মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

নারী জনপ্রতিনিধি পদ যেন ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’

হাসান মেহেদী
প্রকাশিত
হাসান মেহেদী
প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:৫১

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে, ‘একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।’

বিধিমালায় এমন ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তৃণমূলের নারী জনপ্রতিনিধিদের বাস্তব অবস্থার প্রতিধ্বনি শোনা গেল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগমের কণ্ঠে। চার বছর হলো নির্বাচিত হয়েছেন; অথচ এখন পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে বসার একটা জায়গাও পাননি তিনি। তার অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই এতদিন কোনো কাজও জোটেনি। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি এই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।

নিজের পদ নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ার‌ম্যান মাছুমা আক্তারের কণ্ঠেও ফুটে উঠল আক্ষেপ- ‘আসলে এই পোস্ট তৈরির কোনো মানে হয় না। এটি শুভঙ্করের ফাঁকি! মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কোনো স্বাক্ষর ক্ষমতা নেই। সামান্য পরিমাণ ভাতা দেয়া হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেয়া হলেও গাড়ি সুবিধা না থাকায় যেতে পারি না। বরাদ্দ না থাকায় অনুষ্ঠানে গিয়েও কিছু দিতে পারি না। অথচ তারাই আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।’

এ রকম নানা অভিযোগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারী জনপ্রতিনিধিদের। তারা বলছেন, আইন ও বিধিমালায় নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের পরিধি নির্ধারণ করা আছে। এর পরও দেশের বেশির ভাগ নারী জনপ্রতিনিধির আসলে কোনো কাজ নেই, দাপ্তরিক কাজে আনুষ্ঠানিক মতামত দেয়া ছাড়া। এ নিয়ে আপত্তি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে আইনে নারী জনপ্রতিনিধিদের বেশ কিছু ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একই অবস্থা স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আওতাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও।

নারী জনপ্রতিনিধি কতজন

২০২১ সালে ৪ হাজার ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৪ হাজার ১১৪টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। তবে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, সেই তথ্য কমিশনের কাছে নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, অন্তত ৫০টি ইউপিতে নারীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪১ জন আওয়ামী লীগ, একজন জাতীয় পার্টির এবং অন্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ২৬ জন নারী চেয়ারম্যান জয়ী হয়েছিলেন।

উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এবং জাতীয় তথ্য বাতায়নে বলা আছে- ‘একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান, একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রত্যেক ইউপির চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী সদস্যগণ এবং উপজেলার এলাকাভুক্ত পৌরসভা থাকলে তার মেয়রকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হবে।

জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন উপজেলা আছে ৪৯৫টি আর উপজেলা পরিষদ আছে ৪৯২টি এবং ইউনিয়ন পরিষদ আছে ৪ হাজার ৫৭১টি। কাজেই এসব পরিষদে কমপক্ষে ৪৯২ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রতি ইউপিতে সংরক্ষিত আসনে তিনজন করে মোট ১৩ হাজার ৭১৩ জন নারী ইউপি সদস্য রয়েছেন। এর বাইরে সংরক্ষিত আসন ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। তাই দেশে অন্তত ১৫ হাজার নারী জনপ্রতিনিধি তো আছেনই, সে হিসাব প্রায় স্পষ্ট। কিন্তু দৈনিক বাংলার অনুসন্ধান বলছে, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা এই বিপুলসংখ্যক নারী জনপ্রতিনিধিকে বানিয়ে আসলে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ বানিয়ে বসিয়ে রেখেছে।

অভিযোগ, আক্ষেপ, হতাশা

নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নারীর সংখ্যা বাড়লেও তাদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে না। সরকার আইন করে জনপ্রতিনিধিদের কাজ ভাগ করে দিলেও সেটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।

তারা বলছেন, নির্বাচিত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারী জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় রাজনীতির নানা সমীকরণ, পুরুষ চেয়ারম্যানদের আধিপত্য ও বাধায় দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্যদের বেশির ভাগই স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় দায়িত্ব পালনে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের ওপরই তাদের নির্ভর করতে হয়। আইনের বিধিমালায় থাকা দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুই জানেন না সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্যরা।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ৮ নম্বর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য নাজমিন নাহার বলেন, ‘নারী সদস্য হিসেবে তেমন কোনো কাজ আমাদের থাকে না। এলাকার মানুষ মেম্বার হিসেবে জানে, সম্মান করে এটাই পাওয়া। ইউনিয়নের সব কাজ চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যরাই করেন।’

স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের নারী জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের অন্তত ২০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বার-চেয়ারম্যানের অবস্থা নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয় দৈনিক বাংলার পক্ষ থেকে। বিধি অনুযায়ী, ১৭টি স্থায়ী কমিটির কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের। দেখা গেছে, এসব কমিটিতে নাম থাকলেও কাজের বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয় না। টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় যে বরাদ্দ আসে তার ২০ শতাংশ পায় উপজেলা পরিষদ। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ৮ শতাংশ, ইউএনও ৬ শতাংশ এবং দুজন ভাইস চেয়ারম্যান বাকি ৬ শতাংশ বরাদ্দ পান। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ওই বরাদ্দ দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করছেন নারী জনপ্রতিনিধিরা। তারা আরও বলছেন, একই দলের অনুসারী না হলে বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দও ঠিকমতো পান না উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা।

বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের নারী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পরও স্থানীয় রাজনীতিবিদের কারণে তাদের কোণঠাসা হয়ে থাকতে হয়। পরিষদের পুরুষ সদস্যরাও সব সময় সহযোগিতা করেন না। উন্নয়নমূলক কাজে পুরুষ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হলে বরাদ্দকৃত অর্থের হিসাব ঠিকমতো দেন না। তখন এর দায় চেয়ারম্যানের ওপর বর্তায়।

এদিকে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যদের দাবি, তাদের ক্ষমতাও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ইচ্ছার কাছে জিম্মি। বেশির ভাগ নারী সদস্য স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কেও জানেন না। এই সুযোগে পুরুষ মেম্বাররাও তাদের ওপর ছড়ি ঘোরান। যার কারণে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের সব সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয়া ছাড়া তাদের কিছু করার থাকে না।

আইন অনুযায়ী কাজ করতে না পেরে হতাশার কথা জানিয়েছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১৫ বছর ধরে নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের জন্য কিছুই করতে পারি না। ১৫ বছরে পাঁচটি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গেও আমি যুক্ত থাকতে পারিনি। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদ শুধুই অলংকার হিসেবে রাখা হয়েছে।’

আইনে যা আছে

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বের বিষয়ে বলা হয়েছে, একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।

এ ছাড়া পরিষদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা ও মাতৃমঙ্গল সেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া; স্যানিটেশন ও সুপেয় পানীয় জলের সরবরাহের ব্যবস্থা; মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নে করণীয় চিহ্নিত; কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন ও বিকাশে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ; আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক ও বাল্যবিবাহ রোধে জনমত গড়ে তোলা; গবাদিপশু এবং মৎস্যসম্পদের উন্নয়ন; সমবায় সমিতি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকি; সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশ নেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব ও সুপারিশ দেয়ার বাইরেও সরকার ও চেয়ারম্যান কোনো কাজ দিলে সেগুলো করতে হবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের।

বিধিমালায় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলির বিষয়ে বলা হয়েছে, ওয়ার্ডের সভায় উপস্থিত থেকে তারা উপদেষ্টার কাজ করতে পারবেন। পরিষদের ১৩টির বেশি স্থায়ী কমিটির মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্প যেমন- টেস্ট রিলিফ (টিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা), বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) উন্নয়ন বরাদ্দ, থোক বরাদ্দসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হবেন। তিনজন প্যানেল চেয়ারম্যানের মধ্যে কমপক্ষে একজন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের মধ্য থেকে হতে পারবেন।

এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যরা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়নকাজের তদারকি, মহিলাদের বৃত্তিমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক ও অ্যাসিড নিক্ষেপ নিরোধ, বাল্যবিবাহ রোধসহ বিবাহ নিবন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ; গ্রাম আদালতের বিচারক প্যানেলে থাকা, ওয়ার্ডের জনগণের সম্পত্তি সংরক্ষণসহ ২১টি কাজের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে।

নামেই উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

উপজেলার নারী উন্নয়ন ফোরামে পদাধিকার বলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সভাপতি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্যরাও এই ফোরামের সদস্য। নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা নারী উন্নয়ন ফোরামের বিভিন্ন বরাদ্দ আটকে রাখেন।

তারা আরও অভিযোগ করছেন, ভিজিএফের চাল; মাতৃত্বকালীন, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বরাদ্দেও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের সুপারিশ রাখা হয় না। নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের পরিষদের মাসিক সভায় নিয়মিত ডাকা হয় না। অনেক সময় ডাকলেও তাদের কথা আমলে নেয়া হয় না। উপজেলার বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ৩ শতাংশ নারী উন্নয়ন ফোরামের জন্য বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তা ছাড় করেন না। প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াতের জন্য গাড়ি চাইলেও পান না নারী জনপ্রতিনিধিরা। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানকে সেই দায়িত্ব দেয়া হয়।

দল ও ক্ষমতার হাতে জিম্মি

নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো কাজ না পেয়ে বেশির ভাগ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হতাশ। সরকার নারীদের জন্য অলংকারিক হিসেবে এই পদ সৃষ্টি করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার আক্ষেপও ঝরেছে তাদের কণ্ঠে।

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বলেন, ‘পাংশা উপজেলায় সব কাজের নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম। উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজ থেকে শুরু করে সব বরাদ্দ তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। তার কথামতো না চলায় দায়িত্ব নেয়ার প্রায় চার বছর হতে চললেও আমাকে উপজেলা পরিষদের কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। কক্ষ না থাকায় পরিষদের কেরানির কক্ষে গিয়ে মাঝেমধ্যে বসি। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়া হয় না। কোনো বরাদ্দ এলে সেটিও ঠিকমতো দেয়া হয় না। এভাবেই সময় পার করছি। বাকি সময়টা এভাবেই হয়তো পার হয়ে যাবে।’

ওই জনপ্রতিনিধির অভিযোগের বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে দায়িত্ব পাওয়ার আগে থেকেই তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। আগে থেকে উনি যেই কক্ষে বসতেন, এখনো সেভাবেই আছেন বলে জানি। উপজেলায় নতুন ভবন হওয়ার পর ওইভাবে কারও নামে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আর অন্যান্য বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। উপজেলার সব বরাদ্দই জনপ্রতিনিধিরা পেয়ে থাকেন।’

এমপি জিল্লুল হাকিমকে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) একাধিকবার কল দেয়া হলে প্রতিবারই তিনি কেটে দেন।

নারী বলেই পাত্তা মেলে না!

বোয়ালমারী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হজে যাওয়ার পর এক মাসের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই সময় নিয়মিত কাজে স্বাক্ষর করা ছাড়া অন্য কিছু করতে পারেননি।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন, ‘সম্প্রতি ছয় মাস মেয়াদি মাতৃত্বকালীন ভাতা এসেছে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে। প্রতি ইউনিয়ন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০টি করে কার্ড চেয়ারম্যানরা পেয়েছেন। আমি একজন গর্ভবতী মায়ের সব কাগজপত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি সেটি মানেননি।’

আছমা আক্তার বলেন, ‘সব ইউনিয়নে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোর প্রকল্পে ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্তু আমাদের না জানিয়েই চেয়ারম্যান এই প্রকল্পের নিলাম করেছেন। কোনো কাজ আমরা পাব কি না, তা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যের মর্জির ওপর নির্ভর করে।’

করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান নিজেই কাজ করতে না পারার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘উপজেলার সব কাজ সংসদ সদস্য করেন। পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদ রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখি না। চেয়ারম্যান হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন ছাড়া আমারই তেমন কোনো কাজ নেই, সেখানে ভাইস চেয়ারম্যানদের কাজ তো আরও কম।’

চেয়ারম্যানের কাজ করে দেন স্বামী

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউপিতে নির্বাচিত নারী চেয়ারম্যানদের অনেকেরই বাবা বা স্বামী চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচিত হলেও নারী হওয়ায় কাজ করতে গিয়ে নানা বাধার মুখে পড়ছেন তারা। সব কাজে সব সময় নারী চেয়ারম্যানরা উপস্থিত থাকতে না পারায় কারও কারও স্বামী অলিখিত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন মৌসুমী হক সুলতানা। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা, ভিজিএফের চাল বিতরণসহ বেশির ভাগ কাজ দেখভাল করেন তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারী। মামলায় জড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও স্ত্রীর হয়েই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদে শুধু দাপ্তরিক কাজ করেন মৌসুমী হক।

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব হোসেন বলেন, মৌসুমী হক এখানকার নামেমাত্র চেয়ারম্যান। অফিসের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করা ছাড়া তার কোনো কাজ নেই। সব কাজ তার স্বামী করে। এলাকার গ্রুপভিত্তিক রাজনীতিও তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন।

জানতে চাইলে ফজলুল হক ব্যাপারী বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব তো আমার পালন করার সুযোগ নেই। বড় ইউনিয়ন হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়। তখন সেগুলো আমি মীমাংসা করে দিই। মহিলা মানুষ হিসেবে সে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারি মিটিং-সমাবেশ করে। আমি টিআর, কাবিখার কাজগুলো করি। আমার স্ত্রীর সুনাম হলে তো আমারও সুনাম হয়। সে কারণে আমি তাকে সহযোগিতা করি।’

সব সময় এলাকায় থাকতে পারেন না জানিয়ে মৌসুমী হক সুলতানা বলেন, ‘ওই সময় আমার স্বামী কিছু কাজ করেন। আমরা দুজনে সমন্বয় করেই কাজ করি।’

পদে পদে বাধা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাফিয়া পারভীন। গত এক বছর দায়িত্ব পালনে সরকারদলীয় স্থানীয় রাজনীতিকদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানান তিনি। উন্নয়নকাজ নিয়ে তার এলাকার হোসাইন নামে এক ব্যক্তি দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগকারীকে সতর্ক করে তদন্ত শেষ করেছেন তদন্তকারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

সাফিয়া পারভীন বলেন, নারী হিসেবে জনপ্রতিনিধি হওয়াটাই অনেক চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয়ী হওয়ার পরও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা বাধায় পড়তে হয়।

কী বলছে কর্তৃপক্ষ

নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজে বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের আর কোনো কাজ থাকে না। এ বিষয় দেখবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এসব নির্বাচন কমিশনের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে না।’

এই বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, একটা সময় ছিল যখন দেশের কোথাও নারীর অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সচিব থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের বিষয়ে বিস্তারিত আইন ও বিধিমালায় বলা আছে। ওনারা সেভাবেই কার্যক্রম করেন। তবে সময়ের ব্যবধানে আইনের আওতায় নারীদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় কি না, সেটি নিয়ে ভাবনার সুযোগ রয়েছে।’


রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বিপিএম। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তারা এই শ্রদ্ধা জানান।

প্রথমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। এরপর পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আইজিপি বাহারুল আলম এবং পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জত আলী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) নেতৃবৃন্দও ফুল দিয়ে বীর শহীদদের স্মরণ করেন।


বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধিতে বিজিবির শ্রদ্ধা নিবেদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যশোরের শার্শার কাশিপুর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠের সমাধিস্থলে বিজিবি মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। যশোর ব্যাটালিয়নের (৪৯ বিজিবি) ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে গার্ড অব অনার প্রদান ছাড়াও বীর শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ, বিশেষ মোনাজাত এবং উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

এ সময় যশোর ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর নূর উদ্দিন আহমাদসহ বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের আত্মত্যাগ ও অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিজিবির পক্ষ থেকে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।


বিজয় উদযাপনে সাভারের স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই লাল-সবুজের পতাকা হাতে শিশু থেকে বৃদ্ধ—সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজারো মানুষ শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে সেখানে সমবেত হন।

দিনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদদের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পরই প্রধান ফটক সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপরই ফুল হাতে জনতার বাঁধভাঙা স্রোত প্রবেশ করতে থাকে মূল বেদির দিকে।

অনেকেই দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে এবং নীরবতা পালন করে শহীদদের স্মরণ করেন। আশুলিয়া থেকে পরিবার নিয়ে আসা মাহফুজুর রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই দেশ ও স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী বীরদের শ্রদ্ধা জানাতেই তিনি ছুটে এসেছেন। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শোয়াইব রহমান বন্ধুদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আবেগ ও সম্মান জানাতেই তাদের এই আগমন। বিজয়ের উল্লাসের পাশাপাশি শহীদদের ত্যাগের মহিমাও এদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতি।


হাদিকে হত্যাচেষ্টা: দীর্ঘ পরিকল্পনার ছক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি কয়েক মাসের দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হামলার আগের রাতে মূল অভিযুক্ত ফয়সাল ও আলমগীর সাভারের আশুলিয়ার একটি রিসোর্টে অবস্থান করেন। সেখানে তাদের মনোরঞ্জনের জন্য নারী সঙ্গীর ব্যবস্থাসহ বিনোদনের আয়োজন করেছিল মাস্টারমাইন্ডরা। পরদিন শুক্রবার সকালে তারা ঢাকায় ফিরে জুমার নামাজের পর হাদির ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান। পল্টন থানায় দায়ের করা এই মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে গতকাল শুটার ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু এবং রিসোর্টে থাকা বান্ধবী মারিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব, যাকে ভিডিও ফুটেজে হাদির আশেপাশেই দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে, হামলাকারীদের সীমান্ত পার হতে সহায়তার অভিযোগে শেরপুরের সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি ও পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ডিবি।

এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার ও সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে এবং তিনি হাদির সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।


জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা, ৩১ বার তোপধ্বনিতে বিজয় দিবসের সূচনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সূর্যসন্তানদের স্মরণ করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ড. ইউনূস সেখানে উপস্থিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

এর আগে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি রেজিমেন্ট ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে। দেশজুড়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের বিজয় দিবস।


বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি সেখানে উপস্থিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

এর আগে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি রেজিমেন্ট ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে।


আজ মহান বিজয় দিবস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন।
১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কবল থেকে দেশ মুক্ত হওয়ার এই দিনটিকে আজ জাতি বিজয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন করছে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার মুহূর্তকে স্মরণ করে বিজয় দিবস উদ্যাপন শুরু হবে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এছাড়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, সর্বস্তরের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
দিনটি উপলক্ষে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়।
ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো ইতোমধ্যেই জাতীয় পতাকাসহ ব্যানার, ফেস্টুন এবং রঙিন পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস দেশব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়া হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে শহরের তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে পৃথকভাবে ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন করবে। সেখানে একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শো আয়োজন করা হবে।
এছাড়া, ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর উপলক্ষে সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবে। যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হবে, যা একটি নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করবে।
দেশের অন্যান্য শহরেও সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা একই রকম ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শনী পরিচালিত হবে। এর পাশাপাশি, পুলিশ, বিজিবি এবং আনসার বাহিনী দেশব্যাপী ব্যান্ড শো আয়োজন করবে। সমস্ত অনুষ্ঠান জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের ওপর আবৃত্তি, প্রবন্ধ রচনা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং দিবসটি উদ্যাপনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
আজ বিকেল ৩টা থেকে নগরীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় দিবসের গান পরিবেশিত হবে এবং নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
রাষ্ট্রপতি আজ বিকেলে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা জানাবেন। এছাড়াও, মহানগর, জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এই উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
সারাদেশের সিনেমাহলগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র এবং দেশের অডিটোরিয়াম এবং উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।
সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত জাদুঘরগুলো প্রবেশ ফি ছাড়াই সারাদিন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, অন্যদিকে দেশের সকল বিনোদন কেন্দ্রে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকবে।


সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে : ড. সালেহউদ্দিন

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে একটি অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সময়মতো ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করেছে।

বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির দুইটি পৃথক বৈঠকে সভাপতিত্ব করার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতিমূলক কাজ খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করেছে। ভোটার তালিকা সময়মতো প্রস্তুত ও হালনাগাদ করা হয়েছে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এখন মূল বিষয় হলো সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা।’

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সময়মতো ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংশোধন করেছে এবং নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে, যা এখন সে অনুযায়ী বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে।

ড. সালেহউদ্দিন আরও বলেন, মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে নির্বাচন বাস্তবায়ন করা হবে এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকা তুলনামূলকভাবে বেশি সংবেদনশীল, সেখানে নিরাপত্তা ও অন্যান্য ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। আর কম সংবেদনশীল এলাকায় কী ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা কমিশনের জানা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক মতভেদ তিনি দেখছেন না এবং দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে তিনি ‘অনুকূল’ বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তফসিল নিয়ে কেউ আপত্তি তোলেনি। বরং সবাই সর্বসম্মতভাবে বলেছে যে তফসিলটি উপযুক্ত। এটিই প্রমাণ করে যে সময়সূচি নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই।’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সার্বিক অবস্থা সন্তোষজনক রয়েছে এবং নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তা আরও জোরদার করা হবে।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে : ড. সালেহউদ্দিন

সরকারের ঋণ সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, বর্তমান প্রশাসন মূলত পূর্ববর্তী সরকার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য ঋণ নিয়েছে।

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে এই প্রকল্পগুলোর অনেকগুলো ইতোমধ্যেই ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে, যদিও সেগুলো পরিত্যাগ করলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে।

ড. সালেহউদ্দিন আরও বলেন, যদি আমরা এই প্রকল্পগুলোকে মাঝপথেই বন্ধ করে দেই, তাহলে এটি অর্থনীতিবিদদের মতে ‘ডেডওয়েট লস’-এর সমান হবে, যার অর্থ ইতোমধ্যে ব্যয় করা অর্থ সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যাবে। এটি বিবেচনা করে, আমরা বেশ কয়েকটি চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘সরকার খুব কম নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকার কয়েক বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে, যা আর্থিক শৃঙ্খলার প্রতি তার প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’

নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যয় সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর, নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তহবিলের জন্য বিস্তারিত দাবি জমা দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, তাদের অনুরোধ আমাদের কাছে এলে, আমরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এবং তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।


হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এক অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে তা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করেছে প্রসিকিউশন।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, ‘গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে দুটি সাজা দেওয়া হয়। একটি আমৃত্যু কারাদণ্ড, আরেকটি মৃত্যুদণ্ড। আজ আমরা আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করেছি। আপিলে আমরা মোট আটটি যুক্তি (গ্রাউন্ড) দিয়েছি।’

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ১৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে দণ্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি শহীদদের পরিবার এবং আহতদেরও যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামীম। এছাড়া প্রসিকিউটর বি.এম. সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন। রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে রয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পরিবার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, এবং দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

মামলার অভিযোগ গঠন করা হয় ২০২৫ সালের ১০ জুলাই। একপর্যায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হন।

২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও সরকারি প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশের মাধ্যমে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার চলছে।


বেনাপোলে ৩ মাস পর ভারতের পেঁয়াজ আমদানি শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

দীর্ঘ ৩ মাস পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে পেঁয়াজের এ চালান।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা দুটার টার দিকে মেসার্স এইচকেএ এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরা ও মেসার্স সাবাহ এন্টারপ্রাইজ, যশোরের পেঁয়াজ আমদানির এ চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থেকে আমদানি পেঁয়াজ ছাড় করা প্রতিষ্ঠান রয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম রয়েল।

তিনি জানান, আপাতত এ চালানে ৩টি ট্রাকে ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।

সরেজমিনে সোমবার সকালে বেনাপোল কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি মুড়ি কাটা পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে ১০৫ টাকা এবং দেশি শুকনো মানের পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভারত থেকে আমদানির খবরে মোকামে দাম কমে যাওয়ার কারণে খুচরা বাজারেও কমেছে দাম বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এটি অল্প পরিসরে। প্রতিদিন ২০০ জন আমদানিকারক আইপি পাবেন এবং একজন আমদানিকারক ৩০-৬০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ পেঁয়াজ আমদানির জন্য আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। তাহলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে।এদিকে আমদানির খবরে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে সাধারণ ক্রেতারা মনে করছেন। বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানান আজ বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ৯০ মেট্রিক টন পেয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আরো কিছু পেঁয়াজের গাড়ি ওপারের পেট্রোপো বন্দরে আছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমেয বাংলাদেশে ঢুকবে। বন্দর থেকে পেঁয়াজের চালান দ্রুত খালাসের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


অবৈধ ড্রেজারে ধ্বংসের মুখে তিন ফসলি জমি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকুট ইউনিয়নের ডালপা মৌজার বারেশ্বর বিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে উর্বর তিন ফসলি কৃষিজমি ধ্বংসের মুখে পড়ছে, সরে যাচ্ছে মাটির উপরের স্তর এবং ক্ষতির শিকার হচ্ছেন আশপাশের জমির মালিক ও স্থানীয় কৃষকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বারেশ্বর বিলে বর্তমানে দুটি ড্রেজার গর্ত সক্রিয় রয়েছে, যেগুলো প্রায় ২০০ গজ অন্তরে অবস্থিত। প্রতিটি গর্ত প্রায় ৩০০ শতক জমি নিয়ে খনন করা হয়েছে। এর ফলে মোট প্রায় ৬০০ শতক জমির স্বাভাবিক গঠন সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। একই সঙ্গে বিলের পানি ধারণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থায় মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে পাশের কৃষিজমিতেও।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ড্রেজার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন ও নাসির সরকার দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এ বিলে ড্রেজার চালিয়ে মাটি উত্তোলন করে আসছেন। প্রশাসনের কার্যকর নজরদারি না থাকায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জুনায়দ আহম্মদ বলেন, ‘বাঙ্গরা বাজার থানা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও ড্রেজারের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দ্রুত এসব ড্রেজার স্থায়ীভাবে বন্ধ না করা হলে আমাদের পূর্বপুরুষের জমিগুলো ড্রেজারের গর্তে বিলীন হয়ে যাবে।’

স্থানীয় কৃষকরাও আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, এভাবে অবৈধ ড্রেজার চলতে থাকলে খুব শিগগিরই বারেশ্বর বিলে চাষাবাদ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে কৃষকদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে এবং এলাকার কৃষিনির্ভর অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ড্রেজার ব্যবসায়ী নাসির সরকার বলেন, ‘তিনি প্রায় ১০ বছর আগে ড্রেজার চালাতেন, বর্তমানে আর ড্রেজার পরিচালনা করছেন না।’ ওই স্থানে তিনি একটি ফিসারিজ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও দাবি করেন। ড্রেজার পুনরায় স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশপাশের জমির মালিকদের আপত্তি ও অভিযোগ থাকায় আপাতত সেখানে আর ড্রেজার বসানো হবে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর কোরবানপুর এলাকায় ইতোমধ্যে ২৫-৩০ বার অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযানে যাই। ড্রেজারগুলো বিলের মাঝখানে থাকায় অপরাধীদের পাওয়া কঠিন হয়, তাই আমরা ড্রেজার অপসারণ করি। ড্রেজারে মাটি উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে জমির মালিকদের নিয়মিত মামলা করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’


নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সতর্কতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় গণভোটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, সমগ্র বাংলাদেশেই মার্কিন নাগরিকদের এই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং একটি জাতীয় গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, নির্বাচনের তারিখ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের মাত্রা ও তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভগুলোও যেকোনো সময় সংঘাতপূর্ণ ও সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

এমতাবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস। নির্দেশনায় নাগরিকদের বড় কোনো ভিড় বা বিক্ষোভ সমাবেশ এড়িয়ে চলতে, নিজের আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সজাগ থাকতে এবং পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্যের জন্য স্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পাশে রেখেই তার পদত্যাগ চাইলেন ডাকসু ভিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে পাশে দাঁড় করিয়েই তার পদত্যাগ চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই দাবি জানান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দাবি পূরণ ও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নন, ব্যর্থতার দায় নিয়ে আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও পদত্যাগ করতে হবে।

ব্রিফিংয়ে সাদিক কায়েম সাম্প্রতিক সময়ে শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর বার্তা দেন। তিনি দাবি করেন, এই হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি খতিয়ে দেখে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই হামলাকে সমর্থন দিয়েছে এবং ‘জুলাই বিপ্লবীদের’ হত্যার পথ তৈরি করেছে, সেই ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ডাকসু ভিপি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় কার্যকর করার দাবি জানান। এছাড়া ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার কথাও বলেন তিনি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘নিষিদ্ধ লীগের’ বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে এবং তাদের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের আর কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না বলে তিনি সতর্ক করেন।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সাদিক কায়েম বলেন, এসব দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না ঘটলে তিন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। এ সময় পাশে থাকা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ‘সম্পূর্ণ যৌক্তিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন।


banner close