শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

কালীগঞ্জে সার্কাসের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৮:৪৮

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সার্কাসের নামে চলছে জুয়ার আসর ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন। পৌষ মেলার নামে উপজেলার তালুক বাণীনগর দলগ্রাম-শান্তিগঞ্জ সড়কের পাশে প্রতিরাতে এমন কর্মকাণ্ড চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে এ মেলায় সামাজিক পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ১৭টি শর্ত জুড়ে দিলেও বেশির ভাগ শর্তই ভঙ্গ করেছে আয়োজকরা। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন জুয়ার আসরে প্রায় অর্ধকোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হলেও আয়োজকদের ভয়ে কেউই বাধা দিচ্ছে না।

জানা গেছে, তালুক বাণীনগর ইজিবাইক সমবায় সমিতি নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী পৌষ মেলা আয়াজন করতে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই মেলায় ছোটখাট কয়েকটি খাবার ও দুটি কসমেটিক্সের দোকান ছাড়া তেমন কোনো কিছু নেই।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত পৌষ মেলায় সার্কাস, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাগরদোলা, জাদুখেলা, মোটরসাইকল ও বাইসাইকল খেলা প্রদর্শনীর জন্য অনুমতি দেয়া হয়। অনুমতির শর্তে বলা হয়েছে, সার্কাসে সুস্থ বিনাদনসহ প্রতিদিনের কার্যক্রম রাত ৯টার মধ্য শেষ করতে হবে। অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া আয়াজন করা যাবে না। উচ্চ আওয়াজ মাইক বা শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা, মাদক কেনাবেচা বা ব্যবহার নিষিদ্ধসহ বিভিন বিধি-নিষেধের কথা উল্লখ করা হয়েছে অনুমতির শর্তে।

অনুমতির শর্তানুযায়ী রাত ৯টার মধ্যে কার্যক্রম শেষ করার কথা বলা হলেও রাতের শো শুরু হয় ১০টায়। রাত গভীর হলেই শুরু হয় অশ্লীশ নৃত্য, যা চলে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত। পাশাপাশি চলে জমজমাট জুয়ার আসরও।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, বানীগরের কোথায় সার্কাস হচ্ছে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

জেলা প্রসাশক মাহাম্মদ উল্যাহ বলেন, সার্কাসের পাশাপাশি অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চলেছে কি না, জানা নেই। যদি শর্তেরও বাইরে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চলে, তাহলে অব্যশই সেটি বন্ধ করে দেয়া হবে।


সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান নিয়ার ইস্ট সাউথ এশিয়া (নেসা) সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর একটি প্রতিনিধিদল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে এ প্রশংসা করেন বলে আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এ সময় প্রতিনিধি দলটি মিশনের কর্মকর্তাদের সাথে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে অংশগ্রহণ করেন।

নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এর ডিস্টিংগুইশ প্রফেসর ড. হাসান আব্বাস ৪৬ সদস্যের দলটির নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধিদলে ওয়াশিংটন ডিসিতে নেসা সেন্টার আয়োজিত একটি সেমিনারে ২৮টি দেশের অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ড. আব্বাস ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে বক্তৃতাকালে সন্ত্রাস, সহিংস চরমপন্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের দ্বারা দারুনভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

ড. আব্বাস বলেন, তার প্রতিষ্ঠান- নেসা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কামনা করে এবং আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ দেখতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান দূতাবাসে নেসা সেন্টারের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

রাষ্ট্রদূত ইমরান তার মূল বক্তব্যে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং দেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকট ইস্যু এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য এবং গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স ফান্ড (জিসিইআরএফ)-এ দেশের অগ্রগতির ওপরও আলোকপাত করেন।

রাষ্ট্রদূত সন্ত্রাসবাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য সকল দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং কোন দেশের পক্ষে এককভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব নয়।

দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ইমরান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সকল রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভুমিতে টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, যদি সমস্যাটি আরও দীর্ঘায়িত হয় তবে এটি সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং উন্নয়ন উদ্যোগকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি অহিদুজ্জামান নুর সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ ও সাফল্যের বিষয়টি প্রতিনিধিদলের সামনে তুলে ধরেন। ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং এর সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।


জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

১১২টি দেশ এই রেজুলেশনটিতে কো-স্পন্সর করেছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

এ বছর আলোচ্য রেজুলেশনটি একটি বিশেষ তাৎপর্য্য বহন করে। কেননা এ বছরে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা ও এ বিষয়ক কর্মসূচি ২৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়।

এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে, যা শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতিকে উন্নীত করার জন্য ৮টি বিশেষ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে, সমতা ও সব মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে এবং সর্বোপরি যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে।

এবারের রেজুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচির ২৫তম বার্ষিকী যথাযথভাবে পালন ও উদযাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আহ্বান করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া এ রেজুলেশনে সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়াসহ অন্যান্য অংশীজনদের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে যথাযথভাবে এই বার্ষিকীটি পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।’

রেজুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির উপর সাধারণ পরিষদে একটি সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বহুসংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। এ সময় তারা শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে।

প্রতিনিধি দলগুলো জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

১১২টি দেশ এবছর বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহণ করে।


সাধারণ রোগী হিসেবে এনআইও-তে চোখের চিকিৎসা নিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার টিকিট কেটে এনআইও হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা নেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইও) চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন।

তিনি আজ সকালে এনআইও হাসপাতালে যান এবং সাধারণ রোগীর মতো বহির্বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার টিকিট কিনেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা বলা হয়।

এর আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত এই হাসপাতাল থেকে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন।


আগামীকালও ২৫ জেলার স্কুল বন্ধ

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শনিবার ২৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে চলমান দাবদাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসের ভিত্তিতে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলার; ঢাকা বিভাগের ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলার; চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর; রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে থাকা ছুটি শেষে শনিবার থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলবে। তবে কিছু জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে।

এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো রোববার থেকে খুলবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।


১২ মে এসএসসির ফল প্রকাশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আগামী ১২ মে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। এদিন সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ ও পরিসংখ্যান তুলে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সময় তার সঙ্গে থাকবেন ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ মে ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সম্মতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদা চিঠিতে সই করেছেন।

জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির চিঠি পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে সারাদেশের ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ বছর মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন।


রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে হবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ মে, ২০২৪ ০০:০৮
সৈয়দ আফজাল হোসেন

আজ ৩ মে, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। ১৯৯১ সালে ইউনেসকোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে তারিখটিকে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ অর্থাৎ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় সাংবাদিকতা’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে দেশের সাংবাদিকরা পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।

গণমাধ্যম হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রবাহের মাধ্যম হচ্ছে সংবাদপত্র। পরবর্তীতে এর সঙ্গে রেডিও, টেলিভিশন জনপ্রিয় গণমাধ্যম হিসেবে যুক্ত হয়। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনলাইন নিউজ পোর্টাল পাঠকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।

সাধারণত মুক্ত গণমাধ্যম বলতে বোঝায়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা কোনো প্রকার হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হবে না। ভয়ভীতি ছাড়া তারা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি তাদের তথ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে।

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ঘোষণাপত্রের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘প্রত্যেকেরই মতামত পোষণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে; কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া অবাধে মতামত পোষণ করা এবং রাষ্ট্রীয় সীমানানির্বিশেষে যেকোনো মাধ্যমের মারফতে তথ্য ও ধারণাগুলো জানা বা অনুসন্ধান, গ্রহণ ও বিতরণ করা এই অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।’

বাংলাদেশের সংবিধানেও চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক্-স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা’ শিরোনামে সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল। (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং (খ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল।

সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমকে একটা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাই একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যাতে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে সে জন্য সাংবাদিকরা যেন বিনা বাধায় এবং নিরাপদ পরিবেশে যথাযথভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আর সাংবাদিকদের প্রকৃত স্বাধীনতা ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সুদূর পরাহত।

শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সাংবাদিকরা কমবেশি ভয়ভীতির শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রভাবশালী মহলের চাপ, হামলা-মামলা, রাজনৈতিক হুমকির কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। মাঠপর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে কম যান না। সুযোগ পেলেই তারা সাংবাদিকদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অপব্যবহারও হয়ে থাকে। অথচ বর্তমান সরকার কর্তৃক ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের’ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে ভূমিকা পালনের কোনো বিকল্প নেই।

কেননা, গণমাধ্যম ব্যক্তির মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে। তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জনমত গঠনেও গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সরকারের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এ ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্যও অত্যাবশ্যক। তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমাজের বিকাশ ও উন্নয়নের শক্তিশালী ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়।

সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। সংবাদপত্র কেবলমাত্র সংবাদ পরিবেশন করে না। সমাজের সার্বিক বিকাশ সাধনেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সংবাদপত্র গণতন্ত্রের সদা জাগ্রত প্রহরী। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে, গণতন্ত্র ব্যাহত হলে, কোথাও দুর্নীতি হলে গণমাধ্যম সবার আগে সোচ্চার হয়ে ওঠে। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের মতো নানা সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে চেতনার জাগরণ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সমাজকে ইতিবাচক উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে সংবাদপত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

তবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতারও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। স্বাধীনতার অর্থ এই নয়, যা ইচ্ছে তা করা বা লেখা। সাংবাদিকরা দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে নন। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি, আইনের প্রতি, স্বীয় বিবেকের প্রতি, নীতি-নৈতিকতার প্রতি অবশ্যই তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে বস্তুনিষ্ঠ লেখনী ও সঠিক এবং পরিপূর্ণ তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে তারা এই দায়বদ্ধতা মেনে চলবেন।

গণমাধ্যমের প্রধান সম্পদ হচ্ছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা, যা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। তবে নানা কারণে আমাদের দেশের গণমাধ্যম তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে। সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদার প্রশ্নে এটি মোটেও সুখকর নয়। কাজেই হলুদ সাংবাদিকতা, অপসাংবাদিকতা কিংবা দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা যেন কোনোভাবেই তাদের স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

আবার এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই- অনেকেই নিজেদের স্বার্থে গণমাধ্যমকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করছেন এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এটাকে প্রোপাগান্ডা যন্ত্রে পরিণত করছেন। কিছু কিছু গণমাধ্যম একপেশে কিংবা পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন করে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সাংবাদিকদের একটি প্রতিবেদন তৈরি করার সময় সর্বদা মনে রাখতে হবে- ‘A half-truth is even more dangerous than a lie (অর্ধসত্য মিথ্যার চেয়েও ভয়ংকর)। সুতরাং ‘সত্য কথা লিখতে শিখো ফুঁ দিয়ে ফুলিয়ে নয়, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে’- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অমর বাণী তাদের অন্তরে ধারণ করতে হবে।

বর্তমান জমানায় নিয়ন্ত্রণহীন ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই গুজব বা ভুল তথ্য ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সমাজ গঠনে ওই সব গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার রোধে মুক্ত গণমাধ্যম অত্যাবশ্যক।

সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এটি মেধা ও মননের পেশা, অধ্যয়ন ও অধ্যবসায়ের পেশা; কিন্তু এ পেশায় নিয়োজিত মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে সব মহলেরই রয়েছে উদাসীনতা।

অন্যদিকে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য সাংবাদিক হত্যার শিকার হচ্ছেন। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)-এর তথ্যমতে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ৯৯ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। এর মধ্যে ৭৭ জনই গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে জীবন হারান।


১২ দিন ধরে নিখোঁজ রিদাতের সন্ধান চায় পরিবার

নিখোঁজ রিদাত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের দলিপাড়া থেকে বায়েজিদ হোসেন রিদাত নামের একটি শিশু হারিয়ে গেছে। গত ১৯ এপ্রিল বাসা থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে সে আর ফিরে আসেনি। ১২ দিন ধরে নিখোঁজ শিশুটিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে তার পরিবার।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল সকালে প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা হয় রিদাত। কিন্তু সে আর ঘরে ফিরে আসেনি। তাকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা আব্দুল বাসেদ বাচ্চু গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাংলাদেশ-কুয়েত মেডিকেল হাসপাতালে শয্যাশায়ী।

রিদাতের মা রোকসানা বেগম জানান, তার ছেলের বয়স ১২ বছর। গায়ের রং ফর্সা, গঠন পাতলা। তিনি ছেলের সন্ধানে উত্তরা থানায় জিডি করেছেন। তার অনুরোধ কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি তার ছেলে রিদাতের সন্ধান পেলে যেন নিচের নম্বরগুলোতে পরিবারের কাছে খোঁজ জানান। মোবাইল নম্বর: ০১৭৪৮-১৩৮৩২০, ০১৬৩১-৫০০১৯৮, ০১৭৪৯-৬৫৬২০২।


গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২ মে, ২০২৪ ২১:৪৭
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

শান্তিপূর্ণ ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা এবং গাজা ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। যুক্তরাজ্যের রাজধানীতে স্থানীয় সময় গত বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

সরকারি সফরে ইউরোপে অবস্থানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা এবং ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিকটবর্তী ঐতিহাসিক চার্চিল হলে এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল প্রধান অতিথি এবং হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘের এফসিডিও মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখের উপস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান তার বক্তব্যে জাতির পিতা, সব শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার, সেদেশের নাগরিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উষ্ণ অভ্যর্থনাকারী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশকারী প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসামান্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের নজর এখন ২০৩০ সালের মধ্যে নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ওই সময় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন পত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি ‘বঙ্গবন্ধু-অ্যাডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড’ চালুর জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। পেনি মর্ডান্ট এমপি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তারা প্রত্যেকেই যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ও সমাজে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন ও বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়নে অবিচল অংশীদার থাকবে।

জাতির পিতা ও একাত্তরের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ চলতি মে মাসের শেষের দিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো হোম অফিস সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনা উদ্বোধন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ দিন যুক্তরাজ্যের স্পিকার, হাইকমিশনার এবং বিশিষ্ট অতিথিদের নিয়ে ‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন এবং বাংলাদেশের দুই মহান বন্ধু লর্ড মারল্যান্ড এবং লর্ড স্বরাজ পলের হাতে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশেষ প্রদর্শনী, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি শাড়ি প্রদর্শনীতে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত, কমনওয়েলথ ও ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সিনিয়র প্রতিনিধি, কূটনীতিক, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, মিডিয়া, একাডেমিয়া এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যরা যোগ দেন।


কক্সবাজারে স্বস্তির বৃষ্টি, ঢাকাসহ ৫ বিভাগেও সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। সবার কাছেই এখন অতি কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়, তা হলো বৃষ্টি। গত কয়েক দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির আভাস দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে কক্সবাজারে আজ বৃহস্পতিবার স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এদিকে ঢাকাসহ ৫ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারে আজ ভোর থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলেও সকাল ৯টা থেকে তা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে রূপ নেয়। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপসহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন বলেন, ভোরের বৃষ্টিটা গুঁড়িগুঁড়ি ছিল। মূলত বৃষ্টি হয়েছে সকাল ৯টার পর থেকে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আরও ২ থেকে ৩ দিন কক্সবাজারে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলাবাসী কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে চলমান তীব্র দাবদাহের পর বৃষ্টিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অনেকেই। অনেকেই জানিয়েছেন, এই বৃষ্টিতে সামান্য হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছেন তারা। আবার অনেককে বৃষ্টিতে ভিজতেও দেখা গেছে।

এদিকে আজ নিয়মিত বুলেটিনে সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার বার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আরও বলা হয়- যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও রাজশাহী জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এদিকে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ জেলা এবং খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা দেশের পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

কেমন হবে মে মাসের আবহাওয়া

এপ্রিলের দাবদাহ শেষে শুরু হয় মে মাস। সবার মনেই প্রশ্ন- কেমন থাকবে এ মাসের আবহাওয়া। এর উত্তর দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। এক পূর্বাভাসে তিনি বলেছেন, মে মাসে তাপপ্রবাহ, বৃষ্টি, নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী সবকিছুরই সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাপপ্রবাহ এপ্রিলের মতো অবস্থায় যাবে না। এ মাসে এত দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ থাকবে না। তাপমাত্রা এপ্রিলের চেয়ে কিছুটা কম থাকবে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও অবশ্য কয়েকটি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

মে মাসে তিন থেকে পাঁচ দিন হালকা ধরনের কালবৈশাখী হতে পারে। দুই থেকে তিন দিন বজ্র-শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। সেটি থেকে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।


মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকাতে সংসদকে ইসির চিঠি

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবৈধ প্রভাব বিস্তার না করতে সংসদ সচিবালয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের এমপি-মন্ত্রী যে-ই হোন না কেন, অবৈধ চাপ দিলে তা আমলে না নেওয়ার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি অবৈধ প্রভাব বিস্তার করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

সব প্রার্থী সমান জানিয়ে তিনি বলেন, কে কার আত্মীয়; মন্ত্রী, এমপিদের কোনো প্রার্থী থাকলে তা আইনে নিষেধাজ্ঞা নেই। কোনো প্রার্থী যে-ই হোন না কেন, সব প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ করতে হবে। আর কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি না মানেন বা অবৈধ প্রভাব বিস্তার করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

ইসি আলমগীর বলেন, ‘কমিশন এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইসি সচিব সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে একটি পত্র দেবেন। বিষয়টি স্পিকারের দৃষ্টিতে আনবেন, আমরা কী ধরনের নির্বাচন চাই, সেটা ওখানে থাকবে। চিঠি সম্ভবত চলে গেছে। বার্তাটা হলো, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজন প্রার্থী থাকতে পারেন, কিন্তু কোনো অবৈধ প্রভাব বিস্তাব করতে পারবেন না।’

মাঠ ঘুরে আসায় ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ভালো, উৎসবমুখর। আইনশৃঙ্খলায় কোনো থ্রেড নেই, সমস্যা নেই। গোয়েন্দা প্রতিবেদনও কোনো থ্রেড নেই বলেছে। যেহেতু কয়েক ধাপে ভোট হচ্ছে, তাই ফোর্স বেশি দেওয়া সম্ভব হবে। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে বেশি ফোর্স মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেওয়াই থাকে, প্রয়োজন হলে তিনি অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে, এটা প্রমাণের প্রয়োজন নেই। যেকোনো প্রার্থী যদি বলে উনি অমুকের আত্মীয় বা ওই পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন, তাহলে প্রমাণ ছাড়াই নিয়োগ বাতিল করা হবে। শুধু কারও প্রতি অভিযোগ এলে আমাদের প্যানেল থেকে অন্য একজনকে নিয়োগ দেবো। প্যানেলে যোগ্য লোক না পেলে প্রয়োজনে পাশের জেলা বা উপজেলা থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এটা ট্রেনিং শুরু হওয়ার আগেই করতে হবে। আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের অভাব নেই। তবে কোনও প্রার্থী তালিকা দিলে সেটাও নেওয়া যাবে না। পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে, রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে প্রমাণ দিতে হবে। যেহেতু রিটার্নিং অফিসার আমাদের অত নেই।’

এক প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, মাঠের প্রস্তুতি সবাই ভালো বলেছে। সংসদ নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদেরই ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো চাপ পাচ্ছেন না। তাদের বলা হয়েছে, প্রেসার দিলে সে যে-ই হোক না কেন, তা আমলে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থী নির্বাচনে থাকবেন কিনা তা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিষয়। নির্বাচন কমিশন দেখবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য কিনা। অনেক প্রার্থী, এমনকি অনেক দল অংশ না নিলে স্থানীয়ভাবে অনেক দলের প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।

ইসির বার্তা মন্ত্রী-এমপিরা না মানলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপিরা বিধি না মানলে দেখতে হবে কোন বিধি ভঙ্গ করলেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছি না। আমরা তাদের চিঠি দিয়ে ফোনে বলেছি। তারাও অনেক সময় অনেক কিছু বুঝতে পারছে না। কেননা, কিছু বিধি খুব সূক্ষ্ম। যেমন একজন মন্ত্রী মসজিদে নামাজ পড়তে গেছেন, সেখানে প্রার্থীও গেছেন। আর এটাই অনেকে বলছেন প্রচার চালিয়েছেন, এমন আরকি।’

তিনি বলেন, কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে গুরুত্ব বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও এমন কোনো অভিযোগ আসেনি যে মন্ত্রী মঞ্চে গেছেন, পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন।

এই কমিশনার আরও বলেন, ‘সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টির কথা কোনোটাই বলছি না। যিনি আসতে চান, তার জন্য দুয়ার খোলা। এজন্য আমরা অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ দিয়েছি। এটা এ জন্যই করা হয়েছে যেন কেউ কাউকে বাধা দিতে না পারে। আর নিজেরা যদি মারামারি করেন, তাহলে তো প্রশাসন বদলি নেওয়ার কিছু নেই। প্রশাসনের কেউ যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না বলে মনে হয়, আমরা পরিবর্তন করে দিচ্ছি। আরও করে দেওয়া হবে। এখন যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে, তাহলে বদলি করে দেওয়া হবে।’

যেহেতু দলীয় ও স্বতন্ত্র দুভাবে নির্বাচন করার আছে। এ ক্ষেত্রে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, দল সবার জন্য ওপেন করে দিতে পারে, আবার কোনো প্রার্থীকে কোনো দল অফিসিয়ালি পারে না। তবে দলীয়ভাবে পারে না। জোর করতে পারবে না। শক্তি প্রয়োগ করে হুমকি দিয়ে পারবে না। প্রকাশ্যে হুমকি দিলে সেটা হুমকি। কিন্তু তারা যদি দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেয়, সেই অধিকার তো তাদের আছে।

ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন ৫ হাজার পর্যবেক্ষক: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রায় পাঁচ হাজার পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করবে। ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) মো.শরিফুল আলম সই করা চিঠি এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ও সংশ্লিষ্ট আইন মেনে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নিবন্ধিত ২৮টি পর্যবেক্ষক সংস্থার কেন্দ্রীয়ভাবে ২৬৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে চর হাজার ৬৯২ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের কার্ড নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে প্রদান করা হবে। আর স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের কার্ড ও স্টিকার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে দেওয় হবে।

স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের যে নির্দেশনা মানতে হবে

রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে স্থানীয় পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই করে অনুমোদিত পর্যবেক্ষক সংস্থাকে পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার সরবরাহ করতে হবে।

নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমোদিত পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রত্যেক পর্যবেক্ষকের জন্য EO-2 ফরম, EO-3 ফরম, এসএসসি সনদের সত্যায়িত অনুলিপি, সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট ও ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজ রঙিন ছবিসহ একটি আবেদন রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দেবে।

এসব তথ্য যাচাই করে কমিশন থেকে অনুমোদিত বৈধ পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রস্তুত করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং তাদের নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত পরিচয়পত্র প্রদান করবেন।

পর্যবেক্ষক যদি কোনো রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কিংবা স্থানীয় কমিটির পদাধিকারী হন কিংবা স্থানীয় নির্বাচনী এজেন্ট/প্রচারণা কমিটি/পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে কোনো কার্ড ইস্যু করা যাবে না। পর্যবেক্ষকরা অনধিক পাঁচজনের টিম করে ভ্রাম্যমাণ পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

তাদের নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক লেখা গাড়ির স্টিকার সরবরাহ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক লেখা স্টিকারযুক্ত গাড়িতে অনুমোদিত পর্যবেক্ষক ছাড়া অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন না। নির্ধারিত পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার ইস্যু করে তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। তা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রেরণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার নির্বাচনী মালামাল সংগ্রহের সময় কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখা রুম নং-১০৫ থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে ৮মে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোট হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।


তৃতীয় ধাপে ১৫৮৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১২টি উপজেলায় এক হাজার ৫৮৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১৮ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সমন্বিত তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ধাপে ৫টি পদে একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন। এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে কোনও একক প্রার্থী নেই।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া ও যশোরের অভয়নগর এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সুনামগঞ্জের ছাতক ও পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ১০ জন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে নওগাঁর রাণীগঞ্জ, রংপুরের গংগচড়া ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বগুড়া সদরে সর্বোচ্চ ১৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পটুয়াখালী সদরে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

তৃতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে আগামী ৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোট হবে ২৯ মে।


উপজেলা নির্বাচনে মানুষ যাকে চাইবে সেই জয়ী হয়ে আসবে: প্রধানমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার গণভবনে আয়োজিত থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান উপজেলা নির্বাচনকে অর্থবহ করাই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন চান যেখানে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান এবং একে প্রভাবমুক্ত রাখাই আমার লক্ষ্য। সেখান থেকে যারাই জিতে আসে আসবে। সেটা হলো বাস্তবতা। মানুষ যাকে চাইবে সেই জয়ী হয়ে আসবে। যেমন আওয়ামী লীগকে চেয়েছে (ক্ষমতায়) আওয়ামী লীগ চলে এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবণে সাম্প্রতিক থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।

তিনি গত ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে থাইল্যান্ড সফর করেন। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক এই সফরে তিনি ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০ তম অধিবেশনেও যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা হচ্ছে এই প্রক্রিয়াটাকে আরো গণমুখি এবং স্বচ্ছ করা।’ তিনি বলেন, এই প্রথম আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আগে কখনও এটা করা হয়নি।

অতীতে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আর্থিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ওপর নির্ভরশীল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার এটাকে সেখান থেকে মুক্ত করে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত করে দিয়েছে। আলাদা বাজেট দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত করেছি যে, দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’

সরকার প্রধান বলেন, এখন কোন কোন দল থেকে মানুষকে ভোটে না যেতে বলা হচ্ছে। প্রশ্নটা হচ্ছে মানুষ কেন ভোটে যাবেনা? এটাতো তার অধিকার। তার এলাকায় সে যাকে চায় তাকে সে ভোট দেবে। তাদের এই ভোটের অধিকারে হস্তক্ষেপ কেন?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পুরো নির্বাচনী ইতিহাস যদি আপনারা দেখেন সেই ’৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন, ‘৭৭ সালের ‘হ্যাঁ-না’ ভোট থেকে নিয়ে যতগুলো নির্বাচন প্রত্যেকটা নির্বাচনকে নিয়ে যদি তুলনা করা হয় তাহলে দেখবেন ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন প্রত্যেকটি নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার নির্বাচনই হয়েছে। যেটা আমাদের লক্ষ্য ছিল । কারণ, এদেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করেছি।

বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জন করে কেন? কারণ তাদের নির্বাচন করার মত সক্ষমতাই নাই।

তিনি উদাহারণ দেন-: যেমন ধরুন সংসদ নির্বাচন। সে নির্বাচন করতে হলে জনগণকে তো দেখাতে হবে আপনাদের পরবর্তী নেতৃত্বে কে আসবে বা প্রধানমন্ত্রী কে হবেন বা নেতা কে হবেন? একজন নেতাকে তো দেখাতে হবে। আপনাদের কাছে যদি এখন উপযুক্ত নেতা না থাকে তখন তো আপনাকে একটা ছুতা খুঁজতে হয়। হ্যাঁ নির্বাচন করলাম না, বাস্তবতা সেটাই। আমাদের দেশে ওটাই এখন হচ্ছে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী বা পলাতক আসামীকে যদি জনগণের সামনে দেখান তাহলে পাবলিকতো সেটা মেনে নেবেনা।

শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি করতে গেলে তো ঝুঁকি নিতে হয়। এ সময় ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর তাঁকে দেশে আসতে না দেওয়ার এবং শেখ রেহানার পাসপোর্টটি পর্যন্ত নবায়ন না করে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যেখানে তাঁর বাবার খুনিরা পুরস্কার প্রাপ্ত, যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন এবং সাজাপ্রাপ্তও ছিলো তাদের ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ প্রদান করা হয়, তারাই ক্ষমতায়। তারাই মন্ত্রী-উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘ওই অবস্থাতেই তো আমি দেশে ফিরে এসেছি, জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বারবার আঘাত এসেছে কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। বেঁচেও গেছি এবং বারবার নির্বাচনেও জিতে ক্ষমতায় এসেছি এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই আজকে দেশের উন্নতি হয়েছে। বিশে^র বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার বা কথা বলার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ।

থাইল্যান্ডে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়, ফিলিস্তিন ইস্যু, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, হিট ওয়েভ, আমেরিকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা প্রসঙ্গসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে এবং প্রধানমন্ত্রী তার জবাব দেন।

অতিবাম রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তারা পুরো ৯০ ডিগ্রী ঘুরে গেছে।
তিনি বলেন, ধরে নিলাম তারা আমাকে উৎখাত করবে। কিন্তু এরপর কে আসবে ক্ষমতায়- তারা কি সেটা ঠিক করতে পেরেছে? সেটাই আমার প্রশ্ন- কে আসবে ক্ষমতায়? কে দেশের জন্য কাজ করবে? কাকে তারা আনতে চায় (ক্ষমতায়) সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয় আর সেটা স্পষ্ট নয় বলেই তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমি বলবো অনেক কিছুই হয়েছে, চেষ্টা করা হয়েছে যাতে নির্বাচনটা না হয়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট এখনো টিকে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে বসবেন বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর পূর্তি জাঁকজমক পূর্ণভাবে করার প্রস্তুতি চলছে যেখানে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান।

তবে, অবস্থা বুঝেই সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণেরও ইঙ্গি দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার শক্তি হচ্ছে দেশের জনগণ। কাজেই জনগণের শক্তির উপর আমি সবসময় বিশ্বাস করি এবং আমি এটাও বিশ্বাস করি যে- জনগণ যতক্ষণ চাইবে, ততক্ষণই ক্ষমতায় থাকব। কারণ আমরা জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে এসেছি।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমাদের দল তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে বের হয়নি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মানুষের আর্থসামাজিক যে উন্নয়ন, এটাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের মানুষ যে শোষণ বঞ্চনার শিকার হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্যই এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কাজেই আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যায় এবং এটা প্রমাণিত সত্য আর সেই কারণেই যত বাধাই আসুক, আমরা সেই বাধাটা পেরিয়ে যেতে পারি বা যত চক্রান্ত হোক, সেই চক্রান্তগুলোকে পাশ কাটিয়ে দেশের মানুষকে সাথে নিয়েই আমরা বিজয় নিয়ে আসি।

তিনি বলেন, “এটা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় থেকে শুরু করে এবং এই নির্বাচন জায়গায় এটা প্রমাণিত। কাজেই এখানে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনতাই ঘটেছে। এখন যারা- ‘গণতন্ত্র নাই, দেশে ভোটের অধিকার নাই’ বলে তারাই তো মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, এটাই তারা ভুলে যায়। আর অনেকে নানা ধরনের কথা বলেন। অনেকে উন্নয়নটা চোখে দেখলেও কেউ কেউ দেখেন না।”

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, উন্নয়নটা তারা নাও দেখতে পারেন, কারণ তাদের হয়তো উন্নয়নের ফর্মুলাটা ভিন্ন আর আমার উন্নয়নটা হচ্ছে আমার গ্রামের মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খাবে, তাদের একটু বাসস্থান হবে, চিকিৎসা পাবে, শিক্ষা পাবে ও জীবন মান উন্নত হবে।

তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, আপনারা তো সাংবাদিক, আপনারাই বলেন বেশিদিন নয় মাত্র ১৫ বছর আগেই দেশের অবস্থা কেমন ছিল? এখন কি কোন পরিবর্তন হয়নি? এখন কেউ যদি উন্নয়নটা না দেখে- তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের তো কিছু লোক রয়েছে, যারা সবসময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কানভারী করছে। তারা অনেক জ্ঞানী গুণী বুদ্ধিজীবী এবং তারা যখন সারাক্ষণ উল্টাপাল্টা বলতেই থাকবে, কিছুটা (বিদেশিরা) তাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমার দেশের মানুষইতো অনেকে প্রভাবিত হয়ে যায় আর বিদেশীরা তো হবেই। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু এসব কথায় প্রভাবিত হয় না। তারা কিন্তু ঠিক আছে। তাদের একটা আত্মবিশ্বাস আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত আমরা করেছি।

বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের পক্ষে রয়েছে উল্লেখ করে- প্রধানমন্ত্রী সেখানে গণহত্যা বন্ধের ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা হ্রাস করে তার অর্থ দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় এবং জলবায়ু তহবিলে প্রদানের আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি এবং আন্তর্জাতিকভাবেও তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। যেখানেই নির্যাতিত মানুষ, সেখানেই বাংলাদেশ আছে- এটাই আমি প্রমাণ করতে চাই। আমি যেখানেই যাই, সেখানে আমার কথা আমি বলবই। কারণ যেভাবে গণহত্যা চলছে, সেটা অমানবিক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন যে- আমেরিকায় আন্দোলন করার জন্য ৯শ’ ছাত্র ছাত্রী ও অধ্যাপক গ্রেফতার হয়েছেন আর এটা নাকি গণতন্ত্রের একটা অংশ।

সেখানে একজন অধ্যাপককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রাস্তায় ফেলে নির্যাতন করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনার সমালোচনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পরপরই ঠিক যেভাবে তাদের সন্ত্রাসী ও পুলিশবাহিনী অত্যাচার করেছিল, এটা সেই অত্যাচারের কথাটাই মনে করিয়ে দেয়। অথচ তাদের কাছ থেকেই আমাদের মানবাধিকারের ছবক নিতে হয়, এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের।
আমেরিকায় বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দেশে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। তাদের আগে নিজের ঘর সামলানো উচিত।

তিনি বলেন, আমেরিকায় বিভিন্ন স্কুল, শপিং মল, রেস্টুরেন্টে অনবরত বন্দুক হামলা হচ্ছে আর মানুষ মারা যাচ্ছে। এমন কোনো দিন নাই বোধ হয় যে, আমেরিকায় মানুষ না মরছে। তাদের সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

আমেরিকায় বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেও আমাদের বাংলাদেশি কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি এবং বিচার করে তারা আমাকে জানিয়েছে। আমাদের যেটুকু করার সেটা আমরা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, প্রতিবাদ শুধু এখানেই না, আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।

গরমে তিনি সকলকে সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন এবং তাঁর দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উল্লেখ করে বলেন, যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। অবস্থা বুঝে যখন যেটা করার দরকার সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ নিচ্ছি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গরম নতুন নয়। তবে যেভাবে গরম বাড়ছে, তাপমাত্রা বাড়ছে এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নিরাপদে থাকতে হবে, প্রচুর পানি খেতে হবে।”

রোহিঙ্গাদের বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। থাইল্যান্ডও আশ্বাস দিয়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রত্যাবাসন নিয়ে সহযোগিতা করবে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তারাও উদ্ধিগ্ন। থাইল্যান্ডও মিয়ানমারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী তাঁর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, থাইল্যান্ডের সফরে কী পেলাম আর কী পেলাম না- সেটা বড় বিষয় নয়। নতুন করে কিন্তু অর্থনীতির একটি দুয়ার খুলেছে। থাইল্যান্ডের সঙ্গে খাদ্য ও ফল উৎপাদনের বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে। থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগ করার আহ্বান করা হয়েছে। পাসপোর্ট ছাড়া যেন বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে যাওয়া যায়, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।


কক্সবাজারে হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার কমিউনিটি রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামের (সিআরপি) আদলে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ১৬০ একর জমি বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে অংশ নিয়ে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন হয়।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে পুলিশে বর্তমান সরকারের বিগত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বাড়ানো হয়েছে। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব পদে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ও অভিযান পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরের জন্য দুটি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার সংযোজনের কার্যক্রম চলমান। পুলিশকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। আগে ব্যবহৃত পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেলের পরিবর্তে বর্তমানে ৭ পয়েন্ট ৬২ মিলিমিটার রাইফেল ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের ৭ পয়েন্ট ৬২/৯ এমএম পিস্তল, ৯ এমএম এসএমজি, পয়েন্ট ৪৫ ইঞ্চি এসএমজি, ১২ বোর শটগান, ৩৮ মিলিমিটার টিয়ারগ্যাস, গ্যাসগান/লঞ্চারসহ প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবারাহ করা হচ্ছে।’

চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউর রহমানের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সীমান্তে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি এরই মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) অত্যাধুনিক অস্ত্র, যানবাহন, আকাশযান ও জলযান দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়েছে।’

তিনি জানান, অত্যাধুনিক অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে অ্যালকোটেন ৪০টি, এটিজিডব্লিউ ১২টি, স্নাইপার রাইফেল ১৩২টি, এএএমজি তিনটি, এপিসি আমর্স ২৮টি। যানবাহনের মধ্যে রয়েছে এটিভি ২৫৯টি, রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল (আরসিভি) ১০টি, আমর্ড পার্সোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) ৪০টি, মোটরসাইকেল এক হাজার ৯৬৫টি, পিকআপ ৫৪৭টি, অ্যাম্বুলেন্স ৬৯টি, ট্রাক ২১৮টি, জিপ ৩২৮টি, বাস ২৫টি, মাইক্রোবাস ১২টি ও ওয়াটার ট্রেইলার ৭৩টি।

এছাড়াও বিজিবির জন্য কেনা আকাশযানের মধ্যে হেলিকপ্টার রয়েছে তিনটি। জলযানের মধ্যে স্পিডবোট ৮৭টি, হাইস্পিড ইঞ্জিন বোট ১২টি, এয়ারবোট চারটি, লজিস্টিক শিপ একটি, পন্টুন ৫টি, মোটর লঞ্চ ২৫টি, পেট্রল বোট ৪টি, রেসকিউ বোট ১৫টি এবং ওয়াটার ক্যারিয়ার ভ্যাসেল দুটি। এছাড়া জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (১৯ বিজিবি) এবং সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) জন্য প্রাইভেট তহবিলের ব্যবস্থাপনায় দুটি স্পিডবোটের বডি কেনা হয়েছে।

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর সাত গ্রাম ব্ল্যাক কোকেন উদ্ধার করা হয়েছে।’

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রুহীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘২০২৩ সালে ৯৭ হাজার ২৪১টি মামলা করে এক লাখ ২০ হাজার ২৮৭ আসামি গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এসময় ৩১ হাজার ৬২২ বোতল ফেনসিডিল, ৭২ কেজি ৮২৮ গ্রাম হেরোইন, ১৮৬ কেজি ৬৩২ গ্রাম আইস এবং ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭১ পিস টাপেন্টাডল ট্যাবেলট জব্দ করা হয়েছে।’


banner close