ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসার কথা আগামী ২৬ মার্চ থেকে। শুরুতেই আদানি গ্রুপ শেয়ার কারসাজির মতো গোড্ডা কেন্দ্রের কয়লার দামে কারসাজি শুরু করেছে।
জাহাজ ভাড়াসহ গোড্ডায় ব্যবহৃত কয়লার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ২০০ ডলার, আর তারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ৪০০ ডলারে বিক্রির জন্য চিঠি দিয়েছে। প্রকৃত দাম থেকে কারসাজি করে টনপ্রতি ২০০ ডলার বাড়তি নেবে আদানি গ্রুপ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা গত ৩১ জানুয়ারি আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মামলার শুনানি হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এ ছাড়া পিডিবি কয়লার দাম বাড়তি চেয়েছে তা জানতে চেয়ে আদানিকে চিঠি দিয়েছে। এ ছাড়া পিডিবি আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তির (পিপিএ) সংশোধন চেয়েছে।
শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির তথ্য গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশের পর ১৪৭ বিলিয়ন ডলার সম্পদের আদানি গ্রুপ খুইয়েছে ১১০ বিলিয়ন ডলার। গত ২৪ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পুঁজিবাজারবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ আদানির শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
হিন্ডেনবার্গের গবেষণায় বলা হয়, আদানি গ্রুপ বছরের পর বছর শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতি করেছে। তারা আদানির শেয়ারকে অতিমূল্যায়িত হিসেবে অভিহিত করেছে। এই তথ্য প্রকাশের গত শুক্রবার পর্যন্ত সিএনএনের তথ্যমতে, ১১০ বিলিয়ন ডলার খুইয়েছে। আদানি গ্রুপের অতিমূল্যায়িত শেয়ারের পতনের কারণে ১১০ বিলিয়ন ডলার খোয়া যাওয়ায় বিশ্বের তিন নম্বর শীর্ষ ধনীর তালিকা থেকে রাতারাতি ২১ নম্বরে গিয়ে পৌঁছেছেন আদানি গ্রুপের কর্ণধর গৌতম আদানি।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে গিয়ে আদানি গ্রুপ শেয়ারবাজারের মতো বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি কয়লার অতিমূল্যায়ন করা শুরু করেছে। এখনই আদানি গ্রুপকে ঠেকানো না গেলে বড় বিপর্যয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রটি বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু রয়েছে। এই কেন্দ্রটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে আগামী ২৬ মার্চ থেকে বিদ্যুৎ নেয়ার কথা। বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ নেয়া শুরু হলেই কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও পাবে কেন্দ্র ভাড়া ও বিদ্যুতের দাম। তখনই কয়লার বাড়তি দাম দিতে হবে বাংলাদেশকে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, কয়লার দাম কেন বেশি পড়ছে, সেটা আমরা আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে কী করা যায় আমরা ভাবছি।
তিন বছর আগে ভারতীয় কোম্পানি আদানির সম্পদের পরিমাণ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার। তিন বছরের মাথায় সেটা বেড়ে ১৪৭ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। এত দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধির পেছনে শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেছে হিন্ডেনবার্গ। আদানি গ্রুপের এত দ্রুত উত্থানের পেছনে বর্তমান বিজেপি সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থনের বিষয়টি গণমাধ্যমে খোলামেলাভাবেই আলোচনা হয়।
কয়লার দামে কারসাজি
দেশের যেকোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানির যে আন্তর্জাতিক দাম সেই অর্থ পরিশোধ করে থাকে পিডিবি। বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করার সময় জ্বালানির দাম, কেন্দ্র ভাড়া, কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ সব মিলিয়ে বিল করা হয়। জ্বালানির দাম ছাড়া অন্য অর্থ নির্দিষ্ট থাকে, এটি বাড়ে না। ফলে কোনো বেসরকারি কেন্দ্র যদি জ্বালানির দাম বাড়তি দেখাতে পারে, তাহলে ওই কেন্দ্রের বিদ্যুতের দামও বেড়ে যায়।
আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের জ্বালানি ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা ব্যবহার করছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবিকে জানিয়েছে। ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লার দাম প্রতি টন তারা দেখিয়েছে ৪০০ ডলার। গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা আসছে আদানির মালিকানাধীন ইন্দোনেশিয়ার খনি থেকে। সম্প্রতি গোড্ডা কেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানির ঋণপত্র (লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি) খোলার অনুমতি চেয়ে পিডিবিকে চিঠি দিয়েছে আদানি। পিডিবিকে দেয়া ওই চিঠিতে ৪০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লার দাম টনপ্রতি ৪০০ ডলার দেখিয়েছে।
পিডিবি সূত্র বলছে, পরিবহন ব্যয়সহ ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের কয়লার দাম ২০০ ডলার। সেটা এত বেশি কেন দেখাচ্ছে এসব জানতে চেয়ে পিডিবির পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে আদানিকে।
গত ১ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল আমদানি করা কয়লা দিয়ে দেশের পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। সেখানে বলা হয়, ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত আদানির কয়লার প্রতি টনের দাম পড়ছে ৩৪৭ ডলার। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৫০৫০ ক্যালরিফিক মানের প্রতি টন কয়লা কিনছে ২৪৫ ডলারে।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশ ও চীনা সরকারের সমান মালিকানায় তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসিএল) নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়ছে। বিআইএফসিএলের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে দৈনিক বাংলাকে জানিয়েছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা ৫০৫০ ক্যালরিফিক মানের। আর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা ৪৬০০ ক্যালরিফিক মানের, এটি নিম্নমানের কয়লা, সালফার বেশি থাকে ও পানির পরিমাণও কয়লায় বেশি থাকে। পায়রা ৫০৫০ ক্যালরিফিক মানের কয়লা কিনছে প্রতি টন ২৪৫ ডলারে। এই খরচে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছে যায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পৃথিবীতে তেল কেনার মতো কয়লা কেনারও বেশ কিছু সূচক বা ইনডেক্স রয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক নিউ ক্যাসেল ইনডেক্সের সূচক বা দাম অনুযায়ী কয়লা কিনছে আদানি। এই একই ইনডেক্সে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কিনছে বিআইএফসিএল। অথচ অপেক্ষাকৃত ভালো মানের পায়রার কয়লার দাম প্রতি টন ২৪৫ ডলার, এর থেকে খারাপ মানের কয়লার দাম আদানি নেবে ৪০০ ডলার। এটা নিয়ে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবি দ্রুতই বৈঠক করে সমাধান করতে চায়।
এর আগেও কয়লার দাম বাড়তি দেখানোর অভিযোগ রয়েছে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে খোদ ভারতে। ভারতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা কম দামে কয়লা কিনে বেশি দাম (ওভার ভয়েসিং) দেখায়। বিষয়টি নিয়ে ভারতের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্ট বা ডিআরআই) ২০১৬-এর জুলাইয়ে ডিআরআই ভারত সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, কয়লা আমদানিকারকরা আমদানির ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ বেশি দাম দেখিয়েছে। এ অর্থ তারা পাচার করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ তালিকায় আদানির নাম ছিল।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাগিয়ে নিয়েছে
২০১৬ সালের গোড়ার দিকে আদানি গ্রুপ ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির আগ্রহ দেখিয়ে প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে বলা হয়, ভারতে আদানির কয়লা খনি রয়েছে। সেই খনির কয়লা দিয়ে ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় তারা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। সেই বিদ্যুতের দাম পড়বে ৬ টাকা ৮৯ পয়সা। ২০১৭ সালে যখন আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে দেশের সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি সম্পন্ন হয়, তখন আগের শর্ত থেকে সরে আসে আদানি। তখন জানা যায়, আদানি বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। প্রথমে আমদানি করা হবে আদানির অস্ট্রেলিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ার খনি থেকে, এরপর সেটা ভারতের উড়িষ্যার ধামরা বন্দরে খালাস করা হবে। সেখান থেকে ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রেলের মাধ্যমে কয়লা আসবে গোড্ডায়। কয়লা পরিবহনের এই পুরো অর্থ বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির প্রতি ইউনিটের মধ্যেই থাকবে। এই বিদ্যুৎ আগামী ২৫ বছর কিনবে বাংলাদেশ।
আদানির পক্ষে বলা হয়, ভারতীয় বিদ্যুৎ নয়, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা আদানির মালিকানাধীন কয়লা খনি থেকে কয়লা আসবে কেন্দ্রের জন্য। আর এ জন্য প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে ট্রেনে করে আনা হবে কয়লা। সে জন্য গোড্ডা এলাকায় ট্রেন স্ট্রেশনও বসানো হয়। এসব খরচের কারণে আদানির বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে। সে কারণে আদানিকে কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেয়া হচ্ছে ইউনিটপ্রতি ৪ দশমিক ২৫ সেন্টস বা দেশি টাকায় (ডলারে দাম ১০৬.৯৫) ৪ টাকা ৫৪ পয়সার বেশি হয়। প্রথমে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বলা হলেও কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা বর্তমানে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট। এই কেন্দ্রটি শুধু কেন্দ্র ভাড়াই পাবে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আদানি যদি প্রথমেই প্রস্তাবে বলত যে তারা ভারতের কয়লা ব্যবহার করবে না, তাহলে এই প্রকল্পে সরকার রাজি হতো কি না সন্দেহ রয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লা ৭০০ কিলোমিটার দূর থেকে ট্রেনের মাধ্যমে এনে তা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রতি ইউনিটের ব্যয় এত বেশি হবে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এত অধিক দামে বিদ্যুৎ কিনতে পারবে না পিডিবি এই কেন্দ্র থেকে। ফলে বছরের একটি উল্লেখযোগ্য সময় কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ না দিয়ে বসে থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রেও বছরে কেন্দ্র ভাড়া গুনতে হবে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আদানি গ্রুপ গোড্ডায় যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে, সেখানকার বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনার জন্য একটি একক (ডেডিকেটেড) সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। অবশ্য এই সঞ্চালন লাইনের অর্থও বিদ্যুতের মূল্যের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে। এই সঞ্চালন লাইনেই সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ দিতে চায় আদানি। এ বিষয়ে তারা সরকারকে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইনবিরোধিতা আদালতে
আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইনের বিরোধিতা করে কলকাতার হাইকোর্টে মামলা করেছেন ৩০ জন চাষি। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারক রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
ঝাড়খন্ডের গোড্ডা থেকে ১০৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে, যা গিয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুহানপুরে। ভারতের মধ্যে এই ১০৬ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে গিয়ে কৃষিজমি নষ্টের অভিযোগ তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কার চাষিরা। এ নিয়ে গত বছরের জুলাইয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ান গ্রামবাসীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক আম-লিচুর বাগানের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের ৪০০ কিলোভোল্টের লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে আদানি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাইয়ে লুৎফর রহমান নামে এক ফলচাষি হাইকোর্টের দারস্থ হন। উচ্চ আদালতের আদেশের দিকে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা তাকিয়ে আছেন, কী রায় আসে সেখান থেকে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেন কিনতে হবে সেটা সবার আগে মূল্যায়ন করা জরুরি। এই কেন্দ্রটি দেশের বাইরে থাকবে, তারা কয়লার দাম কতটা বাড়তি দেখাবে তা ধরা পড়বে কি না সেটাও বড় প্রশ্ন। এত এত প্রশ্ন যখন আগেই তোলা হয়েছিল, তখন সরকারের পক্ষে বলা হয়েছে তারা কয়লার দাম বাড়তি নিতে পারবে না। এখন তো কেন্দ্র বাণিজ্যিকভাবে চালু করার আগেই বাড়তি দামে কয়লা কেনার অভিযোগ সামনে এসেছে। এ বিষয়টিকে সরকারের গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে হবে। তা না হলে জনগণের হাজার কোটি টাকা আদানি গ্রুপের পকেটে যাবে। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে আদানির শেয়ারবাজারের জালিয়াতির খবর সামনে এসেছে। এর আগেও তারা ভারতে কয়লার দাম জালিয়াতি করে ধরা পড়েছে। আদানির বিষয় সরকারকে আরও সাবধানী হওয়া উচিত।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বাসায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
দগ্ধরা হলেন, আসমা বেগম (৩৫), তানজিল ইসলাম (৪০), তিশা (১৭), আরাফাত (১৫), হাসান (৩৫), মুনতাহা (১১), জান্নাত (৪), ইমাম উদ্দিন (১ মাস) ও সালমা বেগম (৩২)।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. সুলতান মাহমুদ শিকদার জানান, শিশুসহ দগ্ধ ৯ জন আমাদের এখানে এসেছে। তাদের মধ্যে, হাসানের শরীরের ৪৪ শতাংশ, জান্নাতের ৪০ শতাংশ, মুনতাহার ৩৭ শতাংশ, সালমার ৪৮ শতাংশ, শিশু ইমামের ৩০ শতাংশ, আরাফাতের ১৫ শতাংশ, তিশার ৫৩ শতাংশ ও আসমার ৪৮ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদের সবার অবস্থায়ই আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে শুধু তানজিল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে আসা রাকিবুল ইসলাম জানান, দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ গ্যাস পাইপলাইন থেকে বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ হয় ৯ জন। পরে তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসলে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আসমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানা চকগদ্দর গ্রামে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হিরাঝিল এলাকায় থাকতেন তারা। আসমা বেগম, তানজিল ইসলাম, তিশা, আরাফাত হলেন একই পরিবারের সদস্য। মোহাম্মদ হাসান তার স্ত্রী সালমা বেগম, মুনতাহা, জান্নাত ও ইমাম উদ্দিন, তারা সবাই একই পরিবারের। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার জৌদা গ্রামে। তারাই সবাই একই সঙ্গে থাকতেন। আসমা বেগম একজন পোশাক শ্রমিক ও হাসান দিনমজুরের কাজ করেন।
এ বিষয়ে আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া বলেন , প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রিজে সরাসরি বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়া ছিল। বৈদ্যুতিক লাইনের শর্ট-সার্কিট থেকে প্রথমে আগুন ধরে যায়, সেই আগুন থেকে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণ হয়। এতে পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই স্থানীয়রা দগ্ধদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।”
তিনি আরও বলেন , “আমরা আশপাশে কিংবা ঘরের ভেতরে অন্য কোনো ধরনের গ্যাসের আলামত পাইনি। সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফ্রিজের কম্প্রেসার থেকেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আগে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের ভেতর আমরা যেতে চাই না। প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
‘প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে।’
কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এ বিতর্ক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। এটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনী যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার যারা এর আগে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিল, তাদের পদায়নের চিন্তা নেই।’
বিগত সরকার আমলে দায়িত্ব পালন করা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৫৭০০ কর্মকর্তা রয়েছে। তারা আগেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের কোথায় পাঠাব? তবে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিগত নির্বাচনে অনিয়ম করেছিল, সেইসব নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাখা হবে না’
সরকারের কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন নিয়ে আমাকে এখন পর্যন্ত কোনো চাপ দেয়নি। যদি চাপ দেয়, আমি পদত্যাগ করব, চেয়ারে থাকব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তাদের বিচার চলছে। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। দেখা যাক বিচারে কী হয়।’
সিইসি বলেন, ‘ভোট আসতে আসতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে। যারা বাক্স দখল করার স্বপ্নে বিভোর, তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে।’
‘যারা অস্ত্রবাজি করে ভোটে জিততে চাইবেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস ভুলে যান। আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।’
পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভায় রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন বিষয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের মহিষকুন্ডি মুন্সিপাড়া এলাকায় পদ্মানদীতে কার্গো ট্রলারে স্থানীয় যুবকদের পিকনিক চলাকালে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ দুই যুবককে আটক করেছে বিজিবি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।
আটকরা হলেন— রাব্বী হোসেন (২০), মহিষকুন্ডি পাকুড়িয়া গ্রামের হানিফ হোসেনের ছেলে এবং অনিক হোসেন (১৮), ডাকপাড়া গ্রামের মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হাই সিদ্দিকী রায় প্রদান করেন। এতে রাব্বী হোসেনকে ২ মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, আর অনিক হোসেনকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে আশ্রায়ন বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পদ্মানদীতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই কার্গো ট্রলার থেকে ৩ বোতল মদ, ৩৪৩ গ্রাম গাঁজা এবং ২ প্যাকেট পাতার বিড়ি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ হাজার ৮১০ টাকা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলাম জানান, আটক দুই যুবককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা প্রদান করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চক্ষু হাসপাতালে যুক্ত হলো উন্নত প্রযুক্তির অত্যাধুনিক ফ্যাকো মেশিন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে পৌরশহরের উছলাপাড়াস্থ জুঁই প্লাজায় অবস্থিত হাসপাতালে নতুন এ মেশিনের ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন কুলাউড়া প্রেসক্লাব সভাপতি এম শাকিল রশীদ চৌধুরী।
হাসপাতালের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য সজলের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াহিদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চক্ষু রোগীদের সার্বিক চিকিৎসা, পরামর্শ, চোখের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে কৃত্রিম লেন্স সংযোজন সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, চশমা ও ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থাও রয়েছে।
চেয়ারম্যান সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, শুরু থেকেই আমরা স্বল্প খরচে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছি। এখন থেকে রোগীরা আরও আধুনিক সেবা পাবেন। হাসপাতালে আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত ‘এলকন ইনফিনিটি ফ্যাকো মেশিন’ সংযোজন করা হয়েছে, যা দিয়ে উন্নত মানের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ চিকিৎসক ডা. অরুনাভ দে, বিশিষ্ট ফার্মেসি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মীর মো. মঈন উদ্দিন ইমন, হাসপাতালের পরিচালক ইন্তাজ আলী, জালাল উদ্দিন, সত্যজিৎ ভট্টাচার্য, ডা. হেমন্ত পাল, বুরহান উদ্দিন, জিয়াউর রহমান বাবলু, জুবায়ের আবেদিন, মুক্তাদির আলী, শফিক মিয়া আফিয়ান, তোফায়েল আহমদ ডালিম, ম্যানেজার মো. জাহিদ আহমদ, মার্কেট মালিক আব্দুস শহীদ প্রমুখ।
ক্যাম্পাসের ৮টি কেন্দ্রে এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীদের ভোটগ্রহণ করা হবে কার্জন হল কেন্দ্রে। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ভোট দেবেন জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ভোট দেবেন কেবল রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বাংলাদেশ–কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা ভোট দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে।
এতে আরও বলা হয়, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীদের জন্য। সূর্য সেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্রে ভোট দেবেন কবি সুফিয়া কামাল হল এবং ইউল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, গতকাল শুক্রবার দেওয়া আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের উদ্দেশে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেসব প্রচারণামূলক বিলবোর্ড/ব্যানার টানানো রয়েছে কিংবা ইতোমধ্যে টানানো হয়েছে, সেগুলো অনতিবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রচারণা শুরুর নির্ধারিত দিন থেকে আচরণবিধি অনুযায়ী প্রচারকাজ চালানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৫ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জানানো যাচ্ছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেসব প্রচারণামূলক বিলবোর্ড/ব্যানার টানানো রয়েছে কিংবা ইতোমধ্যে টানানো হয়েছে, সেগুলো অনতিবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে।
প্রচারণা শুরুর নির্ধারিত দিন থেকে আচরণবিধি অনুযায়ী প্রচার কাজ চালানো যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আলাদা আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা ২১ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত কেউ হল কিংবা ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে পারবেন না। ২৬ আগস্ট থেকে প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে প্রচারণা চালালে সেটি ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, ডাকসুতে ২৮ পদে ৪৬২ জন আর হল সংসদে ১ হাজার ১০৮ জন বৈধ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ডাকসুতে ৪৭ জন এবং হল সংসদে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া প্রার্থীরা ২৩ আগস্টের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।
প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, এবার ডাকসুতে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯ জন এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে চূড়ান্ত তালিকায় এই সংখ্যা কমতে বা বাড়তে পারে।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ আগস্ট দুপুর ১টা পর্যন্ত। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৬ আগস্ট বিকেল ৪টায়। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা থেকে জামালপুরের তারাকান্দি পর্যন্ত চলাচলকারী আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশনে প্রবেশের মুখে লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে ঢাকামুখী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে বলে রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। লাইনচ্যুত বগি সরিয়ে নিতে কাজ চলছে।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর কমলাপুর থেকে রিলিফ ট্রেন পাঠানো হয়েছে। এতে ঢাকার বাইরে থেকে আসা ট্রেনগুলো বিমানবন্দর স্টেশনে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে। তবে ঢাকার ভেতর থেকে ট্রেন বের হওয়ার লাইন সচল আছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কামরুলাপুর থেকে দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল— এমন কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে নাও পারে। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।
প্রত্যাশিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় কামরুলাপুরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
নিখোঁজের পরদিন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদী থেকে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গজারিয়ার কলাগাছিয়া এলাকার চর বলাকিয়ায় তার মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। খবর পেয়ে নৌপুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার (৭১) দৈনিক আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার দুপুর একটার দিকে গজারিয়া উপজেলাধীন মেঘনা নদীর চর বলাকী এলাকায় একজন পুরুষের লাশ ভেসে থাকতে দেখেন তারা। বিষয়টি স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে তারা এসে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার জুমার দিন, আমি বাসা থেকে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। যাবার পথে দেখলাম মেঘনা নদী থেকে আমাদের বাজারের দিকে যাবার খালে এক ব্যক্তির লাশ ভাসছে। লাশটি উল্টা হয়ে ছিল তবে এটি কিভাবে এখানে আসল তা আমার জানা নেই। নামাজ পড়ে এসে দেখি উৎসুখ জনতার ভিড় জমে গেছে। পরে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই’।
নৌপুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, মৃতদেহ দেখে ধারণা করা হচ্ছে একদিন আগে তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহ কিছুটা বিকৃত হতে শুরু করেছে। দেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। এ বিষয়ে রাজধানীর রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে কর্মস্থল বনশ্রীর ‘আজকের পত্রিকা’ কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে তিনি বাসা থেকে বের হন। যদিও পরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি সেখানে যাননি। তিনি মোবাইল ফোনটিও বাসায় ফেলে যান। ‘আজকের পত্রিকা’ সূত্রে জানা যায়, ১৬ আগস্ট থেকে সাত দিনের ছুটিতে ছিলেন বিভুরঞ্জন।
বিভুরঞ্জন সরকারের ভাই চিররঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে লেখেন, আমার দাদা সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় অন্যান্য দিনের মতো অফিস (আজকের পত্রিকা) যাবেন বলে বাসা থেকে বের হন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি অফিসে যাননি। পরিচিত পরিমণ্ডলের কোথাও যাননি। আজ কেউ তাকে দেখেননি। রাত ১টা পর্যন্ত বাসায় ফেরেননি।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রাইভেট হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অবহেলায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে উপজেলার কেরোয়া এলাকায় অবস্থিত ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক ও জেনারেল (প্রাইভেট) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত (বৃহস্পতিবার) রাতে ফরিদগঞ্জের কেরোয়া গ্রামের ইসহাক মিয়ার স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৬৫) অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার সকালে তিনি মারা যান। স্বজনদের দাবি, চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই কোহিনুর বেগমের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে হাসপাতালের কিছু কর্মচারী স্বজনদের সঙ্গে স্বজনদের গায়ে হাত তোলে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে উত্তেজিত স্বজনরা ও স্থানীয় কিছু লোক মিলে হাসপাতাল ভাঙচুর করেন।
খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ, সাবেক পৌর মেয়র মঞ্জিল হোসেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার সময় হাসপাতালের ভেতরে প্রায় দুই শতাধিক রোগী ও স্বজন আটকা পড়েন এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
মৃত রোগীর বাবা বিল্লাল হোসেনও আক্রমনকারীদেরকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হন বলে জানান।
মৃত কোহিনুর বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাতে অনুমতি দেয়নি। একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও হাসপাতালের অন্যতম পরিচালক ও সিনিয়র চিকিৎসক ডা. সাদিক হাসপাতালে আসেননি। চিকিৎসকের এসব অবহেলায় আমাদের রোগী মারা গেছেন।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. হুমায়ুন কবীর ইউএনবিকে বলেন, ‘আমি কয়েকবার রোগীকে দেখেছি। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না। উপজেলা পর্যায়ে যতটুকু সম্ভব আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। শুক্রবার সকালে এই রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছিল কিন্তু তিনি সকালেই মারা যান।’
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব চক্রবর্তী ইউএনবিকে বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাহায্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন ,বাণিজ্যে বৈচিত্র্য ও সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন দেশের সাথে উদারভাবে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ মূল্যে আমদানির সক্ষমতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে আমরা পাকিস্তানের প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করেছি।
শুক্রবার ( ২২ আগস্ট ) দুপুরে চট্রগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চিটাগাং এর হল রুমে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত "মিটিং উইথ জাম কামাল খান ও শেখ বশিরউদ্দীন" শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাণিজ্য বৃদ্ধি করা, আমদানি ও রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং এসব খাতের বাইরেও আমরা অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বাংলাদেশের সব ব্যবসায়ীর একত্র শক্তিতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হবে।
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন ,দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক পথনকশা (রোডম্যাপ) তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে জাম কামাল খান বলেন, আমরা ভাবছি, আগামী কয়েক বছরের জন্য একটি বাণিজ্য রোডম্যাপ তৈরি করব। কোন খাতগুলোতে নজর দিতে হবে, কোথায় বিনিয়োগ আসবে, কোন খাত রপ্তানি-আমদানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে—সেসব ওই রোডম্যাপে উঠে আসবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ স্বাক্ষরের পরই এ বিষয়ে খসড়া তৈরি হবে।
গ্লোবাল ইকনমিক ট্রেন্ড দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সামনে সুবর্ণ সুযোগ এসেছে আমরা যদি একটি সঠিক ব্যবসায়িক রোডম্যাপ তৈরি করতে পারি তাহলে অবশ্যই ব্যবসা বাণিজ্য অগ্রগতি হবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোথায় থাকতে চাই, কোন খাতে আমাদের শিল্পকে নিতে চাই, সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নতুন প্রযুক্তি এআইয়ের সহযোগিতায় (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এখন আর বছরের নয়, ঘণ্টার হিসাবেই সবকিছু বদলে যাচ্ছে। তাই প্রস্তুত থাকতে হবে। খাদ্য, কৃষি, উৎপাদন, বাণিজ্য, মাছ, সামুদ্রিক খাদ্য, সেবা খাত, মানুষে মানুষে সংযোগ, স্বাস্থ্যসেবা—এসবই আমাদের অগ্রাধিকার খাত। লেদার, ফুটওয়্যার, তৈরি পোশাক; এগুলোতেও আমরা শক্তিশালী। পাকিস্তান গম, চাল উৎপাদন করছে এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করছে। তাই আমার মনে হয়, এখানে দারুণ সহযোগিতা হতে পারে।
পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, তবে বিমান সংযোগ না থাকলে এটি সম্ভব নয়। আমরা এই বছরের শেষ নাগাদ সরাসরি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ও বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে ফ্লাইট চূড়ান্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। দুই দেশে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হলে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ, ব্যবসায়িক সংযোগ, পণ্য পরিবহনসহ সবকিছু আরও সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। বক্তব্য দেন বিএসআরএমের চেয়ারম্যান আলিহুসেইন আকবরআলী, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্য দেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দিন।
বৈঠকে ব্যাবসায়ী নেতৃবৃন্দ চট্রগ্রামের সাথে করাচির সরাসরি বিমান পরিবহন ও সামুদ্রিক জাহাজে পণ্য পরিবহণ চালু করা এবং শীপ বিল্ডিং খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির আহবান জানান। এর মাধ্যমে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হবে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলে তাঁরা অভিমত ব্যক্ত করেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে নিয়োজিত না রাখার পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর উপর জোর দেন তিনি।
শুক্রবার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিশু শ্রম নিরসনে তারুন্যের ভুমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকবে না। তারা বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাবে।”
শ্রম সচিব আইএলও'র অর্থায়নে ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত ঠাকুরগাঁও জেলার ‘চাইল্ড লেবার মনিটরিং সিস্টেম (সিএলএমএস)’ মডেলকে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে এই মডেল অনুসরণ করে বরিশাল জেলাসহ অন্যান্য জেলাতেও শিশুশ্রম নিরসনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা হবে।
শ্রম সচিব তরুণ সমাজ ও এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সকলে যদি ১ জন শিশুরও দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল জেলা অনেকাংশে শিশুশ্রম মুক্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন দুস্থ শ্রমিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ জন শ্রমিক ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন হতে ২৫ লক্ষ টাকার অর্থ সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসার। এছাড়াও বরিশাল জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুধীজন, এনজিও কর্মী ও তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।
ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের প্রচার শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি তৈরি করে।
শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম আইন অমান্য করে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য সম্প্রচার করেছে, যেখানে তিনি মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন আউটলেটগুলোতে ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী শেখ হাসিনার অডিও সম্প্রচার এবং প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। তা ছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘৃণা ছড়ায় প্রাক্তন স্বৈরশাসকের এমন বক্তব্য সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে।
আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, কিছু গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের একটি ভাষণ প্রচার করেছে যেখানে তিনি মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এধরনের অপরাধমূলক প্রচারকর্মে জড়িত গণমাধ্যমের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি এবং দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের জাতির ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি তৈরির ঝুঁকি নিতে পারি না। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের পরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং বর্তমানে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন রয়েছে। তদুপরি, বাংলাদেশের আইন অনুসারে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং একই সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ অনুসারে, যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন যারা তাদের নেতাদের কার্যকলাপ বা বক্তৃতা প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে সরকার বিবৃতিতে বলছে, ‘প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক নীতির উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রথমবারের মতো সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা, এমন একটি সময়ে, সংবাদ মাধ্যমগুলোকে শেখ হাসিনার অডিও এবং তার বক্তৃতাগুলো, যা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি, এগুলো প্রচার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা এবং দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাই। তার মন্তব্য, বক্তৃতা এবং তার যেকোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করে। এটি কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কাজ করে। এ ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অমান্যকারী যেকোনো সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের আইনের অধীনে আইনি জবাবদিহিতার আওতায় পড়বে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মিয়ানমারের মানবাধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠকে অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অগ্রাধিকার দিয়ে তুলে ধরার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি স্মরণ করেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বানের উদ্যোগও প্রধান উপদেষ্টার হাত ধরেই এসেছে।
অ্যান্ড্রুজ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতায় বিশ্ব কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে স্থায়ী সমাধানের আশাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনার নেতৃত্ব বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।’
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলন দীর্ঘদিনের এই সংকট নিরসনে কার্যকর সমাধানের পথ দেখাবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহ মৌলিক সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়ছে। এ সময় তিনি পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে অ্যান্ড্রুজকে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বানও জানান।
টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন পক্ষকে যুক্ত করে সংকট সমাধানে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে। তবে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা আনতে ও শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে, জাতিসংঘ মহাসচিবের মানবিক চ্যানেল স্থাপনের উদ্যোগটি বিদ্বেষমূলক প্রচারণার কারণে ব্যাহত হওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
তবুও টম অ্যান্ড্রুজ আশা করেন, সব পক্ষের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় দ্রুত একটি টেকসই সমাধান সম্ভব। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, টম অ্যান্ড্রুজ আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্টেকহোল্ডার সংলাপে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই সংলাপের উদ্বোধন করবেন।
সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
প্রেস সচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন— তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।