রোববার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

আরও এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সালমান, আনিসুল ও নূর

ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৭:৫৪

ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে এবং মামুন নামের এক দোকান কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ রোববার কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তাদের আইনজীবী জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন ১৪ আগস্ট তাদের দুইজনের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় এদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামুন নামের এক দোকান কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় বেইলী রোডের নওরতন কলোনী থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর হোটেল কর্মচারী মো. সিয়াম সরদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান।

এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত হন মামুন।

এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট তার বাবা আজগর আলী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কারকাজ শেষ পর্যায়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কারকাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

সংস্কারকাজ শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন যে নান্দনিক রূপে দেখা যাবে তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কারকাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিভিন্ন মিস্ত্রি ও তাদের কর্মীরা।

এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল-সংলগ্ন বাগান নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এই সংস্কারকাজের সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে। যেখানে কয়েকশ কর্মী এখন নিয়মিত কাজ করছেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মানের বিচার কার্যক্রম চলবে এমন ট্রাইব্যুনাল ভবনকে উপযোগী করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের পূর্বে অনেকটাই জরাজীর্ণ ছিল।

এরই মধ্যে দুইবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ট্রইব্যুনালের পুরাতন মূল ভবনের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় আপাতত ভবন-সংলগ্ন অস্থায়ী ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।

গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়।

গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। জাজ্বল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর এ আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

এ ছাড়া ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আগামী ২০ নভেম্বর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য রয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।


সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির গ্রেপ্তার, ৫ দিনের রিমান্ডে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিকর্মী মকবুলকে হত্যার অভিযোগে পল্টন মডেল থানার মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান আসামিকে আদালত হাজির করেন। এ সময় তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু সুফিয়ান রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সচিব ছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তার প্রতি খুশি হয়ে শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন। তিনি মন্ত্রী থাকাকালে রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন। অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়ে তিনি হাজার হাজার কোটি আত্মসাৎ করে তা পাচার করেছেন।

এ সময় আসামিপক্ষে তার আইনজীবী বলেন, ‘মোকতাদির কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। তিনি ফ্যাসিস্টের কোনো সহযোগিতা করেননি। তিনি অবৈধভাবে কাজে জড়িত না। এ হত্যার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অসুস্থ বিবেচনায় তার এ মামলায় জামিন প্রার্থনা করছি।’ পরে শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়। কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতা-কর্মীর ওপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় মাহফুজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। উবায়দুল মোকতাদির এ মামলার ৩৫নং এজাহারনামীয় আসামি।


খালেদা জিয়ার ১১ মামলা হাইকোর্টে বাতিল

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবিটি সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে দায়েকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতাসহ ১১টি মামলার কার্যক্রম বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এসব মামলা বাতিল চেয়ে দায়েরকৃত আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

আদালতের রায়ের পর সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, হয়রানিমূলক এবং বিগত আওয়ামী সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য। তিনি বলেন, একটি মামলা করা হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে। এ ধরনের মামলা দায়ের করতে হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। মিথ্যা ও বানোয়াট এ মামলা দায়েরে আইন অনুসরণ না করে খালেদা জিয়াকে আসামি করে হয়রানি করা হয়েছে।

এছাড়াও নাশকতার অভিযোগে করা অন্যান্য মামলাও মিথ্যা ও হয়রানিমূলক তা আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। খালেদা জিয়াকে তার নিজ বাড়ি এবং রাজনৈতিক কার্যালয়ে বালির ট্রাক দিয়ে বন্দি রেখেও বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত উভয়পক্ষকে শুনে মামলাগুলো বাতিল করে রায় দিয়েছেন। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হওয়া সত্ত্বেও আদালতের কাছে আমরা ইতোপূর্বে ন্যায়বিচার পাইনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের আদালতে বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ খুলেছে।


গণহত্যা মামলায় প্রথম কারাগারে মিরপুরের সাবেক ডিসি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি মিরপুরের সাবেক উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রংপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে পুলিশ পাহারায় রংপুর থেকে ঢাকায় এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এই প্রথম কোনো আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলো। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, জুলাই গণহত্যার আসামি মিরপুরের সাবেক ডিসি জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ১৫০ জন মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

গত ১৩ই আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. মাহবুর রহমান শেখ সই করা প্রজ্ঞাপনে মো. জসিম উদ্দীনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এছাড়া বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ২০ জনকে হাজির করতে ২৭ অক্টোবর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, ফারুক খানসহ ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ দেন। ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কমকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ৬ জনকে। ওই দিন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।


বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা, খালেদা জিয়ার শুনানি ৫ নভেম্বর

বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক মো. আকতারুজ্জামান এই তারিখ ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী তাঁর পক্ষে হাজিরা দেন। অন্য আসামিরা হাজির ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছর ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় ১৩ আসামির মধ্যে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এছাড়া আসামি ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক কৃষিমন্ত্রী এম কে আনোয়ার, সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম মারা গেছেন।

ফলে বর্তমানে এ মামলার আসামি ৭ জন। তারা হলেন- খালেদা জিয়া, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম ও পেট্রো বাংলার সাবেক পরিচালক মুঈনুল আহসান।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


জমি দখলের অভিযোগে হারুনের বিরুদ্ধে মামলা

মামলা হয়েছে সাবেক ডিসি মসিউরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে
হারুন অর রশিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরে জোরপূর্বক জমির দখল নিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

গত ১৬ অক্টোবর বাদী কাজল ফকির গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হারুন অর রশিদকে প্রধান আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও দুই জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মীর আশরাফ আলী আজমকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ডিবির লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি মশিউর রহমান ও এডিসি মোস্তফা কামালসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরোবিয়া খানমের আদালতে মীর আশরাফ আলী আজম বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জহির রায়হান জসিম এসব তথ্য জানান।

সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী শ্রীপুর উপজেলা শিল্পাঞ্চল শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নম্বর সেক্টরের মৃত সৈয়দ আবুল হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির এবং গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া (২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি) এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আব্দুল মালেক।

বাদীর অভিযোগ, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে শ্রীপুর উপজেলার ৭ নম্বর কেওয়া এবং মুলাইদ মৌজার বিভিন্ন খতিয়ানভুক্ত আনুমানিক ২০ একর জমি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন তিনি। এর জের ধরে অভিযুক্তরা জমি জবরদখলের জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন।

মামলার বাদী কাজল ফকির জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আসামিরা পলাতক। তাই এখন তিনি তার জমির দখল ফিরে পেয়েছেন।

এর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শাহীন আল মামুন নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে দুই কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে সাবেক গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদসহ সাত জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী শাহীন আল মামুন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে অপহরণ ও মুক্তির দাবির অভিযোগে মামলার আবেদন করেন। আদালতের আদেশে মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়।

এদিকে সাবেক ডিসি মসিউরের বিরুদ্ধে করা মামলার বাকি তিন আসামি হলেন, ডিবির কোতোয়ালি জোনের সাবেক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইয়াসির আরাফাত, লালবাগ জোনের পুলিশ পরিদর্শক শের আলম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ চৌধুরী দীপন।

মামলার বিষয়ে বাদী মীর আশরাফ আলী আজম বলেন, ‘এডিসি মোস্তফা কামাল আমার ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছে। আমার কোমরের হাড় ভেঙে ফেলেছে। আমার দোষ ছিল আমি বিএনপি করি। আমি এর বিচার চাই।’

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৪৭/৪৪৮/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় অভিযোগ করা হয়।


সাবেক ১০ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে (শোন এরেস্ট) আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আর রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন পেশ করেন।

বর্তমানে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা যাদের ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, দীপু মনি, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক এলাহি, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

এছাড়া আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয়জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদেরকে ২০ নভেম্বর হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

অপর একটি আবেদনে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানসহ ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এখানে বাকি আসামিদের নাম প্রকাশ করেনি প্রসিকিউশন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের (পুরাতন) মূল ভবনের সংষ্কার কাজ চলমান থাকায় ভবন সংলগ্ন (অস্থায়ী) ট্রাইব্যুনালে রোববার বেলা সাড়ে বারোটায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকা ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরের আবেদন করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশন তিনটি আবেদন পেশ করে।

আদালতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ৭৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আজ তিনটি আবেদন পেশ করেছি। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেয়।

তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে হত্যা গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন কোনরূপ হয়রানির শিকার না হোন সে বিষয়ে আমরা সচেতন থাকবো।


বিএনপি নেতাকে মারধর: সাবেক ডিসি মসিউরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ডিবির লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি মশিউর রহমান ও এডিসি মোস্তফা কামালসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরোবিয়া খানমের আদালতে ভুক্তভোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মীর আশরাফ আলী আজম বাদী হয়ে এ মামলার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জহির রায়হান জসিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাকি তিন আসামি হলেন- ডিবির কোতোয়ালি জোনের সাবেক এডিসি ইয়াসির আরাফাত, লালবাগ জোনের পুলিশ পরিদর্শক শের আলম ও পুলিশের এসআই পলাশ চৌধুরী দীপন।

মামলার বিষয়ে বাদী মীর আশরাফ আলী আজম বলেন, এডিসি মোস্তফা কামাল আমার উপর পাশবিক নির্যাতন করেছে। আমার কোমরের হাড় ভেঙ্গে ফেলেছে। আমার দোষ ছিল আমি বিএনপি করি। আমি এর বিচার চাই।

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়, বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই বাদী সাবেক কাউন্সিলর আশরাফ আলী আজম বাসায় ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় ডিবি লালবাগ জোনের তৎকালীন ডিসি মশিউর রহমান এবং এডিসি মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাকি আসামিসহ ২০/২৫ জন ডিবি পুলিশ ঘেরাও করে।

এরপর দারোয়ানকে মারধর ও কেচি গেইটের তালা ভেঙ্গে বাসায় প্রবেশ করে। বাসায় থাকা স্ত্রী ও ছেলে ব্যারিস্টার মীর মুহতাসিমের সামনে বাদী মীর আজমকে টেনে হিঁচড়ে বের করেন। বাদী যেতে না চাইলে দুই তালার বাসার দরজা থেকে মারধর ও ধাক্কা দিয়ে সিঁড়িতে ফেলে দেয়। এসময় সাবেক কাউন্সিলর মীর আলী আজমের কোমরের হাড় ভেঙ্গে যায়।

পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় দীর্ঘ ৬ মাস ধরে চিকিৎসাধীন থেকে একটু সুস্থ হলেও স্বাভাবিক হাঁটতে অক্ষম অভিযোগ করেন বাদী। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৪৭/৪৪৮/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় অভিযোগ করা হয়।


রিমান্ড শেষে ব্যারিস্টার সুমন কারাগারে, জামিন নামঞ্জুর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

হত্যাচেষ্টার মামলায় সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার সকালে শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সুমনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুল হালিম।

ব্যারিস্টার সুমনের পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে সুমনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২১ অক্টোবর রাতে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে ২২ অক্টোবর মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গ্রেপ্তারের আগে ব্যারিস্টার সুমন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে লেখেন, 'আমি পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছি। আদালতে দেখা হবে। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই।’

গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন সুমন।


সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন ও মোস্তফা কামালের রিমান্ড মঞ্জুর

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পৃথক দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ চার দিন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আদালত শুক্রবার বিকেলে এ আদেশ দেন।

পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও মকবুল নামের বিএনপির এক কর্মীকে হত্যার মামলায় সাবেক সচিব হেলালুদ্দীনকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত হেলালুদ্দীনকে চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের খুলশী তুলাতুলী এলাকার একটি বাসা থেকে হেলালুদ্দীন আহমদকে আটক করে পুলিশ। তিনি ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ থেকে অবসরে যান। এর আগে তিনি ইসির সচিব ছিলেন। সর্বশেষ তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।

এদিকে নয়াপল্টনে যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে। তাকে আদালতে হাজির করে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন সংঘর্ষে যুবদল নেতা শামীম মোল্লা নিহত হন। তাকে হত্যার অভিযোগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৭০৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে করা জরুরি।

আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে জামিন আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মোস্তফা কামাল উদ্দীন ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায় পুলিশ।

আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন মামলায় আওয়ামী লীগ আমলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কিছু সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড

এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শামীম হাওলাদার নামে এক ইলেকট্রিশিয়ানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন। এর আগে দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২০ জুলাই মোহাম্মদপুর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শামীম হাওলাদার। তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মারা যান। এ ঘটনায় শামীমের ফুফাতো ভাই জাকির হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।


খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৪২ জনকে পুড়িয়ে হত্যার মামলা খারিজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দশম সংসদ নির্বাচনের পর সারা দেশে অবরোধ ও হরতালে পেট্রলবোমা হামলায় ৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হাকিম আদালতে খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গুলশান থানা পুলিশ তদন্তভার পায়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ (পরে মারা গেছেন) এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা সমশের মবিন চৌধুরীকে আসামি করা হয় এ মামলায়।

মামলার বিবরণে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সারা দেশে অবরোধের ডাক দেন। এরপর দফায় দফায় হরতালের ঘোষণা দেয় তার দল। ওই কর্মসূচির মধ্যে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪২ মারা যান, সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ মামলার তদন্ত দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও সরকার বদলের পর চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানার এসআই শাহীন মোল্লা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ তদন্তে পাওয়া যায়নি।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালাস

এদিকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন। গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল অভিযোগটি ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা হয়। ২০০৮ সালে দুদকের দাখিল করা অভিযোগপত্রে প্রাথমিকভাবে চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালীসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ বেশ কয়েকজন আসামি মারা যান।


ধর্ষণ মামলায় খালাস পেলেন মামুনুল হক

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে ধর্ষণের মামলায় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেসমিন আরা বেগম।

রায় ঘোষণার সময় মামুনুল হক আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মাওলানা হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাই করে তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করা হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।

২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামুনুল হকের নামে মামলা হয়।ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের আদালত ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সেময় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বাদীসহ ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে প্রত্যক্ষদর্শীসহ ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।


যেভাবে কাজ করবে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রিভিউ নিষ্পত্তির পর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বহাল করা হয়েছে। এখন এই কাউন্সিলের কার্যক্রম কেমন হবে সে বিষয়টি খোলাসা করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

রিভিউ নিষ্পত্তির পর গতকাল রোববার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে কোনো অভিযোগ করলে বা পেলে তারা প্রাথমিক একটি অনুসন্ধান করবেন। যাচাই-বাছাই করে দেখবেন যে, অসদাচরণ বা দুর্নীতি (অর্থনৈতিক বা বুদ্ধিভিত্তিক) পাওয়া গেছে কি না। তাহলে রিপোর্টটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি বিচার-বিবেচনা করে তারপর আবার সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে পাঠাবেন। সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল তখন ফুল তদন্ত করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির। তবে এখানে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত মেকানিক্যাল। সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের দায়িত্ব হলো অসদাচরণ প্রমাণিত হয়েছে কি না, এটাসহ সুপারিশ পাঠানোর।

অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, এ পর্যন্ত একজন বিচারপতিকে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়। সেটা ২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল হয়েছিল।

ষোড়শ সংশোধনীতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বাতিলের আগে সংবিধানের এ সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (২) অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ বিধানাবলী অনুযায়ী ব্যতীত কোনো বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে না।

(৩) একটি সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল থাকিবে যাহা এই অনুচ্ছেদে ‘কাউন্সিল’ বলিয়া উল্লেখিত হইবে এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী যে দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া গঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কাউন্সিল যদি কোনো সময়ে কাউন্সিলের সদস্য এইরূপ কোনো বিচারকের সামর্থ্য বা আচরণ সম্পর্কে তদন্ত করেন, অথবা কাউন্সিলের কোনো সদস্য যদি অনুপস্থিত থাকেন অথবা অসুস্থতা কিংবা অন্য কোনো কারণে কার্য করিতে অসমর্থ্য হন তাহা হইলে কাউন্সিলের যাহারা সদস্য আছেন তাঁহাদের পরবর্তী যে বিচারক কর্মে প্রবীণ তিনিই অনুরূপ সদস্য হিসাবে কার্য করিবেন।

(৪) কাউন্সিলের দায়িত্ব হইবে-

(ক) বিচারকগণের জন্য পালনীয় আচরণবিধি নির্ধারণ করা; এবং

(খ) কোনো বিচারকের অথবা কোনো বিচারক যেরূপ পদ্ধতিতে অপসারিত হইতে পারেন সেইরূপ পদ্ধতি ব্যতীত তাঁহার পদ হইতে অপসারণযোগ্য নহেন এইরূপ অন্য কোনো পদে আসীন ব্যক্তির সামর্থ্য বা আচরণ সম্পর্কে তদন্ত করা।

(৫) যে ক্ষেত্রে কাউন্সিল অথবা অন্য কোনো সূত্র হইতে প্রাপ্ত তথ্যে রাষ্ট্রপতির এইরূপ বুঝিবার কারণ থাকে যে কোনো বিচারক-

(ক) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে তাঁহার পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করিতে অযোগ্য হইয়া পড়িতে পারেন, অথবা

(খ) গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী হইতে পারেন, সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কাউন্সিলকে বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করিতে ও উহার তদন্ত ফল জ্ঞাপন করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারেন।

(৬) কাউন্সিল তদন্ত করিবার পর রাষ্ট্রপতির নিকট যদি এইরূপ রিপোর্ট করেন যে, উহার মতে উক্ত বিচারক তাঁহার পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অযোগ্য হইয়া পড়িয়াছেন অথবা গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী হইয়াছেন তাহা হইলে রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা উক্ত বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করিবেন।

(৭) এই অনুচ্ছেদের অধীনে তদন্তের উদ্দেশ্যে কাউন্সিল স্বীয় কার্য-পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং পরওয়ানা জারি ও নির্বাহের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের ন্যায় উহার একই ক্ষমতা থাকিবে।

১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে। মার্শাল প্রক্লেমেশনে করা পঞ্চম সংশোধনীতে এক্ষেত্রে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুল শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। পরে একই বছরের ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।

গতকাল রোববার সেই রিভিউ আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায় বহাল রইলো। একইসঙ্গে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুর্নবহাল করা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আসাদুজ্জামান। রিটকারী পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

আদালতের বন্ধু হিসেবে শুনানিতে মত দিয়েছেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি জানান, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৬ (২,৩,৪,৫,৬,৭ ও ৮) অনুচ্ছেদ বহাল করা হয়েছে। আর পর্যবেক্ষণসহ রিভিউ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।


banner close