উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলার পর এবার পল্লবীতে থামল মেট্রোরেল। স্টেশনটিতে যাত্রাবিরতি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরু করল। স্টেশনের তালিকায় নতুন এই স্টেশন যুক্ত হলেও প্রথমদিনেই যাত্রীর চাপ অনেকটা কম লক্ষ করা গেছে।
যাত্রীরা বলছেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের প্রথম দিনকে স্মরণীয় করতে মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ ছিল তা ধীরে ধীরে কমে গেছে। প্রথম দিকে পল্লবী স্টেশন চালু না হলেও উত্তরা বা আগারগাঁও স্টেশন থেকে স্বপ্নের মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছেন।
এদিকে ব্যবহারকারীদের অনুরোধে সময়সূচি পরিবর্তন করে ৩০ মিনিট পিছিয়েছে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ। আগে সাড়ে ৭টায় টিকিট কেটে ৮টায় ট্রেনে উঠতে হতো। এখন সাড়ে ৮টায় ট্রেন ছাড়বে। আর ৮টার সময় গেট খুলে দেয়া হবে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেট্রোরেল যাত্রী পরিবহন করবে।
মিরপুর পল্লবী এলাকার বাসিন্দা সুমি মণ্ডল বলেন, ‘আমার অফিস ফার্মগেট। মেট্রোরেলের পল্লবী স্টেশনটি চালু হওয়ায় আমার জন্য সুবিধা হলো। এখন তাড়াতাড়ি অফিস যেতে পারব। আর এখন আগের মতো ভিড় নেই ফলে টিকিট কাটতে সমস্যা হচ্ছে না।’
বুধবার পল্লবী স্টেশন চালুর প্রথম দিন তেমন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। স্টেশনের দুই অংশের ছয়টি টিকিট বিক্রয় মেশিনের একটি বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি মেশিনে খুচরা টাকা না থাকায় টিকিট সংগ্রহ করতে না পারায় অনেককে কাউন্টারে যেতে দেখা গেছে। পাশাপাশি স্টেশনে টিকিট বিক্রির মেশিনের কোন কোন মুদ্রা মেশিনে প্রবেশ করানো যাবে, তার চার্ট টাঙিয়ে রাখতে দেখা যায়।
টিকিট বিক্রয় মেশিনগুলো বন্ধের বিষয়ে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) ইফতেখার হোসাইন বলেন, ‘মেশিনগুলো নতুন। ব্যবহারকারীরা পুরোনো টাকা দেয়ায় মেশিন অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।’
এদিকে ডিএমডিটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে আগামী এক মাসের মধ্যে আরও দুটি নতুন স্টেশন যুক্ত করা হতে পারে। এভাবে ধাপে ধাপে ২৬ মার্চের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশনের সবই খুলে দেয়া হবে।
আগে বিরতিহীনভাবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশনের ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। এখন মাঝে পল্লবী যুক্ত হয়েছে। পল্লবী থেকে দুই ষ্টেশনের ভাড়া সমান ৩০ টাকা। সে ক্ষেত্রে আগারগাঁও-পল্লবী এবং পল্লবী-উত্তরার ভাড়া ৩০ টাকা।
গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন থেকে মেট্রোরেল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহনকারী জাহাজ ‘উরসা মেজর’ ভিড়তে না দেয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী বলে জানিয়েছে রাশিয়া। গত ডিসেম্বরে মোংলা বন্দরে রাশিয়ার জাহাজটি ভিড়তে দেয়া হয়নি। আর এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপকেই দায়ী করছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়াবিরোধী নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মস্কোয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন।
ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাসের ফেসবুক পেজে সোমবার বিবৃতিটি তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাহাজটি গ্রহণের জন্য আগের দেয়া সম্মতি বাংলাদেশ বাতিল করেছে মার্কিন চাপে। এতে সরঞ্জামগুলো পৌঁছানো মাসখানেক পিছিয়ে গেল। এটা বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য অনুকূল নয়।
রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মার্কিনিরা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে, অন্য দেশের রাজনীতিক ও জনগণকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমন অভিযোগ করে মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘অনেক দেশের এসব চাপ মোকাবিলার সক্ষমতা নেই। চাপের মুখে রাশিয়াবিরোধী নিষেধাজ্ঞায় অন্য দেশগুলোকে যোগদান করতে বাধ্য করাকে বেআইনি উল্লেখ করে বিবৃতিতে এসব তৎপরতা বন্ধ করতে বলা হয়।’
গত মাসের মাঝামাঝি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহনকারী রাশিয়ার জাহাজ ‘উরসা মেজর’ ভারতের বন্দরেও মালামাল খালাস করতে পারেনি।
গত ২৪ ডিসেম্বর রূপপুর প্রকল্পের সরঞ্জাম নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির। তার চার দিন আগে ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’। জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর: ৯৫৩৮৮৯২, যা প্রকৃতপক্ষে ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজের সনদ নম্বর। বিষয়টি যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। অবশ্য রাশিয়া দাবি করেছে, জাহাজটি ‘স্পার্টা-৩’ ওরফে ‘উরসা মেজর’।
পরে জাহাজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে গিয়ে পণ্য খালাসের চেষ্টা করে। সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এজেন্ট সেখান থেকে পণ্য সড়কপথে বাংলাদেশের রূপপুরে পৌঁছাতে চেয়েছিল। তাও সম্ভব হয়নি। সপ্তাহ দুয়েক হলদিয়ায় অপেক্ষা করে ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায় জাহাজটি। পরে সেটি চীনের উদ্দেশে যাত্রা করে।
এ দিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজের নাম ও রং পরিবর্তন করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠানোর কাজটি রাশিয়া জেনেশুনেই করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার শত শত জাহাজ আছে। এর মধ্যে ৬৯টি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। এগুলো ছাড়া যে কোনোটিতে মালামাল পাঠাতে পারত।’
অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেনকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
এই কর্মকর্তার অভোগকৃত অবসরোত্তর ছুটি এবং এ সংক্রান্ত সুবিধা স্থগিতের শর্তে দুই বছরের জন্য ওই পদে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক পদের নির্ধারিত বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধা পাবেন তিনি।
এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব জুয়েনা আজিজের চাকরির মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের পদ থেকে অবসরে যাওয়া আখতার হোসেন জুয়েনা আজিজের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে অসংখ্য মানুষ হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তুরস্ক ও সিরিয়ার এই বিপদের সময় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ পাশে আছে। তার সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী নিজতের সংখ্যা ১৮০০ ছাড়িয়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ বিভিন্ন দেশ বিধ্বস্ত এই দেশদুটির পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তুরস্কও আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।
রাজধানীর কদমতলীর জুরাইন এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি মিঠু শেখকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তিনি বাগেরহাটের মোল্লারহাট থানার ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি।
সোমবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বিকেলে র্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এনায়েত কবির সোয়েব বিষয়টি জানিয়েছেন।
এনায়েত কবির সোয়েব জানান, গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায় বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট থানার ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি মিঠু শেখ জুরাইন এলাকায় অবস্থান করছে। এ তথ্যে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে গ্রেপ্তার আসামিকে মোল্লারহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
করোনার কারণে গত দুই বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সশরীরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার সংক্রমণ কমায় এবার শহীদ দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ বছর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। শহীদ মিনারে তাদের আগমন, অবস্থান ও প্রত্যাগমনের সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সবশেষ ২০২০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত দুই বছর তাদের পক্ষে কর্মকর্তারা শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা বলয়ে নিয়ে আসা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকা ভিডিও সার্ভিলেন্সের আওতায় আনা হবে। প্রবেশ, বহির্গমন পয়েন্টসহ প্রয়োজনীয় এলাকায় সিসিটিভি, নাইট ভিশন ক্যামেরা ও আর্চওয়ে থাকবে।’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর এবং আজিমপুর কবরস্থান এলাকায় অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অপ্রতিকর অবস্থা রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ডিএমপি ব্যবস্থা নেবে। ঢাকা মহানগরের বাইরের অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহর, বিভাগীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মসূচিতেও সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিদেশি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা যাতে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা যেন নির্বিঘ্নে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারেন সেজন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রস্থানের পর ৩০ মিনিট বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে।
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা অগ্নিনির্বাপন গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও লাইটিং ইউনিট নিয়ে মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, এম্বুলেন্স ও ওষুধসহ দুইটি চিকিৎসা ক্যাম্প থাকবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, সর্বোপরি দেশের একজন সাধারণ নাগরিককে নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলের বা কারোরই এমন উপহাস করার কোনো অধিকার নেই বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে টিআইবি বলেছে, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে জানা যায়, আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবমাননা ও উপহাসমূলক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে।’
দেশের দুটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে।” উল্টোদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “...এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তার সঙ্গে জিততে হয়।” দুই ক্ষেত্রেই সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলমকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্যসূচক বিবেচনায় পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন দুই নেতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক রীতি অনুযায়ী পরস্পরকে নিয়ে বিষোদ্গার নতুন কিছু নয়। কিন্তু সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল আলমের ব্যক্তি পরিচয় ও অবস্থাকে মানদণ্ড হিসেবে দাঁড় করিয়ে দুই দল একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। সেই মানদণ্ড যে ইতিবাচক কিছু নয়, বরং এর মাধ্যমে আলম এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি দেশের “সাধারণ” একজন নাগরিকের প্রতি দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের এমন আচরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্থুলতাকেই জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করে।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বছর পূর্ণ হলে, কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত না হলে, দেউলিয়া না হলে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ না করলে বা আনুগত্য স্বীকার না করাসহ কিছু শর্ত পূরণে তিনি সংসদ সদস্য হতে পারবেন। সংবিধানের শর্ত পূরণের পরও আলমকে কেন্দ্র করে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারকেই ভুলুণ্ঠিত করে না, বরং তার সাংবিধানিক অধিকার অবজ্ঞার নামান্তরও বটে। “হিরো আলম নির্বাচিত হলে সংসদকে ছোট করা হতো” এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তরে সংসদকে ছোট করা হয়েছে। কারণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের চেতনা ও চর্চায় মানুষে-মানুষে বৈষম্যের প্রকাশ অগ্রহণযোগ্য। ’
ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে পাঠানোর কথা বলে মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মো. সাইফুল ইসলাম পরাগ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গত রোববার দিনগত রাতে তাকে রাজধানীর উত্তরা গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের দাবি, মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেই পোল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন প্রতারণাকারী।
সোমবার বিকেলে বিষয়টি জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গত রাতে অঙ্গীকার বিডি নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পরিচয় দেয়া প্রতারক সাইফুল ইসলাম পরাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি অঙ্গীকার বিডি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পোল্যান্ড পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
র্যাব অধিনায়ক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সাইফুল ইসলাম ও তার বন্ধু মিলে পোল্যান্ড পাঠানোর নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এই টাকা দিয়ে তারা দুজনই পোল্যান্ডে পাড়ি জমানোর বন্দোবস্ত করেন। ইতোমধ্যে তার অপর সহযোগী সে দেশে চলে গেছেন। কিন্তু সাইফুলের ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় তিনি অপেক্ষায় ছিলেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির ধার্য তারিখ রয়েছে।
সোমবার রামপুরা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালতের রামপুরা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজা দৈনিক বাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
এসআই সেলিম বলেন, ফারদিন হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। সেখানে মামলা থেকে বুশরার অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির ধার্য তারিখ রয়েছে। ওইদিন প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত বুশরা জামিন পান। পরদিন কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে গত বছরের ৪ নভেম্বর ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ওই দিনই তিনি নিখোঁজ হন। সেদিন ফারদিনের সঙ্গে ছিলেন বুশরা।
৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
এ ঘটনায় আমাতুল্লাহ বুশরাসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা মামলা করেন। মামলার পর গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তভার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওপর ন্যস্ত করা হয়। এরপর মাদকসংশ্লিষ্টতা, মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে খুন, কিশোর গ্যাংয়ের সংশ্লিষ্টতার বিষয় সামনে আসে। সর্বশেষ তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি ও র্যাব জানায়, স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ বা আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন। ডিবি পুলিশ জানায়, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলে থাকা বুশরা নির্দোষ।
রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান ৮৯ লাখ টাকা মূল্যের (৮৯০ গ্রাম) হেরোইনসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আব্দুল বারী ও মো. জহিরুল ইসলাম।
রোববার দিনগত রাত বিমানবন্দরের ইর্শ্বাল কলোনি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক মিঞা এ তথ্য জানিয়েছেন।
মো. আজিজুল হক মিঞা বলেন, গোয়েন্দা তথ্য আসে, দুইজন মাদক কারবারি ঢাকা ইর্শ্বাল কলোনী এলাকার একটি খাবারের হোটেলের সামনে হেরোইন বিক্রির জন্য অবস্থান করছেন। এ সময় অভিযান চালিয়ে ৮৯০ গ্রাম হেরোইনসহ আব্দুল ও জহিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হেরোইনের মূল্য প্রায় ৮৯ লাখ টাকা। এ ঘটনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।
ওসি আজিজুল হক মিঞ্জা আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা নিজেদের বাহক বলে স্বীকার করেছেন। সোমবার তাদের আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদলত ২ দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন। তদন্তের পর বলা যাবে এই মাদক পাচারের মূলহোতা কারা।
চূড়ান্ত হিসাবে দেশের জনসংখ্যা জনশুমারির প্রাথমিক তথ্যের চেয়ে বেড়েছে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন। ফলে জনশুমারির পর প্রাথমিক হিসাবে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন বলা হলেও চূড়ান্ত হিসাবে দেশের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনে।
সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এরপর সেই পরিসংখ্যানের যথার্থতা যাচাইয়ে আরেকটি পরীক্ষামূলক জরিপ করা হয়। সেই জরিপের ফলাফল পাওয়ার পর যাচাই শেষে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জনশুমারির চূড়ান্ত তথ্য জানালেন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে অসংখ্য মানুষ হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তুরস্ক ও সিরিয়ার এই বিপদের সময় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ পাশে আছে।
তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গাজিয়ানতেপের শহর নুরদায়ির ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এর কেন্দ্রস্থল ছিল সমতলের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে।
নুরদায়ি শহরটি তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত। এই দুটি দেশ ছাড়াও লেবানন ও সাইপ্রাসে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ৮০০ কিলোমিটার দূরের গাজা উপত্যকায়ও অনুভূত হয়েছে কম্পন।
তুরস্কে সোমবারের এই ভূমিকম্পকে ১৯৩৯ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সেবার একই মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। বিগত ২৫ বছরে সাতবার তুরস্কে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এবারের ভূমিকম্প সবচেয়ে শক্তিশালী বলছেন ভূতত্ত্ববিদরা।
কম্পনের তীব্রতা এবারে এতই বেশি ছিল যে মূল ভূমিকম্পের পর অন্তত ৬৬টি পরাঘাত অনুভূত হয়।
কিশোরগঞ্জে পুলিশের উপর হামলা ও নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২১ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তাদেরকে বিনা কারণে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামীর জেলা শাখা।
সোমবার সকাল ৯ টার দিকে সদর উপজেলার প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড় এলাকা থেকে শিবিরকর্মীদের আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘সকালে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে পুলিশ জানতে পারে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার চেষ্টা করছে শিবির কর্মীরা। পরে সদর থানার প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড় এলাকায় গিয়ে এ তথ্যের সত্যতা মেলে। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পরে তারা ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। পরে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে ২১ জন শিবির কর্মীকে আটক করা হয়।
ওসি জানান, হামলায় পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আজ (সোমবার) ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৬ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন জেলখানা মোড় এলাকায় র্যালির আয়োজন করে শিবিরের কর্মীরা। সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে র্যালি শেষে ফেরার পথে ২১ কর্মী-সমর্থককে বিনা কারণে পুলিশ আটক করেছে।’
লাশ হয়ে ফেরা ৭১৪ অভিবাসী নারী শ্রমিকের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিবাসী নারী শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ তদন্ত, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সোমবার রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আঞ্জুমান আরা। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, বিএমইটির মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
‘লাশ হয়ে ফিরলেন ৭১৪ নারী’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ৪০৪ জন নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে। তাদের মধ্যে ২২৭ জনের ক্ষেত্রে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’লেখা ছিল।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তথ্য বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ৭১৪ নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে। তাদের মধ্যে ‘স্বাভাবিক’ মৃত্যুর সনদ লেখা লাশের সংখ্যা ২৬২। আর ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে ৩১৯ নারী শ্রমিকের লাশ দেশে আসে। যাদের মধ্যে ২২০ জনের ক্ষেত্রে লেখা ছিল ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’।
অন্যদিকে ব্র্যাকের পরিসংখ্যান বলছে, এই সময়ে যেসব নারী শ্রমিকের লাশ দেশে এসেছে, তাদের মধ্যে ১৩৮ জনের মৃত্যুর কারণ লেখা ছিল ‘স্ট্রোক’। ১১৬ জনের ক্ষেত্রে ‘আত্মহত্যা’। ১০৮ জনের ক্ষেত্রে ‘দুর্ঘটনা’। ১৬ জনের ক্ষেত্রে ‘হত্যা’। এর বাইরে করোনা, ক্যানসার, অজানা রোগ বা কোনো কারণ উল্লেখ না করেই দেশে নারী শ্রমিকের লাশ পাঠানোর ঘটনা ঘটে।
এদিকে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) ২০১৭ সাল থেকে দেশে আসা ৫৪৮ নারী শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ ও করণীয় বিষয়ে একটি গবেষণা করেছে। ‘ডেথ অব ফিমেল মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স ইন ডেস্টিনেশন কান্ট্রিজ’ শিরোনামের সেই গবেষণায় সনদে থাকা মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, ৬৯ শতাংশ নারী শ্রমিকের ‘স্বাভাবিক’ ও ৩১ শতাংশের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
বিদেশে মারা যাওয়া শ্রমিকের লাশ দেশে আনার কাজটি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে হয়। লাশ দাফনের জন্য বিমানবন্দরে নিহতের পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা দেয়। পরে শ্রমিকের পরিবারকে তিন লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয়া হয়।