শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

হুন্ডির মাধ্যমে পাচার ৪০০ কোটি টাকা

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৪ ২২:৩৪

‘জেট রোবোটিক’ একটি অ্যাপস। এ অ্যাপের অ্যাডমিন কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাইতে আছেন। মধ্যপ্রাচ্যে বসে নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়িত্ব নিতেন তিনি। গত তিন থেকে সাড়ে ৩ মাসে তিনি ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছেন জেট রোবোটিক অ্যাপের মাধ্যমে।

তবে তিনি ঠিকই চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে টাকা পাঠিয়েছেন। এ জন্য ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউস তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসকে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৮টি বিকাশ এজেন্ট সিমে আগে থেকেই সমপরিমাণ বা বেশি অনলাইনে টাকা সংগ্রহ করে রাখা হয়। এরপর সংগ্রহ করা টাকা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপের ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্মীয়দের নম্বরে অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ চক্রটি।

জেট রোবোটিক অ্যাপসের ব্যবহারকারী ও হোতা মামুনের দুই সহযোগীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সার্বক্ষণিক অনলাইন মনিটরিংয়ের সময় মাসখানেক আগে এ অ্যাপস ও বিকাশ এজেন্ট সিমে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য জানতে পারে সিআইডি। এরপর বুধবার দিনগত রাতে চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে এ ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। তারা হলেন- তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসের মালিক নাসিম আহমেদ (৬২), এজেন্ট সিমের টেরিটোরি সেলস ম্যানেজার ফজলে রাব্বি সুমন (৩২) ও মো. কামরুজ্জামান (৩৩) এবং জেট রোবোটিক অ্যাপসের বাংলাদেশের প্রতিনিধি জহির উদ্দিন (৩৭) এবং খায়রুল ইসলাম ওরফে পিয়াস (৩৪)।

ওই সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৬টি মোবাইল, ১৮টি সিমকার্ড, একটি ল্যাপটপ, ৬টি মডেম ও ২৮ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা।
সিআইডি বলছে, এ ধরনের ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রমের কারণে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কার্যক্রম থেকে বিকাশ কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না। কারণ যেসব সিম ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো বিকাশ এজেন্ট সিম। এ ছাড়া অস্বাভাবিক লেনদেন হলে সেটা দেখার দায় বিকাশেরই।

আজ বিকেলে মালিবাগে নিজ কার্যালয়ে সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত তিন মাসে ৪০০ কোটি টাকা বাংলাদেশে আসতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে। অভিনব কৌশলে এ অ্যাপস ব্যবহারকারী পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ডিভাইসগুলো জব্দ করেছি। চট্টগ্রামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউস তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটস। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রয়েছে ১ হাজার ১০০ বিকাশ এজেন্ট সিম। এসব এজেন্ট সিমের তাদের পারফর্ম ভালো না সেসব এজেন্টের সিমগুলো ডিএসওরা নিয়ে জেট রোবোটিক অ্যাপস ব্যবহারকারীদের সরবরাহ করে।’

এজেন্ট সিম নেওয়ার পর বিকাশ থেকে ই-মানি এজেন্ট সিমে আনা হয়। এ এজেন্ট সিমের কয়েকটি ভাড়া নেয় এ রোবোটিক অ্যাপস। হুন্ডি চক্রটির মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। দুবাই বসে মামুন যখন অ্যাপসের মাধ্যমে এজেন্ট সিমের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায়। সে তখন বিকাশের মাধ্যমে রুট পর্যায়ে চাহিদা অনুযায়ী পাঠাতে পারে। তখন আর বাংলাদেশে বিকাশের এজেন্টদের প্রয়োজন হয় না। কারণ বিকাশের এজেন্ট সিমগুলো গ্রহণ করে থাকে শুধু ই-মানি ট্রান্সজেকশনের জন্য।

সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, শুধু এ জেট রোবোটিক অ্যাপসই নয়, এরকম বেশ কিছু অ্যাপস বাংলাদেশে চলমান। আমরা বেশ কিছু এমন অ্যাপসের সন্ধান পেয়েছি। এরই মধ্যে আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় এ কার্যক্রম চলছে।


পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

৫ দিনের রিমান্ড আবেদন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম নিয়ে কারাসাজি এবং গুজব রটনাকারী চক্রের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, মো. আমির হোসাইন ওরফে নূর নূরানী (৩৭), নুরুল হক হারুন (৫২) এবং আব্দুল কাইয়ুম (৩৯)। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাঁদাবাজিসহ বাজার অস্থিতিশীল করতে নেতিবাচক ভূমিকা পালনের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (দক্ষিণ) উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শহীদুল ইসলামের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানানো হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমির হোসাইনের (ছদ্মবেশী নাম নূর নূরানী) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের বিভিন্ন সদস্যদের একত্রিত করে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করত। ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ ও টেলিগ্রামে সব মিলিয়ে ৮-১০টি গ্রুপ চালায় সে। অনলাইনে তার অনেক ফলোয়ার। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের সহ-সভাপতি তিনি। এ পরিষদের নামে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেন। আর আব্দুল কাউয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক একটি ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। হোয়াটস অ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে তিনি বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন।

পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। যা দেশের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র দীর্ঘদিন ধরে এমন বাজারকে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ খুলে বিভিন্ন মিথ্যা, ভুয়া এবং প্রতারণামূলক তথ্য সরবরাহ করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। এ বিষয়ে বিএসইসি রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। গত ২৫ এপ্রিল রমনা থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। এই মামলা নং ১৬। ওই মামলায় শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, আটককৃতরা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে তারা চাঁদা দাবি করত। আর কোম্পানি দাবিকৃত চাঁদা না দিলে অন-লাইনে নানাভাবে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করত।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে দাম বৃদ্ধি করেছে। তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চমূল্যে শেয়ার বিক্রি করে প্রতারণা করেছে। এ সব করার জন্য গোপনীয় হোয়াটস্যাপ/টেলিগ্রাম গ্রুপ ব্যবহার করত। গ্রুপ-মেম্বার হতে সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করা লাগত। আবার শেয়ারে লাভ হলে লাভের অংশও তাদের দিতে হয়। তবে লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নেয় না। যেখানে বিএসইসির আইন অনুযায়ী যেকোনো শেয়ারের মূল্য নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান সম্পন্ন অবৈধ। তা সত্ত্বেও তারা এই কাজগুলো গোপনে করত।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে নিয়মিতভাবে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো নিয়মিত মনিটরিং এবং সাইবার পেট্রোলিং পরিচালিত হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উসকানি দিয়ে কেউ যাতে স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সে বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা সংশ্লিষ্ট ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। এ ছাড়া তারা আরও বেশ কয়েক জনের নাম জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, যারা পেছন থেকে নেপথ্যের কারিগর হিসেবে কাজ করে থাকে। আশা করছি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।


সাড়ে ৫ বছর ধরে আপিল বিভাগে মামলা, হয়নি শুনানি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০৪
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনার আজ দশ বছর। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাতজনকে অপহরণ করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। পরে একে একে তাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। এই ঘটনায় নিম্ন আদালতে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াসহ ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এতে বেশ শঙ্কার মধ্যে রয়েছে নিহতের স্বজনরা।

জানা যায়, সাত খুনের মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদানের আদেশ দেন।

পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্যান্য আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন উচ্চ আদালত। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টের দেওয়া রায় সন্তোষজনক হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। তবে আপিল বিভাগেও এ রায় বহাল থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন নিহতের স্বজনরা। সেই সঙ্গে সাজার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান তারা।

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় জেলে বসে কলকাঠি নাড়ছে। তাদের প্রভাব এখনও এলাকায় রয়ে গেছে। এদিকে আপিল বিভাগে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার ফলে নিহতদের পরিবার সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নুপুর বেগম বলেন, দশ বছর ধরে বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছি। কিন্তু বিচার তো পাচ্ছি না। বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এই মামলাটি আপিল বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। আমরা চাই মামলার রায় বহাল রেখে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক এবং এই মামলার রায় কার্যকর করা হোক।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলাটি চলমান রয়েছে। প্রত্যাশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাতজন অপহৃত হন।

অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ৬ জন ও ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দরের শান্তিরচর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় আলাদা দুটি মামলা দায়ের করেন।


ঢাবির হল থেকে যেত প্রশ্নের সমাধান, ১৪ লাখে চুক্তি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০৭:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫)। আর তিন পরীক্ষার্থী হলেন- মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মণ্ডল (৩০)।

তাদের কাছ থেকে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্নের সমাধান করে দেওয়া চক্রের হোতা অসীম গাইনের কাছে পাঠাতে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে ফোনটিতে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা হয়। এ ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তর ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে ৭ জন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা হয়। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে ওই শিক্ষার্থী জানান, কীভাবে উত্তর পেয়েছে এবং তার মোবাইলে কখন উত্তরপত্র এসেছে। মাদারীপুরে গ্রেপ্তার পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যাস। ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাদারীপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ তদন্তে নামে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে। তারা দুজনেই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, গ্রেপ্তার ঢাবি শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, পরীক্ষার আগেই তারা প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এ প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসীম গাইনের মাধ্যমে। প্রশ্নপ্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সমাধান করান অসীম। এ প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসজ ৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, অসীম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। বিশেষত যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসীম গাইন। সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের ৭২ থেকে ৭৫টি প্রশ্ন মিলেছে।

অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ‘আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি তাতে এই চক্রের মূলহোতা অসীম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। সে আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। সে অল্প দিনে কয়েকশো কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছে।’

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘অসীম বর্তমানে পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাকে গ্রেপ্তার করলে কীভাবে সে প্রশ্ন পায় সেই বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারব। এ ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন তারাও স্বীকার করেছে। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তারাও স্বীকার করেছে। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে আরও কারা জড়িত সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। এর আগেও আমরা ব্যাংক ও বিমানসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত অনেককে গ্রেফতার করেছি। ব্যাংকের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল।’


শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নামে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাতে জড়িত মূলহোতাসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল সোমবার কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, কুমিল্লা ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যারের ৬টি ব্যাটালিয়ন টিম।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মূলহোতা জাকির হোসেন হাওলাদার (৪৭), অন্যতম মূলহোতা মো. বাপ্পি মোল্লা (২০), মো. উসমান গনি মোল্লা (৩৩), শামীম হোসেন (২৯), মোহাম্মদ জিহাদ (৩৪), কাজী সাদ্দাম হোসেন ওরফে আমির হামজা (২৬), মো. আহাদ গাজী (২৪) ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে জয় (২৬)।

র‌্যাব বলছে, সারা দেশে প্রতারক চক্রটির দুই হাজারের বেশি এজেন্ট বা সদস্য রয়েছে। শেয়ার বাজারের মতো দরকষাকষি করে তাদের প্রতি হাজারে ৩০-৪০ টাকা কমিশনে প্রতারণার কাজ দেওয়া হয়। এজেন্ট হতে হলে দিতে হয় অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা।

চক্রটির সঙ্গে জড়িত একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিম কার্ড বিক্রেতারাও। তারা অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম বা বিক্রি করা সিম সংগ্রহ করে প্রতারণামূলক কাজে ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলে। সাধারণ মানুষের সংগৃহীত এনআইডি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায় সংগ্রহ করে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করে আসছে এই চক্রটি। প্রতারণার টাকা মূল চক্রের সদস্যের মধ্যে বণ্টন করা হয়। কমিশন ও কাজের খরচ বাবদ এজেন্টদের দেওয়া হয় নির্ধারিত টাকা।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, গত ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার শালবাগান রাজশাহীর বিএনসিসি অফিসে অবস্থানকালে এক ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাতনামা মোবাইল নম্বর থেকে মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের শাখায় কর্মরত মিজানুর রহমান বলে পরিচয় দিয়ে তার মেয়ের এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়ায় শিক্ষা উপবৃত্তির ২২ হাজার ৫০০ টাকা এসেছে বলে জানায়। ওই টাকা বাদীর অ্যাকাউন্টে চলে যাবে মর্মে একটি ব্যাংকের এটিএম কার্ডের ১৬ ডিজিটের নম্বর দিতে বললে তিনি তার নম্বর দিলে একটি ওটিপি যাবে বলে জানায়। পরে বাদী মোবাইল মেসেজে দেখতে পান তার অ্যাকাউন্ট থেকে চার বারে এক লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে গেছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা।

ওই ঘটনায় বাদী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা জড়িতদের গ্রেপ্তারে র‌্যাব-৫, অধিযাচনপত্র প্রদান করলে জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৫-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিক্ষা উপবৃত্তি টাকা দেওয়ার নাম করে ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার কাজে জড়িত শামীম হোসেনকে রাজশাহী জেলার রাজপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানান, তিনি শুধু মাঠ পর্যায়ে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পাঠাতেন। তার দেয়া তথ্যে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন কোম্পানির সিম কার্ডসহ বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে র‌্যাব। এরপর একে একে জাকিরসহ বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের কাছ থেকে ২৩টি মোবাইল সেট, ৩১০টি সিম কার্ড, নগদ ৩ লাখ ১ হাজার ২৭০ টাকা ও নয়টি ব্যাংক লেনদেন স্লিপ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত প্রত্যেকটি সিম কার্ডে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সরকারি অফিস থেকে শিক্ষা উপবৃত্তি টাকা দেওয়ার তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে ওয়েলকাম/হ্যালো গ্রুপের কলিং সেন্টারে শেয়ার করেন ৷ এরপর জাকির হোসেনের দুই ছেলে মানিক ও হীরা ফোন দিয়ে নম্বর নেন। পরে ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে বিশ্বস্ততা অর্জন করে ওটিপি নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-৫ অধিনায়ক বলেন, ওয়েলকাম/হ্যালো গ্রুপের রয়েছে সারাদেশে দুই হাজারের বেশি এজেন্ট। এজেন্ট হতে হলে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়। পরে মোবাইলে তাদের নামে অ্যাকাউন্ট হয়। ইতোমধ্যে তদন্তে ১ হাজার ৮৬১টি মোবাইল নাম্বার শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলোতে টাকা লেনদেন ও যোগাযোগ হয়েছে।

তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা এক জায়গায় বেশি দিন থাকেন না। মূল শহর থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করেন। আর হাজারে ৩০-৪০ টাকা কমিশনে এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। এজেন্টের এন্ট্রিকৃত মোবাইল অ্যাকাউন্টে টাকা যায়। তবে ক্রেডিট কার্ড থাকে মূল চক্রের হাতে। টাকা ঢোকা মাত্র তারা তুলে নেয়।

মুনীম ফেরদৌস বলেন, অভিযানের সংবাদে পলাতক খোকন মোল্লার ছেলে বাপ্পি মোল্লাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আমরা জানতে পেরেছি খোকন মোল্লার মোবাইলে একদিনে প্রতারণার মাধ্যমে ৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এসেছে। চক্রের জাকির হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোনে দেখা গেছে, ২ লাখের বেশি টাকা আদান-প্রদান হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আহাদ গাজী একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিম বিক্রেতা। কোম্পানি থেকে টার্গেট থাকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি সিম বিক্রি করতে হবে, বিক্রি করতে না পারলে তাকে চাপে থাকতে হয়। এজন্য বিভিন্ন লোক এলেই তাদের কাছে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় সিম বিক্রি করেন। যদিও এই সিম ফ্রিতে দেওয়ার কথা। বিভিন্ন সাধারণ মানুষের সংগৃহীত এনআইডি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে সিম বিক্রি। কেউ ফেরত দিলে সেটি পুনরায় বিক্রি করে এই প্রতারক চক্রের কাছে। ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায় এসব সিম সংগ্রহ করে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করে আসছে প্রতারক চক্রটি।


সুপ্রিমকোর্টে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:১৮
বাসস

ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি ও সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে আজ থেকে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রমে ফিরেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

গত ২৪ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ, সরকারি ছুটি, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে এ সময় জরুরি মামলা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিস্পত্তির জন্য আপিল বিভাগে চেম্বার কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগে সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার সম্পন্নে বেশ কটি বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম চলেছে।

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের কালো গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়। সে অনুযায়ি আইনজীবী ও বিচারকগন আজ গাউন ছাড়া বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেন।

এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয় যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়। আজ ২১ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক নম্বর কোর্টের এজলাস কক্ষে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় আজ ২১ এপ্রিল থেকে দুই নম্বর কোর্টের এজলাস কক্ষে আপিল বিভাগের বিচারকাজ চলছে।

বিষয়:

গরমে আইনজীবীদের গাউন পরায় শিথিলতা

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:২৯
বাসস

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের কালো গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। আগামীকাল ২১ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বহাল থাকবে।

আজ শনিবার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী চলমান তাপপ্রবাহের কারণে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয় যে- সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছে।

ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি ও সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে কাল রোববার থেকে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রমে ফিরছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। গত ২৪ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ, সরকারি ছুটি, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

তবে এ সময় জরুরি মামলা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগে চেম্বার কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগে সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার সম্পন্ন বেশকটি বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম চলেছে।

বিষয়:

ব্যবসায়ী নাসিরকে মারধর: পরীমনিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেকায়দায় পড়েছেন দেশীয় চলচ্চিত্রের বহুল চর্চিত অভিনেত্রী পরীমনি। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে হত্যাচেষ্টা, মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় নায়িকা পরীমনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত বৃহস্পতিবার সকালে এই আবেদন করেন বাদীক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।

পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন।

বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথা ও বুকে আঘাত পান। এ সময় পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন বলে এজাহারে বলা হয়।

বাদী মামলায় বলেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।

এদিকে, ২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পরীমনি ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছিলেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। এ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।


২৩ মে পর্যন্ত ড. ইউনূসের জামিন বৃদ্ধি করেছে আদালত

ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:১৪
বাসস

শ্রমআইন লঙ্ঘনের দায়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত জামিন বৃদ্ধি করে আদেশ দিয়েছেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম. এ আউয়াল আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলমখান।

শ্রমআইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূস শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সাজার বিরুদ্ধে তার আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিন চান। ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ আবেদন দাখিল করেন।

শ্রমআইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা এই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে গত ১ জানুয়ারি ছয়মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। রায় ঘোষণার পরপরই আপিল শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।

২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। গত বছরের ৬ জুন মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। গত বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়, যা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘শ্রমআইন ২০০৬ ও শ্রমবিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেয়া হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত বিলে জমা দেয়া হয়নি।’

শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।


সদরঘাট লঞ্চ ট্রাজেডি: পাঁচ আসামির তিন দিনের রিমান্ড

ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ক্যামেরা থেকে নেওয়া একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:৪৭
জবি প্রতিনিধি

রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে দুই লঞ্চের মধ্যে ধাক্কা লেগে রশি ছিড়ে পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এম ভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার ও ম্যানেজার, বাকি দুজন এম ভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের মাস্টার।

শুক্রবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরি হিমেল এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন সদরঘাট নৌ পুলিশের সদস্যরা আসামিদের আদালতে হাজির করলে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাতদিনের পুলিশি রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরঘাট নৌথানার উপ-পরিদর্শক নকীব অয়জুল হক। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামিকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেয়।

রিমান্ডে নেয়া আসামীরা হলেন- এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) আব্দুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) সেলিম হাওলাদার (৫৪), ম্যানেজার ফারুক খান (৭০), এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) মিজানুর রহমান (৪৮), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান (২৮)।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্মপরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ২টা ৫৫ মিনিটে সদরঘাট টার্মিনালের ১১ নম্বর পল্টুনে এমভি তাসরিফ-৪ নোঙর করে থাকা অবস্থায় এমভি ফারহান-৬ এর চালক বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালিয়ে ১১ নম্বর পন্টুনে ঢোকার সময় তাসরিফ লঞ্চকে ধাক্কা দেয়। এতে তাসরিফ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। সেটি দ্রুত গতিতে এসে পন্টুনে অপেক্ষমান যাত্রীদের আঘাত করলে তারা নদীতে পড়ে যায়। এতে এক পরিবারের তিনজনসহ ৫ যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ফারহান এবং তাসরিফ লঞ্চের দায়িত্ব অবহেলা আছে।

নিহতরা হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে সাইমা (৩)। তারা তিনজন একই পরিবারের সদস্য। বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিএ এর ক্রয় ও সংরক্ষণ পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম কমিটির আহ্বায়ক, নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন কমিটির সদস্য। কমিটি আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যানের নিকট প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ হতে প্রতি মৃত ব্যক্তির নমিনির কাছে দাফন-কাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।


লেখক হুমায়ুন আজাদ হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৪ ০১:১৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায় জঙ্গিরা। দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকরা এই ঘটনায় পরদিন তাঁর ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর একই বছরের ১২ আগস্ট জার্মানিতে মারা যান অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ। এরপর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়ে থাকে।

সেই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আজ মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীম বিদেশ থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার পর নূর মোহাম্মদ তিন বছর নওগাঁয় আত্মগোপনে ছিলেন। পরে তিনি ভিন্ন নামে পাসপোর্ট ২০০৮ সালে সৌদি আরবে চলে যান। ২০১৭ সালে তিনি একবার দেশে ফেরেন। তখন দেশে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে আবার সৌদি আরবে চলে যান। আজকে তিনি পরিবর্তিত নাম–পরিচয়ে দেশে এসেছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি যে জেএমবি সদস্য নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীম, সেটা স্বীকারও করেছেন।

মামলার নথিপত্রের তথ্য অনুযায়ী, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। এই দুই জঙ্গি নেতার নির্দেশে আতাউর রহমান সানির নেতৃত্বে মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগনে শহীদ, নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীম, হাফিজ মাহমুদসহ অন্যরা হুমায়ুন আজাদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। মামলার নথি, অভিযোগপত্র ও দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে এ তথ্য জানা যায়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া দুই আসামি হলেন মিজানুর ও আনোয়ারুল।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মিজানুর বলেছিলেন, ‘আমরা জানতে পারি, বইমেলা থেকে প্রতিদিন রাত আটটা বা সাড়ে আটটার দিকে হুমায়ুন আজাদ হেঁটে বাসায় যান। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সেদিন আমিসহ অন্যরা বাংলা একাডেমিতে যাই। রাত সোয়া নয়টায় হুমায়ুন আজাদ যখন বইমেলা শেষে বাসায় ফিরছিলেন, তখন আমরা তাঁর পিছু নিই।’

জবানবন্দিতে মিজানুর আরও বলেছিলেন, ‘হুমায়ুন আজাদকে আমি ও নূর মোহাম্মদ ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করি। তখন দূরে থাকা লোকজন ছুটে এলে আনোয়ারুল একটা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তখন লোকজন বিক্ষিপ্তভাবে পালাতে থাকে। আমরাও পালিয়ে যাই। রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে শায়খ আবদুর রহমানকে এ ঘটনা জানাই।’


রাজনৈতিক দল অস্তিত্ব সংকটে থাকলে আবোল-তাবোল বলে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোনো দল যখন তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব নিয়ে ভয়ে থাকে, তখন তারা আবোল-তাবোল বলতে থাকে। তাই বিএনপি এখন আবোল-তাবোল বলছে। এটাকে কোনো ধর্তব্যের মধ্যেই ধরার প্রয়োজন নেই।

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্পের আওতায় নারীদের ক্ষমতায়ন ও স্বাবলম্বী করতে ৮০ জন নারীকে ল্যাপটপ বিতরণের আগে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আপনারা জানেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সব নাগরিক পুরুষ ও মহিলা সবাই সমান অবদানের অধিকারী হবেন। এটা তিনি সংবিধানের মধ্যে লিখে দিয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য এবং নারীদেরকে ক্ষমতায়নের জন্য অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এর মধ্যে এই হার পাওয়ার প্রকল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জানেন, দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ নারী। এই ৫০ ভাগ নারী যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে তাহলে কিন্তু এই দেশ বা জাতি এগোতে পারবে না।’

জেলা প্রশাসন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর (হার পাওয়ার) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুক্তার।

বিষয়:

বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবন ‘গ্রিন কোজি কটেজে’ আগুনের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন জেস্টি রেস্টুরেন্টের মালিক মোহর আলী ওরফে পলাশ, ফুকো রেস্টুরেন্টের মালিক আবদুল্লাহ আল মতিন ও ভবনের তত্ত্বাবধায়ক নজরুল ইসলাম খান। এই নিয়ে ওই আগুনের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ) মো. আনিচুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজধানীর বেইলি রোড ও শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ নামের আটতলা ভবনে আগুন লাগে। এতে ৪৬ জন মারা যান। তাদের মধ্যে ১৮ জন নারী ও ৮ শিশু। ভবনের নিচ তলার খাবার দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। এই ঘটনায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

এর আগে এই আগুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন ‘চুমুক’ নামের একটি রেস্টুরেন্টের মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান এবং ‘কাচ্চি ভাই’ নামের অন্য একটি খাবারের দোকানের ব্যবস্থাপক জয়নুদ্দিন জিসান।


সাড়ে পাঁচ হাজার সার্টিফিকেট দিয়েছেন বোর্ড কর্মকর্তা, জানতেন ঊর্ধ্বতনরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পীরেরবাগ থেকে টাকার বিনিময়ে আসল সার্টিফিকেট তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানের অপকর্মের বিষয়ে জানতেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বোর্ডের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা তার কাছ থেকে আর্থিক ভাগ নেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছিলাম। এই সার্টিফিকেট কিন্তু জাল নয় বরং সরকার যে কাগজ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান একই কাগজ ব্যবহার করে সার্টিফিকেট বানাতেন। অর্থাৎ তিনি শিক্ষা বোর্ড থেকে কাগজ এনে বাসায় বসে সার্টিফিকেট বানাতেন।

রেজাল্ট অনুযায়ী তিনি টাকা নিতেন, তবে ৩৫ হাজারের কমে কাজ করতেন না। সার্টিফিকেট বানানোর পর সেই রেজাল্টের তথ্য শিক্ষা বোর্ডের সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। এই সার্টিফিকেট দিয়ে অনেকে বিদেশে গেছেন, অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন, আবার অনেকে চাকরি করছেন। এভাবে তিনি সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট দিয়েছেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অনেক চমকপ্রদ তথ্য দিচ্ছেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদ তৈরির কাগজ কীভাবে বের করা হতো, এ প্রশ্নের জবাবে শামসুজ্জামান গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, সবাইকে ম্যানেজ করে অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডের সবার সঙ্গে যোগসাজশ করে কাগজ বের করা হতো। এমনকি তার এই সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার বিষয়ে অনেক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও জানতেন। সবাই তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, শামসুজ্জামানের অবৈধভাবে সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়ে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। বোর্ডের কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে দেখলেন অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে। ফলে সেটি ধামাচাপা পড়ে যায়। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কম্পিউটার কাউন্সিলে। তারাও চুপ হয়ে যায়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান আমাদের বলেছেন, সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সবাই জানতেন। টাকার বিনিময়ে সবাই তার কাছে ম্যানেজ হতো। সবকিছুই তদন্ত করছি। শামসুজ্জামানের অপকর্মের বিষয়ে কারা তদন্ত করতে গিয়ে চুপ হয়ে গেছেন তাদেরও আমরা খুঁজছি। রিমান্ডে পাওয়া তথ্য যাচাই করে কোন কোন রাঘব বোয়াল জড়িত, সবার নাম প্রকাশ করা হবে।


banner close