বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

আমীর খসরুর ৯ মামলায় জামিন

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৪:১৫

গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে পল্টন মডেল থানায় দায়ের করা আরও একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এনিয়ে তিনি নয়টি মামলায় জামিন পেলেও ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। এ জন্য আমীর খসরু কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।

গত ২১ জানুয়ারি একই আদালত পল্টন ও রমনা থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় তাকে জামিন দেন এবং গত বছরের অক্টোবরে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় পল্টন ও রমনা থানায় দায়ের করা আরও চারটি মামলায় ১৮ জানুয়ারি একই আদালত তাকে জামিন দেন।

১৭ জানুয়ারি আমীর খসরুকে পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলাসহ আরও দুটি মামলায় জামিন দেওয়া হয়।

তার আইনজীবী এ বিষয়ে আটটি পৃথক আবেদন দাখিল করার পর ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন গ্রহণে অস্বীকৃতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হলে, ৮ জানুয়ারি, হাইকোর্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে মামলার বিষয়ে খসরুর জামিন আবেদন গ্রহণ, শুনানি ও নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ১৪ ডিসেম্বর নেতার জামিন চেয়ে পৃথক আবেদন করেন।

পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা, অবৈধভাবে রাস্তায় জড়ো হওয়া, যানবাহন ভাঙচুর, দাঙ্গা, পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই, সম্পত্তির ক্ষতি, পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিত করা এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এসব মামলা করা হয়।

গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশান থেকে আমীর খসরুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশে সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।


বিজিবির রেদোয়ানুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গঠন করে এই আদেশ প্রদান করেন।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল শুনানির শুরুতে আসামিপক্ষের করা অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় অভিযুক্ত চার আসামির মধ্যে দুইজন বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাঁরা হলেন—বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। আজ সকালে তাঁদের ঢাকা সেনানিবাসের বিশেষ সাব-জেল থেকে কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মামলায় পলাতক অন্য দুই আসামি হলেন—ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান।

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানিতে জানান, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রামপুরা এলাকায় বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়, যাতে ২৮ জন প্রাণ হারান এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন। বিশেষ করে বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলামকে আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি ছুড়তে দেখা গেছে বলে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে। অন্য আসামিরাও এই হত্যাযজ্ঞে প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব ও ইন্ধন দিয়েছেন বলে ট্রাইব্যুনালে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর রেদোয়ান ও রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও আদেশ দেওয়া হয়েছিল। গত ২১ ডিসেম্বর মামলার উভয়পক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে অব্যাহতির আবেদন জানালেও আদালত তা আমলে নেননি। আজকের এই আদেশের ফলে রামপুরা হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রক্রিয়ায় এক বড় অগ্রগতি সাধিত হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ট্রাইব্যুনাল খুব শীঘ্রই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করবেন।


বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নিয়োগের আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এই সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি তাঁর এই নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করেছিলেন। নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি আগামী ২৮ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

সংবিধান অনুযায়ী ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়া বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৬১ সালের ১৮ মে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রয়াত এএফএম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের একজন বরেণ্য বিচারক ছিলেন। শিক্ষাজীবনে বিচারপতি জুবায়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্মান ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন।

আইন পেশায় তাঁর বর্ণাঢ্য যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৫ সালে জেলা আদালত এবং ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে। বিচারিক জীবনের দীর্ঘ পরিক্রমায় ২০০৩ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং এর দুই বছর পর স্থায়ী বিচারকের মর্যাদা পান। কর্মদক্ষতার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাঁকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পরদিন ১৩ আগস্ট তিনি শপথ গ্রহণ করেন। দেশের বিচার বিভাগের শীর্ষ পদে তাঁর এই নিয়োগ বিচার প্রশাসনে নতুন গতির সঞ্চার করবে বলে আইনজ্ঞরা প্রত্যাশা করছেন।


দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শীর্ষ পদে স্থলাভিষিক্ত হবেন। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যেই তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।

বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী শনিবার ৬৭ বছর পূর্ণ করবেন, যা প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালনের শেষ দিন। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বার্ষিক ছুটি চলায় গত বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর জীবনের শেষ কর্মদিবস। ওই দিন রীতি অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে তাঁকে আবেগঘন বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। গত বছরের ১১ আগস্ট তিনি বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আগামী রবিবার অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানিয়েছেন, নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং গেজেট প্রকাশের পর তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর এই নিয়োগ বিচার বিভাগে নতুন গতির সঞ্চার করবে বলে আইনজ্ঞরা মনে করছেন। তাঁর দীর্ঘ বিচারিক অভিজ্ঞতা দেশের বিচার ব্যবস্থার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।


চব্বিশের আন্দোলন দমনে ২৮৬ মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছিল সাড়ে চার লাখ : মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নির্দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে চার লাখ ছাত্র-জনতাকে আসামি করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারফিউ দিয়ে গণহত্যায় উসকানির দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানিতে এ বলেন তিনি। দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১-েএর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ শুনানি হয়। অপর সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনজীবী তৌফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমের বন্ধুখ্যাত সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এসবের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর।

প্রথমেই সালমান ও আনিসুলের ব্যক্তিগত দায় পড়ে শোনান তাজুল ইসলাম। একপর্যায়ে তাদের একটি ফোনালাপ বাজিয়ে শোনানো হয়। ফোনালাপটি ২০২৪ সালের ১৯ জুলাইয়ের। এরপরই সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আলাদা আলাদা পড়েন তিনি।

প্রথমত চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতেন সালমান ও আনিসুল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯ জুলাই ফোনে কথা বলেন তারা। তাদের কথোপকথনের একপর্যায়ে শোনা যায় ওদের শেষ করে দেওয়া। অর্থাৎ আজ রাতেই কারফিউ জারির মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের শেষ করে দিতে হবে বলে জানান সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জুলাই ব্যবসায়ীদের নিয়ে গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন সালমান এফ রহমান। ওই বৈঠকে জীবন দিয়ে হলেও হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যেই আইনমন্ত্রীর নির্দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলা করা হয়। যেখানে সাড়ে চার লাখ ছাত্র-জনতাকে আসামি করা হয়েছিল। তাদের এমন ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনায় প্রাণ দিয়েছেন বহু ছাত্র-জনতা। তবু নির্যাতন বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি তারা।

দ্বিতীয়ত সালমান-আনিসুলের জ্ঞাতানুসারে ২৩ জুলাই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অর্থাৎ তাদের প্ররোচনা-উসকানিতে মিরপুরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় বাহিনী।

তৃতীয়ত মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন এই দুই প্রভাবশালী। তাদের উসকানি ও সহায়তায় ২৮ জুলাই মিরপুর-১০-এ আক্তারুজ্জামানকে জীবন দিতে হয়। আহত হন আরও অনেকে। চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়, কারফিউ জারির মাধ্যমে মারণাস্ত্র ব্যবহারে উসকানি-প্ররোচনায় ৪ আগস্ট মিরপুর-১-এ আকাশ, সেতু, আলভীসহ ১২ জনকে হত্যা করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

পাঁচ নম্বরে বলা হয়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঠেকাতে পরিকল্পনা করেন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। তাদের নির্দেশে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের হামলায় মিরপুর-২, ১০ ও ১৩ নম্বরে আল-আমিন, আশরাফুল, সাব্বির, রিতাসহ ১৬ জন হত্যার শিকার হন।

ব্যাপকমাত্রা ও পদ্ধতিগত অপরাধ করেছেন সালমান ও আনিসুল। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই গঠনের জন্য আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে আসামিপক্ষে শুনানির জন্য সময় চান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তার আবেদন মঞ্জুর করে সালমান-আনিসুলের পক্ষে শুনানির জন্য আগামী ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।


৫ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পাওয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছে যে, গত ১৭ ডিসেম্বর এই আপিলটি দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে সাবেক এই আইজিপি রাজসাক্ষী বা 'অ্যাপ্রুভার' হিসেবে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। একই মামলায় মামুন নিজেকে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন এবং অপরাধে সংশ্লিষ্টতার মাত্রা ও রাজসাক্ষী হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া ওই রায়ে শহীদদের পরিবার ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বা প্রসিকিউশনও এই রায়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আপিল করেছে। গত ১৫ ডিসেম্বর প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে অন্য অভিযোগে যে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে সর্বোচ্চ সাজা বা মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তারা আটটি যুক্তিতে আপিল করেছেন। উল্লেখ্য, এই স্পর্শকাতর মামলায় শহীদ আবু সাঈদের পরিবার ও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। দেশের বিচারিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মামলাটির অধিকাংশ শুনানি প্রথমবারের মতো সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল।


হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালকে পালাতে সাহায্যকারী দুজন ফের রিমান্ডে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী দুই ব্যক্তিকে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তাদের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। দুই ব্যক্তি হলেন সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ পুনরায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে ১৮ ডিসেম্বর দুজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে দুজনকে আটক করেছিল ডিবি পুলিশ।

১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মারা যান হাদি।

১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।


আট বিভাগে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠন

প্রজ্ঞাপন জারি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ৮ বিভাগে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ শাখা।

সম্প্রতি সিনিয়র সহকারী সচিব আশেকুর রহমানের সই করা এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ধারা ১৩-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উল্লিখিত বিভাগগুলোর জন্য গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করল। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

গুম প্রতিরোধে গঠিত ট্রাইব্যুনালগুলো হলো- ১. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, ঢাকা। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ ঢাকা বিভাগ।

২. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ চট্টগ্রাম বিভাগ।

৩. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, সিলেট। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ সিলেট বিভাগ।

৪. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, ময়মনসিংহ। অধিক্ষেত্র : ময়মনসিংহ বিভাগ।

৫. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহী। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ রাজশাহী বিভাগ।

৬. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, রংপুর। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ রংপুর বিভাগ।

৭. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, খুলনা। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ খুলনা বিভাগ।

৮. গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল, বরিশাল। অধিক্ষেত্র : মেট্রোপলিটন এলাকাসহ বরিশাল বিভাগ।


পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে : আইন উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে ‘ভিত দুর্বল হয়ে পড়ায়’ পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা ‘কঠিন হয়ে পড়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক অর্জন থাকলেও টেকসই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় অগ্রসরমান অবস্থায় থাকলেও গত দেড় দশকে তাদের ভিত দুর্বল করা হয়েছে। ফলে সেগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

ঢাকার পূর্বাচলে রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) সপ্তম সমাবর্তনে অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি আইন উপদেষ্টার বক্তব্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘দেশ গঠনে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপের অগ্রযাত্রা প্রমাণ করে। যেসব দেশ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছে, তারাই এগিয়ে গেছে।’

‘কিন্তু আমাদের দেশে ব্যক্তি ও পরিবার প্রাধান্য পেয়েছে, প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে অর্জন থাকলেও তা টেকসই হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে শুধু ডিগ্রি অর্জন যথেষ্ট নয়; সক্ষমতা, শৃঙ্খলা ও বিশ্বাসযোগ্যতাও প্রয়োজন। দক্ষতাকে লক্ষ্য নয়, অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। সততাকে নীতি নয়, পরিচয় বানাতে হবে এবং দেশপ্রেমকে আবেগ নয়, আচরণে রূপ দিতে হবে।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন আইন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘আমি কখনো এত বড় জানাজা দেখিনি। মানুষের যে আহাজারি ও দোয়া প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস— আল্লাহ তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন। আমি বিশ্বাস করি, হাদি এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে আরও উত্তম এক স্থানে অবস্থান করছেন।

‘হাদির জন্য এত মানুষের শোকের কারণ হল তিনি কখনো নিজের কথা ভাবতেন না। ভাবতেন ইনসাফ প্রতিষ্ঠার কথা। তিনি সৎ জীবনযাপন করতেন, সবাইকে ভালোবাসতেন। কর্মীদের জন্য তিনি যা করে গেছেন, তা অনেক নেতার জন্যই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।

এসইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এ এম শামীম, ভাইস-প্রেসিডেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান, উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন খান, উপউপাচার্য অধ্যাপক নওজিয়া ইয়াসমীন ও বিভিন্ন অনুষদ ডিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এবারের সমাবর্তনে এসইউবির ১০টি বিভাগের মোট ৬৭২ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল, চারজন শিক্ষার্থীকে ভাইস-চ্যান্সেলর সিলভার মেডেল এবং ২০ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।


হাদি হত্যা মামলায় ফয়সালকে পালাতে সহায়তাকারীরা ফের রিমান্ডে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার পর প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে ভারতে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমের দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এই আদেশ দেন। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর তাদের প্রথম দফায় তিন দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে আজ তাদের পুনরায় আদালতে হাজির করে তদন্তের স্বার্থে আরও সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ।

তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সীমান্ত পারাপারকারী একটি শক্তিশালী চক্রের হোতা হিসেবে ‘ফিলিপ’ নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। সিবিউন ও সঞ্জয় এই ফিলিপের নির্দেশেই কাজ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। ফিলিপকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা এবং কিলিং মিশনের সদস্যদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে এই আসামিদের পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন, যদিও শুনানিকালে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফয়সালের বাবা, মা, স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা হাসি বেগম আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া রেন্টকার ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামিরা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।

গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার পথে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি শাহাদতবরণ করেন। এই ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্তে বিশেষ তৎপরতা চালাচ্ছে।


টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতন: ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুম ও অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক গুরুত্বপূর্ণ আদেশ দেবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত জানাবেন। আজকের আদেশের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে এই আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হবে কি না।

এই মামলার মোট ১৭ জন আসামির মধ্যে বর্তমানে ১০ জন সেনা কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, এবং কর্নেল মো. মশিউর রহমানসহ আরও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ছাড়াও পলাতক আসামিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার এবং র্যাবের সাবেক বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন জানান। বিপরীতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম টিএফআই সেলের অভ্যন্তরে সংঘটিত ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি আদালতকে জানান, গত ১৬ বছর ধরে এই সেলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুইভাবে নির্ধারিত হতো— কাউকে দীর্ঘ নির্যাতনের পর কারাগারে পাঠানো হতো, আবার কাউকে কয়েক বছর নিখোঁজ রাখার পর অজ্ঞাত স্থানে ফেলে আসা হতো। প্রসিকিউশন পক্ষ এই বীভৎস অপরাধের সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জোর দাবি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ অক্টোবর এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয় এবং গত ২২ অক্টোবর গ্রেফতারকৃত ১০ কর্মকর্তাকে প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি পলাতক আসামিদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছিলেন। আজকের আদেশের দিকে এখন দেশবাসীর নজর রয়েছে, যা এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিচার প্রক্রিয়ায় এক নতুন ধাপ উন্মোচন করবে।


হাদি হত্যা: ফয়সালের স্ত্রী-বান্ধবী-শ্যালক ফের রিমান্ডে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, বান্ধবী ও শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছিদ্দিক আজাদ তাদের ৪ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন। এছাড়া একই মামলায় রিমান্ড শেষে আজ (২০ ডিসেম্বর) রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বলকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর আসামিদের প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন- ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা এবং শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু।

প্রথম দফার রিমান্ড শেষে আজ (২০ ডিসেম্বর) তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করে পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে হত্যাকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য উদঘাটন, ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, হত্যায় অর্থদাতাদের খুঁজে বের করা, ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত এবং এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অপর আসামি নুরুজ্জামান নোমানীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং নুরুজ্জামান নোমানীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার আসামিরা হলেন- ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, সহযোগী মো. কবির এবং ভারতে পালাতে সহায়তাকারী সিভিয়ন ডিউ ও সঞ্জয় চিসিম।


সংবিধান পরিবর্তনকে হুমকি নয়, গণতান্ত্রিক সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে : প্রধান বিচারপতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সংবিধান পরিবর্তনকে হুমকি হিসেবে নয়, বিচার বিভাগকে তা গণতান্ত্রিক সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিদায়ী সংবর্ধনায় তিনি এ কথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে দেশের বিচারিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করেছি। গত ষোল মাসে আপনারা যে সহযোগিতা আমাকে করেছেন, তার জন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আমাদের রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তিনটি প্রধান অঙ্গের মাধ্যমে। সেগুলো হচ্ছে— আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ। তাই এই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্ট ভবন কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি নাগরিক জীবনের তিনটি ভিত্তির একটি।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, জনগণের সংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে, তারা সময়ের সাথে সাথে সংবিধানকে পরিবর্তন করতে পারে। বিচার বিভাগকে এটা হুমকি হিসেবে নয়, গণতান্ত্রিক সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগের শক্তি কোনো একক পদে নয়, বরং এটি ন্যায়, ভারসাম্য ও দূরদর্শিতার সঙ্গে সেবা দেওয়ার সম্মিলিত সংকল্পের এক প্রয়াস। আমরা সাধারণত রায়ের কৃতিত্ব বিচারকদের দিই। কিন্তু সেই রায়ের ভাষা, যুক্তি ও কাঠামো তৈরি করেন (আইনজীবী) আপনারা।’

বৃহস্পতিবারের (১৮ ডিসেম্বর) সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন। ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিশ্ব খ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে আইন শাস্ত্রের ডিগ্রি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসিতে মাস্টার্স ও পিএইচডি করেন।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতে এবং ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল মাসে তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হন। এর দুই বছর পর তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশের প্রথিতযশা আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমেদ ও ড. সুফিয়া আহমেদের ছেলে।

ইশতিয়াক আহমেদ দুবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দ রেফাত আহমেদের মা ভাষা সৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. সুফিয়া আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন।


সন্ত্রাসীদের জামিনে প্রধান বিচারপতিকে উদ্বেগ জানালেন আইন উপদেষ্টা

আপডেটেড ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক

উচ্চ আদালত থেকে সন্ত্রাসীদের জামিন হওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজকে (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের শেষ কর্মদিবস ছিল। আমি উনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছিলাম। একটা অত্যন্ত জাতির একটা অত্যন্ত সন্ধিক্ষণে উনি প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উনি আমাদের যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান আছে, সেটার যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণ করার জন্য বিচার বিভাগীয় যে সংস্কারগুলো ছিল সেই সংস্কারগুলার ক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেই আইনগুলোই করেছি সবকিছুর পেছনে উনার সমর্থন ছিল। উনি আমাদের বিভিন্ন সময় যে বিভিন্ন কনসার্ন ছিল, তা ব্যক্ত করেছি। একটা বিষয় আপনাদের বলে নেই- এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। যেমন ধরেন- হাইকোর্টের কোন কোন বেঞ্চ অস্বাভাবিক জামিন দিয়ে দিচ্ছে। এটা নিয়ে আমি আমার কনসার্নের কথা মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে এর আগে দেখা করে জানিয়েছিলাম। আজকেও (বৃহস্পতিবার) জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন ‘আমি আপনাদের প্রকাশ্যে বলে গেলাম এর আগে যতবার দেখা হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, উনি কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। যে বেঞ্চগুলো থেকে ৪ ঘণ্টায় ৮০০ জামিন দেওয়া হয়েছিল। তিনি তাদের ডেকেও পাঠিয়েছিলেন। উনি উনার মতো ব্যবস্থা নিয়েছেন’- বললেন আইন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘এই জামিনের প্রকোপ কিছুটা কমেছে, কিন্তু তা এখন অব্যাহত আছে। যে অস্বাভাবিক জামিন- যেখানে আপনার একজন ব্যক্তি, একজন ভয়ংকর ব্যক্তি যিনি জামিন পেয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যারা নায়ক আছে। তাদের উপর হামলা করতে পারেন। এই ধরনের জামিন যখন হয় তখন আমরা প্রচণ্ড সংকিত আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের হাইকোর্টের উপর কোনোরকম কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ থাকার কথাও না।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। উনার কাছে আগেও এ ব্যাপার উৎকণ্ঠা জানিয়েছিলাম। আজকে (বৃহস্পতিবার) আবারও জানিয়েছি এবং আমি আশা করি ভবিষ্যতে নতুন যে প্রধান বিচারপতি আসবে উনার সঙ্গে আমার প্রথম যখন মিটিং হবে সেখানে আমি উনাকে বলব যে আজকে (বৃহস্পতিবার) যে ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট নেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোনো নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি আজকে সরি- আমি এভাবে বলছি এটা এভাবে বলা ছাড়া উপায় নাই। কারণ পরিস্থিতি এমন একটা দিকে গিয়েছে যে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য আমাদের যেকোনো এক্সটেন্টে যাকে যা বলার এটা আবার বলতে হবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি আমাদের যে নতুন বিচার প্রধান বিচারপতি থাকবেন ওনার সঙ্গে প্রথম মিটিংয়ে আমি এই ব্যাপারে বলব যে সমস্ত ক্ষেত্রে আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্য অধিকার সেটা জামিন দেবে। বিচারকরা অবশ্যই দেবে। কিন্তু যেই অপরাধী বা যেই ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে আপনাকে, আমাকে খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সে জামিন পেতে পারে না। আমরা এই ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’


banner close