রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২

নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদিকে প্রাণনাশের হুমকি

দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১২ জুলাই, ২০২৫ ২১:১০

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ইরানের মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি তেহরান থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি। শুক্রবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে নোবেল কমিটি এ কথা জানায়।

নারী ও মানবাধিকারের পক্ষে লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে নার্গিসকে ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়। বিখ্যাত এই মানবাধিকারকর্মী গত এক দশকের বেশির ভাগ সময় কারাবন্দি ছিলেন। গত ডিসেম্বরে চিকিৎসাজনিত কারণে তাকে তেহরানের এভিন কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। তবে তার আইনজীবীরা বারবার আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন, যেকোনো সময় তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

নরওয়ের নোবেল কমিটির সভাপতি ইয়র্গেন ওয়াটনে ফ্রাইদনেস বিবৃতিতে বলেন, তিনি নার্গিস মোহাম্মদির কাছ থেকে একটি ‘জরুরি ফোনকল’ পেয়েছেন। ৫৩ বছর বয়সি নার্গিস তাকে জানিয়েছেন, তার জীবনের নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

ফ্রাইদনেস বলেন, তার নিজের ভাষায়, ‘আমি শাসকগোষ্ঠীর এজেন্টদের কাছ থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ‘শারীরিকভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার’ হুমকি পেয়েছি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নার্গিস মোহাম্মদিকে দেওয়া হুমকি থেকে এটি স্পষ্ট যে তিনি যদি ইরানের অভ্যন্তরে সব ধরনের জনসম্পৃক্ততা এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রচার বা গণমাধ্যমে অংশগ্রহণ থেকে নিজেকে দূরে না রাখেন, তাহলে তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

কমিটি জানায়, তারা নার্গিস মোহাম্মদিসহ দেশটির শাসকগোষ্ঠীর সমালোচক যেসব নাগরিক এ ধরনের হুমকিতে রয়েছেন, তাদের নিয়ে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের আহ্বান, ‘তাদের কেবল প্রাণ রক্ষাই নয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করতে হবে।’


ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির জেরে শেয়ারবাজারে পতন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তার এই ঘোষণার ফলে শুক্রবার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।

নিউইয়র্ক থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্প ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি না হলে শুল্ক আরোপ করবেন বলে সরকারগুলোর কাছে ২০টিরও বেশি চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে বাজারের আগের ইতিবাচক প্রত্যাশা হঠাৎ নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে, বিটকয়েনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। যা সর্বোচ্চ ১১৮,০০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

ডলার অন্যান্য প্রধান মুদ্রার তুলনায় শক্তিশালী এবং তেলের দামও উর্ধ্বমুখী ছিল।

ওয়াল স্ট্রিটের তিনটি প্রধান সূচকই পতনের মুখে পড়ে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক রেকর্ড উচ্চতা থেকে পিছিয়ে আসে, তবে পতন ছিল তুলনামূলকভাবে সীমিত।

অনেক বিনিয়োগকারী এখনো ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করছেন।

৫০ পার্ক ইনভেস্টমেন্টের বিশ্লেষক অ্যাডাম সারহান বলেন, ‘আমরা এখনো বড় ধরনের নতুন শুল্ক কার্যকর হতে দেখিনি। যা বিনিয়োগকারীদের দ্বিধা প্রকাশ করে।’

অক্সফোর্ড ইকোনমিক্স এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলোকে আরও শুল্ক নাটকীয়তা” বলে অভিহিত করেছে। তারা আশঙ্কা করেছে, কানাডার উপর শুল্ক আরোপের হুমকি বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।

ইউরোপের বিনিয়োগকারীরাও ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনার দিকে নজর রাখছেন। ফলে প্যারিসের সূচক ০.৯ শতাংশ এবং ফ্রাঙ্কফুর্টের সূচক ০.৮ শতাংশ কমেছে।

বিশ্লেষক প্যাট্রিক ও’হেয়ার বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো পরিষ্কার নয়, কারণ বাজার এখনো এসব হুমকিকে কৌশলগত আলোচনার অংশ হিসেবে দেখছে।’

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আরও বলেন, কানাডা ৩৫ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হবে, অন্যদিকে অন্যান্য দেশগুলোর উপরও শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত করা হবে।

তিনি আরও জানান, তামার আমদানিতে ৫০ শতাংশ এবং ওষুধে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। পাশাপাশি ব্রাজিলের পণ্য আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও দেন।

হোয়াইট হাউস বলেছে, এসব পদক্ষেপ মার্কিন অর্থনীতিকে ‘দীর্ঘদিনের অবহেলার হাত থেকে রক্ষা করার প্রচেষ্টার অংশ।

এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার ফলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও পরে তা স্থগিত হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়। সর্বশেষ ঘোষণাগুলোর প্রভাব তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি মে মাসে অপ্রত্যাশিতভাবে সংকুচিত হয়েছে। এটি টানা দ্বিতীয় মাসের পতন। ফলে লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক ও ব্রিটিশ পাউন্ডের মান কমেছে।

এশিয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। হংকং বেড়েছে, টোকিওতে পতন হয়েছে তবে সাংহাই সূচক প্রায় অপরিবর্তিত ছিল।

এদিকে, লেভি স্ট্রস অ্যান্ড কোং ৬.৪ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি মুনাফাও বাড়িয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১১.৩ শতাংশ বেড়ে গেছে, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপে ডেনিম ব্যবসায় শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির কারণে।


উড্ডয়নের পরপরই জ্বালানি ‘শেষ হয়ে গিয়েছিল’ এয়ার ইন্ডিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের আহমেদাবাদে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে জানা গেছে। ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (এএআইবি) প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত ১২ জুন লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ ফ্লাইটটি (বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার) আকাশে ওড়ার অল্প সময়ের মধ্যেই একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হন। তাছাড়া, যে এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, সেখানবকারও ১৯ জন নিহত হন। এটি ছিল গত এক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা।

আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বিধি মতে, দুর্ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে তদন্তকারী রাষ্ট্রকে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে হয়।

ভারতের তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বোয়িং কিংবা ইঞ্জিন নির্মাতা জিই’র কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। বরং ককপিটের যে সুইচগুলো দিয়ে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেগুলো ‘কাট-অফ’, অর্থাৎ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটি স্থানীয় সময় দুপুর ১ টা ৩৮ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে ১৮০ নট ইন্ডিকেটেড এয়ারস্পিড (আইএস) গতি অর্জন করে। ঠিক তার পরপরই ইঞ্জিন ১ এবং ইঞ্জিন ২–এর জ্বালানি সরবরাহ সুইচগুলো ‘রান’ থেকে ‘কাট-অফ’ অবস্থায় চলে যায়। এটি মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে এই অবস্থায় চলে যায়। এর ফলে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে ইঞ্জিন দুটির এন১ ও এন২ মান কমতে শুরু করে।

প্রতিবেদন আরও জানানো হয়েছে, রানওয়ের সীমানা প্রাচীর অতিক্রম করার আগেই বিমানটির উচ্চতা কমতে শুরু করে। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার থেকে জানা গেছে, এক পাইলট অপর পাইলটকে ওই সময় জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কেন জ্বালানি বন্ধ করলে?’

জবাবে অপর পাইলট বলেন যে, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।

তবে কোন পাইলট এই কথা বলেছিলেন কিংবা কে ‘মে ডে, মে ডে, মে ডে’ সংকেত পাঠিয়েছিলেন, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ নেই।

দুর্ঘটনায় নিহত বিমানটির কমান্ডার ছিলেন ৫৬ বছর বয়সী সুমিত সাবরওয়াল, যার ১৫ হাজার ৬৩৮ ঘণ্টার বেশি ফ্লাইট পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল। এ ছাড়া এয়ার ইন্ডিয়ার প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। সহকারী পাইলট ক্লাইভ কুন্ডারের বয়স ছিল ৩২ বছর, তার মোট ফ্লাইট অভিজ্ঞতা ছিল ৩ হাজার ৪০৩ ঘণ্টা।

তবে সুইচগুলো কীভাবে কাট-অফ অবস্থায় গেল, প্রতিবেদনে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জন কক্স বলেন, ‘পাইলটের পক্ষে ভুল করে এই সুইচ টেনে ফেলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘এই সুইচগুলো এমন নয় যে হঠাৎ ধাক্কা লাগলে নিজেরা সরবে।’ সুইচগুলোর কাট-অফ মোডে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।

সাধারণত রানওয়েতে পৌঁছানোর পর ফ্লাইটের ইঞ্জিন বন্ধ করতে কিংবা বিশেষ জরুরি পরিস্থিতিতে, যেমন: ইঞ্জিনে আগুন লাগলে এই সুইচ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ওই ফ্লাইটে এমন কোনো জরুরি পরিস্থিতির কথা প্রতিবেদনে বলা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ব্রিকহাউস বলেন, ‘যদি পাইলট সুইচ ঘুরিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি তা কেন করলেন?’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুটি সুইচ এক সেকেন্ডের ব্যবধানে কাট-অফ অবস্থায় চলে যায়।

বিশেষজ্ঞ জন ন্যান্সের মতে, সময়ের এই ব্যবধান দেখেই বোঝা যায়, একজন ব্যক্তি প্রথমে একটি এবং পরেই আরেকটি সুইচ ঘোরালে এমনটি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘উড্ডয়নের ঠিক পরপরই পাইলট কখনোই স্বেচ্ছায় এই সুইচ বন্ধ করবেন না।’

প্রতিবেদনের একটি অংশে বলা হয়, ইঞ্জিন ১ কাট-অফ হওয়া সত্ত্বেও কিছুটা পুনরুদ্ধার শুরু করেছিল, তবে ততক্ষণে বিমানের গতি কমে যাওয়া তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইঞ্জিন ১–এর ‘কোর ডেসিলারেশন’ বন্ধ হয়ে উল্টো ঘুরে গিয়ে কিছুটা পুনরুদ্ধার শুরু করে, তবে ইঞ্জিন ২ ‘রিলাইট’ (পুনরায় চালু) হলেও গতি কমা ঠেকাতে পারেনি।

এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এক বিবৃতিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছে, এই প্রতিবেদনটিতে বোয়িং ৭৮৭ জেট বা জিই ইঞ্জিন পরিচালকদের জন্য কোনো সতর্কতামূলক সুপারিশ নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, তারা তদন্তে বেরিয়ে আসা সত্যের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং কোনো ঝুঁকি চিহ্নিত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

তাছাড়া বোয়িং জানিয়েছে, তদন্তকাজে তারা এয়ার ইন্ডিয়াকে সহায়তা করছে। তবে জিই অ্যারোস্পেসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে অন্তত পাঁচটি ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং নিচে থাকা ১৯ জন মারা গেছেন। বিধ্বস্ত হওয়া ভবনগুলোর মধ্যে একটি ছিল বাইরামজি জিজিভয় মেডিকেল কলেজ ও সিভিল হাসপাতালের ছাত্রাবাস।

দুর্ঘটনার কয়েকদিন পর দুটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হয়। ১৩ জুন একটি ব্ল্যাক বক্স দুর্ঘটনাস্থলের একটি ভবনের ছাদ থেকে এবং ১৬ জুন অপরটি ধ্বংসস্তূপের ভেতরে পাওয়া যায়।

তবে পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রতিবেদনে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই ফ্লাইটপথে পাখির তেমন উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি বলেও জানানো হয়েছে।

বিমানটিতে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ, একজন কানাডীয় এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন।

এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একমাত্র যাত্রী হিসেবে বেঁচে যান ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ। তিনি বিমানের ধ্বংসস্তূপের একটি ফাঁকা জায়গা দিয়ে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

হাসপাতালের শয্যা থেকে গত মাসে রমেশ বলেছিলেন, ‘উড্ডয়নের ঠিক পরপরই মনে হয়েছিল বিমানটি যেন আকাশে আটকে গেছে। এরপর বিমানের লাইটগুলো জ্বলা–নেভা শুরু করে।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই বিমানটি একটা ভবনে ধাক্কা মেরে বিস্ফোরিত হয়।’

‘আমি ভাবতেই পারিনি বেঁচে যাব। এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল, আমিও মারা যাব। কিন্তু যখন চোখ খুলে চারপাশে তাকালাম, তখন বুঝলাম বেঁচে আছি। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না—কীভাবে বেঁচে ফিরলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজের সিটবেল্ট খুলে পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে বেরিয়ে আসি। জানি না কীভাবে বেঁচে গেছি। আমার চোখের সামনেই মানুষ মরতে দেখেছি—এয়ার হোস্টেসরা, আমার পাশের দুজন… আমি হাঁটতে হাঁটতে ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে এসেছি।’


গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

আপডেটেড ১২ জুলাই, ২০২৫ ১০:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা গোষ্ঠীর ত্রাণ নিতে গিয়ে গত ৬ সপ্তাহে অন্তত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৭ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আমাদের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে, এবং ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন অন্যান্য ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে।’

জিএইচএফ গাজায় মে মাসের শেষ দিকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করে। সংস্থাটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থায় কাজ করছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থায় হামাস ত্রাণ সরিয়ে নিচ্ছিল।

ইসরায়েলি বাহিনী যেসব জায়গায় তৎপর সেই জায়গাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে জিএইচএফ। সেখানে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করা শত শত ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পর জাতিসংঘ জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিকে ‘মূলত ঝুঁকিপূর্ণ’ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতিমালার লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে। তবে জিএইচএফ গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, জাতিসংঘ নিহতের যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিপূর্ণ।

জিএইচএফ তাদের ত্রাণ বিতরণস্থলগুলোতে এমন প্রাণঘাতী কিছু হওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। জিএইচএফ এর মুখপাত্র বলেছেন, আসলে জাতিসংঘের ত্রাণবহরের কাছেই বেশিরভাগ প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে।

তবে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর- এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, ফিলিস্তিনি নিহতের পরিসংখ্যান তারা দিয়েছেন গাজার হাসপাতাল, কবরস্থান, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, এনজিও এবং ফিলিস্তিনিদের পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। ২৭ মে থেকে ওএইচসিএইচআর এর রেকর্ড অনুযায়ী, ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে হামলায় বেশির ভাগ ফিলিস্তিনিই গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আরেক ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সদের তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন ওই সেনা। সম্প্রতি তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ফিরে এসেছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, নিহত ওই সেনা গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তিনি গাজা থেকে ফিরে ঘাঁটিতে বিশ্রামে ছিলেন এবং সেখানে সামরিক পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয় এবং তার অস্ত্র জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তবে হারেৎজ জানায়, তিনি ঘুমন্ত বন্ধুর অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে গুলি করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তদন্তের বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’ বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

জানা গেছে, ওই সেনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু গত মাসে গাজার একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে।

গত রোববার এক রিজার্ভ সেনা মানসিক চাপের কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সাফেদের কাছে জঙ্গলে আত্মহত্যা করেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২১ জন আত্মহত্যা করেছেন। আর মে মাসে হারেৎজ জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২ ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।


ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।

ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।

এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।

তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।

দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।

এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৬

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৮:১০
বাসস

ইসরাইলি হামলায় শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ছয় জন নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে ।

গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

সংস্থাটি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-নাজলায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী হালিমা আল-সাদিয়া স্কুলে ইসরাইলি হামলায় পাঁচ জন শহীদ এবং অনেকেই আহত হয়েছেন।’

সংস্থাটি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা শহরে আরেকটি পৃথক হামলায় কমপক্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

শুক্রবার মধ্য গাজার নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং অন্যান্য পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা এবং বিবরণ যাচাই করতে পারেনি।

দক্ষিণ গাজা থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপি’র সঙ্গে কথা বলা এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক দেখা গেছে, সেখানে আক্রমণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ‘এই এলাকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। এখানে ব্যাপক গুলিবর্ষণ, প্রায়ই বিমান হামলা ও কামানের গোলাবর্ষণ এবং আল-মাসলাখের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে বুলডোজার দিয়ে বাস্তুচ্যুত শিবির ও কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে।’


মার্কিন পণ্যে পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে পাল্টা একই হারে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ বসাবো।’

ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করে দেশটিকে ‘উইচ-হান্ট’ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ব্রাজিল সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আপিল করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এবং ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে লুলা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ট্রাম্পের ঘোষণার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে—তা নির্ধারণে একটি স্টাডি গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ব্রাজিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানো হবে।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশকে নতুন শুল্কের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। চুক্তি না হলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।


মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মারাঠি ভাষা অধিকার রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

খবরে বলা হয়, ভাষা নিয়ে চলমান এই বিতর্কের সূত্রপাত এপ্রিল মাসে। সে সময় মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা দেয়, রাজ্য পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও মারাঠির পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাও শেখানো হবে। রাজ্য সরকারের দাবি, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির (এনইপি) অংশ।

১৯৬৮ সালে চালু হওয়া এনইপি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই প্রণয়ন করা হয়। সময়ে সময়ে এই নীতিতে সংশোধন আনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছর আগে এর সর্বশেষ সংস্করণ চালু করেন, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

রাজ্যটির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।


খাবার নিতে আসা শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমার্জনীয়’ হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও রাফায় ফিলিস্তিনিদের বিতর্কিত পুনর্বাসন পরিকল্পনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন শিশুদের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে ৯টি শিশুর।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চালানো হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯টি শিশু ও ৪ জন নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯টিই শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল হামলাটিকে ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। এটি গাজায় চলমান ভয়াবহতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’

তিনি বলেন, ‘অপর্যাপ্ত সহায়তার কারণে গাজায় শিশুদের না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। জরুরি সহায়তা ও সেবা পূর্ণমাত্রায় চালু না হলে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’


কানাডার পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসাতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, কার্যকর ১ আগস্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে।

বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই কথা জানান।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের এমন ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি গেছে বিশ্বের নানা দেশের নেতার কাছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবেই এসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকিতে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

একইসঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকো উভয়ই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছে, যাতে উত্তর আমেরিকার তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।

২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুরোনো (নাফটা) বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করা হয়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এর পরবর্তী পর্যালোচনা হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প নানা দেশে শুল্ক আরোপ করে পর্যালোচনার প্রক্রিয়াই অস্থির করে তুলেছেন।

শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় কানাডা ও মেক্সিকোর বহু পণ্যের ওপর। কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।

বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এ দুই দেশকে একাধিকবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

তবে পরবর্তীতে ইউএসএমসিএ চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি ছাড় দেন, যার ফলে বড় পরিসরের পণ্য শুল্কমুক্ত হয়।

বৃহস্পতিবারের চিঠিটি এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছিল। এমনকি এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানো নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরের মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও আবার দেখা হয় দুই নেতার। সম্মেলনে ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা।

এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডা যে কর আরোপ করেছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ত্যাগ করলেও পরে আবার আলোচনা শুরুর পথ খুলে যায়।

অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশকে এখনো এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। সেটিও কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।

তিনি জানান, ব্রাজিলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যদি এর আগেই কোনো সমঝোতা না হয়।

এনবিসি’কে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হবে ‘আজ বা আগামীকাল (শুক্রবার)’।

এদিকে, ট্রাম্পের হুমকির পর বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে দেশটি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।

ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।


গাজায় শর্তসাপেক্ষে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি অভিযান। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২১:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গাজায় হামাস যদি অস্ত্র ত্যাগ করে তাহলে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে। তবে হামাস সাড়া না দিলে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

গাজায় একটি অভিযানে খান ইউনিসে এক আইডিএফ সেনা নিহত হয়েছেন। হামাস যোদ্ধারা তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল। ইসরায়েলি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই ঘটনার জন্য হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা দায়ী করেছেন। এছাড়া পশ্চিম তীরে এক ইসরায়েলি সেনা ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন এবং গাজায় কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সৌদি আরব এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গাজায় নিহত ২৪

যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে আরও ২৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়ে বলেছেন, এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে গাজায় একটি চুক্তির ‌‌‘খুব ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলের একগুঁয়েমির কারণে কাতারে আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে।

বেশ কিছু চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা আরও তীব্র করেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এই উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৯ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়েছিল।

গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ৭৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা

গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মানবিক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় ৭৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, মানবিক সাহায্য বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর কেন্দ্রগুলোতে ২৭ মে থেকে নিহতের সংখ্যা ৭৭০ ছাড়িয়ে গেছে।

আল জাজিরা এর আগে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, অস্থিতিশীলভাবে ত্রাণ সরবরাহের মধ্যে ২১ লাখ গাজাবাসী খাদ্যের সন্ধানে মরিয়া হয়ে আছে। দিনকে দিন অবরুদ্ধ অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে হতাশা বাড়ছেই।

১৮ মে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে তাদের বৃহৎ স্থল আক্রমণ ‘গিডিওনস চ্যারিয়টস’-এর অংশ হিসেবে গণহত্যা শুরু করে। এর ঘোষিত লক্ষ্য হলো হামাসের সম্পূর্ণ পরাজয় এবং সেখানে আটক সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই অভিযানের পর তাদের বাহিনী সমগ্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু নিহত

গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি মেডিকেল পয়েন্টের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু ও দুই নারীসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে সেখানকার এক হাসপাতাল জানিয়েছে। আল-আকসা মার্টায়ার্স হাসপাতাল বলছে, দেইর আল-বালাহ এলাকায় পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টের জন্য লাইন দাঁড়ানো লোকদের ওপর ওই হামলা হয়েছে।

হাসপাতাল থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে একাধিক শিশুর মরদেহ এবং আরও কিছু আহত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এ খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখছে।

পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট বলতে সাধারণত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, ওমেগা সাপ্লিমেন্ট ও গুড়ো প্রোটিনের মতো নানা সহায়ক পথ্যকে বোঝায়। গাজার ওই মেডিকেল পয়েন্ট থেকে কী কী পাওয়া যাচ্ছিল তা জানা যায়নি।

নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলাকালেও ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডটিতে তেল আবিবের হামলা থেমে নেই। প্রতিদিনই তাদের হামলায় গাজায় ডজন ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে।

দোহার এ আলোচনায় কাতার ও মিসরের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্রও। আলোচনায় শিগগিরই ফল আসবে বলে ওয়াশিংটন আশাবাদ ব্যক্ত করলেও হামাস ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দ্রুত কোনো ‘ব্রেক থ্রুর’ আশা দেখা যাচ্ছে না। গত বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

এমন এক সময়ে তিনি এ কথা বললেন যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর চলছে। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, দুই পক্ষ ৬০ দিনের কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে, ইসরায়েল ওই সময়টাকে যুদ্ধের একটি স্থায়ী সমাপ্তির প্রস্তাব দেওয়ার জন্য কাজে লাগাতে চায়, সেখানে অবশ্যই হামাসকে নিরস্ত্র হওয়ার শর্ত দেওয়া হবে। যদি হামাস অস্ত্র সমর্পণে রাজি না হয়, তাহলে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ‘অব্যাহত থাকবে’। এর আগে হামাস বলেছিল, আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে উঠেছে, এজন্য ইসরায়েলি ‘একগুঁয়েমিকেও’ দায়ী করেছে তারা।

ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলছে, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়ে তারা নমনীয়তার পরিচয় দিয়েছে। তারা ইসরায়েলি হামলার অবসান ঘটাবে এমন ‘বিস্তৃত’ চুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।


ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, কপার শুল্ক কার্যকর আগস্টে: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কপার আমদানির ওপর "জাতীয় নিরাপত্তা" ভিত্তিক শুল্ক কার্যকর হবে।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্প ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থী নেতা জাইর বলসোনারোর বিচারকে ‘আন্তর্জাতিক অপমান’ বলে উল্লেখ করেন।

বলসোনারো ২০২২ সালের নির্বাচনে লুলার কাছে পরাজয়ের পর অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি।

ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত চিঠির জবাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা একতরফা শুল্ক বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ব্রাজিলের অর্থনৈতিক পারস্পরিকতার আইনের আলোকে এই ধরনের পদক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার ব্রাজিল জানিয়েছে যে তারা বোলসোনারো বিচারের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের আগের সমালোচনার জন্য মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছেন।

ট্রাম্প তার চিঠিতে বলেছেন যে ব্রাজিলের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ট্রাম্প বুধবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেন, একই তারিখ হতে, গ্রিন এনার্জি এবং অন্যান্য প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি মূল ধাতু তামার মার্কিন আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটি "শক্তিশালী জাতীয় নিরাপত্তা মূল্যায়ন" অনুসরণ করে সম্ভবত এই বছরের শুরুতে শুরু হওয়া তামার উপর বাণিজ্য বিভাগের তদন্তের প্রতিফলন। ট্রাম্প বলেছেন, প্রতিরক্ষা বিভাগে তামা দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত উপাদান।

শুল্কে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা: লুলাকে পাঠানো চিঠিটি ছিল সোমবার থেকে শুরু হওয়া ট্রাম্পের ২০টিরও বেশি অনুরূপ চিঠির সর্বশেষ। এসব চিঠিতে তিনি পারস্পরিক বাণিজ্য না হওয়ার অভিযোগ তুলে নানা দেশের ওপর একতরফাভাবে শুল্ক নির্ধারণ করছেন।

ব্রাজিল এতদিন ১০ শতাংশের প্রাথমিক শুল্ক হারের বাইরে ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের সাথে পণ্যে বাণিজ্য উদ্বৃত্তে রয়েছে।

বুধবার ট্রাম্প ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, ব্রুনেই, আলজেরিয়া, লিবিয়া, ইরাক ও মলডোভাসহ একাধিক দেশের নেতাদের চিঠি পাঠান। যেখানে ২০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা রয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

মার্চ-এপ্রিলে এই শুল্ক পরিকল্পনার প্রথম ধাপে যে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তার তুলনায় এবার কিছু দেশে তুলনামূলকভাবে কম শুল্ক আরোপ হয়েছে।

এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও, তখন আরও বেশি হারের শুল্ক ঘোষণা করে তা স্থগিত রাখেন। এগুলোর কার্যকর সময়সীমা ছিল বুধবার, যা পরে তিনি ১ আগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দেন।

এখন শুল্কের নির্দিষ্ট হার উল্লেখ করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্প এসব পদক্ষেপকে “অপারস্পরিক বাণিজ্য সম্পর্কের” জবাব বলে উল্লেখ করেছেন।

এই চিঠিগুলোতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করলেই তারা শুল্ক এড়াতে পারবে। অন্যথায় পাল্টা ব্যবস্থা নিলে আরও শুল্ক আরোপের হুমকি রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের লক্ষ্যবস্তু মূলত এশীয় দেশগুলো হলেও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র সঙ্গে আলোচনার দিকে এখন সবার দৃষ্টি।

ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেন, তার সরকার ‘সম্ভবত দুই দিনের মধ্যেই’ ইইউ’র কাছে নতুন শুল্ক হারের একটি চিঠি পাঠাবে।

বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘আসন্ন দিনগুলোতে’ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়।

এই সব দেশের পণ্যের ওপর শুল্কের পাশাপাশি ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরার পর স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ি শিল্পের ওপরও খাতভিত্তিক শুল্ক আরোপ করেছেন।


কিয়েভ হামলার পর রাশিয়ার ওপর দ্রুত নিষেধাজ্ঞা চান জেলেনস্কি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাশিয়ার রাতভর মিসাইল ও ড্রোন হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার মিত্র দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার ওপর আরও দ্রুত এবং কার্যকর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।

কিয়েভ, ইউক্রেন থেকে এএফপি জানায়, জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, রাশিয়া প্রায় ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৪০০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করতে হবে এবং রাশিয়ার উপর চাপ এত শক্তিশালী হতে হবে যেন তারা তাদের সন্ত্রাসের পরিণতি সত্যিই অনুভব করে।


banner close