শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

২০২২ পরিবর্তনের বাঁকে

যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের কিয়েভ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বাসিন্দারা
আপডেটেড
২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:৫৪
নাহিদ জামান জিহান
প্রকাশিত
নাহিদ জামান জিহান
প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:৫৪

বিশ্বের জলবায়ু ও রাজনীতিতে ২০২২ সালে নতুন বাঁক দেখা গেছে। সেই সঙ্গে এ বছরকে সংঘাতের বছরও বলা যেতে পারে। ২০২২ সালের শুরু থেকেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ গোটা বিশ্বে নানামুখী প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে। এ ছাড়া ব্রিটেনের রানীর মৃত্যু ও নতুন রাজা চার্লসকে ঘিরেও ছিল ব্যাপক আলোচনা। অন্যদিকে খরা ও অনাবৃষ্টির পর আমেরিকায় তীব্র শীতকালীন ঝড় এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতিকূল আবহাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বছরটির শেষ প্রান্তে এসে প্রধান বৈশ্বিক ঘটনাগুলোর দিকে ফিরে তাকানো যাক।

. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

বিদায়ী বছরটিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ। ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের যুক্ত হওয়ার আবেদন এবং দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে- এমন অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এতে উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, মে মাসের শেষের দিকে আনুমানিক ৮০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৮ নভেম্বরের মধ্যে ৭৮ লাখ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতি করোনাভাইরাসের বিপর্যয়কর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ফলে গোটা বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির পাশাপাশি তীব্র জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এ ছাড়া বিশ্বের অন্যতম গম রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধাবস্থায় আমদানি-রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে। অবশ্য পরে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া কৃষ্ণসাগর পথে খাদ্যশস্যবাহী ইউক্রেনীয় জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়। তবে বছরের শেষ প্রান্তে এসেও নানা হুমকি ও আলোচনার আহ্বানেও দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার কোনো আভাস মেলেনি।

. ব্রিটেনে রানির মৃত্যু ও চার্লসের সিংহাসনে আরোহণ

সবচেয়ে বেশি সময় রাজত্বকারী ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হয়েছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলো তিনি স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে কাটান। সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পর ৯৬ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। রানির উত্তরসূরি হিসেবে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র তৃতীয় চার্লস ৭৩ বছর বয়সে ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে আসীন হন। ২০২৩ সালের ৬ মে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নতুন রাজা চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলার আনুষ্ঠানিকভাবে সিংহাসনে অভিষেক হবে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মরদেহ ওয়েস্ট মিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে আসার পর রাজা তৃতীয় চার্লস ও স্ত্রী ক্যামিলা

. ব্রিটেনে এক বছরে তিন প্রধানমন্ত্রী

এ বছর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদে তিন বার পরিবর্তন ঘটেছে। বরিস জনসন ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর এ পদে আসেন আরেক কনজারভেটিভ নেতা লিজ ট্রাস। তিনি মাত্র ৪৪ দিন ওই পদে থাকার পর ইস্তফা দেন। এরপর ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রীর পদে অভিষিক্ত হন। মূলত অর্থনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যর্থতা এবং নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টিতে আস্থা হারানোর পর ২০ অক্টোবর পদত্যাগ করেন ট্রাস। এরপর দলীয় ভোটে জিতে সরকারের হাল ধরেন সুনাক। রাজনীতিতে এসে মাত্র সাত বছর আগে এমপি হয়েছিলেন ঋষি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি দুই বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

. ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ

ইরানের বিক্ষোভে সমর্থন দিয়ে তুরস্কে এক নারী চুল কেটে ফেলেন

এ বছরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের শাসকরা। সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখ মাথার চুল সঠিকভাবে ঢেকে না রাখার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় মাহসা আমিনি নামে ২২ বছর বয়সি এক কুর্দি তরুণীকে। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পর পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়া আমিনি হাসপাতালে কোমায় থাকা অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ওই আন্দোলন শুরু হলেও একসময় সেটা রূপ নেয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। এরই মধ্যে এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ শতাধিক মানুষ। আটক হয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। এর মধ্যে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করার পাশাপাশি আন্দোলনে জড়িত থাকার অপরাধে অনেকের সাজা কার্যক্রম শুরু করেছে ইব্রাহিম রাইসির সরকার।

. বিশ্বজুড়ে খরা ও তাপপ্রবাহের পর বছর শেষে শীতের নতুন রেকর্ড

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে এ বছর নজিরবিহীন দাবদাহ দেখা গেছে। বিমানবন্দরের রানওয়ে গলে যাওয়া থেকে শুরু করে বিধ্বংসী দাবানলসহ চরম মাত্রার দাবদাহ দেখেছে বিভিন্ন দেশ। এ বছরের গ্রীষ্মে ৫০০ বছরের মধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ খরা হয়েছে। চলতি বছরের তীব্র দাবদাহে গোটা ইউরোপে প্রায় ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আমেরিকাসহ চীন ও ইউরোপের বেশ কটি নদীর পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে কমে গিয়েছিল। এমনকি নদীর স্তর নেমে যাওয়ায় পানির নিচ থেকে বেরিয়ে এসেছে বিশ্বযুদ্ধের সময় ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবেশেষ। এ ছাড়া শীতপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও কানাডার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছিল এ বছর।

এদিকে বছরের শেষে এসে পুরো উল্টো চিত্র দেখা গেছে পশ্চিমা দেশগুলোতে। মেরু অঞ্চল থেকে ধেয়ে আসা শীতকালীন ঝড়ে নাকাল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ‘বম্ব সাইক্লোন’ নামে এই শীতকালীন ঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নিউইয়র্কের বাফেলো কাউন্টিতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়।

. পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বন্যা

২০২২ সালে পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্থান-পতনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল স্মরণকালের সর্বোচ্চ ধ্বংসাত্মক। এপ্রিলে পাকিস্তানি পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অবশ্য ক্ষমতা হারিয়ে চুপ করে থাকেননি সাবেক এই ক্রিকেটার। তিনি উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ইসলামাবাদে ধারাবাহিক প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেন। আগস্টে তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে সরকার। নভেম্বরে এক জনসভায় তাকে হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং তিনি আহত হন। এ হামলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের দায়ী করেন ইমরান খান এবং তিনি দেশে আগাম নির্বাচনের দাবি জানান।

এ ছাড়া দেশটিতে গত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় ১ হাজার ৩৯১ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট এই বন্যায় দেশটির ৮০ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যায়। নজিরবিহীন এই বন্যায় আনুমানিক ৩ হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় বাড়িঘর, সেতু-কালভার্ট ও জমির ফসলসহ অন্তত ৭ লাখ গবাদি পশু ভেসে গেছে।

. শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট

রাজনৈতিকভাবে গোটা বিশ্বেই অল্পবিস্তর রদবদলের পালা চলেছে। কিন্তু এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দা ও গণবিক্ষোভ সবার নজর কেড়েছিল। বেশ কয়েক বছরের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অদূরদর্শী নীতিনির্ধারণ ও সুশাসনের সামগ্রিক অভাবের কারণে এ বছর ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারিতে পর্যটননির্ভর দেশটির অর্থনৈতিক সংকট ও আন্তর্জাতিক ঋণের চাপে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তীব্র ঘাটতি সৃষ্টি হয়। ফলে সাধারণ জনগণের বিপুল বিক্ষোভ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছিল। আন্দোলনকারীরা ৯ জুলাই গোতাবায়ার সরকারি বাসভবনে হামলা চালালে তিনি দেশ ছেড়ে পালান। এ অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। পরে ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত সংসদীয় ভোটে জয়ী হয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হন রনিল বিক্রমাসিংহে। আর এভাবেই দেশটিতে প্রায় ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি পরিবারের শাসনের অবসান ঘটে।

. আফগানিস্তানে নারীদের ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ

গত বছর আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় বসার পর থেকেই একের পর এক নিষেধাজ্ঞার খড়্‌গ নেমে এসেছে আফগান নারীদের ওপর। প্রথম ধাপেই সমস্ত সরকারি দপ্তর থেকে নারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর ডিসেম্বরে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজাও বন্ধ করে দেয়া হয়। নারীরা ইসলামিক পোশাকবিধি লঙ্ঘন করছে- এমন অভিযোগ তুলে তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিওতে কাজ করার বিষয়ে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালেবান সরকার।

অন্যদিকে বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রাণ হারায় ১ হাজার ১৪৩ জন। ২২ জুন দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পে আরও অন্তত ৬ হাজার মানুষ আহত এবং প্রায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

. শিনজো আবে হত্যা

আততায়ীর হাতে নিহত শিনজো অ্যাবে

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে একটি রাজনৈতিক সমাবেশ চলাকালে চলতি বছর ৮ জুলাই নিহত হন। শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত জাপানে সে দেশেরই একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এটাই প্রথম। বিষয়টি সে কারণেই সবার মনোযোগ কাড়ে। বিশেষ করে এ ঘটনার পেছনে বড় কোনো রাজনৈতিক কারণ পাওয়া যায়নি। শিনজো আবে জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অর্থনীতির প্রশ্নে তিনি সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যা ‘আবেনোমিক্স’ নামে পরিচিতি পায়। তার পিতামহ নবসুকে কিশিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাই রাজনীতিতে তার একটি পারিবারিক ঐতিহ্য ছিল।

১০. দক্ষিণ কোরিয়ায় পদদলিত দুই শতাধিক

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বছরজুড়ে নানা ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলেও গত ২৯ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে সংঘটিত দুর্ঘটনা ছিল সবচেয়ে মারাত্মক ও দুঃখজনক। হ্যালোইন উৎসবে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৪৯ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় আরও দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। হ্যালোইন উদ্‌যাপনের জন্য একটি সরু গলিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত হলে এই পদদলনের ঘটনা ঘটে। মহামারির পর এবারই প্রথম এই উৎসবে উৎসাহী মানুষের ভিড় ছিল তাই মাত্রাতিরিক্ত। এই ঘটনায় মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগেই ছিল তরুণ বয়সি। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল জাতীয় শোক ঘোষণা করেন।


ইমরান খানকে সরাতে ‘মাইনাস ওয়ান ফরমুলা’, নিজ দলের ভেতরেও ষড়যন্ত্র

ইমরান খান  
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেশের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার ‘সমন্বিত ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তার নিজ দলের অনেকই জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ ধরনের তৎপরতা মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পিটিআইয়ের অন্য নেতারা।

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গানদাপুর অভিযোগ করেছেন, গভর্নরের শাসন জারি ও ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে ছিটকে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা চলছে। তিনি এ ধরনের উদ্যোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।

পিটিআইয়ের অভ্যন্তরে বিভাজনের অভিযোগ

পিটিআইয়ের অভ্যন্তরে ভাঙন ধরানোর ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেত্রী আজমা বুখারি ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আজমা’র দাবি, ইমরানকে তার নিজের বোন আলিমা খান ও দলের সদস্যরাই কোণঠাসা করে ফেলেছেন। আলিমার সঙ্গে পিটিআইয়ের সোশ্যাল মিডিয়া ইউনিটও নাকি ইমরান খানের বিরুদ্ধ একই অভিযানে যুক্ত।

আজমা বুখারি বলেন, যিনি (ইমরান) একদিন নওয়াজ শরিফকে ‘সাইডলাইন’ করার চেষ্টা করেছিলেন, আজ তিনি নিজেই তার ঘরে ও দলে অবাঞ্ছিত হয়ে গেছেন।

আজমা আরও দাবি করেন, পিটিআই এখন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তিনটি ও প্রাদেশিক পর্যায়ে আরও তিনটি ভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত। খাইবার পাখতুনখোয়ায় একদিকে জুনায়েদ আকবর, অন্যদিকে আতিফ খান ও আরেকটি গ্রুপ বিদ্রোহী সদস্যদের নিয়ে গঠিত।

পিটিআইয়ের তীব্র প্রতিক্রিয়া

আজমার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআই মুখপাত্র শেখ ওয়াকাস আকরাম বলেন, ইমরান খানকে বাদ দেওয়ার এই ষড়যন্ত্রে সরকার নিজেই অপমানিত ও নগ্ন হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ইমরান খানকে মাইনাস নয়, বরং তার অবস্থান আরও কয়েকগুন শক্তিশালী করা হয়েছে। জাতি তাকে সবার ওপরে স্থান দিয়েছে।

ওয়াকাস আকরাম দাবি করেন, গত তিন বছরে একাধিকবার পিটিআইকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সবই ব্যর্থ হয়েছে। ‘ইমরান শুধু পিটিআইয়ের নেতা নন, তিনি জাতির নেতা। তার জনপ্রিয়তা, দমন-পীড়নের মধ্যেও বেড়েই চলেছে।

পাঞ্জাব সরকারকে দুর্নীতির অভিযোগে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, পাঞ্জাবের এই ‘চুরি করা ম্যান্ডেট’ এখন এক লাখ কোটি রুপি লোপাটের কলঙ্কে কলুষিত। আজমা বুখারিকে বলা উচিত, ‘পানামা কুইনের’ অধীনে কীভাবে জনগণের সম্পদ লুট হচ্ছে।

এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী গানদাপুর বলেন, ইমরান খানই দলের নেতা। যদি তিনি বলেন, আমি এক মিনিটেই এই সরকার ছেড়ে দেব। সরকারটি তারই। তাকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা মানে দলের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হানা।

তিনি অভিযোগ করেন, ইমরানের পরামর্শ ছাড়াই বাজেট পাশ করানো হয়েছিল ও পরিকল্পিতভাবে দলের ভেতরের আলোচনা বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। আলোচনা বাধাগ্রস্ত করে সরকার হাইজ্যাক করার একটি প্রচেষ্টা ছিল, যা ব্যর্থ হয়েছে।

গানদাপুর বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করে গভর্নরের শাসন চাপিয়ে দেওয়ার একটি ষড়যন্ত্র চলছে। এটি মূলত ইমরান খানকে বাজেট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার কৌশল।

তিনি আরও জানান, ইমরান খান মুক্তি পেলেই দলের ভেতরের ষড়যন্ত্রকারীরা জনসম্মুখে উন্মোচিত হবেন। দেখা যাবে কারা ইমরানকে দুর্বল করতে চাইছে, আর জনতা তাদের বিচার করবে।

পিটিআই কি বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে?

এই মুহূর্তে পিটিআই যে একাধিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে- তা খোদ ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই বলছেন। দলটির কৌশলগত সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠছে কেন্দ্রে ও প্রাদেশিক পর্যায়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পিটিআইয়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বহিরাগত চাপ- উভয়ই একত্রে কাজ করছে। ইমরান খানের অনুপস্থিতিতে দল নেতৃত্বহীন অবস্থায় নানা চাপ মোকাবিলা করছে এবং তার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।


মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি সপ্তাহে মালয়েশিয়ার পুলিশ এক অভিযানে ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযোগ, তাদের চরমপন্থি মতাদর্শ ও সহিংস চিন্তাধারায় পরিচালিত একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল জানান, ২৪ এপ্রিল শুরু হওয়া অভিযানটি সেলাঙ্গর ও জোহর অঞ্চলে তিন ধাপে পরিচালিত হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে শাহ আলম ও জোহর বারুর সেশন আদালতে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অপরাধের ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৫ জনের বিরুদ্ধে দেশে ফেরত পাঠানোর (ডিপোর্টেশন) আদেশ জারি করা হয়েছে এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে এখনো তদন্ত চলছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, দলটি মালয়েশিয়ায় আইএসের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং নিজেদের কমিউনিটির ভেতরেই নিয়োগ সেল গঠন করেছিল।

সাইফুদ্দিন ইসমাইল বলেন, সেলগুলোর উদ্দেশ্য ছিল উগ্র মতাদর্শ প্রচার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং শেষ পর্যন্ত নিজ দেশের বৈধ সরকার উৎখাত করা। মালয়েশিয়া কখনো কোনো বিদেশি উগ্রবাদী আন্দোলনের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবে না।

মন্ত্রী বলেন, আমরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব, যেন মালয়েশিয়া শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সন্ত্রাসী হুমকি থেকে মুক্ত থাকে। এই দেশকে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের অপারেশনাল ঘাঁটি বা ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করলে কঠোর, দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


মার্কিন হামলা সফল দাবি করে গণমাধ্যমকে তিরস্কার ট্রাম্প প্রশাসনের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার খবর প্রচারের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছে।

তারা জোর দিয়ে বলেছে, অভিযানটি সম্পূর্ণ সফল।

তারা সন্দেহ জাগিয়ে তোলা একটি গোয়েন্দা মূল্যায়নের প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিকদের তিরস্কার করেছে।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

গত সপ্তাহান্তে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান দুটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বিশাল জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে একটি গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তৃতীয় স্থানে আঘাত করেছে।

পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ইসরামফল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘যুদ্ধ শেষ করার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করে করে দিয়েছেন।’

ট্রাম্প নিজেই এই হামলাগুলোকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলে অভিহিত করে বারবার বলেছেন, তারা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করেছে।

‘কিন্তু মার্কিন গণমাধ্যম এই সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রাথমিক আমেরিকান গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে যে, এই হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।

হেগসেথ ও অন্যান্যরা এই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

হগসেথ বলেন, সিএনএন, এমএসএনবিসি বা নিউ ইয়র্ক টাইমস, যাই হোক না কেন, প্রাথমিক মূল্যায়নের ভুয়া খবর প্রচার করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই নথিটি ফাঁস হয়েছে, কারণ কারোর উদ্দেশ্য ছিল জল ঘোলা করা এবং এই ঐতিহাসিক হামলা সফল হয়নি বলে দেখানো’।

ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের কভারেজের নিন্দা করেছেন। সাংবাদিকদের চাকরি হারানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাটদের মূল্যায়ন ফাঁস করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে, তাদের বিচার করা উচিত।


রাশিয়ায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় চীনা সাংবাদিক আহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে লক্ষ্যবস্তু স্থাপনার কাছে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় চীনা টিভি সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

তিনি তখন ওই এলাকায় প্রতিবেদনের কাজে নিয়াজিত ছিলেন।

শুক্রবার তার নিয়োগকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছেন।

সম্প্রচারকটি জানায়, রাষ্ট্র-অধিভুক্ত ফিনিক্স টিভির এক প্রতিবেদক লু ইউগুয়াং বৃহস্পতিবার বিকেলে আহত হন এবং তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ভিডিওতে লুকে মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার সময় লু কোরেনেভো গ্রামে এক চলচ্চিত্র কর্মীর সঙ্গে ছিলেন।

রাশিয়া কিয়েভকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ’ করার অভিযোগ করেছে এবং ‘দায়িত্বশীল সরকারগুলোকে এই ঘটনার নিন্দা’ করার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনে মন্তব্য করেনি।

ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে চীন নিজেকে একটি নিরপেক্ষ পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।

কিন্তু পশ্চিমা সরকারগুলো বলেছে, বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মস্কোকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়েছে।


ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর ‘শান্তি চুক্তি সম্প্রসারণের’ সুযোগ দেখছেন নেতানিয়াহু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধের অবসানের পর তিনি ‘শান্তি চুক্তি সম্প্রসারণের একটি সুযোগ দেখছেন’।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

তিনি এক ভিডিও বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা ইরানের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সাথে লড়াই করেছি এবং একটি দুর্দান্ত বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয় শান্তি চুক্তিগুলোকে নাটকীয়ভাবে সম্প্রসারিত করার পথ খুলে দিয়েছে’।

তার মন্তব্য মূলত আব্রাহাম চুক্তির প্রতি ইঙ্গিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো।

ইসরাইল ও ইরান উভয়েই ১২ দিনের যুদ্ধে বিজয় দাবি করে। যা গত ২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়েছে।

সংঘাত থামার পর ইসরাইল জানায়, তারা গাজায় হামাসবিরোধী অভিযানকে আবারও অগ্রাধিকার দেবে। সেখানে হামাস যোদ্ধারা এখনো ইসরাইলি জিম্মিদের আটকে রেখেছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসের বিরুদ্ধে বিজয়ের পাশাপাশি, এখন একটি বড় পরিসরের শান্তি চুক্তির জন্য জানালা খুলেছে। আমরা যেন এই সুযোগ হাতছাড়া না করি। একদিনও যেন নষ্ট না হয়।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর সৌদি আরবও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে।

গত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের ভয়াবহ হামলার জবাবে ইসরাইল গাজায় তাদের ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করে।


ইরান পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি ‘সবচেয়ে খারাপ’ হবে : ম্যাক্রোঁ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তেহরান যদি বিশ্বব্যাপী পরমাণু বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়, তবে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ হবে বলে জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

তিনি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলা ‘সত্যিকার অর্থেই কার্যকর’ ছিল।

ব্রাসেলস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের ম্যাক্রোঁ বলেন, ইরানের পরমাণু বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া হবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।

চুক্তিটি বজায় রাখার জন্য ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার সীমিত করার উদ্দেশ্যে তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্যের সঙ্গেও কথা বলবেন।

বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই এই আলোচনা শুরু হয়েছে।

আলোচনায় ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেকে গত কয়েক দিন ধরে তেহরানের সঙ্গে প্যারিসের যোগাযোগের কথা জানিয়েছেন।

ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমাদের আশা, দৃষ্টিভঙ্গির সত্যিকারের মিলন ঘটবে, লক্ষ্য ছিল ইরান কর্তৃক ‘পুনরায় পারমাণবিক নির্মাণের কোনও প্রচেষ্টা’ না করা।

ইরান ১৯৭০ সালে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) অনুমোদন করে এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কাছে তার পারমাণবিক উপাদান ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

কিন্তু সম্প্রতি তারা চুক্তি থেকে সম্ভাব্য প্রত্যাহারের জন্য ভিত্তি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। সংস্থাটিকে ইসরাইলের ‘আগ্রাসন যুদ্ধে’ ‘অংশীদার’ হিসেবে কাজ করার অভিযোগ এনেছে।

আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান গত সপ্তাহান্তে বিশাল জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার-বাস্টার বোমা দিয়ে দুটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করেছে, যখন একটি গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তৃতীয় স্থানে আঘাত করেছে।

ট্রাম্প নিজেই এই হামলাগুলোকে ‘চমৎকার সামরিক সাফল্য’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বারবার বলেছেন যে, তারা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করেছে।

কিন্তু মার্কিন সংবাদমাধ্যম এই সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রাথমিক আমেরিকার গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেবল কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ও অন্যরা এই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।


ঢাকার সঙ্গে সব বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: রণধীর জয়সওয়াল

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পারস্পরিক লাভজনক সংলাপের অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রণধীর বলেন, ‘আমরা গঙ্গাসহ একে অপরের সঙ্গে ৫৪টি নদীর পানি ভাগাভাগি করি। আর এসব নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) রয়েছে।’

পানি বণ্টনসহ এ ধরনের ইস্যুতে ভারতের অভ্যন্তরে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয় বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি কলকাতায় জয়েন্ট রিভার কমিশনের ৮৬তম বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। আগামী বছর এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক প্রসঙ্গে ভারত

গত ১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সেই সম্পর্ক বিচার করার সময় আমরা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটও বিবেচনায় নিয়ে থাকি।’

ওই বৈঠক নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেন, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ নেই এবং এটি ভারতের বিরুদ্ধেও কিছু নয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো জোট করছি না। এটি রাজনৈতিক নয়, কেবল দাপ্তরিক পর্যায়ের একটি বৈঠক। এখানে কোনো জোট গঠনের বিষয় নেই।’

বৈঠকটি ভারতের ওপর কৌশলগত চাপ তৈরির উদ্দেশ্যে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই না। এটি আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি। টার্গেট করার বিষয় এখানে নেই।’

বাণিজ্য ইস্যুতে ভারতের অবস্থান

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রণধীর বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত।

মুখপাত্র বলেন, ‘এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।’

সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের প্রতিক্রিয়া

ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ধ্বংস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, কট্টরপন্থিরা সেখানে একটি মন্দির ভাঙার দাবি তুলেছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে উল্টো অবৈধ জমি ব্যবহারের যুক্তিতে সেটি ভাঙার অনুমতি দিয়েছে।’

মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত হতাশ যে বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়, তাদের সম্পত্তি ও উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারেরই দায়িত্ব।’


যুদ্ধবিরতির ‘খুব কাছাকাছি হামাস-ইসরায়েল  

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান-ইসরায়েলের ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ থেমেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানুষের ভাগ্য এখনো পরিবর্তন হয়নি। তবে সেই সম্ভাবনা নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারীরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামসের এক কর্মকর্তা। এদিকে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দাবি, চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ রয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। এদিকে বুধবার সকালে ইসরায়েলের হামলায় আরো বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তাদের অনেকেই ত্রাণ সংগ্রহের অপেক্ষায় ছিলেন বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। অন্যদিকে মঙ্গলবার হামাসের দাবি করা বোমা হামলায় সাত ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

হামাস জানিয়েছে, গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি ও বন্দি ফেরতের বিষয়ে আলোচনা করতে তোড়জোড় করছেন মধ্যস্থতাকারীরা। তবে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

ইসরায়েল ও ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘গাজা নিয়ে বড় অগ্রগতি হয়েছে’। ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এই (ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায়) আক্রমণের কারণেই গাজায় বড় অগ্রগতি হচ্ছে। আমি মনে করি আমরা শিগগিরই ভালো কিছু শুনতে পাব।

তিনি জানান, তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি বলেছেন, ‘গাজায় সমঝোতা খুবই কাছাকাছি।’এর কিছুক্ষণ পরই হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি নিয়ে জোরালো প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এখনও নতুন কোনো প্রস্তাব আসেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম হারেৎজকে জানিয়েছেন, আলোচনায় এখনও কোনো অগ্রগতি নেই এবং বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

এর আগে, মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের সমর্থনে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে হামাস গ্রহণযোগ্য নয়—এমন কিছু সংশোধনী দাবি করলে আলোচনা স্থবির হয়ে যায়। ইসরায়েল ১৮ মার্চ গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে। বর্তমানে সেখানে অন্তত ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সেই সঙ্গে মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তিন মাস পর এটি আংশিক শিথিল করা হয়। এরপর ইসরায়েলের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচটি) নামে নতুন ত্রাণ বিতরণ কাঠামো চালু হয়েছে।

জিএইচটি দাবি করেছে, ২৬ মে থেকে এখন পর্যন্ত তারা ৪ কোটি ৪০ লাখের বেশি খাবারের প্যাকেজ বিতরণ করেছে। এমনকি, বুধবার ৩টি কেন্দ্রে ২৪ লাখের বেশি খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। নতুন এই ত্রাণ ব্যবস্থার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা। হামাসকে সহায়তা না দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর এই বিষয়টিকে তারা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জিএইচটি কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ত্রাণ সংগ্রহের সময় ৫৪৯ জন নিহত এবং ৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। বুধবারও কেন্দ্রীয় গাজায় জিএইচটির একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে ইসরায়েলি গুলিতে ছয়জন এবং দক্ষিণের রাফায় আরও তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাসের সিভিল ডিফেন্স। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, এসব ঘটনায় তারা কোনো হতাহতের খবর পায়নি।

ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার গাজা সফর শেষে বলেন, যতদিন মানুষকে খাবার থেকে বঞ্চিত করা হবে, তারা এই মৃত্যুফাঁদে যেতে বাধ্য হবে।

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গুলি, নিহত ৩৩

গাজায় আবারও ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ ঝরল ফিলিস্তিনিদের। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর উপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা অব্যাহত রাখলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে বড় অগ্রগতি হচ্ছে। কাতার জানিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে পারে ইসরাইল ও হামাস। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। যাদের মধ্যে ৩৩ জনই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষা করার সময় প্রাণ হারান।

স্থানীয় হাসপাতালগুলো বলছে, ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত এমন হামলায় সাড়ে পাঁচশ’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, এসব সহায়তা কেন্দ্র এখন মৃত্যুকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে।

এদিন গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বাসিন্দাদের আশ্রয় নেয়া ভবন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো আগাম সতর্কতা ছাড়াই ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয় ইসরাইলি সেনারা। হামলায় ধসে যায় ভবনের ছাদ। নিচে চাপা পড়েন অনেকে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় তারা হাতে খুঁড়েই মরদেহ উদ্ধারে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই কূটনৈতিক আলোচনায় গতি এসেছে। বুধবার কাতার জানায়, কয়েকদিনের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে পারে ইসরায়েল ও হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন জানিয়েছে, এ বিষয়ে কাতার ও মিসরের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যদিও কোনো নতুন প্রস্তাব এখনও আসেনি।


জনসমক্ষে অনুপস্থিত খামেনি, ইরানজুড়ে উদ্বেগ-অস্থিরতা

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বোমা হামলা, যুদ্ধবিরতি, কূটনৈতিক আলোচনা- সব কিছুতেই উত্তাল মধ্যপ্রাচ্য। এর মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক সপ্তাহেরও বেশি সময় জনসমক্ষে অনুপস্থিত থাকা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা, উদ্বেগ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক উপস্থাপক পর্যন্ত সম্প্রচারে প্রশ্ন তুলে দেন: মানুষ খুব উদ্বিগ্ন, তারা জানতে চায়- আয়াতুল্লাহ খামেনি কেমন আছেন? এই প্রশ্ন আজ ইরানের রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ক্ষমতার মঞ্চেও ঘুরপাক খাচ্ছে।

খামেনির দপ্তরের আর্কাইভ প্রধান মেহেদি ফাজায়েলি এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য না দিয়ে বলেন, আমার কাছেও অনেক ফোন এসেছে, সবাই চিন্তিত। আমরা সবাই দোয়া করছি। নিরাপত্তা বাহিনী আমাদের সর্বোচ্চ নেতার সুরক্ষায় যথাযথ কাজ করছে। ইনশাআল্লাহ, জনগণ তার পাশে দাঁড়িয়ে বিজয় উদযাপন করবে।

বিস্ময়করভাবে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলা, কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ট্রাম্প-উত্থাপিত যুদ্ধবিরতির পুরো সময়জুড়ে খামেনির কোনো ভিডিও, অডিও বা লিখিত বক্তব্য আসেনি।

সরকারি সূত্র বলছে, খামেনি একটি সুরক্ষিত বাঙ্কারে অবস্থান করছেন ও যেকোনো সম্ভাব্য ইসরায়েলি গুপ্তহত্যা রোধে ইলেকট্রনিক যোগাযোগ থেকেও বিরত রয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও খামেনির উপদেষ্টা হামজেহ সাফাভি বলেন, ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল এখনো খামেনিকে হত্যা করার চেষ্টা করতে পারে, এমনকি যুদ্ধবিরতির সময়েও। তাই এখন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাইরের জগৎ থেকে যোগাযোগে কঠিন বিধিনিষেধ। কিন্তু এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় রাজনৈতিক অভ্যন্তরীণ মহল।

খানেমান পত্রিকার সম্পাদক মোহসেন খালিফে বলেন, কয়েকদিন ধরে খামেনির অনুপস্থিতি আমাদের, যারা তাকে ভালোবাসি, তাদের সবাইকে খুবই চিন্তিত করে তুলেছে। যদি সত্যি তিনি মারা যান, তবে তার জানাজা হবে ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময়।

যেহেতু খামেনিই সামরিক সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত স্বাক্ষরকারী, তাই ইসরায়েল বা আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধ বা যুদ্ধবিরতির মতো বড় সিদ্ধান্ত তার অনুমোদন ছাড়া হওয়া অসম্ভব। প্রশ্ন উঠছে- এই সিদ্ধান্তগুলোতে তিনি আদৌ যুক্ত ছিলেন কি না?

আশুরায় খামেনির উপস্থিতির গুরুত্ব

চ্যাটহ্যাম হাউজের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক পরিচালক সানাম ভাকিল বলেন, খামেনির অনুপস্থিতি প্রমাণ করে ইরানের নেতৃত্ব নিরাপত্তা বিষয়ে কতটা সতর্ক। তবে আশুরার দিনে তিনি যদি না আসেন, তা হবে খুবই খারাপ বার্তা।

আসন্ন আশুরা (জুলাইয়ের শুরু) অনেকাংশেই হয়ে উঠেছে খামেনির রাজনৈতিক জীবিত-বোধের পরীক্ষামূলক দিন। কারণ বহু সমর্থক বলছে, তারা ততক্ষণ যুদ্ধজয়ের আনন্দ উদযাপন করবে না, যতক্ষণ না খামেনিকে নিজের চোখে দেখে বা কণ্ঠে শোনেন।

পরিবর্তনের ডাক ও রাজনৈতিক বিভক্তি

ইরানের চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, খামেনির অনুপস্থিতিতে রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজাতদের মধ্যে জোট গঠনের চেষ্টা চলছে। অনেকে কূটনৈতিক সমঝোতার পথে হাঁটতে চাইলেও, কেউ কেউ কঠোর অবস্থান বজায় রাখতে চাইছেন। এই মুহূর্তে মধ্যপন্থি একটি পক্ষ এগিয়ে আছে। এদের নেতৃত্বে আছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এই পক্ষের মিত্রদের মধ্যে রয়েছেন বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম-হোসেইন মোহসেনি-এজেই ও সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান মেজর জেনারেল আবদুর রহিম মুসাভি। গত বুধবার এক মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, যুদ্ধ ও জনগণের ঐক্য আমাদের শাসনব্যবস্থা এবং কর্মকর্তাদের আচরণে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখিয়েছে। এটি একটি স্বর্ণালী সুযোগ।

সরকার যুদ্ধকালে উদ্ভূত জাতীয়তাবাদী আবেগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। উদাহরণ স্বরূপ, আজাদি স্কয়ারে জাতীয় সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার পারফরম্যান্স ও জরুরি সেবাকর্মীদের সম্মানে লাইট শো অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে পেজেশকিয়ানের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন কট্টর রক্ষণশীল রাজনীতিক সাঈদ জালিলি। তার নেতৃত্বাধীন একটি গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পেজেশকিয়ানের আলোচনার আগ্রহকে ‘রাজনৈতিক অযোগ্যতা’ আখ্যা দিয়েছেন। সামরিক বাহিনীর কিছু অংশ ও সংসদের বেশিরভাগ সদস্য এই কট্টরপন্থি শিবিরের ঘনিষ্ঠ।

জালিলির ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফোয়াদ ইজাদি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, এই মুহূর্তে আলোচনা শুরু করার কথা বলায় প্রেসিডেন্ট প্রমাণ করেছেন, তার হাতে দেশের শাসনভার দেওয়ার মতো রাজনৈতিক দক্ষতা নেই। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র আলি আহমাদনিয়া পাল্টা জবাবে বলেন, আমরা ১২ দিন ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি, এখন আপনাদের মতো লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই হবে? আপনারা কলম দিয়ে শত্রুর কাজ সহজ করছেন।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ভবিষ্যৎ

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ও পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি বলেছেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় গড়ে তুলবে ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবে।


ইসরাইলি কমান্ডোরা ইরানে গোপন কাজ করেছে : ইসরাইলি সেনা প্রধান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরাইলি কমান্ডোরা ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে ইরানের অভ্যন্তরে গোপনে কাজ করেছে। ইসরাইলের সেনা প্রধান বুধবার এ কথা বলেন।

জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, ইসরাইলি সেনা প্রধান ইয়াল জামির টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেন, ‘আমরা ইরানের আকাশসীমা ও আমাদের পছন্দের প্রতিটি স্থানে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছি।’ তিনি বলেন, আর তা সম্ভব হওয়ার কারণ হলো, আমাদের বিমান বাহিনী ও স্থল কমান্ডো ইউনিটগুলোর সমন্বয় ও তাদের কৌশল।

‘বাহিনীগুলো শত্রু অঞ্চলের গভীরে গোপনে কাজ করে আমাদের অবাধ কর্মক্ষমতা প্রয়োগের পথ তৈরি করে।’

মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে উভয় দেশই সংঘাতে বিজয়ের দাবি করেছে।

১৩ জুন ইসরাইল একটি আকস্মিক বোমা হামলার মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত রাখা। তবে ইরান ধারাবাহিকভাবে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা অস্বীকার করে।

জামির প্রথম ইসরাইলি কর্মকর্তা যিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ইসরাইলি সৈন্যরা ইরানের স্থলভাগে অভিযান চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন ‘অভিযান এখনও শেষ হয়নি।’ ‘অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’


জোরপূর্বক ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ যুদ্ধ অপরাধের সামিল: জাতিসংঘ

আপডেটেড ২৬ জুন, ২০২৫ ১৭:৪৯
ইউএনবি

ইসরায়েল অধিকৃত জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরের ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি জনপদ থেকে ব্যাপক হারে জোরপূর্বক ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। এটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী জাতিসংঘ যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

ওএইচসিএইচআরের তথ্যমতে, মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চল থেকে ১২০০ ফিলিস্তিনি নাগরিকের জোরপূর্বক স্থানান্তরের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জাতিসংঘের দপ্তরটি এক বিবৃতিতে জানায়, দক্ষিণ হেবরনের মাসাফের ইয়াত্তা এলাকায় ফিলিস্তিনিদের সব ধরনের নির্মাণ ও পরিকল্পনার অনুমতি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক প্রশাসন।

তাদের দাবি, ওই এলাকাটি সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হবে।

ওএইচসিএইচআর আরও জানায়, গত কয়েক মাসে ইসরায়েল ব্যাপকভাবে বাড়িঘর ভাঙচুর, ফিলিস্তিনি নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মীদের নির্বিচার গ্রেপ্তার ও নির্যাতন, পাশাপাশি মাসাফের ইয়াত্তার ভেতর ও আশপাশে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে, যার মাধ্যমে সেখানকার ফিলিস্তিনিদের বাধ্যতামূলকভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে ওই এলাকায় বসবাসরত অবৈধ ইহুদি বসতি থেকে আসা দখলদাররা প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনি নারী, শিশু ও প্রবীণদের ওপর হামলা ও হয়রানি চালাচ্ছে যেন তারা বাধ্য হয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের দাবি ইসরায়েলি মন্ত্রীর

এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির গাজায় চলমান মানবিক সহায়তাকে ‘সম্পূর্ণ লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং এই সহায়তা অস্থায়ীভাবে নয় বরং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।

সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কট্টর ডানপন্থি এই মন্ত্রী দাবি করেন, হামাসই গাজায় খাদ্য ও পণ্যের নিয়ন্ত্রণ করছে। সহায়তা বন্ধ করলেই দ্রুত বিজয় অর্জন সম্ভব।

ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় বেন-গভিরের মতো কট্টর ডানপন্থি নেতারা শুরু থেকেই গাজায় সহায়তা পাঠানোর বিরোধিতা করে আসছেন। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক বিপর্যয় রোধে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ থামলেও দীর্ঘদিনের ফিলিস্তিন সংকটে কোন অগ্রগতি নেই। এ অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলা ও আগ্রাসন চলমান।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৬ হাজার ১৫৬ জন হাজার নিহত ও ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত বা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।


যুদ্ধে ইসরাইলকে সহযোগিতার অভিযোগে ইরানে ২৬ জন গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সদ্য সমাপ্ত যুদ্ধে ইসরাইলকে সহযোগিতার অভিযোগে ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ক’দিন পর তাদের গ্রেপ্তার করা হল। তেহরান থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ‘গোয়েন্দা সংস্থা হযরত ওয়ালি আছর কোর এই ব্যক্তিদের ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছে।’

সংস্থার এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে এটি আরও জানায়, ‘তাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বিরোধী কার্যকলাপ, জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে দেওয়া ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।’

ইসরাইলের সামরিক প্রধান বুধবার বলেন, ১২ দিনের যুদ্ধের সময় তাদের কমান্ডোরা ইরানের অভ্যন্তরে গোপনে কাজ করে এবং এর গোয়েন্দা প্রধানও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তার প্রশংসা করেছেন।

ইসরাইলি সামরিক প্রধান ইয়াল জামির টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘আমরা ইরানের আকাশসীমা এবং আমাদের পছন্দের প্রতিটি স্থানে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটি সম্ভব হওয়ার অন্যান্য কারণ হলো আমাদের বিমান বাহিনী ও স্থল কমান্ডো ইউনিটগুলোর সমন্বয় ও কৌশল।’

‘বাহিনীগুলো শত্রু অঞ্চলের গভীরে গোপনে অভিযান চালায় এবং আমাদের কর্মক্ষমতার স্বাধীনতা তৈরি করে।’

ইরান বুধবার জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের সহযোগিতায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

তেহরান নিয়মিত ভাবে চিরশত্রু ইসরাইলসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় কাজ করায় সন্দেহভাজন এজেন্টদের গ্রেপ্তার করে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণা দেয়।

মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে উভয় দেশই সংঘাতে জয়ের দাবি করেছে।


যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী বা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গোপনীয়তা ‘পাবলিক’ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিক বিনিময় ভিসার ক্ষেত্রেও এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিভাগের বরাতে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই পোস্ট অনুযায়ী, যারা ‘এফ’, ‘এম’ বা ‘জে’ ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের নিজের সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি (গোপনীয়তা) ‘পাবলিক’ অর্থাৎ সর্বজনীন অবস্থায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ যেন আপনার পরিচয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশযোগ্যতা যাচাই করতে সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য পর্যালোচনা করতে পারে, তাই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভিসা আবেদনকারীদের জন্য তাদের সোশ্যাল মিডিয়া আইডেন্টিফায়ার বা ব্যবহারকারীর নাম বাধ্যতামূলক করেছে, যা অভিবাসী ও অধিবাসী (ইমিগ্র্যান্ট ও নন-ইমিগ্র্যান্ট)—উভয় ভিসার আবেদনপত্রে দিতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতায় ভিসা যাচাই এবং নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য সকল উপলব্ধ তথ্য ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে প্রবেশে অযোগ্য ব্যক্তি, বিশেষ করে যারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, তাদের শনাক্ত করা সহজ হয়।


banner close