বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

নির্বাচন সামনে রেখে বই নিয়ে অপপ্রচার: দীপু মনি

সংগৃহীত ছবি।
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্যই পাঠ্য পুস্তুক নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সরকারের বিরুদ্ধে ইস্যু না পেয়ে বইয়ের ওপর সওয়ার হয়ে মিথ্যাচারের মাধ্যমে একটি চিহ্নিতমহল অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোনো কিছু কোনো দিন করেনি। কোনোদিন করবে না। করতে পারে না। দেশে ইসলামের প্রচার ও প্রসার যতটুকু হয়েছে তার অধিকাংশ বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে নানা বিতর্ক শোনা যাচ্ছে। এই প্রচারণার সিংহভাগই অসত্য, অপপ্রচার। বিভিন্ন বইয়ের ছবি ‍ফটোশপ করে, লেখা এডিট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে। দেশের শিক্ষাক্রমের নয়, ‍যা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় না, সেগুলোকে আমাদের বই হিসাবে উল্লেখ করে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমাদের বইয়ে নেই এমন কল্পিত বিষয় ও ছবি ব্যবহার করে বইয়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। ভুয়া ও আপত্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বইয়ের লেখকদের সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মন্ত্রী সম্পর্কে কদর্য ভাষায় বক্তব্য দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বরেণ্য শিক্ষাবিদ যারা পাঠ্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও বিষোদগার করা হচ্ছে। কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা আক্রমণ করছেন তাদের কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাক্রমের বই পড়ানো হয় না। যাদের প্রতিষ্ঠানে বই পড়ানো হচ্ছে তারা কিন্তু কোনো অপপ্রচার করছে না। যাদের প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় তাদের মতামত নিয়েই পরীক্ষামূলক বইগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। বইয়ে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হচ্ছে এবং হবে। এ বিষয়ে দুটি কমিটি গঠন করার কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

যারা সমালোচনা করছেন তাদের উদ্দেশ্য ভুল সংশোধন নয় দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা বলছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বলছেন। ইসলামকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বলছেন। তাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ হতো তাহলে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে ভুল সংশোধনের পরামর্শ দিতেন। মিথ্যাচার করতেন না। ফটোশপ করে, এডিট করে এই ধরণের মিথ্যাচার করতেন না। নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে শিক্ষার্থীদের ব্রেন ওয়াশ করে ধর্মের জুজু দেখানো যাবে না এ কারণে এসব অপপ্রচার বলে দাবি করেন দিপু মনি।

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি, আমার ধর্ম, ধর্মবোধ, ধর্মের মর্মবাণী ও ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি বিশ্বাস রেখে এই কদর্য বক্তব্য দাতাদের যাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাতে হেদায়েত দান করুন। এই প্রার্থনা করি। তাদের সত্য বলার, মিথ্যাকে পরিহার করার, দেশকে অস্থিতিশীলতা করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন। এই প্রার্থণা করি।

সংসদে বিরোধী দলের দুজন সংসদ সদস্যের বক্তব্যের সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টির একজন সংসদ সদস্য পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। পরে তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে স্পিকারকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছিলেন বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য। এর সাতমাস পর জাতীয় পাটির আরেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অসত্য, আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি স্পিকারকে অনুরোধ করেন যেন, টিপুর বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, রাষ্ট্রপতি দায়িত্বের শেষ বিকেলে এসে সরকারের উন্নয়নের চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তার গৌরবজ্জল জীবনের ইতি ঘটালেন। সেইদিক থেকে এটি একটি অসাধারণ ভাষণ। অবশ্য এর বাইরেতো তিনি যেতেই পারেন না, কিছু বলতেও পারেন না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি কী বলতে পারবেন, আর্থিক খাতে চরম দুর্নীতি হচ্ছে। ব্যাংকের টাকা অবাধ লুটপাট হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। তিনি কী বলতে পারবেন, দুর্নীতি আজ সমাজে সর্বগ্রাসী রূপ নিচ্ছে। মধ্যবিত্তরা দিন দিন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি কী বলতে পারবেন ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করছে। দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে মানুষ পিষ্ঠ। তিনি এগুলোর কিছুই বলতে পারবেন না।

ফিরোজ রশীদ বলেন, রাষ্ট্রপতি কী বলতে পারবেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগ টাকার বিনিময়ে হায়ার করে হাইব্রিড নেতাদের ভারে হাবুডুবু খাচ্ছে। ফুটপাতের দোকানদার তাদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছেন। এই কথা কী রাষ্ট্রপতি বলতে পারবেন? নাকি এসব বলার উপায় রাষ্ট্রপতির থাকে না। এটাই নিয়ম।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আইএমএফ যেসব প্রেসকিপশন দিয়েছে সেগুলো নতুন কিছু নয়। জাতীয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন উড়িয়ে না দিয়ে খতিয়ে দেখার আহআন জানান তিনি। তিনি বলেন, সিপিডি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা ভেরি হাই। এটি নিয়ে দ্বিমত থাকতে পার। কিন্তু এ রিপোর্ট উপেক্ষা না করে ভালভাবে দেখা উচিত সেখানে কী আছে।


বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সহযোগিতা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েত চিয়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েত চিয়েন বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে তারা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।‘

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম এবং বিজয় অর্জনের মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভিন্ন মিল রয়েছে। ভিয়েতনামের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতি এ দেশের জনগণের প্রশংসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অতীতে পাকিস্তানি জান্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্লোগান ছিল ‘বাংলা হবে ভিয়েতনাম’।”

কৃষি খাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এ দেশের জনসংখ্যা বিপুল, তাই আমরা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষকদের নিয়োজিত রেখেছি।’ প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

শেখ হাসিনা সফলভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ভিয়েতনামের বিদায়ী দূতকে ধন্যবাদ এবং তার দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সফলতার প্রতি অভিনন্দন জানান।

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েত চিয়েন নিজেকে ‘বাংলদেশের বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক রয়েছে।’

ভিয়েতনামী নেতার পক্ষে রাষ্ট্রদূত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ভিয়েতনাম সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতে উভয় দেশ সহযোগিতা আরও জোরদার করতে পারে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।


৮ দলকে আলোচনার চিঠি দিল ইসি

নির্বাচন কমিশন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপিকে আলোচনার জন্য ডেকে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন প্রত্যাখ্যাত হলেও সংলাপ বর্জন করা ৮ দলকে ফের চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপির মতোই দলগুলোকে তাদের সুবিধাজনক সময় নির্ধারণ করতেই বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, সংশ্লিষ্ট দলগুলোর সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য যে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তারা আগে বিএনপির মতোই ইসির আনুষ্ঠানিক সংলাপে অংশ নেয়নি।

সংলাপ বর্জন করা যে ৮ দলকে চিঠি দিল ইসি: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ (বিএমএল) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।


৩ ব্যক্তি, ২ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে জাতীয় পরিবেশ পদক 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ২১:৪০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার এবং পরিবেশবিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদান রাখায় তিনজন ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পরিবেশ পদক দেবে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সভায় এদের মনোনীত করা হয়।

পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ শ্রেণিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার জীবানন্দ রায় এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ধামরাইয়ের ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে জাতীয় পরিবেশ পদকে মনোনীত করা হয়েছে।

এ ছাড়া পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার শ্রেণিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডক্টর তুহিন ওয়াদুদ (ডক্টর আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান) এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে খুলনার বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বেডস) এবং পরিবেশবিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন শ্রেণিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সাতক্ষীরার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান ডক্টর এস এম মফিজুল ইসলামকে পরিবেশ পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

জাতীয় পরিবেশ পদক পাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২২ ক্যারেট মানের দুই তোলা ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্য হিসেবে ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হবে।


ইট তৈরিতে বছরে ১৩ কোটি টন উর্বর মাটি নষ্ট হচ্ছে

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ইট তৈরির জন্য প্রতিবছর তিন হাজার প্রায় ১৩ কোটি টন উর্বর কৃষিজমির মাটি (টপ সয়েল) নষ্ট হচ্ছে। আগামী ১০ বছরে এই টপ সয়েল ব্যবহার ২-৩ শতাংশ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরে বন অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। কমিটির আগের বৈঠকের সুপারিশ অনুযায়ী এ অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

কমিটি আগের বৈঠকে উর্বর ‍ভূমি ব্যবহারসংক্রান্ত তথ্য তৈরির সুপারিশ করা হয়। এর অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মোট টপ সয়েলের পরিমাণসংক্রান্ত কোনো তথ্য-উপাত্ত পরিবেশ অধিদপ্তরে নেই। বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ইট উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশে ইটের কাঁচামাল হিসেবে কৃষিজমির মানসম্পন্ন ওপরের মাটির ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক সমস্যা। দেশে বর্তমানে ইটভাটার সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার ২০০ এবং বার্ষিক ইট উৎপাদন হয় প্রায় ৩২ দশমিক ৪ বিলিয়ন পিস।

বৈঠকে অপর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ইটভাটাগুলোয় বছরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি ইট পোড়ানো হয়। এই ইট তৈরিতে প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ টন কৃষিজমির উর্বর মাটি ব্যবহার করা হয় এবং ইট তৈরিতে প্রায় ৫৬ লাখ টন কয়লা ব্যবহৃত হয়। এর ফলে দেশে উর্বর কৃষিজমির মাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং খাদ্য নিরাপত্তার ওপর হুমকি সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে বায়ুদূষণ সৃষ্টি করে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। এ ছাড়া ইটভাটার সৃষ্ট দূষণের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

প্রতিবেদনে গত ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে পোড়ানো ইটের পরিবর্তে ব্লক ইট ব্যবহার বৃদ্ধিসংক্রান্ত একটি ‍সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ব্লককে বাজারে সহজলভ্য করা এবং অবৈধ ইটভাটাগুলোকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে ইটের সরবরাহ ও চাহিদা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা, সরকারের সব উন্নয়ন প্রকল্পে নির্দিষ্ট হারে ব্লকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর থেকে ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্তকরণ। এ ছাড়া অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নতুন ইটভাটা স্থাপনের অনুকূলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স প্রদান বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।

বৈঠকে সরকারি স্থাপনায় শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিতকরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটি কর্তৃক মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয় বলে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বৈঠকে সারা দেশে জবরদখলকৃত বনভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, তানভীর শাকিল জয়, রেজাউল করিম বাবলু এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।


আবারও বাড়ল হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়

আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ২১:১০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়িয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার হজযাত্রী নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখা বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর তথ্য জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়, নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে। উভয় ব্যবস্থাপনায় নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করে হজে যাওয়ার সুযোগ আছে।

হজ করার খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় এ বছর পাঁচ দফা সময় বাড়িয়েও হজের কোটা পূরণ হয়নি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৩৫ জন এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে এক লাখ ৮ হাজার ৩৫১ জন নিবন্ধন করেছেন। বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ছিল হজযাত্রী নিবন্ধনের শেষ সময়। কিন্তু কোটা পূরণ না হওয়ায় ওই দিন প্রথম দফায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। এরপরেও কোটা পূরণ না আরও পাঁচ দফা সময় বাড়ানো হয়।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ হবে। খরচ কমানোর পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা লাগবে।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করলেও তা আমলে নেয়নি সরকার।

বিষয়:

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি নোয়াবের

আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ২১:১০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সভাপতি এ.কে. আজাদ সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত কয়েকদিনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) আওতায় কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করার পদক্ষেপকে আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম আলোর সম্পাদক ও নোয়াবের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ওই আইনের ধারা-প্রয়োগ তাকে হয়রানি করা ও তার পত্রিকার সাহসী সাংবাদিকতাকে ভয়-দেখানের সমান মনে করি।’

‘একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিএসএর ক্রমবর্ধমান প্রয়োগ আমাদের কাছে শংকাজনক মনে হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ডিএসএ সম্পর্কে আমাদের আপত্তি জানিয়েছি। এধরণের আইন মুক্ত মতপ্রকাশ, স্বাধীন সাংবাদিকতা তথা প্রাগ্রসর সমাজ-নির্মাণের স্বপ্ন ও পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’

বিৃবতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে তুলে নিতে ও প্রথম আলোর রিপোর্টার শামসুজ্জামান শামসের মুক্তি দাবি করছি। একই সঙ্গে আমরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনীত সব ধরণের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’


র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যু: অভিযানে থাকা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ ‘চলছে’

সুলতানা জেসমিন।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক বাংলা

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে স্থানীয় ভূমি অফিসে কর্মরত সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযানে থাকা র‌্যাব সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সংস্থাটির সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একই সঙ্গে তারা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেছেন। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। তারা অভিযানে থাকা র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তদন্ত শেষ হলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নওগাঁয় ওই নারীকে আটক করেছিল র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাটের ক্যাম্প। ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে রয়েছেন মেজর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। র‌্যাবে এই পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে কোম্পানি কমান্ডারের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই অভিযানের বিষয়ে কোম্পানি কমান্ডারসহ অভিযানে থাকা চালক থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁর নওজোয়ান মাঠের সামনে থেকে স্থানীয় ভূমি অফিসে কর্মরত সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের প্রায় দুই ঘণ্টা পর দুপুরে সুলতানাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত ২৪ মার্চ সকালে রামেক হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে একটি মামলা দায়ের করেন এনামুল হক নামে যুগ্নসচিব পদমর্যাদার স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা। সেসময় স্বজনরা অভিযোগ করেন, জেসমিনকে র‌্যাব সদস্যরা হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করায় তার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি হাইকোর্ট অব্দিও গড়িয়েছে। সুলতানাকে এভাবে আটক করার বিষয়ে র‌্যাবের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্নও তুলেছেন হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ।


রাজধানীতে অষ্টম শ্রেণির ৪ শিক্ষার্থী নি‌খোঁজ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৫৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

রাজধানীর মিরপু‌রে মাদ্রাসা ও স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি চার শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছে পরিবার। নিখোঁজ ছাত্রীরা হলো কুলসুম, তারমিন আক্তার কল্পনা, সামিয়া ও খুশি।

জানা গে‌ছে, নি‌খোঁজ শিক্ষার্থীরা মিরপুর ১৩ নম্বরের বাসিন্দা। তিনজন মিরপুর ১৩ নম্বরের আল জাহারা গার্লস একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর একজন কাজী আবুল হোসেন হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিখোঁজ চারজনই বান্ধবী।

মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসা ও স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি ওই চার শিক্ষার্থী। পরে ওই দিন রাতে চার শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে কাজ করছে পুলিশ।

নিখোঁজ এক ছাত্রীর বাবা ইসলাম উদ্দিন জিডিতে উল্লেখ ক‌রে‌ছেন, মঙ্গলবার সকালে তার মেয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। দুপুরের পর তিনি জানতে পারেন, তার মেয়ে মাদ্রাসায় যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন, তার মেয়ের তিন বান্ধবীও বাসা থেকে একইভাবে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি।

এ বিষয়ে কাফরুল থানার ওসি হাফিজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নিখোঁজ চার শিক্ষার্থীর কারও কাছে মোবাইল ফোন নেই। এ জন্য সহজে তাদের ট্রেস করা যাচ্ছে না। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে, তারা সরদার বাড়ির মোড়ে একত্রিত হয়। এরপর একসঙ্গে রওনা হয়। কিন্তু কোথায় গেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে তাদের এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানা গেছে, একটা বিষয়ে চার বান্ধবীকে পরিবারের পক্ষ থেকে গালমন্দ করা হয়। সে কারণে হয়তো তারা পালিয়ে যেতে পারে।

ওসি আরও বলেন, ‘তারা মানব পাচারকারীর হাতে পড়েছে কি না বা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালিয়েছে কি না, তাও দেখা হচ্ছে। এ জন্য আমরা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সলেশন ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) জানিয়েছি। সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কাজ করছে। সব থানা ও পুলিশ ইউনিটে তাদের ছবিসহ বিস্তারিত জানিয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।’


সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা

তলবী সভায় নতুন করে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৫০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও হামলা-মামলার মধ্য দিয়ে গত ১৫-১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ‘কলঙ্কজনক নির্বাচন’ উল্লেখ করে নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধাণ প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে এক তলবী সভায় এ ঘোষণা দেয়া হয়। সভায় বলা হয়, আগামী ১৪-১৫ জুন নতুন করে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সমিতির সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে এ তলবী সভার আয়োজন করা হয়। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘১৫-১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।’

পরে সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং আইনজীবী শাহ্ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে সুপ্রিম কোর্ট বারে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়।

এই কমিটি সমিতির সংবিধান অনুযায়ী ফরম বিতরণ করে ১৫ মের মধ্যে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবে এবং ১৪ ও ১৫ জুন সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর হল রুমে সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭(৩)(এ) অনুযায়ী সদস্যদের তলবী সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এম আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় সমিতির সাবেক সভাপতি, সম্পাদক, সিনিয়র আইনজীবীসহ বহু আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে বারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ রুটিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে অন্তবর্তীকালীন কমিটি। ১ এপ্রিল থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বারের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী তথা বারের অফিস অন্তবর্তীকালীন কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

তলবী সভায় গঠিত ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটির সদস্যরা হলেন— সিনিয়র আইনজীবী আলহাজ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মো. নজরুল ইসলাম, ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদী, ড. এম খালেদ আহমেদ, তৈমূর আলম খন্দকার, এস এম খালেকুজ্জামান, মির্জা আল মাহমুদ, মো. সাইফুর রহমান, ব্যারিস্টার সরওয়ার হোসেন, ড. শামসুল আলম ও এস এম জুলফিকার আলী জুনু।

এছাড়া অন্তবর্তীকালীন কমিটির উপদেষ্টা কমিটিতে রাখা হয়েছে, সংবিধান প্রণেতা ও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ব্যারিস্টার জমীর উদ্দিন সরকার, এফ এম হাসান আরিফ, জয়নুল আবেদীন, বিচারপতি হাবিবুর রহমান ভূইয়া, এ জে মোহাম্মদ আলী, এম কে রহমান ও আবু সাইদ সাগরকে।

সভায় সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ রেজুলেশন পাঠ করেন এবং এই রেজুলেশন সদস্যদের সর্বম্মতিক্রমে অনুমোদন হয়।

রেজুলেশেনে বলা হয়েছ, তলবী সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্ট বার অফিস সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সেক্রেটারি আবদুন নুর দুলালের আদেশে কাজ করবে না। ১ এপ্রিল থেকে সমিতির অফিস শুধুমাত্র অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আদেশে পরিচালিত হবে। অ্যাডহক কমিটি শুধুমাত্র সমিতির রুটিন কাজগুলি করবে।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ দুই দিন ব্যাপি সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের প্রথম দিনে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অনেক আইনজীবী আহত হয়। এরপর আওয়ামী ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার মধ্যে দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। যদিও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা দাবি করে তারা এ ভোটগ্রহণ থেকে বিরত ছিলেন। দুই দিন ব্যাপি ভোটগ্রহণ শেষে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদে আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীরা বিজয় লাভ করেন।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় আইনজীবীসহ সারাদেশের মানুষের মধ্যে সমলোচনার ঝড় ওঠে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার নতুন করে তলবী সভা করে আবার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলো।


ডলারের সংকট কাটিয়ে উঠছে: জ্বালানি উপদেষ্টা

ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৪০
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক বাংলা

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, দেশে কিছু দিন আগে ডলারের বাজার কিছু্টা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। ডলার সংকট এখন আমরা কাটিয়ে উঠেছি। জ্বালানি আমদানিতে এখন আর তেমন সমস্যা হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জ্বালানি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বিদ্যুতের দাম নির্ভর করে জ্বালানির ওপর। দেশে যে পরিমান জ্বালানি উৎপাদন হয় তার পরিমাণ খুব অল্প। বাংলাদেশ জ্বালানির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল না হলে ভবিষ্যতে এটি কী হবে না-হবে তা এখনি বলা কঠিন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে জ্বালানি তেলের দাম কমানো সম্ভব না। দাম একবারে বেশি পরিমাণে বাড়লে মানুষের সমস্যা হতে পারে। তাই অল্প অল্প করে বাড়ানো হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘কনকো ফিলিপস চলে গেল দামের ইস্যু তুলে। আমরা পসকো দাইয়ু ডেকে এনেছি। এখন এক্সন মবিল আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমার মনে হয় ওরা কৌশলগত কারণে আসতে চায়। এ বছরের মধ্যে কিছু একটা হতে পারে।’

দেশের কয়লা উত্তোলনে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপাতত কয়লা উত্তোলনের কোনো পরিকল্পনা নেই। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে হবে। কয়লার ওপরে পানির স্তর রয়েছে। এই পানির স্তর বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। এর সঙ্গে কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রচুর জমি দরকার হয়।

সারা পৃথিবীতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের তুলনায় বাংলাদেশ ভাল আছে দাবি করে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছি। সাউথ আফ্রিকা, বিটেনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। আমরা তাদের তুলনায় ভালো আছি।’

এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক রিশান নাসরুল্লাহ।

বিষয়:

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়, মামলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৪২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়, মামলা হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। তার আগে নিজের দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

শামসের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে এক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, যে মামলা করা হয়েছে... এটা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়, এটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আপনারা নির্ভীক সাংবাদিক আমি এটা স্বীকার করি। আপনারা যদি জনগণকে সত্য তথ্য প্রকাশ করেন কোনো মতেই এই সরকার সাংবাদিকদের বাধা দেবে না।

কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়েরের আগে এজহার একটি সেলে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে। এরপরেও কেন শামসের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলায় যখন তথ্য দেয়া হবে, তখন যদি প্রাইমাফেসি কেস (প্রাথমিক সত্যতা) না থাকে তখন প্রাইমাফেসি কেস নির্ধারণের জন্য আগে সেলে পাঠানো হবে এবং সেলের পরীক্ষার পর মামলা নেয়া হবে। কিন্তু গত বুধবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যে মামলা হয়েছে তার যে বিবরণী, সেটা যদি দেখে থাকেন, তাহলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যে মামলা হয় সেটার তথ্য-উপাত্ত কিন্তু সেই বিবরণীর মধ্যে ছিল। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর প্রয়োজন পড়ে না বলে এই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।

কয়েক দিন আগে নওগাঁয়ও এক নারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা নিয়ে এক প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, সেটা হলো নওগাঁ থেকে যে ভদ্র মহিলাকে তুলে নেয়া হয়, তখন কিন্তু তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ছিল না।

‘তার অবশ্যই দুর্ভাগ্য তিনি যখন মারা যান তখনও কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ছিল না। সেই মামলা করা হয়েছে তার পরের দিন। তাহলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের এখানে অপব্যবহার করা হয়েছে। এই মামলার কোনো প্রসিকিউট করা হয়নি। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট দিয়ে মহিলাকে ধরা হয়নি।’

আনিসুল হক বলেন, ‘দু-একটা কেসে (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অপব্যবহার) হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেখানেই আমরা দেখছি যে এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে সেখানেই তা বন্ধ করার জন্য যে ব্যবস্থা নেয়ার সেটা নিচ্ছি।’

বিষয়:

২৬ মার্চের ঘটনা বাসন্তীকে জাল পরানোর মতোই: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৫৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

গত ২৬ মার্চে প্রথম আলোর প্রকাশিত সংবাদ বাসন্তীকে জাল পরিয়ে সংবাদ পরিবেশনের মতোই ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে সেটি প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন জালের দাম কিন্তু কাপড়ের দামের চেয়ে বেশি ছিলো, এখনো জালের অনেক দাম। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে প্রকাশ করা হয়েছিল। ২৬ মার্চে প্রথম আলোর এ ঘটনাটি বাসন্তীকে জাল পরানোর মতোই। রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অসত্য সংবাদ পরিবেশন একটি ডিজিটাল অপরাধ।’

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গণমাধ্যমের ভূমিকায় প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে এভাবে কটাক্ষ করে যে সংবাদ প্রচার করা এবং একটা শিশুকে ১০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে যেটি বলানোর চেষ্টা করা সে না বললেও সেটিকে ছাপানো -এটি কি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থি নয়? সে জন্যই এটার প্রচণ্ড সমালোচনা হয়েছে, এটি ঠিক নয় বিধায় আপলোড হওয়ার পরে সেটি তারা সরিয়েও ফেলেছিলো। কিন্তু সেটির ‘স্ক্রিনশট’ তো বিভিন্ন জায়গায় ছিলো, অনেকে শেয়ার করেছে, সেগুলো রয়েও গেছে। সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়িয়েছে, ঘুরছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা মামলা করেছে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে এবং আইনের গতিতে আইন চলবে।’

বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: দৈনিক বাংলা

অপরাধ আর সাংবাদিকতা এক জিনিস নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো সাংবাদিক যদি অপরাধ করে তার কি শাস্তি হবে না? কেউ যদি অপসাংবাদিকতা করে, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে এবং একটি ছেলের হাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে তার নামে অসত্য লেখে, চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন (শিশু নিগ্রহ) করে, সেটার কি বিচার হবে না? আমরা কি কেউ বিচারের ঊর্ধ্বে, আইনের ঊর্ধ্বে? তা তো নয়।’

সাংবাদিকের মুক্তি চেয়ে বিএনপি’র দেয়া বিবৃতির বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি কোনো কিছু পেলেই বিএনপি’র বিবৃতি দেয়ার অপচেষ্টা ছাড়া সেটি অন্য কিছু নয়। বাংলাদেশে মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশে নাই। আপনারা যদি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হচ্ছে সমগ্র দেশের সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য, সাংবাদিকদেরও ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে অনেক সাংবাদিকও মামলা করেছে। ক’দিন আগে একজন নারী সাংবাদিক বিদেশ থেকে চরিত্র হননের দায়ে আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের আইন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়েছে। যুক্তরাজ্যে সাইবার সিকিউরিটি ল’জ অ্যান্ড রেগুলেশন ২০২২, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার ল’ অ্যান্ড পানিশমেন্ট এবং এ ধরনের আইন বিশ্বের বহু দেশে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধের শাস্তি হচ্ছে ২০ বছর কারাদণ্ড। এবং ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর কারণে যদি কারো মৃত্যু হয় তবে সেই ডিজিটাল অপরাধের শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আমাদের দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য অনেক দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনেক বেশি কঠিন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় অবশ্যই মিথ্যা বলে রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত হানা হয়েছে, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধ যেটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সেখানে একটা ছেলেকে ১০ টাকা দিয়ে ফুসলিয়ে তাকে দিয়ে কথা বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং সে যেটি বলেনি সেটা প্রচার করা হয়েছে। এটি ঠিক হয়নি বলেই তারা সরিয়েছে। সুতরাং অবশ্যই এখানে রাষ্ট্রের ওপর আঘাত হানা হয়েছে।’

এর আগে ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে বঙ্গবন্ধুর কর্ম, বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনকে সমর্থন করে ১৯৭১ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের সংকলন প্রকাশ করার জন্য পিআইবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, আশা করি এই সংকলনের মাধ্যমে সবাই বঙ্গবন্ধুর অজানা আরো অনেক তথ্য জানতে পারবে। এই সংকলন প্রকাশিত না হলে এই কথাগুলো হারিয়ে যেতো। স্বাধীনতার পূর্বেও বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা, স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনকে সমর্থন করে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ বিজ্ঞাপনের সংকলন একটি অসাধারণ প্রকাশনা।’


প্রথম আলো সম্পাদকের বিচার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

প্রথম আলোর সম্পাদকের বিচার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করা হয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৭:২৬
প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘হলুদ সাংবাদিকতার’ অভিযোগে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি হলেও কর্মসূচিতে উপস্থিত প্রায় সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এসে তাদের অবরোধ থেকে সরিয়ে নেয়। এ সময় শাহবাগ মোড়ের আশেপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক মানুষকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।

অবরোধ কর্মসূচির ব্যানারে লেখা ছিল, হলুদ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতার প্রতিবাদে এবং বাসন্তীকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় জাকিরকাণ্ডের হোতা, গুজবরাজ, শিশু নিপীড়নের দায়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী, রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিশু হত্যায় দায়ী মতিউর রহমানের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি।

ব্যানার নিয়ে নেতাকর্মীরা মিছিল করেন। ছবি: দৈনিক বাংলা

কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক অমি বলেন, ‘জাকিরকাণ্ডের মতো ১৯৭৪ সালে বাসন্তীকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আমরা আজকে এখানে সমবেত হয়েছি যেন আগামীতে কখনো কোনোভাবে যেন কেউ তথ্য সন্ত্রাস বা গুজব সন্ত্রাসের মাধ্যমে তার নিজ স্বার্থ হাসিল করতে না পারে বা কারও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোর মতো যারা হলুদ সাংবাদিকতা করে তাদের আমরা বয়কট করতে চাই। প্রথম আলো বারবার এই কাজ করছে। আমরা রাষ্ট্রের কাছে জানতে চাই, কেন তারা বারবার এটি করার পরও পার পেয়ে যাচ্ছে? কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিশু হত্যায়ও দায়ী। আমাদের দাবি তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’

আরেকজন নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘এটা সত্য যে দ্রব্যমূল্যের দাম আজকে ঊর্ধ্বগতি। কিন্তু তাই বলে আমরা এটি বলতে পারিনা যে আমাদের স্বাধীনতার দরকার নেই বা এই স্বাধীনতা দিয়ে আমরা কি করব। আমার দেশ না থাকলে বা দেশ স্বাধীন না হলে আমি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথা বলবো কিভাবে? তাই আমাদের দেশ দরকার, স্বাধীনতা দরকার।’

অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়ে প্রশ্ন করলে আরেক ছাত্রলীগ নেত্রী বলেন, ‘আমরা তো সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যে এই প্রোগ্রামটা করছি। তাদের যেন পরবর্তীতে ভুয়া সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্যই আমাদের আজকের এই প্রোগ্রাম। আল্টিমেট লাভটা তো তাদেরই। আমরা চাই দেশের বর্তমান যা পরিস্থিতি গণমাধ্যম আমাদের সামনে প্রকাশ করুক কিন্তু মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যদি কোনো গুজব ছড়ানো হয় তাহলে আমরা রুখে দিতে প্রস্তুত।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘এদেশে সাম্রাজ্যবাদের এশীয় দালাল যারা তারা বাসন্তীকাণ্ডসহ আরও বিভিন্ন উপায়ে ১৯৭২-৭৪ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে হত্যার পরিবেশ তৈরি করেছে। সর্বশেষ স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রথম আলোর সেই নিউজের মাধ্যমে আমরা একই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি দেখেছি।’

তিনি বলেন, দশ টাকায় শিশুকে দিয়ে এই ধরনের মন্তব্য তৈরি করা সাংবাদিকতার নৈতিকতা পরিপন্থী। যারা এটি করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সবার দাবির সঙ্গে সঙ্গে আমরা একমত।

বিষয়:

banner close