বাংলাদেশের রায়ের কপি ভারত না পেলে এগোবে না পিকের মামলা ভারতে বন্দি প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারদের মামলার শুনানি ফের পেছালো। পিকের আইনজীবী মিলন মুখার্জি অনুপস্থিত থাকার কারণে হালদারদের পরবর্তী শুনানি ১৫ মার্চ ধার্য করেছে, সিবিআই -১ কক্ষের বিচারক প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়।
বুধবার পিকে সহ ৬ অভিযুক্তদের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে নির্দিষ্ট সময় তোলা হয়। বিচারক ও ইডির আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও মিলন মুখার্জী আদালত কক্ষে উপস্থিত হতে পারেননি। পরে মিলনের সহকারী আইনজীবী বিশ্বজিত মান্না বিচারকে পরবর্তীত দিনের অনুরোধ করে। সবশুনে বিচারক ১৫ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
যদিও ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী এদিন বলেন, অভিযুক্তর আইনজীবীর অনুপস্থিতের চেয়ে বড় বিষয় হলো, এ মামলার গতিপ্রকৃতি নির্ভর করছে বাংলাদেশের রায়ের কপির উপরে। যতদিন তা ভারতের আদলতে না আসছে ততদিন মমলা বিলম্ব হতেই থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মামলার অর্ডার হয়েছে। কিন্তু, রায়ের আনুষ্ঠানিক (ডিক্রি কপি) সিদ্ধান্ত হয়নি। যে কারণে, কলকাতায় বিলম্ব হচ্ছে পিকের আনুষ্ঠানি বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে। মূলত, ডিক্রি কপির উপরই আসামিকে সাজা দেওয়া হয়ে থাকে। ওই নথি না থাকলে আসামিকে সাজা দেওয়া যায় না। সেই ডিক্রি কপি বাংলাদেশে হয়নি। এবং সে কারণে কপির প্রতিলিপি ভারতে এসে পৌছায়নি। যা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
কিন্তু পিকে গ্রেপ্তার হয়েছে ভারতীয় তদন্তকারীর হাতে। হালদাররা বন্দি আছেন ভারতে জেল হেফাজতে। তাহলে বাংলাদেশের রায়ের ওপর কেন নির্ভর করতে হচ্ছ? উত্তরে অরিজিত বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে 'প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২’ অর্থাৎ অবৈধভাবে অর্থপাচার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে আওতায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এবং আদালতে প্রমাণিত সে অর্থ বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে আনা হয়েছে। পাশাপাশি পিকে বাংলাদেশি নাগরিক, তাও আদালতে প্রমাণিত এবং তাদের বাংলাদেশে সাজার অর্ডার হয়েছে। ফলে সেই কপি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কোন গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সাজা ঘোষণা করছে। এটা আমাদের কাছে জরুরি।
এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছে, হালদারদের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না। তিনি বলেন, এ কপি উপর আমাদেরও অনেকখানি নির্ভর করছে।
ফলে ভারতে মামলার গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নির্ভর করছে বাংলাদেশের রায়ের কপির উপরে। যদিও ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, হালদারদের ভারতে যে মামলা দেওয়া হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ সাত বছরের সাজা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পিকেদের দু'বছর জেল হেফাজতে কেটেই গেছে। বাকি থাকলো পাঁচ বছর। সেই মেয়াদ শেষ হলেই বাংলাদেশে তাদের পুশব্যাক করা হতে পারে। কারণ এটা প্রমাণিত যে তারা বাংলাদেশি।
২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বৈদিক ভিলেজ থেকে হালদারদের গ্রেফতার করে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরপর থেকে সেখানেই বন্দি রয়েছেন হালদাররা। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্থপাচার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে আওতায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। বর্তমানে পিকে হালদার ও ৫ সহযোগীকে রাখা হয়েছে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে এবং নারী সহযোগী আমিনা সুলতানা আছেন কলকাতার আলিপুর সংশোধনাগারে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক রায়ে জানিয়েছে, ষোড়শ সংশোধনী মামলার আসল লক্ষ্য ছিল বিচারপতিদের স্বাধীনতাকে সংকটে ফেলা। রায়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’কে পুনরায় ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যাতে তারা অক্ষমতা বা আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ করতে পারে।
চূড়ান্ত রায়ে বলা হয়, ‘ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়বস্তু কী ছিল? এটি ছিল কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী শাসকের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট প্রয়াস, যেখানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে কেড়ে নিয়ে সংসদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকেই হুমকির মুখে ফেলা হয়েছিল।’
গত বছরের ২০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ রায়টি ঘোষণা করেন। ৫০ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায়টি আজ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘পর্যবেক্ষণসহ মামলাটি নিষ্পত্তি করা হলো।’
রায়ে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী মন্তব্য করেন, ‘যদি কোনো বিচারক তার বিচারিক দায়িত্ব পালনের সময় সরকারের রোষানল কিংবা অসন্তোষের মুখোমুখি হন, তাহলে সংসদের সদস্যদের কলমের এক খোঁচায় তাকে অপসারণ করা সম্ভব, এটা কি কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মেনে নেওয়া যায়? আমার গভীর বিবেচনায় এবং সহকর্মীদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে এর উত্তর, অত্যন্ত স্পষ্টভাবে, ‘না’।’
রায়ে আরও বলা হয়, বিচারপতিদের উচিত বিচারিক কাজে রাজনৈতিক বিতর্কে না জড়ানো। কারণ এমন মন্তব্য বিচারকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতে পারে এবং তিনি তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে পারেন।
আদালত আরো বলেছেন, বিচারকদের উচিত রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ না করা, কারণ এতে বিচারব্যবস্থার সুনাম ও স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রায়টিকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করার নতুন ভিত্তি পেয়েছে। এই রায় ইতিহাসে স্থান করে নেবে।’
তিনি আরও জানান, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ঐতিহাসিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করবে। আগে ৯৪টি কারণে রিভিউ চাওয়া হয়েছিল। আমরা সবগুলো ভালো করে দেখেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রিভিউ করার মতো কোনো কারণ পাওয়া যায়নি। আদালতকে জানিয়েছি, আমরা আর এসব কারণ দেখাবো না।
এই মামলায় রিটকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। পরে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সাত সদস্যের আপিল বিভাগ ওই রায় বহাল রাখে। এর পর রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন দায়ের করে, যার নিষ্পত্তি হয় ২০২৪ সালের অক্টোবরে।
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে এ রায় দেওয়া হয়।
এর আগে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর গত ২৯ মে শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ (২ জুন) রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। পরে শুনানি শেষে আজ সকালে রায় দেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন, তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দীপ্তি। আসামিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান শুনানি করেন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তৎকালীন বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি চালিয়েছিলেন মেজর সিনহার ওপর। পরে এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হন ওসি প্রদীপ।
এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। এরপর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযোগপত্রে ঘটনাটিকে ‘পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এরপর বাধ্যতামূলক ডেথ রেফারেন্স পর্যালোচনার জন্য মামলাটি হাইকোর্টে পৌঁছে এবং দণ্ডপ্রাপ্তরা তাদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আজ নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে হাইকোর্ট।
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ জুন তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির ও মামলার পরবর্তী আদেশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এদিন সকালে জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। চীফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই অভিযোগ দাখিল করেন। পরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানিসহ আদালতের বিচারকাজ বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর ১৪ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছর ১৪ অক্টোবর।
ছয় মাস ২৮ দিনে তদন্ত শেষ করে গত ১২ মে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও সরাসরি নির্দেশ দেওয়াসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রাথমিকভাবে তার (শেখ হাসিনার) বিরুদ্ধে মূলত ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সব হত্যাকাণ্ডের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি শেখ হাসিনার। তিনি এ গণহত্যা ও হত্যার উসকানিদাতা, প্ররোচনাদাতা ও সরাসরি নির্দেশদাতা। এ বিষয়ে তার বহু কল রেকর্ড, অডিও-ভিডিও পাওয়া গেছে।
৫টি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগটি হচ্ছে, তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানি দিয়েছেন ও প্ররোচনা দিয়েছিলেন ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। যেখানে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতিপুতি এসব বলেছিলেন। এসব বলার মাধ্যমে তাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ অর্থাৎ সহযোগী বাহিনী হিসেবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের) হত্যা করে আহত করে অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, দ্বিতীয় যে অভিযোগটি করা হয়েছে সেটা হচ্ছে, সরাসরি নির্দেশ। তদন্ত সংস্থার তদন্তে শেখ হাসিনা কিছু টেলিফোন কনভারসেশন জব্দ করেছেন। সেখানে তিনি বারবার সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি রাষ্ট্রীয় সব বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন হেলিকপ্টার, ড্রোন, এপিসিসহ মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরস্ত্র, নিরীহ আন্দোলনকারী সিভিলিয়ান (নাগরিক) যারা দেশে একটা ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেরত ছিলেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করার জন্য।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এছাড়া বাকি ৩টি অভিযোগ সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। যেখানে শেখ হাসিনার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধগুলো সংঘটিত হয়েছে। কীভাবে মানুষকে মারা হয়েছে, নৃশংসতাগুলো করা হয়েছে, সেব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘটনাকেন্দ্রিক ওই ৩টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যত লোক মারা গেছেন, যত লোক আহত হয়েছেন, প্রত্যেকটার ব্যাপারে তার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে চার্জ রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রতিবেদনে এসেছে প্রায় দেড় হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে, ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে গুলি করে আহত করা হয়েছে, নারীদের ওপর বিশেষভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছিল, লাশ একত্রিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, পোস্টমর্টেম করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, ডাক্তারদের চিকিৎসা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে শেখ হাসিনা নিজে গিয়ে বলেছিলেন, এসব ভর্তি রোগীকে যাতে চিকিৎসা দেওয়া না হয়। রোগীরা যখন যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে চেয়েছিলেন, তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাতে পচে গেলে কেটে ফেলতে হয় সেরকম নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলকারীদের ওপর দায় চাপানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় নিজেদের লোকদের দিয়ে অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়।
এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও (গণ–অভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন) আসামি করা হয়।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ দেখা যাচ্ছে সরাসরি বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) পর্দায়।
আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিচারকাজ সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে এ বিচার কার্যক্রম। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেইসবুক পেইজেও সরসারি সম্প্রচার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফেইসবুক পেইজেও লিংক শেয়ার করে এ বিচার সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
এদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ১৩৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে উপস্থাপন করেন।
এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনাসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আজ ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম বক্তব্য পেশ করেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা হলেন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের নিউক্লিয়াস। হাসিনা ছিলেন সকল মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনকারীদের প্রাণভ্রমরা।
এর আগে ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে। আজ সেই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিক -১ উপস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে গত ২০ মে ট্রাইব্যুনাল এর বিচারকক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তি স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়। এর ফলে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে বিচার কার্যক্রম সরাসরি কিংবা ধারণ করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা যাবে বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আইনজীবীরা বলছেন, সরাসরি সম্প্রচারে বিচারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। এমন উদ্যোগকে বিচার বিভাগের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলছেন তারা।
জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলন নির্মূলে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে।
এছাড়াও হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রী, আমলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্য, আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত চলছে। আসামিদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তারা কারাগারে রয়েছেন। মামলার ধার্য তারিখে তাদেরকে হাজির করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় সন্ত্রাসী ফরিদ উদ্দিন ওরফে এক্সেল বাবুসহ সাতজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- মো. রাকিব হোসেন, মো. যুবরাজ, মো. লিটন মিয়া, মো. আলম, মো. সোহেল হাওলাদার ও মো. সালাম।
তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি তাদের কারাগারে পাঠাতে গতকাল আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৭ মে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে এক্সেল বাবুসহ সাতজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, সামুরাই, নগদ দুই লক্ষাধিক টাকা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও একাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।এরপর তাদের বিরুদ্ধে আজ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে একটি মামলা করেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন।
পুলিশ জানায়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা উদ্যান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, বছিলা ফিউচার টাউন, বছিলা গার্ডেন সিটি এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে আসছিল।
রাজধানীর কুখ্যাত চাঁদাবাজ লিটনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় ছিনতাই ও অপহরণের মামলা ছিল।
বুধবার (২৮ মে) রাত ১০টার দিকে পুরানো পল্টনের নিউ বন্ধু হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মতিঝিল এলাকায় ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়, অপহরণ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল লিটন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এসব কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়।
পুরানা পল্টন এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগে ভুক্তভোগীরা একাধিকবার সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। এরপর সেনাবাহিনী ও সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো লিটনের গতিবিধি নজরদারিতে রাখে।
বুধবার রাতে নিউ বন্ধু হোটেলের পাশের একটি ভবনে থাকা লিটনের ব্যক্তিগত অফিসে অভিযান চালানো হয়। হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হোটেল কক্ষ, অফিস ও তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচটি মোবাইল ফোন, নগদ ২ লাখ টাকা ও ১ হাজার ১০০ ডলার উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।
সেনাবাহিনীর মেজর শাকিব সাংবাদিকদের জানান, লিটনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ (৬১) চারজনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। বুধবার (২৮ মে) হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের একটি মামলায় এ রিমান্ড আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ।
রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন—আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ (৫৩), এম এ এস শরিফ (২৫) ও আরাফাত ইবনে মাসুদ (৪৩)। আজ বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে এ রিমান্ড বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদেরকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়।
তারা সন্ত্রাসী বাহিনী ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপ পরিচালনা করতো। সুব্রত বাইন তৎকালীন সময়ে খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করে এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা আছে। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা হতে একইদিন বিকাল অনুমান ৩ টার দিকে আসামি এম এ এস শরীফ ও আসামী মো. আরাফাত ইবনে নাসিরকে আটক করা হয়।
গ্রেফতার আসামিরা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক তদন্তে মামলার আসামিদের এ মামলার সাথে জড়িত থাকার সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তাদেরকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আরও অনেক সহযোগীকে গ্রেফতার এবং আরও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক হতে পারে। তাই মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দশ দিনের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের কয়েকটি সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জকারী রিট পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী’র সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রিট খারিজের এ আদেশ দেন।
আদালতে এই রিটের পক্ষে রিটকারি আইনজীবী রওশন আলী নিজেই শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন-২০২৫ এর কয়েকটি সুপারিশ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রওশন আলী হাইকোর্টে রিটটি করেন।
রিটে দাবি হয়, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশ ইসলামি শরিয়ত, সংবিধান এবং দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মূল্যবোধের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গণহত্যার বিচার আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
উপদেষ্টা আজ তার ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, ‘বিচার শুরু হচ্ছে শিগগির। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করার দাবি আছে সমাজে। এটি দৃশ্যমান করা হয়েছিল আট মাস আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়েই।
এরপর তদন্তকারী অফিস ও প্রসিকিউশন অফিস পুনর্গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী দল কয়েকটি মামলার তদন্ত শেষ করেছে। প্রসিকিউশন টিম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি মামলার ফরমাল চার্জ গঠন করেছে। গতকাল রোববার এটি ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার পর তা আমলে নেয়া হয়েছে।’
উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জ আমলে নেওয়ার মাধ্যমে একটি বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। সেটি গতকাল থেকে শুরু হয়ে গেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান আসামি হিসেবে শেখ হাসিনার মামলার বিচারের শুনানি পর্ব শুরু হচ্ছে অচিরেই। ইনশাল্লাহ্, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলেই এই বিচারের রায় পেয়ে যাবো আমরা। গণহত্যার বিচার, আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার।’
সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, তার স্ত্রী তাহমিদা বেগম ও পুত্র শেখ লাবিব হান্নানের নামে থাকা ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দুদক-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
দুদক-এর আবেদন সূত্রে জানা যায়, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধন, ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজের ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
আবেদনে আরো বলা হয়, এ সব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে আরো জানা যায়, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা গোপন করার চেষ্টা করছেন। যদি এ সব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে সেগুলো পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে শেখ আব্দুল হান্নান ও তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হিসেবে মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে মমতাজ বেগমকে আদালতের আনা হয়।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, ২০১৩ সালে সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে গত ২৫ অক্টোবর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মো. মজনু মোল্লা বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এ ছাড়া, তার নির্বাচনি এলাকা হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা রয়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মামলাটি করেছিলেন বলে জানান তিনি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মুহম্মদ আব্দুন নূর ও ৩ এর বিচারক আইভি আক্তারের আদালতে মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি হবে।
সিংগাইর থানার হত্যা মামলায় মমতাজ বেগমের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি। আর হরিরামপুর থানার মারামারির মামলায় তাকে রিমান্ডে চাওয়া হয়েছে ৫ দিন।
এর আগে, ঢাকায় বেশ কিছু থানায় হওয়া হত্যা মামলায় মমতাজ চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ড শেষে তাকে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।
স্ত্রী-কন্যাসহ আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নামে থাকা মোট নয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। এসব হিসাবে মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৯৬ টাকা রয়েছে।
বুধবার (২১ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এদিন দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক আদালতে হিসাব অবরোধের আবেদন করেন।
অবরুদ্ধ হওয়া হিসাবে মো. আব্দুর রাজ্জাকের নিজ নামে থাকা চারটি ব্যাংকে হিসাবে, ৪২ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা, তার স্ত্রী শিরিন আকতার বানুর চারটি ব্যাংক হিসাবে ৬৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯৫ টাকা ও তার মেয়ে ফারজানা আক্তার তন্দ্রার হিসাবে ২৮ লাখ টাকা রয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডার ও মনোনয়ন বাণিজ্য, নিয়োগে দুর্নীতি, সরকারি জমি দখল, এসিআই ও আদম ব্যবসায়ী নূর আলীর মাধ্যমে শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার এবং পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
এতে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানকালে রাজ্জাক ও তার স্ত্রী-মেয়ের নামে অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এই সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে তা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তদন্তের স্বার্থে এসব হিসাব অবরুদ্ধ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।
নারী নির্যাতনের একটি মামলায় সঙ্গীতশিল্পী মামলায় মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি কমিশনার তালিবুর রহমান এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ডেমরার স্টাফ রোড এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় নারী নির্যাতনে একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডেমরা পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুর রহমান ইউএনবিকে জানান, ‘ইসরাত জাহান প্রিয়া নামে ইডেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর সাথে রুবেলের টেলিফোনে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে প্রায় সাত মাস আগে রুবেল প্রিয়াকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে কীর্তন করে টেমরা থানার অধীন আমতলা নামক স্থানে একটি ফ্লাট বাসায় রাখে। বিগত সাত মাসে প্রিয়ার সাথে সম্পর্ক করে এবং পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি।’
সম্প্রতি প্রিয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেটা দেখে প্রিয়ার বাবা-মা ডেমরা থানা যোগাযোগ করেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার রাত দশটায় আমতলার বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রিয়াকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু রুবেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রিয়া ডেমরা থানা এসে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডেমরার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। রুবেল তখন একটি গাড়ি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
বাংলাদেশের গায়ক হলেও নোবেল খ্যাতি অর্জন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জি বাংলা চ্যানেলের গানবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ থেকে। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় জিততে না পারলেও তৃতীয় হন নোবেল, আর নিজের সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে খুব সহজেই দুই দেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
এরপর থেকে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলেও এই আলোচিত গায়কের সুখ্যাতি নিমেষেই নষ্ট হয়ে যায় তার ব্যক্তিগত জীবন সবার সামনে আসার পর। স্ত্রীকে মারধর, মাদক সেবন, মদের ঘোরে ভাঙচুর, টাকা নিয়ে শো করতে না যাওয়া—এমন নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ হন নোবেল।
২০১৯ সালে মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। পরবর্তীতে খ্যাতির মধ্যে থাকা অবস্থায় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তিক্ততা শুরু হয় স্ত্রীর সঙ্গে, যার শেষ পরিণতি হয় বিচ্ছেদ।
২০২৩ এর নভেম্বরে অন্যের স্ত্রী ফারজানা আরশির সাথে অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করে নোবেল সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। পরবর্তীতে ফারজানা আরশি পুলিশের কাছে গায়কের নামে অভিযোগ দায়ের করে জানান যে নোবেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়নি, জোর করে গোপালগঞ্জের বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এরপরে মাদক খাইয়ে ওই অন্তরঙ্গ ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো।
ব্যক্তিগত জীবনের বাইরেও একই বছর শরীয়তপুরের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে অর্থ নিয়েও না যাওয়ায় ঢাকার মতিঝিল থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালে বেশ কিছু মাস রিহ্যাবে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর নোবেল সম্প্রতি আবারও গানের জগতে ফিরে এসেছিলেন এবং বেশ কিছু নতুন গানের কাজ করছিলেন।