বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর আদাবর থানার গার্মেন্টসকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় সাংবাদিক দম্পতি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক উপস্থাপক ফারজানা রুপাকে ৯ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক মিন্টু চন্দ্র বণিক তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। তাদের পক্ষে রহিম মিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২১ আগস্ট হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেক শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে আটক করা হয়। ২২ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানার ফজলুল করিম হত্যা মামলায় তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৬ আগস্ট রুবেল হত্যা মামলায় তাদের আরও ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা বেলা ১১টার দিকে আদাবর থানাধীন রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতা-কর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় মামলাটি করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, নায়ক ফেরদৌস, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
কৃষিপণ্য ও অন্যান্য মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রেনের লাগেজ ভ্যান কেনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ৩৫৮ কোটি টাকা ‘ক্ষতি’ করার অভিযোগে রেলের সাবেক মহাপরিচালকসহ ছয়জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদক জানায়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘রোলিং স্টক অপারেশনস ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ এর অধীনে ১২৫টি লাগেজ ভ্যান কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রকল্প প্রস্তাবে ৭৫টি মিটার গেজ লাগেজ ভ্যান কেনায় ব্যয় ধরা হয় ১৭৬ কোটি টাকা এবং ৫০টি ব্রড গেজ লাগেজ ভ্যান কেনায় ১৫২.৬ কোটি টাকা অর্থাৎ, মোট ৩২৮.৬ কোটি টাকা। সেখানে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আয় দেখিয়ে প্রকল্পটিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হিসেবে তুলে ধরা হয়। দুদক জানায়, প্রকল্প অনুমোদন থেকে শুরু করে ক্রয়-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিভিন্ন ধাপে তারা ‘অনিয়ম, অবহেলা এবং উদ্দেশ্যমূলক’ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা রাষ্ট্রীয় অর্থের বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে এনেছে। দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় গুরুতর অসদাচরণে’ জড়িত ছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ মাহবুব চৌধুরী, রেলওয়ের পরিচালক মৃণাল কান্তি বণিক, প্রকল্পটির পরিচালক আব্দুল মতিন চৌধুরী, প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালন করা রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. হারুন-অর-রশীদ, রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান এবং সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩২.৪৬ কোটি টাকার মুনাফা দেখানো হলেও ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে প্রকৃত আয় হয়েছে মাত্র ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল প্রায় ৯ কোটি টাকা। বাজার সমীক্ষা, কৃষক বা ব্যবসায়ীদের প্রকৃত চাহিদা যাচাই, স্টেশন পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা মূল্যায়ন- এসব মৌলিক বিষয় ‘যথাযথভাবে’ সম্পন্ন করা হয়নি। বরং প্রকৃত প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ লাগেজ ভ্যান ক্রয়ের বিষয়টি প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ফলে ১২৫টি লাগেজ ভ্যান কেনার সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রের ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭৭ক/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় তাদের নামে মামলা দায়ের হয়েছে।
পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের পৃথক তিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ ও বাদীর জেরা সমাপ্ত হয়েছে।
গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে এ মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিনকে জেরা করা হয়।
এছাড়াও এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া সাক্ষ্য দেন। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরার দিন ধার্য করেছেন। দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান লিপন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এরপর থেকে শেখ রেহানা ও তার তিন ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন— শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারক হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বহুল আলোচিত এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ এনে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল প্রসিকিউশন। অন্যদিকে, আসামিদের নির্দোষ দাবি করে খালাস চায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। এছাড়া রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের খালাস চান তার আইনজীবী।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস. এইচ. তামিম শুনানি করেন। এছাড়া শুনানিতে প্রসিকিউটর বি. এম. সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বোমোট ৫৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার চলছে।
চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ (সোমবার) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ঐতিহাসিক এই রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বহুল আলোচিত এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ এনে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি চান প্রসিকিউশন।
অন্যদিকে, আসামিদের নির্দোষ দাবি করে খালাস চান তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। এছাড়া রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের খালাস চান তার আইনজীবী।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস. এইচ. তামিম শুনানি করেন। এছাড়া শুনানিতে বি. এম. সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। মোট ৫৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সে সব অভিযোগের বিচার চলছে।
জুলাই বিপ্লবের শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছে, রাষ্ট্র ন্যায়বিচার পেয়েছে। রায়ের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রায় ঘোষণা করেন।
একই অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। অপর আসামি ও পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।
এ রায়ে উল্লাস করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার রায় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করে ডাকসু। টিএসসিতে সরাসরি রায় দেখতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীরা।
জুলাই গণহত্যায় শেখ হাসিনার মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজনভ্যানে করে মামুনকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
মাথা নিচু করে ট্রাইব্যুনালে ঢুকেন তিনি। তবে মামুনের শাস্তির বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন প্রসিকিউশন। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করবেন।
ইতোমধ্যে কারাগারে থাকা মামুন ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, তার শাস্তির বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে এ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের সামনের পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
চব্বিশের জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলার রায় ঘোষণা হবে সোমবার (১৭ নভেম্বর)। আর এ রায় সরাসরি দেখতে পাবে গোটা বিশ্ব। একইসঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বড় পর্দায় এ বিচারকাজ দেখানো হবে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) এমনটিই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
সূত্র জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রায় শোনার অপেক্ষায় গোটা জাতি। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ। তাই এ রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। যেন এ বিচারকাজ আগামীর জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকে। এছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে বড় পর্দা বসাবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ফলে ঢাকাবাসী সহজেই এ বিচারকাজ দেখতে পারবে।
এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ১৩ নভেম্বর দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা।
গত ২৩ অক্টোবর এ মামলায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, সেসব বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। পরে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের কয়েকটি বিষয়ে জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর তাদের কিছু কথার পাল্টা উত্তর দেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। পরে রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এর সপ্তাহখানেকের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জুলাই গণহত্যার প্রথম কোনো রায় শুনবে জাতি।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নামও রয়েছে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। এজন্য যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা-কামালের চরম দণ্ড বা সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদও তার অ্যাকুইটাল (খালাস) চেয়েছেন। সবমিলিয়ে সাবেক এই আইজিপির মুখে হাসি ফুটবে নাকি অন্য কিছু; তা জানা যাবে রায় ঘোষণার দিন।
শেখ হাসিনার এ মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর।
এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
জাতি ঐক্যবদ্ধ আর জনগণ যদি জেগে থাকে তাহলে দেশের ভাগ্য নিয়ে বা দেশে নৈরাজ্য করার শক্তি কারোরই কোনোদিন ছিল না কিংবা হবেও না বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ধার্যের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রায় ঘোষণার দিন ধার্য ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, সরাসরি যদি কেউ বিচারপ্রক্রিয়াকে বানচালের জন্য কোনো হুমকি দেন কিংবা কোনো কার্যক্রম করেন, সেটা আদালতের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল হবে। আমরা আমাদের আইনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে চাই। তবে দেশে সরকার আছে, জনগণ আছেন তারা সবকিছু ভালো বোঝেন। এছাড়া যারা উসকানি দেবেন বা সন্ত্রাসের চেষ্টা করবেন সে ব্যাপারে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের দেশপ্রেম ও ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বাহিনীর প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আশা করি যা কিছু বিচ্ছিন্নভাবে ঘটছে সেগুলো কোনো জায়গায় প্রভাব পড়বে না। সবকিছু স্মুথলি হবে এবং বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাবে।
বিচারকাজ নিয়ে জাতিসংঘে আওয়ামী লীগের অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, যারা যা খুশি প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করতে পারেন। এই বিচার আমরা যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এসেছি সেটা ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) ছিল। এখানে অকাট্য ও শক্তিশালী সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। জাতির সামনে এই বিচার হয়েছে। আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুনিয়ার সামনে ক্রিস্টাল ক্লিয়ারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সুতরাং তারা যত খুশি প্রশ্ন করতে পারেন। আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। ন্যায়বিচার নিজস্ব গতিতেই চলবে।
এদিন দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের রায়ের দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এছাড়া মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদও ছিলেন।
গত ২৩ অক্টোবর এ মামলায় সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রধানমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল; সেসব বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। পরে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের কয়েকটি বিষয়ে জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর তাদের কিছু কথার পাল্টা উত্তর দেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। পরে রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এর সপ্তাহখানেকের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জুলাই গণহত্যার প্রথম কোনো রায় শুনবে এ জাতি।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নামও রয়েছে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। এজন্য যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা-কামালের চরম দণ্ড বা সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদও তার অ্যাকুইটাল (খালাস) চেয়েছেন। সবমিলিয়ে সাবেক এই আইজিপির মুখে হাসি ফুটবে নাকি অন্য কিছু; তা জানা যাবে রায় ঘোষণার দিন।
শেখ হাসিনার এ মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর।
এ মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮৪ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে দায়ের হওয়া একটি মামলায় বন বিভাগের ফরেস্টার সুলতানুল আলম চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১২ নভেম্বর) চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন আসামি সুলতানুল আলম আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন এবং আসামিকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের দাগনভূঞা সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার সুলতানুল আলম চৌধুরী ১৯৯০ সালে বন বিভাগের নার্সারি প্রকল্পে প্ল্যান্টেশন সহকারী হিসেবে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। ২০০০ সালে তাঁর চাকরি স্থায়ী হয় এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে ফেনীর দাগনভূঞায় কর্মরত আছেন।
২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে সুলতানুল আসামি করে মামলাটি করেছিলেন। তদন্ত শেষে গত ১২ মার্চ চট্টগ্রাম দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সুলতানুল আলম চৌধুরীর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর বাইরে তার নামে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৪৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এছাড়া, দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তিনি আরও ১ লাখ ৬১ হাজার টাকার সম্পদ গোপন করেন।
দুদক চট্টগ্রামের আইনজীবী মো. রেজাউল করিম রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলেন। কিন্তু আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এক যুগ আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। তিনি এ মামলার অগ্রগতি তুলে ধরে আরও দুই মাস সময়ের আবেদন করেন। শুনানি শেষে তার আবেদন মঞ্জুর করে নতুন দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন গ্রেপ্তার রয়েছেন। তাদের আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে পুলিশ।
আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক ও পুলিশের সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল্যা নজরুল ইসলাম।
এর আগে, ১২ আগস্ট এ মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। তবে তদন্ত শেষ না হওয়ায় ফের সময় বাড়ানো হয়।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের নেতক আজিজুল হক। হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় ২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক এমপি হাজি সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার, একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের, এবিনিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাস সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও এনএসআইয়ের মো. মনজুর আহমেদ।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এর আগে ১১ নভেম্বর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবির মতিঝিল, গুলশান, রমনা, লালবাগ, তেজগাঁও, উত্তরা ও সাইবার ক্রাইম বিভাগের টিমগুলো এসব অভিযান পরিচালনা করে।
সুনামগঞ্জে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মঙ্গলবার এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো. লিটন আহম্মদ ওরফে লিটন মিয়া। তাকে একই সঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে। মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌসুলি (পিপি) মো. শামসুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার দোয়ারবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পান্ডারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ আহমদের বাড়িতে গত বছরের ২৯ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটে। ফরিদ আহমদের স্ত্রী সাবিনা আক্তার তাদের ছোট মেয়ে প্রমি আক্তারকে নিয়ে আগের দিন তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। সাবিনা আক্তারের বাবার বাড়ি একই উপজেলার আমবাড়ী যোগীরগাঁও গ্রামে। পরদিন সন্ধ্যায় সাবিনা আক্তার অসুস্থবোধ করলে তিনি চিকিৎসার জন্য স্থানীয় শ্রীপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক নাছির উদ্দিনের ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে মধ্যবাজারে আসার পর তার ছেলে মিনহাজ দৌড়ে গিয়ে জানায় তার মেয়ে তমা আক্তার (১৮) ফাঁস লাগানোর মতো ঝুলে রয়েছে। তখন ফরিদ আহমদসহ অন্যরা বাড়িতে গিয়ে দেখেন তমা আক্তার রান্না ঘরের দরজার তীরের সঙ্গে হাঁটু ভাজ করা অবস্থায় ফাঁস দেওয়ার মতো করে রয়েছে। তমা আক্তারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। জিব্বা দাঁত দিয়ে চেপে ধরা এবং পড়নের সেলোয়ার খোলা ছিল।
এ ঘটনায় পরদিন ফরিদ আহমদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় লিটন আহমদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলাটির দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে আসামি লিটন আহম্মদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে আদালতের বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তোজাম্মেল হোসেন (৪৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার রায়ে ৩ জনের ফাঁসি এবং ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র দায়রা জজ মো. শাজাহান কবীর এই রায় দেন। মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাজেদুর রহমান পিন্টু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারের পর তাদের সাজা কার্যকর হবে বলে আদালত জানিয়েছেন। রায়ে প্রত্যেক আসামির ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মনিরুজ্জামান ওরফে মিশু (৩০), বাবুল প্রাং ওরফে আবুল কালাম আজাদ (৩৫) ও মানিক (৩২)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-দেলোয়ার হোসেন দলু (৬৮), পিন্টু ওরফে মাজেদুর রহমান (৪৬) ও আশিক (৩০)। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শান্ত নামের এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর আসামিরা গাবতলীর দুর্গাহাটা ইউনিয়নের বৈঠাভাঙা মোড়ে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তোজাম্মেল হোসনেকে হত্যা করে। তোজাম্মেল হোসেন গাবতলীর দুর্গাহাটা ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান মোল্লার ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ বলেন, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তোজাম্মেল হোসেন সেদিন এক আত্মীয়ের বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে চারমাথা মোড়ে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়িভাবে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতের বড় ভাই মমিন মামলার বাদী হিসেবে অভিযোগ দায়ের করেন। দীর্ঘ ৮ বছর পর আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নিহতের পরিবার।