সরকারের ব্যর্থতা থাকলে তা বিরোধী দলকে খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সততা নিয়ে কাজ করলে কেন ব্যর্থ হতে হবে- সংসদে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এমন কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদ নেতা বলেন, সফলতা কী, ব্যর্থতা কী এটা যাচাই করবে জনগণ। এটা যাচাই আমার দায়িত্ব না। সততা ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে জনগণের কল্যাণ বিবেচনা করে কাজ করলে ব্যর্থ হব কেন? বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মাননীয় সদসের্য যখন এতই আগ্রহ তাহলে আমার ব্যর্থতাগুলো আপনিই খুঁজে বের করে দিন, আমি সংশোধন করে নিব।’
এর আগে ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার ব্যর্থতা সর্ম্পকে জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কলেজেও রাজনীতি করেছি। রাজনীতি আমাদের পারিবারিক, একেবারে রক্তেই আছে। কিন্তু কখনো এত বড় দায়িত্ব নিতে হবে বলে ভাবিনি। ওই ধরনের কোনো আকাঙ্ক্ষাও ছিল না। এমনকি কখনো এই ধরনের দাবিও করিনি। সময়ের প্রয়োজনে যখন যে কাজ দিয়েছে, সেই কাজই করে গেছি। চেষ্টা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে রাজনীতিতে নিজের পথচলার বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কোনটা সফল হওয়া, কোনটা বিফল হওয়া, সেটা না। সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হবে। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে।
জাতির পিতার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয় নিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, চারণের বেশে সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি। বাংলাদেশকে চিনেছি, জেনেছি। সরকার গঠনের পর তৃণমূলের মানুষ যাতে ভালো থাকে সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়েই কাজ করেছি। তার সুফল এখন জনগণ পাচ্ছে। ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশে যে আমূল পরিবর্তন সেটা আমরা বয়োবৃদ্ধ যারা আছি তারা জানি। কিন্তু আজকের প্রজন্ম জানবে না। যদি সততা নিয়ে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে জনগণের কল্যাণে কি কাজ করতে হবে সেটা বিবেচনা করে কাজ করা যায় তাহলে ব্যর্থ হবো কেন? কোথায় সাফল্য, কোথায় ব্যর্থতা সেটা জনগণই করবে। আর মাননীয় সদস্য যখন এতই আগ্রহ তাহলে আমার ব্যর্থতাগুলো আপনিই খুঁজে বের করে দিন, আমি সংশোধন করে নিব।
এ কে এম রহমতুল্লাহর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান বন্দী যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দেয়। তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। সংবিধানের দুটি ধারায় পরিবর্তন এনে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। ভোটের অধিকার দেয়। গোলাম আযমসহ অনেক যুদ্ধাপরাধীদের পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব দেয়। জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের উপদেষ্টা বানায় মন্ত্রী বানায়। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে এসব কেবিনেটে স্থান দেয়। মন্ত্রী বানায়। এভাবে যুদ্ধাপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়া একটি জাতির জন্য কলঙ্কজনক। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যারা জিয়ার সঙ্গে হাতমেলাতে রাজি ছিল না তাদের নাম বাদ দেয়া, অপমানিত করা এবং যারা মুক্তিযোদ্ধা নয় তাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান তারা দিতে চায়নি।
৭৫ এর পরে এমন একটা সময় গেছে যে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে সেটা বলতেও ভীতসন্ত্রস্থ ছিলো মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তখন একে একে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়। চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। অপমানিত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিও দেয়া হতো না। এমন ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সাথে সাথে ইতিহাসও বিকৃতি করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা হয়। সেগুলি যাচাই-বাছাই করে অনেকগুলি ইতোমধ্যে পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যাতে তালিকায় থাকে সেই প্রচেষ্টা করার।
রহমতুল্লাহ তার সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তযুদ্ধ করেনি। আমরা মোট মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম মাত্র দুই লাখ। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেটাকে তারা ১৫/১৬ লাখ করেছে। এজন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতেও অপমানবোধ করি। যারা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। রাজাকারের বাচ্চা ওদেরও মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। এদের বাতিল করা হবে কী না।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান সম্পুরক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিবৃতকারীদের বিচারের আওতায় আনতে আইন প্রণয়ন করবেন কী না তা জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা ইতিহাস ৭৫ এরপর ইতিহাস বিবৃতি শুরু হয়। জাতির পিতাকে হত্যাকারী ও ক্ষমতা দখলকারীরা এই বিবৃতি শুরু করে। ধারাবাহিকভাবে তা ২১ বছর চলতে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষকে সেই বিবৃতি ইতিহাস থেকে মুক্তি দেয়। আজকে বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল উদ্ভাসিত নয়, দেশের মানুষ ও নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাস জানান সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এখন বিবৃত করার সুযোগ নেই। কেউ তা করতেও পারবে না। এট সম্ভবও নয়।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যারা ইতিহাস বিকৃতি করেছে ইতিহাসই তাদের বিচার করে দিয়েছে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না। যারা ইতিহাস বিকৃতি করেছে তাদের চরিত্রটা মানুষের কাছে প্রকাশ পেয়েছে। কত জঘন্য কাজ তারা করে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার যেটা কাজ হলো মানুষের কাছে সত্য ইতিহাসকে তুলে ধরা। ইতিহাস আজকে মানুষের সামনে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ তার চর্চা করছে। আজকের যুব সমাজ ইতিহাস জানতে সব চেয়ে বেশি আগ্রহী এটাই বড় বিচার। যারা সত্যটাতে মিথ্যা দিয়ে ঢাকতে চেয়েছিল তারাই আজকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে চলে গেছে। সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে। সত্য অনেক কঠিন। তবে এর জয় অবসম্ভাবী। বিচার প্রাকৃতিকভাবেই তাদের হচ্ছে।
এর আগে এ কে এম রহমতুল্লাহর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানান পদক্ষেপ চালিয়েছি। এরফলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বাংলাদেশে চালানো হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য গত বছর ১৪ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিভসে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রস্তাবটি ওহিও অঙ্গরাজ্যেরর কগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবট এবং ক্যলেফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না। পরবর্তীতে কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটি পোর্টার এবং নিউজার্সির টম ম্যালিনোস্কি। প্রস্তাবটি বিবেচনার জন প্রতিনিধি পরিষদে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয় যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ঐকান্তিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই নয় বরং স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগণিত মানুষের আত্মত্যাগ বিশেষত মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের ও বীরঙ্গনা মা-বোনদের সম্মানিত করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক নেতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার মূল্যের উপর।
জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু সেখানে টেকনিক্যাল লোক পাওয়া কঠিন। অনেকই বিদেশ থেকে লোক নিয়ে এসে কাজ দেওয়া হয়। সরকার টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে। যাতে করে দক্ষ জনগোষ্ঠি তৈরি হয়। তাদের চাকরির অভাব নেই। পাস করার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে তারা তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানায় চাকনি পায়।
টেক্সটাইল শিক্ষার্থী নয়, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টারিসহ অন্যান্য বিষয়ে পাস করে বিসিএস দেয়ার প্রবণতা আছে। তারা প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয় বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ব্যারিস্টার কিন্তু পুলিশও আছে। ডাক্তারও পুলিশে আছে। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে এত বেশি ক্যাডার সিস্টেম হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু ইতিমধ্যে অর্থনীতি ও প্রশাসন ক্যাডারকে এক করে দিয়েছি। এক্ষেত্রে আরও কতটা সংকুচিত করা যায় সেটা ভালো। নতুন নতুন ক্যাডার সৃষ্টি করলেই যে চাকরির দুয়ার খুলে যাবে। ব্যাপারটা তেমন নয়। চাকরি করাটা তাদের ইচ্ছের উপর নির্ভর করে। অনেকক্ষেত্রে আমাদের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ পেয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের নতুন করে কোন ক্যাডার তৈরি করার পরিকল্পনা নেই। তবে ভবিষ্যতে এটা যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারি।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ফতুল্লা ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় অনুমোদনহীন নকল তার, বৈদ্যুতিক পাখা ও প্রসাধনী সামগ্রী উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি করায় ৮টি প্রতিষ্ঠানকে ২২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে এই জরিমানা করা হয়।
আদালত পরিচালনা করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম। আদালতকে সহায়তা করে র্যাব-১০ এর একটি দল ও বিএসটিআই এর প্রতিনিধি।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এনায়েত কবির সোয়েব বিষয়টি জানিয়েছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবৎ এই অসাধু ব্যবসায়ীরা অনুমোদনহীন নকল তার, বৈদ্যুতিক পাখা ও প্রসাধনী সামগ্রী উৎপাদন, মজুদ ও বাজারজাত করে আসছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে অভিযোগের সত্যতা পেলে ৮টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।
এর মধ্যে জান্নাতুল মার্কেটিং কোম্পানিকে ৩ লাখ টাকা, সন্স কসমেটিক্সকে ২ লাখ টাকা, নিপা মেটাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপকে দেড় লাখ টাকা, রংধনু ক্যাবল্সকে ২ লাখ টাকা, পাওয়ার ক্যাবলসকে ৫০ হাজার টাকা, এনার্জি মেটাল ওয়ার্ক্সকে ৩ লাখ টাকা, ফরহাদ ইকেলট্রনিক্স লিমিটেডকে ৫ লাখ টাকা ও পলক ক্যাবল্সকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া আদালতের নির্দেশে প্রায় ১ লাখ টাকা মূল্যের নকল তার, বৈদ্যুতিক পাখা ও প্রসাধনী জব্দ করে ধ্বংস করা হয়।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত প্রথম আলোর বিতর্কিত প্রতিবেদনটি মহান স্বাধীনতাকে হেয় করার শামিল বলে মন্তব্য করেছে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ। শুক্রবার সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এটি সাংবাদিকতার নামে এজেন্ডা বাস্তবায়নের ধারাবাহিক চেষ্টার অংশ। সাজানো ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ সাংবাদিকতা নয়, অপসাংবাদিকতা। এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনও প্রতিবেদনের ব্যাপারে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে মামলা দায়েরের আগে আমরা প্রেস কাউন্সিলের মতামত নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ অবিলম্বে স্থগিত করতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তুর্ক বলেন, ‘বাংলাদেশি সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং সমালোচকদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয় দেখাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহৃত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’
তুর্ক বলেন, ‘আমি আবারও কর্তৃপক্ষকে এর (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) ব্যবহারে অবিলম্বে স্থগিতাদেশ আরোপ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষায় এই আইনের বিধানগুলোতে ব্যাপকভাবে সংস্কার আনার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার অফিস এরইমধ্যে এই সংশোধনে সব প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮ সালে কার্যকর হওয়া এই আইনের অধীনে ২ হাজারেরও বেশি মামলা হয়েছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ গত বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম দৈনিক প্রথম আলোতে কর্মরত সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করা হয় এবং ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তার জামিন আবেদনও খারিজ করে দেয়া হয়। মামলা করা হয় প্রথম আলোর সাংবাদিক মতিউর রহমান ও এক আলোকচিত্রীর বিরুদ্ধেও।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট নিয়ে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি করা হয়। ফেসুবক পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে এই আইনের অধীনেই গত ফেব্রুয়ারিতে পরিতোষ সরকার নামে একজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
তুর্ক বলেন, ‘আমার অফিস জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিধানগুলো সম্পর্কে ক্রমাগত উব্দেগ প্রকাশ করে আসছে। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এই আইনের স্বেচ্ছাচারিতা বা অত্যাধিক প্রয়োগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা থাকবে কিন্তু এভাবে গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকলে সেটি সম্ভব নয়। এই আইনের সঠিক সংশোধন প্রয়োজন।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্তদের মুক্তির লক্ষে সব মুলতবি মামলা পর্যালোচনার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনেরও আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সম্মান জানিয়ে কানাডার হাউস অব কমন্সে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিল বা ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাক্ট (এস-২১৪) পাস হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিল পাস হয়।
কানাডাতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই বিল পাশের মাধ্যমে কানাডা এখন থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করবে। এটা বাংলাদেশি-কানাডিয়ানদের জন্য এবং সারা বিশ্বের মাতৃভাষা প্রেমিকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ইউনেস্কো এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘের স্বীকৃত আদায়ে মরহুম রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম, এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে দূতাবাস। বিল এস-২১৪ পাশের জন্য কানাডাতে প্রবাসী আমিনুল ইসলামের উদ্যোগেরও সম্মান জানানো হয়।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান বিলটি ওপর আলোচনা ও পাসের সময় কানাডিয়ান পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন। সংসদ সদস্য কেন হার্ডি, যিনি বিলটি উত্থাপন করেন, তিনি হাইকমিশনারের উপস্থিতির প্রশংসা করেন। বিলটির অন্য এক জন অগ্রগণ্য সমর্থক, সিনেটর মোবিনা এস জাফর বিলটি পাসের সময় হাইকমিশানের সঙ্গে হাউজে উপস্থিত ছিলেন।
বিলটি পাশের পর কানাডার সংসদ সদস্য, সিনেটর এবং জন অ্যালড্যাগ এমপি হাইকমিশনারকে অভিনন্দন জানান। বিলটি পাশের সময় বিরোধী দলীয় নেতাও সংসদে উপস্থিত ছিলেন।
বিলটি পাস হওয়া—ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের প্রতি কানাডার অঙ্গীকারের প্রমাণ। বিলটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে ভাষা হলো মানুষের পরিচিতি ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অপরিহার্য উপাদান। ভাষার বৈচিত্র্যকে সম্মান করা, রক্ষা করা, প্রবর্ধন করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে নানার বাড়ির পুকুরে ডুবে হযরত ওমর (৫) নামে এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত শিশুর পিতা রায়দুল ইসলাম বলেন, ‘আমার দুই ছেলের মধ্যে ওমর ছিল বড়। সে তার নানীর বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার উত্তর তাজপুর গ্রামে থাকত এবং সেখানের স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। আজ (শুক্রবার) দুপুর ১২টার দিকে সমবয়সী কয়েকজন শিশুর সঙ্গে তার নানার বাড়ির ঘাটলা বাঁধা পুকুর পাড়ে গোসল করতে গেলে সে পুকুরের পানিতে ডুবে যায়। পরে খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় তার এক মামা পানিতে নেমে ডুব দিয়ে দেখে ভাগ্নে পানির ভিতর মাটি আঁকড়ে ধরে আছে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
রায়দুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানা এলাকায়। আমার দুই ছেলের মধ্যে ওমর বড় ছিল।’
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।’
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. শাহীন হাওলাদার (৩৮)। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের বাজার রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এনায়েত কবির সোয়েব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
সহকারী পরিচালক জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংবাদে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডিবি পরিচয় দেয়া প্রতারক মো. শাহীন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তি জানায়, তিনি বেশ কিছুদন যাবৎ কেরাণীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় প্রতারণা করে আসছেন। সাধারণ মানুষের কাছে ডিবি পুলিশের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও জানান তিনি। গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে।
সিলেট ও খুলনা ঘুরে অবশেষে নিজ বাসায় ফিরে এসেছেন মিরপুর থেকে নিখোঁজ ৪ বান্ধবী। সঙ্গে থাকা টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে নিজ নিজ বাসায় ফিরে আসে। বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে বাসা ছেড়েছিল তারা।
শুক্রবার কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে জানিয়েছেন।
হাফিজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়া ৪ কিশোরী গত বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় ফিরেছে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিশোরীরা জানিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে বাসা ছেড়েছিল তারা। প্রথমে তারা সিলেট যায়। পরে সিলেট থেকে খুলনা গিয়ে একটি একটি হোটেলে উঠে। একপর্যায়ে তাদের হাতের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া তারা বুঝতে পারে বাসা থেকে চলে এসে ঠিক কাজ করেনি।’
নিখোঁজ ৪ কিশোরী মিরপুর ১৩ নম্বরের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে তিনজন মিরপুর ১৩ নম্বরের একটি মাদরাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আরেকজন একই ক্লাসের অন্য একটি স্কুলের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার তারা স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে ওইদিন রাতে চার শিক্ষার্থীর অভিভাবক কাফরুল থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচ থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন বিবির বাগিচা ১ নম্বর গেটের দক্ষিণ পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, একদিন বয়সী পুরুষ নবজাতকটির মরদেহ প্রিন্টের কাপড় দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ছিল।
যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোহসীন আলী বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। অজ্ঞাতনামা নবজাতকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার জন্য প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে একটি উন্নয়নের রোল মডেল দেশে উত্তরণের অভিযাত্রায় প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। প্রবাসীদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবন করতে এবং বিশেষত আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংলাপের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে প্রবাসী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় এ সব কথা বলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্ক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আলোচনায় অভিবাসন ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতির কথা উল্লেখ করে বহির্বিশ্ব থেকে দেশের অভ্যন্তরে আর্থিক প্রবাহ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশেষ করে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র সচিব মোমেন।
এক্ষেত্রে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের সফল অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পণ্যের অন্যতম ভোক্তা হিসেবে প্রবাসীরা রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা বিভিন্ন ধরণের ব্যবসায়িক মডেল তৈরিতে অবদান রাখে এবং নিজ দেশে তাদের পরিবার ও পরিচালিত ব্যবসায়ে অর্থ প্রেরণ করে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে ।’
স্বাগতিক এবং উৎস উভয় দেশের ক্ষেত্রেই তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষ প্রবাসীদের অপেক্ষাকৃত অধিকতর অবদানের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব নীতি-নির্ধারকদেরকে তাদের স্বাগতিক দেশের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নীতি প্রনয়নে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তি করার সুপারিশ করেন।
এর আগে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের একটি রূপান্তরমূলক সমাধান হিসেবে ‘জিরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন এবং সেখানে বক্তব্য দেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী শামসুজ্জামানকে কাশিমপুর কারাগারে হস্তান্তর করা হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) কোর্টে হাজির করা হয়। সেখানে তাকে কারাগারে রাখার জন্য আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও রমনা থানার পরিদর্শক আবু আনছার। অপরদিকে মামলায় জামিন চেয়ে শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এরপর বেলা সাড়ে তিনটায় তাকে প্রিজন ভ্যানে করে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
২৬ মার্চ প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত একটি শিশুর ছবি ও ক্যাপশনে অসংগতি থাকার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ১৭ মিনিটের মাথায় প্রথম আলো ছবি ও ক্যাপশনটি সরিয়ে ফেলে এবং ভুল স্বীকার করে জানান, ছবির ভুলে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার ভোর ৪টার দিকে আশুলিয়ার আমবাগান এলাকার বাসা থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন দুপুরে গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া বুধবার মধ্যরাতে আব্দুল মালেক নামে এক আইনজীবী একই আইনে রমনা থানায় মামলা করেন। এতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান ও সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। এ মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্বের বহু দেশ যেখানে খাদ্য আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। যুদ্ধাবস্থার কারণে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কিন্তু এটা সাময়িক, বেশি দিন থাকবে না।
শুক্রবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা পিছনে ফিরে যেতে চাই না। মানুষ এখন আর একই দিন ৫০০ জায়গায় বোমা-গ্রেনেড দেখতে চায় না, মানুষ এখন একই দিনে ৫০০ যায়গায় ব্রিজ আর সড়ক উদ্বোধন হচ্ছে, তা দেখতে চায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত, ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী ও চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।
দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ১৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে টাঙ্গাইলে ৬৪ মিলিমিটার।
মেট্রোরেলের উত্তরা দক্ষিণ ও শেওড়াপাড়া স্টেশন শুক্রবার চালু হয়েছে। ফলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টেশনে এখন থেকে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন স্টেশন দুটির উদ্বোধন ঘিরে আগেই প্রস্তুত ছিল মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে একে একে আসতে শুরু করেন যাত্রীরা। অনেকেই টিকিট কাটেন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। আবার অনেকের পছন্দ স্বয়ংক্রিয় মেশিন। কোনো ঝামেলা ছাড়াই টিকিট সংগ্রহ করে মেট্রোতে চড়েন যাত্রীরা। এ সময় সব স্টেশন চালু হওয়াতে খুশি যাত্রীরা।
এদিকে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আগেই জানিয়ে ছিলেন মার্চের মধ্যে সব স্টেশন খুলে দেয়া হবে। সেই কথা তারা রাখতে পেরেছেন। সময় বাড়িয়ে ৫ এপ্রিল থেকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। আর জুলাই থেকে পুরোদমে শুরু হবে মেট্রোরেল চলাচল।
এদিকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত মেট্রোরেলের আয় হয়েছে ছয় কোটি ২০ লাখ টাকা। এ সময়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার। খরচ হয়েছে সাত কোটি ৩৩ লাখ টাকার মতো। খরচের বেশিরভাগ গিয়েছে বিদুৎ খরচে। সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ, বেতন ও অন্যান্য খরচ রয়েছে বলে জানা গেছে।
৩৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা খরচ করে রাজধানীর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ এখনো চলমান। প্রকল্পটি ২০১২ সালে হাতে নেয় সরকার। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এই পথের প্রথমাংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার চালু করা হয়। দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল ২০২৩ সালের শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিতাংশ ২০২৫ সালে চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।