সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সস্তার বিদ্যুৎ এখন গলার কাঁটা

আপডেটেড
২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৫:০৯
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:১৪

কয়লার দহন মান বা ক্যালরিফিক মান ৪৬০০ হলে বিশ্ববাজারে প্রতি টনের দাম ১৫০ ডলার। জাহাজ ভাড়া ৫০ ডলার যোগ হলে প্রতি টনের দাম বড়জোর ২০০ ডলার হওয়ার কথা। কিন্তু এই মানের কয়লা আদানি গ্রুপ ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কিনছে ৩৪৭ ডলারে। এতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে ২৪ টাকা ২৮ পয়সা।

অথচ বাংলাদেশের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫০৪০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে খরচ পড়ছে ২৪৭ ডলার এবং কেন্দ্রটির ইউনিটপ্রতি ব্যয় পড়ছে ১৩ টাকার কিছু বেশি।

পায়রা ও গোড্ডার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে এই খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ২৫ বছর আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে বড় অর্থঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

শুধু আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের দামই বেশি পড়বে, এমন নয়। আমদানি করা কয়লাচালিত পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয়ও অনেক বেশি। এর মধ্যে আদানি ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্র ভাড়াও দেয়া হয়েছে বেশি। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রকে দেয়া হয়েছে ৪.২৫ ইউএস সেন্ট যা বর্তমান দেশি মুদ্রায় ৪.৫৪৫৪ টাকা, আর রামপালকে দেয়া হয়েছে ৪.৮৫ ইউএস সেন্ট বা দেশি মুদ্রায় ৫.১৮৭০ টাকা। আদানি ভারতের বৃহৎ গ্রুপ আর রামপালে ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান এনটিপিসির মালিকানা রয়েছে।

পরিবেশবাদী ও বিশেষজ্ঞদের বিরোধিতার মুখে বাগেরহাটের সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের জন্য কিছুটা ক্ষতিকর হলেও এটি কম মূল্যে বিদ্যুৎ দেবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয় অনেক চড়া।

এমনকি সৌরবিদ্যুৎ থেকেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি। তা ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৩২০ মেগাওয়াটের মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট চালু হয় গত ডিসেম্বরে। কিন্তু ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনে যেতে পারছে না কারিগরি ত্রুটির কারণে। আদৌ কেন্দ্রটি পূর্ণ সক্ষমতায় চলবে কি না, তা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশ্ন উঠেছে, পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়ে অর্থনীতিতে নাজুক অবস্থায় ফেলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে কতটা লাভবান হবে বাংলাদেশ।

এ রকম পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা আদানি গ্রুপের কর্তাব্যক্তির সঙ্গে কয়লার দাম কমানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। এ ছাড়া রামপাল কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ নতুন করে কীভাবে নির্ধারণ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কয়লার দাম কেন বেশি পড়ছে সেটি আমরা আলোচনা করেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে ওদের কাছে জানতে চাইব।’ তিনি বলেন, ‘ওরা নিউ ক্যাসেল ইনডেক্সে কয়লা কিনছে। নিউ ক্যাসেল ইনডেক্সে কয়লার দাম একটু বেশি। অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক এই ইনডেক্স করা হয়েছে কয়লার বাজারে চীন যেন ঢুকতে না পারে।’

২০১৬ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে পিডিবির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুসারে আদানি ভারতের ঝাড়খন্ডে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে, সেখানকার বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে। তখন প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছিল ৮.২৫ ইউএস সেন্ট। এই বিদ্যুৎ আগামী ২৫ বছর কিনবে বাংলাদেশ। ৭৫০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটে মোট ১৫০০ মেগাওয়াট স্থাপিত ক্ষমতা হবে কেন্দ্রটির।

কয়লায় কি আদানির কারসাজি?
দেশের যেকোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানির যে আন্তর্জাতিক দাম সেই অর্থ পরিশোধ করে থাকে পিডিবি। বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করার সময় জ্বালানির দাম, কেন্দ্রভাড়া, কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ-সব মিলিয়ে বিল করা হয়। জ্বালানির দাম ছাড়া অন্য অর্থ নির্দিষ্ট থাকে, এটি বাড়ে না। ফলে কোনো বেসরকারি কেন্দ্র যদি জ্বালানির দাম বাড়তি দেখাতে পারে তাহলে ওই কেন্দ্রের বিদ্যুতের দামও বেড়ে যায়।

ভারতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা কমদামে কয়লা কিনে বেশি দাম (ওভার ইনভয়েসিং) দেখায়। বিষয়টি নিয়ে ভারতের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্ট বা ডিআরআই) ২০১৬-এর জুলাইয়ে ভারত সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, কয়লা আমদানিকারকরা আমদানির ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ বেশি দাম দেখিয়েছে। এ অর্থ তারা পাচার করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ তালিকায় আদানি ও রিলায়েন্সের নাম রয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, ‘আদানি ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লার দাম দেখাচ্ছে ৩৪৬ ডলার প্রতি টন। অথচ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৫০৪০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছানোর পর খরচ পড়ছে ২৪৭ ডলার। পায়রা কয়লা কেনে অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসেল ইনডেক্স অনুযায়ী, আদানিও কয়লার দাম দেখাচ্ছে নিউ ক্যাসেল ইনডেক্স অনুযায়ী। অথচ টনপ্রতি ১৫০ ডলারের বেশি দাম দেখাচ্ছে আদানি।’

তারা বলেন, ‘সম্প্রতি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যান ভারতে গিয়ে আদানির কর্তাব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কয়লার দাম বেশি পড়ছে সেটি তারা বলে এসেছেন। এখন কীভাবে কয়লার দাম কমানো যায়, সেটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।’

কয়লা বিদ্যুতের দাম কম পড়ছে না
আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে পড়বে ২৪ টাকা ২৮ পয়সা। এর মধ্যে কেন্দ্রভাড়া ধরা হয়েছে ৪.২৫ ইউএস সেন্ট যা বর্তমান দেশি মুদ্রায় ৪.৫৪৫৪ টাকা। বছরে কেন্দ্রটির ১৫০০ মেগাওয়াটের স্থাপিত ক্ষমতা বাবদ কেন্দ্রভাড়া দিতে হবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয়েছে ৪.৮৫ ইউএস সেন্ট বা দেশি মুদ্রায় ৫.১৮৭০ টাকা। দেশে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রভাড়া পেয়েছে রামপাল। কেন্দ্রটি বছরে শুধু কেন্দ্রভাড়াই পাবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে এস আলম গ্রুপের ১২২৪ মেগাওয়াট কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয়েছে প্রতি ইউনিটে ৪.৪১ ইউএস সেন্টস বা ৪.৭১ টাকা। কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত করা হবে ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা, যার প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ২৫৪.৩৮ ডলার। কেন্দ্রটি বছরে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই পাবে ৫ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ১৮.৩৯ টাকা।

বরগুনায় অবস্থিত বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার লিমিটেডের ৩০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা। এই মানের কয়লার দাম উদ্যোক্তারা দেখিয়েছেন ২৭০ ডলার। কেন্দ্রটিকে ক্যাপাসিটি চার্জ ইউনিটপ্রতি দেয়া হয়েছে ৩.৩৯ ইউএস সেন্টস আর দেশি মুদ্রায় ৩.৯৪ পয়সা। বছরে কেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি চার্জ পাবে ১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১৮.৮৪ টাকা।

পটুয়াখালীর পায়রায় চীনা সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি ও সরকারের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশনের সমান মালিকানায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয় ইউনিটপ্রতি ২.৬৫ ইউএস সেন্টস বা দেশি মুদ্রায় ২.৮৩ টাকা। ১২৪৪ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি সারা বছরে কেন্দ্রভাড়া পাবে ৩ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এই কেন্দ্রটির বর্তমানে বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ১৩.৩৭ টাকা। কেন্দ্রটিতে ৫০৪০ ক্যালরিফিক মানের কয়লার দাম পড়ছে ২৪৫ ডলার।

এই পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় উৎপাদন ব্যয় ১৩.৩৭ থেকে ২৪.২৮ টাকা পড়ছে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে সরকার সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে গড়ে ১১ ইউএস সেন্টসে বা ১১.৭৬ টাকা প্রতি ইউনিটের বিদ্যুতের দাম দিয়ে অনুমতি দিয়েছে। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে না, ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে বিদেশি মুদ্রার রির্জাভের ওপর টান পড়ে না। অন্যদিকে কয়লা, গ্যাস ও তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর জ্বালানি আমদানি করতে হয় ডলার দিয়ে। এতে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর বড় টান পড়ছে।

রামপাল কি পূর্ণ সক্ষমতায় চলবে?
গত ডিসেম্বর থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ১৩২০ মেগাওয়াটের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এই কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা ধরা হয়েছে ৬১৭ মেগাওয়াট। এর মধ্যে কেন্দ্রটি একাধিকবার যান্ত্রিক কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।

নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পিডিবির এক কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেছেন, ‘কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর কখনোই ৬১৭ মেগাওয়াট ক্ষমতায় চালু করতে পারেনি। কেন্দ্রটি ৫৪০ মেগাওয়াটের ওপর উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের মধ্যে থাকা টিউব ফেটে যায়। এই কেন্দ্রটির উৎপাদনে থাকা প্রথম ইউনিটটি তার পূর্ণসক্ষমতা বা কেন্দ্রভাড়া পাবে যে স্থাপিত ক্ষমতার ভিত্তিতে, সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে না। রামপালের ক্যাপাসিটি ৬১৭ মেগাওয়াট ধরা হয়েছে, আর উৎপাদন করতে পারে সর্বোচ্চ ৫৪০। কেন্দ্রটি ঘোষিত স্থাপিত ক্ষমতার অন্তত ৭০ মেগাওয়াট কম করে থাকে। এই ৭০ মেগাওয়াট ক্যাপাসিটি চার্জ তৃতীয় পক্ষ দিয়ে নিরীক্ষা না হলে রামপাল বছরে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা বেশি নেবে।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগ এখন কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ নতুন করে নির্ধারণ করতে চায়। বিদ্যুৎ বিভাগ বিদেশি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা নিরীক্ষা করবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো আমাদের ডলারের মজুতের ওপর টান বসিয়েছে, আগামীতে আরও বসাবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভে বড় সংকট তৈরি করবে। আর কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ, কয়লার দাম অনেক বেশি। আদানির কেন্দ্রতো রীতিমতো ভয়াবহ। এ রকম পরিস্থিতিতে এসব কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ ও জ্বালানির দামের বিষয়ে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তৃতীয় পক্ষকে যুক্ত করে বোঝা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘কয়লা সস্তা বলে সরকার ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করল। এখন দেখা যাচ্ছে কয়লার চেয়ে সৌরবিদ্যুতের দাম কম। আমাদের কম দামে দেশীয় জ্বালানির ওপর নির্ভর করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ বড় সহায় হতে পারে।’


৪৯ বাংলাদেশিসহ ১১১ অভিবাসীকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৪৯ বাংলাদেশিসহ মোট ১১১ জন বিদেশি অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। সাজার মেয়াদ শেষে চলতি নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জোহর রাজ্যের পাইনঅ্যাপল টাউন ইমিগ্রেশন ডিপো থেকে তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো করা হয়।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) জোহর রাজ্যের ইমিগ্রেশন বিভাগের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত নোটিশে জানানো হয়, ফেরত পাঠানোদের মধ্যে বাংলাদেশের ৪৯ জন ছাড়াও রয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ার ২৪, নেপালের ১২, পাকিস্তানের ৯, কম্বোডিয়ার ৪, ভারতের ৪, চীনের ৩ এবং লাওস, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুরের ২ জন করে অভিবাসী।

অভিবাসীদের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-১ ও ২ (কেএলআইএ-১ ও কেএলআইএ-২), সেনাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সুলতান ইস্কান্দার বিল্ডিং কমপ্লেক্স এবং স্টুলাং লাউট ফেরি টার্মিনালের মাধ্যমে নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত বিমান ও ফেরির টিকিটের ব্যয় এসেছে বন্দিদের ব্যক্তিগত সঞ্চয়, পরিবারের আর্থিক সহায়তা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে।

জোহর স্টেট ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট জানায়, সাজা শেষ হওয়া বিদেশি বন্দিদের মালয়েশিয়ায় অতিরিক্ত অবস্থান রোধে নিয়মিতভাবেই এমন প্রত্যাবাসন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।


বোরহানউদ্দিনে নার্সদের ৮ দফার দাবি বাস্তবায়নের জন্য স্মারকলিপি প্রদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোলার বোরহানউদ্দিনে জনবান্ধব নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সেবা ও শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা গড়ে তুলতে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) মিডওয়াইফদের ৮ দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সিং স্টাফরা।

সোমবার (২৪ নভেম্বর ) বেলা ১১টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালের নার্সদের একটি প্রতিনিধি দল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা রনজিৎ চন্দ্র দাস এর কাছে ৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নাজির মো: মনির হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার তৃপ্তি রায়, সিনিয়র স্টাফ নার্স, রুমা আক্তার, আবুল কালাম আজাদ, আশা মনি, শাবনূর ও রিনা রায়। জনবান্ধব নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সেবা ও শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা গড়ে তুলতে আট দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ঢাকায় মহাসমাবেশের পর ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত নানা কর্মসূচি ঘোষনা করে। এ সময়ের মধ্যে ০৮ দফা দাবী বাস্তবায়ন না হলে ৩০ নভেম্বর কালো ব্যাজ ধারন পূর্বক প্রতিকী শাট-ডাউন এছাড়া আগামী ০২ ডিসেম্বর দেশের সমস্ত স্বাস্থ্য সেবা এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমপ্লিট শাট-ডাউনের ঘোষনা দিয়েছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ। ৪৮ বৎসরের ঐতিহ্য ও অগ্রগতির স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে বিলুপ্ত করে নার্স ও মিডওয়াইফদেরকে ভিন্ন অধিদপ্তর ও ভিন্ন পেশাজীবীর মাধ্যমে পরিচালনা করার অপচেষ্টার কারনে এবং মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কর্তৃক আশ্বাস প্রদানের ১৪ মাসেও নার্স-মিডওয়াইফদের ন্যায্য দাবীগুলো বাস্তবায়নে বিলম্বের কারনে উদ্ভুত সকল পরিস্থিতির দায়ভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ, প্রশাসন ও ব্যক্তিকেই বহন করতে হবে বলে জানানো হয়।

স্মারকলিপি তে বলা হয়, স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে ভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে একীভূত করার অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠন করতে হবে। অবিলম্বে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি, অর্গানোগ্রাম, স্ট্যান্ডার্ড সেট-আপ এবং ক্যারিয়ার প্যাথ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। নার্সদের পরবর্তী উচ্চতর পদগুলোতে (৯ম হতে ৪র্থ গ্রেড) ভূতাপেক্ষভাবে পদ প্রমার্জণের মাধ্যমে পদোন্নতিসহ সুপারনিউমেরারী পদন্নোতি দিতে হবে। অবিলম্বে নার্সিং সুপারভাইজার এবং নার্সিং ইন্সট্রাক্টর পদগুলো ৯ম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।

ডিপ্লোমা নার্স-মিডওয়াইফদের সনদকে স্নাতক (পাশ) সমমান দিতে হবে এবং সকল গ্রাজুয়েট নার্স-মিডওয়াইফদের জন্য প্রফেশনাল বিসিএস চালু করতে হবে। বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নিয়োগ-বিধি ও মানসম্মত বেতন কাঠামো তৈরী করতে হবে এবং অপ্রশিক্ষিত ও নিবন্ধনবিহীন ভুয়া নার্স-মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নার্স-মিডওয়াইফদের ঝুঁকিভাতা প্রদানসহ নার্সদের উপর জোরপূর্বক স্বৈরাচারী সরকারের চাপিয়ে দেয়া নার্সিং ইউনিফরম পরিবর্তন করতে হবে। শয্যা, রোগী ও চিকিৎসক অনুপাতে নার্স-মিডওয়াইফদের পদ সৃজন ও নিয়োগ দিতে হবে।

তারা আরো জানান, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন "সেবা পরিদপ্তর" যা উন্নীত হয়ে বর্তমানে "নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর" যা জনকল্যানমূখী নার্সিং ব্যবস্থাপনা, নার্সিং শিক্ষা ও প্রশাসন সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা ও বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বিগত ৪৮ বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে এগিয়ে চলা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে ভিন্ন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনে নেয়ার অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন রক্ষা করতে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার ০৯ বৎসর এবং বর্তমান সরকারের আশ্বাস প্রদানের পর ১৫ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও নিয়োগবিধি, অর্গানোগ্রাম ও ক্যারিয়ার প্যাথ সহ অন্যান্য দাবী-দাওয়া পূরণ না করে এ ধরনের জনস্বার্থ বিরোধী ও নার্সদের স্বকীয়তা, উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিরোধী কার্যক্রমকে দুঃখজনক, আপত্তিকর ও পুরো নার্সিং সেক্টরের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিনষ্টের উপকরন হিসেবেই নেতৃবৃন্দ মনে করছেন বলে উল্লেখ করেন। ইতোপূর্বেও যতবার এই স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসনকে ধ্বংস করে একটি মহল নিজেদের মত করে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করেছে ততবারই সর্বস্থরের নার্সগণ তা প্রতিহত করেছে এবারও যেকোন মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে কঠোর হুশিয়ারি প্রদান করেন। সেইসাথে নার্সদের মুক্তি ও অগ্রগতির সনদ উত্থাপিত ০৮ দফা বাস্তবায়নে সারাদেশব্যাপি কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি জোরালো দাবী জানান।


পে-স্কেল নিয়ে কমিশন-সচিব বৈঠক আজ, সুখবর আসছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে আজ সোমবার সচিবালয়ে বৈঠকে বসার কথা জাতীয় বেতন কমিশনের সদস্যদের।

জাতীয় বেতন কমিশনের সভাপতি জাকির আহমেদ খান এতে সভাপতিত্ব করবেন। সম্প্রতি পে কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বর্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে জাতীয় বেতন কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবদের সভা হবে।

এর আগে ১ থেকে ১৫ অক্টোবর সাধারণ নাগরিক, সরকারি চাকরিজীবী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অ্যাসোসিয়েশন বা সমিতি এই চার শ্রেণিতে প্রশ্নমালার মাধ্যমে কমিশন অনলাইনে সর্বসাধারণের মতামত সংগ্রহ করেছে।

গত ২৭ জুলাই গঠন করা হয় জাতীয় বেতন কমিশন। যারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে চায় আগামী ডিসেম্বরে।

এদিকে পে কমিশনের জন্য আলাদা কমিশন কাজ করছে জানিয়ে সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর সেগুলো যাচাই-বাছাই করে তারপরই কমিশন দিতে হবে। বর্তমান সরকার একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে, আর পরবর্তী সরকার সেটি বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, ‘গত ৮ বছরে এ বিষয়ে কিছু হয়নি, তাই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। তবে এখানে বাজেটের বিষয়ও আছে এবং সরকারের অন্যান্য সামাজিক খাতকেও বিবেচনায় নিতে হবে। পরবর্তী সরকার পে কমিশন দেবে না কেন? এটা তো যৌক্তিক।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন পে-স্কেল প্রণয়নে গঠিত পে কমিশন চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে পারে। কমিশন ইতিমধ্যে সুপারিশ তৈরির ৫০ শতাংশের মতো কাজ শেষ করেছে।


তুলার গুদামে আগুন, মাথায় করে বস্তা সরালেন ওসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল কুদাব পশ্চিম পাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পূবাইল থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন আগুনে ঝাঁপ দিয়ে মালামাল উদ্ধার শুরু করেন। তার তুলার বস্তা মাথায় নিয়ে উদ্ধারের একটি দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, গতকাল রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে কুদাব আবদুর রহমানের মালিকানাধীন তুলার গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কুণ্ডলি আর আতঙ্কের মধ্যেই ওসি মো. খালিদ উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাকে বস্তা মাথায় নিয়ে উদ্ধার করতে দেখে আশপাশের মানুষও উদ্ধারকাজে যোগ দেন।

স্থানীয়রা জানান, আগুনের তীব্রতা ছিল ভয়াবহ। কেউই সে সময় গোডাউনের ভেতরে ঢোকার সাহস পাচ্ছিলেন না।

সে সময় ওসি খালিদ হাসান নিজের নিরাপত্তার কথা না ভেবে গোডাউনের ভেতরে ঢুকে মাথায় তুলার বস্তা মাথায় নিয়ে বের হন। তাকে এভাবে উদ্ধারকাজে অংশ নিতে দেখে আশপাশের মানুষও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। তারা দ্রুত উদ্ধারকাজে যোগ দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায় গোডাউনটি। তারা উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ায় প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিরাপদে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।

রে খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

পূবাইল থানার এসআই নাজমুল হক জানান, ওসি স্যার নিজ হাতে মালামাল বের করতে শুরু করেন। তাকে উদ্ধারকাজে অংশ নিতে দেখে সাধারণ মানুষও সাহস পায়। মানুষকে উদ্ধারে উদ্বুদ্ধ করতেই তিনি এই ঝুঁকি নেন বলেও জানান তিনি।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আমরা পৌঁছনোর আগেই স্থানীয়দের সঙ্গে ওসি ঘটনাস্থলে সক্রিয় ছিলেন।


ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভোগান্তি ও দুর্নীতি কমবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ই-পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে নিঃসন্দেহে ভোগান্তি ও দুর্নীতি কমবে, সময়ও বাঁচবে।

সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ই-পারিবারিক আদালতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সবচেয়ে বড় অফিস হোয়াটসঅ্যাপ। তিনি হোয়াটসঅ্যাপেই বেশি কাজ করেন। কাজেই আমাদেরও ডিজিটাইলেশনের দিকে আগানো উচিত।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে আমরা ২১টি রিফর্ম করেছি। আমরা আশা করি, আমাদের পরে যে রাজনৈতিক দল আসবে তারা দেশকে ভালোবেসে এগুলো ধরে রাখবে।

আসিফ নজরুল বলেন, পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে আমরা তা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি। এখন ২০ জেলায় চালু করেছি, যাওয়ার আগে ৬৪ জেলায় চালু করব। আশা করি, ৫ বছরের মধ্যে মামলার জট ৫০ শতাংশ কমে যাবে।


নববধূকে হত্যার অভিযোগ স্বামী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বগুড়ায় কয়েক মাস আগে পরিবারে অমতে প্রেম করে বিয়ে করেন রিয়াজুল ইসলাম নাফিজ। এরপর কৈপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। রোববার তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হলে রিয়াজুল একপর্যায়ে তার স্ত্রী আফিয়া আক্তার স্বপ্নাকে (২০) হত্যা করে। পরে পুলিশ রিয়াজুলকে গ্রেপ্তার করে। স্বজনদের অভিযোগ, তিন মাস আগে পরিবারের অমতে প্রেম করে নাফিজ ও স্বপ্না বিয়ে করে। পরে নাফিজের পরিবার বিয়ের মেনে নিতে আফিয়ার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা ও ১টি মোটরসাইকেল যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নিজ গ্রামে গিয়ে রোববার দুপুরে কৈপাড়া ভাড়া বাসায় ফেরেন আফিয়া। এরপর সন্ধ্যায় তিনি মুঠোফোনে কয়েকবার বাবা-মাকে ফোন করে তাকে বাঁচানোর আকুতি জানাতে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বামী–স্ত্রী তুমুল ঝগড়া করছিলেন। হঠাৎ নীরবতা নেমে আসায় সন্দেহবশত বাসায় ঢুকে স্বপ্নাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। রিয়াজুল ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

ঘটনার পরপরই উত্তেজিত এলাকাবাসী রিয়াজুলকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করে এবং লাশ থানায় নিয়ে যায়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বসির জানান, “এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু— তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সব দিক তদন্ত করা হচ্ছে। হত্যার অভিযোগে স্বামীকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।


২৭ নভেম্বর থেকেই ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ীই আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। গতকাল রোববার রাতে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন সিদ্ধান্ত জানায় কমিশন।

এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের দাবিতে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজশাহী ও ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধের কারণে শনি ও রোববার বেশ কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচলও বন্ধ থাকে। আন্দোলনকারীরা পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে অনশন কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন।

এতে আরো বলা হয়, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে কিছু প্রার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন এবং কেউ কেউ সংগঠিতভাবে অনশনেও বসেছেন। তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন, সমাবেশ করেছেন এবং কমিশন কার্যালয় ঘেরাও করার ঘটনাও ঘটেছে।

কমিশন জানায়, ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে। আবেদন জমা নেয়া হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ১০ হাজার ৬৪৪ জনকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৩ জুন লিখিত পরীক্ষার তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মাত্র দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে—এ দাবি বাস্তবসম্মত নয় বলে উল্লেখ করে পিএসসি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি কখনোই সীমিত সময়ের বিষয় নয়; বরং দীর্ঘ সময়ের পড়াশোনা ও ধারাবাহিক অনুশীলনের ওপরই এ প্রস্তুতি নির্ভর করে। পরীক্ষা এড়ানো বা পিছিয়ে দেয়ার প্রবণতা একজন সম্ভাব্য সরকারি চাকরি–প্রার্থীর শৃঙ্খলাবোধের সঙ্গে যায় না বলেও উল্লেখ করে কমিশন।

পিএসসি জানায়, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্যাডার ও নন–ক্যাডার পরীক্ষার জট দূর করাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। দ্রুত পরীক্ষা সম্পন্ন ও ফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে মে–জুনে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়, যার আওতায় দুটি বিশেষ বিসিএসসহ বহু পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন কোনো পরীক্ষা পেছালে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ব্যাঘাত তৈরি হবে—এই কারণেই পরীক্ষা পেছানোর প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানায় কমিশন।

পিএসসি ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচিও প্রকাশ করেছে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর এবং চলবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরীক্ষাকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৮টি বিভাগীয় শহরে—ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ। তবে পদ–সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় পরীক্ষার আয়োজন শুধুমাত্র ঢাকাতেই হবে বলে জানানো হয়েছে।

পিএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সবাই যেন ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ থেকেই পরীক্ষায় অংশ নেন।


ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৩টায় সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. আতিকুস সামাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ফুলকোর্ট সভায় অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফুলকোর্ট সভা বিচারপতিদের কথা বলার নিজস্ব ফোরাম। এতে নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, গত দেড় বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার ফলে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবনতির কোনও আশংকা নেই।

রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে, সেই সময়ে বিভিন্ন দলের মিছিল-মিটিংয়ের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তবে এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যেই ছিল। আমাদের গত দেড় বছরের প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’

ভূমিকম্প হলে করণীয় বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ভূমিকম্প নিয়ে অনেক দেশ কিছু অ্যাপ তৈরি করেছে যার মাধ্যমে ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার ১০ সেকেন্ড পূর্বে সতর্কতামূলক বার্তা জানানো হয়।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশেও এ ধরনের আগাম সতর্কতামূলক মোবাইল অ্যাপ চালু করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে নগর এলাকায় উন্মুক্ত বা খোলা জায়গার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধে আমাদের এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে। তিনি এসময় সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণের আহ্বান জানান।

ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন অগ্নিদুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। সবাইকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


লাল-হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা হবে: ইসি সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসি সচিবালয়ের সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, সারাদেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ- এই তিন জোনে ভাগ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ের সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংভাদিকদের এ কথা বলেন।

ইসি সচিব বলেন, তিনি আমাদের কাছে দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের জানিয়েছি, সারাদেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ—এই তিন জোনে ভাগ করা হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

আখতার আহমেদ বলেন, বৈঠককালে কমনওয়েলথ মহাসচিব জানিয়েছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশকে যেকোনো ধরনের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা দিতে কমনওয়েলথ প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিব আমাদের সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, কমনওয়েলথের সদস্য সংখ্যা ৫৬টি দেশ। আমরা যদি কোনো ধরনের সহযোগিতা চাই, তারা তা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের নির্বাচন-সংক্রান্ত সহযোগিতায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ইসি সচিব জানান, মহাসচিব প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে নির্বাচনী প্রস্তুতি, অগ্রগতি এবং বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথমবারের মতো ভোট অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, ৫৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম প্রবাসীদের ভোট অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে—এটা তারা প্রশংসা করেছেন। নির্বাচনের জন্য যেসব সামগ্রী প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে তাদের ধারণা দেওয়া হয়েছে।

মহিলা ভোটারদের অংশগ্রহণ ও হালনাগাদ ভোটার তালিকা নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মহাসচিব। মৃত ভোটারদের বাদ দেওয়ার বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।

তথ্য বিকৃতি, অপতথ্য ও ভুয়া সংবাদ বিষয়ে কমনওয়েলথ সতর্ক থাকতে বলেছে। এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত তথ্য জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এটি আরও বাড়ানো হবে।

মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস ও আস্থা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নির্বাচন বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসি সচিব জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাওয়া গেলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, কমনওয়েলথ মহাসচিব গত বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন।


মেজর সিনহা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক ওসি প্রদীপ

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার হোতা হিসেবে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে চিহ্নিত করে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

রায়ে হাইকোর্ট উল্লেখ করেছেন, সাবেক ওসি প্রদীপের পরিকল্পনা অনুযায়ী সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহাকে চার রাউন্ড গুলি করে হত্যা করেন একই থানার তৎকালীন এসআই লিয়াকত আলী।

রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সাগির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রকাশিত ৩৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ মন্তব্য করেন।

রায়ে বলা হয়, ‘যে কোনো সন্দেহের ঊর্ধ্বে প্রমাণিত হয়েছে যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হোতা ছিলেন। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং ভুক্তভোগী মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে বুকে আঘাত করেন, যার ফলে তার দুইটি পাঁজর ভেঙে যায়, এবং তার জুতাসহ বাঁ পা ভুক্তভোগীর ঘাড়ের বাম পাশে চেপে ধরেন মৃত্যু নিশ্চিত করতে।’

রায়ে আরও বলা হয়, ‘সহ-আসামি লিয়াকত আলী, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চারটি গুলি করেন। ট্রায়াল কোর্ট দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অধীনে প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড যথাযথভাবে প্রদান করেছে।’

সাক্ষী, রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত প্রমাণ, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও পরিস্থিতিগত সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দণ্ডিতরা হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

ট্রায়াল কোর্টের রায়ের ডেথ রেফারেন্স (মামলার নথি) ও দণ্ডিতদের আপিল শুনানি শেষে চলতি বছরের ২ জুন হাইকোর্ট এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একই মামলায় ট্রায়াল কোর্ট প্রদত্ত অন্য ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখেন। এই ছয়জন হলেন— সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা এবং পুলিশ সোর্স মো. নিজামুদ্দিন, মো. নুরুল আমিন ও মো. আয়াজ উদ্দিন। আটজন দণ্ডিতই বর্তমানে কারাগারে আছেন।


শেখ হাসিনা, জয় ও পুতুলের রায় ২৭ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।

দুদক-এর পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদক-এর উপপরিচালক সালাহউদ্দিন।

মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

অপরদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন দুদক-এর সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই জনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এছাড়াও, রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি করেন।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অপর ১৬ আসামি হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউক-এর সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।


হাসিনা-কামালকে ফেরাতে দিল্লিকে ঢাকার চিঠি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী হস্তান্তরের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। চিঠিতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও ফেরত চাওয়া হয়েছে। রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত শুক্রবার দিল্লির বাংলাদেশ মিশন থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুদিন আগে চিঠি সরাসরি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।

গত বছর জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে গত ১৭ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর তাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে প্রথমবারের মতো চিঠি দিল বাংলাদেশ।

অবশ্য দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়ে ভারতকে এর আগে গত বছরের ২০ ও ২৭ ডিসেম্বর চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত ওই সব চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর ওই দিন বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। দুই দেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দুজনকে হস্তান্তর করাটা ভারতের জন্য অবশ্যপালনীয় দায়িত্বও বটে।’

পরে এই রায় নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’


banner close