হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় দুই কেজি সোনাসহ সৌদি এয়ারলাইন্সের এক নারী কেবিন ক্রুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এনএসআই, কাস্টমস ও এপিবিএনের যৌথ দলের অভিযানে সোনাগুলো উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ওই কেবিন ক্রুর নাম রোকেয়া খাতুন।
জিয়াউল হক জানান, সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে এসভি–৮০৪ ফ্লাইট গতকাল রাত ১০টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলে ওই ফ্লাইটের কেবিন ক্রু রোকেয়া খাতুনকে তল্লাশি করে। তল্লাশির সময় কেবিন ক্রু রোকেয়া খাতুনের কাছ থেকে ১১টি সোনার বার, ৮টি সোনার চুড়ি ও ১টি সোনার চেইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এসব সোনার সম্মিলিত ওজন ১ কেজি ৯৭৯ গ্রাম।
রোকেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উচ্চ আদালত থেকে সন্ত্রাসীদের জামিন হওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজকে (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের শেষ কর্মদিবস ছিল। আমি উনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছিলাম। একটা অত্যন্ত জাতির একটা অত্যন্ত সন্ধিক্ষণে উনি প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। উনি আমাদের যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান আছে, সেটার যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণ করার জন্য বিচার বিভাগীয় যে সংস্কারগুলো ছিল সেই সংস্কারগুলার ক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেই আইনগুলোই করেছি সবকিছুর পেছনে উনার সমর্থন ছিল। উনি আমাদের বিভিন্ন সময় যে বিভিন্ন কনসার্ন ছিল, তা ব্যক্ত করেছি। একটা বিষয় আপনাদের বলে নেই- এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। যেমন ধরেন- হাইকোর্টের কোন কোন বেঞ্চ অস্বাভাবিক জামিন দিয়ে দিচ্ছে। এটা নিয়ে আমি আমার কনসার্নের কথা মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে এর আগে দেখা করে জানিয়েছিলাম। আজকেও (বৃহস্পতিবার) জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন ‘আমি আপনাদের প্রকাশ্যে বলে গেলাম এর আগে যতবার দেখা হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, উনি কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। যে বেঞ্চগুলো থেকে ৪ ঘণ্টায় ৮০০ জামিন দেওয়া হয়েছিল। তিনি তাদের ডেকেও পাঠিয়েছিলেন। উনি উনার মতো ব্যবস্থা নিয়েছেন’- বললেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এই জামিনের প্রকোপ কিছুটা কমেছে, কিন্তু তা এখন অব্যাহত আছে। যে অস্বাভাবিক জামিন- যেখানে আপনার একজন ব্যক্তি, একজন ভয়ংকর ব্যক্তি যিনি জামিন পেয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যারা নায়ক আছে। তাদের উপর হামলা করতে পারেন। এই ধরনের জামিন যখন হয় তখন আমরা প্রচণ্ড সংকিত আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের হাইকোর্টের উপর কোনোরকম কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ থাকার কথাও না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। উনার কাছে আগেও এ ব্যাপার উৎকণ্ঠা জানিয়েছিলাম। আজকে (বৃহস্পতিবার) আবারও জানিয়েছি এবং আমি আশা করি ভবিষ্যতে নতুন যে প্রধান বিচারপতি আসবে উনার সঙ্গে আমার প্রথম যখন মিটিং হবে সেখানে আমি উনাকে বলব যে আজকে (বৃহস্পতিবার) যে ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট নেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোনো নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি আজকে সরি- আমি এভাবে বলছি এটা এভাবে বলা ছাড়া উপায় নাই। কারণ পরিস্থিতি এমন একটা দিকে গিয়েছে যে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য আমাদের যেকোনো এক্সটেন্টে যাকে যা বলার এটা আবার বলতে হবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি আমাদের যে নতুন বিচার প্রধান বিচারপতি থাকবেন ওনার সঙ্গে প্রথম মিটিংয়ে আমি এই ব্যাপারে বলব যে সমস্ত ক্ষেত্রে আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্য অধিকার সেটা জামিন দেবে। বিচারকরা অবশ্যই দেবে। কিন্তু যেই অপরাধী বা যেই ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে আপনাকে, আমাকে খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সে জামিন পেতে পারে না। আমরা এই ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
গুমের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ হত্যার অভিযোগে মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
মামলাটিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তিনটি অভিযোগ আমলে নেওয়ার আবেদন করেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগগুলো আমলে নেন। একই সঙ্গে আগামী ২১ ডিসেম্বর জিয়াউল আহসানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউল আহসান বর্তমানে কারাগারে আছেন।
মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
সুমাইয়ার স্বামী মেজর সাদিকুল হকের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে কোর্ট-মার্শাল গঠন করেছে সেনাবাহিনী।
আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুমাইয়া জাফরিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মামুন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সকালে গুলশান-১-এর জব্বার টাওয়ারের পাশে ৩০-৩৫ জন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। আসামিরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা দেশবিরোধী স্লোগান দেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ ওই দিনই গুলশান থানায় মামলা করে।
আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তে জানা যায়, সুমাইয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অর্থ জোগানদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা। তিনি সক্রিয়ভাবে দেশবিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। আসামি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। তিনি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের অর্থ জোগান দিয়ে থাকেন বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই আসামি সারা দেশের আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সুসংগঠিত করে দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ঘটনায় ভাটারা থানায় করা মামলায় গত ৬ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ আগস্ট তার পাঁচ দিনের রিমান্ড হয়। রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন কারফিউ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উসকানি দেওয়াসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে প্রসিকিউসন পক্ষের শুনানি আগামী ২২ ডিসেম্বর।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শুনানির এই দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, আর প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
গত ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় সালমান ও আনিসুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১।
প্রসিকিউশন পক্ষ জানায়, জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের সময় ফোনালাপ করেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। সে ফোনালাপের এক পর্যায়ে কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের শেষ করে দিতে হবে বলেন তারা। তাদের এ বক্তব্যের পর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাদের এই বক্তব্য হত্যাকাণ্ডে উসকানি হিসেবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ প্রসিকিউশনের।
গত বছরের ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। এরপর থেকে তারা কারাগারে আছেন।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান চলাকালীন ইন্টারনেট বন্ধ করে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরেও এই মামলায় হাজির না হওয়ায়, (পলাতক বিবেচনায়) জয়ের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
সেই সঙ্গে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৭ জানুয়ারী দিন ধার্য করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আর এ মামলায় বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালে হাজির থাকা অপর আসামি সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী লিটন আহমেদ।
গত ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় দুই আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এদিন রিমান্ড শেষে আয়েশাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ওসমান মাসুম। আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করা হয়। পরে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন পুলিশের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান।
গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় ফুফুশাশুড়ির বাড়ি থেকে আয়েশা ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আয়েশার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে তার স্বামী রাব্বির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে গত ১৪ ডিসেম্বর রাব্বি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৮ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৫ ডিসেম্বর আসামি আয়েশা বাদী আজিজুল ইসলামের বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গত ৮ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৭টার সময় তিনি নিজ কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থল থেকে স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরবর্তী সময়ে তিনি আনুমানিক বেলা ১১টার সময় বাসায় ফেরত আসেন। এসে দেখেন- তার স্ত্রী গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা। তারা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। তখন মেয়ের ওই অবস্থা দেখে তাকে উদ্ধার করে পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শাহ আলমকে গ্রেফতার করেছে দিনাজপুর ডিবি পুলিশ । সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নীলফামারী জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ শাহ আলম দিনাজপুর জেলা শহর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি
মঙ্গলবার (১৬)ডিসেম্বর গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো জোদান আল মুসা।
তিনি জানান, আসামী শেখ মোঃ শাহ আলম বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি’সহ বিভিন্ন গ্রেফতারকৃত অপকর্মের সাথে লিপ্ত ছিলেন।
তিনি বিগত ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রামদা-অস্ত্র হাতে নিয়ে ছাত্র-জনতার উপর আক্রমণ করাসহ বির্তকিত ভূমিকা পালন করেন, যা তৎকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। আসামি শাহ আলম দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য গোপনে ছিলেন।
সম্প্রতি পালাতক ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল ও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করে আসছে মর্মে জানান। আসামি বিরুদ্ধে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় হত্যাসহ মোট ০৭ (সাত) টি মামলা রয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টায় করা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের (৩৭) স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক (সামিয়ার ভাই) ওয়াহিদ আহমেদ, অপর আসামি মারিয়া আক্তার লিমাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামিদের আদালতে হাজির করে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
পরে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রোববার পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত, দুষ্কর্মে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক আনিস আলমগীরের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক মুনিরুজ্জামান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
এসময় আসামির উপস্থিতিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। পরে আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উত্তরা পশ্চিম থানার প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের একটি জিম থেকে বের হওয়ার পর আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
একই রাতে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মারিয়া কিসপট্টা (ফ্যাশন মডেল) ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ (উপস্থাপক)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে ঘাপটি মেরে দেশে অবস্থান করে দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং দেশের অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র করে আসছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে বসে নিষিদ্ধ সংগঠনকে ফিরিয়ে আনার জন্য নানা গুজব (প্রপাগান্ডা) চালিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা করছে। তাদের বিভিন্ন পোস্টের ফলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অনুপ্রাণিত হয়ে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।
২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে দায়ীদের তালিকায় নাম থাকার অভিযোগে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের অপসারণ চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটকারী আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু এই রিট আবেদনটি দায়ের করেছিলেন। এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর তিনি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে দাবি করেন যে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মতো সংবেদনশীল ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে নাম আসা কোনো ব্যক্তির পুলিশ প্রধানের পদে থাকা ন্যায়বিচার ও জনআস্থার পরিপন্থী।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ২০০৯ সালের ওই নৃশংস ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অসংখ্য সদস্য শহীদ হন। তদন্ত প্রতিবেদনে নাম আসার পর আইজিপি পদে বহাল থাকলে তা অপরাধের বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি করতে পারে। তাই সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে অবিলম্বে অপসারণ বা বরখাস্তের দাবি জানানো হয়। তবে শুনানির দিন রিটকারী আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
সাবেক বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এএফএম মেজবাহ উদ্দিনের মৃত্যুতে আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ আধাবেলা বন্ধ থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, তাঁর সম্মানে এদিন চেম্বার আদালতেও কোনো কার্যক্রম হবে না।
রবিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এএফএম মেজবাহ উদ্দিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। সুপ্রিম কোর্ট বার এক বার্তায় তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। আজ বাদ জোহর তাঁর জানাযা সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হবে।
এএফএম মেজবাহ উদ্দিন ১৯৭৭ সালের ৩ অক্টোবর সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর স্থায়ী বিচারপতি না হওয়ায় পুনরায় আইন পেশায় ফিরে আসেন। তিনি ২০০৯-২০১০ সেশনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর মেয়ে অ্যাডভোকেট সীমন্তী আহমেদ জানিয়েছেন যে, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিনকে বনানী গোরস্থানে দাফন করা হবে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম করে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২১ ডিসেম্বর।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
মামলার ১৭ আসামির মধ্যে শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।
তারা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।
আসামিদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সাবেক প্রতিরক্ষা-বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন পলাতক রয়েছেন।
র্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জন ব্যক্তিকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিজের নামে অনৈতিকভাবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদুকের তথ্য মতে, ইস্টার্ন হাউজিংকে অনৈতিক উপায়ে ঢাকার গুলশানে একটি প্লট নির্মাণের অনুমতি দিয়ে টিউলিপ সিদ্দিক একই ভবনে একটি বিনামূল্যের ফ্ল্যাট পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল টিউলিপ সিদ্দিক, রাজউকের দুই সাবেক আইন কর্মকর্তা শাহ খসরুজ্জামান ও সরদার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।
জুলাই মাসে তদন্ত যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, তখন মামলার আসামি শাহ খসরুজ্জামান হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। এতে তিন মাসের জন্য তদন্ত স্থগিত হয়ে যায়।
পরে দুদক চেম্বার আদালতে আপিল করলে ‘নো অর্ডার’ আদেশ পায়।
দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেন, ‘অন্য কোনো বিকল্প না থাকায়, মামলা থেকে খসরুজ্জামানকে বাদ দিয়ে পাঁচ মাস পর চার্জশিট দাখিল করতে হচ্ছে।’
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। একই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর ও তার বোন শেখ রেহানাকে সাত বছর সাজা দেন আদালত।