শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

মিল্টনের বিষয়ে ভয়াবহ-লোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে পুলিশ: হারুন

`চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। ফাইল ছবি
আপডেটেড
৬ মে, ২০২৪ ১৯:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৬ মে, ২০২৪ ১৪:১১

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের বিষয়ে পুলিশ অনেক ভয়াবহ-রোমহর্ষক তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গতকাল রোববার তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’আশ্রমে বর্তমানে ৪৫ জন শিশু আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। পরে তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। শুনানী শেষে মানব পাচার আইনে করা মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার মিল্টনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

ওই আদেশের এক দিন পর আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান।

ডিবি প্রধান বলেন, ‘তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে বিভিন্ন মানুষকে প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ এবং যারা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মানুষদের পুঁজি করে তিনি যে টাকা কামাচ্ছিলেন, এই টাকাগুলো তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই জমা হচ্ছিল। তিনি কিন্তু এসব টাকা ওই আশ্রিত মানুষের পেছনে খরচ করছিলেন না, চিকিৎসা দিচ্ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক তথ্য আমরা পেয়েছি, যা ভয়াবহ, লোমহর্ষক তথ্য। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ না করে কিছু বলা ঠিক হবে না।’

তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে থাকা অনাথ শিশু, বৃদ্ধ, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আমাদের কাছে গতকাল এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমের পুরো দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। সব খরচ তিনি বহন করবেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোকে সেবা সেখানেই দেবে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। আপাতত এটা চলবে। পরে অন্য চিন্তাভাবনা করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার মাদকসেবী এবং তিনি ইয়াবা সেবন করেন। নিজেই ইয়াবা সেবনের কথা স্বীকার করেছেন। তার টর্চার সেলে অত্যাচারের মাত্রা ছিল অমানবিক। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের এভাবে কেউ পেটাতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, তার আশ্রমে যারা মারা গেছেন, তাদের ডেথ সার্টিফিকেট নিজেই দিতেন, ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করতেন। তাদের কোথায় কবর দেওয়া হলো, সে তথ্য তিনি আস্তে আস্তে স্বীকার করা শুরু করেছেন। তদন্ত শেষ হলে এব্যাপারে জানানো হবে।

মিল্টন সমাদ্দারকে গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আটক করে ডিবি। পরের দিন বৃহস্পতিবার মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকেও আসামি করা হয়। এ মামলায় ২ মে মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

বিষয়:

২৭তম বিসিএসে বাদ পড়া ১২শ জনের আপিল শুনবেন সুপ্রিম কোর্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্ত উত্তীর্ণের পর নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা প্রায় ১২শ পরীক্ষার্থীকে ফের দ্বিতীয় বার মৌখিক পরীক্ষা-সংক্রান্ত রায়ের রিভিউতে ‘লিভ মঞ্জুর’ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে আপিল শুনানির জন্য আগামী ৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদালতে পরীক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল অনিক আর হক।

ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ‘২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রায় ১২শ জন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর যখন তারা নিয়োগের অপেক্ষায় ছিল তখন এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে দেয়। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত দেয়। প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট মামলা হয়। হাইকোর্ট ওই সিদ্ধান্ত বিষয়ে রায় দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করলে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা সঠিক বলে সিদ্ধান্ত দেয় আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগ বিষয়টি নিয়ে লিভ মঞ্জুর না করে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সিপি নিষ্পত্তি (জাজমেন্ট সেটাসাইড) করে দিয়েছিল। তাতে আমরা পেয়ার ট্রায়াল থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যার ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।’

ব্যারিস্টার দোলন বলেন, ‘এ রায় আমরা রিভিউ চেয়ে আবেদন ফাইল করি। আজ (বৃহস্পতিবার) শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছে। আমরা তিনটি সাংবিধানিক পয়েন্ট রেইজ করে গ্রাউন্ডস তুলে ধরে রিভিউ চেয়েছি। সে লিভ মঞ্জুর করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।’

তিনি বলেন, বিসিএস পরীক্ষা-সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীন এখতিয়ার সাংবিধানিকভাবে সরকারি কর্ম কমিশন তথা পিএসসির। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ছিল না। আগামী ৪ ডিসেম্বর বিষয়টি আপিল আকারে শুনবেন সর্বোচ্চ আদালত। এ সিনিয়র অ্যাডভোকেট বলেন, ‘দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির আশায় থাকা এ সকল বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তির অবসান ঘটবে বলে আমরা আশা করছি।’

২৭তন বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সিদ্ধান্তে বাতিল করে দেয় সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির আশায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিয়োগ বঞ্চিত ২৭ তম বিসিএস-এর প্রায় ১২'শ পরীক্ষার্থী।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে এবং দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীক্ষার্থীরা। ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। তার আগে ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করে সরকারপক্ষ। ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ সেই ‘লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি’ করেন আপিল বিভাগ। এ সংক্রান্ত রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করা হয়। এর বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি দায়ের করা হয়। গতকাল সেই রিভিউ মঞ্জুর করে আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।


সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নীতিগত সিদ্ধান্ত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি যাচাই (ভেটিং) শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পুনরায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে এই আইন ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য আইনটি বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।

বিতর্কিত এ আইন বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল। সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, এ সপ্তাহে এই আইন বাতিল হচ্ছে। এরআগে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই যাবে সরকার। এটা বাতিল হবে। পরবর্তী সময়ে যখন নতুন আইন হবে, এটার বেসিক অ্যাপ্রোচ থাকবে সাইবার সুরক্ষা দেওয়া, বিশেষ করে নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়া।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এ আইন নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলাগুলো (মুক্তমত প্রকাশের কারণে মামলা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর অধীন গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। বর্তমানে স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মোট ১ হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন। ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।


রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সৈয়দ মুনতাসির রহমান হালিম হত্যার অভিযোগে করা মামলায় রিমান্ড শেষে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মোজাহিদুল ইসলাম। আবেদন বলা হয়, গত ২ নভেম্বর আসামিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামির কাছে থেকে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা মামলা তদন্ত কাজে সহায়ক হবে। আসামির দেওয়া তথ্যগুলি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

গত ৪ নভেম্বর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আসামির চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র প্রদান করলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ২ নভেম্বর আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সময়ে শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী মুনতাসির রহমান নিহত হয়। ওই ঘটনায় সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ ১৫৭ জনের নামে হত্যা মামলাটি করা হয়।


আমির হোসেন আমুর ৬ দিনের রিমান্ড, আদালতে আইনজীবীকে মারধর

আমির হোসেন আমু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে শুনানির একপর্যায়ে আমুর আইনজীবীকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেন একদল আইনজীবী।

এরপর আদালত আমির হোসেন আমুর বক্তব্য জানতে চান। তখন আমু বলেন, আমি ঢাকা বারের সদস্য, হাইকোর্ট বারের সদস্য। এখানকার পরিবেশ দেখে দুঃখিত। এই পরিবেশে কিছু বলা উচিত না। মামলা চলবে, ভবিষ্যতে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করব। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনেক কথা বলেছেন। আমি একজন রাজনিতিবিদ। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গেলে দুই ঘণ্টা লেগে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা একে অপরের ভাই ভাই, মিলেমিশে থাকা উচিত। আমরা একসাথে থাকব। কেন দ্বন্দ্বে জড়াব? আশা করছি, এ পরিবেশ থাকবে না।

তখন বিএনপির আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করেন। তারা বলেন, তিনি ভয় দেখাচ্ছেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাদের শান্ত করেন।

পরে আমু বলেন, আমরা যার যার পক্ষ অবলম্বন করব। নিজেরা নিজেরা কেন দ্বন্দ্বে জড়াব।

আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, শুনানিতে তিনি কথা বলতে শুরু করার একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেন একদল আইনজীবী।

এর আগে গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানার নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রব নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়।


কুইক রেন্টালে দায়মুক্তির বিধানের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টের রায় ১৪ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ এর বিধান চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করে আজ বৃহস্পতিবার আদেশ দেয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক।

আইনটির ৬(২) ও ৯ ধারা বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ও আইনজীবী তাইয়্যেবুল ইসলাম সৌরভ। আইনটি সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ এর লঙ্ঘন বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।

আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আইনটির অধীনে কর্ম নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। আদালতের এখতিয়ার রদ করতে পারে এমন কোনো আইন হতে পারে না। এটা চ্যালেঞ্জ করা হয়। আদালত রুল দিয়েছিলেন।

রুলে আইনের ৬(২) এবং ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেয় উচ্চ আদালত।

আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আজ ওই রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ‘আদালত, ইত্যাদির এখতিয়ার রহিতকরণ’ সংক্রান্ত ৯ ধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

৬ (২) ধারার বলা হয়েছে, উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যেকোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫ এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিত সংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ও দরকষাকষির মাধ্যমে ওই কাজের জন্য মনোনীত করে ধারা ৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।


১০ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার আপিল শুনানি শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে হাইকোর্টে।

বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামির পক্ষে লড়ছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

আইনজীবী এস এম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পেপারবুক পড়া শুরু হইছে। আমরা দুটি মামলার আপিল একসঙ্গে শুনানি করতে চাই। একই ঘটনার জন্য দুবার বিচার করে আসামিদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। দুটি মামলার চার্জ একসঙ্গে হতে পারত। অস্ত্র মামলার পেপারবুক এখনো তৈরি হয়নি। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’

১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি দুই মামলায় রায় দেওয়া হয়। রায়ে চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের বিশেষ আদালত। এ ছাড়া অস্ত্র আইনের পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় একই আসামিদের।

পরে মামলার ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয় হাইকোর্টে। আর আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করেন। এখন পৃথক মামলার আপিল একসঙ্গে নিষ্পত্তি হবে।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা বা সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান আটক হয়। আটকের দুই দিন পর কর্ণফুলী থানায় দুটি মামলা করা হয়। ওই বছরই ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত অভিযোগ গঠন করেন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ২০১১ সালের ২৬ জুন নতুন করে বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।


হত্যা-গণহত্যাসহ গুমের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে ৮০টিরও বেশি অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

হত্যা-গণহত্যাসহ গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে এ পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আজ সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর জুলাই-আগস্টে গণ-আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিগত ১৫ বছরে গুমের বিভিন্ন অভিযোগ এবং ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে পরিচালিত গণহত্যার এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে প্রসিকিউশনে। প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে বিগত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তি ও কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব-দলীয় ক্যাডারদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার সুনির্দিষ্ট ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উল্লেখ করে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা ও বিচারের আর্জি পেশ করা হয়েছে এসব অভিযোগে।

গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।

গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিব এই মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

এ ছাড়া ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।


গান বাংলার তাপস কারাগারে, রিমান্ড শুনানি বুধবার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দেশের একমাত্র সংগীতভিত্তিক টিভি চ্যানেল গান বাংলার চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজজামানের আদালত শুনানির জন্য আগামী বুধবার (৬ নভেম্বর) দিনি ধার্য করেন। একইসঙ্গে তাপসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাপসকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪ নং সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এসময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় কৌশিক হোসেন তাপস ৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।


আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে বিএনপিপন্থি ৭ আইনজীবীকে অব্যাহতি

রিটকারী আইনজীবীকে লাখ টাকা জরিমানা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রোববার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন।

একই সঙ্গে রিটকারী আইনজীবী নাজমুল হুদা আদালতে হাজির না হওয়ায় এক লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করেছেন আদালত। নাজমুল হুদাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে জরিমানার অর্থ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২২ আগস্ট আদালত অবমাননার মামলায় বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আপিল বিভাগ। আদালত অবমাননার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগ বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ ও সমন জারি করেন।

সাত আইনজীবী হলেন মো. কায়সার কামাল, ফাহিমা নাসরিন, আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও গাজী কামরুল ইসলাম সজল। এ ছাড়া অ্যাডভোকেট আবদুল জামিল মোহাম্মদ আলী (এ জে মোহাম্মদ আলী নামে পরিচিত) মে মাসে মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের এবং সাবেক দুই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে তাদের মন্তব্যের জন্য শাস্তি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে অবমাননার আবেদন করেন। গতকাল আদালতের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ছয় আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।


শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা

মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি করেন ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্সের ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন।

মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মামলার বাদী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার সারাহ ফোরে ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট মাসে, বাংলাদেশ ইতিহাসের এক পৈশাচিক নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাসে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন ছাত্র আন্দোলনের সূচনা ঘটে, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে পরিচিতি লাভ করে। শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার অযৌক্তিক হারে পুনর্বহাল এবং সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ পদ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। তাদের দাবি ছিল, এই কোটা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অযাচিত অগ্রাধিকার প্রদান করে, যা দেশের মেধাবী এবং যোগ্য প্রার্থীদের জন্য চাকরির পথ রুদ্ধ করে দেয়। আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার, তবে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর মতো ঘটনার পর এটি দ্রুত বৃহত্তর আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। শিক্ষার্থীরা তখন কেবল কোটা সংস্কার নয়, বরং প্রশাসনিক দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত হন।

এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়ার পর সরকার এর জবাব দেয় অমানবিক সহিংসতার মাধ্যমে উল্লেখ করে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করতে সরকার পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মতো বাহিনী মোতায়েন করে। এই বাহিনী নির্বিচারে গুলি, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র- যেমন বার্ডশট প্লেট এবং তাজা গুলি- ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালায়। ইতিহাসের এই বর্বরতম নৃশংসতায় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেন।

বাংলাদেশ সরকারের এই কঠোর ব্যবস্থার ফলে দেশে গণহত্যা, বিচার-বহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং অসংখ্য বিক্ষোভকারী নিখোঁজ হয়েছেন। এই নিষ্ঠুরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের উদাহরণ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কারকাজ শেষ পর্যায়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কারকাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

সংস্কারকাজ শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন যে নান্দনিক রূপে দেখা যাবে তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কারকাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিভিন্ন মিস্ত্রি ও তাদের কর্মীরা।

এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল-সংলগ্ন বাগান নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এই সংস্কারকাজের সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। যেখানে কয়েকশ কর্মী এখন নিয়মিত কাজ করছেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মানের বিচার কার্যক্রম চলবে এমন ট্রাইব্যুনাল ভবনকে উপযোগী করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের পূর্বে অনেকটাই জরাজীর্ণ ছিল।

এরই মধ্যে দুইবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ট্রইব্যুনালের পুরাতন মূল ভবনের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় আপাতত ভবন-সংলগ্ন অস্থায়ী ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।

গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।

গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। জাজ্বল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

এ ছাড়া ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আগামী ২০ নভেম্বর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।


সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির গ্রেপ্তার, ৫ দিনের রিমান্ডে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিকর্মী মকবুলকে হত্যার অভিযোগে পল্টন মডেল থানার মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান আসামিকে আদালত হাজির করেন। এ সময় তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু সুফিয়ান রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সচিব ছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তার প্রতি খুশি হয়ে শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন। তিনি মন্ত্রী থাকাকালে রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন। অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়ে তিনি হাজার হাজার কোটি আত্মসাৎ করে তা পাচার করেছেন।

এ সময় আসামিপক্ষে তার আইনজীবী বলেন, ‘মোকতাদির কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। তিনি ফ্যাসিস্টের কোনো সহযোগিতা করেননি। তিনি অবৈধভাবে কাজে জড়িত না। এ হত্যার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অসুস্থ বিবেচনায় তার এ মামলায় জামিন প্রার্থনা করছি।’ পরে শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়। কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতা-কর্মীর ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় মাহফুজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। উবায়দুল মোকতাদির এ মামলার ৩৫নং এজাহারনামীয় আসামি।


খালেদা জিয়ার ১১ মামলা হাইকোর্টে বাতিল

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে দায়েকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতাসহ ১১টি মামলার কার্যক্রম বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এসব মামলা বাতিল চেয়ে দায়েরকৃত আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

আদালতের রায়ের পর সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, হয়রানিমূলক এবং বিগত আওয়ামী সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। তিনি বলেন, একটি মামলা করা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে। এ ধরনের মামলা দায়ের করতে হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। মিথ্যা ও বানোয়াট এ মামলা দায়েরে আইন অনুসরণ না করে খালেদা জিয়াকে আসামি করে হয়রানি করা হয়েছে।

এছাড়াও নাশকতার অভিযোগে করা অন্যান্য মামলাও মিথ্যা ও হয়রানিমূলক তা আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। খালেদা জিয়াকে তার নিজ বাড়ি এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ে বালির ট্রাক দিয়ে বন্দি রেখেও বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত উভয়পক্ষকে শুনে মামলাগুলো বাতিল করে রায় দিয়েছেন। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হওয়া সত্ত্বেও আদালতের কাছে আমরা ইতোপূর্বে ন্যায়বিচার পাইনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের আদালতে বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ খুলেছে।


banner close