রোববার, ২ নভেম্বর ২০২৫
১৭ কার্তিক ১৪৩২

নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১

দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:৪৬

নেপালে চলমান জেন-জি বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে কাঠমান্ডু ছাড়াও বিভিন্ন জেলার মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য ও একজন ভারতীয় নারীও আছেন। নেপাল পুলিশের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ও ডিআইজি বিনোদ ঘিমিরে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। হাসপাতালগুলোতে ক্রমাগত আহতদের ভিড় বাড়ছে। কোথাও ৫০০, আবার কোথাও এক হাজারেরও বেশি আহতের কথা বলা হচ্ছে। ফলে সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

বিক্ষোভ কিছুটা শীতল হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনা ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সংসদ ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সেনা পাহারা বসানো হয়েছে। সহিংসতার সময় কয়েকজন মন্ত্রীকে হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হলেও একাধিক স্থানে গুলিবর্ষণ ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি উঠছে।

আবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় সীমান্তেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত পারাপার কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

জানা গেছে, অস্থিরতার সুযোগে কারাগারগুলোতেও বড় ধরনের ভাঙচুর হয়েছে। পুলিশের হিসাবে, দেশজুড়ে ১৩ হাজার ৫৭২ জন বন্দি পালিয়ে গেছে। এছাড়া তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে থাকা আরও ৫৬০ জনকে হারিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রাজধানীসহ দেশজুড়ে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও বন্দিদের পালানো- সবকিছু মিলিয়ে নেপালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বড় ধরনের চাপে পড়েছে। সরকার বলছে, এ সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন সংলাপ, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনগণের আস্থা পুনর্গঠন।

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান নেপালের সেনাবাহিনীর

বর্তমান জাতীয় পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী নিয়ে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর ও ভুয়া তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক করে দেশটির সেনাবাহিনী জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

নেপালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাহিনীটি নিয়মিতভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি, প্রেস নোট এবং নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বার্তা ও কার্যক্রম সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করে আসছে।

তাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের জন্য শুধু এই অফিসিয়াল যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপরই ভরসা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতেও সময় মতো ও স্বচ্ছ তথ্য দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সবাইকে অনুরোধ করেছে—যেন তারা আতঙ্ক না ছড়িয়ে শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং যাচাই-বাছাই না করা বার্তা ছড়ানো থেকে বিরত থাকে।

এদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, দুই দিনের সহিংসতায় সরকারি অবকাঠামোর ক্ষতির পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন (২০ হাজার কোটি) রুপিরও বেশি।

গুরুত্বপূর্ণ ভবনের পাশাপাশি অমূল্য ঐতিহাসিক নথি ও দলিলপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিংহ দরবার, পার্লামেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল কোটি কোটি রুপি।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব ভবন কেবল সংস্কার বা রেট্রোফিটিং করে চালানো সম্ভব নয়। এগুলো পুনর্নির্মাণ করতে ২০০ বিলিয়ন রুপিরও বেশি খরচ হবে। এই হিসাব কেবল ভবনের, অফিস সেটআপ ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অর্থ এতে ধরা হয়নি।

নেপালে আন্দোলনের নেপথ্যে ‘নেপো কিডস’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের জেরে তীব্র গণবিক্ষোভে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে নেপাল। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন দেশটির কমিউনিস্ট প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। সরকারের প্রায় সব মন্ত্রীই হয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, নয়তো আত্মগোপনে আছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রীদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে, এমনকি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সংসদ ভবনও।

পুলিশের দমন-পীড়নে এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। দেশে বর্তমানে কোনো কার্যকর সরকার নেই এবং সেনাবাহিনী কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রাথমিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের সিদ্ধান্তকে বিক্ষোভের কারণ মনে করা হলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল কারণ হলো রাজনৈতিক নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্য। তাই বিক্ষোভের সময় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে নেপো কিডসদের বিলাসী জীবনযাত্রা জনগণের ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। যখন সাধারণ নেপালিরা বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে, তখন প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েদের বিলাসবহুল জীবন এবং সামাজিক মাধ্যমে তার প্রদর্শন তরুণদের আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, রেডিট এবং এক্স-এর মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নেপো কিডসদের বিলাসবহুল গাড়ি, দামি ডিজাইনার পোশাক, বিদেশে ছুটি কাটানোর ছবি রীতিমতো ভাইরাল হয়। বিক্ষোভের আগে #PoliticiansNepoBabyNepal এবং #NepoBabies হ্যাশট্যাগগুলো লক্ষাধিক ভিউ পেয়েছে। এসব পোস্টে নেপো কিডদের বিলাসী জীবনের পাশাপাশি সাধারণ নেপালিদের দুর্দশার ছবিও পোস্ট করা হয়।

কয়েকজন নেপো কিডস

শৃঙ্খলা খাতিওয়াড়া: প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিরোধ খাতিওয়াড়ার ২৯ বছর বয়সি এই মেয়ে, যিনি একসময় মিস নেপাল ছিলেন, বিক্ষোভকারীদের কাছে বিশেষ সুবিধাভোগী অভিজাতদের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তার বিদেশ ভ্রমণ ও বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি ভাইরাল হলে প্রতিবাদকারীরা তার বাবার বাড়িতে আগুন দেয়।

জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তিনি ইনস্টাগ্রামে ১ লাখেরও বেশি অনুসারী হারিয়েছেন।

শিবানা শ্রেষ্ঠা: জনপ্রিয় গায়িকা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার পুত্রবধূ শিবানা প্রায়ই তার বিলাসবহুল বাড়ি ও দামি ফ্যাশনের ভিডিও পোস্ট করেন। তিনি ও তার স্বামী জয়বীর সিং দেউবাও অনলাইনে আক্রমণের শিকার হন এবং কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হিসেবে তাদের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

স্মিতা দহল: সাধারণ মানুষ যখন চাকরির জন্য লড়ছেন, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের (প্রচণ্ড) নাতনি স্মিতা দহল সামাজিক মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকার হ্যান্ডব্যাগের ছবি পোস্ট করে সমালোচিত হন। প্রতিবাদীরা প্রচন্ডর বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে।

সৌগত থাপা: আইনমন্ত্রী বিন্দু কুমার থাপার ছেলে সৌগতও তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রা ও অনলাইন প্রদর্শনের জন্য চিহ্নিত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষ যেখানে দারিদ্র্যে মারা যাচ্ছে, সেখানে এই নেপো কিডসরা লাখ লাখ টাকার পোশাক পরছে।


পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় মদিনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সৌদি আরবের মদিনা চেম্বার অব কমার্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানা গেছে, অঞ্চলের পর্যটকদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই মদিনাকে প্রথম গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটকরা এই শহরকে প্রধান গন্তব্য হিসেবে নির্বাচনের মূল কারণ হলো এর আধ্যাত্মিক গুরুত্ব এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ৭৩.৭ শতাংশ দর্শক মদিনা সফরের জন্য আগ্রহী।
বিশ্বব্যাপী পর্যটন সূচকে মদিনা শীর্ষ ১০০ গন্তব্যের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে এবং মোট পর্যটন কার্যকারিতা সূচকে সপ্তম অবস্থান দখল করেছে। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, মদিনা শুধু আধ্যাত্মিক শহরই নয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগত পর্যটকদের ৪৭.২ শতাংশ আল উলা গভর্নরেট সফর করেছেন, যেখানে রয়েছে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে, দেশীয় পর্যটকদের ১৪.১ শতাংশ ইয়ানবু গভর্নরেট বেছে নিয়েছেন এর সুন্দর সৈকত, সামুদ্রিক বিনোদন এবং পরিবার-বান্ধব পরিবেশের জন্য।
মদিনা চেম্বার অব কমার্স জানিয়েছে, এসব সূচকই মদিনা অঞ্চলের পর্যটন খাতের দ্রুত বৃদ্ধির প্রতিফলন। জাতীয় পর্যটন ব্যবস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গন্তব্য উন্নয়ন এবং সৌদি আরবকে বৈশ্বিক পর্যটন মানচিত্রে আরও দৃঢ় অবস্থানে স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এটি সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রতিবেদনে মদিনা রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কার্যক্রমকেও প্রশংসা করা হয়েছে, যারা পর্যটন ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
তায়েফের বাসিন্দা আহমদ আল-ওতাইবি, যিনি রিয়াদে কর্মরত, আরব নিউজকে বলেন, মদিনা সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছের শহর। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, সবসময় মানুষের আগমন, সব মিলিয়ে মদিনার কোনো তুলনা নেই।
তিনি মদিনা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অবকাঠামো উন্নয়ন ও সেবা বৃদ্ধির কাজের প্রশংসা করেন, যা ধর্মীয় পর্যটন এবং আতিথেয়তা খাতের মান উন্নত করেছে। এর ফলে পর্যটকরা সুবিধা পাচ্ছেন, পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমানও উন্নত হচ্ছে।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সৌদি আরবের অন্যান্য শহরের তুলনায় মদিনার হসপিটালিটি সুবিধার হার সর্বোচ্চ ৭৪.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। শহরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হসপিটালিটি প্রতিষ্ঠানও বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট প্রতিষ্ঠান ৫৩৮টি, যার মধ্যে নতুন ৬৯টি। মোট হোটেল কক্ষের সংখ্যা ৬৪,৫৬৯, এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ৬,৬২৮ কক্ষ।
এই সব উন্নয়ন কার্যক্রমই মদিনাকে ধর্মীয় পর্যটনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে এবং শহরের আতিথেয়তা ও সেবা মান বৃদ্ধির মাধ্যমে সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হচ্ছে।

সূত্র: আরব নিউজ


স্ত্রীর ‘ধর্ম পরিবর্তন’ ইস্যুতে সমালোচনার জবাব ভ্যান্সের

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও তার স্ত্রী উষা ভ্যান্স। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তার স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।

জেডি ভ্যান্স বলেন, তার যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তার স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।

স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তার স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।

জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাকে তার আন্তঃধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তঃধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’

নিজের ধর্মবিশ্বাস তার বিশ্ব দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টে দিয়েছে বলেও জানান ভ্যান্স। তিনি স্ত্রীকে এর কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, উষাই বহু বছর আগে তাকে ধর্মের সঙ্গে পুনঃসংযোগ স্থাপন করতে উৎসাহ দিয়েছেন।

ভ্যান্স লেখেন, ‘আমার খ্রিস্টধর্মের প্রতি বিশ্বাস আমাকে বলে যে যিশুখ্রিষ্টের বাণী (গস্পেল) সত্য এবং মানুষের জন্য কল্যাণকর। আমার স্ত্রী আমার জীবনে অসাধারণ আশীর্বাদ, যেমনটি আমি টিপিইউএসএয়ের অনুষ্ঠানে বলেছিলাম। বহু বছর আগে তিনিই আমাকে আমার বিশ্বাসের সঙ্গে পুনঃসংযোগ স্থাপন করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন।’

আগের ব্যাখ্যার কথা আবারও উল্লেখ করে জেডি ভ্যান্স আরও বলেন, ‘তিনি (উষা) খ্রিষ্টান নন এবং ধর্ম পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনাও নেই। কিন্তু অনেক আন্তধর্মীয় বিয়ে বা যেকোনো আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কের মতো আমি আশা করি, একদিন তিনি আমার মতো করে বিষয়গুলো দেখতে পাবেন। সবকিছুর পরও আমি তাকে ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়ে যাব। আমার বিশ্বাস, জীবন ও অন্য সব বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব। কারণ, তিনি আমার স্ত্রী।’

ওই পোস্টে সমালোচকদের সমালোচনা করে ভ্যান্স লেখেন, ‘এ ধরনের পোস্টগুলো খ্রিষ্টধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা ফুটিয়ে তোলে। হ্যাঁ, খ্রিষ্টানদের একটি বিশ্বাস রয়েছে এবং হ্যাঁ, সেই বিশ্বাসের কিছু নির্দিষ্ট আচরণও আছে, যার মধ্যে একটি হলো আমরা আমাদের বিশ্বাসকে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিই। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বিষয়। যারা এটিকে নিয়ে অন্য রকম বলছেন, তাদের নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য আছে।’

ইয়েল ল স্কুলে লেখাপড়ার সময় ভ্যান্স ও উষার পরিচয় হয়। ২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষার বিয়ের আগের পদবি চুলুকুরি। তিনি প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রে তার সাংস্কৃতিক ও পেশাগত পরিচয়ের সমন্বয় নিয়ে কথা বলেন।

ভ্যান্স ২০১৯ সালে ক্যাথলিক ধর্মে দীক্ষা নেন। উষার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি বলেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম যখন দেখা হয়েছিল, তখন তিনি (ভ্যান্স) নিজেকে সংশয়বাদী (অ্যাগনস্টিক) বা নাস্তিক ভাবতেন। এ দম্পতির তিন সন্তান খ্রিষ্ট ধর্মমতে বেড়ে উঠেছে। তারা খ্রিষ্টান স্কুলে পড়াশোনা করছে।


যে কারণে জোহরান মামদানিকে সমর্থন দিচ্ছেন ইহুদিরা

জোহরান মামদানি (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের বাইরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইহুদির বসবাস যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরে। প্রায় ১০ লাখ ইহুদির আবাসস্থল এই মহানগর। জাতিগত, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় এই সম্প্রদায়কে কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধিই উপেক্ষা করতে পারেন না।

আগামী ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী নির্বাচনের প্রাইমারিতে ৪৪ বছরের নিচের ৬৭ শতাংশ ইহুদির ভোট পেয়েছিলেন জোহরান মামদানি। জরিপ অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে তিনি মোট ৪৩ শতাংশ ইহুদির ভোট পেয়েছিলেন।

জোহরান মামদানিকে নিয়মিতভাবে ইহুদিবিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এরপরও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই মেয়র প্রার্থী ইহুদিদের ব্যাপক সমর্থন আদায় করে নিয়েছেন। তার পক্ষে প্রচারের জন্য ইহুদি–সমর্থকদের একটি অংশ ‘জিউশ ফর জোহরান’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে।

ব্যক্তিপর্যায়ের সমর্থক ছাড়াও এই সংগঠনে আছেন জিউশ ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস, জিউশ ভয়েস ফর পিসসহ বিভিন্ন ইহুদি সংগঠনের সমর্থকেরা। ইহুদিদের সংগঠনটি নিজেদের সম্প্রদায়ের পাশাপাশি নিউইয়র্কের সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রচার চালাচ্ছে।

যেসব ইহুদি জোহরান মামদানিকে সমর্থন দিচ্ছেন এবং তার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে মিডল ইস্ট আই।

জ্যাকব ব্লুমফিল্ড হাজারো প্রচারকর্মীর সঙ্গে রাস্তায় নেমে জোহরানের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, সমাজের সবারই বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, পরিবহন, পুষ্টিকর খাবার ও নিরাপত্তার মতো মৌলিক অধিকার পাওয়া উচিত। কিন্তু স্থিতিশীল জীবনের জন্য এই উপাদানগুলো এখন অনেকের নাগালের বাইরে।

ব্লুমফিল্ড বলেন, এমনকি ৩০ বছর আগে যাদের মধ্যবিত্ত ধরা হতো, তারাও আজ টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন। এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জোহরান একমাত্র প্রার্থী, যিনি এ পরিস্থিতির গভীরতা ও করুণ বাস্তবতা নিয়ে সত্যিই ভাবছেন।

জোহরানের এই ইহুদি–সমর্থক বলেন, তিনি নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন। কারণ, মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলা এবং ধারণা বিনিময় করা রাজনীতির সবচেয়ে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার মতে, তরুণ ইহুদিরা জোহরানকে সমর্থন করছেন। কারণ, তারা মনে করেন, ইসরায়েল তাদের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা বরং নিউইয়র্কে টিকে থাকার সংগ্রাম নিয়েই বেশি চিন্তিত।

অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী ম্যাট কেটাইও (৩৬) জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রচারে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জোহরানের ব্যক্তিত্বে বিশ্বাস করি। আমি তার নীতিগুলোকে ভালোবাসি, তার ভাবনাকে ভালোবাসি। তিনি প্রাণবন্ত ও উদ্যমী। তিনি সত্যিই নিউইয়র্ককে ভালোবাসেন এবং এই শহরকে আরও ভালো জায়গায় পরিণত করতে চান। অন্য কোনো রাজনীতিকের মধ্যে আমি এটা দেখি না।’

নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ও অন্যরা জোহরানকে নিয়ে ইসলামবিরোধী যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন এবং তাকে ইহুদিবিদ্বেষী বলে যে প্রচার চালাচ্ছেন, তাতে উদ্বিগ্ন ম্যাট।

ম্যাট বলেন, ‘যেভাবে ইসলামোফোবিয়া ছড়ানো হচ্ছে এবং ইহুদিবিদ্বেষের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তাতে একজন ইহুদি হিসেবে আমি কম নিরাপদ বোধ করছি।’

জোহরানের এই ইহুদি–সমর্থক আরও বলেন, ‘মুসলিন ও ইহুদিদের নিরাপত্তা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। আমি বিশ্বাস করি, জোহরান এমন অনেক কিছু করবেন, যা ইহুদি সমাজসহ পুরো নিউইয়র্কের জন্যই ভালো হবে এবং আমাদের নিরাপদ বোধ করাবে।’

নিউইয়র্কের সাংবাদিক ক্যালেব এসপিরিতু-ব্লুমফিল্ডও জোহরানের উদ্যমী মনোভাবের কারণে তাকে সমর্থন দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এবার সেই উদ্দীপনা টের পাচ্ছি, যা বারাক ওবামার উত্থানের সময় পেয়েছিলাম।’

জোহরান বাড়িভাড়া স্থগিত করা কিংবা বিনা মূল্যে বাস চালু করার মতো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবেন না বলে মনে করেন ওই সাংবাদিক। তবে তার বিশ্বাস, জোহরান সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। কারণ, জাতি-ধর্মনির্বিশেষে নিউইয়র্কের মানুষ কী চান, তা তিনি জানেন।

এসপিরিতু-ব্লুমফিল্ড বলেন, ইসরায়েল ইস্যু নিয়ে প্রজন্মগত বিভাজনই জোহরানের প্রতি ইহুদি–সমর্থনের অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, বয়স্ক ইহুদিরা ইসরায়েলকে তাদের নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে দেখেন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো কঠিন।

এই সাংবাদিক বলেন, ‘আমি জোহরানকে কখনোই সরাসরি ইসরাইলবিরোধী বলব না। মজার বিষয় হলো, এ মন্তব্য জায়নবাদী ও জায়নবাদবিরোধী—উভয় পক্ষকেই ক্ষুব্ধ করবে। কারণ, জায়নবাদীরা তাকে শত্রু মনে করেন। আর জায়নবাদবিরোধীরা তাকে নিজেদেরই একজন বলে বিশ্বাস করেন।’

এসপিরিতু-ব্লুমফিল্ড আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রসঙ্গ এলে সাবেক গভর্নর কুমো এমন আচরণ করেন, যেন তিনি নিজেই ইহুদি, ইহুদিদের রাজা। আসলে তিনি তা নন।

এসপিরিটু-ব্লুমফিল্ড বলেন, তিনি সান্ত্বনা পান এই ভেবে যে জোহরান একজন মুসলিম। কারণ, ইহুদিধর্ম ও ইসলাম একই শিকড় থেকে এসেছে। দুটিই সেমিটিক। দুই ধর্মের ভাষার মধ্যেও মিল পাওয়া যায়, খাবারের ধরনও কাছাকাছি। এমনকি ইহুদিধর্মের অনেক নীতিই ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের সঙ্গে বিস্ময়করভাবে মিলে যায়।

এসপিরিটু-ব্লুমফিল্ড বলেন, ‘দিন শেষে আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, সব ইহুদিই জোহরান মামদানির নিউইয়র্ক নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনার অংশ।’

সংখ্যালঘুদের সংহতি

ম্যানহাটানের ৬৬ বছর বয়সি এক ইহুদি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইহুদি সমাজের ভেতরে এখন ভয়াবহ বিভাজন দেখা দিয়েছে। একদিকে ইসরাইল নিয়ে বিভাজন, অন্যদিকে জোহরান মামদানিকে নিয়ে।

এই ব্যক্তি বলেন, নিউইয়র্কের প্রার্থী নির্বাচনে তিনি ব্র্যাড ল্যান্ডারকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সাধারণ নির্বাচনে জোহরানকে সমর্থন দিচ্ছেন। এ কারণে তাকে নানা রকম সমালোচনার মুখেও পড়তে হচ্ছে।

এই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘জোহরানকে সমর্থন করায় আমাকে অনেক নোংরা কথা শুনতে হয়েছে। আমি একটি অভিজাত সিনাগগে গিয়েছিলাম। সেখানে লোকেদের বলতে শুনেছি, তারা আর নিরাপদ বোধ করছেন না। তাদের নাকি শহর ছেড়ে দিতে হবে, অথচ তারা লাখ লাখ ডলার মূল্যের বাড়িতে থাকেন।’


নামের আগে আর ‘প্রিন্স’ পদবি বসাতে পারবেন না অ্যান্ড্রু, ছাড়তে হবে প্রাসাদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ব্রিটেনে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে নাটকীয় সময় পার করছে দেশটির রাজপরিবার। রাজা তৃতীয় চার্লসের নির্দেশে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর রাজকীয় উপাধি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমনকি, তাকে ছেড়ে দিতে হবে রাজকীয় আবাস উইন্ডসর প্রাসাদ। মার্কিন যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে একসময়ের সখ্যতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে জর্জরিত অ্যান্ড্রুকে দূরে রেখে রাজপরিবার তাদের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করছে।
রাজা ঘোষণা দিয়েছেন, অ্যান্ড্রুর সব উপাধি প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং এখন থেকে তার পরিচয় হবে অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর।
সিদ্ধান্তটি রাজা চার্লসের তরফ থেকে জারি করা হলেও রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যের এতে সায় ছিল। বিশেষত রাজার ছেলে এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ৪৩ বছর বয়সি ক্রাউন প্রিন্স উইলিয়াম এতে জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে অ্যান্ড্রু ডিউক অব ইয়র্ক উপাধিও হারান।
বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতিতে জানা যায়, অ্যান্ড্রুকে লন্ডনের পশ্চিমে উইন্ডসর এস্টেটের রয়্যাল লজ প্রাসাদে বসবাসের অধিকার আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়তে বলা হয়েছে। তিনি এখন ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে ব্যক্তিগত একটি বাড়িতে চলে যাবেন।
৬৫ বছর বয়সি অ্যান্ড্রু হচ্ছেন প্রয়াত রানি এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে এবং রাজা চার্লসের ছোট ভাই। গত কয়েক বছর ধরে এপস্টেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও বিভিন্ন ইস্যুতে তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন তিনি।
একসময় অ্যান্ড্রু ছিলেন ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জনপ্রিয় কর্মকর্তা। ১৯৮০ এর দশকে তিনি ফকল্যান্ডস যুদ্ধে অংশ নেন। কিন্তু ২০১১ সালে তিনি ব্রিটিশ বাণিজ্য দূতের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন এবং ২০১৯ সালে সব রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দেন। ২০২২ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার সামরিক উপাধি ও রাজপৃষ্ঠপোষকতার পদগুলোও বাতিল করা হয়।
সেই বছরই অ্যান্ড্রু ভার্জিনিয়া জিওফ্রে নামের এক নারীর দায়ের করা মামলা মীমাংসা করেন। জিওফ্রে দাবি করেছিলেন, কিশোরী অবস্থায় অ্যান্ড্রু তাকে যৌন নিপীড়ন করেছিলেন। তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও জিওফ্রের মৃত্যুর পর প্রকাশিত তার স্মৃতিকথায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।
রাজপরিবার জানায়, অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার ছিল বলে বিবেচিত হয়েছে। নিপীড়নের শিকার মৃত ও জীবিত ব্যক্তির প্রতি রাজা ও রানি সমবেদনা প্রকাশ করছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত চিঠিপত্রে দেখা গেছে, ২০১১ সালে এপস্টেইন পাঠানো এক চিঠিতে যোগাযোগ ধরে রাখা এবং আবারও সময় কাটানোর কথা বলেছিলেন অ্যান্ড্রু।
রাজপ্রাসাদের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অ্যান্ড্রু অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার বিবেচনায় গুরুতর ভুল ছিল।
ব্রিটেনে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাজতন্ত্রের জনপ্রিয়তা বহু বছর ধরে কমে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, চার্লস ও উইলিয়ামের এই পদক্ষেপ মূলত রাজতন্ত্রের অস্তিত্ব রক্ষা ও জনসমর্থন টিকিয়ে রাখার কৌশল।


নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন জরিপে এখনো এগিয়ে মামদানি

জোহরান মামদানি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের আগে প্রকাশিত দুটি নতুন জরিপে ডেমোক্র্যাটিক দলীয় প্রার্থী জোহরান মামদানি তার ব্যাপক লিড ধরে রেখেছেন। এমনকি, তার প্রতি নিউ ইয়র্কবাসীর সমর্থন আরও কিছুটা বেড়েছে বলে দেখা গেছে। অন্য দুই প্রধান প্রার্থীও নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে নিজেদের প্রতি সমর্থন বাড়াতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এমারসন কলেজের এক জরিপে দেখা যায়, মামদানি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু এম. কুওমোর চেয়ে ২৫ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। জুন মাসের প্রাইমারিতে চমকপ্রদ জয় পাওয়ার পর থেকেই তিনি শীর্ষে রয়েছেন।
আবার অ্যান্ড্রু কুওমো রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। এমারসনের সেপ্টেম্বরের সর্বশেষ জরিপের তুলনায় মামদানির জনপ্রিয়তা এবার সাত শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে।
নির্বাচন হতে আর এক সপ্তাহেরও কম সময় বাকি থাকায়, সব প্রার্থীই প্রাথমিক ভোটে উচ্চ অংশগ্রহণকে নিজেদের পক্ষে শুভ লক্ষণ হিসেবে দেখছেন। এমারসন জরিপে দেখা গেছে, যারা এরই মধ্যে ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ ভোটার মামদানিকেই বেছে নিয়েছেন।
জরিপে আরও বলা হয়েছে, তরুণ ও কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে মামদানির সমর্থন সবচেয়ে শক্তিশালী। গত দুই মাসে এই শ্রেণির ভোটারদের একটি বড় অংশ কুওমোর পক্ষ থেকে সরে এসে মামদানির দিকে ঝুঁকেছেন।
অন্যদিকে, ম্যারিস্ট ইউনিভার্সিটির আরেকটি জরিপে তিন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামদানি ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। জরিপে তিনি একমাত্র প্রার্থী, যাকে সম্ভাব্য ভোটারদের বেশিরভাগ ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন। আগের ম্যারিস্ট জরিপেও মামদানির একই ব্যবধান বজায় ছিল।
নতুন ম্যারিস্ট জরিপে দেখা গেছে, কুওমো মামদানির চেয়ে মাত্র সাত পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন।
কুওমো একাধিকবার স্লিওয়াকে প্রার্থিতা থেকে সরে গিয়ে মামদানি-বিরোধী ভোট একত্র করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু স্লিওয়া তা প্রত্যাখ্যান করে সাম্প্রতিক বিতর্ক ও নির্বাচনী প্রচারণায় কুওমোর বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন।
উভয় জরিপের ফলাফল, যা সম্ভবত আগামী মঙ্গলবারের নির্বাচনের আগে প্রকাশিত শেষ জরিপগুলোর মধ্যে একটি, সাম্প্রতিক মাসগুলোর অন্যান্য জরিপের সঙ্গে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ। বুধবার প্রকাশিত কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটির জরিপে দেখা যায়, ৪৩ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার মামদানিকে সমর্থন করছেন, যা তাকে কুওমোর চেয়ে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে রেখেছে


শেখ হাসিনার পতনের কারণ জানালেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পেছনে দুর্বল শাসনব্যবস্থাই মূল কারণ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল। তিনি বলেন, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও জনগণের আস্থাহীনতা একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।

শনিবার (১ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন দোভাল। সেখানে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “দুর্বল শাসন ব্যবস্থা অনেক সময় সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের পেছনে এই প্রশাসনিক দুর্বলতাই বড় ভূমিকা রেখেছে।”

অজিত দোভাল বলেন, “রাষ্ট্র গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রাষ্ট্রকে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে না, বরং সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথও তৈরি করে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আজকের প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। জনগণ এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে অনেক বেশি প্রত্যাশা রাখে। তাই সরকারকে মানুষের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দিতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসনিক নীতির প্রশংসা করে দোভাল বলেন, “ভারত এখন নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করছে— নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা, সমাজ কাঠামো ও বৈশ্বিক অবস্থানের মধ্য দিয়ে। প্রশাসনিক দুর্নীতি দমনে মোদি সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো ইতিমধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং ভবিষ্যতেও আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ভালো শাসনের অংশ হিসেবে তিনি নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়ন, প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। দোভাল বলেন, “শুধু ভালো আইন করলেই হবে না, এগুলোর কার্যকর বাস্তবায়নই আসল চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে সাইবার হামলা ও প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি থেকেও আমাদের সুরক্ষিত থাকতে হবে।”

অজিত দোভালের মতে, কোনো জাতির প্রকৃত শক্তি নিহিত থাকে তার শাসনব্যবস্থার মানের মধ্যে। যে রাষ্ট্র তার প্রশাসনিক কাঠামোকে দক্ষ, জবাবদিহিমূলক ও জনগণকেন্দ্রিক রাখতে পারে, সেই রাষ্ট্রই দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকে।


ভারতে ‘প্রেগন্যান্ট জব’ করতে গিয়ে যে অবস্থা হলো ঠিকাদারের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রতিদিন এবং প্রতি মুহূর্তে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল বের করছে সাইবার অপরাধীরা। আর সেই ফাঁদে পড়ে অনেকে তাদের সঞ্চয়ের বেশিরভাগ অর্থ খোয়াচ্ছেন। এবার ভারতে একটি নতুন প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে এলো। ‘প্রেগন্যান্ট জব’ বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে মহারাষ্ট্রের পুণের এক ঠিকাদার ১১ লাখ টাকা খোয়ালেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি মোবাইলে একটি বিজ্ঞাপন দেখেছিলেন ওই ঠিকাদার। তার দাবি, একটি বিজ্ঞাপনী ভিডিওতে এক নারী হিন্দিতে বলেন, ‘আমাকে অন্তঃসত্ত্বা করতে পারলে সেই পুরুষকে ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেই ব্যক্তি শিক্ষিত হোক বা না হোক, জাত, ধর্ম, রং কোনো কিছুই এই কাজে বাধা হবে না।’

ঠিকাদারের দাবি, ভিডিওটি দেখার পরই সেখানে দেওয়া নম্বরে ফোন করেন।

এক ব্যক্তি ফোন ধরেন। তিনি নিজেকে ‘প্রেগন্যান্ট জব’ সংস্থার এক কর্মী হিসাবে পরিচয় দেন।

ঠিকাদার আরো জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি তাকে বলেন, ‘প্রেগন্যান্ট জব’-এর জন্য নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। তার পর তাকে একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।

ওই ব্যক্তির কথামতো নাম নথিভুক্ত করাতে রাজি হয়ে যান ঠিকাদার। তার পর থেকেই ঠিকাদারের কাছে ফোন আসতে শুরু করে। তার কাছে কখনও রেজিস্ট্রেশন, কখনও পরিচয়পত্র, জিএসটি, টিডিএস, তথ্যযাচাই, প্রসেসিংসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের জন্য বেশ কয়েক দফায় টাকা চাওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঠিকাদারের আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তাকে নানা রকম প্রস্তাবের প্রলোভন দেখিয়ে ক্রমে প্রতারণার জালে ফাঁসাতে শুরু করে প্রতারকরা। এভাবে ১০০ দফায় মোট ১১ লাখ টাকা ইউপিআই এবং আইএমপিএস পদ্ধতির মাধ্যমে লেনদেন করেন ঠিকাদার।

তার পরই ঠিকাদারকে ব্লক করে দেয় প্রতারকেরা। ঠিকাদার যখন উপলব্ধি করেন তিনি সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়েছেন, তখন তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঠিকাদার।


তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হলেন আজহারউদ্দিন

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও কংগ্রেস নেতা মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন গতকাল শুক্রবার তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণ করেছেন। রাজ্যের গভর্নর জিশ্নু দেব বর্মা রাজভবনে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
আজহারউদ্দিন ঠিক কোন দপ্তরের দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনি শপথ নেওয়ায় রাজ্যটির মন্ত্রিসভার দীর্ঘদিনের শূন্যতা পূরণ হয়েছে। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের এই রাজ্যে কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রিসভায় তিনিই প্রথম মুসলিম প্রতিনিধি।
আজহারউদ্দিনের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির সমালোচনা করেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। তারা বলেছে, আগামী ১১ নভেম্বর জুবিলি হিলস আসনের উপনির্বাচনকে মাথায় রেখে আজহারউদ্দিনকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়েছে। কারণে, সেখানে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছে।
তবে শাসক দল তেলেঙ্গানা কংগ্রেস আজহারউদ্দিনের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তিকে সামাজিক ন্যায়ের প্রতিশ্রুতি পূরণ বলে দাবি করেছে। কংগ্রেসের রাজ্যপ্রধান মহেশ গৌদ এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমাদের দল সংখ্যালঘুদের মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি তৎকালীন অন্ধ্র প্রদেশে সব সময় সংখ্যালঘুরা মন্ত্রিসভায় থাকতেন। আমরা কেবল দীর্ঘদিনের অসমতা ঠিক করেছি।’
আজহারউদ্দিন এখন পর্যন্ত বিধানসভা কাউন্সিলের সদস্য নন, যা রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার জন্য আবশ্যক। তবে গভর্নরের কোটায় তাকে এরই মধ্যে বিধানসভা কাউন্সিলে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গভর্নর এখনো প্রস্তাবটিতে সই করেননি। মন্ত্রিসভার পদ ধরে রাখতে হলে তাকে ছয় মাসের মধ্যে বিধানসভা কাউন্সিলের সদস্য হতে হবে।


চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি মিয়ানমারের দুই শহর থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে চলমান তীব্র সংঘর্ষ বন্ধে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। চুক্তির আওতায় তারা দুটি শহর থেকে নিজেদের সদস্যদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।

টিএনএলএ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, চীনের মধ্যস্থতায় কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত কয়েক দিনের আলোচনা শেষে তারা এ চুক্তিতে পৌঁছেছে। কুনমিং মিয়ানমার সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৪৮ মাইল) দূরে অবস্থিত।

টিএনএলএ বলেছে, চুক্তির আওতায় উত্তরের মান্দালয়ে অবস্থিত মোগক শহর, যা রুবি খনির জন্য পরিচিত এবং শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় মোমেইক শহর থেকে তারা সরে যাবে। তবে তারা সরে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রকাশ করেনি।

চুক্তি অনুযায়ী, আগামী বুধবার থেকে উভয় পক্ষ অগ্রসর হওয়া বন্ধ রাখবে। টিএনএলএ বলেছে, জান্তা বাহিনী বিমান হামলা বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

টিএনএলএ মিয়ানমারের থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ। জোটের অন্য সদস্যরা হলো মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের পর গঠিত গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত তারা।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ওই জোট উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিম মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো দখল করে নেয়। টিএনএলএ একাই ১২টি শহর দখল করেছে। তবে চলতি বছরের শুরুতে চীনের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির কারণে তাদের অগ্রগতি ধীর হয়ে আসে। ফলে সেনাবাহিনী বড় শহরগুলো পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

চীন মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে একটি কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী শক্তি হিসেবে কাজ করছে। কারণ, এখানে তাদের বড় ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। চলতি বছর চীন সরকার আরও প্রকাশ্যভাবে মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে।

আগামী ডিসেম্বরে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামরিক সরকার নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।

তবে বহু নির্বাচনী এলাকা এখনো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সেসব এলাকায় ভোট গ্রহণ ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা আছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা এ নির্বাচনকে সামরিক সরকারকে বৈধতা দেওয়ার একটি কৌশল বলে মনে করছেন।


নতুন ওমরাহ ভিসা নীতি ঘোষণা করল সৌদি আরব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিভিন্ন দেশ থেকে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সুশৃঙ্খল করতে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহমন্ত্রক ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে। নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, ওমরাহ ভিসার প্রবেশপত্রের বৈধতার সময়কাল তিন মাস থেকে কমিয়ে ইস্যু করার তারিখ থেকে মাত্র এক মাস (৩০ দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে, এই পরিবর্তনের ফলে ওমরাহ যাত্রীদের সৌদি আরবে অবস্থানের মেয়াদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। সূত্রের বরাত দিয়ে সৌদি সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, ওমরাহ যাত্রীরা রাজ্যে পৌঁছানোর পর তাদের অবস্থানের মেয়াদ আগের মতোই তিন মাস অপরিবর্তিত থাকবে। এই নতুন নীতি আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হবে।

নতুন সংশোধিত নিয়মানুযায়ী, ভিসা ইস্যু হওয়ার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে যদি কোনো ওমরাহযাত্রী সৌদি আরবে প্রবেশের জন্য নিবন্ধিত না হন বা প্রবেশ না করেন, তবে সেই ভিসাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এই পদক্ষেপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ভিসা ব্যবস্থাপনাকে আরও সুগম করা, অপ্রত্যাশিত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা এবং কেবল প্রস্তুত তীর্থযাত্রীরাই যেন ভিসার সুযোগ নেন, তা নিশ্চিত করা।

ন্যাশনাল কমিটি ফর ওমরাহ অ্যান্ড ভিজিটের উপদেষ্টা আহমেদ বাজাইফার আল-আরাবিয়াকে জানিয়েছেন, গ্রীষ্মের সমাপ্তি এবং মক্কা ও মদিনায় আবহাওয়া শীতল হওয়ায় ওমরাহযাত্রীদের বিশাল ঢেউ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ভিড়কে সুচারুভাবে সামলানো এবং দুই পবিত্র শহরে অতিরিক্ত জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি বৃহত্তর প্রস্তুতির অংশ।

সৌদি গেজেটের তথ্যমতে, চলতি নতুন ওমরাহ মৌসুমের শুরুতে অর্থাৎ গত জুনের প্রথম দিক থেকে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ওমরাহযাত্রীদের জন্য ৪০ লাখের বেশি ওমরাহ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এই রেকর্ড সংখ্যক ভিসা প্রদান পূর্ববর্তী মৌসুমগুলোর পরিসংখ্যানকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে গত মাসে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় একটি ঘোষণা দেয়। সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, এখন থেকে সকল প্রকার ভিসাধারী- যার মধ্যে ব্যক্তিগত, ফ্যামিলি ভিজিট, ইলেকট্রনিক ট্যুরিস্ট, ট্রানজিট এবং ওয়ার্ক ভিসাও অন্তর্ভুক্ত- সবাই সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের জন্য অনুমতি পাবেন।

মন্ত্রণালয় বলেছে, সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য অনুযায়ী ওমরাহযাত্রীদের জন্য প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ওমরাহ পরিষেবাগুলোতে প্রবেশাধিকার ব্যাপকভাবে প্রসারিত করার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় ওমরাহযাত্রীদের জন্য ‘নুসুক ওমরাহ প্ল্যাটফর্ম’ ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী ওমরাহ প্যাকেজ বুকিং দিতে, ইলেকট্রনিকভাবে (অনলাইনে) ওমরাহ পালনের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে এবং নিজেদের সুবিধামতো সময় বেছে নিতে পারেন। এই সমন্বিত ডিজিটাল ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য ওমরাহ পালনকে আরও সহজ, প্রবেশগম্য এবং আধুনিক করবে বলে আশা করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।


যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধিতে রাজি আফগানিস্তান-পাকিস্তান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি অন্তত আরও এক সপ্তাহ বহাল রাখতে সম্মত হয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। দুদেশের তরফ থেকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার এসব কথা বলে।

এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তুরস্ক ও কাতারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, শান্তি বজায় রাখতে একটি পর্যবেক্ষণ ও যাচাই ব্যবস্থা গঠন করা হবে এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনকারী পক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে আরেকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানা যায়।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ শুক্রবার জানান, ইস্তাম্বুলে কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলেছে। সামনের দিনগুলোতেও মতবিনিময় অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাই মত দিয়েছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানে এক বিস্ফোরণের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে তালেবান সরকার। সেখান থেকেই দুদেশ তাদের দুহাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই প্রথম এমন ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়ালো দুই প্রতিবেশি।

সংঘর্ষে দুই শতাধিক তালেবান যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। অন্যদিকে তালেবান সরকারের দাবি, তারা ৫৮ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে।

পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের পর গত ১৯ অক্টোবর দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে করে। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দোহায় ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

শনিবার ইস্তাম্বুলে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসে কাবুল ও ইসলামাবাদ। তবে মতবিরোধের জেরে বুধবার আলোচনা কার্যত ভেস্তে যায়। আফগানিস্তানে অবস্থানরত সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ।

ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগান মাটিতে বসে পাকিস্তানে হামলা চালায় টিটিপি। তাদের নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে ব্যবস্থা নিতে তালেবান সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। তাদের অভিযোগ ও দাবি অস্বীকার করে তালেবান সরকারের বক্তব্য, টিটিপির ওপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।

এই উত্তপ্ত অবস্থা সামলে বৃহস্পতিবার আলোচনায় পুনরায় অগ্রগতি দেখা দেয়। তখন যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।

তালেবান সরকারের তরফ থেকে আলোচনা অব্যাহত থাকার কথা জানানো হলেও পাকিস্তান এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও দুই দেশের সীমান্ত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আফগানিস্তানের কান্দাহারে বস্ত্র ব্যবসায়ী নাজির আহমদ বলেন, দুই দেশই ক্ষতির মুখে। আমাদের দুদেশই ক্লান্ত-শ্রান্ত।

পাকিস্তানের চামান সীমান্ত শহরের গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার বলেন, বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুই দেশই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ, কিন্তু উভয়েই ক্ষতির শিকার হচ্ছে।


গাজায় নানা অজুহাতে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা শহর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুদ্ধবিরতির পরও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি তাণ্ডব বন্ধ হয়নি। নানা অজুহাতে গাজায় নির্বিচারে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতির এই অব্যাহত লঙ্ঘনে গাজাবাসীর সব আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল মারাত্মকভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এতে অন্তত শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো দৃঢ়ভাবেই কার্যকর রয়েছে।
যদিও দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাতার হতাশা ব্যক্ত করে বলেছে, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায়ের জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করছে।
এদিকে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার পর গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৮ হাজার ৫২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন ফিলিস্তিনি।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনারা গতকাল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ব্লিদা শহরে হামলা চালিয়ে পৌরসভার এক কর্মীকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।
লেবাননের সরকারি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা বেশ কয়েকটি সামরিক ব্লিদা শহরে প্রবেশ করে পৌর ভবনে হামলা চালায়। এসময় ইসরায়েলি হামলায় ইব্রাহিম সালামেহ নামে এক কর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি বাহিনী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি বলে টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে হিজবুল্লাহ এই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে, হামাস নিরস্ত্র হোক—চায় না ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি। গত ২২ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের (পিসিপিএসআর) চালানো জরিপে এ তথ্য দেখা গেছে।
জরিপে অংশ নেওয়াদের ৭০ শতাংশ মনে করে, হামাসের হাতে অস্ত্র থাকলে যদি ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে তবু হামাস যেন অস্ত্র না ছাড়ে। হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিমতীরে বেশি। সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা হামাসের হাতে অস্ত্র দেখতে চাওয়ার কথা বলেছে। অথচ পশ্চিমতীর শাসন করছে হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন ফাতাহ। ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকার ৫৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করেছেন।
এ ছাড়া ৬২ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করে না ট্রাম্পের পরিকল্পনা সফল হবে। এই পরিকল্পনা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবে না বলে মনে করে তারা। পশ্চিমতীরের ৬৭ শতাংশ ও গাজার ৫৪ শতাংশ ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছে। এক হাজার ২০০ জনের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়। তাদের ৭৬০ জন পশ্চিমতীর ও ৪৪০ জন গাজার বাসিন্দা।
গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন শিগগিরই
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিনের বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ‘আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী’ মোতায়েনের পরিকল্পনা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার সূত্রের বরাত দিয়ে আল অ্যারাবিয়া এ খবর জানিয়েছে।
সৌদি সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুসারে, গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনীতে আরব এবং বিদেশি উভয় ধরণের সৈন্য থাকবে।
প্রতিবেদনে সামরিক কর্মী পাঠানোর জন্য প্রত্যাশিত নির্দিষ্ট দেশগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়নি। আল অ্যারাবিয়ার সূত্র আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের পুলিশ কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণের আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র; তারা গাজায় নিরাপত্তা দেবে।
২৯ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউস গাজার সংঘাত নিরসনের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষিত ‘ব্যাপক পরিকল্পনা’ উন্মোচন করে। ২০-দফা নথিতে, বিশেষ করে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে অস্থায়ী ‘বহিরাগত শাসনব্যবস্থা’ চালু করা এবং একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়।
৯ অক্টোবর ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মিসরে আলোচনার পর ইসরায়েল এবং হামাস শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছেছে। ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, গাজায় সংঘাতের মীমাংসার অংশ হিসেবে হামাস তাদের অস্ত্র সমর্পণ করবে এবং ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করবে বলে জানানো হয়।
গাজায় ২৪ হাজার টনের বেশি ত্রাণ পৌঁছেছে
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপকহারে ত্রাণ পৌঁছানো শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার টনের বেশি ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে এবং কমিউনিটি ভিত্তিক বিতরণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক উপসমন্বয়ক রামিজ আলাকবারভ বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় আমরা অনেক বেশি ত্রাণ গাজায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন পরিবার এবং স্থানীয় কমিউনিটির কাছে সরাসরি বিতরণ করা হচ্ছে।’
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আঞ্চলিক পরিচালক সামের আবদেলজাবের জানান, চলতি মাসে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। আলাকবারভ বলেন, উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় ত্রাণ বিতরণ এখন সহজ হচ্ছে।
একই সঙ্গে ১৫টি থেরাপিউটিক প্রোগ্রাম সেন্টার চালু হয়েছে, যার মধ্যে আটটি নতুন কেন্দ্র গাজার উত্তরে খোলা হয়েছে। এই উদ্যোগে ইউনিসেফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তা আলাকবারভ আরও বলেন, ত্রাণ কার্যক্রমের পূর্ণ সাফল্যের জন্য বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওদের অংশগ্রহণ জরুরি, তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখনো বাধা হয়ে আছে। তিনি ইসরায়েলকে আহ্বান জানান যেন তারা এই সংস্থাগুলোকে মানবিক সহায়তা বিতরণে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করতে অনুমতি দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী দক্ষিণ ইসরায়েলে সমন্বয় কেন্দ্র স্থাপন করেছে, যা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ এবং ত্রাণ ও পুনর্গঠন কার্যক্রমে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, যুদ্ধবিরতির কারণে আমরা এখন অনেক বেশি ত্রাণ পাঠাতে পারছি। আমাদের ৬০ দিনের জীবনরক্ষাকারী পরিকল্পনার আওতায় কাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে।


ইসরায়েলি গণহত্যা নিয়ে বাকযুদ্ধে জড়ালেন মের্জ-এরদোয়ান

রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান
আপডেটেড ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:১৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা ও হামলা সম্পর্কে জার্মানি ‘অজ্ঞ ও উদাসীন’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। দায়িত্ব গ্রহণের পর মের্জের প্রথম তুরস্ক সফরে দুই ন্যাটো মিত্রের মধ্যে প্রকাশ্য মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ-এর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মের্জকে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করেছেন এরদোয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে মের্জ বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকেই ইসরায়েলের পাশে রয়েছে জার্মানি। তিনি মনে করেন ইসরায়েল তার ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ প্রয়োগ করছে। হামাস যদি বন্দিদের ছেড়ে দিয়ে অস্ত্র ত্যাগ করত তবে অসংখ্য প্রাণহানি এড়ানো যেত।
এ বক্তব্যের সরাসরি বিরোধিতা করে এরদোয়ান বলেন, হামাসের কাছে কোনো বোমা বা পারমাণবিক অস্ত্র নেই, কিন্তু ইসরায়েলের কাছে সবই আছে। তারা সেগুলো ব্যবহার করে গাজায় হামলা চালাচ্ছে, এমনকি গতরাতেও তারা গাজায় হামলা চালিয়েছে।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘জার্মানি কি এগুলো দেখে না? জার্মানি কি গাজার ওপর এই হামলা ও অবরোধ লক্ষ্য করছে না? ইসরায়েল সবসময় গাজাকে ক্ষুধা ও গণহত্যার মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা করছে।’
এরদোয়ানের তীক্ষ্ণ যুক্তিতে মের্জ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের কিছুটা সমালোচনা করলেও ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার এড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে ইসরায়েলবিরোধী সমালোচনা যেন ইহুদিবিদ্বেষে পরিণত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক ও জার্মানি একসঙ্গে কাজ করে গাজায় ত্রাণ ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি তিনি প্রতিরক্ষা শিল্পে যৌথ প্রকল্প ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের যোগদানের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মের্জও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে তিনি তুরস্কের সঙ্গে অর্থনৈতিক, পরিবহন ও অভিবাসন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে চান।


banner close