিয়তা ও প্রযুক্তি খাতে প্রভাব নতুন দলটিকে প্রাথমিক সুবিধা দিলেও, স্থানীয় পর্যায়ে শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া কঠিন হবে।"

এদিকে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "মাস্কের এই উদ্যোগ রিপাবলিকান ভোট বিভাজনের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জন্য সহায়ক হতে পারে।"

প্রসঙ্গত, ইলন মাস্ক ২০২২ সালে এক্স (সাবেক টুইটার) ৪৪ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেন। তারপর থেকে তিনি এই প্ল্যাটফর্মটিকে তার রাজনৈতিক মতামত ও বার্তা প্রচারের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। তার এই নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ মার্কিন রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে, সে বিষয়ে বিশ্লেষকগণ সতর্ক পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন।


গাজার শিশুরা এখন চামড়া ও হাড্ডিসার হয়ে গেছে: চিকিৎসক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজা উপত‌্যকা, মধ‌্যপ্রাচ‌্যের এমন এক টুকরো ভূমি যেখানে জন্মই যেন হয়ে উঠেছে আজন্ম পাপ। শিশুরা তো পৃথিবীতে আসে প্রকৃতির নিয়মে। তার জন্মে পরিবারে নেমে আসে খুশির ছটা। কিন্তু গাজায় একটি শিশু জন্মালে প্রথমেই তার বাবা-মাকে চিন্তা করতে হয়— এই শিশুটিকে কী খাওয়াব? কখন যেন বোমার আঘাতে মারা যায় শিশুটি—সেই দুশ্চিন্তায় তটস্থ হয়ে থাকে তাদের মন।

টানা যুদ্ধে গাজার প্রাণহানি তো বিশ্ববাসীর চোখ তো এড়ায়নি। তবে আগ্রাসনের নতুন কৌশল হিসেবে ইসরায়েল যখন গাজায় খাবারসহ মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়, তখন বিশেষজ্ঞরা বারবার যে দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, আজ তা বাস্তব। শুধু তা-ই নয়, গাজার ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খাবারকে মানুষ মারার কৌশল হিসেবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এর এসবের মধ্যে সবচেয়ে করুণ দশায় রয়েছে একেকটি নতুন প্রাণ। সেখানকার শিশুদের অবস্থার ভয়বহতা বর্ণনা করতে গিয়ে এক ডাক্তার বলেন, ‘ওরা শুধু চামড়া ও হাড্ডিসার হয়ে গেছে।’

বর্তমানেও উপত্যকায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ সীমিত করে রেখেছে ইসরায়েল। ফলে খাদ্যের মারাত্মক ঘাটতির কারণে শত শত শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন গাজার চিকিৎসকরা।

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. আহমদ আল-ফাররা দ‌্য গার্ডিয়ানকে বলেন, তার ওয়ার্ডে মাত্র সপ্তাহখানেকের শিশুখাদ্য অবশিষ্ট আছে। ইতোমধ্যেই প্রি-ম্যাচিউর (অকালে জন্মানো) শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট করা বিশেষ ফর্মুলা (খাবার) শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে নবজাতকদের জন‌্য বাধ্য হয়ে সাধারণ শিশুখাদ‌্যই ব্যবহার করছেন তারা।

তিনি বলেন, ‘কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তা বর্ণনা করার ভাষা আমার নেই। এই মুহূর্তে আমাদের হাতে প্রায় এক সপ্তাহের মতো ফর্মুলা (শিশুখাদ‌্য) আছে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের বাইরেও অনেক শিশু আছে, যাদের জন্য কোনো দুধই নেই। ভয়াবহ ব্যাপার চলছে এখানে।’

ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় সম্পূর্ণভাবে সহায়তা বন্ধ করে রাখায় গাজায় শিশুখাদ্যের মজুদ ক্রমেই কমছে। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গাজা হিউম‌্যানেটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সীমিত পরিসরে খাদ্য সহায়তা দিলেও তাতে শিশুখাদ্য থাকে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

পাঁচ সন্তানের জননী ২৭ বছর বয়সী হানাআ আল-তাওয়িল বর্তমানে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বাস করছেন। এই নারী জানান, তিনি নিজেই পর্যাপ্ত খাবার পান না। তাই নিজের সন্তানের জন্য বুকের দুধও তৈরি হচ্ছে না। ১৩ মাস বয়সী সন্তানের জন্য তাই শিশুখাদ্য খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন এই মা।

হানাআ বলেন, ‘ছেলের জন্মের পর থেকেই দুধের সমস্যা শুরু হয়। আমার অপুষ্টি ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে জন্মের পর থেকেই আমি ওকে ঠিকমতো স্তন্যদান করতে পারিনি।’

অপুষ্টির কারণে তার ছেলের বিকাশ পিছিয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি নিজেও লক্ষ‌ করেছেন, তার অন‌্য সন্তানরা এই বয়সে হাঁটতে ও কথা বলতে শুরু করলেও এই শিশুটি তা করতে পারছে না।

একরাশ হতাশা ও কষ্ট নিয়ে হানাআ বলেন, ‘যখন সে ঘুমায়, পাশে এক টুকরো রুটি রেখে দিই। কারণ প্রায়ই সে রাতে জেগে উঠে খাবারের জন্য কাঁদে। সারাক্ষণ অসহনীয় দুঃখ ও আশঙ্কা আমার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। ভাবি—আমার সন্তানরা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় শেষ পর্যন্ত মারা যাবে না তো!’

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৬ ফিলিস্তিনি শিশু অনাহারে মারা গেছে।

ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এটি ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর একটি কৌশল বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

গাজায় মানবিক সহায়তা সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কগাটের দাবি, তারা গাজায় শিশুখাদ্য, ফর্মুলা ইত্যাদি প্রবেশে কোনো বাধা দিচ্ছে না। সংস্থাটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ১ হাজার ৪০০ টনের বেশি শিশুখাদ্য গাজায় পাঠানো হয়েছে।

তাদের অভিযোগ, চিকিৎসকরা গাজায় প্রবেশের সময় তাদের ব্যক্তিগত ব্যাগে শিশুখাদ্যের কৌটা ভরে নিয়ে যাচ্ছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এক মার্কিন চিকিৎসকের ব্যাগ থেকে একবার ১০টি শিশুখাদ্যের কৌটা জব্দ করে বলেও জানায় সংস্থাটি।

এক ফিলিস্তিনি-জার্মান চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. ডায়ানা নাজ্জাল, যিনি মার্কিন চিকিৎসকের ব্যাগ এমনভাবে গুছিয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন যাতে তা ইসরায়েলি সীমান্ত কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত তারা সব কৌটা জব্দ করল, যেগুলো অকালে জন্মানো শিশুদের জন্য বিশেষ ফর্মুলা ছিল। শিশুখাদ্য দিয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তার কী ক্ষতি হতে পারে?’

নাজ্জাল আরও জানান, অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী গাজায় প্রবেশের সময় ওষুধের বদলে প্রোটিন বার ও বাদামজাতীয় উচ্চ-ক্যালরির খাবারে তাদের ব্যাগ ভরছেন।

ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের কারণে গাজায় ক্ষুধা সংকট তীব্র হওয়ায় শিশুখাদ্যের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। প্রায় ৫ লাখ মানুষ চরম ক্ষুধার্ত অবস্থায় আছেন, বাকি জনগণও রয়েছেন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে। যেসব মায়েরা নিজেরাই তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছেন অথবা মারা গেছেন, তারা শিশুকে স্তন্যপান করতে পারছেন না। এই কারণে ফর্মুলার প্রয়োজন আরও বেড়েছে।

এদিকে, বাজারে সামান্য যে ফর্মুলার সরবরাহ আছে, তার দাম আাকশছোঁয়া। এক কৌটা ফর্মুলা কিনতে প্রায় ৫০ ডলার লাগছে—যা স্বাভাবিকের চেয়ে দশগুণ বেশি।

খান ইউনিসে আশ্রয় নেওয়া ২৫ বছর বয়সী তিন সন্তানের জননী নূরহান বারাকাত বলেন, ‘আমি এক মাসের মতো স্বাভাবিকভাবে স্তন্যদান করতে পেরেছিলাম, কিন্তু খাবারের অভাবে আর তা চালিয়ে যেতে পারিনি।’

বুকভরা কষ্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জানি, স্তন্যদান মা-সন্তানের বন্ধন মজবুত করে, কিন্তু আমি আর কী করতে পারি?’


আমি ইরানের চেয়ে রাশিয়ায় আরও কঠোর: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পুতিনের সঙ্গে গত ৩ জুলাইয়ের টেলিফোন কথোপকথনের কথা স্মরণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি মনে করি ইরানের চেয়ে রাশিয়ায় আমি আরও কঠোর।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পরেই কিয়েভে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালায় মস্কো।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অনেক কথা বলেছি। পুতিন নিষেধাজ্ঞাগুলো সামাল দিতে করতে সক্ষম হয়েছেন। ইউক্রেনের সংঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন রাশিয়াবিরোধী নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আমরা নিষেধাজ্ঞাগুলো নিয়ে অনেক কথা বলি। কিন্তু পুতিন বুঝতে পারেন যে, এটি আসতে পারে। তিনি একজন পেশাদার। তিনি এই সম্ভাবনা নিয়ে উত্তেজিত নন।

৩ জুলাই পুতিন এবং ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন। এটি ছিল দেড় মাসের মধ্যে তাদের চতুর্থ এবং বছরের শুরু থেকে ষষ্ঠ কথোপকথন। ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের জানান, রাশিয়ান এবং মার্কিন নেতাদের মধ্যে টেলিফোনে কথাবার্তা প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল। দুই নেতা ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি, অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।


ভয়াবহ দাবানলের কারণে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিরিয়ার উপকূলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে বড় ধরনের দাবানলের কারণে আবাসিক এলাকাগুলো থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় কয়েক দিন ধরে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। দমকল কর্মীরা প্রবল বাতাস এবং তীব্র খরার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন।

দামেস্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, লাতাকিয়া প্রদেশের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল কাফি কায়্যাল রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানাকে বলেন, কাস্তাল মা’আফ এলাকায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা এসব এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছেন।

সিরিয়ার সিভিল ডিফেন্স (যা হোয়াইট হেলমেটস নামেও পরিচিত) জানিয়েছে, ‘উঠে আসা ধোঁয়ার বিস্তার উপকূলীয় পর্বতমালার উত্তরাংশ, হামা শহর ও তার আশপাশ এবং দক্ষিণ ইদলিব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।’

তারা আরও জানায়, ‘লাতাকিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া দাবানলের কারণে অনেক বাগানের ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে।’

নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, কেউ যদি সন্দেহভাজনভাবে আগুন লাগানোর সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তার সম্পর্কে যেন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে খরা ও দাবানলের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিরিয়াও এর ব্যতিক্রম নয়— সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি তীব্র তাপপ্রবাহ, কম বৃষ্টিপাত এবং বড় বড় দাবানলের সম্মুখীন হচ্ছে।

গত জুনে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এএফপিকে জানায়, সিরিয়া গত ৬০ বছরে এমন খারাপ জলবায়ু পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি।

সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, নজিরবিহীন খরার কারণে ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে।

দেশটি একইসঙ্গে এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ধকলেও বিপর্যস্ত। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসানের পরবর্তী রূপান্তরও এখনো চলমান রয়েছে।

কায়্যাল বলেন, ওই অঞ্চলে আগের যুদ্ধের রেখে যাওয়া মাইন ও অবিস্ফোরিত বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধারকাজকে ব্যাহত করছে। পাশাপাশি প্রবল বাতাস আগুন ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে।


নাইজারে হামলায় ১০ সেনা নিহত, আহত ১৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নাইজারের পশ্চিম সীমান্তের কাছে বুরকিনা ফাসোতে শুক্রবার সন্দেহভাজন জিহাদিদের জোড়া হামলায় ১০ জন সেনা নিহত ও ১৫ সেনা আহত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে নাইজারের নিয়ামে থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় অংশ নেওয়া ৪১ জন হামলাকারীও নিহত হয়েছে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি বর্তমানে সামরিক জান্তা কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে।

গত এক দশক ধরে আল-কায়েদা ও ইসলামিক জিহাদি সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সামরিক জান্তা লড়াই করছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল সালিফু মোদি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কয়েক শত হামলাকারী একযোগে গোথেয় বিভাগের বোলাউন্ডজৌঙ্গা ও সামিরায় হামলা চালিয়েছে।

জাতীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় ১০ জন সৈন্য নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, শত্রুপক্ষের ৪১ জনকে হত্যা করা হয়েছে।

গোথিয়ে বিভাগটি মালি ও বুরকিনা ফাসো সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং দীর্ঘদিন ধরে জিহাদি হামলার জন্য পরিচিত একটি অঞ্চল।


যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ সই করবেন ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ শুক্রবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রধান অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ সই করবেন। বিলটিতে রয়েছে বিপুল করছাড়, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি ও অভিবাসী বহিষ্কারে বরাদ্দ—যা তার র‌্যাডিকাল দ্বিতীয় মেয়াদের রূপরেখা স্থাপন করে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, এ উপলক্ষে হোয়াইট হাউজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আতশবাজি, যুদ্ধবিমান প্রদর্শন এবং ইরানে বোমাবর্ষণে অংশ নেওয়া বিমানচালকদের উপস্থিতি থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হওয়ার কথা।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘যেমনটা প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই চেয়েছেন, এই ঐতিহাসিক বিলটি স্বাধীনতা দিবসে সই করা হবে।’

অনুষ্ঠানে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও অংশ নেবেন। তিনি জানান, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ২২ জুন বোমা হামলায় ব্যবহৃত বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান এবং যুদ্ধবিমানগুলো ৪ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেবে।

আইওয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘আজ আমেরিকা পৃথিবীর ‘হটেস্ট’ দেশ, এটা আমাদের স্বর্ণলী যুগ। এই বিল সইয়ের মাধ্যমে আমি আমার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছি।’

বিলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানো, অভিবাসনবিরোধী অভিযান চালানো এবং করছাড় সম্প্রসারণে ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে আগামী এক দশকে ৩.৪ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি বাড়বে এবং গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চালু থাকা মেডিকেইড ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে ব্যাপক কাটছাঁট করা হবে।

অনুমান করা হচ্ছে, এর ফলে ১ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন নাগরিক তাদের স্বাস্থ্যবীমা হারাতে পারেন এবং বহু গ্রামীণ হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বিলটি কংগ্রেসে পাস করাতে ট্রাম্পের চাপের মুখে রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন শেষ রাতে দলীয় সমর্থন নিশ্চিত করেন। শেষ পর্যন্ত বিলটি হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ২১৮-২১৪ ভোটে পাস হয়।

এমনকি ট্রাম্পের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহচর ইলন মাস্কও এ বিলের কড়া সমালোচনা করেছেন।

ডেমোক্র্যাটরা আশা করছেন বিতর্কিত এই বিলের কারণে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তারা হাউজে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পেতে পারে। তাদের মতে, বিলটি ‘নিম্নবিত্ত থেকে ধনীদের কাছে সম্পদ স্থানান্তরের এক নগ্ন উদাহরণ’।

ট্রাম্প অবশ্য এসব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমরা জিতেছি। আমরা আমেরিকাকে আরও মহান করে তুলেছি।’


যে কুখ্যাত কারাগারে বন্দি ছিলেন খামেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বর্তমানে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে তাকে হত্যার হুমকি দেয় তেলআবিব ও ওয়াশিংটন। তবে ক্ষমতায় আসা ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী নেতা হওয়াটা খামেনির পক্ষে এতটা সহজ ছিল না। তার শুরুর জীবনটা ছিল কষ্টে ভরা। দীর্ঘ আট মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাকে। এই সময়টিকে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় বলে বর্ণনা করেন।

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আগে শাহ রেজা পাহলভির শাসনামলে যে কারাগারটিতে তাকে বন্দি করা হয়েছিল, তা এখন এব্রাত জাদুঘর নামে পরিচিত। তেহরানের একসময়ের কুখ্যাত কারাগার এব্রাত জাদুঘর কেবল তার নৃশংস ইতিহাসের জন্যই নয়, বরং এখানে অনেক বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বন্দি ছিলেন বলেও পরিচিত।

কারাগারে খামেনির সময়কাল

পাহলভি শাসনের বিরুদ্ধে ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময়ে পাহলভির গোপন পুলিশ বাহিনী ‘সাভাক’ খামেনির ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায়। তাকে এব্রাত জাদুঘরে সে সময়ের ‘জয়েন্ট কমিটি অ্যাগেইনস্ট সাবোটেজ’ কারাগারে ছয়বার বন্দি করে রাখা হয়। জাদুঘরের একটি সংকীর্ণ করিডোরে বন্দিদের ছবি রয়েছে, যার মধ্যে বাদামি ফ্রেমে আয়াতুল্লাহ খামেনির একটি ছবিও রয়েছে। তার নামের নিচে ফার্সি ভাষায় লেখা, আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনি।

জাদুঘরটিতে একটি ছোট, আবছা আলোকিত কক্ষও রয়েছে, যেখানে খামেনিকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেই কক্ষে কালো পাগড়ি, গোলাকার চশমা এবং বাদামি পোশাক পরা খামেনির একটি মোমের মূর্তি রয়েছে, যার তার কষ্ট ও সংকল্পের প্রতীক।

খামেনিকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন

১৯৬২ সালে খামেনি শাহের যুক্তরাষ্ট্রপন্থি ও ইসলাম-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে কোমে ইমাম খোমেনির নেতৃত্বে বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি মাশহাদের আয়াতুল্লাহ মিলানি এবং অন্যান্য ধর্মগুরুদের কাছে ইমাম খোমেনির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালে, তিনি প্রথমবারের মতো বিরজান্দে গ্রেপ্তার হন এবং এক রাত কারাগারে থাকেন।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে, খামেনি মাশহাদের তিনটি ভিন্ন মসজিদে কোরআন এবং ইসলামী আদর্শের ওপর ক্লাস নেন। তার বক্তৃতা, বিশেষ করে ইমাম আলীর নাহজ আল-বালাগার ওপর হাজার হাজার যুবক এবং ছাত্রকে আকৃষ্ট করেছিল। এর ফলে ১৯৭৫ সালে মাশহাদে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ষষ্ঠবারের মতো তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বই ও নোট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এবার, তাকে তেহরানের কুখ্যাত ‘পুলিশ-সাভাক যৌথ কারাগার’ (বর্তমানে ইব্রাত জাদুঘর) এ কয়েক মাস আটক করে রাখা হয়।

ইসলামী বিপ্লবে খামেনির অবদান

খামেনির বিপ্লবী কর্মকাণ্ড শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে যখন তিনি ইমাম খোমেনির শিষ্য হন। তিনি শাহের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর যখন শাহের শাসনের পতন ঘটে এবং খোমেনি প্যারিস থেকে তেহরানে ফিরে আসেন তখন খামেনির ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পদমর্যাদা বৃদ্ধি পায়। তাকে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত করা হয় এবং তেহরানে জুম্মার নামাজের ইমাম হন তিনি, এই পদে এখনো অধিষ্ঠিত তিনি। এরপর ১৯৮৯ সালে, তিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত হন।

জাদুঘরে খামেনির স্মৃতি

এব্রাত জাদুঘরে খামেনির ছবি এবং মোমের মূর্তি রয়েছে, যা শাহের শাসনামলে তার বিপ্লবী সংগ্রাম এবং কষ্টের প্রতিফলন। জাদুঘরের এক কর্মকর্তার মতে, ‘আল্লাহ খামেনিকে জাতির নেতা হিসেব নির্ধারিত করেছিলেন।’

এব্রাত জাদুঘর ভবনটি ১৯৩২ সালে নির্মিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির নির্দেশে জার্মান প্রকৌশলীরা এটি নির্মাণ করেন। ইরানের প্রথম আধুনিক কারাগার হিসেবে এটির নকশা করা হয়, যা প্রাথমিকভাবে নাজিমিয়া কমপ্লেক্সের অংশ ছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে এটি দেশের প্রথম নারী কারাগার হয়ে ওঠে। তবে, এর সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যবহার ছিল ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে মোহাম্মদ রেজা পাহলভির (দ্বিতীয় পাহলভি) রাজত্বকালে। সেসময় এটি ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনের বিরোধীদের আটক ও নির্যাতন করার জন্য ব্যবহৃত হত। এই সময়কালে, কারাগারটি সাভাকের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর কারাগারটির নামকরণ করা হয় ‘তোহিদ কারাগার’ এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। পরে মানবাধিকার সংস্থার তদন্তের পর এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০২ সালে, ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংস্থা এটিকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করে, যা এখন দর্শনার্থীদের সেই যুগের বর্বরতা এবং নিপীড়নের গল্প বলে।


banner close