রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় মাদকবিরোধী অভিযানে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এসব অভিযান চালায় ডিএমপির বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ডিএমপি গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৪৬২টি ইয়াবা, ১৫১ গ্রাম হেরোইন, ১০৬ কেজি ৬৫০ গ্রাম ৮০০ পুরিয়া গাঁজা, ৩০ গ্রাম আইস ও ১১৬ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৪টি মামলা করা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, শেরে বাংলা নগর, তেজগাঁও ও ধানমন্ডি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ ছিনতাইকারীকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব)। গত ১১ মে থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. বিল্লাল (২৮), মো. সোহেল (৩০), জিসান আহম্মেদ জীবন (২১), মো. রাকিব (২৫), রাব্বী (৩৮), মো. শাহীন (৩৬), ইমরান পাটোয়ারী (২২), শফিকুল ইসলাম (২৮), মো. নওসাদ (২২), সোহেল মিয়া (২৫), মো. আমির হোসেন (৪০), মো. মোজাম্মেল (২০), আকাশ গাজী (২০), সোহেল মীর (৩৪), রাব্বী হোসেন (২২), বাচ্চু আকন্দ (২৫), মো. পারভেজ (১৯), ১৮) মো. আলী (২৯), মো. পারভেজ মিয়া (২০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ছুরি, চাকু, এন্টি কাটার ও ছিনতাইকৃত মোবাইল।
র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম জানান, সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বিভিন্ন অপরাধে মারাত্মকভাবে জড়িয়ে পড়ছে। তারা মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনা ঘটায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মাদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, শেরে বাংলা নগর, তেজগাঁও ও ধানমন্ডি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দিনের বেলায় আত্মগোপনে থেকে রাতের বেলায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতো। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শ্রম আইন সংশোধনে কিছু কিছু বিষয়ে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। একই সঙ্গে শ্রম আইন যাতে আরও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কিছু সাজেশন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। আমরা শ্রম আইন সংশোধন করছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এ বিষয়ে কিছু সাজেশন দিতে চায়। সাজেশনগুলো মূলত তারা এ কারণে দিতে চেয়েছিল, যে আইনটি হচ্ছে, সেটি যাতে আরও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, আইএলওর কমিটি অব এক্সপার্টের সাজেশনগুলো যাতে কমপ্লায়েন্ট হয়, সেই বিষয়ে তাদের বক্তব্য ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আইএলওকে যে কো-অপারেশন সরকারের পক্ষ থেকে সেটা আমরা চালিয়ে যেতে চাচ্ছি। সে জন্যই মূলত আমরা তিন দিন ধরে সেটা (শ্রম আইনের খসড়া) এক্সারসাইজ করেছি। এখানে মূলত কিছু কিছু ইস্যু, যেগুলো আমেন্ডমেন্টে থাকার কথা বলেছেন। শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে কিছু কিছু বিষয় এসেছিল যেটি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। সেটি আমি বলেছি নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সেটার সিদ্ধান্ত হবে। আমরা গ্রহণ করব কি করব না সেটার সিদ্ধান্ত।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয় আছে ত্রিপক্ষীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের বক্তব্য নোট করেছি, তাদের বক্তব্য সেখানে তুলে ধরব। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের দেশের বাস্তবতায় গ্রহণযোগ্য হবে কি না হবে, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেব। কিছু কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো মনে হয়েছে গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সে জন্য এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলব না। কারণ বিস্তারিত বলতে গেলে হয়তো আমি কোথাও ভুল করব, সে জন্য আমি বলব না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তিন দিন ধরে তাদের যে বক্তব্য সেটা শুনেছি। প্রত্যেকটা ইস্যু নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। মতবিনিময় করেছি। আমার মনে হয়, এ ধরনের মতবিনিময়ের মাধ্যমে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেটা শুধু স্টেকহোল্ডারদের জন্যই ভালো নয়, আমার মনে হয় এই আলোচনাটাই আন্তর্জাতিক মানের ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইএলওর কমিটি অব এক্সপার্ট আমাদের আইনটা দেখেছেন পড়েছেন, সেখানে তারা আন্তর্জাতিক মান নিয়ে কিছু সুপারিশ দিয়েছেন। আমরা যে থ্রেডহোল্ড (ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সম্মতির হার) ১৫ শতাংশে নিয়ে এসেছি, তারা এটির প্রশংসা করেছেন। তারা চায় এটা আরও কমে আসুক। আমরা যে বাস্তবতার কথা বলেছি, আমরা ২০১৭ সালে কমিটমেন্ট দিয়েছিলাম, এটা আমরা গ্রাজুয়ালি নামাবো। কমিটমেন্ট অনুযায়ী আমরা গ্রাজুয়েলি নামাচ্ছি। আমার মনে হয় আমাদের উভয়ের পক্ষের অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে এবং উভয়পক্ষই সেই অবস্থা বুঝতে পেরেছে।’
বাজারে বিক্রি হওয়া অনুমোদনহীন পাঁচটি কোম্পানির ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এই ড্রিংকগুলো হলো এসএমসি প্লাস, প্রাণের এক্টিভ, ব্রুভানা, আকিজের রিচার্জ এবং টারবো।
আজ মঙ্গলবার বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের বিচারক আলাউল কবীরের আদালত এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে পাঁচটি কোম্পানির মালিকদের আগামী ৫, ৬ এবং ৯ জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে এসএমসি প্লাস, প্রাণের এক্টিভ, ব্রুভানা, আকেজের রিচার্জ এবং টারবো- এগুলো ওষুধ নাকি এনার্জি ড্রিংকস সে বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। এ সময় আদালতে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক বলেন, এগুলোর একটিরও অনুমোদন নেই। ওষুধ প্রশাসনও বলতে পারে না এগুলো ওষুধ না ড্রিংকস। এগুলোর আবার বিজ্ঞাপনও চলছে। নিরাপদ খাদ্য আইন অনুযায়ী যা অপরাধ। আমরা বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে বললেও কোনো কোম্পানি শোনেনি। কাজেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ফাঁসির আসামির প্রাণভিক্ষা নাকচ হলে তবেই তাকে কনডেম সেলে রাখা যাবে বলে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবে রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমকে এ কথা জানান। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ রায় দেন।
আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির পূর্বে কনডেম সেলে বন্দি রাখার বিষয়ে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়েছিল। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে উচ্চ আদালত রুল ও নির্দেশনা দেয়। মৃত্যুদণ্ডের সাজা চূড়ান্ত হওয়ার পূর্বে কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন অবৈধ হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি কতজন নারী ও পুরুষ কনডেম সেলে বন্দি আছেন তার একটি তালিকা আদালতে দাখিল করতে আইজি প্রিজনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।’
আইনজীবী বলেন, ‘ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি বলা যাবে না এবং কনডেম সেলে বন্দি রাখা যাবে না। রায়ে আরও বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে আসামির হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে মামলা নিষ্পত্তি, প্রশাসনিক অনান্য কার্যক্রম ও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পরই মৃত্যুদণ্ডের রায় চূড়ান্ত হয়। এরপর নির্জন কক্ষে বন্দি রাখা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘রায়ে বলা হয়েছে বিশেষ বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কোনো ব্যক্তির সংক্রামকজনিত সমস্যা বা অন্য কোনো বিশেষ কারণে তার শুনানি নিয়ে তাকে নির্জন কক্ষে আটক রাখা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। অন্যান্য মামলায় যেভাবে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল ও জামিন শুনানি হয়, শুনানি শেষে আদেশ হয়, তেমনি মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি আপিলের পাশাপাশি জামিনের আবেদন করতে পারবেন। উপযুক্ত আদালত তার জামিন আবেদন বিবেচনা করতে পারবেন। রায়ে দেশের জেল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত বিষয়ে তথ্য অধিকার আইনে কোনো তথ্য চাইলে তা যেন দেওয়া হয়। একই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তাদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত মামলার তথ্য সুপ্রিম কোর্ট ওয়েবসাইটে পরিবেশনের জন্যও আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, মামলাটির শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, কারা আইন নতুন করে প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আজ রায়ে আদালত বলেন, রায়ের ফাইন্ডিংস ও পর্যবেক্ষণ নতুন আইনটিতে সংযুক্ত করতে যেন বিবেচনা করা হয়। রায়ে বলা হয়, আগামী দুই বছরের মধ্যে কনডেম সেলে আটকদের সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপিল আবেদন করার সিদ্ধান্তের কথা আজ জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
রিট আবেদনকারীরা হলেন- চট্রগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।
বিতর্কিত সমাজকর্মী ও চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা মানবপাচার আইনের মামলায় আজ আদালত এ আদেশ দেন।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমীর আদালতে মিল্টন সমাদ্দারের পক্ষে আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মিরপুর মডেল থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে গত ১ মে মিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব। গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২ মে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে মৃত্যু সনদ তৈরির মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৫ মে মানবপাচার আইনের মামলায় আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৯ মে রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে প্রতারণার নানা অভিযোগ উঠে আসে। এতে বলা হয়, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬টির বেশি নম্বর এবং তিনটি ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা জমা হয়। এর বাইরে অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অনুদান দিয়ে আসেন। এই অর্থের অপব্যবহার করেন তিনি। মানবিক কাজের জন্য এ পর্যন্ত তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির। রুল শুনানিতে আদালত এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও এস এম শাহজাহান বিশেষজ্ঞ মত নেন।
শিশির মনির বলেন, রায়ে আদালত বলেছেন- প্রথমত, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি বলা যাবে না এবং তাকে মৃত্যু (কনডেম) সেলে রাখা যাবে না। বিচারিক প্রক্রিয়া (ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও রিভিউ) ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া (রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমার আবেদন) শেষেই কেবল একজন আসামিকে মৃত্যু সেলে বন্দি রাখা যাবে।
দ্বিতীয়ত, কোনো ব্যক্তির অসুস্থতা বা বিশেষ কারণে আলাদা সেলে রাখার আগে তাকে নিয়ে শুনানি করতে হবে। এটি ব্যতিক্রম।
রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, নতুন জেলকোড তৈরি করা হচ্ছে। নতুন আইন হচ্ছে, প্রিজন অ্যাক্ট। হাইকোর্ট বলছেন, রায়ের পর্যবেক্ষণ যেন নুতন আইনে প্রতিফলিত হয়, তা বিবেচনা করতে। মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দির বিষয়ে তথ্য চাইলে (সাংবাদিক, গবেষক) আইন অনুসারে তা দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিকেও আইন অনুসারে তথ্য দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক রিপোর্টেও এ আসামিদের তথ্য সন্নিবেশিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দুই বছরের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের ক্রমান্বয়ে কনডেম সেল থেকে সরিয়ে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিন কারাবন্দির রিটের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জেল কোডের ৯৮০ বিধি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চান উচ্চ আদালত।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
রিটের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছিলেন, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করার আইনগত কোনো বিধান নেই। মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে কয়েকটি আবশ্যকীয় আইনগত ধাপ অতিক্রম করতে হয়।
প্রথমত, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে। একইসঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১০ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়েরের বিধান রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সাংবিধানিক অধিকারবলে আপিল বিভাগে সরাসরি আপিল করতে পারেন।
তৃতীয়ত, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৫ অনুযায়ী আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের আইনি সুযোগ রয়েছে। সর্বোপরি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৯ এর অধীনে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। রাষ্ট্রপতি এ ক্ষমার আবেদন না মঞ্জুর করলে তখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি আইনগত বৈধতা লাভ করে। কিন্তু বাংলাদেশে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্জন কনডেম সেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বন্দি রাখা হয়।
রাজধানীর শাহবাগে শনিবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ওইদিন ১২ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়ে থাকে। আজ রোববার গ্রেপ্তার হওয়া সেই ১২ শিক্ষার্থীর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুনানি শেষে আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত এই আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ চাই’ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন রশিদ রতন, সদস্য সচিব মো. রাসেল, হুমায়ন কবির, মানিক দাস, আল আমিন, শেখ ফরিদ, আজম মোহাম্মদ, মো. সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল হাকিম, রিমা আক্তার, শারমিন আক্তার দৃষ্টি ও ফাতেমা আক্তার।
এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আল আমিন আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অবৈধভাবে একত্রিত হয়ে সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক এম এলিস মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয় না বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার জানামতে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয় না। পুলিশ কোনো রাজনৈতিক মামলাও করে না। যেকোনো একটি ঘটনা ঘটলে একজন ইনফরমেটিভ হন, পরবর্তীতে রাষ্ট্র মামলাগুলো পরিচালনা করে।’
রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ রোববার মুট কোর্ট ক্লাবের উদ্বোধন করতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের আদালতগুলোতে মামলাজট প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, উন্নত দেশগুলোতে অধিকাংশ মামলা বিচারের আগেই নিষ্পত্তি হয় আপস-মীমাংসার মাধ্যমে। যার ফলে মামলা বিচারের জন্য যায় কম। সে কারণে ওদের মামলাজটটাও কম। আর আমাদের দেশে প্রায় সব মামলাই বিচারের জন্য আদালতে যায়। প্রতিটি মামলায় সাক্ষ্য হয়, প্রমাণ হয়- এসব করতে সময় লাগে। একজন বিচারকের কাছে ২০টা, ২৫টা, ৫০টা কিংবা ১০০টা মামলা থাকে। তখন নিষ্পত্তি করতে সময় লাগে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন পর্যন্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। সম্ভবত মামলা হয়নি। এই আইনটা সতর্কভাবে প্রয়োগ করার কথা আছে এবং এই মামলাগুলো যিনি করবেন, তাকে কিন্তু অনেক কিছু প্রমাণ করতে হয়। এ কারণে এই আইনে মামলা করা সহজ নয়। এই আইনে কারও যেন হয়রানি না হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আনন্দ কুমার সাহাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মুট কোর্টে প্রতীকী বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা হয়। সেখানে বিচারক হিসেবে ছিলেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা মামলার বাদী, সাক্ষী, আসামি, আদালতের কর্মচারী ও আইনজীবীর ভূমিকায় ছিলেন।
পরবর্তীতে ‘আইন পেশায় কেন আসবেন’শীর্ষক আইন ও মানবাধিকার বিভাগের একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এতে অতিথি বক্তা ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আশরাফ আলী। সভাপতিত্ব করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ।
সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ফয়জার রহমান, রেজিস্ট্রার সুরঞ্জিত মণ্ডল, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারমিতা জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট গণনার সময় মারামারি ও এক আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথীকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ তাকে জামিন দেন।
অ্যাডভোকেট যুথী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। শুনানি শেষে আদালত জামিন দেন।
ঢাকার আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তরের রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দিন ফকির জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সুপ্রিম কোর্ট বারে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় গত ৮ মার্চ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। এতে ১ নম্বর আসামি করা হয় অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথীকে। এ ছাড়া ২ নম্বর আসামি করা হয় ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে।
মারামারির ঘটনায় আহত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ) বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
মামলায় আইনজীবী যুথী ও কাজল ছাড়াও ২০ আইনজীবীকে আসামি করা হয়। অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনকেও আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা যুথীর নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নিচতলার শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে অস্ত্র হাতে জোর করে প্রবেশ করে। অনধিকার প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় নির্বাচন সাবকমিটির সদস্যদের গালিগালাজ করে। দুজনের হাতে লোহার রড ছিল। তারা সাইফুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি মাথায় আঘাত পান। অন্য আসামিরা কাঠের লাঠি, কাঠের ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে অতর্কিতভাবে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
এ ছাড়া তারা ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকে মারধর করে, এতে তিনি আহত হন। নাহিদ সুলতানা যুথী আইনজীবী রিনা বেগমকে চড়থাপ্পড় ও হুমকি দেন। হামলাকারীরা অডিটরিয়ামের ভেতরে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর ও অরাজকতা সৃষ্টি করে। এতে নির্বাচনে দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, নির্বাচনী অন্যান্য কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে ভন্ডুল হয়ে যায়।
এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ শেষ না হলেও নাহিদ সুলতানা যুথীর নেতৃত্বে তাকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে এ ঘটনা ঘটে। এ মামলায় এখন সবাই জামিনে আছেন।
বাংলাদেশের শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আইএলওর সঙ্গে আড়াই ঘণ্টা বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইএলওর কিছু পরামর্শ আছে। সেগুলো কতটা আমাদের দেশের স্বার্থে যৌক্তিক, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা কোনটি নিতে পারব, কোনটা নিতে পারব না, সে ক্ষেত্রে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আইএলওর সঙ্গে ৪১টি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে আজ প্রায় আড়াই ঘণ্টায় ১৭টি পয়েন্ট নিয়ে কথা হয়েছে। আরও ২৪টি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা বাকি আছে।’
আগামীকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আবার এই আলোচনা শুরু হবে এবং তখন বিস্তারিত জানাবেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘কিছু জায়গায় নিশ্চয়ই সন্তোষজনক। খুবই বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
আইএলওর প্রতিনিধিদলে আছেন সংস্থাটির কান্ট্রি অফিসের পরিচালক টৌমো পৌটিআইনেন, লেবার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশন (এলএডাব্লিউসি) ক্লাস্টার প্রোগ্রাম ম্যানেজার নিরান রামজুথান, ট্রেড ফর ডিসেন্ট ওয়ার্কের কারিগরি অফিসার চায়ানিক থামপারিপাতরা।
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একজন এজাহারভুক্ত পলাতক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম মো. সিজান হোসেন (১৯)।
সিজান জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার হরেন্দা গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল শনিবার রাতে এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে যশোর জেলার কোতয়ালী থানাধীন শেখহাটি, বাবলাতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও তিনটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
এটিইউয়ের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মাহফুজুল আলম রাসেল জানান, সিজান ও তার অন্যান্য সহযোগীরা অনলাইনে জঙ্গিবাদের প্রচারণাসহ বাংলাদেশে তথাকথিত খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজ করছিলেন। তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নাশকতার জন্য পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি উগ্রবাদী বিভিন্ন কন্টেন্ট পোস্ট করে সমমনা আগ্রহীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষাসহ তাদেরকে উগ্রবাদের দিকে আহ্বান করে আসছিলেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় মাদকবিরোধী অভিযানে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এসব অভিযান চালায় ডিএমপির বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কে এন রায় নিয়তি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ২০৫টি ইয়াবা বড়ি, ৪০ গ্রাম হেরোইন, ১৩০ কেজি ৩৫০ গ্রাম গাঁজা ও ২৬ বোতল দেশি মদ জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১২টি মামলা করা হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় বাদী (অভিযোগকারী) তার পক্ষে মামলা পরিচালনা করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট প্রশাসন।
ব্যক্তিগতভাবে ভিকটিম আইনজীবী নিয়োগ করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন উল্লেখ করে এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে সম্প্রতি নোটিশ জারি করা হয়েছে। ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগকারী বা ভিকটিমের পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিয়োগকরণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক নোটিশটি গত ৯ মে জারি করা হয়।
নোটিশের ভাষ্যমতে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগকারী বা ভিকটিমের ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিয়োগ করণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ বিভিন্ন সমস্যা বা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
সাধারণত এই আইনে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) দ্বারা। তবে কোনো কোনো ভিকটিম ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। তাই এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এসকে. এম. তোফায়েল হাসানের সই করা একটি নোটিশ জারি করা হয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৩ এবং ৪৯৫ ধারার বিধানাবলী অনুসরণ করে ভিকটিম বা অভিযোগকারী তার পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিযুক্ত করে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন বলে বিষয়টি স্পষ্টীকরণ করা হলো।’
উল্লেখ্য, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ২৫ ধারায় বর্ণিত বিধানাবলী মোতাবেক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে কোনো অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হয় এবং ট্রাইব্যুনালে অভিযোগকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ব্যক্তি পাবলিক প্রসিকিউটর বলে গণ্য হন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৩ এবং ৪৯৫ ধারার বিধানাবলী অনুসরণ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগকারী বা ভিকটিমের পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী নিযুক্ত করে মামলা পরিচালনা করার সুযোগ আছে। সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া আবশ্যক।