ভারতে বাংলাভাষী মুসলিমরা বলছেন, তারা আটক এবং নির্বাসনের ভয়ে বাস করছেন। দেশটিতে ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান বেড়ে চলেছে। এর ফলে শত শত লোককে অবৈধভাবে বাংলাদেশে জোরপূর্বক প্রবেশ করতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতীয় নাগরিক।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দেওয়া জুলাই মাসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মুসলিমকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ বিরুদ্ধে ভারতে দমন-পীড়ন নতুন নয়। তবে গত এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মিরে হামলার পর বর্তমান দমন-পীড়নের ধারাটি শুরু হয়েছে।
দিল্লি এই হামলার জন্য ‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করার পর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্যগুলো হাজার হাজার বাঙালি মুসলিমকে আটক করেছে। তাদের সন্দেহভাজন ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
৫৩ বছর বয়সি ভারতীয় নাগরিক এবং আসাম রাজ্যের সাবেক স্কুলশিক্ষক খাইরুল ইসলাম আরব নিউজকে বলেন, ২৪ মে পুলিশ তাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। তারপর আরও ১৪ জনের সঙ্গে জোর করে বাংলাদেশে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ছিল, আমাকে ভারত ও বাংলাদেশের মাঝামাঝি একটা নো-ম্যানস-ল্যান্ডে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। যখন আমি ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করি তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে।’
খাইরুল ইসলামের স্ত্রী এবং আত্মীয়-স্বজনরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তার নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নথিপত্র দেখানোর প্রায় এক সপ্তাহ পরে তিনি তার দেশে ফিরতে সক্ষম হন।
তিনি বলেন, ‘আমার দাদা ভারত থেকে এসেছিলেন। আমার কাছে ভারতে তার স্কুলের পড়াশোনার একটি কপি আছে - তার অষ্টম শ্রেণীর সার্টিফিকেট। আমার বাবা ১৯৫২ সালে সরকারের কাছ থেকে বন্দুকের লাইসেন্স পেয়েছিলেন। আমি একজন সরকারি কর্মচারী ছিলাম এবং ১৯৯৭ সালে শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়েছি।’
‘এটা তো সহজ হয়রানি। আসামে বাঙালি মুসলিম হওয়া অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের জীবন নরকে পরিণত হয়েছে...। তারা আমাকে বিদেশি বলে ডাকে, কারণ আমি একজন মুসলিম এবং একজন বাঙালি। এই জাদুকরী শিকারে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে... আমি আশা করি আমাদের প্রতি ন্যায়বিচার হবে।’
বাংলা বাংলাদেশের প্রধান ভাষা হলেও ভারতে আনুমানিক ১০ কোটি বাংলাভাষী রয়েছে। তারা মূলত আসাম, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা রাজ্যে বাস করে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মুসলমান হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।
হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, অনিয়মিত অভিবাসন রোধ করার জন্য এই ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ‘মুসলিম অনুপ্রবেশ’ ভারতের পরিচয়ের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্ভীকভাবে সীমান্তের ওপার থেকে চলমান, অনিয়ন্ত্রিত মুসলিম অনুপ্রবেশ প্রতিহত করছি, যা ইতোমধ্যেই একটি উদ্বেগজনক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায়, হিন্দুরা এখন তাদের নিজস্ব ভূমিতে সংখ্যালঘু হওয়ার পথে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দেশটিকে ‘খারাপ দৃষ্টিতে দেখাচ্ছে’।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, যদিও সরকার অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবেলা করতে পারে, তবে এটি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মুসলিম কর্মীদের এলোমেলোভাবে আটক করে ধরে নেওয়া এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
আসামের মতো রাজ্যগুলোতেও সম্প্রতি হাজার হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের ঘটনা বেড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগ এনেছে।
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘চলমান উচ্ছেদগুলো ধর্মীয় বা জাতিগত ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক আচরণের একটি রাষ্ট্রীয় নীতি বলে মনে হচ্ছে, যা সাংবিধানিক সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করে।’
গোলাঘাট জেলায় নিজ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া আসামের বাসিন্দা শাজি আলীও সরকারি বর্ণনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার বাবা ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে নওগাঁ জেলা (বাংলাদেশের) থেকে এখানে এসেছিলেন। পূর্ববর্তী সরকারই আমাদের এখানে বসতি স্থাপন করে দিয়েছিল।’
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এখানে সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা আছে। আমরা কীভাবে দখলদার হয়ে গেলাম? (বর্তমান) সরকারের জন্য, আমাদের বাঙালি-মুসলিম পরিচয় একটি সমস্যা।’
অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সেক্রেটারি মিন্নাতুল ইসলাম বিশ্বাস করেন, চলমান কর্মকাণ্ডের পেছনে রাজনীতি জড়িত।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আজ আসামে এক অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাংলাভাষী মুসলমানরা চরম আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে...। এটি একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ এবং আসাম সরকার ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং উচ্ছেদ নির্বাচনী এজেন্ডার অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্য হলো বাংলাভাষী মুসলিমরা। প্রায় ৯০ লাখ বাঙালি মুসলিম থাকবে। এটা স্পষ্ট যে, আসামে কোনো বাংলাদেশি নেই। সরকার যাই করছে... তা উপযোগী নয়, কেবল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মুসলিমদের টার্গেট করছে।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার এক ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে বলেছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়ন হতে দেখে চীন খুশি হয়েছে।
শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উভয়পক্ষ নিশ্চিত করেছে, বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে এবং ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই বৈঠক হতে পারে। তবে বৈঠকের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও স্থান এখনো নির্ধারণ হয়নি।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, পুতিনের অনুরোধে শি জিনপিং শুক্রবার তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও আলোচনার অগ্রগতি এবং ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে শি’কে অবহিত করেছেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার ইংরেজি সংস্করণের খবরে বলা হয়, পুতিনকে শি জানিয়েছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ বজায় রাখা, সম্পর্ক উন্নত করা এবং ইউক্রেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধানকে এগিয়ে নিতে দেখে চীন আনন্দিত।
শি আরো বলেন, ‘জটিল সমস্যার সহজ সমাধান নেই। চীন সর্বদা শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংলাপ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি গ্রন্থাগার থেকে দুর্লভ চীনা পাণ্ডুলিপি ধার করে সেগুলোর বদলে নকল পাণ্ডুলিপি ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এতে ২ লাখ ১৬ হাজার ডলারের চুরির মামলা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, জেফরি ইং (৩৮) একাধিক ছদ্মনাম ব্যবহার করে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রন্থাগার থেকে ৬০০ বছরের পুরোনো কিছু ক্লাসিক বই নিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ইং ওইসব বই নিয়ে যাওয়ার কয়েক দিন পর সেগুলোর নকল পাণ্ডুলিপি ফেরত দিতেন এবং প্রায়শই এর পরপরই চীনে যেতেন।
বিচার বিভাগ জানায়, ‘গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু দুর্লভ চীনা পাণ্ডুলিপি খুঁজে না পেয়ে প্রাথমিক তদন্তে দেখতে পায়, ‘অ্যালান ফুজিমোরি’ নামের এক ব্যক্তি সর্বশেষ ওই বইগুলো দেখেছিলেন।’
গোয়েন্দারা যখন লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে ইং-এর থাকার জায়গায় অভিযান চালায়, তখন তারা বেশ কিছু ফাঁকা পাণ্ডুলিপি খুঁজে পায়, যা চুরি হওয়া বইগুলোর মতো দেখতে।
বিচার বিভাগ আরও জানায়, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে এমন লেবেল বা ট্যাগ (অ্যাসেট ট্যাগ) পেয়েছে, যা চুরি যাওয়া পাণ্ডুলিপিগুলোর সঙ্গে মিল ছিল। এই ট্যাগগুলো দিয়ে নকল বা ‘ডামি’ বই তৈরি করে আসল বইয়ের জায়গায় ফেরত দেওয়া হতো।’
গ্রন্থাগারের নিয়ম অনুযায়ী, দুর্লভ ও কেবল একটি কপি আছে এমন বইগুলো শুধু গ্রন্থাগারের ভেতরেই দেখা যায়, সাধারণ বইয়ের মতো সেগুলো বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই।
বেই এরিয়ার ফ্রিমন্টের বাসিন্দা ইং-এর কাছে বিভিন্ন নামে বেশ কয়েকটি গ্রন্থাগার কার্ডও পাওয়া গেছে।
দুর্লভ শিল্পকর্ম চুরির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ইং-এর ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। বর্তমানে তিনি রাজ্য হেফাজতে আছেন।
চীনের শিল্পবাজার বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে সরকার অনুমোদিত জাদুঘর যেমন বাড়ছে, তেমনি বেসরকারি শিল্পবাজারও জমজমাট হচ্ছে। ধনী ও দেশপ্রেমিক হয়ে উঠা মধ্যবিত্তরা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের নেতাদের নিয়ে এক ‘ঐতিহাসিক শান্তি সম্মেলন’ আয়োজন করছেন।
দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান ঘটানোই এর লক্ষ্য।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেছেন যে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান ও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ আমার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। দীর্ঘদিনের শত্রু এই দুই দেশ যদি সত্যিই চুক্তিতে পৌঁছায়, তাহলে এটি হবে ট্রাম্পের সর্বশেষ কূটনৈতিক সাফল্য। যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংঘাতে তার মধ্যস্থতাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের উপযুক্ত বলে মনে করেন।
নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুই যুদ্ধ
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দুইবার যুদ্ধ করেছে। ২০২৩ সালে আজারবাইজান একটি দ্রুত সামরিক অভিযানে অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করে।
এতে ১ লাখেরও বেশি জাতিগত আর্মেনিয়ানের দেশত্যাগ ঘটায়। দুই দেশের মধ্যে ইতঃপূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্মেলনে শান্তিচুক্তির আলোচনা হয়েছে। তবে সেগুলোর ফলাফল আশাব্যঞ্জক ছিল না।
ট্রাম্পের দাবি ও আশাবাদ
ট্রাম্প বলেন, ‘এই দুই জাতি বহু বছর ধরে যুদ্ধে জড়িত। এই যুদ্ধে হাজার হাজার প্রাণহানি হয়েছে। বহু নেতা চেষ্টা করেছেন এই যুদ্ধ বন্ধ করতে, কিন্তু সফল হননি। আমার প্রশাসনের প্রচেষ্টায় অবশেষে সেই দিন এসেছে।
বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ট্রাম্প আরও বলেন, ‘শুক্রবার আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হবে। তাহলে দেখা হবে!’
ট্রাম্প আরও বলেন, ওয়াশিংটন উভয় দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে একসাথে অর্থনৈতিক সুযোগুলো অনুসরণ করার জন্য, যাতে আমরা দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে উন্মোচন করতে পারি।
এক্সনমোবিল চুক্তি
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের সঙ্গেই আলাদা আলাদা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করবে, যার মাধ্যমে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে।
এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা এসওসিএআর গ্যাস এক্সনমোবিলের মধ্যে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ।
চুক্তি স্বাক্ষরে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
পরে আলিয়েভ ও উইটকফ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন বলে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ এক পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়ে দেন।
সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের এই দুই দেশ চলতি বছরের মার্চ মাসে শান্তিচুক্তির একটি খসড়া টেক্সটে সম্মত হয়।
আজারবাইজান তখন থেকে নথিতে স্বাক্ষর করার আগে কারাবাখের ওপর আঞ্চলিক দাবি ত্যাগ করার জন্য আর্মেনিয়ার সংবিধানে সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি দাবির রূপরেখা তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব শর্ত পূরণ হয়েছে কি-না, তা স্পষ্ট নয়।
যদিও ট্রাম্প বলেছেন যে, তার প্রশাসন বেশ কিছুদিন ধরে উভয় পক্ষের সাথে জড়িত ছিল।
তবে তিনি দুই দেশের প্রতিনিধিদের দ্বারা স্বাক্ষরিত নথি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি।
জুলাইয়ের গোড়ার দিকে, পাশিনিয়ান ও আলিয়েভ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ দফা শান্তি আলোচনার জন্য মিলিত হন। কিন্তু তারা কোনও অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হন।
দুই শত্রুরাষ্ট্র এর আগে মে মাসে আলবেনিয়ায় ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দেখা করেছিলেন।
সেই সময়ে ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল মাঁখো এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা দুই দেশের মধ্যে দ্রুত একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, তবে দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাসকে সরিয়ে গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান তিনি।
তবে এমন পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি, বাস্তুচ্যুতি ও গাজায় এখন পর্যন্ত আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন তিনি।
গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, হামাসকে সরানো এবং গাজার মানুষকে মুক্ত করে সমগ্র উপত্যকাকে বেসামরিক শাসনের আওতায় আনতেই আমরা গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইচ্ছুক।’
‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’
নেতানিয়াহু জানান, তিনি গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান যারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না। গাজাবাসীকে এই ব্যবস্থা ভালো জীবন দেবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমোদন পাওয়ার আশা করছিলেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো। তবে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো প্রস্তাবে পূর্ণ মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেতে হবে। তবে রবিবারের আগে তেল আবিববের পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক হবার সম্ভাবনা কম।
এদিকে, গত ২২ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনার খবর আসার পর গাজায় বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে থাকা মাইসা আল-হেইলা নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘দখল করার মতো কিছুই আর বাকি নেই। গাজা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, গাজায় দুই ধাপের একটি অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সেখানকার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। মধ্য গাজায় বেসামরিক অবকাঠামো স্থাপনের জন্য সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি দখল নিয়ে আশঙ্কায় থাকা সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করতে এই প্রস্তাবকে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের বদলে সীমিত অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবার কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হামাসকে আলোচনায় ফেরাতে চাপ সৃষ্টি করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা খোলা চোখে ভিয়েতনাম মডেলের দিকে এগোচ্ছি।’
এদিকে, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্য অভ্যুত্থান’ বলে অভিহিত করেছে হামাস।
হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজা শাসনের জন্য গঠিত যেকোনো বাহিনীকে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত ‘দখলদার বাহিনী’ হিসেবেই গণ্য করবে।
এই পরিকল্পনার বিষয়ে জর্ডানের এক সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা যা চাইবে, আরব দেশগুলো তাতেই সম্মতি দেবে।
নেতানিয়াহু এমন এক সময়ে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, যখন গাজা যুদ্ধ থামাতে এবং সেখানে আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি ইতোমধ্যে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।
এমন পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকা নিয়ে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, তা-ই এখন দেখার বিষয়।
ক্রিপটন নামের ধ্বংসপ্রাপ্ত এক গ্রহ থেকে পৃথিবীতে আসা কাল্পনিক চরিত্র সুপারম্যান। যিনি দিনের বেলায় সাংবাদিক, আর গোপনে বিখ্যাত লাল-নীল পোশাক পরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েন এক সুপারহিরো হিসেবে।
অসাধারণ শক্তি, উড়তে পারা, এক্স-রে দৃষ্টি, বুলেটপ্রুফ শরীর এবং অতিমানবিক নৈতিকতার জন্য কোটি ভক্তের প্রিয় হিরো সুপারম্যান হয়ে ওঠেন বিশ্বজুড়ে ন্যায়ের প্রতীক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমিকস, সিনেমা, টিভি সিরিজ, অ্যানিমেশন ও গেমে সুপারম্যান চরিত্রটি নানা রূপে উঠে এসেছে।
সেই জনপ্রিয় চরিত্রের একটি রূপ— ১৯৯০’র দশকের টিভি সিরিজ লোইস অ্যান্ড ক্লার্ক: দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারম্যান-এ সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতা ডিন কেইন। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিকে সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টে (আইসিই) যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজের একটি টকশোতে এই ঘোষণা দেন ডিন কেইন। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাম্পের ‘গণ-নির্বাসন’ পরিকল্পনাতেও সমর্থন জানান তিনি।
ফক্স নিউজে জেসি ওয়াটারসের অনুষ্ঠানে ডিন কেইন বলেন, ‘আমি আগে থেকেই একজন রিজার্ভ পুলিশ অফিসার। তবে আগে আইসিইর অংশ ছিলাম না। সম্প্রতি আমি আইসিই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমাকে শিগগিরই এজেন্ট হিসেবে শপথ করানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশ তৈরি হয়েছে দেশপ্রেমিকদের হাতে। আমি বিশ্বাস করি, আইসিই সঠিক কাজ করছে।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পর থেকে মার্কিন প্রশাসন আইসিই-এর জন্য ৭৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। পাশাপাশি ২০২৯ সালের মধ্যে ১০ হাজার নতুন এজেন্ট নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রাও রাখা হয়েছে। ট্রাম্পের কথিত ‘বিগ বিউটিফুল ওয়াল’ প্রকল্প থেকেই এই বরাদ্দ এসেছে।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র সমালোচনা
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আইসিই প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এই অভিযানে অনিবন্ধিত অভিবাসী, আইনি সুরক্ষাপ্রাপ্ত বাসিন্দা, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন। আইসিইর বিরুদ্ধে নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে, কারণ এসব অভিযানে সঠিক আইনি প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না বলে দাবি রয়েছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রতিবাদকারীদের গ্রেপ্তার এবং আইসিই-র কর্মকাণ্ড ভিডিও ধারণকারীদেরও অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
সশস্ত্র মুখোশধারী আইসিই এজেন্টদের শুধু লস অ্যাঞ্জেলেস নয়, অন্যান্য শহরেও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করতে দেখা গেছে। তাঁরা প্রায়শই সাদা পোশাকে থাকেন এবং তাঁদের শনাক্ত করার উপায় থাকে না।
সাম্প্রতিক সময়ের নতুন সুপারম্যান চলচ্চিত্রে চরিত্রটিকে একজন ‘ইমিগ্র্যান্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করায় ডিন কেইন এর তীব্র সমালোচনা করেন।
কেইনের ভাষায়, ‘সুপারম্যান তো স্পষ্টভাবেই একজন এলিয়েন। অবশ্যই সে অভিবাসী। কিন্তু আমাদের দেশে নিয়মকানুন আছে। সবাইকে আমরা চাইলেই ঢুকতে দিতে পারি না।’
নব্বইয়ের দশকের লোইস অ্যান্ড ক্লার্ক: দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারম্যান সিরিজে টেরি হ্যাচার অভিনীত লোইস লেন চরিত্রের বিপরীতে সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেন ডিন কেইন।
আইসিই-তে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করি, আরও অনেকে আমার মতো এগিয়ে আসবেন এবং এই দেশকে রক্ষায় সাহায্য করবেন।’
জার্মানি অনিয়মিত অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে চলমান কড়াকড়ি সেপ্টেম্বরের সময়সীমার পরেও অব্যাহত রাখবে। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ড’ব্রিন্ট একথা বলেন।
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে বার্লিন থেকে এএফপি জানায়, তিনি বলেন, ‘পূর্বে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড আছে এমন আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তাদের তালেবান-শাসিত আফগানিস্তান এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বার্লিন।’
জার্মানির রক্ষণশীল চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘উগ্র ডানপন্থী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) দলের প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থন ঠেকানোর এটাই একমাত্র উপায়।’
গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রচারণার সময় মারাত্মক হামলার ঘটনায় শরণার্থী ও অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের দায়ী করা হলে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এর জেরে এএফডি রেকর্ড ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে গত বছর চালুর পর এ বছরের মার্চ মাসে ছয় মাস মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট বলেন, ‘আমরা ১৫ সেপ্টেম্বরের সময়সীমার পরেও সীমান্তে কড়াকড়ি বজায় রাখব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে একমত যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বহিরাগত সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত এই পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে।’
সন্ত্রাসবাদ বা ব্যাপক অবৈধ অভিবাসনের মতো গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হলে, ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলের সদস্য দেশগুলোকে দুই বছর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পুনরায় চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত মে মাসের শুরুর দিকে ফ্রেডরিশ মের্ৎসের সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সীমান্তে কড়াকড়ি আরো বাড়িয়ে দেয়। বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থীকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সীমান্তে মোতায়েন করা ফেডারেল পুলিশের সংখ্যা ১১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গত ৮ মে থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জার্মান স্থল সীমান্তে ৯ হাজার ২৫৪ জনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা আফগানিস্তান থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সঙ্গে ঘটেছে। এরপর সীমান্ত থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফিরে গেছে আলজেরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়ার আশ্রয়প্রার্থীরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সরাসরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন।
কিয়েভ থেকে এএফিপি জানায়, ট্রাম্প মস্কোতে তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও পুতিনের মধ্যকার আলোচনাকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এখনো মস্কোর বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বদ্ধপরিকর।
জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন, তিনি ‘খুব শিগগিরই’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারবেন।
ইউরোপীয় নেতারাও ওই ফোনালাপে যুক্ত ছিলেন বলে জানান জেলেনস্কি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেন, আমরা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বহুবার বলেছি, প্রকৃত সমাধানের পথ বের করতে হলে শীর্ষ নেতাদের আলোচনা সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। এমন একটি বৈঠকের সময়সূচি ও আলোচ্য বিষয়ের পরিধি নির্ধারণ করা জরুরি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস এবং ফ্রান্স ও ইতালির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘একাধিক’ ফোনালাপের পরিকল্পনা করেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়েও যোগাযোগ হবে বলে জানান জেলেনস্কি ।
তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো— রাশিয়া এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদেরই উচিত আগ্রাসন বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ‘কয়েক দিনের মধ্যেই’ একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ইতোমধ্যে দুই পক্ষ ‘নীতিগতভাবে’ আলোচনার স্থান চূড়ান্ত করেছে।
মস্কো থেকে এএফপি জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই বৈঠক হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় জো বাইডেন ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসানে মধ্যস্থতার চেষ্টা হিসেবে ট্রাম্প এ বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন।
মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে তিন দফা সরাসরি আলোচনার পরও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত বন্ধে দুই পক্ষ এখনো দূরে অবস্থান করছে।
ট্রাম্প বুধবার বলেন, তিনি ‘খুব শিগগিরই’ পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে পারেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাগুলোকে ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, মার্কিন পক্ষের প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি হয়েছে। আমরা এখন আমাদের আমেরিকান সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে বিস্তারিত বিষয়গুলো নির্ধারণ করছি।
ক্রেমলিন জানায়, আলোচনার স্থান নীতিগতভাবে চূড়ান্ত হয়েছে। তবে কোথায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা প্রকাশ করা হয়নি।
উশাকভ আরও বলেন, পরবর্তী সপ্তাহকে লক্ষ্য করে আমরা এই বৈঠকের সময় নির্ধারণ করছি।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার একদিন পরট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ঘোষণা আসে।
উশাকভ জানান, উইটকফ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া সে প্রস্তাবে কোনো সাড়া দেয়নি। রাশিয়ান পক্ষ এই প্রস্তাব পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি পুতিনকে সরাসরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। তার মতে, এই বৈঠক শান্তির পথে অগ্রগতি আনতে একমাত্র কার্যকর উপায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেন, আমরা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বহুবার বলেছি, প্রকৃত সমাধান বের করতে হলে নেতৃবৃন্দের পর্যায়ে আলোচনা সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। এ ধরনের বৈঠকের সময় ও আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা জরুরি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস এবং ফ্রান্স ও ইতালির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘একাধিক’ ফোনালাপের পরিকল্পনা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের পর্যায়েও যোগাযোগ হবে বলে জানান জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো— রাশিয়া এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদেরই উচিত আগ্রাসন বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া।
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে দাবি করে একে ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়েছে নয়াদিল্লি।
বুধবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্প্রতি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় ভারতকে লক্ষবস্তু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান আমরা আগেই পরিষ্কার করেছি। বাজারের বাস্তবতার ভিত্তিতে এবং ভারতের ১৪০ কোটির জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই তেল আমদানি করা হয়ে থাকে। এমন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কারোপ অত্যন্ত দুঃখজনক, বিশেষ করে যখন অনেক দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থে একই কাজ করছে।’
‘আমরা আবারও জোর দিয়ে বলছি, এসব পদক্ষেপ অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।’
ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আরও অন্তত ৮৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেকেই সহায়তার আশায় বের হওয়া সাধারণ মানুষ। অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছে আরও অন্তত ৮ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে শিশুও।
গত মঙ্গলবারের এই হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছে গাজার স্থানীয় চিকিৎসা কর্মকর্তারা। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, নিহত ৮৩ জনের মধ্যে ৫৮ জনই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফয়ের) খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান।
গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বলেন, ‘জিএইচএফের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই একই ঘটনা ঘটছে। মানুষ খাবারের আশায় লাইনে দাঁড়াচ্ছে, আর তাদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে।’
তিনি জানান, উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিংয়ের কাছ থেকে আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির চিহ্ন রয়েছে- বিশেষত মাথা, গলা ও বুক। এই ক্ষতগুলো চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত জটিল বলে জানান তিনি।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা জিএইচএফের সক্ষমতা ও এর কার্যক্রমের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাগুলোর অভিযোগ, যথাযথ সহায়তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি এই এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার চরম অভাব রয়েছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত গাজায় সহায়তার আশায় বের হয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫৬০ জন ফিলিস্তিনি।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে একটি ত্রাণের ট্রাক উল্টে ২০ জন নিহত হয়েছেন। খাবারের আশায় জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত লোকদের ভিড়ের মাঝে এটি উল্টে যায়। গতকাল বুধবার গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেছেন, গত রাতের দিকে ত্রাণ বহনকারী একটি ট্রাক উল্টে ২০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। শত শত বেসামরিক মানুষ সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছিল।
হামাসের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল ট্রাক চালকদের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য অনিরাপদ পথ ব্যবহার করতে বাধ্য করছে। এর ফলে প্রায়শই মরিয়া ক্ষুধার্ত জনতা ট্রাকগুলোর কাছে ভিড় জমায়।
এদিকে জর্ডান জানিয়েছে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা গতকাল বুধবার গাজাগামী ত্রাণের বহরে আক্রমণ করেছে। কয়েক দিনের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আক্রমণের ঘটনা। ইসরায়েল এসব আক্রমণ রোধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ।
জর্ডান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-মোমানি রয়টার্সকে বলেছেন, ৩০টি ট্রাক মানবিক ত্রাণ বহনকারী কনভয়ে পৌঁছাতে বিলম্ব করানো হয়েছে। এটি চুক্তির লঙ্ঘন।
প্রতিদিন হাজার হাজার গাজাবাসী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হয়, যার মধ্যে চারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের অন্তর্ভুক্ত।
মে মাসের শেষের দিকে ত্রাণ বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকে, এর কার্যক্রম প্রায় প্রতিদিনই ত্রাণ সংগ্রহের জন্য অপেক্ষারতদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
প্রায় ২২ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় সরবরাহ প্রবেশের ওপর ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার ফলে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ওষুধ ও জ্বালানি, যার ওপর হাসপাতালগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জেনারেটর চালাতে জ্বালানি অপরিহার্য।
মানবিক সাহায্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, গাজায় বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
৭৫ বছর বয়সি সালিম আসফুর আলজাজিরাকে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে শুধু রুটি আর পানি খেয়ে বেঁচে আছি। একসময় ৮০ কেজি ছিলাম, এখন ওজন ৪০ কেজিতে নেমে এসেছে। ছেলে আমাকে বাথরুমে নিয়ে যায়। রাফাহ থেকে খাবার আনতে হবে- ২০ কিলোমিটার হেঁটে কীভাবে যাব ‘
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। চলমান যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৮ জন ফিলিস্তিনি, যাদের অর্ধেকই শিশু।
ইউএনআরডব্লিউএয়ের বরাতে জানা যায়, গত সোমবার গাজায় মাত্র ৯৫টি সহায়তাবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক প্রয়োজন সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার ন্যূনতম চাহিদা পূরণে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৮৫টি ট্রাক প্রবেশ করছে, যা চরমভাবে অপর্যাপ্ত।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে আবারও সতর্ক করে জানিয়েছে, ‘মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হচ্ছে।’ তাদের দাবি, সহায়তা আসার পর তা পরিকল্পিতভাবে লুট হচ্ছে, যা ইসরায়েলি বাহিনীর সৃষ্টি করা নিরাপত্তা শূন্যতার সুযোগে সংঘটিত নৈরাজ্যেরই অংশ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজ বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে মস্কো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার দুদিন আগেই উইটকফের সঙ্গে দেখা করলেন পুতিন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী শুক্রবারের মধ্যে রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। যুদ্ধ বন্ধ না করলে মস্কো নতুন শাস্তির মুখোমুখি হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
নির্বাচনের আগে ট্রাম্প গর্ব করে বলেছিলেন, দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন। ট্রাম্প।
এর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তিন দফা রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং উভয় পক্ষের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়েছে।
ওয়াশিংটনের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়া তার প্রতিবেশী ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে।
ক্রেমলিনের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যায়, বৈঠকের আগে উইটকফের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন পুতিন। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
বৈঠকের আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির ওপর আক্রমণ বন্ধে বুধবার রাশিয়ার ওপর চাপ বৃদ্ধি করার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের মস্কো সফরকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
কিয়েভ থেকে এ¦এফপি এ খবর জানায়।
জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন,‘যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জি৭-এর অস্ত্রাগারের সমস্ত শক্তি বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে করে অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।’
তিনি আরো জানান, ইউক্রেন রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির আন্তরিকতা সম্পর্কে অবগত আছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ যারা আমাদেরকে সাহায্য করছে, আমাদের সে সকল অংশীদার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।