ব্যালট থেকে সরে আসে অনধিক দেড়শ আসনে ইলেকট্রানিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের যে পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন তা এখনো অনেকটা ধোঁয়াশার মধ্যে। ১৫ জানুযারির মধ্যে প্রকল্প পাস না হলে দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব নয় বলে কমিশনাররা একাধিকবার ঘোষণা দিলেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে কমিশন।
১৫ জানুয়ারি পার হওয়ার তিনদিন পর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘১৫ তারিখ বলা মানেই তো ১৫ তারিখ নয়। দু’এক দিন এদিক-সেদিকও হতে পারে। পরিকল্পনা কমিশন যদিও এ মাসেও দেয় এতটুকু পারব, তাহলে আমরা আপনাদের চূড়ান্তভাবে বলতে পারব।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘এ মাসের মধ্যে পাস না হলে, দেড়শ আসন তখন করা কঠিন হবে আমাদের তখন জানিয়েছিলেন। এজন্যই আগামী সভায় প্রাথমিক আলোচনা হয়তো নির্ধারণ হতে পারে শেষ টাইম কবে হবে।’
সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে বিএনপিসহ সমমনা বেশ কয়েকটি দল ভোটে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছে। তবে বর্তমান কমিশন ভোটের দেড় বছর আগেই কমপক্ষে দেড়শ আসনে ইভিএম ভোট করার সিদ্ধান্ত জানায় সাংবিধানিক এ সংস্থাটি।
ইভিএম কেনার জন্য কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন যে প্রকল্প নেয় তাতে ২ লাখ ইভিএম কেনাসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭১১ কেটি ৪৪ লাখ টাকা। এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম কেনার জন্য কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের দেয়া প্রস্তাবে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস করেছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
১৫ জানুয়ারির মধ্যে ইভিএম প্রকল্প পাশ না হলে দেড়শ আসনে এই যন্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব নয় বলেছিলেন, এখন আপনাদের কী অবস্থান-এই প্রশ্নের জবাবে কমিশনার আলমগীর বলেন,‘ আমরা তো বলেছিলাম সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করব। এটা একজাক্ট বলা যায়নি কারণ কতটা ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করতে পারব। ’
নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন,‘ ইভিএম কেনার বিষয় আছে, সফটওয়্যার ইনস্টল করার ব্যাপার আছে। তারপর সেটা চেকিং, ট্রেনিং, ভোটার এডুকেশন; সবকিছু মিলিয়েই আমরা বলেছি জানুয়ারির মধ্যে না হলে দেড়শ আসনে করা সম্ভব না। এখনো আমরা সেই অবস্থানেই আছি। কারণ এটা তো একটা হিউজ কাজ। নানা রকম ব্যাকআপ সার্ভিস তৈরি করার জন্য অনেক সময় লাগবে।’
প্রকল্প এখনো অনুমোদন হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে লেটেস্ট কী অবস্থায় আছে তা এখনো পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানায়নি। এটা কমিশন সভায় আলোচনা হতে পারে। যদিও এজেন্ডাভূক্ত নয়, তবু আলোচনা হতে পারে। আলোচনা হলে একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে। প্রজেক্টের কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদেরকে শোনা হবে। এরপর নির্বাচন অধিশাখার কর্মকর্তা এবং টেকনিকাল কর্মকর্তার বক্তব্য শুনতে হবে। তারপর বলা যাবে, কতদিনের মধ্যে কতটা পেলে কত আসনে ভোট করতে পারব ইভিএমে।’
দুই লাখ না হয়ে আরো কম হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ হয়ত এক লাখ হতে পারে। কমও তো হতে পারে। তবে পরিকল্পনা কমিশন এখনো ইয়েস বা নো কোনোটাই তো বলেনি। চূড়ান্তভাবে তারা কিছু বললে আমরাও বলতে পারব।’
ছয় সংসদীয় উপ-নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার অর্থাভাবে বন্ধ হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কী করবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্থটা তো বাৎসরিক ভিত্তিতে দেয়া হয়। বর্তমান অর্থ বছরে যে টাকা দেয়া আছে, যেসব নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেছি সেগুলোর ব্যয় কিন্তু এক্সিজটিং টাকার মধ্যেই। এটা জন্য কিন্তু আমরা সরকারের কাছে আমরা এক্সট্রা বাজেট চাইনি। এই আর্থিক মন্দার মধ্যে আমাদের চাওয়াও যুক্তিযুক্ত না। এখন যে টাকা আছে এই টাকা দিয়ে যে পাঁচ-ছয়টি উপ-নির্বাচন হবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, সেখানে এটা দিতে সেই টাকাটা তো আমাদের কাছে নাই। সিসি ক্যামেরার জন্য আমাদের কোনো বাজেট ছিল না। এক্সিজটিং টাকা থেকে করেছি। এখন তো টাকা নাই।’
জাতীয় নির্বাচনে পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট থেকে ব্যয় হবে উল্লেখ করে এই কমিশনার বলেন, ‘তখন কী লাগবে না লাগবে সেটা ধরে আমরা বাজেট করব। তখন বাজেট দিলে, সেটা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। ওইটার সঙ্গে এইটার কোনো সম্পর্ক নেই।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা তো কেবল বললেই হবে না। অর্থের ব্যাপার যেমন আছে ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারও আছে। চার লাখ সিসি ক্যামেরা মনিটর করবেন কীভাবে, সেইটার একটা ওয়েআউট যদি বের করা যায় তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবহার করব।’
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সুসংহত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এক বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এবার নির্বাচনে এআই অপপ্রচার ও নির্বাচনি এলাকায় গোপনীয়তার স্বার্থে ড্রোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
এছাড়া, নির্বাচনকালীন পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিনির্ভর ভুল তথ্য প্রচার রোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশেষ কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বৈঠকে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা কাঠামো, ৩ পর্যায়ের নিরাপত্তা কৌশল
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মূলত তিনটি ধাপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তফসিল ঘোষণার পূর্বে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে চিহ্নিত অপরাধী, সন্ত্রাসী ও নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ধাপে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক।
তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত : অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। সকল প্রার্থীর নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা এবং ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আমর্ড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার, কোস্টগার্ড এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচন পরবর্তী কার্যক্রম : নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধে নির্বাচনের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা বা ২ দিন পর্যন্ত স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। এই সময়ে আইনগত নির্দেশনা প্রদানের জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংক্ষিপ্ত বিচার কাজের জন্য জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।
প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম ও বিশেষ পদক্ষেপগুলো বর্তমানে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত এবং ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠান বাছাই।
এছাড়াও, ইসি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কর্মপরিকল্পনা : তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটগ্রহণের কয়েক দিন পর পর্যন্ত প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ নির্দেশনা জারি করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণ : নির্বাচনে সমান সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পল্লী এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে গ্রাম পুলিশ/চৌকিদার/দফাদার নিয়োগের পাশাপাশি ইউপি সচিবদেরও সম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা : সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অন্তর্ঘাতমূলক বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড রোধে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ : সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ব্যবহারকারীদের দমনের লক্ষ্যে যৌথ অভিযান জোরদার করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশনা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
এআই নির্ভর ভুল তথ্য প্রচার রোধ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বা অন্য কোনোভাবে বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর তথ্য প্রচার রোধে কার্যকর কৌশল নির্ধারণের প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নিরলসভাবে কাজ করছে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা : নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বিদেশ থেকে আগত পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা যাতে নিরাপত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তার জন্য সব প্রকার আইনানুগ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।
পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থাপনা : প্রবাসী ও পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে যোগ্যদের জন্য পোস্টাল ব্যালট পেপার নিরাপত্তার সঙ্গে ডাকবিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশে প্রেরণ এবং ফেরত আসার সময় নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রেরণ করতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন পরিকল্পনা : In Aid to the Civil Power অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ন্যায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যেও ভোটকেন্দ্রে ও নির্বাচনি এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনসহ এ বিষয়ক বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ : নিরাপত্তার ঝুঁকি, গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং অননুমোদিত ব্যবহারের কারণে নির্বাচনি এলাকায় ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হবে।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা করে প্রায় এক বছর আগে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পরেও, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে যাচ্ছেন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ইসরাইল সরকার গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। জিম্মিদের লাশ হস্তান্তরে হামাসকে চাপ দিতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেলআবিব।
আল জাজিরার সাংবাদিক আলি হার্ব বলেন, সাহায্য বন্ধ করা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনেরও লঙ্ঘন।
আইসিসির সংবিধান অনুযায়ী বেসামরিক নাগরিকদের অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য জিনিসপত্র থেকে বঞ্চিত করা নিষিদ্ধ। এরমধ্যে জেনেভা কনভেনশনের অধীনে ত্রাণ সরবরাহে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেয়াও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তাছাড়া, জাতিসংঘের তদন্তকারীরা গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরাইল গাজায় ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি অবরোধের সময় যুদ্ধের নীতি হিসেবে অনাহারকে ব্যবহার করায়, শিশুদের ওপর এর ভয়ানক প্রভাব পড়েছে। যার ফলে অনাহার, তীব্র অপুষ্টির আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে, কলেরা এবং দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়ার মতো রোগের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অপুষ্টিতে মৃত্যু হারও বেড়েছে।
যুদ্ধবিরতির পরেও, ইসরাইল গাজায় সাহায্য প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে ভূখণ্ডে মানবিক সংকটের জন্য হামাস এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য পক্ষকে দায়ী করেছে তারা।
অনলাইন পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত গ্রুপ, অ্যাডমিন ও অর্থ লেনদেনকারী প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
‘টেলিগ্রামে হাজারো তরুণীর নগ্ন ভিডিও বিক্রি’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত রোববার (১৯ অক্টোবর) এ আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন।
আদেশে ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারকে একজন চৌকস ও দক্ষ তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারক আদেশে, তদন্তকালে উৎঘাটিত তথ্য ও ঘটনার আলোকে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রতি ১৫ দিন অন্তর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উভয় সংবাদদাতাকে তদন্তকালে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক রুকনুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে শনিবার একটি দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘টেলিগ্রামে হাজারো তরুণীর নগ্ন ভিডিও বিক্রি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদটি বিবিসি বাংলাসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। জনস্বার্থ বিবেচনায় এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১)(সি) ধারায় বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। জনসাধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আদালত থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়।
সারা দেশে সাম্প্রতিক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মাঠপর্যায়ের শিক্ষা অফিসগুলোতে অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার সহকারী পরিচালক মো. খালিদ হোসেন এ নির্দেশনায় সই করেছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব অধিদপ্তর, দপ্তর, অফিস বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার আগে নিজ নিজ রুমের সব বৈদ্যুতিক সুইচ, লাইট, ফ্যান ও কম্পিউটার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি এসির প্লাগ খুলে রাখা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস ত্যাগের আগে এসব বিষয় যাচাই করে সতর্কতামূলক ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানানো হয়। এটি সরকারি-বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষ, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস ও মাউশির সব আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি দেশে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এ উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর।
সম্প্রতি মিরপুরের শিয়ালবাড়ির রাসায়নিকের গুদামে আগুনে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার একটি তোয়ালে কারখানায় লাগা আগুন প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। আর সবশেষে গত ১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য পে-কমিশন গঠন করেছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেবে এই কমিশন।
সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরু থেকেই সরকারি চাকরিজীবীরা নতুন কাঠামোর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। নতুন কাঠামোয় শুধু বেতন নয়, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ভাতায় বড় পরিবর্তন আসছে। সেইসঙ্গে জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হলে কিছু সুবিধা বাতিল হতে পারে।
‘সাকল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক’ নামে একটি বিকল্প বেতন কাঠামো গঠনের কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যেখানে বর্তমান কাঠামোর কোনো ভাতা বা আর্থিক ও অনার্থিক সুবিধা থাকবে না। এই প্রস্তাবিত কাঠামো এরই মধ্যে অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে চালু রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন কমিটির সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে সরকারি কর্মচারীরা যে সম্মানী বা ভাতা নিচ্ছেন, তা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কর্মকর্তারা নিজ নিজ পদের দায়িত্ব পালনের জন্য আলাদাভাবে এই সম্মানী নিচ্ছেন, ফলে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই সুবিধা বাতিলের প্রস্তাবও কমিশনের কাছে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি পে-কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে, তা সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। ডিসেম্বরে চলতি বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, পে-কমিশনের গেজেট প্রকাশের ওপর এ বাস্তবায়ন নির্ভর করবে। তবে আগামী বছরের শুরুতে এটি কার্যকর হতে পারে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়। ওই স্কেলের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তখন সর্বোচ্চ গ্রেড-১-এ মূল বেতন ১৯৫ শতাংশ (৪০ হাজার থেকে ৭৮ হাজার টাকা) বাড়ানো হয়। আর সর্বনিম্ন বেতনের ক্ষেত্রে ২০১ শতাংশ বাড়িয়ে ৪ হাজার থেকে করা হয় ৮ হাজার ২৫০ টাকা।
অর্থ আত্মসাতের দুই পৃথক মামলায় ফটিকছড়ির এক সাবেক এনজিও সচিবকে মোট ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখের বেশি টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত।
সোমবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এই দুটি মামলার রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন ফটিকছড়ি উপজেলার সৈয়দ হাসানুজ্জামান লোটন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, লোটন এনজিও সংস্থার সচিব থাকাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে দুই দফায় অর্থ আত্মসাৎ করেন। প্রথম মামলায় (স্পেশাল মামলা নং ৯/১৪, ফটিকছড়ি থানার মামলা নং ০৯(০৫)০৩) তিনি ৭৯ হাজার ১৭০ টাকা আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় তাঁকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও আত্মসাৎ করা সমপরিমাণ অর্থদণ্ড দেন।
একই দিনে ঘোষিত দ্বিতীয় রায়ে (স্পেশাল মামলা নং ৪/১৪) লোটনকে একই ধারায় আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলায় অভিযোগ ছিল, তিনি এনজিওর সচিব থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন।
প্রথম মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ছিলেন মো. রেজাউল করিম রনি এবং দ্বিতীয় মামলায় পিপি ছিলেন মুহাম্মদ কবির হোসাইন। দুজনেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। রায় ঘোষণার পর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে কেউ পার পাবে না এই রায় তারই প্রমাণ। আদালতের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।
আদালত সূত্র আরও জানায়, একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আত্মসাতের একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলা দুটি মামলার নিষ্পত্তি হলো।
বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি কার্গো ওয়ারহাউসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ আমদানি পণ্য পুড়ে গেছে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কয়েক ঘণ্টা পরও ধোঁয়ায় ঢেকে ছিল পুরো এলাকা। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে ততক্ষণে কোটি টাকার পণ্য ভস্মীভূত হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিভিন্ন সিএনএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট ও ক্ষুদ্র আমদানিকারকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পরপরই ওয়ারহাউসের ভেতরে প্রচণ্ড ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ প্রথমে বিষয়টিকে ছোটখাটো শর্ট সার্কিট ভেবে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কেমিক্যাল ও কাপড়ের অংশে পৌঁছালে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
ইমুট্রান্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার (আমদানি রপ্তানি শাখার ইনচার্জ) হাসান জানান, তাদের চারটি ডকুমেন্টসহ এই ১৩ হাজার ডলারের কনসাইনমেন্টটি পুড়ে গেছে।
তিনি জানান, বড় শিপমেন্ট হওয়ায় এটির ইনস্যুরেন্স করা ছিল।
তিনি বলেন, এতো বড় শিপমেন্ট সাধারণত ইনস্যুরেন্স করা থাকে। তবে ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট, এয়ারবিলসহ প্রয়োজনীয় সব নথি আগুনে পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া এখন অনেক জটিল হয়ে গেছে।
হাসান বলেন, বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি ও ইকুইপমেন্ট সাধারণত ইনস্যুরেন্স করা হয় এবং এটি বায়ার বা আমদানিকারকের চাহিদামতোই করা হয়ে থাকে। ইনস্যুরেন্স থাকলে আন্তর্জাতিক আমদানি-রপ্তানির আইন অনুযায়ী ইনস্যুরেন্স কোম্পানি তখন এই ক্ষতিপূরণ বহন করে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, তাদের বায়ারদের এই ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, তবে এখনো ক্ষতিপূরণ বা ক্লেইম বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রশ্ন
রয়্যাল ক্লিয়ারিং হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মালামালের অবস্থা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কারণ সংশ্লিষ্ট সব নথি ও তথ্যসংগ্রহ ব্যবস্থা পুড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এটি দেশের সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকা। এখান থেকে সরকারের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। অথচ এমন স্থানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় এতটা অবহেলা অগ্রহণযোগ্য।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের শুরুতে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা এড়ানো যেত।
তৌফিক আহমেদ নামে আরেক ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্ট বলেন, আগুন প্রথমে ছোট ছিল, কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কেমিক্যালের অংশে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মনে হচ্ছে ওয়ারহাউসে কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না।
ওয়ারহাউসটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে বহুদিন ধরেই অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বিপুল পরিমাণ দাহ্য পণ্য সংরক্ষণের পরও এখানে জরুরি ফায়ার এক্সটিংগুইশার, হাইড্রেন্ট বা প্রশিক্ষিত কর্মী ছিল না।
পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি
২০১৩ সালেও একই স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তখন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল।
পুরোনো কর্মীরা বলছেন, আগের ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবে হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুরোনো কর্মচারী বলেন, তখনও ক্ষতি হয়েছিল, কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। তখন সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মতো আগুন ছিল। সময় মত বুঝতে পারা এবং কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে তখন এতো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এবার দুদিন লেগে গেল।
দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব
অগ্নিকাণ্ডে শুধু পণ্য নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো সিএনএফ কর্মীর জীবিকা। এই খাতে প্রায় ৩০–৪০ হাজার মানুষ দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন। কাজ বন্ধ থাকলে আয়ও বন্ধ। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, তদন্ত ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখন ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তবে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কতটুকু ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ২টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের সাত ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে শতাধিক আমদানি-রপ্তানি পণ্য, গার্মেন্টসের কাঁচামাল ও বিভিন্ন কনসাইনমেন্ট সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দরের পণ্য পরিবহন কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক অশ্লীল কন্টেন্ট তৈরি ও প্রচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে বান্দরবানে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এবং এলআইসি শাখার যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ঢাকায় আনা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
গত ১৭ অক্টোবর 'দ্য ডিসেন্ট' নামের একটি নিউজ পোর্টাল “পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশি যুগল যেভাবে আন্তর্জাতিক পর্ন তারকা” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ওই দম্পতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পর্নোগ্রাফি ভিডিও তৈরি ও বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের কনটেন্ট অনলাইনে বিক্রির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ উপার্জনের তথ্যও সেখানে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দম্পতির বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ার রায়ের বাগ এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মো. রাসেল মিয়া (৩১) নামে সিআইডির একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আজ (সোমবার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
আহত রাসেল মিয়া যাত্রাবাড়ীর রইস নগর এলাকায় ভাড়া থাকেন এবং বর্তমানে ঢাকা সিআইডি হেডকোয়ার্টারে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত আছেন।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা নুরুল ইসলাম জানান, আমি ওই পুলিশ সদস্যের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আজ ভোরের দিকে মোটরসাইকেল যোগে শনির আখড়া থেকে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত ৩/৪ জন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে এবং ছুরি দিয়ে বাহুতে আঘাত করে মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়। পরে আমরা খবর পেয়ে চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, আজ সকালের দিকে সিআইডির পুলিশ সদস্যকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী বা স্বনির্ভর হলে তার ভরণপোষণ না দেয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে ভারতের দিল্লি হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত জানায়, স্থায়ী ভরণপোষণ সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি ব্যবস্থা, এটি স্বাবলম্বী ব্যক্তিদের মধ্যে সমৃদ্ধি বা আর্থিক সমতা বিধানের হাতিয়ার নয়। খবর এনডিটিভির।
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ শনিবার এ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, আইন অনুসারে ভরণপোষণ চাওয়া ব্যক্তিকে প্রমাণ করতে হবে যে, তার আর্থিক সহায়তা প্রকৃতপক্ষেই প্রয়োজন।
হিন্দু বিবাহ আইনের ধারা ২৫ এর অধীনে বিচারিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং স্বাধীন আবেদনকারীকে ভরণপোষণ দেয়া যাবে না। উভয় পক্ষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং আবেনকারীর প্রকৃত আর্থিক দুর্বলতার প্রমাণ না থাকলে তা দেয়া যাবে না।
একটি ভরণপোষণের দাবি খারিজ এবং বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়ে ফ্যামিলি কোর্টের আদেশ পুনর্বহাল রেখে এই পর্যবেক্ষণ জানান দিল্লির হাইকোর্ট।
স্বামী আইনজীবী এবং স্ত্রী ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিস কর্মকর্তা। গত ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন তারা। এর আগে তাদের দুজনেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। এই বিয়ের মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই আলাদা হয়ে যান তারা।
স্বামী অভিযোগ করেন, স্ত্রী তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, অপমানজনক মেসেজ পাঠান, দাম্পত্য অধিকার অস্বীকার এবং পেশাগত ও সামাজিকভাবে অপদস্থ করেছেন।
অন্যদিকে স্ত্রী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের পাল্টা অভিযোগ আনেন।
পারিবারিক আদালত তাদের রায়ে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে এবং উল্লেখ করে যে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হওয়ার শর্ত হিসেবে ৫০ লাখ রুপি আর্থিক সমঝোতা দাবি করেছিলেন। এই দাবি তিনি নিজেই হলফনামা ও জেরা চলাকালীন স্বীকার করেছেন।
দিল্লি হাইকোর্টও এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত হন এবং বলেন এতে হস্তক্ষেপের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
বেঞ্চ বলেন, ‘ফ্যামিলি কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলা যায় না। আপিলকারীর (স্ত্রীর) এই মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট আর্থিক দিক ছিল। বরং আদালতে উপস্থাপিত প্রমাণের ভিত্তিতে এটি ছিল একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্ত্রী তার স্বামী এবং তার মায়ের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর ভাষা’ ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি স্বামীকে ‘অবৈধ সন্তান’ বলে আখ্যা দেন, যা আদালতের মতে মানসিক নির্যাতনের শামিল।
ভারতে ভরণপোষণের জন্য বিপুল অর্থ দাবি করার ক্রমবর্ধমান প্রবণতার মধ্যে এই রায় এলো।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, দেড় হাজার টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে সোমবার শহীদ মিনারে আমরণ অনশন ও শিক্ষক সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সকাল ১০ টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকরা আসতে শুরু করেছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। দেশের কোনো শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের পাঠদান বা প্রশাসনিক কাজ করবেন না। পরীক্ষার ডিউটি, অফিস ফাইল, সবকিছুই বন্ধ থাকবে।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী আরও বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি। তার প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই। আন্দোলন চলবে, প্রয়োজনে জাতীয়করণের এক দফা আন্দোলনে রূপ নেবে।
অন্যদিকে, এরইমধ্যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়েছে সরকারের অর্থ বিভাগ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) বাড়িভাড়া ভাতা দেয়া হবে। আর এ সুবিধা আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
রোববার সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মরিয়ম মিতুর সই করা প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সরকারের বিদ্যমান বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলনে শামিল হবেন।
গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবি পূরণ করা হবে বলে বিএনপি মহাসচিব শিক্ষকদের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বিএনপি মহাসচিব আমাদের বলেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল আমাদের আন্দোলনস্থল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন।
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর প্রতিবাদ এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সোমবার থেকে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।
ভারত যদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করে, তবে দেশটির পণ্যের ওপর “ব্যাপক শুল্ক” আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যকার টানাপোড়েন আরও বেড়েছে।
যদিও ভারতের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এ বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সোমবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করবে। তিনি বলেন, “তিনি আমাকে বলেছেন, ‘আমি রাশিয়ান তেল নিয়ে আর কিছু করছি না’। কিন্তু যদি তারা (ভারত) এটা চালিয়ে যায়, তাহলে তাদের বিশাল শুল্ক দিতে হবে।”
রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখছে এমন দেশগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। ওয়াশিংটনের দাবি, এ ধরনের বাণিজ্য রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে পরোক্ষভাবে অর্থায়ন করছে।
অবশ্য ইতোমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক অনেক বেড়েছে। এ বছরের আগস্টে ট্রাম্প শুল্কহার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেছেন। আর এই শুল্ক টেক্সটাইল থেকে শুরু করে ওষুধ পর্যন্ত বিস্তৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
তিনি বারবার জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করলে এসব শুল্ক বজায় থাকবে বা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া চলতি মাসের শুরুতেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে বলেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এ বক্তব্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল ক্রেতা হয়ে উঠেছে ভারত।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস