শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

নির্বাচনের আগেই সাড়ে ৮ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে জান্তা সরকার

দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:২৯

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আগামী মাসের নির্বাচনের আগে সেনাশাসনের বিরোধিতার দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া ৮ হাজার ৬৬৫ জনকে ক্ষমা বা মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে মুক্তি দিচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণায় বলা হয়, মুক্তি পাচ্ছেন এমন বন্দীরা আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ভোটকে আগেই ‘প্রহসন’ বলে সমালোচনা করেছে।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানে জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই জান্তা ডিসেম্বর থেকে ভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশে ‘স্বাভাবিক অবস্থা’ ফিরছে। আদেশে বলা হয়েছে, ‘ভয় সৃষ্টি বা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর’ অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ৩ হাজার ৮৫ জনের শাস্তি কমানো হচ্ছে। পলাতক আরও ৫ হাজার ৫৮০ জনের বিরুদ্ধে থাকা মামলাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কতজন রাজনৈতিক বন্দি কিংবা কবে তাদের মুক্তি কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট নয়।

ক্ষমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগে বুধবার জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, ভোটের দিন ২৮ ডিসেম্বর যাতে সব যোগ্য ভোটার ‘স্বাধীনভাবে ও ন্যায়সংগতভাবে’ ভোট দিতে পারেন, সে জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, বন্দি মুক্তির কাজ অবিলম্বে শুরু হবে। তবে কাদের মুক্তি দেওয়া হবে, সেই তালিকা তিনি দেননি। অতীতে এমন ক্ষমা ঘোষণায় মুক্তির প্রক্রিয়া কয়েক দিন ধরে চলেছে।

সকালে ইনসেইন কারাগারের সামনে কয়েক ডজন মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তারা বন্ধু-পরিজনদের নিতে এসেছেন—যারা এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি পাচ্ছেন। বহু দশক ধরে এই কারাগার রাজনৈতিক বন্দীদের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

তবে ৮০ বছর বয়সি গণতন্ত্রনেত্রী অং সান সু চি মুক্তি পাচ্ছেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। সামরিক অভ্যুত্থানের পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন তিনি। সমালোচকেরা বলছেন, দেশে স্বাধীন গণমাধ্যম না থাকা ও অং সান সু চির বিলুপ্ত ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি দলের অধিকাংশ নেতাকে গ্রেপ্তার করার কারণে এই নির্বাচন নিঃসন্দেহে ‘মুক্ত ও সুষ্ঠু’ হবে না।

মানবাধিকার সংগঠন বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকের পরিচালক মার্ক ফার্মানার এক্সে লিখেছেন, ‘বন্দিদের জন্য অবশ্যই এটা দারুণ খবর।’ তবে তার ভাষায়, ‘প্রত্যাশিতভাবেই জান্তা রাজনৈতিক বন্দীদের জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে—নির্বাচনের আগে ভুয়া সংস্কারের গল্প বানানোর জন্য।’

স্বাধীন মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স বলছে, পর্যন্ত দেশটিতে রাজনৈতিক বন্দির সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৭০৮ জন। তাদের মধ্যেই রয়েছেন অং সান সু চি।


বন্যা-ভূমিধসে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা, নিহত ৩১

শ্রীলঙ্কায় বন্যা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টানা ভারি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। গত এক সপ্তাহে দেশটিতে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং আরও ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের বরাতে স্থানীয় ইংরেজি সংবাদপত্র ডেইলি মিরর জানিয়েছে, ১৭ নভেম্বর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যার পানি বৃদ্ধি এবং ক্রমাগত ভূমিধস অব্যাহত রয়েছে। এতে ১৭টি জেলার ৪ হাজারের বেশি পরিবার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বাত্তিকালোয়া জেলায় ৩০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা বছরের এক সময়ের জন্য সর্বোচ্চ।

লঙ্কান সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পূর্বে দেশের কেন্দ্রীয় প্রদেশের চা উৎপাদনকারী পাহাড়ি অঞ্চল বাদুল্লা এবং নুওয়ারা এলিয়া জেলায় ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। একই এলাকায় ভূমিধসের কারণে আরও ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক জলাধার এবং নদী উপচে পড়ছে, যার ফলে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রদেশগুলোকে সংযুক্তকারী কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বাদুল্লা এবং নুওয়ারা এলিয়াসহ ৮টি পাহাড়ি জেলাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে। এসব জেলার বাসিন্দাদের উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, একটি নিম্নচাপের প্রভাবে দেশটির বেশিরভাগ এলাকায় প্রবল বাতাস এবং ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানায়, রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পূর্বে দেশের মধ্য প্রদেশের চা উৎপাদনকারী পার্বত্য অঞ্চলেই ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার একই অঞ্চলে ভূমিধসে আরও ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

গত সপ্তাহ থেকে দেশটি তীব্র আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ঘর-বাড়ি, ক্ষেত এবং রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে গেছে। অনেক জলাধার এবং নদী উপচে পড়েছে, যার ফলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রদেশগুলোকে সংযুক্ত করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় রেল লাইন বন্যায় প্লাবিত করেছে।

স্থানীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, কলম্বো থেকে প্রায় ৪১২ কিলোমিটার পূর্বে পূর্বাঞ্চলীয় শহর আমপাড়ার কাছে নৌবাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা চলছে। এই তীব্র আবহাওয়া প্রায় ৪ হাজার পরিবারকে প্রভাবিত করেছে।


ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ১০ লাখ ডলার জরিমানার নির্দেশ আদালতের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক’ মামলা দায়ের করায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সাবেক আইনজীবী আলিনা হাবাকে ১০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। একটি ফেডারেল আপিল আদালত এই জরিমানা বহাল রেখেছে, জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।

তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত আদালত মন্তব্য করেছে, প্রেসিডেন্ট ও তার আইনজীবী হিলারি ক্লিনটনসহ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিলেন, তা সম্পূর্ণ ফ্রিভোলাস বা ভিত্তিহীন।

এর আগে ২০২৩ সালে একটি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টও একই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিল এবং জানিয়েছিল, মামলা করা হয়নি ন্যায্য উদ্দেশে। আপিল বেঞ্চের রায় অনুযায়ী, ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জরিমানা আরোপে কোনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি এবং প্রেসিডেন্টের আইনগত যুক্তি দুর্বল ছিল। রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি উইলিয়াম প্রাইয়ার জুনিয়র, সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দুই সহনির্ধারক বিচারপতি অ্যান্ড্রু ব্রাশার ও এম্ব্রি কিড।

প্রেসিডেন্টের আইনজীবী দলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি তারা ‘ন্যায্য ও সঠিক ফল পর্যন্ত’ অনুসরণ করবেন।

আলিনা হাবা, যিনি ট্রাম্পের ইলেকশন-পূর্বকালীন আইনজীবী ছিলেন, পরে নিউ জার্সির ভারপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ পান। তবে এই বছরের আগস্টে এক ফেডারেল বিচারক বলেছেন, হাবা বৈধ ক্ষমতা ছাড়াই দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ট্রাম্প একদল ডেমোক্র্যাট ও সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কমিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তারা ২০১৬ সালের নির্বাচনে তার সঙ্গে রাশিয়ার যোগসাজশের মিথ্যা কাহিনী তৈরি করতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ওই মামলা ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট খারিজ করে দেন এবং ট্রাম্প ও হাবা ও তাদের আইন প্রতিষ্ঠানকে ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮৯ ডলার জরিমানা করা হয়। বিচারকের মন্তব্য ছিল, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা একটি ভিত্তিহীন মামলা।


’ইসরায়েলি আগ্রাসন কখনোই ফিলিস্তিনকে মুছে ফেলতে পারবে না’

আবদেলমাজিদ তেববুনে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় মানুষের জীবনকে অসম্ভব করে তোলার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাজিদ তেববুনে। তবে তিনি এও বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন কোনোভাবেই ফিলিস্তিনকে মুছে ফেলতে পারবে না।

আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে আগামী ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের বার্তা পড়ে শোনান দেশটির মুজাহিদিন ও অধিকারভোগীদের মন্ত্রী আবদেলমালেক তাশেরিফত।

বার্তায় তেববুনে বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের চলমান আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতিমালা স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করছে।’

তিনি আরও জানান, গাজায় জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার পাশাপাশি ইসরাইল পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করছে।

তেববুনে বলেন, ‘ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন ফিলিস্তিনকে মুছে দিতে পারবে না।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইসরায়েল এটি করতে চায় গাজার অবকাঠামো ধ্বংস করে, স্বাস্থ্যব্যবস্থা টার্গেট করে, অবরোধ ও খাদ্যসংকট চাপিয়ে দিয়ে, আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে এবং হামলা চালিয়ে।’

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মানাতে বাধ্য করতে, গাজার অবরোধ সম্পূর্ণভাবে তুলে নিতে এবং সব সীমান্ত পথ খুলে দিয়ে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তেববুনে আবারও আলজেরিয়ার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনের ভাইদের প্রতি আলজেরিয়ার সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তারা পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এবং জেরুজালেম রাজধানী করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আলজেরিয়া সব রকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’


সুস্থ আছেন ইমরান খান: কর্তৃপক্ষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারাগার থেকে সরিয়ে নেওয়া ও তার মারা যাওয়ার খবরকে গুজব ও ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়েছে দেশটির আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষ।

গুজবে বলা হচ্ছিল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতাকে কারাগার থেকে অন্যত্র সরানো হয়েছে।

তবে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের বরাত দিয়ে আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানিয়েছে, কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তিনি এখনও আদিয়ালা কারাগারেই আছেন এবং সুস্থ আছেন।

রাওয়ালপিন্ডি কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আদিয়ালা জেল থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়ার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি পুরোপুরি সুস্থ এবং পূর্ণ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন।’

কর্মকর্তারা আরও বলেন, তার স্বাস্থ্য নিয়ে যে জল্পনা চলছে, তা ‘ভিত্তিহীন।’ পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার সুস্থতা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও তারা জানায়।

২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে থাকা ইমরান খান ক্ষমতা হারানোর পর দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত বিভিন্ন মামলার মুখোমুখি। ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

অন্যদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা কারাগারে আগের তুলনায় অনেক আরাম পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘তার জন্য যেসব খাবার আসে, সেগুলো পাঁচতারা হোটেলেও মেলে না।’

আসিফ আরও বলেন, তার কাছে টেলিভিশন আছে এবং তিনি ইচ্ছেমতো যেকোনো চ্যানেল দেখতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘তার জন্য ব্যায়াম করার মেশিনও আছে।’

এ পরিস্থিতির তুলনা করতে গিয়ে তিনি নিজের কারাবাসের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমাতাম, কারাগারের খাবার খেতাম, জানুয়ারিতে গরম পানি ছাড়াই মাত্র দুটি কম্বল ছিল।’ তখনকার সুপারিনটেনডেন্ট আসাদ ওয়ারাইচ তাঁর সেল থেকে গিজার খুলে নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও দাবি করেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে ডাবল বেড এবং ‘মখমলের গদি’ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তার উচিত জেলের লাউডস্পিকারে তার ওয়াশিংটন অ্যারেনা বক্তৃতা শোনা।’তিনি আরও বলেন, ‘খোদাকে ভয় করো—সময় কারও হাতে থাকে না।’

এদিকে ক্ষমতাসীন জোটের মূল পক্ষ পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ গতকাল বুধবার দাবি করেন, ‘যারা ইমরানকে ক্ষমতায় এনেছিল, তারাই বড় অপরাধী।’

উপনির্বাচনে জয়ী আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘ইমরান খান একমাত্র অপরাধী ছিলেন না। যারা তাকে ক্ষমতায় এনেছিল, তারা আরও বড় অপরাধী, এবং তাদের সম্পূর্ণ জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’

২০২৪ সালের নির্বাচনের পর পিপিপির সঙ্গে জোট গঠনের মাধ্যমে পিএমএল-এন ক্ষমতায় আসার পর নওয়াজ সাধারণত নিম্ন প্রোফাইলে ছিলেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, পিটিআই দেশটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠে। মোট ২৭০টি জাতীয় পরিষদ আসনের মধ্যে ১১৫টি পায় তারা।


ভারত–চীন সম্পর্কে আবারও ফাটল

অরুণাচল প্রদেশের ভারত–চীন সীমান্ত। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অরুণাচল প্রদেশের এক ভারতীয় নারীকে চীনের সাংহাই বিমানবন্দরে আটক ও হয়রানির অভিযোগ ঘিরে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ভারত–চীন সম্পর্কে। চীন বরাবরই অরুণাচলকে ‘দক্ষিণ তিব্বত’ বা ‘জাংনান’ বলে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে, আর ভারত বলে— এটি তাদেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। দীর্ঘদিনের এই বিরোধের মধ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু নতুন ঘটনাটি আবার আলোচনায় এনেছে পুরোনো দ্বন্দ্ব।

কী ঘটেছে?

আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা প্রেমা ওয়াংজম থংডক যুক্তরাজ্য থেকে জাপানে যাওয়ার পথে সাংহাই পুডং বিমানবন্দরে ট্রানজিটে ছিলেন। সেখানে তার পাসপোর্টে জন্মস্থান হিসেবে অরুণাচল প্রদেশ লেখা থাকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নাকি তাকে ১৮ ঘণ্টা আটকে রাখে এবং হয়রানি করে।

তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন পেরোনোর পর এক কর্মকর্তা তাকে আলাদা করে নিয়ে জানান— অরুণাচল প্রদেশ নাকি চীনের অংশ, তাই তার ভারতীয় পাসপোর্ট ‘অবৈধ’। পাল্টা যুক্তিতে থংডক বলেন, অরুণাচল ভারতেরই অংশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, তাকে চীনা ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের নতুন টিকিট কিনতে চাপ দেওয়া হয়েছিল, নইলে পাসপোর্ট ফেরত না দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এতে তার আর্থিক ক্ষতিও হয়।

পরে যুক্তরাজ্যে থাকা এক বন্ধুর চেষ্টা ও সাংহাইয়ে ভারতীয় কনসুলেটের সহায়তায় তিনি সেদিন রাতেই শহর ছাড়তে সক্ষম হন। গত অক্টোবর মাসে একই বিমানবন্দর দিয়ে তিনি নির্বিঘ্নে যাতায়াত করেছিলেন— এবার আচরণ বদলে গেল কেন, তা পরিষ্কার নয়।

আগে কি এমন ঘটনা ঘটেছে?

হ্যাঁ। ২০০৫ সাল থেকে চীন অরুণাচল প্রদেশের মানুষকে ‘স্ট্যাপলড ভিসা’ দিতে শুরু করে— অর্থাৎ পাসপোর্টে সিল মারার পরিবর্তে আলাদা কাগজে ভিসা দিত। কারণ হিসেবে তারা বলে, ওই অঞ্চলের মানুষকে তারা চীনা নাগরিক মনে করে। ভারত কখনোই এ ধরনের ভিসা মানেনি। এর জেরে বিভিন্ন সময়ে খেলোয়াড়রা চীনে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি।

বিরোধের মূল উৎস কোথায়?

বিরোধের সূত্র উপনিবেশিক আমলে। ১৯১৪ সালের সিমলা কনভেনশনে ব্রিটিশ ভারত, তিব্বত ও চীনের মধ্যে ম্যাকমোহন লাইন নির্ধারণ করা হয়। চীনা প্রতিনিধি চুক্তিতে সই না করায় চীন এই সীমা স্বীকার করেনি। আর ভারত স্বাধীনতার পর থেকেই এটিকে বৈধ সীমান্ত বলে ধরে আসছে। এখন বেইজিং পুরো অরুণাচলকেই দাবি করছে।

ইতিহাসে কী ধরনের সংঘাত ঘটেছে?

অরুণাচল বহুদিন ধরেই দুই দেশের উত্তেজনার কেন্দ্র। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের একটি ফ্রন্ট এখানেই ছিল। ১৯৭৫ সালে তুলুং লায় সংঘর্ষে চার ভারতীয় সেনা নিহত হন। আর ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ানে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে দুই দেশেরই সেনা হতাহত হয়। দালাই লামার সফর, সীমান্তে হাতাহাতি, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প— এসব নিয়েও উত্তেজনা দেখা গেছে।

কেন এই অঞ্চল এত গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতের জন্য অরুণাচল প্রদেশ ভূরাজনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত কৌশলগত। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগে এটি বড় ভূমিকা রাখে এবং মিয়ানমার ও ভুটান সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় নিরাপত্তার দিক থেকেও এটি সংবেদনশীল। চীনের কাছে তাওয়াং ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ— এখানে ষষ্ঠ দালাই লামার জন্ম হয়েছিল— তাই বেইজিং দাবি ছাড়তে নারাজ।

দুই দেশের প্রতিক্রিয়া

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাংনান যেহেতু তাদের ভূখণ্ড, তাই তারা আইন অনুযায়ীই ওই নারীর সঙ্গে আচরণ করেছে এবং আটক বা হয়রানির অভিযোগ সত্য নয়। ভারত পাল্টা জানিয়েছে, অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং চীনের বক্তব্য বাস্তব পরিবর্তন করতে পারে না। এছাড়া তারা অভিযোগ করেছে, চীন ট্রানজিট সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গ করেছে।

সম্পর্ক এখন কোন অবস্থায়?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাটি বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না। গালওয়ান সংঘর্ষের পর জমাট বাধা সম্পর্ক গত এক বছরে কিছুটা উন্নতির দিকে ছিল— উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ও সেনা প্রত্যাহার তার প্রমাণ। তবে পারস্পরিক সন্দেহ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখনো রয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে দ্বন্দ্ব কেন

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকেই অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত–দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সিমলা কনভেনশনের সময় ১৯১৪ সালের মার্চ মাসে ম্যাকমোহন লাইন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ওই কনভেনশন নিয়ে আলোচনায় যুক্ত ছিল তিব্বত, চীন ও ব্রিটিশ শাসকেরা।

নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বেশ দ্বন্দ্বপূর্ণ ছিল। গত বছর তা নরম হয়েছে।

আলোচনায় ব্রিটেনের পক্ষ থেকে প্রধান মধ্যস্থতাকারী ছিলেন হেনরি ম্যাকমোহন। তার নামেই ম্যাকমোহন লাইন নামকরণ করা হয়েছে। সিমলা কনভেনশনের আলোচনায় চীনের প্রতিনিধিরা অংশ নিলেও মূল চুক্তিতে সই করেননি তারা। বেইজিংও ম্যাকমোহন লাইনের স্বীকৃতি দেয়নি।

যাই হোক, চীনের আপত্তির পরও এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ম্যাকমোহন। তিব্বতের সঙ্গে ভারতবর্ষের একটি সীমানা তৈরি করেন। তবে চীন অভিযোগ করেছে, ভারতের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই তিব্বতের। ১৯৫১ সালে তিব্বত দখলের পর বেইজিংয়ের এই অভিযোগ আরও জোরালো হয়।

এ ছাড়া পুরোনো কিছু মানচিত্রও তুলে ধরে চীন। এর মধ্যে ব্রিটিশদের তৈরি মানচিত্রও ছিল। সেখানে ম্যাকমোহন লাইনের দক্ষিণের ভূখণ্ডগুলো চীনের অংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এরই মধ্যে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। তখন থেকেই ম্যাকমোহন লাইনকে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বলে বিবেচনা করে আসছে নয়াদিল্লি।

দশকের পর দশক ধরে অরুণাচল প্রদেশে তাওয়াং নামে পরিচিত একটি অংশকে নিজেদের বলে দাবি করত চীন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পুরো রাজ্যটিকেই নিজেদের বলে দাবি করছে দেশটি। জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সিগুর সেন্টার ফর এশিয়ান স্টাডিজের গবেষক রাজ ভার্মা বলেন, ২০১২ সালে সি চিন পিং চীনের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকেই মূলত উত্তেজনাটা বেড়েছে।


হংকংয়ে ৬৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হংকংয়ে গত ৬৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে শুরু হওয়া আগুন কয়েকটি উঁচু ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে। হংকংয়ের তাই পো এলাকার এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এখনো নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ভেতরে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

বুধবার দুপুরে আগুন লাগার ১৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার ভোরে কর্মকর্তারা জানান, আগুনে আক্রান্ত সাতটি ভবনের মধ্যে চারটিতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে বাকি তিনটিতে এখনো কাজ চলছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে (জিএমটি ০৬:৫১) হংকংয়ের তাই পো এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে আগুন লাগে। আগুনের সূত্রপাত হয় ভবনের বাইরের বাঁশের মাচায়। ভবন সংস্কারের সময় যে বাঁশ ব্যবহার করা হয়, সেই মাচা খুব সহজেই দাহ্য। মাচায় আগুন লাগার পর মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে উপরের দিকে, তারপর ভবনের ভেতরে এবং কাছের অন্যান্য টাওয়ারে।

ভবনগুলো চারদিকে সবুজ রঙের নির্মাণ-নেট দিয়ে ঢাকা ছিল। এটি ছাদ পর্যন্ত টানানো থাকায় এই নেট আগুনে পুড়ে দ্রুত তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এটি হংকংয়ের অন্তত আগস্ট ১৯৬২ সালের পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড। ওই বছর শাম শুই পো এলাকায় ভয়াবহ আগুনে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

পরে ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে কোলউনের নাথান রোডের গারলি বিল্ডিংয়ে আগুনে ৪১ জনের মৃত্যু এবং ৮১ জন আহত হয়।

১৯৮৩ সালে নির্মিত এই কমপ্লেক্সে মোট আটটি উঁচু ভবন রয়েছে, যেখানে ১,৯৮৪টি ফ্ল্যাট আছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর মধ্যে সাতটি ভবনে আগুন ছড়ায়। চারটি ভবনে আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে।

জানা গেছে, সোমবার থেকেই হংকংয়ে অগ্নিসতর্কতা জারি ছিল।

অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি ছিল অত্যন্ত বেশি।


ঢাকার অনুরোধ খতিয়ে দেখছে দিল্লি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে লেখা চিঠির জবাব এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। দিল্লি এত তাড়াতাড়ি উত্তর দেবে– এটা তিনি আশা করেন না বলেও উল্লেখ করেছেন। গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

এদিকে গতকাল দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। বিচারিক এবং অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কোন প্রক্রিয়ায় ভারতে চিঠি পাঠানো হয়েছে– এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘নোট ভারবাল (কূটনৈতিক পত্র) আমাদের মিশনের মাধ্যমে ওদের (ভারতের) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কোনো উত্তর আসেনি। এত তাড়াতাড়ি উত্তর আশাও করি না আমরা।’ উত্তর তাড়াতাড়ি আশা করেন না কেন– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এত তাড়াতাড়ি উত্তর… আমি তো আগের চিঠিরই উত্তর পাইনি এখনও। কাজেই এটা একেবারে কালকে বা এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর দিয়ে দেবে, আমি প্রত্যাশা করি না। তবে আমরা আশা করি, এটার উত্তর আমরা পাব। এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর এসে যাবে– এটা আমি প্রত্যাশা করি না।’ চিঠিতে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা বলেছি, যেহেতু তাঁকে বিচারে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, কাজেই তাঁকে যেন ফেরত দেওয়া হয়।

গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে। দণ্ডিত হওয়ার পর দুজনকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০২৪ সালের ২০ এবং ২৭ ডিসেম্বর চিঠি দিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

নির্বাচনে ভারতীয় পর্যবেক্ষক ইসির বিষয় নির্বাচনে ভারতীয় পর্যবেক্ষক আসতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এটাতে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি যারা আসবে, তাদের কোনো সহায়তা আমরা করব না, যদি না নির্বাচন কমিশন আমাদের বলে।

অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের বিষয়ে পশ্চিমা চাপ নেই

জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক করার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই বলে জানিয়েছেন তৌহিদ হোসেন। তিনি জানান, আগামী নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য পশ্চিমাদের কোনো চাপ অনুভব করছে না সরকার।

এয়ারবাস কেনার বিষয়ে কোনো চাপ নেই
এয়ারবাসের উড়োজাহাজ না কেনায় ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি মনে করি না এই বাণিজ্যিক একটি সমঝোতার ওপরে আমাদের সার্বিক সম্পর্ক নির্ভরশীল হবে। অবশ্যই জার্মানির রাষ্ট্রদূত চেষ্টা করবেন, যেন তাঁর দেশের যে ব্র্যান্ড আছে, সেটা বিক্রি হয়। এটা স্বাভাবিক, এটা তাঁর দায়িত্ব। আমি মনে করি, তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু আমি একেবারে মনে করি না যে, একটা বাণিজ্যিক সমঝোতা, যেটা বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি, তাতে করে আমাদের জন্য কোনটা সুবিধা হবে– সেটা আমাদের বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে।

তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় না যে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের বাইরে গিয়ে একজন রাষ্ট্রদূত বা অন্যরা কী বলবেন, সেটার ভিত্তিতে এটা কেনা হবে। এয়ারবাস কেনার ক্ষেত্রে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে কিনা– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমি অন্তত অনুভব করছি না। বাকিটুকু যিনি কিনবেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন।

বাংলাদেশের অনুরোধ খতিয়ে দেখছে ভারত
দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, চলমান বিচারিক ও অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর অনুরোধটি (ঢাকার চিঠি) পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আমরা শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা অব্যাহতভাবে সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।


বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে ঘনিষ্ঠজনের হাতে খুন হন একজন নারী: জাতিসংঘ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পৃথিবীর কোথাও না কোথাও প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী খুন হচ্ছেন তার ঘনিষ্ঠ কারো হাতে, জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘ আরো জানিয়েছে, নারী হত্যা রোধে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টায় তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। খবর- এএফপি।

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক কার্যালয় এবং জাতিসংঘ নারী সংস্থা। এতে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সঙ্গীর হাতে অথবা পরিবারের কোনো সদস্যের হাতে নিহত হয়েছে ৫০ হাজার নারী বা মেয়ে।

বিশ্বজুড়ে যত নারী নিহত হন, তার ৬০ শতাংশই সঙ্গী বা আত্মীয় (যেমন বাবা, মামা/চাচা, মা, ভাই) এর হাতে খুন হন।

এর সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, বিশ্বজুড়ে নিহত হওয়া পুরুষদের মাত্র ১১ শতাংশ খুন হন কাছের মানুষের হাতে।

এই প্রতিবেদনে ১১৭টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দৈনিক ১৩৭ জন বা প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে নারী নিহত হন প্রিয়জনের হাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের একই রকম প্রতিবেদনের তুলনায় এ বছর নিহতের সংখ্যা কম পাওয়া গেছে, কিন্তু তারমানে এই নয় যে আদতে সে সংখ্যাটি কমে এসেছে। বরং বিভিন্ন দেশে তথ্য সরবরাহে ঘাটতির কারণে এই পার্থক্য দেখা গেছে।

প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জীবন হারাচ্ছেন, এবং এ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হত্যার ঝুঁকি বিবেচনায় নারী ও মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান তাদের নিজ বাসস্থান।’

পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলে এমন হত্যাকাণ্ডের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ ধরণের হত্যার ঘটনা আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি- গত বছর আফ্রিকার প্রায় ২২ হাজার নারী খুন হন আপনজনের হাতে।

‘নারী হত্যা (ফেমিসাইড) কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অন্যান্য সহিংসতার হাত ধরে হত্যার ঘটনা আসে, যেমন আধিপত্যমূলক আচরণ, হুমকিধমকি, এবং হয়রানি- এমনকি ইন্টারনেটের হয়রানি,’ এক বিবৃতিতে বলেন সারাহ হেন্ড্রিকস, জাতিসংঘ নারী সংস্থার নীতিমালা বিভাগের পরিচালক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে নারী ও মেয়েদের সাথে ঘটা কিছু সহিংসতা আগের থেকে তীব্র হয়েছে, এমনকি নতুন ধরনের সহিংসতা তৈরি হয়েছে, যেমন নারীর সম্মতি ছাড়াই তার ছবি ছড়িয়ে দেওয়া, তার ব্যক্তিগত তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া, নারীর ডিপফেইক ভিডিও তৈরি করা।

হেন্ড্রিকস বলেন, ‘আমাদের এমন আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজন যা অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই নারী ও মেয়েদের জীবনে সহিংসতার ব্যাপারটি বিবেচনা করে এবং পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার আগেই অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হয়।’


ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য পর্ষদে প্রথম  জয়ী বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের নির্বাচনে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জয়লাভ করেছে। প্যারিসে সংস্থার সদর দপ্তরে ১৯৭২ সালের কনভেনশনের ২৫তম সাধারণ সভায় এই নির্বাচনে বাংলাদেশ সফল হয়।

এ বছর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের কোন আসন বরাদ্দ না থাকায়, দেশটি উন্মুক্ত আসনে অংশগ্রহণ করে এবং কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০২৫-২৯ মেয়াদে আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করল। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতকে পেছনে ফেলে ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়। বিশ্ব ঐতিহ্য সংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রীয় পর্ষদের নির্বাচনে বাংলাদেশ জয়লাভের মাধ্যমে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের জয়ধারা অব্যাহত থাকল।

রাষ্ট্রদূত তালহা ২০২১ সালের নভেম্বরে ইউনেস্কোর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত চার বছরে অদ্যাবধি বাংলাদেশ মোট ৮টি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়।

নির্বাচনে জয়লাভের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত তালহা বলেন, ‘ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের সাফল্য কোনও একক ঘটনা নয়। এটি ইউনেস্কোতে আমাদের কূটনৈতিক সক্ষমতার প্রতি অন্য সব দেশের আস্থার প্রতিফলন এবং বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রয়াস এবং একনিষ্ঠ প্রচারণার মাধ্যমে।’

এ সময় রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এই নির্বাচনী কাজে সহায়তা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বিশেষভাবে পররাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগ এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিসের সব সহকর্মীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশ বিশ্ব ঐতিহ্য সংক্রান্ত ১৯৭২ কনভেনশনের সদস্য পদ গ্রহণের পর থেকে এই কনভেনশনের আওতায় মোট তিনটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং একটি প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে নিবন্ধন গ্রহণে সক্ষম হয়। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য নিবন্ধনের পর থেকে এই কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত ছিল। তবে এই নির্বাচনের ফলে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত হলো বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। ইউনেস্কোতে বিভিন্ন কমিটির নির্বাচনের মধ্যে বিশ্ব ঐতিহ্য সংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রীয় পর্ষদের নির্বাচনকে সর্বাপেক্ষা কঠিন নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আগামী বছরের জুন মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এই আন্তরাষ্ট্রীয় পর্ষদের ৪৮তম সভায় যোগদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ এই পর্ষদে তার কার্যক্রম শুরু করবে।


মুসলিম ব্রাদারহুডকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা দিতে প্রক্রিয়া শুরু ট্রাম্পের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মুসলিম ব্রাদারহুডের নির্দিষ্ট শাখাগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিশেষভাবে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই পদক্ষেপের ফলে আরব বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে ওয়াশিংটন।

হোয়াইট হাউসের ফ্যাক্ট শিটের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প গত সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন যেটিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্টকে মিসর, লেবানন ও জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোর কোনোটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনোনীত করা হবে কি না, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ওই আদেশে এই মন্ত্রীদের প্রতিবেদন দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন বা বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই দেশগুলোতে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলো ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলায় সমর্থন জোগাচ্ছে বা উৎসাহিত করছে অথবা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে উপদান দিয়ে সমর্থন জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের।

হোয়াইট হাউসের ওই ফ্যাক্ট শিটে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন, যেটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচারণায় ইন্ধন জোগায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকানরা এবং ডানপন্থি রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করছে।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তার প্রথম মেয়াদে একই প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে রুবিও জানিয়েছিলেন, মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিতে ট্রাম্প প্রশাসন কাজ করছে।

টেক্সাসের গভর্নর রিপাবলিকান গ্রেগ অ্যাবোট গত সপ্তাহে অঙ্গরাজ্য স্তরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

সেক্যুলার ও জাতীয়তাবাদী ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে একটি ইসলামিক আন্দোলন হিসেবে ১৯২০-এর দশকে মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে এটি দ্রুতগতিতে মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়; কিন্তু সংগঠনটি প্রায়ই গোপনে কাজ করে।

জর্ডানে সংগঠনটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যদিও ২০২০ সালে দেশটির শীর্ষ আদালত মুসলিম ব্রাদারহুডকে ভেঙে দেওয়ার রায় দেয়; কিন্তু অতীতে কর্তৃপক্ষ বহু সময়েই তাদের কার্যক্রমের প্রতি চোখ বন্ধ রেখেছে।

মিসরে ২০১৩ সাল থেকে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ। সে বছর সংগঠনটির নেতা ও নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এরপর থেকেই সিসি দেশ পরিচালনা করছেন ও এই সময়টাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।

জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত ডেনি ড্যানন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। গত সোমবার এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, এটি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, বরং আরব বিশ্বের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।


মামদানির টিমে ফরহাদ মজহারের মেয়েসহ ১০ বাংলাদেশি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম এবার স্বার্থক হয়েছে। নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সদ্যঘোষিত ট্রানজিশন টিমে একসঙ্গে ১০ জন বাংলাদেশি অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে বাংলাদেশি কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের কন্যা সমতলী হকও রয়েছেন। সমতলী সিটি ইউনিভিারসিটি অব নিউইয়র্কে অধ্যাপনা করেন। তিনি একজন মানবাধিকারকর্মী।

অধ্যাপনা শুরুর আগে লেবার অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেছেন। মামদানির মেয়র প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই তিনি নির্বাচনি প্রচারণায় ছিলেন। মামদানির সঙ্গে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

টিমে স্থান পাওয়া অপর বাংলাদেশিরা হলেন—নাগরিক আন্দোলনের নেত্রী কাজী ফৌজিয়া, জনসংগঠক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হক, শ্রম অধিকার সংগঠক মোহাম্মদ করিম চৌধুরী, অভিবাসন অধিকারকর্মী ফারিহাহ আখতার, ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতের সংগঠক ও মুসলিম কমিউনিটির নেতা আরমান চৌধুরী, সামাজিক সংগঠন ভালো ও ম্যাসভোটের সংগঠক শাহরিয়ার রহমান, শিক্ষা-যুব খাতে পরিচিত সংগঠক তাজিন আজাদ, আইন ও ন্যায়বিষয়ক ক্ষেত্রের প্রতিনিধি এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের প্রতিনিধিত্বকারী কমিউনিটি সংগঠক ইমরান পাশা।

চার শতাধিক বিশেষজ্ঞ, কর্মী ও কমিউনিটি নেতার সমন্বয়ে এ বৃহৎ ট্রানজিশন টিম গঠিত হয়েছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও দীর্ঘদিনের কাজের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি কমিটির বিভিন্ন দায়িত্বে মনোনীত হয়েছেন।

৪০০ জনের দীর্ঘ তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবারের ট্রানজিশন টিমে ১১ জন পাকিস্তানি এবং ১৬ জন ভারতীয়সহ দক্ষিণ এশিয়ার নানা কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব থাকলেও, বাংলাদেশিদের এত বড় সম্মিলিত উপস্থিতি এবারই প্রথম, যা প্রবাসী কমিউনিটির অবস্থানকে আরো শক্তিশালীভাবে তুলে ধরেছে।


রাখাইনে জান্তা–আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র লড়াই, জনশূন্য ২০টি গ্রাম

রাখাইনে আরাকান আর্মি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কিয়াউকফিউ ঘিরে তীব্র সংঘর্ষে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে সামরিক জান্তা বাহিনী। সংঘর্ষের কেন্দ্র মিন পিয়িন গ্রাম। আরাকান আর্মির পরিকল্পিত হামলা ও কৌশলগত ফাঁদে পড়ে গুরুতর হতাহতের শিকার হয়েছে মিয়ানমার সেনারা। এর পাশাপাশি প্রায় ২০টি গ্রাম জনশূন্য হয়ে গেছে। নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও প্রায় দশ হাজার মানুষ।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে বিভিন্ন এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জান্তা বাহিনী। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে জান্তার বেশ কয়েকটি ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিদ্রোহী প্রতিরোধ যোদ্ধারা। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অঞ্চল পুনঃদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে মিয়ানমার জান্তা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকফিউ শহরে জান্তা সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান লড়াই ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
সম্প্রতি মিন পিয়িন থানার সামনে অবস্থান নেওয়া জান্তা সেনাদের ওপর ড্রোন হামলা চালায় আরাকান আর্মি। এতে অন্তত ১০ জন জান্তা সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
এই হামলার পর ১৮ নভেম্বর মিন পিয়িন, ওয়া নাচুইন, লাকেটিনসহ আশপাশের গ্রামে বোমাবর্ষণ চালায় জান্তা বাহিনী। ফলে কয়েক হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
সম্প্রতি জান্তা সেনারা মিন পিয়িনের কাছে আরাকান আর্মির একটি গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ি শিবির দখল করে নেয় এবং কাছাকাছি অন্য শিবিরগুলোর দিকে অগ্রসর হয়। তবে আরাকান আর্মির ব্যাপক পালটা হামলায় জান্তা সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিয়াউকফিউ এবং সুরক্ষিত নৌ সদর দপ্তরের দিকে যাওয়া মূল সড়কের পাশে থাকা জান্তা ঘাঁটিগুলোতেও আঘাত হানে আরাকান আর্মি।
বর্তমানে আরাকান আর্মি প্রায় ১৫টি শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং কিয়াউকফিউ ও রাখাইন-মেইনল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় জান্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়দের দাবি, এলাকা পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে সামরিক বাহিনী। চীন-সমর্থিত বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শহরে জান্তা সরকার নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই দুই পক্ষের এ সহিংসতা শুরু হয়।
স্থানীয় ত্রাণকর্মীরা জানান, কিয়াউকফিউতে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন পার করছে। স্কুল ও গ্রাম লক্ষ্য করে নৌবাহিনী হামলা চালাচ্ছে। প্রায় ২০টি গ্রাম জনশূন্য হয়ে গেছে; নতুন করে প্রায় দশ হাজার মানুষ নিজ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।


banner close