প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এসব বাসের মালিক পুলিশ, রাজনীতিক ও শক্তিশালী মানুষেরা। তাই কোনো বাসের কিছু হয় না।’
সোমবার জাতীয় সংসদের অনির্ধারিত আলোচনায় ফিরোজ রশীদ এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ মারা যায় কী না জানি না। একটি মৃত্যুর ঘটনায় ওই পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা বিলীন হয়ে যায়।’
সড়কে চলাচলকারী বাসের মালিক কারা প্রশ্ন তুলে জাপার সংসদ সদস্য বলেন, ‘রাস্তায় চলাচল এই বাসগুলোর মালিক কারা? অধিকাংশ বাসের মালিক হচ্ছে পুলিশ অফিসার। যারা রাজনীতি করেন তারা। আর যারা শক্তিশালী আমাদের পাশে বসে আছেন। আমার পেছনে বসে আছেন আমাদের দলের চিফ হুইপ। তিনি বলতে পারবেন এসব বাসের মালিক কারা।’
সড়কে অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া এইসব কিচ্ছু হয় না। বেপরোয়া বাস চলে। কোনো বাসের লাইসেন্স নেই। চালকের লাইসেন্স নেই। সিগন্যাল বাতি নেই। ডানে যাবে না বামে যাবে কেউ বলতে পারে না। এসব চালকদের আজ পর্যন্ত আমরা পথে আনতে পারলাম না। শিক্ষিত করতে পারলাম না।’
বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করব। কিন্তু এই যে অবস্থা! এ দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ করব? আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে যদি একটু তুলনা করি সেখানে কী এই অবস্থা আছে? সিঙ্গাপুরে আছে, মালয়েশিয়ায় আছে।’
রাস্তার তুলনায় মহাসড়কে অধিক ওজনের গাড়ি প্রবেশ করে জানিয়ে সংসদ সদস্য বলেন, ‘সরকার রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছে। এসব রাস্তা দিয়ে রাতের বেলা ২০ টন/৩০ টনের ট্রাক চলে। দেখার কেউ নেই। টাকা খেয়ে এই ট্রাকগুলোকে রাস্তায় ঢুকতে দেয়া হয়। বাস ও চালকের লাইসেন্স আছে কি না, গাড়ির ফিটনেস আছে কি না, এসব যাচাই করলে এসব ঘটনা ঘটত না। মহাসড়কে কোথাও মোটরসাইকেল-ভটভটি চলে না। আমাদের দেশে চলছে। এসব ভটভটি-নছিমন করিমনের কোন ব্রেক নেই।’
অনির্ধারিত আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজার, টেকনাফ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছিল। এরপর অনেকে আত্মসমর্পন করেছিলেন। কিন্তু এখন মাদক ব্যবসা তিনগুণ বেড়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত। অনেক জায়গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেড়া কেটে বাইরে চলে যান। তমব্রু সীমান্তে কোনাপাড়া এলাকাটি নোম্যান্স ল্যান্ড। সেখনে কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে সশস্ত্র গ্রুপ আছে। তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কোনাপাড়া দিয়ে মাদক আসছে। এই মাদক ব্যবসার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এদেশের অনেকে জড়িত। কক্সবাজার, টেকনাফে কারা কারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তার নতুন তালিকা করা উচিত। আর কোনা পাড়ায় যারা অবস্থান করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না গেলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে।’
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নওপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি রূপচান বেপারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক আবরার খান তাহমিদ ওরফে তাহমিদ আশরাফ (২২), নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রায়হান খান আজাদ (২৭), শের-ই-বাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এ বি এম নুরুল হক ওরফে ছোটন চৌধুরী (৬৯), শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন খোকন (৭০), মিরপুর মডেল থানা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান ভূইয়া, ভাষানটেক থানা যুবলীগের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে আহমাদ আলী (৪০), মোহাম্মদপুর থানা শ্রমিক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. জসিম ওরফে বিল্লাল।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে আরও রয়েছেন- গেন্ডারিয়া থানা মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুব রহমান (৫৫), শ্যামপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪০), কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম (৪০), আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. শাহজালাল (৩৮), রায়েরবাগ ইউনিট যুবলীগের সেক্রেটারি মো. দেলোয়ার হোসেন ওরফে পলাশ, শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস সরদার (৪৫), পল্টন থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আকবর হোসেন (৫২), পল্টন থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. আবু সাঈদ (৫৬), নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. সামছুদ্দিন আহমেদ সেলিম (৬২), হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন রেহান (৫১), আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সহ-সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স (৪৩), সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম পারভীন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির সরকার ওরফে গলাকাটা নাছির (৫৪), নেত্রকোনা শ্রমিক লীগের সদস্য আলী হোসেন (৩১), কুমিল্লার ৬নং নিকলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক খন্দকার (৫২) এবং বরগুনার তালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান কামাল (৪২)।
রোববার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ডিবি মিরপুর বিভাগ তিনজন, রমনা বিভাগ তিনজন, সাইবার বিভাগ দুজন, মতিঝিল বিভাগ চারজন, ওয়ারী বিভাগ পাঁচজন, উত্তরা বিভাগ দুজন, তেজগাঁও বিভাগ দুজন, লালবাগ বিভাগ তিনজন এবং গুলশান বিভাগ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ঢাকা শহরে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। পাশাপাশি তারা আগামী ১০-১২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের স্লোগান সংবলিত এক লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
ডিসি তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর শাহবাগ, মিরপুর, রমনা, তেজগাঁও, মতিঝিল, ওয়ারী, উত্তরা, লালবাগ ও গুলশান এলাকায় পৃথক সময় ও স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও নাশকতা প্রতিরোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিষয়ে রায়ের তারিখ নির্ধারণ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) অনিরাপদ বোধ করছে না।
রোববার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়েছেন।
গত ২৩ অক্টোবর এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। এখন মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল জানাবেন, রায় কবে হবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, শেখ হাসিনার মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে ১৩ নভেম্বর। এর জন্য প্রসিকিউশনের প্রস্তুতির কিছু নেই। প্রসিকিউশন অনিরাপদ বোধও করছে না।
তিনি আরও বলেন, প্রসিকিউশনের দায়িত্ব হলো ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে যেসব অভিযোগ আনা হয়, সেটি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা করা। সাক্ষ্য উপস্থাপন করা, যুক্তিতর্ক তুলে ধরা। আর ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব হলো যুক্তিতর্ক এবং সাক্ষ্য বিবেচনায় রায় প্রদান করা। এর বাইরে প্রসিকিউশনের আর কোনো দায়িত্ব নেই। প্রসিকিউশন অন্য কোনো বিষয়ে খেয়াল করছে না।
এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ১৩ নভেম্বর উপলক্ষে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। বিএনপির দিক থেকেও বেশ কথাবার্তা বলা হচ্ছে। রাজনীতি উত্তপ্ত হচ্ছে। ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আলাদা করে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে কি না?
এর জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রসিকিউশনের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচি বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কোনো সম্পর্ক নেই।
আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন প্রসিকিউশন বাড়তি কোনো চাপ অনুভব করছে কি না? এর জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, প্রসিকিউশন এই পরিস্থিতিতে কোনো বাড়তি চাপ অনুভব করছে না। প্রসিকিউশন শুধু মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য আইনের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা থেকেই নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার কুমিল্লা-৩ আসনের বদলে ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হতে ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটা জানান তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেহেতু ঢাকা থেকে নির্বাচন করবো এটা মোটামুটি নিশ্চিত, সেই জায়গা থেকেই নিজের ভোটটা ঢাকায় নিয়ে আসা। কারণ, ভোটটা যাতে অপচয় না হয়। আমি যদিও ভোটার হয়েছি আগে, কিন্তু কোনও নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। আমি ভোটার হওয়ার পর দুটি নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে। আপনারা সবাই জানেন এই সময়ে কেউ ভোট দিতে পারেনি। এই নির্বাচনে যাতে ভোট দিতে পারি, সেটি নিশ্চিত করালাম।’
ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচনের গুঞ্জন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কোথা থেকে করবো এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে ঢাকা থেকেই করবো। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা স্বতন্ত্র নির্বাচন করার, তারপরও দেখা যাক কী হয়। আমার কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। কোনও রাজনৈতিক দল কোনও আসন ফাঁকা রাখলো কী রাখলো না, সেটি আমার দেখার বিষয় না। আমি আমার সিদ্ধান্ত এককভাবেই নেবো।’
ভোটার এলাকা পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সরকার থেকে পদত্যাগ করে ধানমন্ডি এলাকায় থাকার পরিকল্পনা আছে। সেই জায়গা থেকেই যেখানে থাকবো, সেখানেই ভোটার হওয়া। নির্বাচন করার জন্য কোথায় ভোটার হলেন, সেটি গুরুত্বপূর্ণ না, দেশের নাগরিক ও ভোটার হলেই যথেষ্ট। এই জায়গা থেকেই ঢাকায় ভোটার হওয়া, যাতে নির্বাচনের সময় আমার ভোটটা অপচয় না হয়।’
কবে নাগাদ পদত্যাগ করতে পারেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই বলছি, আমি নির্বাচন করবো। তবে কবে নাগাদ পদত্যাগ করবো সেটি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্তের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে। আলোচনা করে সে বিষয়ে দ্রুতই জানাবো।’
জুলাই সনদ নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সরকার জনগণকে নিয়েই ভাবছে। বিচার, সংস্কার, গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিয়ে সমানভাবেই এগিয়ে চলছে। বিচারের বিষয়ে এ মাসের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে। আর সংস্কার কার্যক্রম চলমান। নির্বাচন নিয়ে সরকার খুব স্পষ্ট।’
রপ্তানির আড়ালে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা (৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৭টি মানিলন্ডারিং মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার বিকেলে রাজধানীর মালিবাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ছিগবাত উল্লাহ।
তিনি বলেন, সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ১৭টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক বাণিজ্যের নামে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।
তদন্তে জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-অ্যাডভান্স গার্মেন্টস, অ্যাপোলো এপারেলস, অটোম্যান লুপ অ্যাপারেলস, বিক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস, কজি অ্যাপারেলস, ইসেস ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, মিড ওয়েস্ট গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস, প্লাটিউর গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশন ও উইন্ট্রা ইস্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।
এসব প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে এলসি খুলে রপ্তানি দেখালেও বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে ফেরত আনেনি। বরং সেই অর্থ দুবাইভিত্তিক আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং লিমিটেডের মাধ্যমে আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে।
আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং লিমিটেডের মালিকানা রয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং চেয়ারম্যান এএসএফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে।
২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮০ মার্কিন ডলার রপ্তানি দেখানো হলেও, এর বিপরীতে কোনো অর্থ দেশে ফেরত আসেনি। যা সরাসরি মানিলন্ডারিংয়ের শামিল বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে।
২০২৪ সালের ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানায় ১৭টি মামলা দায়ের করে সিআইডি। পরবর্তী তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন চাওয়া হলে তা সম্প্রতি অনুমোদন পায়।
সম্পদ ক্রোক ও নিষেধাজ্ঞা
আদালতের নির্দেশে আসামিদের ঢাকার দোহার উপজেলার প্রায় ২ হাজার শতক জমি ও স্থাপনা, গুলশানের দ্য এনভয় বিল্ডিংয়ের ৬ হাজার ১৮৯.৫৪ বর্গফুট ফ্ল্যাট এবং গুলশান ৬৮/এ, রোড ৩১’এর ২ হাজার ৭১৩ বর্গফুট ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ক্রোক করেছে সিআইডি। এছাড়া আসামিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ক্রোককৃত সম্পত্তির বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা।
মামলাগুলোয় বেক্সিমকো চেয়ারম্যান এএসএফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, আহমেদ শাহরিয়ার রহমানসহ মোট ২৮ জন ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে অটোম্যান লুপ অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বর্তমানে কারাগারে থাকা সালমান এফ রহমানকেও এ মামলাগুলোয় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, ট্রেড-বেইজড মানিলন্ডারিংয়ের এই জটিল তদন্ত দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।
প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদেরকে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ক তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
পৃথকভাবে তাদের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য গত বৃহস্পতিবার নোটিশ পাঠানোর তথ্য দিয়েছিল দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চত করেন।
সাবেক দুই পিও এর সম্পদের হিসাব চাওয়ার বিষয়ে কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম ও অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সম্পদ বিবরণী জমা পড়ার পর তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পৃথক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তারা চিকিৎসক বদলি, দরপত্র প্রভাবিত করা এবং প্রশাসনিক ‘তদবিরের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ’ অর্জন করেছেন।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শেষের তথ্য দিয়ে তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসনকে দেওয়া পৃথক নোটিশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘স্থির বিশ্বাস’ তারা ‘জ্ঞাত আয়ের বহির্ভূত’ স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।
‘সেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ৫ নং আইন) এর ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (১) দ্বারা অর্পিত ক্ষমতাবলে আপনি আপনার নিজের, আপনার স্ত্রী এবং আপনার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের স্বনামে/বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও উহা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী অত্র আদেশ প্রাপ্তির ২১ (একুশ) কার্যদিবসের মধ্যে এতসঙ্গে প্রেরিত ছকে দাখিল করিতে নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে।’
এছাড়া নোটিশে তাদের সতর্ক করে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করলে বা মিথ্যা তথ্য দিলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ২৬(২) অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে দুদকের আবেদনের পর গত ২৭ মে আদালত তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। গত ২১ মে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। আমি উপদেষ্টার পিও পদ থেকেও পদত্যাগ করছি।’
সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী গত ২৭ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ এনে দুদকে অনুসন্ধানের আবেদন করেন। এরপর দুদক তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর অর্ধেক সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এসময় তিনি ঢাকায় আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই,’ বলেও উল্লেখ করেন।
রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তের বরাতে সেদিন একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্রাম ও নির্বাচনকালীন প্রশিক্ষণের জন্য অর্ধেক সদস্যকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, যা পরের দিন (বুধবার) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
তবে রোববারের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই মুহূর্তে সেনাবাহিনী আগে যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না; এ সংক্রান্ত যা ছড়িয়েছে সেটা গুজব, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এদিকে ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঢাকায় যে লকডাউন কর্মসূচি দিয়েছে, ব্রিফিংয়ে সে বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে সরকার শঙ্কিত কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, তারা লকডাউন বা শাটডাউনের যে কর্মসূচি রেখেছে সেই বিষয়ে সরকার শঙ্কিত নয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে মাইলফলক।
রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য একটা মাইলফলক। একদিকে সারাবিশ্বে তাকিয়ে আছে। আরেকদিকে দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। আমাদের তরুণ সমাজ বিশেষত যারা প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন, তাদের যে আগ্রহ, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। আপনার ভোট আপনার শক্তি। নিজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন এবং অন্যকেও ভোটদানে উৎসাহিত করুন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো, সানাউল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো প্রবাসী থেকে আপনার ভোট নিশ্চিতকল্পে নির্বাচন কমিশন একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশাকরি সবার সহযোগিতায় এ উদ্যোগ সফল হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, নির্বাচনকালীন আপনার দেওয়া একটা ভুল ও মিথ্যা তথ্যের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। আমাদের সবার দায়িত্ব, যেন কোনো কোনো খবর অন্ধভাবে বিশ্বাস করে যেন বিভ্রান্ত না হই। সত্যিকারের উৎস থেকে খবর সংগ্রহ করতে হবে বা সরাসরি নির্বাচন কমিশন বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী ও সবার প্রতি আহ্বান, আচরণ বিধি ও বিধি-বিধান কঠোরভাবে মেনে চলবেন।
নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমেদ বলেন, নারী পুরুষ প্রায় সমান সমান। ভোট অবশ্যই জেন্ডারবান্ধব হতে হবে। কাউকে অধিকার বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। তারা যাতে সঠিকভাবে সর্বাধিক ভোট দিতে পারে আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ভোট একটা সমন্বয়ের ব্যাপার। প্রত্যেকটা মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা অঙ্গীকার করছি জাতিকে একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেবো।
আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এজন্য সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিচ্ছে সংস্থাটি।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ঋণের নামে ৯ হাজার ২৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লভ্যাংশ ও সুদসহ বর্তমানে ওই অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৪৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। পরিমাণের দিক থেকে এটি দুদকের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ দুর্নীতির মামলা বলে জানিয়েছে দুদক।
রোববার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. তানজির আহমেদ এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ভাই সহিদুল আলম ও রাশেদুল আলম, এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম ও মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরীসহ সাবেক ও বর্তমান পরিচালক ও বিনিয়োগ কমিটির সদস্যরা।
দুদক জানায়, ২০১৭ সালে ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসার পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়। ব্যাংকের আইটি সফটওয়্যার ‘টর্চ’-এ জালিয়াতি করে অনুমোদন ছাড়া ঋণসীমা বৃদ্ধি, মেয়াদ পরিবর্তন ও বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ঋণসীমা ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করে- যা ব্যাংকের মূলধনের ৩৫ শতাংশেরও বেশি। এতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৬ খ (১) ধারা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২/২০১৪ ও ১৬/২০১৮ এর একক ঋণগ্রহীতা সংক্রান্ত বিধান স্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম রিফাইন্ড সুগার, এস আলম স্টিলস ও এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের অনুকূলে অপ্রতুল জামানত রেখে ঋণ অনুমোদন ও নবায়ন করা হয়। গ্রাহকের ব্যবসায়িক টার্নওভার, আয় ও পারফরম্যান্স সন্তোষজনক না থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঋণ বৃদ্ধি অনুমোদন করেন।
এছাড়া, ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহের আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আইটি বিভাগে সফটওয়্যার ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অনুমোদন বিহীনভাবে স্থানান্তর করা হয়। ১৩৪টি ডিলের মাধ্যমে আহসান এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক ট্রেডার্স, এপারচার ট্রেডিং, আনসার এন্টারপ্রাইজসহ নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা পরবর্তীতে এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন, সোনালী ট্রেডার্স, এস এস পাওয়ারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।
২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে স্থানান্তরিত ২৯০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ২ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অব চায়না শাখায় এস এস পাওয়ার-১ লিমিটেডের অফশোর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, যা অর্থপাচারের স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এ ঘটনায় মোট ৬৭ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯/৪০৬/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১২০(বি) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় দুদক।
দুদক জানিয়েছে, এ মামলায় তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আরও নতুন নাম যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের অর্থনৈতিক অনিয়মের এই ঘটনা এখন দেশের সবচেয়ে আলোচিত দুর্নীতির কেলেঙ্কারি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের আর্থিক খাতে এস আলম গ্রুপের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় সামনে আসে। এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে দুদকে আরও কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের করা পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকদের বিরুদ্ধে আরও ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রোববার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ মো. রবিউল আলম সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
সাক্ষীরা হলেন- ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ ও আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান, সোনালী ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনির হোসেন, রাজউকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও শাখা প্রধান লায়লা নূর বিশ্বাস, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মো. আল মামুন মিয়া, রাজউকের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম অপারেটর মো. জাকির হোসাইন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মো. জহিরুল ইসলাম খান, রাজউকের উপসচিব তানজিলুর রহমান, দুদকের কনস্টেবল আজহারুল ইসলাম, ঢাকার সাব রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান ও গাজীপুরের সাব রেজিস্ট্রার সোহেল রানা।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘তিন মামলায় মোট ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে। এর মধ্যে রেহানা যে মামলায় প্রধান আসামি ওই মামলায় আটজন, টিউলিপের মামলায় সাতজন এবং ববির মামলায় সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব মামলার আসামিদের মধ্যে একমাত্র রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম কারাগারে আছেন। তার পক্ষে তিন মামলার বাদীকে জেরা করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।’
আদালত রেহানার মামলার পরবর্তী দিন ১৬ নভেম্বর, টিউলিপের মামলা ২৩ নভেম্বর ও ববির মামলা ২৫ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন বাদীদের জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। পাশাপাশি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণও হবে বলেও প্রসিকিউটর বলেছেন।
এদিন শুনানিকালে খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর রহমান জামিন চেয়ে শুনানি করেন। তবে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দেয়।
প্লট বরাদ্দের তিন মামলায় গেল ২৯ অক্টোবর আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন খুরশীদ আলম। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। গেল ২ নভেম্বর এই তিন মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই নির্বাচন নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি বা শঙ্কার কারণ নেই।
রাজশাহী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আসিফ বলেন, জাতীয় নির্বাচনে বিলম্ব করার কোনো কারণ নেই। এটি নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সময় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬-১৭ বছরে কোনো জাতীয় নির্বাচন না হওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ থাকাটা স্বাভাবিক। এই সময়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ কখনো ভোট দিতে পারেননি। তাই আসন্ন নির্বাচন তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষদের মধ্যে ভোট নিয়ে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। তারা অধীর আগ্রহে ভোটের জন্য অপেক্ষা করছে।
ড. আসিফ লিগ্যাল এইড অফিস পরিদর্শন করে জানান, আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য একজন বিচারকের জায়গায় এখন তিনজন বিচারক দায়িত্বে থাকবেন। এতে মামলার চাপ কমবে।
তিনি বলেন, ‘আদালত সংস্কারে আমরা নানান উদ্যোগ নিচ্ছি। এর সুফল জনগণ অবশ্যই পাবে।’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, জামিন দেওয়া শুধু বিচারকের উপর নির্ভর করে না। পুলিশ কী রিপোর্ট দিচ্ছে তার উপরও নির্ভর করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কিংবা কণ্ঠ শোনা গেছে এরকম হলে ব্যতিক্রম হয়।
এ সময় রাজশাহী আদালতের বিচারকবৃন্দ ও পিপি-এপিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী ১৩ নভেম্বর ঢাকা লকডাউন নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম এখন নিষিদ্ধ।
আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচি নিয়ে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।
মোতায়েনকৃত সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ তুলে নেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, সেনাবাহিনী আগের মতোই মাঠে থাকবে। মাঠ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করা হবে না। সূত্র: বাসস
পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নাভিদ আশরাফ ৩ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। সফরের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার বনানীতে নৌবাহিনী সদরদপ্তরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এর আগে তিনি নৌবাহিনী সদরদপ্তরে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান তাকে স্বাগত জানান। এ সময় বাংলাদেশে নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। তিনি গার্ড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সাক্ষাৎকালে উভয় দেশের নৌবাহিনী প্রধান পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করেন। দুদেশের নৌবাহিনীর মধ্যকার পেশাগত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে এ সময় আলোচনা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দল, পাকিস্তান হাই কমিশনার, ডিফেন্স এ্যাটাশে ও নৌবাহিনী সদরদপ্তরের পিএসওরা এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই দিনে তিনি সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সফরকালে বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, কমান্ড্যান্ট ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এবং চট্টগ্রামের নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
একই সময় পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’ শুভেচ্ছা সফরে চট্টগ্রামে আসে। জাহাজের অধিনায়কসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও নৌ সদস্যরা চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি, নৌবাহিনী ঘাঁটি এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরাও পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’ পরিদর্শন করবেন।
প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নাগরিক অংশগ্রহণ আরও জোরদার করতে স্বেচ্ছাসেবক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে বন অধিদপ্তর। এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করছে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকা।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা, আবাসস্থল রক্ষা, বন্যপ্রাণী উদ্ধার এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমে যারা ইতোমধ্যে যুক্ত আছেন বা আগ্রহী, তাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ফরম পূরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগৃহীত তথ্য সরকারি কাজে ব্যবহৃত হবে।
স্বেচ্ছাসেবকরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, অবৈধ বন্যপ্রাণী বাণিজ্য প্রতিরোধ, প্রাকৃতিক আবাসস্থল পুনরুদ্ধার এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
এছাড়াও, নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করবে বন অধিদপ্তর। তাদের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান বা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে নিচের লিংকে ফরমপূরণ করা যাবে: https://forms.gle/Hy6kgbpqKdHuv1SY8
প্রয়োজনে- বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকা মোবাইল: ০১৯৯৯০০০০৪২ ইমেইল: [email protected], [email protected] এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কর্মযাত্রায় সম্পৃক্ত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।