রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫
১২ শ্রাবণ ১৪৩২
ভোটার খরায় ৬ আসনে ভোট

৩ আসনেই জিতল আ.লীগ

আওয়ামী লীগের মনোনয়নে উপনির্বাচনে বিজয়ী (বাঁ থেকে) আব্দুল ওদুদ, জিয়াউর রহমান ও রাগেবুল আহসান রিপু।
আপডেটেড
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:১১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০

দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপির সংসদ সদস্যদের ছেড়ে দেয়া ছয় সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন। ছয় আসনের মধ্যে তিনটিতে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও বগুড়া-৬) প্রার্থী দিয়ে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের সমর্থন দেয়া ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীও জয় পেয়েছেন বগুড়া-৪ আসনে। তবে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী। আর উন্মুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জয় পেয়েছেন আসনটি ছেড়ে দিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া।

বুধবার রাতে আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব প্রার্থীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলে। তবে দিনভর সব আসনেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরোটা সময়ই ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরতদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া বাকি আসনগুলোয় তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবরও পাওয়া যায়নি।

সারা দিনের ভোটের মাঠ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনে ভোটের মাঠে ছিলেন ৯ প্রার্থী। আওয়ামী লীগ ছাড়াও ছিলেন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা। তবে ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ ছিল না। তার প্রতিফলন দেখা গেল ভোটের দিনেও। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ৩৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ভোট পড়েছে একটু বেশি, ২৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর কিছুক্ষণ পরই সেখানে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সোয়া ১০টার দিকে ওই ভোটকেন্দ্রের মাঠ থেকে পাওয়া যায় একটি ককটেল। র‌্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয় দল সেটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে বেলা আড়াইটার দিকে আদর্শ স্কুল কেন্দ্রের অদূরে শান্তি মোড় এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগের দুই কর্মীর দুই মোটরসাইকেল ভাঙচুর হয়। কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার কথা জানান ছাত্রলীগ নেতারা। পরে ওই এলাকায় অতিরিক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর আর অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনেও শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে ভোট। সেখানেও ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। ওই আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার বেশ কিছু কেন্দ্র তার নির্বাচনী এজেন্ট বের করে দেয়ার কথা বললেও সে অভিযোগের সত্যতা পাননি বলে জানিয়েছেন ওই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

কেন্দ্রে ভোটার নেই। ভোটকক্ষে নেই প্রার্থীর এজেন্টরাও। তাই একাকী অলস সময় পার করছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা। ছবি: ফোকাস বাংলা

ভোট শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আমরা একটি নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করেছি। দু-একটি ছোটখাটো বিচ্ছন্ন ঘটনা ছিল, তাৎক্ষণিকভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

ভোটারদের খরা ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনেও। এই আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ১৫ শতাংশের কিছু বেশি। আশুগঞ্জ উপজেলা তারুয়া শালুকপাড়া বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল পৌনে ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র পাঁচটি। আশুগঞ্জের উপজেলার আরেক কেন্দ্র আড়াইসিধা কে বি উচ্চবিদ্যালয়ে ৪০ মিনিটে ভোট দেন মাত্র চারজন। একই চিত্র দেখা গেছে অন্য কেন্দ্রগুলোতেও।

নির্বাচনী প্রচারণার পুরো সময়ের মতো ভোটের দিনও আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষেই মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের। ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়েও যেতে দেখা গেছে তাদের। অন্যদিকে নিখোঁজ হয়ে আলোচনায় আসা আবু আসিফ আহমেদের দেখা এদিনও মেলেনি। অনেক কেন্দ্রেই তার এজেন্টও দেখা যায়নি। তবে আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছার অভিযোগ, কিছু কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। উপনির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস অবশ্য জানান, এজেন্ট বের করে দেয়ার কোনো অভিযোগ পাননি।

এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া-৬ তথা সদর আসনের বগুড়া জিলা স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রে ভোটার নেই বললেই চলে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত প্রথম ১ ঘণ্টায় সেখানে ভোট দেন মাত্র ৩১ জন। শহরের চকসূত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৪৬টি। বাকি কেন্দ্রগুলোর অবস্থাও ছিল একই। এ আসনে দিন শেষে ভোট পড়েছে ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

বগুড়া-৪ আসনেও দেখা যায়নি ভিন্ন চিত্র। কহুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র ৭০টি। আবার কাহালুর দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ২৪০টি। সব মিলিয়ে এ আসনে ভোট পড়েছে ২৪ শতাংশেরও কম।

এদিকে বগুড়া-৬ আসনের এক কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ ছিল। পরে স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘণ্টাখানেক কেন্দ্রটিতে অবস্থান নেন। তবে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি বলে জানান কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর।

এ ছাড়া কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেন বগুড়া-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান। ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদার রহমান।

ঠাকুরগাঁওয়ে ভোটারদের কম উপস্থিতির পাশাপাশি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে জটিলতার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ অভিযোগে বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয় দেরিতে। পরে এক ঘণ্টার মধ্যে সেসব সমস্যার সমাধান করা হয়। শুরুর দিকে কেন্দ্রগুলোতে পুরুষ ভোটারদের তুলনায় নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।

এই আসনের দুই উপজেলার ১২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্রে সারা দিন ভোটারদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। বেলা ২টার পর রাণীশংকৈল-পীরগঞ্জ উপজেলার ২০টিরও বেশি কেন্দ্র ঘুরে কোনো ভোটারই দেখা যায়নি। তবে কিছু ভোটকেন্দ্রে শতবর্ষীসহ প্রবীণ ভোটারও দেখা গেছে। পাশাপাশি প্রার্থীদের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অন্য আসনগুলোর তুলনায় এ আসনে ভোট পড়েছে একটু বেশি, ৪৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।

বিকেলে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের আঞ্চলিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন বলেন, যেসব ভোটার ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন, তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।

সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন
অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ না পাওয়া এবং তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় ছয় সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ভোট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা টিভি চ্যানেলগুলোর ওপর সর্বক্ষণ দৃষ্টি রেখেছিলাম। অনিয়ম বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনলাইন পত্রিকা বিশেষভাবে পাঠ করেছি। ছয়টি জায়গায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়েছে। একটি জায়গায় তাজা ককটেল পাওয়া গেছে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে দু-একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর বাইরে তেমন কিছু ঘটেনি।’

ওই সময় ছয় আসনে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে বলে ধারণা দেন সিইসি।

ভোটে জিতলেন যারা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন কলার ছড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাসানী পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৩৫ ভোট।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ৯২ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মু. জিয়াউর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার পেয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ ভোট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুল ওদুদ ৫৯ হাজার ৬৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৯৮০ ভোট।

বগুড়া-৪ আসনে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। মাত্র ৮৩৪ ভোটে তিনি পরাজিত হয়েছেন। বগুড়ার আরেক আসন সদরে ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (‘বিদ্রোহী’) আব্দুল মান্নান পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট। এই আসনে হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৪ ভোট।

এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলীকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’) গোপাল চন্দ্র রায় পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩০৯ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা ইয়াসিন পেয়েছেন ১১ হাজার ৩৫৬ ভোট।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন দৈনিক বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি এবং প্রতিবেদকরা]


ভোটারদের আস্থা ফেরানো ও নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ তো বহুবিধ। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দেখা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের আস্থা ফেরানো। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’

‘দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। ভোট দিতে না পেরে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে আসুক। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যথাসম্ভব সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিস্টাইলে যাচাই-বাছাই না করে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।’

‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) পদ্ধতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হুবহু নকল করা হচ্ছে একজনের বক্তব্য। এজন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। আধুনিক যুগে এটি অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সব কিছু করতে চাই যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’

সব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য মিডিয়াকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। একটি নির্বাচনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা কাজ করছি।’

মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


চিকিৎসায় আহতদের পাশে চীনা মেডিকেল টিম

আপডেটেড ২৬ জুলাই, ২০২৫ ১৪:০৯
ইউএনবি

বাংলাদেশের আহতদের চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকায় সফররত চীনের উহান থার্ড হাসপাতালের একটি মেডিকেল টিম।

শনিবার (২৬ জুলাই) চীনা দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। আহতদের চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই করতে চায় তারা।

বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে দলটি ক্ষতস্থানে সংক্রমণ রোধ এবং আহতদের নিয়মিত যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে।

তারা আহতদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ, ক্ষতস্থান পরিষ্কার, ড্রেসিং পরিবর্তন, ধমনীতে পাংচার এবং অস্ত্রোপচারে সহায়তা প্রদানসহ নানা কাজে অংশ নেন।

এ ছাড়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের চিকিৎসকদের সঙ্গেও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যৌথ পরামর্শে অংশ নেয় চীনা মেডিকেল দলটি।


সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কসংকেত, উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সাগরের নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, উপকূলীয় জেলাগুলো ও চরে এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দেতে পারে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর এমন তথ্য জানিয়েছে। এ সময়ে দেশের চারটি বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬টায় ঝাড়খণ্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

এতে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়া অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।


নাগরিক সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নই ডিএসসিসির বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শনিবার (২৬ জুলাই) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ডিএসসিসি অঞ্চল-৭ এর ৭১ নং ও ৭২ নং ওয়ার্ডে (গ্রীন মডেল টাউন - মান্ডা এলাকা) পরিচালিত এ অভিযানে কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা, রেড ক্রিসেন্ট এবং বিডি ক্লিন সদস্যদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, নগরবাসীর পরিচ্ছন্নতা অভ্যাস পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছিলাম, তার ইতিবাচক ফলাফল দৃশ্যমান হচ্ছে। সচিব আরও বলেন, অভিযানসমূহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সিটি কর্পোরেশনের সম্পর্ক উন্নয়ন ও অঞ্চলভিত্তিক প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, "নাগরিক সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নই আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।" ডিএসসিসির ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নাগরিকরাই সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন অঞ্চলভিত্তিক এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


শিগগিরই গঠিত হচ্ছে তথ্য কমিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তথ্য কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। কয়েক দিনের মধ্যেই তথ্য কমিশন গঠন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী একজন প্রধান তথ্য কমিশনার এবং দু’জন তথ্য কমিশনার নিয়ে এই কমিশন গঠিত হবে। দু’জন তথ্য কমিশনারের মধ্যে ন্যূনতম একজন হবেন নারী।


মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত: আরও দুজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫ জনে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জারিফ ফারহান নামের ১৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী মারা যায় বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। পরে সোয়া দশটার দিকে মাসুমা নামের আরেক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

নিহত জারিফ মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শ্বাসনালীসহ শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে সে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল।

বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন শুক্রবার বিকালে জানিয়েছিলেন, চিকিৎসাধীন পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। এরপর আজ সকালেই এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়।

অন্যদিকে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মাসুমা নামের ওই নারীর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

দুজনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হলেও লাশদুটি এখনও তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ জনে, আর সবমিলিয়ে এ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো ৩৫ জনের।

সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের মুখে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত যে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই শিশু।

অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বার্ন ইনস্টিটিউটের অনেকেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। সুস্থ ১৫ জনকে আজ শনিবার থেকেই ছাড়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


খায়রুল হক--গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল হোতা

তার বিতর্কিত রায়ের কারণেই দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার অন্যতম সহযোগী ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। তার বহুল বিতর্কিত রায়ই শেখ হাসিনাকে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার সুযোগ করে দিয়েছিল।

দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী সাবেক এই প্রধান বিচারপতি এখন কারাগারে। গত বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই বিচারকের গ্রেপ্তারে দেশজুড়ে গণতন্ত্রমনা মানুষের মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে। এছাড়া বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি খায়রুল হককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মোতে, সুশাসন ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে এই গ্রেপ্তার জাতির ইতিহাসে বড় সাফল্যের ঘটনা হিসাবে জায়গা করে নেবে। একইসঙ্গে এ গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেল-অন্যায় করে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ কোনোদিন রেহাই পাবে না।

জানা গেছে, বিচারপতি খায়রুল হকের নামে এখন পর্যন্ত চারটি মামলা আছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় আরও দুটি মামলা আছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের হাত ধরেই দেশের বিচারাঙ্গন কলুষিত হয়। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট শাসক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি সব অপকর্মের বীজ বপন করে গেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করাসহ খালেদা জিয়াসহ জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা এবং জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বাতিল করে দেন। এর ফলে শেখ হাসিনা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বিনা ভোটে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। এজন্য আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনকে দীর্ঘায়িত করার ক্ষেত্রে খায়রুল হককে ‘জনক’ বলা যেতে পারে। এর বিনিময়ে তিনি আওয়ামী লীগ আমলে আইন ও রীতি লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে নানা সুবিধাও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন এবিএম খায়রুল হক।

এরপর দুজনকে ডিঙিয়ে দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় পরের বছর ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।

এছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তিনি দেশের বিচারব্যবস্থাকে চরমভাবে বিতর্কিত ও ধ্বংস করে গেছেন।

সর্বোচ্চ আদালতে দলবাজির ন্যক্কারজনক নজির সৃষ্টি করে গেছেন বিচারপতি খায়রুল হক। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও অনুভূতির বিপরীতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে তিনি সর্বোচ্চ আদালতে কাজ করে গেছেন। তার দেওয়া একটি পূর্ণ ও একটি সংক্ষিপ্ত রায়ের অজুহাতে শেখ হাসিনা সংবিধান সংশোধনের নামে গোটা সংবিধান তছনছ করে দেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে মামলার বিতর্কিত রায় দেন। অবসরে যাওয়ার কিছুদিন আগে ২০১১ সালের ১০ মে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশটি দেন। রায়ে বলা ছিল, ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। অথচ সুদীর্ঘ ১৬ মাস পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত রায়ের চূড়ান্ত লিখিত আদেশে বিচারপতি খায়রুল হক কেবল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা যেতে পারে বলে নির্দেশনা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করেন। লিখিত এই রায়ে পরবর্তী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকবে—বিষয়টি ছিল না। অবসরে গিয়ে বিচারপতি খায়রুল হক নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজের দেওয়া আদেশ কোনো রকম অতিরিক্ত শুনানি ছাড়াই পাল্টে দেন, যা ছিল নজিরবিহীন এবং বিচারদর্শনের গুরুতর লঙ্ঘন। এতে তিনি বিচারপতির যে শপথ নিয়েছিলেন তা লঙ্ঘন করেছেন। একটি স্বৈরাচারী রেজিমকে টিকিয়ে রাখতে যা যা খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়, তার সবই তিনি করেছেন।

২০১১ সালের ৩০ জুন বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাস হয়। এ আইনের ২০ ও ২১ ধারাবলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ উন্মুক্ত করে। এর ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে ‘বিনা ভোটের নির্বাচন’, ২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’ এবং ২০২৪ সালে ‘ডামি নির্বাচনের’ প্রহসন করেন। খায়রুল হকের রায়ের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ওই তিনটি তামাশার নির্বাচনের আগের তিন মাস নিজেকে কথিত নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবি করতেন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তাকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানিতে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, তিনি হাসিনার ক্রীতদাস ছিলেন। হাসিনার নির্দেশে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন। সেই অবিচারের ফলে তিনি আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন। হাসিনার সব মামলায় তাকে যুক্ত করা হোক সেই প্রত্যাশা করছি।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার বলেন, তিনি কলঙ্কিত প্রধান বিচারপতি। তার কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর হাজার হাজার মানুষ নির্যাতন, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হওয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষকে জীবন দিতে হয়। তার কারণেই শেখ হাসিনা স্বৈরাচার হয়েছেন।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, এমন একজন লোক কিভাবে প্রধান বিচারপতি হয় সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি প্রধান বিচারপতির জায়গাটা কলঙ্কিত করেছেন। তিনি ছোট থেকেই অনেক পাপী ছিলেন। শুনানি শেষে একদল আইনজীবী তার ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অনেককেই বলতে শুনা যায়, একজন বিচারপতি হিসেবে খায়রুল হক যে অপরাধ করেছেন তাকে কমপক্ষে একশ বার ফাঁসি দেওয়া উচিত। তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশে যত রাজনৈতিক হত্যা ও গুম হয়েছে তার জন্য বিচাপতি খায়রুল হক দায়ী। কেননা, তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হওয়ার লাইসেন্স দিয়ে গেছেন।


মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, চাঁদপুরের উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরে ফুলে উঠেছে মেঘনা। জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ৩ ফুট। এতে করে মেঘনার উপকূলীয় এলাকার সড়ক, পুকুর ও বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ঘরে-বাইরে স্থানীয়দের কষ্ট বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সাপ আতঙ্ক।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা গেছে, জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটারের ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, গতকাল (শুক্রবার) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়ে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল বিকাল থেকেই চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার নদী অববাহিকার ৩০টি চর এলাকায় পানি বেড়েছে। এ ছাড়াও চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরান বাজার এলাকায় নদীর পানি সড়কের সমান উচ্চতায় রয়েছে। ফলে বাঁধটিও রয়েছে হুমকির মুখে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় শহরের পুরান বাজার রনাগোয়াল ও পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকার দিনমজুর মরন ঢালী, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ভুলু দাসসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।

তারা বলেন, বৃহস্পতিবার পানি কিছুটা কম ছিল। তবে আজ (শুক্রবার) বিকাল থেকে বাতাসের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ঢেউ এবং পানির উচ্চতাও বেড়েছে। এ সময় আমাদের বাসাবাড়ি, দোকানেও পানি উঠে যায়। পানি বাড়ায় দ্রুত দোকানের মালপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে।

সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ, সাজ্জাদ হোসেন ও শহিদুল্যাহ মাস্টারসহ কয়েকজন জানান, ফেরিঘাট এলাকায় পানি রাস্তা ছুঁই ছুঁই। আশপাশের নীচু সড়কে পানি উঠে গেছে।

সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী বলেন, ‘সেচ প্রকল্পের বাইরে সব বাড়ি, উঠান, রাস্তা ও পুকুরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। আমার পুকুরের ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মাছগুলো ভেসে যাচ্ছে। কী করমু, নিরুপায়! হঠাৎ বানের পানি আইসা পড়ল!’

তিনি আরও বলেন, ‘বাতাসের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে মাছচাষীদের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ অনেকে এখনও বেড় দিতেও পারে নাই। পাকা সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, সেচ প্রকল্পের বাইরের মাছচাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের মাছ সংরক্ষণের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।

হাইমচর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, জুলাইয়ের মাসিক সভায় মৎস্যচাষীদের আগেভাগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে যে ২৪ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। এরপরও উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের সতর্ক করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা শাহ্ মো. শোয়েব বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাবে—এই সতর্কবার্তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে।’

চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল হক বলেন, ‘নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা অবগত। আমাদের কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছেন।’

তিনি আরও জানান, মেঘনার পানির উচ্চতা বাড়লেও বেশি সময় তা স্থায়ী হবে না। আজকে (শুক্রবার) বিকালে জোয়ারের সময় পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে (২১ সেন্টিমিটার) প্রবাহিত হয়েছে। পরে জোয়ারের সময় কমে যাবে।


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহড়া শুরু, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ডের (ইউএসএআরপিএসি) যৌথ মহড়া শুরু হয়েছে। ছয় দিনব্যাপী এই মহড়া চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত। এতে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের ১০০ জন সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ন্যাশনাল গার্ডের ৬৬ জন।

শুক্রবার মহড়া শুরুর দিন জালালাবাদে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড সদর দপ্তরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডিং জেনারেল মেজর জেনারেল অ্যাসকট এ উইন্টার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে ছিলেন সেনাবাহিনী এয়ার ডিফেন্স পরিদপ্তরের পরিচালক, সামরিক প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের কমান্ডার।

আইএসপিআর জানিয়েছে, এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং (টিএল)-২০২৫ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দুই দেশের সেনাবাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতা ও যৌথ প্রস্তুতি জোরদার করা।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আশা করছে, ছয় দিনের এই মহড়া অংশগ্রহণকারী সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।


বিমানবন্দরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইলস্টোন, সরানোর সুপারিশ

ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের অনুসন্ধান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কারিগরিভাবে বৈধ হলেও এটি কার্যত ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ এলাকায় গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। তারা জানায়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার (বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ অঞ্চল) মধ্যে পড়েছে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ায় থাকা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ জনসমাগম হয়, এমন সব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া উচিত।

বিআইপির ‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা: জননিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব বিষয় তুলে ধরেছে বিআইপি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিআইপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানবন্দরের রানওয়ের পর ৫০০ ফুট এলাকায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। এর পরের ১৩ হাজার ফুট বা প্রায় ৪ কিলোমিটার অঞ্চলকে অ্যাপ্রোচ এরিয়া বলা হয়, যেখান দিয়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপ্রোচ এলাকায় ১৫০ ফুট উচ্চতার স্থাপনা নির্মাণে সরকারের নগর কর্তৃপক্ষ ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দিক থেকে কোনো বাধা নেই। সেসব স্থাপনার কী ধরনের ব্যবহার হবে, সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই সরকারের সংস্থাগুলোর। প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাপ্রোচ এলাকায় এ ধরনের স্থাপনা কারিগরিভাবে বৈধ হলেও কার্যত অনিরাপদ।

প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপে অ্যাপ্রোচ এলাকার স্থাপনার উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। কিন্তু সেখানকার ভূমির কী ধরনের ব্যবহার হবে, তা উল্লেখ নেই। গণজমায়েত হয় এ রকম কোনো স্থাপনার জন্য সেখানকার ভূমি ব্যবহার করা উচিত নয়। কৃষিজমি ও সবুজায়ন করা যেতে পারে, তবে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সেখানে পাখি আসে।

আন্তর্জাতিকভাবে বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা আদর্শিক মান ব্যাখ্যা করে তামজিদুল ইসলাম বলেন, আদর্শ মান অনুযায়ী বিমানবন্দর শহর থেকে দূরে থাকে। এই বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এলাকায় একাধিক আবাসিক এলাকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে মাইলস্টোন স্কুলে যাতায়াত সহজ ছিল। না হলে হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় প্রাণহানি আরও বেশি হতে পারত।

গত সোমবার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

সংবাদ সম্মেলনে বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অ্যাপ্রোচ এরিয়া থেকে স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদ্রাসার মতো জনসমাগম হয়, এমন সব স্থাপনা সরাতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা ঘটলে মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো সম্ভব হবে না। বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জায়গা তদন্ত করে যত ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে, সেগুলো অনুসন্ধান করতে হবে। স্থাপনার উচ্চতায় ব্যত্যয় থাকলেও বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলতে হবে।

জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড়ানোর সুযোগ নেই উল্লেখ করে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকা থেকে বিমানবন্দর দূরে ছিল। ঢাকাকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ বলে যে একটা জিনিস আছে, তা ভুলে যাওয়া হয়েছে। তা না হলে বিমানবন্দরের উড্ডয়ন-অবতরণের পাশে স্কুল-কলেজের মতো অবকাঠামো হওয়ারই কথা নয়। মৌলিক ব্যাকরণ ভুলে যাওয়া হয়েছে।

১৯৯৫ সালে যখন ঢাকা মহানগর উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) হয়, তখনো মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এলাকা জলাশয় ছিল। এটি বিমানবন্দরের জন্য উপযোগী ছিল উল্লেখ করে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, মাইলস্টোনের জন্য নিচু এলাকা ভরাট করতে দেয় রাজউক।

মাইলস্টোনের নিচু এলাকা ভরাটে রাজউক কেন বাধা দেয়নি, সেই প্রশ্ন রেখে এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, রাজউক ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কেউ নিজেদের দায়িত্ব পালন করেনি। যারা ভবন তৈরি করেছেন, তারা নিজেরাও অঙ্গীকার ঠিক রাখেননি।

আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্রে যে চর্চা হয়েছিল, তাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ভূমি ও ভবন নিয়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ওপরের পর্যায় থেকে চাপ দিয়ে অনুমোদন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাইলস্টোনের কয়েকটি ভবনের অনুমোদন আছে, কয়েকটির নেই। যে ভবনে বিমান আঘাত করেছে, সম্ভবত সেটির অনুমোদন নেই।

বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এলাকায় জনসমাগম হয়, এমন স্থাপনা কত আছে, তা যাচাইয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা উচিত বলে মনে করেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান।

এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, যিনি মাইলস্টোন নির্মাণ করেছেন, তার দায় আছে। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুমতি ও অনাপত্তিপত্র নেওয়ার বিষয় আছে। যারা অনুমতি ও অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের দায়ভার আছে। দায়ভার আছে, এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনলে হয়তো ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিআইপির সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন।


দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে অপপ্রচার না করার আহ্বান নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের পোর্ট। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের সম্পত্তি। এটা আমাদের কাছেই থাকবে। যদি কেউ অন্যভাবে অপপ্রচার করে থাকে আমি আশা করব দেশের স্বার্থে এ ধরনের অপপ্রচার যেন না করে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে বিদেশি অপারেটরের সম্পৃক্ততা নিয়ে সম্প্রতি যেসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নৌ উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু মহল বলে বেড়াচ্ছে, আমরা বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা। বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক মানের বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে হলে আন্তর্জাতিকভাবে অভিজ্ঞ অপারেটরদের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমরা সামনের দিকে যেতে চাই। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেতে চাই। আমরা নিজেদের মধ্যে পড়ে থাকতে চাই না।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বন্দরে আন্তর্জাতিক মানের কেমিক্যাল শেড উদ্বোধন করেন।

উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত বলেন, এনসিটি নিয়ে আপনারা বহুত আলোচনা শুনেছেন। আমিও এখানে টেকওভার করার পর থেকে আলোচনাগুলো শুনছি। ১৭-১৮ বছর যারা এনসিটিতে ছিলেন আমি বলবো যে ভালো কাজই করেছেন। খারাপ করেননি। তারা তাদের মতো কাজ করেছেন। কিন্তু তাদের থেকে আরও বেশি ইফিশিয়েন্ট করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এখানে যে কনটেইনার লোড হচ্ছে তা সিঙ্গাপুর যাবে। ট্রান্সশিপমেন্ট হবে। সিঙ্গাপুরে বেশিরভাগ পোর্টই প্রাইভেটলি পরিচালনা হচ্ছে। আমাদের যদি ইফিশিয়েন্সি বাড়াতে হয় তাহলে বাইরের টেকনোলজিস আনতে হবে। নিজেরা নিজেরা করছি। নিজেরা অনেক ইফিশিয়েন্টলি করছি। এ ইফিশিয়েন্সি বাড়ানোর জন্য আমাদের দরকার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করানো।

নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটা পোর্ট তখনি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে প্রবেশ করবে যখন একটা আন্তর্জাতিক অপারেটর আসবে। ভুলে যাবেন না একটা অপারেটর, আরেকটা পরিচালনা। পরিচালনা কিন্তু আমাদের। আমরা শুধু এখানে যাকে আগে দিয়েছিলাম তার জায়গায় হয়ত আরেকজনকে দিচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ইফিশিয়েন্সি বাড়াবার জন্য। কারণ আমার ব্যক্তিগত কোনো ইন্টারেস্ট নেই। আমি চট্টগ্রামের বাসিন্দাও না।

তিনি বলেন, ইন্টেরিম পিরিয়ডের জন্য আমরা এনসিটি ড্রাইডককে দিয়েছি। যার সঙ্গে নেভি রয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, জানতে পেরেছি আগের থেকে গড়ে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা কিন্তু বড় ধরনের অগ্রগতি। আমি আশা করব, এটা যাতে ধরে রাখে।

বন্দরের ট্যারিফ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বন্দরের ট্যারিফ আলোচনা করে বাড়িয়েছি। এককভাবে মন্ত্রণালয় বাড়ায়নি। আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন মেইন পোর্টের ট্যারিফ দেখার পর দেখা গেছে এখনো এখানে ট্যারিফ অনেক কম। এমনকি মোংলা থেকেও কম।

তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের পর বন্দরের ট্যারিফ আর বাড়ানো হয়নি। আপনি দেখেন ১৯৮৬ সালের এক টাকার মূল্য এখন কত হয়েছে!

এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুকসহ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের কর্মকর্তারা।


নতুন অধ্যাদেশ জারি : তফসিলের আগে সারা বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিধান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। নতুন আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন চাইলে, তফসিল ঘোষণার আগে বছরের যেকোন সময় ভোটার তালিকা প্রকাশ ও সংশোধন করতে পারবে।

বৃহস্পতিবার রাতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, যেহেতু ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬ নং আইন) এর কিছু ধারা সংশোধন করা প্রয়োজন; এবং যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট এ বিষয়ে আশু ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রতীয়মান হয়েছে; সেহেতু সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ‘এই অধ্যাদেশ ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হবে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’

২০০৯ সনের ৬ নং আইনের ধারা ৩-এর সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩-এর দফা (জ)-এ ‘জানুয়ারী মাসের পহেলা তারিখ’ শব্দগুলির পর ‘কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ’ শব্দগুলি সন্নিবেশিত হবে।

এছাড়া ২০০৯ সনের ৬ নং আইনের ধারা ১১ সংশোধন করে নতুন উপ-ধারা (১) যোগ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে,

‘(১) কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান সকল ভোটার তালিকা, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত অথবা তফসিল ঘোষণার পূর্বে ধারা ৩-এর দফা (জ)-এর অধীন ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। যথা: (ক) যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে কিন্তু ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়নি, তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত করা; (খ) যেসব ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন বা অযোগ্য হয়েছেন, তাদের নাম কর্তন করা এবং (গ) যারা এলাকার পরিবর্তন করেছেন, তাদের নাম পূর্বের তালিকা থেকে কেটে করে নতুন এলাকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। তবে শর্ত থাকে যে, উপরের সময়সীমায় হালনাগাদ না হলেও ভোটার তালিকার বৈধতা বা ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে না।’

ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা (জ)-এ বলা ছিল, ‘যোগ্যতা অর্জনের তারিখ’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিটি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন বা হালনাগাদের ক্ষেত্রে সেই বছরের ১ জানুয়ারি। এ বিধান অনুযায়ী, ১ জানুয়ারির পরে যারা ১৮ বছর পূর্ণ করতেন তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন না।

বৃহস্পতিবার জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন চাইলে বছরের যেকোন সময় নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্ত এবং তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।


ঢাকা সবসময় দিল্লির সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশে ভারতের মেডিকেল টিমের উপস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সর্বদা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় চেয়েছিলাম যে... প্রথম দিন থেকেই আমরা বলেছিলাম, আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চাই। আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কেউই কখনও বলেনি আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই না।’

বাংলাদেশে ভারতীয় মেডিকেল টিমের উপস্থিতি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উন্নত সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক সূচক হিসেবে দেখছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।

বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ভারত থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বুধবার রাতে ঢাকায় পৌঁছেছেন একটি চিকিৎসক দল।

এই বিশেষায়িত দলে রয়েছেন রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল এবং দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরা। পোড়া ও প্লাস্টিক সার্জারি চিকিৎসায় ভারতের শীর্ষস্থানে রয়েছে হাসপাতাল দুটি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা এই রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি নির্ধারিত হাসপাতালে তাদের কাজ শুরু করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা ও সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর তারা বাংলাদেশে আসেন।

তারা রোগীদের অবস্থা মূল্যায়ন করছেন এবং প্রয়োজনে ভারতে আরও চিকিৎসা এবং বিশেষায়িত সেবার জন্য সুপারিশ করছেন।

প্রাথমিক মূল্যায়ন এবং চিকিৎসার উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত মেডিকেল টিমও পাঠানো হতে পারে।

২১ জুলাই ঢাকায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন এবং সহযোগিতা ও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

এর আগে, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনায় আহতদের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় যেকোনো জরুরি চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করার জন্য তথ্য জানাতে অনুরোধ করেছে।

মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা দেবেন।

মাইলস্টোন স্কুল বিমান দুর্ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ ও সম্ভাব্য সকল সহায়তা দেওয়ার বার্তার ধারাবাহিকতায় এই বার্তাটি পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবার এক বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এবং সকল প্রকার সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’


banner close