মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
৬ কার্তিক ১৪৩২

সীমান্ত রক্ষায় ‘ভূত’ নিয়োগ করল থাইল্যান্ড

দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২০

কম্বোডিয়া সীমান্তে ‘ভূত’ নিয়োগ করেছে থাইল্যান্ড। সীমান্ত থেকে অবিরাম ‘ভূতের আওয়াজ’ পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হান সেন। মূলত বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে সীমান্তবাসীর সঙ্গে থাইল্যান্ড মনস্তাত্ত্বিক লড়াই করছে বলে জানিয়েছে কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন। তাদের মতে, এটি মানসিক যুদ্ধের (সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার) অংশ। যদিও দুই দেশ গত জুলাইয়ে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল; কিন্তু নতুন এই বিতর্কে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে সীমান্ত এলাকায়।

সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় হান সেন লিখেছেন, তীব্র ও উচ্চস্বরে ভৌতিক আওয়াজ নিয়ে জাতিসংঘের কাছে অভিযোগ করেছে কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন। গত ১১ অক্টোবর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ককে সম্বোধন করা কমিশনের একটি চিঠি শেয়ার করেছেন সেন। তিনি লিখেছেন, থাই-কম্বোডিয়ান সীমান্তে ‘মানসিক ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানির জন্য বিরক্তিকর শব্দ ব্যবহার করে থাইল্যান্ড গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’।

কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী থাই সেনারা রাতে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ‘ভূতের মতো কান্নার শব্দ’ এবং বিমানের ইঞ্জিনের আওয়াজ বাজাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এসব শব্দ স্থানীয়দের ঘুম নষ্ট করছে, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এবং শারীরিক অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। কমিশন সতর্ক করে বলেছে, এমন কর্মকাণ্ড দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বাড়াতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত থাই সরকার এ অভিযোগে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। হান সেন জানিয়েছেন, কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি মালয়েশিয়া সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে। কারণ, যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করতে সহায়তা করেছিল মালয়েশিয়া।


নেতানিয়াহু কানাডায় পা রাখলে গ্রেপ্তার করা হবে: মার্ক কার্নি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ঘোষণা দিয়েছেন, তার সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কঠোরভাবে কার্যকর করবে, যদি তিনি কানাডায় প্রবেশ করেন।

২০২৪ সালের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে আইসিসি নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কার্নিকে জিজ্ঞেস করা হয়, কানাডা কি আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করবে? জবাবে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘হ্যাঁ,’ নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে তিনি প্রস্তুত।

এর আগে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ঐতিহাসিক মামলা দায়ের করে। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর মামলাটি আপাতত স্থগিত রয়েছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে আইসিজে তিন দফায় অন্তর্বর্তী নির্দেশনা দিয়ে ইসরায়েলকে গণহত্যা বন্ধ করতে, সামরিক অভিযান স্থগিত রাখতে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা না দিতে নির্দেশ দেয়।

এ বছরের ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে কানাডা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। একই দিনে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালও একই ঘোষণা দেয়। পরবর্তী দুই দিনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, মোনাকো এবং অ্যান্ডোরা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি জানায়।


ভারতের হুসেনাবাদে নবাবদের বংশধররা আজও ব্রিটিশদের পেনশন পাচ্ছেন

আপডেটেড ২১ অক্টোবর, ২০২৫ ১০:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের হুসেনাবাদে ৯০ বছর বয়সি ফাইয়াজ আলী খান তার ‘ওয়াসিকা’ বা রাজকীয় পেনশন নিতে পিকচার গ্যালারিতে আসেন। বয়সের ভারে হাত কাঁপলেও চোখে এখনো উজ্জ্বলতা আছে।

ফাইয়াজ আলী খান ১,২০০ জন প্রাপকের মধ্যে একজন, যারা আওয়াধ রাজবংশের উত্তরাধিকার সূত্রে এই পেনশন পান। ‘ওয়াসিকা’ ফারসিতে চুক্তিকে বোঝায়। এটি মূলত সাবেক অযোধ্যা রাজ্যের নবাবদের বংশধর এবং সহযোগীদের জন্য মঞ্জুর করা হয়েছিল। ১৮৫৬ সালের আগে অযোধ্যার নবাবরা এই অঞ্চলের শাসক ছিলেন।

ভারতে রাজতন্ত্র না থাকলেও, উত্তরপ্রদেশ, কেরালা, রাজস্থানসহ কিছু রাজ্যে নবাব পরিবারের জন্য ওয়াসিকা পেনশন এখনো টিকে আছে। পেনশনের পরিমাণ খুবই অল্প, মাসিক মাত্র ৯ টাকা ৭০ পয়সা। কিন্তু প্রাপকদের কাছে সম্মান ও ঐতিহ্যের মান এই অর্থের চেয়ে অনেক বেশি।

ফাইয়াজ আলী খান বলেন, ‘এটি এক পয়সাও হোক, আমরা খরচ করে এটিকে গ্রহণ করতাম। এটি আমাদের পরিচয়ের প্রতীক।’ বর্তমানে প্রায় ১,২০০ জন ‘ওয়াসিকাদার’ এই পেনশন পান। ওয়াসিকার পরিমাণ নির্দিষ্ট নয়; বংশধরের সংখ্যা বাড়লে তা ভাগ হয়ে কমে যায়।

ওয়াসিকা বিতরণের সূচনা হয় ১৮১৭ সালে। অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলা-এর স্ত্রী বহু বেগম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে দুই কিস্তিতে ৪০ মিলিয়ন রুপি ঋণ দিয়েছিলেন। সেই ঋণের সুদ থেকে আত্মীয় ও সহযোগীরা মাসিক পেনশন পান। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর ব্যাংকে কিছু ঋণ রাখা হয়। ওয়াসিকা কর্মকর্তা এসপি তিওয়ারি জানান, বর্তমানে প্রায় ২৬ লক্ষ রুপির সুদ ব্যাংকে থাকায় এখান থেকে পেনশন দেওয়া হয়।

সমালোচকরা মনে করেন, ওয়াসিকা আধুনিক সমাজে অপ্রাসঙ্গিক। তবে যারা এটি পান, তারা এটিকে ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির প্রতীক হিসেবে দেখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক তোলার (১১.৭ গ্রাম) ওজনের রূপার মুদ্রায় মূলত ওয়াসিকা প্রদান করা হতো। ভারতীয় মুদ্রা চালুর পর এর প্রকৃত মূল্য অনেক কমে গেছে।

ফাইয়াজ আলী খান জানান, ‘মানুষরা ঘোড়ার গাড়ি বা টিমটমে চড়ে আসত, মহিলারা পর্দাঘেরা পালকিতে আসতেন। এখন সেই প্রথা আর নেই।’

সূত্র: বিবিসি


ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর চলে ভয়াবহ নির্যাতন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের কারাগারে আট মাস বন্দি থাকা মাহমুদ আবু ফউল মুক্তি পাওয়ার পর মায়ের গলা শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু এই ফিলিস্তিনি তরুণ মায়ের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। মাহমুদের বয়স ২৮ বছর, বাড়ি গাজার উত্তরাঞ্চলে। গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এর পর থেকে তিনি ইসরায়েলের বন্দিশালায় ছিলেন। কারারক্ষীরা তাকে এতটাই নির্যাতন ও নিষ্ঠুরভাবে মারধর করেছেন যে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন।

গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীন এ সপ্তাহে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাদের অনেকের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।

মাহমুদ ২০১৫ সালে ইসরায়েলের বোমা হামলায় পা হারান। আল–জাজিরাকে তিনি বলেন, বন্দি থাকার সময় তাকে অবিরাম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। রাখা হয় ইসরায়েলের কুখ্যাত সদে তেইমান কারাগারে। আরও অনেক বন্দি এ কারাগারে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা বলেছেন।

মাহমুদ বলেছেন, তাকে ওই কারাগারে প্রচণ্ড নির্যাতন ও মারধর করা হতো। এমন একদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে মাহমুদ বলেন, কারারক্ষীরা সেদিন তার মাথায় এত জোরে আঘাত করেন যে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।

মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমি বারবার আমাকে চিকিৎসা করাতে বলছিলাম। কিন্তু তারা শুধু আমার চোখে একধরনের ড্রপ দিয়েছেন, যেটি কোনো কাজই করেনি। আমার চোখ দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়ছিল, ময়লা বের হচ্ছিল ও ব্যথা করছিল। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেননি।’

চিকিৎসা পেতে মাহমুদ অনশনের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তার দাবি আমলেই নেয়নি।

অবশেষে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মাহমুদকে নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি পরিবারের দেখা পেতে উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেখানে তার মা আসেন।

মাহমুদ বলেন, ‘তার (মায়ের) গলা শুনেই আমি তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। আমি তাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না, তবে শুধু গলার আওয়াজ শুনতে পাওয়াটাও আমার কাছে পুরো পৃথিবী পাওয়ার সমান।’

মাহমুদ এখন গাজায় বাড়ির ধ্বংসাবশেষের কাছে একটি তাবুতে বসবাস করছেন। এখনো তার চোখের চিকিৎসা হয়নি। চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে তিনি সাহায্য কামনা করেছেন।

ইসরায়েলি কারাগারে বন্দিদের পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন-নিপীড়নের প্রমাণ ক্রমে বাড়ছে। মাহমুদ যেসব নির্যাতনের শিকার হওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন, সেগুলো ওই সব প্রমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইসরায়েলের কারাগার থেকে এ সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের অনেককে দুর্বল ও অসুস্থ মনে হয়েছে বা তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। একজনের ওজন তার বন্দি হওয়ার আগের ওজনের অর্ধেক হয়ে গেছে।

প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বন্দি থাকা ১০০ সাবেক ফিলিস্তিনি বন্দির সাক্ষ্য নথিবদ্ধ করেছে। তারা দেখেছে, শুধু সদে তেইমানের মতো কুখ্যাত বন্দিশালাতেই নয়; বরং ইসরায়েলের সব কারাগারে পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়।

ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিচারক, আইনজীবী অথবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া হয় না। তাদের সব অধিকার থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।

ইসরায়েল অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে, যারা বন্দি থাকার সময় মারা গেছেন।

গাজার হাসপাতাল সূত্র আল–জাজিরাকে বলেছে, কয়েকটি মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে এবং এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা দেখে মনে হচ্ছে খুব সম্ভবত তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেন, ‘তাদের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না, তারা যখন বাধা দিয়েছেন, তখন তাদের ফাসিতে ঝোলানো হয়েছে।’

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলি কারাগারে মারা গেছেন।

ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা বেইতসালেম গত বছর দেশটির কারাগার ব্যবস্থাকে ‘নির্যাতন শিবিরের জাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যেখানে বন্দীরা পদ্ধতিগতভাবে শারীরিক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হন। কারাগারগুলোয় বন্দিদের যথেষ্ট খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হয় না এবং তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হন।

পাবলিক কমিটি এগেইনস্ট টর্চার ইন ইসরায়েল (পিসিএটিআই) বলেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে বন্দি নির্যাতনের শতাধিক ঘটনার প্রতিবেদন দেওয়া হলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ শুধু দুটি ঘটনা আইনের আওতায় এনেছে। তবে দুই মামলার কোনোটিতে কোনো কারাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়নি। পিসিএটিআই বন্দি নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত করা একটি ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন।

সুত্র : আল-জাজিরার


তেহরান পারমাণবিক চুক্তির মেয়াদ শেষ

জাতিসংঘকে রাশিয়া, চীন ও ইরানের চিঠি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত তেহরান পারমাণবিক চুক্তির মেয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে গেছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে ইরান, রাশিয়া ও চীন। এতে ইরানের পারমাণবিক বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পর্যবেক্ষণও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গত শনিবার দেশ তিনটি একযোগে জাতিসংঘকে এসব তথ্য দিয়েছে।

শনিবার ইরান, রাশিয়া ও চীন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, রেজল্যুশন ২২৩১-এর আওতাধীন বিধিনিষেধগুলোর মেয়াদ ২০২৫ সালের ১৮ অক্টোবর শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রেজল্যুশনটির ১০ বছরের মেয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হচ্ছে। রেজল্যুশন ২২৩১-এর মধ্য দিয়ে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) তথা ইরান পারমাণবিক চুক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

তিন দেশের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ইথ্রি দেশগুলো (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি) চুক্তিটি পুনর্বহালের যে চেষ্টা করছে, তা আইনগত ও প্রক্রিয়াগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় দেশগুলো যেহেতু জেসিপিওএ এবং ২২৩১ রেজল্যুশনের আওতায় নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করার কাজ বন্ধ করেছে, তাই তারা আর এ ধারাগুলো প্রয়োগের অধিকার রাখে না।

একপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা, হুমকি বা উত্তজনা বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার জন্য ওই চিঠিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মূল চুক্তির সময়সূচি অনুযায়ী রেজল্যুশনের মেয়াদ শেষ হওয়াটা প্রত্যাশিতই ছিল।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই তারিখ থেকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি–সংক্রান্ত সব শর্ত, বিধিনিষেধ ও প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে।’


সারকোজির কারাবাস শুরু হচ্ছে আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির কারাবাস শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। প্যারিসের একটি কারাগারে পাঁচ বছরের কারা ভোগ করতে হবে তাকে। কারাগারে যাওয়ার আগে সারকোজি বলেছেন, তিনি ‘ভীত নন’। আর কারাগারে থাকার সময় বই লেখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৭০ বছর বয়সি নিকোলা সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন প্যারিসের আদালত। যুদ্ধ-পরবর্তী ফ্রান্সের প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোটভুক্ত কোনো দেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কারাগারে যাচ্ছেন তিনি।

২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন সারকোজি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তাকে নির্বাচন করার জন্য অর্থ দিয়েছিলেন লিবিয়ার তৎকালীন নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। যদিও সারকোজি নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করে আসছেন।

প্যারিসের লা সান্তে নামের একটি কারাগারে নেওয়া হবে সারকোজিকে। এর আগে গত রোববার তিনি ফরাসি সংবাদমাধ্যম লা ত্রিব্যুন দিমঁশকে বলেছেন, ‘কারাগার নিয়ে ভীত নই। সান্তের ফটকেও আমি মাথা উঁচু করেই ঢুকব।’ কারাগারে বিশেষ সুবিধাও চান না বলে জানিয়েছেন।

সারকোজি লা ত্রিব্যুন দিমঁশকে বলেন, কারাগারে থাকার সময় কোনো অভিযোগ অথবা কারও সহানুভূতি নিতে চান না তিনি। তাকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি আরও বলেছে, কারাগারে থাকার সময়টি একটি বই লেখার কাজে ব্যয়ের পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।


বলিভিয়ায় দুই দশকের বামপন্থি শাসনের অবসান

নতুন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো পাজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জর্জ ‘টুতো’ কুইরোগাকে পরাজিত করে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মধ্যপন্থি রদ্রিগো পাজ। এর মাধ্যমে দেশটিতে প্রায় দুই দশকের বামপন্থি শাসনের অবসান হলো।

বলিভিয়ার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের প্রাথমিক ফলের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির সেনেটর রদ্রিগো পাজ রান অফে ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টে পাজের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ভালোভাবে দেশ শাসনে তাকে অন্যদের সঙ্গে জোট গঠন করতে হবে। আগামী ৮ নভেম্বর নতুন প্রেসিডেন্ট লাতিনের দেশটির দায়িত্বভার নেবেন।

আমাদের অবশ্যই বিশ্বের কাছে বলিভিয়াকে খুলে দিতে হবে- বিজয়ের ঘোষণায় এমনটাই বলেছেন পাজ। ৫৮ বছর বয়সি এ সেনেটরের জয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে এক ঐতিহাসিক মোড বদল ঘটল। ২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়া মূলত টানা বলিভিয়াস মুভমেন্ট ফর সোশালিজম বা মাসের শাসনে ছিল, যারা এককালে সংখ্যাগরিষ্ঠ আদিবাসীদের কাছ থেকে একচেটিয়া সমর্থন পেত।

পাজ বলিভিয়ার চলমান সামাজিক কর্মসূচিগুলো চালু রাখার পাশাপাশি বেসরকারি খাত নেতৃত্বাধীন উন্নয়নকে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের প্রতিষ্ঠিত মাসের অনেক ভোটারকেই আকৃষ্ট করেছে। এ ভোটারদের অনেকে আবার রক্ষণশীল কিরোগার প্রস্তাবিত কৃচ্ছ্রতাসাধন কর্মসূচি নিয়ে আতঙ্কিত ছিলেন। এসবই রান-অফে পাজের জয়ে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে হচ্ছে।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আগস্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে মাসের প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছিল।

‘এই নির্বাচনকে বলিভিয়ার রাজনীতিতে সন্ধিক্ষণ বলা যায়। বলিভিয়া এখন এক নতুন দিকে যাচ্ছে,’ বলেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সাউদার্ন আন্দিজের বিশ্লেষক গ্লায়েলডিজ গনজালেজ কালানচে।

রান-অফের আগে পাজ ও কিরোগা উভয়েই নির্বাচনে জয়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো করা ও বলিভিয়ার ভঙ্গুর অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আর্থিক সহায়তা চাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

সেপ্টেম্বরের শেষদিকে পাজ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেড়শ কোটি ডলারের একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রস্তাব হাজির করেছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কয়েকদিন আগে বলেছেন, কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নেতৃত্বের পর বলিভিয়ার দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘মজবুত, ভালো সম্পর্ক গড়তে চাইছে’।

‘রূপান্তরের সুযোগ এই নির্বাচন,’ গত বুধবার এমনটাই বলেছিলেন তিনি।

গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন লা পাজের এক ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন লোরদেজ মেনদোজা। তিনি বলছিলেন, বামপন্থি মাসের শাসনকার দেখে ক্লান্ত হয়ে পড়ার কথা।

‘আমরা সন্তানরা জন্ম নিয়েছে ও বেড়ে উঠতে একটা সরকারই দেখেছে। আশা করছি তারা এবার অন্যান্য সম্ভাবনা ও বিকল্পগুলোও দেখতে পারবে,’ বলেছেন এ নারী।

রান-অফের আগে ভোটারদের মধ্যে মূল আলোচনাই ছিল বলিভিয়ার ভঙ্গুর অর্থনীতি। একসময় যে দেশ ব্যাপক পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করত, তা অনেকটাই কমে এসেছে, মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, জ্বালানি সংকটও দেখা দিয়েছে।

দুই প্রার্থীই মাস আমলের রাষ্ট্রকেন্দ্রিক মডেল বদলে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাজ চাইছেন ধীরে ধীরে সংস্কার করতে। তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর প্রণোদনা দিতে চান, অঞ্চলগুলোকে দিতে চান অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন। কিরোগার প্রস্তাব ছিল ব্যাপক কৃচ্ছ্রতাসাধন ও আইএমএফ থেকে সহায়তা নেওয়া।

‘২১ শতকে বলিভিয়ার গণতন্ত্রের নতুন পর্বে ঢুকতে যাচ্ছি আমরা। আমরা মানুষের জন্য একটি অর্থনীতি গড়ার চেষ্টা করতে যাচ্ছি, যেখানে আগের মতো রাষ্ট্র আর কেন্দ্রীয় অক্ষে থাকবে না,’ রান-অফের দুদিন আগে রয়টার্সকে বলেছিলেন পাজ।

অনেক ভোটার অবশ্য পাজের এমন অবস্থানে খুশি নন।

‘আমার মনে হয় তিনি বিদায়ী সরকারের পাপেট,’ বলেছেন লা পাজের একটি নখ পরিচর্যা কেন্দ্রে কাজ করা ২১ বছর বয়সি এস্থার মিরান্ডা।

রানিংমেট এডমুন্ড লারার কারণেও পাজ অনেক ভোটারকে আকৃষ্ট করতে পেরেছেন বলে অনেকের ভাষ্য। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা লারা দুর্নীতি উন্মোচনে করা টিকটক ভিডিওর জন্য বেশ সুপরিচিত। তার পপুলিস্ট আবেদন পাজকে তরুণ ও শ্রমজীবী ভোটারদের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

তবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই পাজকে তাৎক্ষণিক কিছু প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হবে। এর মধ্যে আছে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা ও নানাভাগে বিভক্ত পার্লামেন্টে জোট গড়া।

বিদায়ী হাইড্রোকার্বনমন্ত্রী আলেহান্দ্রো গালারডো কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, জ্বালানি আমদানির জন্য বিদেশি মুদ্রা পেতে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পাজ রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন এবং তার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিনেই মধ্যে দেশে ডিজেল ও গ্যাসোলিন পৌঁছানোর ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

মধ্যপন্থি এ রাজনীতিক সার্বজনীয় জ্বালানি ভর্তুকি ধাপে ধাপে তুলে দেওয়ারও পক্ষে। ঝুঁকিতে থাকা গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দেওয়া অব্যাহত থাকবে, তবে কৃষি ব্যবসাসহ বড় বড় খাতকে বাজারমূল্যে জ্বালানি কিনতে হবে, এমনই তার ভাবনা।

এদিকে বলিভিয়ার প্রধান শ্রমিক ইউনিয়ন সেন্ট্রাল অবরেরা বলিভিয়ানা (সিওবি) এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, মাস সরকারের আমলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে যেসব অর্জন হয়েছে, তার বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকি তারা প্রতিহত করবে। এর মানে হচ্ছে, রাস্তায় আন্দোলন এড়াতে পাজ সরকারকে নানা কৌশলও নিতে হবে।

এদিকে পার্লামেন্টের সমর্থনও পাজের জন্য খুবই জরুরি। কিন্তু তার দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিসি) নিম্নকক্ষের ১৩০ আসনের মধ্যে জিতেছে মাত্র ৪৯টি, উচ্চকক্ষ সেনেটেও ৩৬টি আসনের মধ্যে পেয়েছে ১৬টি। কিরোগার রক্ষণশীল জোট খানিকটা পিছিয়ে আছে। তারা নিম্নকক্ষে জিতেছে ৪৩ আসন, সেনেটে ১২টি।


ভারতকে কড়া হুমকি ট্রাম্পের

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করলে উচ্চ শুল্ক দিতেই হবে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত, আবারও এমন দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প সতর্ক করেছেন, যদি ভারত তা না করে, তাহলে ‘বিপুল’ শুল্ক দেওয়া থেকে নিস্তার নেই।

‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেন, রুশ তেল কেনার বিষয়টি আর থাকবে না।’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ট্রাম্প।

ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে এ ধরনের কথোপকথন সম্পর্কে তারা অবগত নয়। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, তারা যদি সেটি বলতে চায়, তাহলে বিপুল হারে শুল্ক দিতে হবে, যেটা তারা নিশ্চয়ই দিতে চাইবে না।

মার্কিন-ভারত বাণিজ্য চুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার তেল। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারত-রাশিয়ার তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। ভারতের পণ্যে ট্রাম্প যে ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন, তার অর্ধেকই এই তেল কেনার শাস্তি।

২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেল কেনা বন্ধ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে রাশিয়া অনেক ছাড় দিয়ে তেল বিক্রি শুরু করে। সমুদ্রপথে রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হয়ে ওঠে ভারত।

গত বুধবার ট্রাম্প বলেন, মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন, ভারত রুশ তেল কেনা বন্ধ করবে। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সেদিন দুই নেতার মধ্যে কোনো টেলিফোন আলাপের বিষয়ে তারা অবগত নয়। মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের প্রধান উদ্বেগ হলো- ‘দেশের ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা।’

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার জানান, রাশিয়ার তেল কেনা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে ভারত; কিন্তু ভারতীয় সূত্রগুলো বলছে, তাতক্ষণিকভাবে রাশিয়ার তেল কেনায় কমতি দেখা যায়নি।

ভারতের সূত্র জানিয়েছে, দেশটির তেল পরিশোধনাগারগুলো ইতোমধ্যে নভেম্বর মাসের জন্য কার্যাদেশ দিয়েছে, যার মধ্যে কিছু তেল ডিসেম্বর মাসেও আসবে। ফলে ডিসেম্বর বা জানুয়ারির হিসাবে তেল আমদানি কমতে পারে।

পণ্যবিষয়ক তথ্যপ্রতিষ্ঠান কেপলারের হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ২০ শতাংশ বাড়তে পারে। ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রুশ তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর রাশিয়া রপ্তানি বাড়িয়েছে। সে কারণে এই বৃদ্ধির সম্ভাবনা। তাতে এ মাসে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি দৈনিক ১৯ লাখ ব্যারেলে পৌঁছাবে।


যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৯৭ জন নিহত

ইসরায়েলের ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলিদের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৯৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৩০ জন। হামাস–নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। গাজার গণমাধ্যম দপ্তর আরও বলেছে, ইসরায়েলিরা এখন পর্যন্ত ৮০ বার যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের দাবি, এতে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় আড়াইশ মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।

জবাবে ওই দিনই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। দুই বছরের হামলায় গাজায় নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা ৬৮ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা মেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকরও হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির আওতায় ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় অভিযান বন্ধ করার কথা। বিনিময়ে গাজায় জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের (জীবিত ও মৃত) ছেড়ে দেবে হামাস। যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের আওতায় জটিল এ প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা হামাস বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো হামলার জবাবে অঞ্চলটির দক্ষিণে বিমান হামলা শুরু করেছে। তবে হামাস দাবি করেছে, তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে। একজন কর্মকর্তা ইসরায়েলকে তাদের নিজস্ব আক্রমণ পুনরায় শুরু করার জন্য ‘অজুহাত’ তৈরি করার অভিযোগ করেছেন।

হামাসকে ‘যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের’ অভিযোগ এনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘গাজা উপত্যকায় ‘সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার’ নির্দেশ দিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অস্বস্তিকর যুদ্ধবিরতি ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ধ্বংসাত্মক যুদ্ধবিরতি বন্ধ করে দেয়। এই চুক্তিতে জিম্মি ও বন্দি বিনিময়ের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল এবং গাজার ভবিষ্যতের জন্য একটি উচ্ছাকাঙ্ক্ষী রোডম্যাপের পাশাপাশি প্রস্তাবিত হয়েছিল; কিন্ত তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।

সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আজকের (সোমবার) প্রথম দিকে সন্ত্রাসীরা চুক্তির শর্তাবলি অনুসারে রাফাহ এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস করতে পরিচালিত আইডিএফ (সেনা) বাহিনীর ওপর ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং গুলি চালায়’।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইডিএফ রাফাহ এলাকা লক্ষ্য করে যুদ্ধবিমান এবং কামানের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে বিমান হামলার জবাব দিয়েছে’।

এর আগে, একজন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা বলেছিলেন, হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে সৈন্যদের ওপর ‘একাধিক আক্রমণ’ চালিয়েছে।

ফিলিস্তিনি এক প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ইসরায়েল এখনো এই অঞ্চলটি দখল করে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩৮ বছর বয়সি এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, হামাস স্থানীয় ফিলিস্তিনি দল আবু শাবাবের সাথে লড়াই করছিল; কিন্ত হামাস যোদ্ধরা ‘সেনা ট্যাংকের উপস্থিতি দেখে অবাক’।

তিনি বলেছেন, ‘বিমান বাহিনী আকাশ থেকে দুটি হামলা চালায়।’

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রীদের সাথে বৈঠক করছিলেন, তখন সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর কিছু মন্ত্রী ইসরায়েলি বাহিনীকে ফিলিস্তিনি হামাসের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান।

এর আগে জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী এবং ডানপন্থি ফায়ারব্র্যান্ড ইতামার বেন গভির সেনাবাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ইসরায়েলি উপত্যকায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার’ আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেছেন, ‘হামাস অনুতপ্ত হবে এমনকি তারা যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তা মেনে চলবে।

তিনি বলেছেন, ‘হামাস আমাদের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক’। হামাসকে ‘সম্পূর্ণরূপে নির্মূল’ করার আহ্বান জানান।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জত আল-রিশকের এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ইসরায়েল ‘চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে এবং তাদের অপরাধকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য তুচ্ছ অজুহাত তৈরি করছে।’

হামাসের সশস্ত্র শাখা গত রোববার জোর দিয়ে বলেছে, তারা ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলছে এবং রাফায় কোনো সংঘর্ষের ‘কোনা ঘটনা ঘটেনি’।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে মার্কিন শান্তি দূত স্টিভ উইটকফ আগামী সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের ২০-দফা পরিকল্পনার অধীনে ইসরায়েলি বাহিনী তথাকথিত হলুদ রেখা অতিক্রম করে সৈন্য প্রত্যাহার করেছে। যার ফলে গাজার প্রায় অর্ধেক অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অঞ্চলের সীমানা কিন্ত এর প্রধান শহরগুলো নয়।

হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং নিহতদের অবশিষ্ট মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের ওপর হামাসের আক্রমণের ফলে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে গাজায় কমপক্ষে ৬৮,১৫৯ জন নিহত হয়েছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, জাতিসংঘ মনে করে বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে মৃতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী এবং শিশু।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলায় ১,২২১ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

ইসরায়েল গত রোববার ১৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ গাজায় ফিরিয়ে দিয়েছে। ফলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট হস্তান্তরের সংখ্যা ১৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।

গাজায় এখনো জিম্মি মরদেহের বিষয়টি যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে একটি জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েল মূল গেটটি পুনরায় খোলার সাথে যুক্ত করেছে। নিহতদের সকলকে উদ্ধারের জন্য এই অঞ্চলে পাঠানো হবে।

ত্রাণ সংস্থাগুলো খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের প্রবাহ দ্রুততর করার জন্য মিসর থেকে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় খোলার আহ্বান জানিয়েছে।

হামাস এখন পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণ প্রতিরোধ করেছে এবং যুদ্ধ বিরতির পর থেকে গাজার ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

দলটি বলেছে, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে অবশিষ্ট মৃরদেহগুলো উদ্ধারের জন্য তাদের সময় এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাফাহ ক্রসিং বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।’

এতে বলা হয়েছে, ‘জিম্মি এবং নিহতদের মরদেহ ফিরিয়ে আনা এবং কাঠামো বাস্তবায়নে হামাস কীভাবে তার ভূমিকা পালন করে তার ওপর ভিত্তি করে এটি পুনরায় খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

গত শনিবার রাতে হামাস সতর্ক করে দিয়েছিল, রাফাহ ক্রসিং বন্ধ করার ফলে ‘অবশেষ উদ্ধার এবং স্থানান্তরে উল্লেখযোগ্য বিলম্ব’ হবে।


রেকর্ড সংখ্যক ভারতীয়কে বের করে দিচ্ছে কানাডা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কানাডা থেকে রেকর্ডসংখ্যক ভারতীয় নাগরিককে ‘জোরপূর্বক ফেরত’ পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। দেশটির সীমান্তসেবা সংস্থা কানাডিয়ান বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির (সিবিএসএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এ সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ২৮ জুলাই পর্যন্ত কানাডা থেকে ১ হাজার ৮৯১ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০২৪ সালে পুরো বছর মিলিয়ে এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৯৭ জন। ২০১৯ সালে সংখ্যাটি ছিল মাত্র ৬২৫ জন। অর্থাৎ, গত কয়েক বছরে কানাডা থেকে ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর হার কয়েক গুণ বেড়েছে।
মেক্সিকানদের পর এবার ভারতীয়রাই দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক নাগরিক, যারা কানাডা থেকে জোরপূর্বক দেশে ফিরছেন। ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত মেক্সিকান ফেরত পাঠানো হয়েছে ২ হাজার ৬৭৮ জনকে আর ভারতীয়দের পর তৃতীয় স্থানে আছে কলম্বিয়ার নাগরিকেরা, যাদের সংখ্যা ৯৮১।
কেন বাড়ছে ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের সংখ্যা?
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সম্প্রতি টরন্টোতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার সরকার বিদেশি অপরাধীদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শক্তিশালী করছে।
মার্ক কার্নি বলেন, ‘আমরা অভিবাসনব্যবস্থায় একাধিক সংস্কার আনছি। অপরাধী বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, কার্যকর ও নজরদারিমূলক করতে কাজ চলছে।’
এদিকে কার্নির এ মন্তব্য এমন সময়ে এল, যখন কানাডায় অভিবাসনবিরোধী মনোভাব ক্রমেই বাড়ছে।
১০ অক্টোবর পিল রিজিয়নাল পুলিশ (পিআরপি) এক বিবৃতিতে জানায়, তারা প্রথমবারের মতো পিল ক্রাউন অ্যাটর্নি অফিস ও কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির সঙ্গে মিলে বিদেশি অপরাধীদের কানাডা থেকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি বিচারপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে।
এ ঘোষণা আসে কানাডায় মেইল (ডাক চিঠি) চুরির অভিযোগে আট ভারতীয় নাগরিকের গ্রেপ্তারের পর। তাদের বিরুদ্ধে ৪৫০টি মেইল চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৪ লাখ কানাডীয় ডলার।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সুমনপ্রীত সিং, গুরদীপ চাঠা, জশানদীপ জাট্টানা, হারমান সিং, জাসানপ্রীত সিং, মানরূপ সিং, রাজবীর সিং ও উপিন্দরজিৎ সিং। তাদের বিরুদ্ধে ৩৪৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফেরত পাঠানোর অপেক্ষায় আরও হাজারো ভারতীয়
সিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কানাডা থেকে ফেরত পাঠানোর তালিকায় ভারতীয়দের সংখ্যা সর্বোচ্চ—প্রায় ৬ হাজার ৮৩৭ জন। এরপর মেক্সিকোর ৫ হাজার ১৭০ জন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৭৩৪ নাগরিক রয়েছেন।
মোট ৩০ হাজার ৭৩৩ জনের ফেরতপ্রক্রিয়া চলছে, যার মধ্যে প্রায় ২৭ হাজারই আশ্রয়প্রার্থী। আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যেও ভারতীয় নাগরিকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
২০১৯ সাল থেকে কানাডায় ভারতীয়দের অভিবাসনের সংখ্যা বাড়লেও আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফেরত পাঠানোর ঘটনাও বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অভিবাসননীতিতে কঠোরতা ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল ‘বিদেশি অপরাধী’ ইস্যু এখন সরকারের নতুন অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে।


কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নারীরা চাকরি হারানোর বেশি ঝুঁকিতে: জাতিসংঘের সতর্কতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘের নীতিবিষয়ক এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত বেড়ে ওঠা জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ডিজিটালাইজেশনের বিস্তারে নারী ও পুরুষ উভয়েই চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তবে নারীরা এর প্রভাব বেশি ভোগ করবেন। এটি কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য আরও বাড়াতে পারে।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক–বিষয়ক দপ্তরের (ডিইএসএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী নারীদের হাতে থাকা চাকরির ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ জেনারেটিভ এআইয়ের কারণে স্বয়ংক্রিয় হয়ে যেতে পারে বা বড় পরিবর্তনের মুখে পড়তে পারে। অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ২১ দশমিক ১ শতাংশ।
এ ঝুঁকির মূল কারণ, কাঠামোগত বৈষম্য, প্রযুক্তিতে লিঙ্গভিত্তিক পক্ষপাত ও ডিজিটাল উপকরণে নারীদের অসম প্রবেশাধিকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ ও উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোয় এ প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হবে। কারণ, এসব দেশে নারীরা মূলত অফিস সহকারী, শিক্ষা ও জনপ্রশাসনের মতো খাতে বেশি কাজ করেন। এসব খাতে জেনারেটিভ এআইয়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
এ প্রবণতা নতুন নয়। ডিজিটাল রূপান্তরের আগের ধাপগুলোতেও একই রকম চিত্র দেখা গেছে। তখন যেসব প্রযুক্তি মূলত রুটিন বা হাতের কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করত, সেসবও নারীদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলেছিল।
২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ লাখ নারী তাদের প্রশাসনিক সহায়তা (যেমন অফিস সহকারী, রিসেপশনিস্ট, ডেটা এন্ট্রি ক্লার্ক, ক্যালেন্ডার বা ফাইল ম্যানেজমেন্টের কাজ) কিংবা অ্যাসেম্বলি লাইনের চাকরি হারান। একই সময় পুরুষদের এমন চাকরি হারানোর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চাকরি হারানো এখন অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আগের স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিগুলো মূলত স্বল্প দক্ষ কাজকে প্রভাবিত করেছিল। কিন্তু জেনারেটিভ এআই বিভিন্ন দক্ষতার স্তরের কাজকে স্বয়ংক্রিয় করে আরও বিস্তৃত প্রভাব ফেলতে পারে।’
চাকরি হারানোর ঝুঁকির এ সমস্যাকে আরও জটিল করছে প্রযুক্তি খাতে নারীদের স্বল্প উপস্থিতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) বিষয়ে নারীদের কম অংশগ্রহণ ‘লিঙ্গবৈষম্যকে আরও গভীর করতে পারে’। ৭৩টি দেশের একটি নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ এক-তৃতীয়াংশের কম।
নারীদের অংশগ্রহণের এ ব্যবধান শুধু বর্তমান চাকরির ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যতের জন্যও উদ্বেগজনক। কারণ, পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত এআই ব্যবস্থাগুলো ‘চাকরির নিয়োগ ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বৈষম্যকে স্থায়ী এবং আরও তীব্র করতে পারে’ বলে সতর্ক করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এ পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি খাতে কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য বাড়ানো সংকটের সম্পূর্ণ সমাধান না হলেও বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এটি পক্ষপাতপূর্ণ প্রযুক্তির ঝুঁকি চিহ্নিত ও নিয়ন্ত্রণে তুলনামূলকভাবে বেশি সক্ষম।
তবে ঝুঁকির পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশন নারীদের জন্য নতুন অর্থনৈতিক সুযোগও তৈরি করছে। যেমন দূর থেকে বা অনলাইনে কাজ করা ও গিগ ইকোনমির (স্বল্পমেয়াদি কাজের মাধ্যমে উপার্জন) মতো নতুন কর্মপদ্ধতি নারীদের জন্য এমন সুযোগ তৈরি করছে, যাতে তারা সময়ের কড়াকড়ি বা পরিবারের দায়িত্বের মতো প্রচলিত বাধাগুলো এড়িয়ে কাজ করতে পারেন।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ডিজিটালাইজেশন আরও নমনীয় ও উদ্ভাবনী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে নারীদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নের পথ খুলে দিতে পারে।’
উন্নয়নশীল দেশগুলোয় অনেক নারী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও ই-কমার্সের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। তবে এখনো এক স্থায়ী ‘ডিজিটাল লিঙ্গ ব্যবধান’ অনেক নারীকে এ সুযোগ থেকে দূরে রাখছে।
এ ঝুঁকি মোকাবিলা ও সুযোগ কাজে লাগাতে জাতিসংঘ সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা নারীদের জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট–সুবিধা বাড়িয়ে, ডিজিটাল দক্ষতার প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রযুক্তি খাতে নারীদের কর্মসংস্থান ও নেতৃত্বে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ডিজিটাল লিঙ্গ ব্যবধান দূর করার বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়।


ল্যুভর মিউজিয়ামে ডাকাতির পর সাময়িক বন্ধ ঘোষণা

ল্যুভর মিউজিয়াম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রী রাশিদা দাতি জানিয়েছেন, বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত শিল্পকলা জাদুঘর ল্যুভর মিউজিয়ামে রোববার সকালে একটি ডাকাতির ঘটনার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, জাদুঘরটি খোলার ঠিক পরেই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আমি বর্তমানে ঘটনাস্থলে আছি, পুলিশ তদন্ত করছে।

ল্যুভর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ কারণবশত আজকের জন্য জাদুঘরটি বন্ধ থাকবে। তবে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

ফরাসি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, লুট হওয়া বস্তুগুলোর মধ্যে মূল্যবান গয়নাও থাকতে পারে।

প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শিত জাদুঘরগুলোর একটি। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে বহু ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত শিল্পকর্ম, যার মধ্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসা অন্যতম।

পুলিশ সূত্রে এএফপি জানিয়েছে, একদল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতকারী স্কুটারে করে এসে জাদুঘরে প্রবেশ করে।

ঘটনাস্থলে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী রাশিদা দাতি নিজেও জাদুঘরে উপস্থিত আছেন।

ল্যুভর মিউজিয়াম থেকে সোনার ৯ আইটেম নিয়ে গেছে ডাকাতরা

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে রোববার সকালে এক অবিশ্বাস্য ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

ফরাসি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, তিনজন মুখোশধারী মিউজিয়াম খোলার কিছু পরেই ভেতরে প্রবেশ করে। তারা সেন নদীমুখী দিকের অ্যাপোলো গ্যালারিতে পৌঁছাতে একটি মালবাহী লিফট ব্যবহার করে, যেখানে ফ্রান্সের রাজকীয় গয়নার সংগ্রহ রাখা আছে।

ডাকাতরা কাচ ভেঙে গ্যালারিতে ঢোকে এবং নয়টি মূল্যবান সোনার আইটেম নিয়ে পালিয়ে যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা একটি মোটর-স্কুটারে করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছে।

এখনো লুট হওয়া গয়নার মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে, তবে ধারণা করা হচ্ছে এগুলোর ঐতিহাসিক ও আর্থিক মূল্য দুটোই বিপুল।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ এক্স-এ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশেষ কারণে ল্যুভর জাদুঘর বন্ধ রাখা হয়েছে।

ফরাসি সংস্কৃতি মন্ত্রী রাশিদা দাতি জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, ল্যুভর মিউজিয়াম বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দর্শকপ্রিয় জাদুঘর, যেখানে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসাসহ অমূল্য শিল্পকর্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে।


বিশেষায়িত ব্যাংক আরব আমিরাতের কাছে বেচে দিল পাকিস্তান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তান দেশটির নারীদের জন্য বিশেষভাবে গঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। গত শুক্রবার ফার্স্ট উইমেন ব্যাংক লিমিটেড (এফডব্লিউবিএল) আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানির (আইএইচসি) কাছে বিক্রি করে দেয়। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আবুধাবিভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানির (আইএইচসি) কাছে পাকিস্তানি ব্যাংকটির মালিকানা হস্তান্তরকে পাকিস্তান–সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক সম্পর্কের এক মাইলফলক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে আরও যৌথ উদ্যোগ ও অংশীদারত্বের পথ খুলে দেবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লেনদেনকে তিনি ‘বৃষ্টির প্রথম ফোঁটা’ হিসেবে দেখছেন—যা পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে আরও গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার সূচনা করবে।

এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকার–থেকে–সরকার (জি–টু–জি) কাঠামোর আওতায় এফডব্লিউবিএলের বেশির ভাগ শেয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে আইএইচসির হাতে হস্তান্তর করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন টু–পয়েন্ট জিরো–এর চেয়ারম্যান শেখ জায়েদ বিন হামদান বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।

এর আগে, পাকিস্তানের ফেডারেল ক্যাবিনেট ব্যাংকটির সরকারি মালিকানাধীন পুরো শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দেয়। এর বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার (প্রায় ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন রুপি) বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো মূল্য প্রকাশ করা হয়নি।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংক অধিগ্রহণের পাশাপাশি আইএইচসি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মোট ন্যূনতম ১০ বিলিয়ন রুপি মূলধন সরবরাহ করবে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এফডব্লিউবিএলের ইক্যুইটির পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন রুপি। নতুন বিনিয়োগকারী বাকি ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন রুপি যোগ করে ঘাটতি পূরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বলেন, এই চুক্তি সফলভাবে সম্পন্ন করতে উপ–প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার ও বেসরকারীকরণবিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলির ‘দৃঢ় ও মনোযোগী নেতৃত্ব’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও বেসরকারি খাতনির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শাহবাজ শরিফ আরও জানান, নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নিয়ে ফার্স্ট উইমেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা শুধু বজায় থাকবে না—বরং পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও কৃষি ও শিল্প খাতে লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হবে।

আইএইচসির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ বাসার শুয়াইব বলেন, পাকিস্তানের ব্যাংকিং খাতে এই বিনিয়োগ আমাদের আস্থার প্রতিফলন এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের আর্থিক খাতে বড় সম্ভাবনা দেখছি। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংককে আধুনিকীকরণ, স্বয়ংক্রিয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক আর্থিক সিদ্ধান্তে অগ্রগতি আনতে আমরা কাজ করব।’

সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইন্টার–গভর্নমেন্টাল কমার্শিয়াল ট্রানজ্যাকশন অ্যাক্ট ২০২২–এর আওতায় এটিই প্রথম ব্যাংক বেসরকারীকরণ। ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ফার্স্ট উইমেন ব্যাংক বর্তমানে পাকিস্তানজুড়ে ৪২টি শাখা পরিচালনা করছে, যেখানে খুচরা, এসএমই ও করপোরেট গ্রাহকদের সেবা দেওয়া হয়।


জাপানে দায়িত্ব নিচ্ছেন প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি

সানায়ে তাকাইচি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং ছোট ডানঘেঁষা দল জাপান ইনোভেশন পার্টি (জেআইপি বা ইশিন) একত্রে জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে সানায়ে তাকাইচির দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পথ খুলে যাচ্ছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

কিয়োদো সংবাদ সংস্থা রোববার জানিয়েছে, এলডিপির নবনির্বাচিত নেতা সানায়ে তাকাইচি ও জেআইপি প্রধান হিরোফুমি ইয়োশিমুরা কাল সোমবার জোট সরকার গঠনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন।

এ মাসের শুরুতে তাকাইচি ক্ষমতাসীন দল এলডিপির নেতা নির্বাচিত হন, কিন্তু তার নেতৃত্বাধীন পূর্বের জোট সরকার ভেঙে পড়লে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। এর পর থেকে এলডিপি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, যা তাকাইচির প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনাকে আবারও জোরদার করেছে। এলডিপি তাকাইচিকে জোট গঠনের দায়িত্ব দিয়েছে।

জাপানের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়োমিউরি শিমবুনও জানিয়েছে, সোমবার বৈঠকের পর তাকাইচি ও ইয়োশিমুরা সম্ভবত জোট সরকার গঠনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। অন্যদিকে, জেআইপি আজ ওসাকায় নির্বাহী বোর্ডের বৈঠক করবে এবং একই দিন পার্লামেন্ট সদস্যদের পূর্ণাঙ্গ সভায় এলডিপির সঙ্গে চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে।

এলডিপির দীর্ঘদিনের সহযোগী দল কোমেইতো ২৬ বছর পর সরকার থেকে সরে দাঁড়ালে নতুন জোট সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হয় এবং জাপান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়ে। এলডিপি ও জেআইপি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বাঁধে, তবে তাকাইচি মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পারেন।

তবে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ক্ষেত্রে দুই দল মিলে এখনো দুটি আসনের ঘাটতি রয়েছে। যদি ভোট দ্বিতীয় দফায় গড়ায়, তাহলে তাকাইচিকে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বেশি পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন পেতে হবে।

এই জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি এমন সময় চলছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাপান সফরের মাত্র কয়েক দিন বাকি। ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় বার্ষিক এশিয়া–প্যাসিফিক ইকোনমিক কো–অপারেশন (অ্যাপেক) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে জাপান সফরে যাবেন।


banner close