কে হচ্ছেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি- এই আলোচনা এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের গণ্ডি ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষের মুখেও। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এ দলের মনোনীত ব্যক্তিই যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন, এটা নিশ্চিত।
যদিও আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতারা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক করেননি। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা কারও নাম নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও করেননি। ফলে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে, ধারণা থেকে কথা বলছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
দুই মেয়াদে ১০ বছরের দায়িত্ব পালন শেষ হবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের। সংবিধানের বাধ্যবাধকতা অনুসারে, দুই মেয়াদের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না রাষ্ট্রপতি পদে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের একজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে এই পদে অনেককে নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এখন আলোচনার তালিকা থেকে অনেকের নাম বাদ পড়েছে। নতুন কারও কারও নাম যুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, মূলত পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি পদে কারও কারও নাম আলোচনায় আসছে। এর মধ্যে থেকে কেউ একজন হতে পারেন আবার নাও হতে পারেন। কেননা, রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগ থেকে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, তা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার আগে দলীয় প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, পরামর্শ নেন। তখন সম্ভাব্য কারা সে ব্যাপারে একটা শর্টলিস্ট (ছোট তালিকা) পাওয়া যায়। তবে এখন যে নামগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা মূলত দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানোর মতো।
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে ২৩ এপ্রিল। এর ৯০ থেকে ৬০ দিন আগে হলে ফেব্রুয়ারির ২৩ তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, চলিত সংসদের মেয়াদেই অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথমেই আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রপতি পদে একজনকে মনোনয়ন দিতে হবে। তাই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন, তা জানতে হয়তো দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে।
রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বরাবরই গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতা ঘোষণার পর বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার অবর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি পদে আসেন বর্ষীয়ান নেতা জিল্লুর রহমান। ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি মারা গেলে ওই বছর এপ্রিলের ২৪ তারিখে প্রথম মেয়াদে ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসারে, সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন না রাষ্ট্রপতি। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের ভোটে। রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। তবে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে প্রস্তাবক এবং একজনকে সমর্থক হতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।
কে হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি
সাধারণত নিজেদের আস্থাভাজন ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয় ক্ষমতাসীন দল। আর এ কারণেই এরই মধ্যে আওয়ামী লীগে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রপতি পদ কে পাবেন তা নিয়ে গুঞ্জন। তবে আওয়ামী লীগ চাইলে নিজ দলের নেতাদের বাইরে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিকেও রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিতে পারে।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের কথায় এ পদের জন্য উঠে এসেছে বেশ কিছু নাম। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নাম বেশ জোরেশোরে আলোচনায় আসছে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, মসিউর রহমান কয়েক মাস থেকে আড়ালে থাকছেন। দলীয় কর্মসূচিতেও তাকে দেখা যাচ্ছে কম। তারা মনে করছেন শেষ মুহূর্তে মসিউর রহমান যেন বিতর্কিত না হন, এ কারণে তাকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এ থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে তার নাম।
মসিউর রহমান টানা তিন দফায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সব চাপ সহ্য করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্য সম্মুখভাগের যোদ্ধা ছিলেন তিনি। একাধিক আলোচনায় পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রে তাকে বিভিন্ন সময়ে প্রদান করা প্রলোভনের বিষয়েও কথা বলেছেন তিনি।
এরপরই যে নামটি শোনা যাচ্ছে তিনি হলেন বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নারীকে রাষ্ট্রপতি করতে চান- এমন আলোচনা থেকেই শিরীন শারমিনের নাম আসছে। আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য ও স্পিকারকে নিয়ে নেই কোনো নেতিবাচক প্রচারণা। দুই মেয়াদে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও প্রায় বিতর্ক ছাড়াই নিজ দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটি মেয়াদের শেষ বছরে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে থাকবে। ইতিহাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি হবেন শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এর বাইরে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের নামও আলোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনা তার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই চমকে দেন সবাইকে। সেই চমক হিসেবেই উঠে এসেছে একজন টেকনোক্রেট মন্ত্রীর নাম। নিয়মিত সংসদে উপস্থিত হন তিনি। সেই সঙ্গে প্রায়ই কবিতাও পড়ে শোনান সংসদ সদস্যদের। নিজ মন্ত্রণালয়ে টানা তিন মেয়াদে দায়িত্বে থাকলেও তাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক তৈরি হয়নি। নীরবে-নিভৃতে কাজ করে যাওয়া এই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়েও সবাইকে চমকে দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে নিয়ে আলোচনা জোরেশোরে শুরু হলেও এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন তিনি রাষ্ট্রপতি পদে যোগ্য নন। তা ছাড়া তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ায় তাকে নিয়ে আলোচনা কিছুটা কমে আসে। যদিও দলের কয়েকজন নেতা মনে করেন, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে দলের এক নম্বর যুগ্ম সম্পাদক পদে উন্নীত করার পেছনে ওবায়দুল কাদেরকে রাষ্ট্রপতি করার চিন্তা কাজ করেছে। ওবায়দুল কাদেরকে রাষ্ট্রপতি করে হাছান মাহমুদকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে, এমন আলোচনা আছে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের পর রাষ্ট্রপতি পদে ওবায়দুল কাদেরকে ঘিরে আলোচনা কমে এলেও তা গত কয়েক দিনে আবার বেড়েছে। এখানে তার শারীরিক অবস্থা ও নির্বাচনের আগে চাপ নেয়ার বিষয়টি যুক্তি হিসেবে আসছে। অবশ্য এর পাল্টা যুক্তিতে বলা হচ্ছে, নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
মন্ত্রিপরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক গাজীপুর জেলার সভাপতি পদে পুনর্বহাল হওয়ায় রাষ্ট্রপতি পদে তাকে নিয়ে এখন আর আলোচনা হচ্ছে না। যদিও তার নাম আলোচনায় আসায় পেছনে কাজ করেছে পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং আবদুল হামিদ। এই দুই নেতার মতোই তৃণমূল থেকে উঠে আসা রাজনীতিক আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর নামও আছে আলোচনায়। প্রবীণ এই নেতা আস্থার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন কি না, সেটি দেখার অপেক্ষা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নামও আলোচনায় এসেছে। দলের বাইরে আরেফিন সিদ্দিকের গ্রহণযোগ্যতা ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতি পদে যোগ্যতা ছাড়াও কিছু বিষয় বিবেচনা করা হয় এবং সেই পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হবেন কি না, সেটি দেখার বিষয়।
রাষ্ট্রপতির কাজ কী?
সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত। রাষ্ট্রের প্রধান হলেও রাষ্ট্রপতির তেমন কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। সরকারপ্রধান কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রধান বিচারপতি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করতে বাধ্য নন। এসব কারণে রাষ্ট্রপতি পদটিকে আলংকারিক পদ বলা হয়ে থাকে।
নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলাপকালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন অপরিহার্য সাংবিধানিক পদ। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। আমাদের সংবিধানের মূলনীতি হচ্ছে- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। এই মূলনীতি তথা সংবিধানের প্রতি যার শতভাগ আনুগত্য রয়েছে যিনি বিতর্কের ঊর্ধ্বে তাকেই রাষ্ট্রপতি করা উচিত। যিনিই রাষ্ট্রপতি হোন না কেন তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে শুরু করে ইতিবাচক রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা, ইতিহাস, ঐতিহ্য বুকে ধারণ করতে হবে।’ মেনন বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপতি পদাধিকার বলে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেহারা পাল্টে দেয়ার ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।’
ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।
বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।
এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গবাদিপশু পালন প্রোটিন ঘাটতি নিরসন, মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। অথচ অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে চারণভূমির হ্রাস হচ্ছে, ফলে মহিষের মতো মূল্যবান সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়ছে।
আজ সকালে বরিশাল ক্লাবে অনুষ্ঠিত “উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সমাধান” শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশন, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজিইউএস) এবং কোস্টাল ভেট সোসাইটি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সঠিক নীতি নির্ধারণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে এখনো অনেক চরাঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব। মহিষ পালন বাড়াতে পারলে জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যাবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহিষের চারণভূমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ এবং এমনকি সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলায় বৃহৎ গরুর বাথান ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে গরুর বাথান ধ্বংস করা দেশের সামগ্রিক কল্যাণে কতটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে? তিনি আরও বলেন, মহিষের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় উপকূলীয় এলাকায় স্পিডবোটভিত্তিক ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্থাপন করা প্রয়োজন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে গবাদিপশুর চারণভূমি কমে যাওয়া এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মহিষসহ অন্যান্য গবাদিপশুর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও টেকসই চারণভূমি উন্নয়ন অপরিহার্য। পাশাপাশি মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ওমর ফারুক।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং, পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, জিজিইউএস-এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্হানীয় খামারীরা কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।
শিশু জন্মের পরপরই মায়ের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, শিশু জন্মের দুই-তিন দিন পর যখন পর্যাপ্ত দুধ আসে না, তখন অনেক সময় চিকিৎসকরা ফরমুলা দুধের পরামর্শ দেন। কিন্তু ডাক্তারদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আপনারা মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিবেন। ফরমুলা দুধের পরামর্শ দেবেন না। তিনি বলেন, একসময় শাল দুধ (কোলস্ট্রাম) খাওয়ানো নিয়ে নানা কুসংস্কার ছিল। এখন মানুষ সচেতন হয়েছে। তবুও উদ্বেগজনকভাবে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার কমছে। এখন মাত্র ৫৫ শতাংশ শিশু মায়ের দুধ পাচ্ছে, আগে এ হার আরও বেশি ছিল। তিনি মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার বাড়ানোর জন্য কাজ করতে সংশ্লিষ্টদের আহৃবান জানান।
আজ রাজধানীর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর আগে এ উপলক্ষে এক বর্নাঢ্য রেলির আয়োজন করা হয়।
মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে
উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, শিশু জন্মের পরপরই অনেকসময় পর্যাপ্ত দুধ আসে না। কাজেই প্রস্তুতি আগে থেকেই নিতে হয়। গর্ভাবস্থার ছয় মাস পর থেকে মায়ের খাদ্যাভ্যাস ও যত্নের বিষয়ে নজর দিতে হবে। মা ভালো খেলে, তার শরীর থেকে সন্তানের জন্য যথেষ্ট দুধ তৈরি হবে।
কর্মজীবী মায়েদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, মাঠে-ঘাটে নানা কাজে যুক্ত মায়েরা সচেতনতার অভাব ও খাদ্যের ঘাটতির কারণে সন্তানকে পর্যাপ্ত দুধ খাওয়াতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের দিকেও আলোকপাত করেন। সরকারি হিসাবে দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশের মতো, বেসরকারি হিসাবে আরও বেশি। যদি এই ২০ শতাংশ মা পর্যাপ্ত খেতে না পারেন, তবে সন্তানও পর্যাপ্ত দুধ পাবে না। তাই দারিদ্র্য হ্রাসে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গৃহকর্মী নারীদেরও শিশু জন্মের পরপরই বাচ্চাকে কোলে নেবার সুযোগ দেওয়া উচিত। আমাদের বাসাবাড়িতে যারা কাজ করেন, তাদের অনেক সময় সন্তানকে আনতে দিই না। বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. সারোয়ার বারী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুছ আলীসহ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী নির্বাচনে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
চলমান ২৮ দিনব্যাপী ভিডিপি অ্যাডভান্সড কোর্সের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী ডিউটির প্রাকপ্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় অনুশীলন সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণের আওতায় বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনে করণীয়, ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন, কেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটারদের ভোটদানে সহযোগিতা করা, ব্যালট পেপার এবং ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ কয়েকটি বিষয়ে হাতে কলমে মহড়া দেয়া হচ্ছে।
বাহিনীর সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করছেন।
আসছে ০৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হবে। গত রবিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ জাতীয় কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এসভায় ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করবেন। এদিন সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সকল স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সরকারিভাবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও রাস্তাসমূহে জাতীয় পতাকা, রঙিন পতাকা ও 'কালিমা তায়্যিবা' লিখিত ব্যানার প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাবিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্ম ও মৃত্যুর স্মৃতিধন্য এ দিবসটি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) কে ক্বিরাত, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও আরবিতে খুতবা লেখা প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে স্মরণিকা প্রকাশ ও সেমিনার আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
১২ রবিউল আউয়াল থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ প্রান্তে পক্ষকালব্যাপী ইসলামিক বইমেলার আয়োজন করবে ইফা। এদিনে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যমে দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশও করা হবে।
এ দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ইফা, ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ও জেদ্দা হজ অফিসসহ সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে হযরত(সা.) এর জীবন ও কর্ম, ইসলামের শান্তি, প্রগতি, সৌহার্দ্য, সহিষ্ণুতা, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার, নারীর মর্যাদা প্রভৃতি বিষয়ের ওপর আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, হামদ-নাত ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশনা রয়েছে জাতীয় কর্মসূচিতে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য হামদ-নাত, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
এ দিবসে দেশের সকল সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতাল, কারাগার, শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরসমূহকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহেও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) যথাযথভাবে উদযাপিত হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে এগিয়ে চলেছে—শুধু বাণিজ্য ও সংযোগ নয়, সর্বোপরি জনগণের হৃদয়ের বন্ধনও হয়েছে দৃঢ়। তিনি বলেন, এই যাত্রায় সাংস্কৃতিক কূটনীতি ছিল মুখ্য। শিল্পকলা, সাহিত্য, সংগীত, প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘরের বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা শুধু নিদর্শনই নয়, আদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনদর্শনও ভাগাভাগি করেছি।
সোমবার জাতীয় জাদুঘরে ‘রেডিয়েন্ট স্টারস: লিংজিয়াতান কালচার ফটো এক্সিবিশন ফ্রম আনহুই, চায়না’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা এই প্রদর্শনীকে ‘সভ্যতার মধ্যে সংলাপ এবং বন্ধুত্বের উৎসব’ হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর এবং ‘ইয়ার অব পিপল-টু-পিপল এক্সচেঞ্জেস’ উপলক্ষ্যে তিনি বলেন, এ সম্পর্ক সবসময়ই শুধু বাণিজ্য ও অবকাঠামোর সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সংস্কৃতি আমাদের স্থাপত্য, বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চাকে প্রভাবিত করেছে। অপরদিকে বাংলাদেশি হস্তশিল্প, সংগীত ও সাহিত্য চীনে সমাদৃত হয়েছে বহু আগে থেকেই। এই প্রদর্শনী সেই ঐতিহ্যেরই ধারাবাহিকতা।
লিংজিয়াতানের জেড শিল্পকর্ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য ও আধ্যাত্মিক ভারসাম্যের প্রতীক। তিনি মহাস্থানগড়, উয়ারি-বটেশ্বর ও পাহাড়পুরের মতো বাংলাদেশের প্রাচীন নিদর্শনের সঙ্গে এর মিল খুঁজে পান এবং উল্লেখ করেন, প্রদর্শনীটি বাংলাদেশের সভ্যতার যাত্রার সঙ্গে গভীরভাবে সঙ্গতিপূর্ণ এবং সমকালীন জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার তথ্য প্রদান করে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও আনহুই মিউজিয়ামের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারককে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে যৌথ প্রদর্শনী, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও একাডেমিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। তিনি আনহুই প্রদেশের ব্রোঞ্জ প্রতিলিপি ও “ফোর ট্রেজারস অব দ্য স্টাডি” উপহার দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং জাতীয় জাদুঘরের স্থায়ী ‘চায়না কর্নার’-এ এটি স্থাপনকে বন্ধুত্বের স্থায়ী প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চীনের আনহুই প্রদেশের ভাইস গভর্নর সান ইয়ং, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ-চীন কালচারাল ইকোনমিক অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন সেন্টারের সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওপেংসহ কিউরেটর, কর্মকর্তাবৃন্দ ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
পরে উপদেষ্টা জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনী ও চায়না কর্নার পরিদর্শন করেন। প্রদর্শনীটি ২৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কঠোর পরিশ্রম ও সমন্বিত প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতার পথে ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘নাগরিক অধিকার ও জলবায়ু ন্যায্যতা’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশের অর্থনীতি ছিল নাজুক অবস্থায়। আমরা অভ্যন্তরীণ আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিসরেও প্রমাণ করেছি যে বাংলাদেশ এখনো কোনো ঋণখেলাপি রাষ্ট্র নয়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বগুড়ার জেলার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লাইট হাউজ বগুড়ার প্রধান নির্বাহী হারুন অর রশিদ, বগুড়ার পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা, সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম মোফাখখারুল ইসলাম, বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুদ্দীন ফিরোজসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, ‘নাগরিক অধিকার ও জলবায়ু ন্যায্যতা’ প্রকল্পের মাধ্যমে বগুড়া জেলায় নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন; অনলাইন ভূমি ব্যবস্থাপনার ফলে ভুয়া ভূমি রেজিস্ট্রেশন ও জালিয়াতির সুযোগ কমে গেছে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও ই-মিউটেশন সিস্টেমের কারণে মালিকানার তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ হয়, যা ভুয়া দলিল তৈরির সুযোগ অনেকাংশে হ্রাস করে এবং ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম বিভাগ ভিত্তিক কার্য পর্যালোচনা করে প্রতি সপ্তাহে সিনিয়র সিচব মহোদয়কে অবহিত করছেন।
আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘৭৭তম টিম সভা’য় তিনি এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।
সিনিয়র সচিব বলেন; ভূমি সেবা প্রদানে আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সন্তুষ্টির মাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তেমনি মহানগর থেকে মাঠ পর্যায় সর্বত্র কার্যক্রম পরিদর্শন/মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। পরিদর্শন প্রতিবেদন নিয়ে সভা করে কারো বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অসততার বা সেবা গ্রহীতাকে হয়রানির প্রমান পেলে বিধি মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়াও যে কোনো মাধ্যমে দূর্নীতি বা হয়রানির প্রমান পেলেও ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে। ভূমিসেবায় দূর্নীতির ব্যাপারে কোন আপোষ নয়। জনবান্ধব ভূমিসেবা প্রদানই ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রধান লক্ষ্য।
সভায় জনানো হয়; সরকারি স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপুর্ণ মামলা সুষ্ঠভাবে পরিচালনার স্বার্থে মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন পাওয়া গেছে। অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে,জরিমানা করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি ভালো । এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েল,২০২৫ মতামতের জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। মতামত পাওয়াগেলে ভেটিংএর জন্য আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হবে । এছাড়াও ভূমি ভবনে স্থাপিত ভূমি যাদুঘরে ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ,আধুনিকায়ন ও সমৃদ্ধকরণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকদের কাছে ভূমি ব্যবস্থাপনার বিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য ও ভূমি জরিপকার্যে ব্যবহৃত ভূমি ঐতিহ্যের ধারক এমন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম যদি থাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য পত্র দেয় হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ),মো: শরিফুল ইসলাম; অতিরিক্ত সচিব (জরিপ ও সায়রাত অনুবিভাগ) সায়মা ইউনুস,এনডিসি ; অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ),মো: এমদাদুল হক চৌধুরী; অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ)মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ব্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
হারিয়ে যাওয়া বা লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে তথ্যদাতাকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা জানান ।
তিনি আরো জানান, পিস্তল ও শটগান উদ্ধারে তথ্য দিলে ৫০ হাজার টাকা, চায়না রাইফেল উদ্ধার করলে ১ লাখ, এসএমজি দেড় লাখ, এলএমজি ৫ লাখ ও প্রতি গুলির ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। এক্ষেত্রে তথ্যদাতাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করছে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের ওপর। তারা যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে তখন সমস্যা কমে যাবে। সবার সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবো । এখন দেখা যাচ্ছে আপনারা(সাংবাদিক), জনগণ ও রাজনৈতিক পার্টি নির্বাচনমুখী। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন একটি উৎসবমুখর পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নিয়োগ বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ এবং এ ব্যাপারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোথাও অনিয়ম দেখলে জানাবেন। আশা করছি সবসময় সত্য রিপোর্টিং করবেন, তবে ভুল রিপোর্টিং করবেন না। তবে আমরা দেখেছি আপনারা (সাংবাদিক) সব সময় সত্য রিপোর্টিং করছেন। বিদেশি কোন বিষয়েও আপনারা প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছেন। সত্য প্রকাশ করেছেন।
গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের আসা যাওয়ার সময় রাস্তা বন্ধ করে রাখার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আইজিপি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের জনসেবার মানসিকতা ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন, “জনসেবার জন্যই আমাদের নিয়োগ হয়েছে। তাই সবার মধ্যে সর্বদা সেবা দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
আজ রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এটুআই-এর যৌথ উদ্যোগে ন্যাশনাল ড্যাশবোর্ড বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ হিসেবে আয়োজিত হয়।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমাদের অ্যাডভান্টেজ তৈরি করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনকে আধুনিকায়ন করে একটি তথ্য হাব গড়ে তুলতে চাই, যেখানে দেশ-বিদেশের যেকোনো ব্যক্তি পার্বত্য অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্যের তথ্য পেতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্গানিক ফল যেমন পাহাড়ি আম, আনারস, কলা ও ড্রাগন ফল এখন আগের চেয়ে বেশি উৎপাদিত হচ্ছে এবং এগুলো দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কেমিক্যাল মুক্ত ফল ফলাদি আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করতে চাই বললেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা ও চেতনায় পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীরাও সম-অংশীদার হতে চায়। আমাদের ঐতিহ্য, সম্পদ ও সম্ভাবনা জাতীয় উন্নয়নের অংশ হতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, সবকিছুই হাতের মুঠোয় থাকতে হবে। ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে আমরা আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বদা আপডেট থাকতে পারবো। তিনি সরকারি চাকরির বিধি-বিধান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মোঃ মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কঙ্কন চাকমা, যুগ্মসচিব অতুল সরকার, যুগ্মসচিব মো. মমিনুর রহমান, যুগ্মসচিব কাজী তোফায়েল আহমেদ। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন এটুআই-এর রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট এনালিস্ট মোঃ আনোয়ারুল আরিফ খান, ডাটা কো-অর্ডিনেশন অফিসার মোঃ আশরাফুল ইসলাম, রিফাত-ই-জাহান সিদ্দিকী, অনিক কুমার পাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার ওয়াহিদ পলাশ, সহকারী রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী হাবিবুল্লাহ নাহিদ ও পল্টু চন্দ্র দাস। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স ও চিফ অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিনান্স অফিসারের কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।
বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আরেকটি মাইলফলক ছুঁলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) কর্তৃপক্ষ। রবিবার গাজীপুরে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের ১৮ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে যা PPP মডেলের অধীনে বাস্তবায়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান আনুষ্ঠানিকভাবে এই অংশের উদ্বোধন করেন। নতুন সড়কটি ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে সংযুক্ত করবে ফলে যাতায়াত সময় কমবে এবং যান চলাচলের সুবিধা বাড়বে।
PPP কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক এ কে এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঢাকা বাইপাস প্রকল্প বাংলাদেশের PPP কাঠামোর সাফল্যের প্রমাণ। সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগে আমরা আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করছি যা নাগরিকদের উপকারে আসবে এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।”
সম্পূর্ণ উদ্বোধনের পর ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ করিডর হিসেবে কাজ করবে এবং শিল্পাঞ্চল ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সংযোগ আরও মজবুত করবে।
এই প্রকল্প PPP কর্তৃপক্ষের সেই ভিশনকে আরও শক্তিশালী করেছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ PPP বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক বছরে দেশ নির্বাচন আয়োজন করার মতো যথেষ্ট প্রস্তুত ও স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে।
তিনি বলেন, আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গায় নির্বাচিত একটি সরকার দায়িত্ব নেবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগে’ যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে। এক বছর আগে আমরা দেশকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এক হত্যাযজ্ঞের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এখন আমরা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছি। ঠিক এক বছর আগে আমাদের অভ্যুত্থান হয়েছিল, আর দেশ এখন যথেষ্ট স্থিতিশীল এবং নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।
এ সময় সরকারের প্রতিনিধি, জাতিসংঘ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে। সবাইকে এই সংকট নিরসনে কোনো বিলম্ব ছাড়াই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আপনাদের সোচ্চার হওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার আশা জাগাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান শুধু বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এখানে এগিয়ে আসতে হবে। সংকটের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার যৌথ দায়িত্ব।
যত দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে না পারেন, তত দিন পর্যন্ত তাদের বিষয়টি ও এর টেকসই সমাধানকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার ওপর জোর দেন অধ্যাপক ইউনূস।
এর আগে, সোমবার সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এদিন বেলা ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।