আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পর্যায়ে চলবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম। সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার প্রশাসন ও বিচার (ভারপ্রাপ্ত) কাজী আরাফাত উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম সীমিত পর্যায়ে সরাসরি/ভার্চুয়ালি (সুবিধাজনক উপায়ে) চলবে। এতে আরও বলা হয়, এ সময়ে দপ্তর ও শাখা সমূহের কার্যক্রম সীমিত আকারে পরিচালিত হবে।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেন যে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার (৭ ও ৮ আগস্ট) বন্ধ থাকবে। তবে সীমিত পরিসরে সুপ্রিম কোর্টের দাপ্তরিক কাজ পরিচালিত হবে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন এ তথ্য জানান।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘঠিত হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এ আদেশ জারি করে ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুনায়েদ আহমেদ পলককে ১০ ডিসেম্বর হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগে থেকে জুনায়েদ আহমেদ পলক একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
এরআগে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পাশাপাশি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলকের বিরুদ্ধেও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তদন্তের পর প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় বা প্রসিকিউশনে দাখিল করে। পরে প্রসিকিউশন তা যাচাই–বাছাই করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও শপথ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামত প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলও খারিজ করেছে আপিল বিভাগ।
৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন প্রক্রিয়া বৈধ প্রমাণিত হলো বলে জানান আইনজীবীরা।
লিভ টু আপিলের পক্ষে আপিলকারী সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ নিজে শুনানি করেন। অন্যদিকে ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হওয়া লেখক ফিরোজ আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। ইন্টারভেনার হয়ে আরও শুনানি করেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দেশ পরিচালনার জন্য সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং উপদেষ্টাগণ শপথ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ নিয়ে রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে পরে তিনি লিভ টু আপিল করেন।
রিট খারিজের আদেশে হাইকোর্ট বলেন, এক ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের উপদেশমূলক মতামত গ্রহণ করেছেন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাই এটি আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছার সমর্থনপুষ্ট।
আদালত আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ এবং আগামী বহু বছর জনগণ তা স্মরণে রাখবে।
সংবিধানের ১০৬ নং অনুচ্ছেদে ‘সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার’-এর কথা বলা আছে। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে যদি মনে হয় জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো আইনি প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে বা হতে পারে এবং এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের কাছে পাঠাতে পারবেন। আপিল বিভাগ উপযুক্ত শুনানির পর রাষ্ট্রপতিকে মতামত জানাতে পারবেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। গঠন ও শপথের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ১০৬ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।
রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্স (১/২৪) অনুযায়ী তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেন। তাতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে পারবেন এবং তাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
পাশাপাশি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলকের বিরুদ্ধেও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কর্মরত সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম এসব তথ্য জানান।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার লেখেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান ও জুনায়েদ আহ্মেদ পলকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে প্রসিকিউশন।
নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তদন্তের পর প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় বা প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে প্রসিকিউশন তা যাচাই–বাছাই করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়।
সাবেক ছাত্রদল নেতার বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান (ম খা) আলমগীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার চার্জশিট গ্রহণ বিষয় শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মাহামুদুন্নবী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছি।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী জান্নাত আরা ফেরদৌসের স্বামী মোহাম্মদ শামীম পারভেজ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার। সাবেক প্রচার সম্পদক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এবং সাবেক ভিপি সরকারি বাংলা কলেজ মিরপুর। যার দরুন তৎকালিন আওয়ামী লীগ দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে বিভিন্ন মামলা হামলা করে আসছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নির্দেশে অপর আসামিরা তার বাড়ির প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে প্রতিটি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র ভাংচুর ও লুটপাট করে ২২টি ল্যাপটপ, ১৭টি স্মার্ট মোবাইল ফোন, আনুমানিক ২০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং বাদীর বাড়ির ২য় তলা থেকে নগদ নয় লাখ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং ভাংচুর ও লুটপাট শেষে বাদীর নাবালক সন্তানসহ বাড়ির ৫৪ জন ভাড়াটিয়াকে অবৈধভাবে আটক করে এবং মারপিট করে। এ ঘটনায় জান্নাত আরা ফেরদৌস বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মাহামুদুন্নবী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক ও বিটিআরসির সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি।
গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট ও রেভিনিউ শেয়ার বেআইনিভাবে কমিয়ে রাষ্ট্রের ৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে দুদক এই মামলাটি করেছে। দুদকের ইতিহাসে এই প্রথম খোদ সংস্থারই কমিশনার পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হলো। যিনি ঘটনার সময় বিটিআরসির কমিশনার ও পরবর্তীতে সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক জালাল উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন– বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক, সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুমোদন ছাড়াই পরীক্ষামূলক সময়ের কল রেট কমিয়ে ০.০৩ ডলার থেকে ০.০১৫ ডলার করে এবং সরকারের রেভিনিউ শেয়ার ৫১.৭৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনে। একই সঙ্গে আইজিডব্লিউ অপারেটরের শেয়ার ১৩.২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। যার মাধ্যমে রেভিনিউ শেয়ার কমানোর ক্ষতি ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, কম রেটে কল আনায় ক্ষতি ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা না আনায় ক্ষতি ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে রাষ্ট্রের মোট ক্ষতি ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪১৮, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে জহুরুল হকের বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলেও জানা গেছে।
জানা গেছে, দুদকের সাবেক কমিশনার জহুরুল হকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ঘুস-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে ব্যবহার করে তিনি অর্থ পাচার করেছেন মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে। ২০২১ সালে দুদকের কমিশনার পদে নিয়োগ পাওয়ার পর দুদকের সাবেক এই কমিশনার ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে তার নিজ নামে একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। এর আগেও তিনি রাজউক থেকে নিজের ও স্ত্রী মাছুদা বেগমের নামে পৃথক দুটি ৫ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।
২০২২ সালের ২৩ আগস্ট মো. জহুরুল হক তার নিজের নামে বরাদ্দ দেওয়া ৫ কাঠার প্লটের পরিবর্তে ১০ কাঠা আয়তনের প্লট দিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের ১০ নম্বর সেক্টরের ৪০২ নম্বর রোডের ৫ কাঠা প্লটটিকে বাড়িয়ে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেয়। আগের প্লটের সঙ্গে ২০২৪ সালের ৩০ জুন তার নামে প্লট রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস) রুলস ১৯৬৯ বিধিমালা অনুযায়ী, স্বামী ও স্ত্রীর নামে আলাদা আলাদা প্লট বরাদ্দ দেওয়ার নিয়ম নেই।
চট্টগ্রামে ই-পারিবারিক আদালত প্রতিষ্ঠার ৩ দিনে দাখিল হয়েছে একটি মামলা। ১৩ বছর বয়সি সন্তানের অভিভাবকত্ব ফিরে পেতে এক পিতা গত সোমবার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ রয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ই-পারিবারিক আদালকে মামলা লড়তে ১৪৫ জন আইনজীবী নিবন্ধন করেছে। এমনটাই জানিয়েছেন চট্টগ্রাম পারিবারিক আদালতের সেরেস্তাদার রুপা মহাজন। এর আগে গত রোববার চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ই-পারিবারিক আদালত চট্টগ্রাম এর উদ্বোধন করেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা। তিনি বলেন, ই-পারিবারিক আদালত দেশের বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমানোর একটি বড় পদক্ষেপ। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার আবেদন, দৈনন্দিন কার্যক্রম-সবই অনলাইনে সম্পন্ন হবে। আর কাগজপত্রের ব্যবহার থাকবে না।
সচিব বলেন, ই-পারিবারিক আদালত পাঁচটি বিষয়ে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হবে- বিবাহবিচ্ছেদ, দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, মোহরানা, ভরণপোষণ, সন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত।
তিনি বলেন, ই-পারিবারিক আদালত দেশে বিচারপ্রার্থী মানুষের দুর্ভোগ কমানোর একটি বড় পদক্ষেপ। ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর এ আদালতে মামলার আবেদন থেকে প্রতিদিনের কার্যক্রম- সবই অনলাইনে সম্পন্ন হবে। থাকবে না কোন কাগজের ব্যবহার। বিচারপ্রার্থীদের মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া হবে।
সচিব বলেন, চট্টগ্রামের এ পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি সেবা প্রদানে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। ডিজিটাল প্রযুক্তির পাশাপাশি ম্যানুয়ালি কার্যক্রমও থাকবে। তবে ই–পারিবারিক আদালতে নথি হারানোর শঙ্কা কম থাকবে। বিচারপ্রার্থীদের যেকোনো মামলার নথি অল্প সময়ের মধ্যে বের করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে হয়রানিও অনেকাংশে কমবে। ই–পারিবারিক আদালতে বিচারপ্রার্থীদের মামলার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি ও অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এতে বিচারকার্য স্বচ্ছ ও ঝামেলামুক্ত হবে। সচিব আরও বলেন, যেকোনো স্থান থেকেই বাদী ও বিবাদীরা অনলাইন হাজিরা দিতে পারবেন। নিজস্ব পোর্টালে আইনজীবীর পরিচালিত সব নথি থাকবে একসঙ্গে। ফলে ব্যবস্থাপনা হবে সহজ। এদিকে যেকোনো জায়গা থেকে লগইন করে নথির কাজ যেকোনো সময়ে খসড়া করে রাখতে পারবেন আইনজীবীরা। নথি জমা দেওয়া, কপি তোলা ও বারবার একই তথ্য প্রস্তুতের কাজ কমবে। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, এটি পেপারলেস আদালত। বিচারকার্যকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ঝামেলামুক্ত করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ই-পারিবারিক আদালত চালু হওয়ায় পারিবারিক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। বছরের পর বছর আদালতে ঘুরতে হবে না।
উল্লেখ্য, ই-পারিবারিক আদালতের সেবার জন্য প্রথমে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রার বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ, পুরো নাম, মুঠোফোন নম্বর ও ই-মেইল যুক্ত করতে হবে; সঙ্গে দিতে হবে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড।
ভারতের স্বার্থ রক্ষায় ও নিজের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন শেখ হাসিনা। হত্যাকাণ্ডের মূল মেসেজ ছিল কোনো সেনাকর্মকর্তা যদি ভারতবিরোধী হন, তাহলে তাদের পরিণতি পিলখানার মতো হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীতে রাওয়া ক্লাবে বিডিআর তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশে শহীদ পরিবারের মতপ্রকাশ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাবেক বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থে ও নিজের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার স্বার্থে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। কোনো সেনাকর্মকর্তা ভারতবিরোধী হলে তার অবস্থা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মতো হবে, এটাই মেসেজ ছিল এই হত্যাকাণ্ডের। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে, আমরা ছাড়ব না। রিপোর্টে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করতে হবে সরকারকে। মীর জাফরদের বিচার করতে হবে, না হলে আরও একটা পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রথম আমাদের দেশের মীর জাফরদের দিয়ে শুরু করতে হবে। সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তা আমার বাবাসহ ৫৭ জন অফিসারের সঙ্গে বেইমানি করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতেই হবে। যদি এই মীর জাফরদের বিচার না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরেকটা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ রয়ে যাবে। গত ১৬ বছর এতিম হয়ে ঘুরেছি, শরীরে সেনা রক্ত, এখানে কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না। এদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতেই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে পিলখানায় হত্যার শিকার শহীদ কর্নেল কুদরত-এ-এলাহী রহমান শফিকের ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, আমরা আশা করেছিলাম কমিশন আমাদের রিপোর্টের সামারাইজ ভার্সন দেবে। একটা মোটামুটি সামারাইজ ভার্সন হয়ত দেশবাসী প্রত্যাশা করেছিল কমিশনের কাছে। তবে সম্পূর্ণ রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সব বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
মূল সমন্বয়কারী ফজলে নূর তাপসের বিষয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাপসের বিষয়টি নতুন কিছু না, এমনকি তখন পত্র-পত্রিকার সংবাদেও এসেছে তাপস বিভিন্ন সময়ে পিলখানার ভেতরে গিয়েছেন এবং তার বাসায় মিটিং হতো। তার যুক্ত থাকার বিষয়টি একেবারেই সারপ্রাইজিং না। উনার বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আমরা কিন্তু আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছি। তখন আমরা অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছি। লিস্ট ধরে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই মানুষগুলো কিন্তু এখনো আছে, আমাদের আশপাশে তারা থাকে। আমাদের বাবাদের সাথে চাকরি করেছে, মেসে থেকেছে, একসঙ্গে খেয়েছে এবং বিভিন্ন সময় একসঙ্গে অপারেশন করেছে। উনারা আমাদের সামাজিক জীবনের একটা অংশ ছিল। উনাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতেই হবে। না হলে যত সময় যাবে উনাদের কিন্তু আর আস্তে আস্তে পাওয়া যাবে না।
আপনারা বলছেন কমিশন অনেকের নাম প্রকাশ করেনি, আপনারা কি মনে করেন তাদের নাম প্রকাশ করা উচিত নাকি আগে ট্রায়ালে নিয়ে আসা উচিত– এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব রহমান বলেন, জনসম্মুখে প্রকাশ করার আগে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। এর আগে প্রকাশ করা হলে এই ঝুঁকিটা থেকে যায় যে, তারা পালিয়ে যেতে পারে।
আপনারা বলছেন সার্ভিং অনেক অফিসার জড়িত ছিলেন, তারা কারা এবং এক্স অনেক অফিসার আপনাদের হুমকি দিচ্ছেন ইন্টারনেটে, তারা কারা? তাদের নাম কী? –এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদ কর্নেল কুদরত-এ-এলাহীর ছেলে বলেন, বিষয়টি প্রসিকিউশনের হাতে না পড়া পর্যন্ত মন্তব্য করা উচিত হবে না। আর যেসব অফিসার হ্যারাসমেন্টের সঙ্গে জড়িত, আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এখন তাদের নাম বলব না। তবে আমাদের কাছে প্রতিটা বিষয়ের প্রমাণ আছে।
তৎকালীন সেনা অফিসারদের কী ভূমিকা ছিল– জানতে চাইলে সাকিব রহমান বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থেকে শুরু করে অফিসারদের কার কী ভূমিকা ছিল সেটার কিন্তু ডকুমেন্ট আছে। তবে তাদের কার কী ভূমিকা ছিল সেটা টেকনিক্যাল কারণে হলেও আমরা এখন বলতে পারি না। যেহেতু এ বিষয়ে আমরা পেশাদার না। আমরা আমাদের পরিবারের জায়গা থেকে কথাগুলো বলেছি।
বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কী ধরনের নিরাপত্তা হুমকি আপনারা পেয়েছেন বা শহীদ পরিবারের সদস্যরা পেয়েছে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সবসময় একটা সিকিউরিটি থ্রেট এসেছে। যাদের নাম এখনো আসেনি, ভবিষ্যতে যদি আসে, সেখান থেকেও আমাদের একটা হুমকি আছে, তাদের নাম আসার পর।
কমিশনের প্রতিবেদনে ভারতের ভূমিকার বিষয়টি উঠে এসেছে, এ বিষয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মন্তব্য জানতে চাইলে সাকিব রহমান বলেন, আমার মনে হয় না সম্পূর্ণ রিপোর্ট পাওয়ার আগে আমরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব।
এক প্রশ্নে জবাবে সাবেক বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য তিনটি এলিমেন্ট কাজ করেছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ফরেন এলিমেন্ট, যেটি ভারতকে বলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কমিশন বলেছে, ওই সময় পিলখানায় ভারতীয় নাগরিকদের উপস্থিতি ছিল, সেটার প্রমাণ তারা পেয়েছেন। আরেকটা ছিল পলিটিক্যাল এলিমেন্ট, সেটা হলো শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের লোকজন।
শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মো. আব্দুস সালাম এ রায়ের দিন ধার্য করেন। এদিন আদালতে মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
এদিন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এ দিন ঠিক করেন।
এ বিষয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাইফুল্লাহ আল মামুন (সাইফুল) জানিয়েছেন।
নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মিটিংয়ে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’গঠন করে একটি গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বুঝিয়ে দেওয়া এবং তা নিশ্চিতকরণের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাবেন বলে অনেকেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মোট ৫৭৭ জন অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উক্ত জুম মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে এবং শেখ হাসিনার সব নির্দেশ পালন করার ব্যাপারে একাগ্রচিত্তে মত প্রকাশ করেন। ড. রাব্বি আলমের (যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) হোস্টিং এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হোস্ট, কো-হোস্ট ও অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের কথোপকথনে ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে প্ল্যাটফর্মে দেশ-বিদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীরা বৈধ সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে দেবে না মর্মে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মিটিং এ বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। এরপর সিআরপিসির ১৯৬ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১৪ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. এনামুল হক। আদালত চার্জশিটটি গ্রহণ করে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
হাসিনা ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাবিনা আক্তার তুহিন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলম, জয়বাংলা ব্রিগেডের সদস্য কবিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এলাহী নেওয়াজ মাছুম, জাকির হোসেন জিকু, প্রফেসর তাহেরুজ্জামান, এ কে এম আক্তারুজ্জামান, আজিদা পারভীন পাখি, শাহীন, অ্যাডভোকেট এএফএম দিদারুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান, সাবেক এমপি সৈয়দ রুবিনা আক্তার, সাবেক এমপি পংকজ নাথ, লায়লা বানু, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, রিতু আক্তার, নুরুন্নবী নিবির, সাবিনা বেগম ও শরিফুল ইসলাম রমজান।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।
আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার অপর আসামি জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।
গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার রায়কে ঘিরে ঢাকার আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিয়মিত দায়িত্বে থাকা পুলিশের পাশাপাশি বাড়তি পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রায় ঘোষণা করবেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদক এ মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান বাসসকে বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত দুই প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের দুই প্লাটুন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আদালতপাড়া ও আশপাশের এলাকায় র্যাবের টহলও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানা ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন। এ অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন গত ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ এবং তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।সূত্র : বাসস
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে জালিয়াতি করে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে।
ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম আজ সকালে রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে শেখ হাসিনাসহ ১৭ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রত্যাশা করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১ ডিসেম্বর ধার্য করেছিল।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য রয়েছে। আমরা সব সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রত্যাশা করছি।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলায় অন্য আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের মামলায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে শাহরিয়ার কবিরকে আগামী ১২ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার কবিরকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে জুলাই আন্দোলনকালে গুলিতে গৃহকর্মী লিজা আক্তার নিহতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন আদালতে হাজির করা হয়। এদিন পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ।
ওই রিমান্ড শেষে ২৩ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার কবিরকে আদালতে হাজির করে আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে রফিকুল ইসলাম ও আরিফ নিহতের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক শুনানি শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখান। ২০ অক্টোবর তাকে ফের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে (পুতুল) এক মামলায় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে আদালত রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন। সে অনুযায়ী রায় দেওয়া হলো। পৃথক তিন মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৭। তবে ব্যক্তি হিসাবে এই সংখ্যা ২৩।
এদিকে, রায়কে কেন্দ্র ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যসহ বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
রায়ে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলো রাষ্ট্রপক্ষ।
এই তিন মামলায় শুরু থেকে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল পলাতক রয়েছেন। রাজউকের সাবেক সদস্য খুরশীদ আলম কারাগারে রয়েছেন। শেখ হাসিনা তিন মামলার আসামি। জয় ও পুতুল পৃথক এক মামলার আসামি।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। এই মামলায় ২৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অপর আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
অপরদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দু’জনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। এ মামলায় আদালতে ২৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
এছাড়াও, রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদি হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। এই মামলায় আদালতে ২৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলার অপর ১৬ আসামি হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।