বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

২২ বছরেও শেষ হয়নি মডেল তিন্নি হত্যার বিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ২৩:২৭

সৈয়দা তানিয়া মাহবুব। সবার কাছে পরিচিত ছিলেন ডাকনাম তিন্নি নামে। ৯০-এর দশকের নামকরা মডেল ছিলেন তিন্নি। ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ২২ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো সম্পন্ন হয়নি তিন্নি হত্যার বিচার। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গুমরে কেঁদে বেড়ান তিন্নির বাবা।

তিন্নি তার প্রথম টিভি বিজ্ঞাপন হেনোলাক্স ক্রিম দিয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্টারশিপ কনডেন্সড মিল্ক, লিজান মেহেদী, গন্ধরাজ তেল, এলিট পেইন্ট, কোয়ালিটি আইসক্রিম, বম্বে উপটান ও রিচি জুসের বিজ্ঞাপন করে জনপ্রিয়তা পান।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে আলোচিত মডেল তিন্নির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন।

২২ বছর পার হয়ে এখনো বিচার শেষ না হলেও আশা দিয়েই চলেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা বলছে, খুব শিগগিরই মামলাটির বিচারকার্য শেষ হবে এবং ভিকটিম ন্যায়বিচার পাবেন।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায় চৌধুরীর আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্কের জন্য তারিখ ধার্য রয়েছে।

নিহত মডেল তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুব করিম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটি একবার রায়ের পর্যায়ে চলে এসেছিল। কিন্তু এ মামলায় আমার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি। ওই সময় বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে আবারও সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে চলে আসে। এখন শুনেছি যুক্তিতর্কে এসেছে।

তিন্নির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার দুই মেয়ের মধ্যে একটা তো মারা গেছে, অন্যটা কাছে নেই। এই ঘটনার পর থেকে সবাই আমার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। আমি এখন খুব একা, বড়ই একা। আমার বেঁচে থেকে আর কী লাভ! আমি জানি আমার মেয়ে হত্যার বিচার হবে না। আল্লাহর কাছে বিচার ছেড়ে দিয়েছি, তিনি এর সঠিক বিচার করবেন। আসামি অনেক প্রভাবশালী। তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে রাষ্ট্রও সহায়তা করেছে। এখনো মাঝেমধ্যে দেশে আসে, আবার চলেও যায়। অনেকে দেখেই না দেখার ভান করে। সবাই মুখ খুলতে ভয় পায়, অদৃশ্য এক অপশক্তির ভয়ে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ মামলার আসামির সাজা হলেও লাভ কী? তাকে তো আর কেউ ধরবে না। সাজাও কার্যকর হবে না। মেয়ে হারানোর কষ্ট, আমার কষ্ট হয়েই থেকে যাবে। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে হয়তো এই পৃথিবীতে আসামির বিচার হবে না, তবে ঠিকই আল্লাহর কাঠগড়ায় একদিন তার বিচার হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান সজল বলেন, ঠিকমতো সাক্ষী আদালতে না আসায় মামলাটির বিচারকার্য শেষ হতে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। এ ছাড়া রায়ের পর্যায়ে এসেও নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আরও বিলম্বিত হয়। সব মিলিয়ে মামলাটি প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। আশা করি খুব শিগগিরই এই মামলার রায় ঘোষণা হবে।

তিনি আরও বলেন, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামির সর্বোচ্চ সাজাও দাবি করেন এই পাবলিক প্রসিকিউটর।

সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ভোলা নাথ দত্ত বলেন, আলোচিত মডেল তিন্নি হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখ ঠিক ছিল। কিন্তু সেদিন মামলার গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী তিন্নির বাবা ও চাচা সাক্ষ্য দিতে চাইলে আদালত রায় মুলতবি করে সাক্ষ্যগ্রহণে চলে যান। তিন্নির বাবা ও চাচাসহ অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্ক পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করি, এই মামলায় খুব শিগগিরই যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণা করবেন আদালত।

এদিকে পলাতক আসামির (অভীর) পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মডেল তিন্নির লাশ পাওয়া যায়। পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। পরে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত হয়।

এরপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ এবং এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকই ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর সাবেক ছাত্রনেতা ও সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভীকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে মামলার আসামি শুরু থেকে পলাতক রয়েছে।

২০১০ সালের ১৪ জুলাই অভীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। চার্জশিটভুক্ত ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।


১৩ শতাধিক আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চলতি নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত ১১ দিনে দেশের ২৫টি জেলার বিভিন্ন আদালতে ১২৯৯ জন আইনজীবীকে সরকারি আইন কর্মকর্তা-সরকারি কৌঁসুলি (জিপি), অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর বাইরে আরও ২০ জন আইনজীবীকে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিস্ফোরক দ্রব্য মামলায় স্পেশাল পিপি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

২৫ জেলার মধ্যে মুন্সিগঞ্জে ৩০, লক্ষীপুরে ৪১, ফেনীতে ৪৭, নওগাঁয় ৬২, নোয়াখালীতে ৭৫, মানিকগঞ্জে ৪৮, নরসিংদীতে ৬১, টাঙ্গাইলে ১৫১, চাপাই নবাবগঞ্জে ২৬, গাজীপুরে ৭১, মাগুরায় ৩১, নড়াইলে ১৪, চুয়াডাঙ্গায় ৩৩, গোপালগঞ্জে ১৮, কুষ্টিয়ায় ৫৫, হবিগঞ্জে ৩৮, বরগুনায় ৪১, বান্দরবানে ৯, রাঙ্গামাটিতে ৭, রাজশাহীতে ১২৪, চাঁদপুরে ৫২, পটুয়াখালীতে ৭৮, গাইবান্ধায় ৪৫, জামালপুরে ৬৪ ও পাবনায় ৭৮ জনকে নিজ নিজ জেলার জেলা ও দায়রা জজ ও এর অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জজ আদালতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত ৩, ১০, ও ১৩ নভেম্বর তারিখে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর উইং থেকে এ সম্পর্কিত পৃথক নিয়োগাদেশ জারি করা হয়।

উপ-সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এসব নিয়োগ আদেশে, উল্লিখিত জেলাগুলোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও এদের অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল এবং বিশেষ জজ আদালতে এর আগে নিয়োগ করা সব আইন কর্মকর্তার নিয়োগ আদেশ বাতিলক্রমে তাদেরকে নিজ নিজ পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।


খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলা বাতিল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলা বাতিল করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর বিরুদ্ধে ৬ মামলা বাতিল করেছেন আদালত।আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে ২০১৬ সালে চট্টগ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে এ মামলা হয়। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীকে আসামি করে এ মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের।

বাদীর আইনজীবী সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম জানান, ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত পেজে ইংরেজিতে একটি পোস্ট দেন। এর বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, ‌‌‘শেখ হাসিনাকে হত্যা সম্ভব নয়, কারণ শেখ হাসিনার চারদিকে ভারতের বিশেষ নিরাপত্তার চাদর রয়েছে। ভারতীয়রা সরাসরি শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিধান করেছে। কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যা ছাড়া বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য ও গণতন্ত্র ফেরানো সম্ভব নয়।’

ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর এ ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। নিশ্চয়ই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অনুমতিক্রমে তিনি এ পোস্ট দিয়েছেন। তাই এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে।

এর আগে একই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় আরেক মামলা হয়। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও আনা হয়।

গত ৩০ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও রাজধানীর দারুস সালাম, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ১১টি মামলা বাতিল করেন হাইকোর্ট। মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়।

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনাসভায় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লাখ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। বিভিন্ন বই-কিতাবে নানান রকম তথ্য আছে।’

এরপর ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান তিনি। পরে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২৪ জানুয়ারি এ অনুমোদনের চিঠি হাতে পেয়ে ২৫ জানুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী।


প্রবাসী কাজলের জমি দখলে আইনি জটিলতা, পুনরুদ্ধারে আদালতের নির্দেশ

আপডেটেড ১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১৮:১৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী আলাউদ্দিন কাজল দীর্ঘদিন ধরে তার ক্রয়কৃত জমির দখল থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। মোহাম্মদী হাউজিং লি. এর নবীনগর প্রকল্পের ১৫ নম্বর রোডের ৫৯ নং প্লটে অবস্থিত এই জমি তিনি ২০০৩ সালে সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন। বর্তমানে তিনি প্রবাসে থাকার কারণে নিয়মিত জমির দেখভাল করতে পারেন না, ফলে তার পক্ষ থেকে আম-মোক্তার হিসেবে মো. ছালেহ উদ্দিন দায়িত্ব পালন করছেন।

সম্প্রতি, তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আব্দুল হান্নান ওরফে সুমন, আলাউদ্দিন কাজলের জমিতে জবরদখল করে রুহুল আমিন গং- এর সঙ্গে মিলে আদালতে একটি ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন। তবে, আদালতের নির্দেশে সহকারী কমিশনারের তদন্তে আব্দুল হান্নানকে প্রকৃত মালিক নয় বলে প্রমাণিত হয়। পরবর্তী শুনানিতে আদালত মামলাটি খারিজ করেন এবং জমির নিরংকুশ মালিক হিসেবে আলাউদ্দিন কাজলের পক্ষে আদেশ দেন।

তারপরও, হান্নান রায়ের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করেন। তবে আদালত রায় বহাল রেখে রিভিশন খারিজ করেন। প্রবাসী আলাউদ্দিন কাজল মোহাম্মদপুর থানায় বারবার যোগাযোগ করেও জমি পুনরুদ্ধারে কোন সহযোগিতা পাননি। তিনি এখন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তার কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা জমির ন্যায়সঙ্গত অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।


ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যন্য রোগের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে ডেঙ্গুসহ মশা-মাছি বাহিত অন্যান্য রোগের সংক্রমণ রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে করা এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনে আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আশিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মো. শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং একই সঙ্গে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ৯জন বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মত্যুর তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত সপ্তাহে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ বনী ইসমাইল ও মো. মোহসিন। রিটে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়।

আদেশের পর তাদের আইনজীবী মাহিন এম রহমান বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কোলকাতায় ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ ছিল। কিন্তু তারা কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মালয়েশিয়াতেও ডেঙ্গু এখন নিয়ন্ত্রণে। তার বিপরীতে আমাদের দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ মনযোগ প্রয়োজন। যে কারণে রিট আবেদনটি করা হয়। আদালত রুলসহ নির্দেশনা দিয়েছেন।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তাদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ২২৯ জনের, যা মোট মৃত্যুর ৬৪ শতাংশ। তাছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ হাজার ৫৮৭ জন।


খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা স্থগিত

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেয়া ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজা স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে আপিলের সার সংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আজ সোমবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, এডভোকেট আমিনুল ইসলাম।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট আসিফ হোসাইন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, এই মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট ফরমায়েশী রায় দিয়েছিল। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই এই মামলাটি ব্যবহার করা হয়েছে। মামলায় ইতোপূর্বে ন্যায়বিচার পাইনি।

আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা সংক্রান্ত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার আনা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে এই আদেশ দেয়া হয়। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে আপিলের ওপর শুনানি হবে।

বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোন টাকা আত্মসাৎ হয়নি বলে সর্বোচ্চ আদালতকে জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী।

শুনানিতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেন, এই ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে, কোন টাকা ব্যয় হয়নি। দুদক আইনজীবী মামলায় এজাহার, অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের অংশ তুলে ধরেন। তিনি মামলার ডকুমেন্টস থেকে বেগম খালেদা জিয়া এ মামলার অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন উপাদান পেশ করেন।

সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে লিভ মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

হাইকোর্ট রায়টি আদালতে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

আদালতের অনুমতি নিয়ে এ মামলায় বিচারিক আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া জবানবন্দী উপস্থাপন করেন এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এটর্নি জেনারেল বলেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জবানবন্দী ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বেগম খালেদা জিয়ার এ জবানবন্দী তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব বহন করে। জবানবন্দিতে বেগম খালেদা জিয়ার তার বিরুদ্ধে বিচারের প্রেক্ষাপট, হয়রানির বিষয় তুলে ধরেন। বিচার বিভাগের উপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়ন্ত্রণের নানা দিক তুলে ধরা হয় এ জবানবন্দীতে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রাজধানীর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। গত ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। তার অংশ হিসেবে নিজের খরচে পেপারবুক (মামলা বৃত্তান্ত) তৈরির আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবী বলেন বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে তিনি আইনজীবীদের বলেছেন।


গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রামীণ টেলিকম ভবনে হামলা ও দখলের অভিযোগে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদসহ ১৯ জনকে আসামি করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেস্ট আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক পার্থ প্রতিম মামলাটি গ্রহণ করেন। রাজধানীর শাহ আলী থানাকে তদন্ত করে এফআইআর করতে বলা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের প্রধান কার্যালয়ে হামলা ও দখল করার উদ্দেশে চলতি বছরে ১২ ফেব্রুয়ারি হামলা চালানো হয়। এতে আরও বলা হয়, এ হামলার নেপথ্যে ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ, ব্যারিস্টার মাসুদ আকতারসহ অনেকে। তাদের বিরুদ্ধে দখল, ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।


আমুর আইনজীবীকে মারধর করা হয়নি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর রিমান্ড শুনানিতে তার ‘কথিত’ আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনাকে সাজানো নাটক বলেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। এ ঘটনার পরদিন গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।

ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমির হোসেন আমুর আইনজীবী দাবি করা ওই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আইনজীবী মারধর করেনি। প্রকৃতপক্ষে আমির হোসেন আমুর পক্ষে আদালতে একাধিক ওকালতনামা জমা দেওয়া নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এরপর একটি পক্ষ তাকে আদালত থেকে বের করে দেয়।’

তিনি বলেন, কথিত ওই আইনজীবী প্রকৃতপক্ষে আমুর আইনজীবী নন। এ তথ্য জানিয়েছেন আমুর আইনজীবীরাই। দেশবাসীকে ভুল বোঝাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সে এখানে এসেছে। পরিকল্পিতভাবে এমন সাজানো ঘটনা সৃষ্টি করা হয়েছে। মূলত জনগণ ও সারা বিশ্বের মানুষকে সে বোঝাতে চেয়েছে, আদালতে কোনো আইন নাই। ইদানীং আসামিপক্ষের আইনজীবী না হলেও কেউ কেউ কোর্টে এসে হাউকাউ করে, পরিবেশ নষ্ট করে। তিনি আরও যুক্ত করে বলেন, আসামি নিজেই নির্ধারণ করবেন তার মামলায় কে লড়বেন। এটা হলে দেশবাসী অনেক বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত থাকবেন। এর আগে গত বুধবার আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম শাহিন রেজার আদালতে রিমান্ড শুনানির জন্য তোলা হয় আমির হোসেন আমুকে। রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। শুনানি শুরু করলে পাবলিক প্রসিকিউটরের বক্তব্যটি রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেন নিজেকে আমুর পক্ষের আইনজীবী দাবি করা স্বপন রায় চৌধুরী। তখন উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত একদল আইনজীবী তাকে মারধর শুরু করেন। মারধরের সময় তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান। একপর্যায়ে তাকে লাথি মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাকে তুলে আদালত থেকে নিরাপদে বের করে দেন। পরে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।


২৭তম বিসিএসে বাদ পড়া ১২শ জনের আপিল শুনবেন সুপ্রিম কোর্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্ত উত্তীর্ণের পর নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা প্রায় ১২শ পরীক্ষার্থীকে ফের দ্বিতীয় বার মৌখিক পরীক্ষা-সংক্রান্ত রায়ের রিভিউতে ‘লিভ মঞ্জুর’ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে আপিল শুনানির জন্য আগামী ৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদালতে পরীক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।

ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ‘২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রায় ১২শ জন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর যখন তারা নিয়োগের অপেক্ষায় ছিল তখন এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে দেয়। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত দেয়। প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট মামলা হয়। হাইকোর্ট ওই সিদ্ধান্ত বিষয়ে রায় দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করলে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা সঠিক বলে সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগ বিষয়টি নিয়ে লিভ মঞ্জুর না করে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সিপি নিষ্পত্তি (জাজমেন্ট সেটাসাইড) করে দিয়েছিল। তাতে আমরা পেয়ার ট্রায়াল থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যার ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।’

ব্যারিস্টার দোলন বলেন, ‘এ রায় আমরা রিভিউ চেয়ে আবেদন ফাইল করি। আজ (বৃহস্পতিবার) শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছে। আমরা তিনটি সাংবিধানিক পয়েন্ট রেইজ করে গ্রাউন্ডস তুলে ধরে রিভিউ চেয়েছি। সে লিভ মঞ্জুর করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।’

তিনি বলেন, বিসিএস পরীক্ষা-সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীন এখতিয়ার সাংবিধানিকভাবে সরকারি কর্ম কমিশন তথা পিএসসির। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ছিল না। আগামী ৪ ডিসেম্বর বিষয়টি আপিল আকারে শুনবেন সর্বোচ্চ আদালত। এ সিনিয়র অ্যাডভোকেট বলেন, ‘দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির আশায় থাকা এ সকল বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তির অবসান ঘটবে বলে আমরা আশা করছি।’

২৭তন বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সিদ্ধান্তে বাতিল করে দেয় সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির আশায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিয়োগ বঞ্চিত ২৭ তম বিসিএস-এর প্রায় ১২'শ পরীক্ষার্থী।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে এবং দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীক্ষার্থীরা। ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তার আগে ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করে সরকারপক্ষ। ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ সেই ‘লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি’ করেন আপিল বিভাগ। এ সংক্রান্ত রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করা হয়। এর বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি দায়ের করা হয়। গতকাল সেই রিভিউ মঞ্জুর করে আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।


সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নীতিগত সিদ্ধান্ত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি যাচাই (ভেটিং) শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে এই আইন ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য আইনটি বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।

বিতর্কিত এ আইন বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল। সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, এ সপ্তাহে এই আইন বাতিল হচ্ছে। এরআগে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই যাবে সরকার। এটা বাতিল হবে। পরবর্তী সময়ে যখন নতুন আইন হবে, এটার বেসিক অ্যাপ্রোচ থাকবে সাইবার সুরক্ষা দেওয়া, বিশেষ করে নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়া।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এ আইন নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলাগুলো (মুক্তমত প্রকাশের কারণে মামলা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর অধীন গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। বর্তমানে স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মোট ১ হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন। ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।


রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সৈয়দ মুনতাসির রহমান হালিম হত্যার অভিযোগে করা মামলায় রিমান্ড শেষে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মোজাহিদুল ইসলাম। আবেদন বলা হয়, গত ২ নভেম্বর আসামিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামির কাছে থেকে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা মামলা তদন্ত কাজে সহায়ক হবে। আসামির দেওয়া তথ্যগুলি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

গত ৪ নভেম্বর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আসামির চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র প্রদান করলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ২ নভেম্বর আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সময়ে শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী মুনতাসির রহমান নিহত হয়। ওই ঘটনায় সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ ১৫৭ জনের নামে হত্যা মামলাটি করা হয়।


আমির হোসেন আমুর ৬ দিনের রিমান্ড, আদালতে আইনজীবীকে মারধর

আমির হোসেন আমু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে শুনানির একপর্যায়ে আমুর আইনজীবীকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেন একদল আইনজীবী।

এরপর আদালত আমির হোসেন আমুর বক্তব্য জানতে চান। তখন আমু বলেন, আমি ঢাকা বারের সদস্য, হাইকোর্ট বারের সদস্য। এখানকার পরিবেশ দেখে দুঃখিত। এই পরিবেশে কিছু বলা উচিত না। মামলা চলবে, ভবিষ্যতে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করব। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনেক কথা বলেছেন। আমি একজন রাজনিতিবিদ। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গেলে দুই ঘণ্টা লেগে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা একে অপরের ভাই ভাই, মিলেমিশে থাকা উচিত। আমরা একসাথে থাকব। কেন দ্বন্দ্বে জড়াব? আশা করছি, এ পরিবেশ থাকবে না।

তখন বিএনপির আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করেন। তারা বলেন, তিনি ভয় দেখাচ্ছেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাদের শান্ত করেন।

পরে আমু বলেন, আমরা যার যার পক্ষ অবলম্বন করব। নিজেরা নিজেরা কেন দ্বন্দ্বে জড়াব।

আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, শুনানিতে তিনি কথা বলতে শুরু করার একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেন একদল আইনজীবী।

এর আগে গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানার নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রব নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়।


কুইক রেন্টালে দায়মুক্তির বিধানের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টের রায় ১৪ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ এর বিধান চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করে আজ বৃহস্পতিবার আদেশ দেয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক।

আইনটির ৬(২) ও ৯ ধারা বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ও আইনজীবী তাইয়্যেবুল ইসলাম সৌরভ। আইনটি সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ এর লঙ্ঘন বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।

আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আইনটির অধীনে কর্ম নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। আদালতের এখতিয়ার রদ করতে পারে এমন কোনো আইন হতে পারে না। এটা চ্যালেঞ্জ করা হয়। আদালত রুল দিয়েছিলেন।

রুলে আইনের ৬(২) এবং ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেয় উচ্চ আদালত।

আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আজ ওই রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ‘আদালত, ইত্যাদির এখতিয়ার রহিতকরণ’ সংক্রান্ত ৯ ধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

৬ (২) ধারার বলা হয়েছে, উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যেকোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫ এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিত সংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ও দরকষাকষির মাধ্যমে ওই কাজের জন্য মনোনীত করে ধারা ৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।


১০ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার আপিল শুনানি শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে হাইকোর্টে।

বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামির পক্ষে লড়ছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

আইনজীবী এস এম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পেপারবুক পড়া শুরু হইছে। আমরা দুটি মামলার আপিল একসঙ্গে শুনানি করতে চাই। একই ঘটনার জন্য দুবার বিচার করে আসামিদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। দুটি মামলার চার্জ একসঙ্গে হতে পারত। অস্ত্র মামলার পেপারবুক এখনো তৈরি হয়নি। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’

১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি দুই মামলায় রায় দেওয়া হয়। রায়ে চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের বিশেষ আদালত। এ ছাড়া অস্ত্র আইনের পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় একই আসামিদের।

পরে মামলার ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয় হাইকোর্টে। আর আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করেন। এখন পৃথক মামলার আপিল একসঙ্গে নিষ্পত্তি হবে।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা বা সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান আটক হয়। আটকের দুই দিন পর কর্ণফুলী থানায় দুটি মামলা করা হয়। ওই বছরই ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত অভিযোগ গঠন করেন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ২০১১ সালের ২৬ জুন নতুন করে বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।


banner close