দেশের সব মানুষকে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ সংসদে পাস হয়েছে।
মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাাল বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন।
গত বছরের ২৯ আগস্ট বিলটি সংসদে তোলেন অর্থমন্ত্রী। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পেলেও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সবাইকে পেনশনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি ছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সরকার গঠনের পর সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা সবার জন্য এ সুবিধা চালু করার কথাও বলেন। এরপর এজন্য আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিলে বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম অনুযায়ী নির্ধারিত চাঁদা নিয়মিত দেয়ার শর্তে একজন ব্যক্তির ৬০ বছর পূর্তিতে আজীবন বা পেনশনে থাকাকালীন চাঁদাদাতার মৃত্যুজনিত কারণে তার নমিনিকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মাসিক হারে পেনশন দেয়া হবে।
চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আইন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দেয়া যাবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতেও চাঁদা দেয়ার সুযোগ থাকবে।
সর্বজনীন পেনশনে ১৮ বছর বা এর বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক যুক্ত হতে পারবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বদেরও এর আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে একটি পাঁচ সদস্যের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে, যার প্রধান হবে নির্বাহী চেয়ারম্যান। এদের নিয়োগ করবে সরকার। সরকারের অনুমোদন নিয়ে এ কর্তৃপক্ষ ঋণ নিতে পারবে বলে বিলে বলা হয়েছে।
পেনশন কার্যক্রম পরিচালনায় বিলে ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এর সদস্য হবেন। পর্ষদের সদস্য সচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
বিলে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে।
একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়ছে।
এতে বলা হয়েছে, পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেয়ার আগে মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।
পেনশন তহবিলে জমা দেয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে।
পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে এবং পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।
বিলে বলা হয়েছে, নিম্ন আয় সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা পেনশন ব্যবস্থার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
বিলের ওপর আলোচনা
বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এই বিলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটি চমৎকার উদ্যোগ। কিন্তু এই পেনশন ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের সাড়া পাওয়া যাবে না। কারণ সরকারি চাকুরিজীবীরা যেভাবে পেনশন পান তার সঙ্গে অনেক কিছুই সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মানুষ রিটার্ন কিভাবে পাবে তা পরিষ্কার নয়। এটি অনেকটা ব্যাংকিং প্যাকেজের মত। এই বিলটি পাসের আগে সাধারণ মানুষের মতামত নেয়া উচিত।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, এই বিলটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যলাভের অধিকার,’ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে সরকার আবার ফেরত দেবে। এই বিল পাস করার কোনো সুযোগ নেই।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, বিলের কথাগুলো ভাল। কিন্তু এই পেনশন স্কিমে সরকারের অংশগ্রহণ কী? সরকারের কোনো অংশগ্রহণ নেই। এটা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিমের মত। গুঞ্জন আছে, সরকারের টাকার অভাব হয়েছে যে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলবে?
টাকা পাচার, বিদেশে বাংলাদেশিদের বাড়ি কেনাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে মুজিবুল হক বলেন, অর্থমন্ত্রী কথা কম বলেন। বোবার শত্রু কম। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর কানে কথা পৌঁছে কিনা জানা নেই। তার কোনো ফিডব্যাক, উদ্যোগ দেখা যায় না।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে আইনটি ভাল। কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে প্রভিডেন্ট করে এটি তার বাইরে কিছু বলে মনে হয় না। সরকার কী মুনাফা দেবে তা পরিষ্কার নয়। তিনিও দাবি করেন, এই আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
জাতীয় পাটির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শেয়ালের কাছে মুরগী রাখার মতো। মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবে আর ব্যাংক দেদারছে টাকা বিদেশে পাচার করবে। ব্যাংকগুলো মানুষের আস্থা হারিয়েছে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকগুলো বারো ভুইয়াদের কাছে চলে গেছে। সব সুবিধা পাচ্ছেন ঋণ খেলাপিরা।
এসময় বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেখার কেউ নেই। যারা টাকা পাচার করছে তাদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
পরে বিরোধী দলের সদস্যদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এই বিলটি আনার আগে অনেক আলোচনা করা হয়েছে। যারা লিখিত মতামত দিয়েছিলেন তাদের মতামত আমলে নেয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিলটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে বিবেচনায় এটি সংসদে আনা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগ মুহূর্তের প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বসছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৩ নভেম্বর থেকে শুরু হবে এ সংলাপ। রোববার সকালে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি সচিবালয় থেকে জানা গেছে, নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, আইন সংশোধন, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ মৌলিক প্রস্তুতির সবকিছুই নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করবে ইসি।
ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩০ জন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। এর আগে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকবে।
ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের ভোটার হচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
রোববার সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, আজ বিকেলে ঢাকা-১০ আসনের ধানমন্ডি থানার নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক।
এতে আরও বলা হয়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বেলা তিনটায় ধানমন্ডি থানা নির্বাচন কার্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন। তিনি ধানমন্ডি থানার ভোটার হবেন।
ঢাকা-১০ নির্বাচনী আসনটি ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত। বিএনপি এই আসনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে জামায়াতে ইসলামী এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জামায়াতের প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকার।
এর আগে মুরাদনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৩ আসনের ভোটার ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে পারেন, এমন আলোচনাও শোনা গিয়েছিল। সম্প্রতি গুঞ্জন তৈরি হয়, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। বিএনপি এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করায় গুঞ্জন আরও জোরালো হয়। এখন আসিফ মাহমুদের এই আসনের ভোটার হতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গুঞ্জনটি আরও পাকাপোক্ত হচ্ছে।
ঢাকাসহ ১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগের পর ডিসি হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে আটজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন করেছে সরকার।
শনিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রু সই করা প্রজ্ঞাপন থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
ওই আদেশে—হবিগঞ্জের ডিসি ফরিদুর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মাগুরার ডিসি অহিদুল ইসলামকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সাতক্ষীরার ডিসি মোস্তাক আহমেদকে খাদ্য মন্ত্রণালয়, নোয়াখালীর ডিসি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, পিরোজপুরের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খানকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, বগুড়ার ডিসি হোসনা আফরোজাকে বিদ্যুৎ বিভাগ, ঢাকার ডিসি তানভীর আহমেদকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব করা হয়েছে।
অপর এক আদেশে গাজীপুরের ডিসি নাফিসা আরেফীনকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
উপসচিব আমিনুল ইসলামের সই করা আরেক প্রজ্ঞাপনে গাইবান্ধার ডিসি চৌধুরী মোয়জ্জম আহমদকে প্রদান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক (যুগ্মসচিব) করা হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো ইস্যু নেই। নির্বাচন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করা দরকার, করা হবে।
রোববার (৯ নভেম্বর) সকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ও আমাদের (উপদেষ্টাদের) ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন কথা বলে। এসব কথার কিছু হয়তো সত্য থাকে। তাদের কথায় জনমনে নির্বাচন নিযয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, ১৬-১৭ বছরের নির্বাচন হয় না, এ কারণে কিছুটা শঙ্কা মানুষের মধ্যে আছে। ৫ কোটি মানুষ কখনো ভোট দিতে পারেনি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের মাঝে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে।
আসামিদের জামিন দেওয়ার ব্যাপারে আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, জামিন দেওয়া শুধু বিচারকের ওপর অনেক ক্ষেত্রে নির্ভর করে না। পুলিশ কি রিপোর্ট দিচ্ছে তার ওপরও নির্ভর করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কিংবা কণ্ঠ শোনা গেছে, এরকম হলে ব্যতিক্রম হয়। যেখানে জামিন পাওয়ার যোগ্য সেখানে জামিন পেতেই পারে। তবে যারা জামিন পেয়ে একই ধরনের অপরাধ করতে পারে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে, নিষিদ্ধ কোনো সংগঠনের সদস্য হয়ে তৎপরতা চালাতে পারে, তাদের যদি বেশি জামিন হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আতঙ্কিত হবো।
তিনি বলেন, একজন বিচারকের জায়গায় আদালতে তিনজন বিচারক দেওয়া হচ্ছে, যাতে আদালতে মামলার চাপ কমে। আদালত সংস্কারে আমরা নানান উদ্যোগ নিচ্ছি। সুফল অবশ্যই জনগণ পাবে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না। আর কোনো বিচারক তার সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি (হীরক জয়ন্তী) ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি তার প্রয়াত মা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক (যিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং পরবর্তীতে একই বিভাগের শিক্ষিকা ছিলেন) অধ্যাপক ড. সুফিয়া আহমেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি ছিলেন সেই বিরল প্রজন্মের একজন, যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নৈতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। তার জীবন ছিল নারীর একাডেমিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার নৈতিক শুদ্ধতার প্রতীক, যা এখনো আমাকে প্রভাবিত করে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনে আপনাদের সামনে দাঁড়ানো মানে স্মৃতি ও নিয়তির এক মহামিলনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছরের যাত্রা কেবল একাডেমিক সাফল্যের ইতিহাস নয় বরং এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।
তিনি বলেন, ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না, আর কোনো বিচারক তার সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, আইন হলো কোনো জাতির নৈতিক ইতিহাস, যা ন্যায়ের ভাষায় লেখা হয়; আর ইতিহাস হলো— কেন সমাজকে আরও ভালো হতে হবে, তারই অনুসন্ধান।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না। এটিকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়। আর সময়ের সঙ্গে বিচার বিভাগকে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে তাকে সংস্কার করতে হয়। গত ১৫ মাসে আমরা বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি এবং সেটি এখনো চলমান আছে।
তিনি বলেন, সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, বরং নৈতিক; যাতে প্রতিষ্ঠান ক্ষমতাকে নয়, মানুষকে সেবা দেয়; কর্তৃত্ব বৈধতার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিচার বিভাগ জনগণের আস্থার নৈতিক অভিভাবকে পরিণত হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে— ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ফিলিস্তিন ও থাইল্যান্ড। এই সংযোগের উদ্দেশ্য হলো— আইনের পাশাপাশি ইতিহাস ও দর্শনের আন্তঃবিষয়ক জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে বিশ্বজনীন মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠা করা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আজকের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি কেবল একাডেমিক উদযাপন নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রভাবের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ বারবার প্রমাণ করেছে— ইতিহাস আমাদের মূল্যায়ন করে অর্জনে নয়, বরং প্রচেষ্টার সততা ও নিষ্ঠার মানদণ্ডে। এই বার্তাই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভবিষ্যতের মূলভিত্তি মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসে এর অবদান এবং জ্ঞানচর্চার মানবিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিভাগটির সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা জানান।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস। এতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষকবৃন্দ, এই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক (এলামনাই) শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়।’
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫’- এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আয়োজনে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
দেশ অস্থিতিশীল হলে পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে বলে সতর্ক করেন তারেক রহমান। এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে বাঁচতে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিল। একইভাবে পতিত–পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও বর্তমানে ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করে দেশের গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে কি-না, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গী কারও কারও ভূমিকা দেশে ‘আপনার, আমার, আমাদের’ বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগকে বিনষ্ট করার হয়ত একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গুপ্ত বাহিনীর সেই অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে, একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় ও বহাল রাখা।’ সেজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গীদের সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই ‘একটি শান্তিকামী, সহনশীল, গণমুখী’ রাজনৈতিক দল বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভিন্ন দল, ভিন্ন মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা, এটি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই বিএনপির রাজনীতি বলেও দাবি করেন তিনি।
নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে স্বল্প আয়ের মানুষের সহায়তার জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ এবং তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে ঘোষণা করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং একই সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করে দেশে এবং বিদেশে কাজের ব্যবস্থার পরিকল্পনা আমরা এর মধ্যে হাতে নিয়েছি।’
বাংলাদেশে ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বন্ধনই আমাদের রাষ্ট্র এবং সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য।’ এই বৈচিত্র্যময় সমাজে ঐক্যসূত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে এই বাংলাদেশে আপনার যতটুকু অধিকার আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। কারও বেশি, কারও কম– তা নয়।’ এ সময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন, দক্ষ জনস্বাস্থ্য জনবল তৈরি ও গবেষণায় জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) অবদান অনস্বীকার্য। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগব্যাধি, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি মোকাবেলায় নিপসমকে ভূমিকা রাখতে হবে।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে নিপসমের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিপসম জনস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এখন গবেষণায় প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং সংযোগ স্থাপনে জোর দিতে হবে। সংক্রামক-অসংক্রামক ব্যধি ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য গবেষণা বাড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, নিপসম দক্ষ জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী গড়ে তোলার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্ষমতায়ন করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণভিত্তিক নীতি ও কার্যকর হস্তক্ষেপের কৌশল তৈরি করে। যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে অবদান রাখছে। নিপসম শুধু একাডেমিক শিক্ষাই নয় বরং স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাতে গুরুপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
সভাপতির বক্তব্যে নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের ৫১ বছরে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা ও সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠার সময় ২টি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে নিপসম। বর্তমানে ৯টি এমপিএইচ প্রোগ্রাম ও ১টি এমফিল কোর্স পরিচালনা করছে। প্রতিবছর নিপসমের অনুষদ ও শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে অসংখ্য থিসিস ও গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করছে। এসব গবেষণা মূলত জনস্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা বিষয়ে নতুন তথ্য ও জ্ঞান তৈরি করে। নিপসম গত পাঁচ দশকে কয়েক হাজার জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী তৈরি করেছে, যারা দেশ-বিদেশে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিপসমের ২২টি একাডেমিক বিভাগ এবং ৫টি আধুনিক ল্যাবরেটরি (মাইক্রোবায়োলজি, প্যারাসাইটোলজি, বাইয়োকেমিস্ট্রি, এন্টোমোলজি, এবং পেশা ও পরিবেশ) সুবিধা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবায় নিপসম শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ডক্টর অফ পাবিলক হেলথ কোর্স চালুসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পাবলিক হেলথ সেবায় জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ সৃষ্টি প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বের বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের ৯টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাপত্রগুলো স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতি ও প্রোগ্রামের কার্যকারিতা উন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য খাতে উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগে সহায়ক হবে বলে জানানো হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, শিক্ষা বলতে বোঝায় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত আচরণ। শিক্ষার উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করা। একজন মানুষ যেন সমাজের উপযুক্ত মানুষ হয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিত করা।
শনিবার খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ‘প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে পাঠ্যক্রম উভয় মিলে শিশুর নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও যুক্তিভিত্তিক চিন্তার বিকাশ ঘটায়। প্রাথমিক শিক্ষা এ ক্ষেত্রে শিশুর ভাষাগত সাবলীলতা ও গণিতে সাধারণ দক্ষতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপদেষ্টা বলেন, সফল স্কুলের দৃষ্টান্ত থেকে ধারণা নিয়ে বাকি স্কুলগুলো নিজেদের উন্নত করতে পারে। শিখন সাইকোলজি অনুযায়ী ক্লাসের সবাই সমমানের না হয়ে মিশ্র মানের হলে একজন অন্যজন থেকে শিখতে পারে। তিনি শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। শিক্ষকদের সাংগঠনিক নেতৃত্ব ও একাডেমিক নেতৃত্ব প্রদান করে নিজেকে হাজার হাজার শিশুর আদর্শ হিসেবে তুলে ধরার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মিরাজুল ইসলাম উকিল ও খুলনার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরীন আকতার ও সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মোজাফফর উদ্দীন।
নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে মনিফা বেগম (৪৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ঢেলাপীর সংলগ্ন কাদিখোল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মনিফা বেগম সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর এলাকার মোজাফফর হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রেলওয়ে পুলিশ জানায়, সকালে রেললাইনের পাশে কাটা পড়া অবস্থায় নারীর মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। তবে ঠিক কোন সময়ে এবং কোন ট্রেনের নিচে তিনি কাটা পড়েছেন, তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি।
নিহত মনিফা বেগমের মেয়ে মিতু আক্তার (২৫) বলেন, "আমার মা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং প্রায়ই কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং আর ফিরে আসেননি। আজকে সকালে পুলিশের মাধ্যমে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর খবর পাই।"
বিষয়টি নিশ্চিত করে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, "এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।"
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন যথাযথভাবে যাচাই করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি, আপত্তি ও অভিযোগ থাকলে তা দাখিলের আহ্বান করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এক সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন যথাযথভাবে যাচাই করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি, আপত্তি ও অভিযোগ থাকলে তা দাখিলের আহ্বান করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ শনিবার এক সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানাতে হবে। কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে ৬ (ছয়) সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপত্তির শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেবে ইসি। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। গণবিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) পাওয়া যাবে।
পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য ১৬টি বেসরকারি সংস্থা হচ্ছে, এসো জাতি গড়ি (এজাগ), নেত্রকোণা সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এনএসডিও), ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর-ডরপ, হেল্প সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, দীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (ডিএমইউএস), রুরাল ইকোনোমিক সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রেসডো), রাসটিক (রুরাল আনফরচুনেটস সেফটি তালিসম্যান ইল্যুমিনেশন কটেজ, বাঁচতে শেখা, পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা), ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন, মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মাউক), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য চেনা অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান), যুব একাডেমি, এসডিএস (শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি) এবং উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন একইসঙ্গে আরও ১৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/অভিযোগ চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ পরে জানান, প্রাথমিক বাছাইয়ের পর আপত্তি ওঠায় ৭টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। ৬৬টি দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হল। আবেদন করায় আরও ১৬টি সংস্থার বিষয়ে দাবি-আপত্তি জানতে চেয়ে ১৫ কার্যদিবস সময় দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের গোপন বা অবৈধ পারমাণবিক কার্যকলাপের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বিদ্বেষপূর্ণ বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যকে ভারত বিকৃত করে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
এরআগে বিভিন্ন গলমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, যেসব দেশ ‘পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে’ তাদের মধ্যে পাকিস্তানও আছে।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বিকৃত করে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত স্পতই তথ্য বিকৃত করছে এবং ট্রাম্পের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।
পররাষ্ট্র দপ্তর জোর দিয়ে বলেছে, ‘গোপন বা অবৈধ পারমাণবিক কার্যকলাপের অভিযোগ ভিত্তিহীন, বিদ্বেষপূর্ণ এবং ভারতের নিজস্ব দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ থেকে মনোযোগ সরানোর লক্ষ্যে পরিচালিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অংশ।’
পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করে বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামাবাদ সবশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় ১৯৯৮ সালের মে মাসে।
এতে আরো বলা হয়, ‘পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দেয়া প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন করে আসছে।’
ভারতের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তার রেকর্ড নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
হাইকোর্টের নির্দেশে সাপের কামড়ের জন্য দেয়া অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলার হাসপাতালে পাঠাতে সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। শনিবার সকালে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে ১৮ আগস্ট সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
১৭ আগস্ট সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে সরবরাহের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরুন্নবী। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে এ রিট করা হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়, সারা দেশে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই পাঁচ মাসে সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। অবকাঠামো ও শিল্প থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে তাদের সেবা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা আমাদের আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি তৈরিতে ব্যাপক অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, একটি বৃহত্তর পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে আইডিইবি এই দক্ষ কর্মীবাহিনীকে লালন-পালন, কারিগরি শিক্ষার প্রচার এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করছে।
‘গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণপ্রকৌশল দিবস-২০২৫ ও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সংগঠনের সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
আইডিইবি প্রতিবছর ৮ নভেম্বর ‘গণপ্রকৌশল দিবস’ পালন করে থাকে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘দক্ষ জনশক্তি-দেশ গঠনের মূল ভিত্তি’।
প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একটি জাতির প্রকৃত শক্তি কেবল তার প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যেই নয়, বরং তার জনগণের জ্ঞান, দক্ষতা ও সৃজনশীলতার মধ্যেও নিহিত।
তিনি বলেন, অব্যাহত প্রতিশ্রুতি, পেশাদারিত্ব এবং উদ্ভাবনের চেতনার মাধ্যমে আইডিইবি’র সদস্যরা আমাদের জাতি গঠনের প্রচেষ্টার অগ্রভাগে থাকবেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং আমাদের জাতীয় আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অবদান রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
প্রধান উপদেষ্টা ‘গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সূত্র: বাসস