শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

নারী জনপ্রতিনিধি পদ যেন ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’

হাসান মেহেদী
প্রকাশিত
হাসান মেহেদী
প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:৫১

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে, ‘একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।’

বিধিমালায় এমন ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তৃণমূলের নারী জনপ্রতিনিধিদের বাস্তব অবস্থার প্রতিধ্বনি শোনা গেল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগমের কণ্ঠে। চার বছর হলো নির্বাচিত হয়েছেন; অথচ এখন পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে বসার একটা জায়গাও পাননি তিনি। তার অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই এতদিন কোনো কাজও জোটেনি। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি এই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।

নিজের পদ নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ার‌ম্যান মাছুমা আক্তারের কণ্ঠেও ফুটে উঠল আক্ষেপ- ‘আসলে এই পোস্ট তৈরির কোনো মানে হয় না। এটি শুভঙ্করের ফাঁকি! মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কোনো স্বাক্ষর ক্ষমতা নেই। সামান্য পরিমাণ ভাতা দেয়া হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেয়া হলেও গাড়ি সুবিধা না থাকায় যেতে পারি না। বরাদ্দ না থাকায় অনুষ্ঠানে গিয়েও কিছু দিতে পারি না। অথচ তারাই আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।’

এ রকম নানা অভিযোগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারী জনপ্রতিনিধিদের। তারা বলছেন, আইন ও বিধিমালায় নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের পরিধি নির্ধারণ করা আছে। এর পরও দেশের বেশির ভাগ নারী জনপ্রতিনিধির আসলে কোনো কাজ নেই, দাপ্তরিক কাজে আনুষ্ঠানিক মতামত দেয়া ছাড়া। এ নিয়ে আপত্তি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে আইনে নারী জনপ্রতিনিধিদের বেশ কিছু ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একই অবস্থা স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আওতাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও।

নারী জনপ্রতিনিধি কতজন

২০২১ সালে ৪ হাজার ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৪ হাজার ১১৪টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। তবে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, সেই তথ্য কমিশনের কাছে নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, অন্তত ৫০টি ইউপিতে নারীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪১ জন আওয়ামী লীগ, একজন জাতীয় পার্টির এবং অন্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ২৬ জন নারী চেয়ারম্যান জয়ী হয়েছিলেন।

উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এবং জাতীয় তথ্য বাতায়নে বলা আছে- ‘একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান, একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রত্যেক ইউপির চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী সদস্যগণ এবং উপজেলার এলাকাভুক্ত পৌরসভা থাকলে তার মেয়রকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হবে।

জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন উপজেলা আছে ৪৯৫টি আর উপজেলা পরিষদ আছে ৪৯২টি এবং ইউনিয়ন পরিষদ আছে ৪ হাজার ৫৭১টি। কাজেই এসব পরিষদে কমপক্ষে ৪৯২ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রতি ইউপিতে সংরক্ষিত আসনে তিনজন করে মোট ১৩ হাজার ৭১৩ জন নারী ইউপি সদস্য রয়েছেন। এর বাইরে সংরক্ষিত আসন ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। তাই দেশে অন্তত ১৫ হাজার নারী জনপ্রতিনিধি তো আছেনই, সে হিসাব প্রায় স্পষ্ট। কিন্তু দৈনিক বাংলার অনুসন্ধান বলছে, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা এই বিপুলসংখ্যক নারী জনপ্রতিনিধিকে বানিয়ে আসলে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ বানিয়ে বসিয়ে রেখেছে।

অভিযোগ, আক্ষেপ, হতাশা

নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নারীর সংখ্যা বাড়লেও তাদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে না। সরকার আইন করে জনপ্রতিনিধিদের কাজ ভাগ করে দিলেও সেটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।

তারা বলছেন, নির্বাচিত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারী জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় রাজনীতির নানা সমীকরণ, পুরুষ চেয়ারম্যানদের আধিপত্য ও বাধায় দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্যদের বেশির ভাগই স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় দায়িত্ব পালনে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের ওপরই তাদের নির্ভর করতে হয়। আইনের বিধিমালায় থাকা দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুই জানেন না সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্যরা।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ৮ নম্বর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য নাজমিন নাহার বলেন, ‘নারী সদস্য হিসেবে তেমন কোনো কাজ আমাদের থাকে না। এলাকার মানুষ মেম্বার হিসেবে জানে, সম্মান করে এটাই পাওয়া। ইউনিয়নের সব কাজ চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যরাই করেন।’

স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের নারী জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের অন্তত ২০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বার-চেয়ারম্যানের অবস্থা নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয় দৈনিক বাংলার পক্ষ থেকে। বিধি অনুযায়ী, ১৭টি স্থায়ী কমিটির কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের। দেখা গেছে, এসব কমিটিতে নাম থাকলেও কাজের বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয় না। টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় যে বরাদ্দ আসে তার ২০ শতাংশ পায় উপজেলা পরিষদ। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ৮ শতাংশ, ইউএনও ৬ শতাংশ এবং দুজন ভাইস চেয়ারম্যান বাকি ৬ শতাংশ বরাদ্দ পান। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ওই বরাদ্দ দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করছেন নারী জনপ্রতিনিধিরা। তারা আরও বলছেন, একই দলের অনুসারী না হলে বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দও ঠিকমতো পান না উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা।

বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের নারী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পরও স্থানীয় রাজনীতিবিদের কারণে তাদের কোণঠাসা হয়ে থাকতে হয়। পরিষদের পুরুষ সদস্যরাও সব সময় সহযোগিতা করেন না। উন্নয়নমূলক কাজে পুরুষ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হলে বরাদ্দকৃত অর্থের হিসাব ঠিকমতো দেন না। তখন এর দায় চেয়ারম্যানের ওপর বর্তায়।

এদিকে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যদের দাবি, তাদের ক্ষমতাও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ইচ্ছার কাছে জিম্মি। বেশির ভাগ নারী সদস্য স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কেও জানেন না। এই সুযোগে পুরুষ মেম্বাররাও তাদের ওপর ছড়ি ঘোরান। যার কারণে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের সব সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয়া ছাড়া তাদের কিছু করার থাকে না।

আইন অনুযায়ী কাজ করতে না পেরে হতাশার কথা জানিয়েছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১৫ বছর ধরে নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের জন্য কিছুই করতে পারি না। ১৫ বছরে পাঁচটি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গেও আমি যুক্ত থাকতে পারিনি। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদ শুধুই অলংকার হিসেবে রাখা হয়েছে।’

আইনে যা আছে

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বের বিষয়ে বলা হয়েছে, একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।

এ ছাড়া পরিষদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা ও মাতৃমঙ্গল সেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া; স্যানিটেশন ও সুপেয় পানীয় জলের সরবরাহের ব্যবস্থা; মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নে করণীয় চিহ্নিত; কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন ও বিকাশে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ; আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক ও বাল্যবিবাহ রোধে জনমত গড়ে তোলা; গবাদিপশু এবং মৎস্যসম্পদের উন্নয়ন; সমবায় সমিতি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকি; সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশ নেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব ও সুপারিশ দেয়ার বাইরেও সরকার ও চেয়ারম্যান কোনো কাজ দিলে সেগুলো করতে হবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের।

বিধিমালায় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলির বিষয়ে বলা হয়েছে, ওয়ার্ডের সভায় উপস্থিত থেকে তারা উপদেষ্টার কাজ করতে পারবেন। পরিষদের ১৩টির বেশি স্থায়ী কমিটির মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্প যেমন- টেস্ট রিলিফ (টিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা), বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) উন্নয়ন বরাদ্দ, থোক বরাদ্দসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হবেন। তিনজন প্যানেল চেয়ারম্যানের মধ্যে কমপক্ষে একজন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের মধ্য থেকে হতে পারবেন।

এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যরা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়নকাজের তদারকি, মহিলাদের বৃত্তিমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক ও অ্যাসিড নিক্ষেপ নিরোধ, বাল্যবিবাহ রোধসহ বিবাহ নিবন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ; গ্রাম আদালতের বিচারক প্যানেলে থাকা, ওয়ার্ডের জনগণের সম্পত্তি সংরক্ষণসহ ২১টি কাজের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে।

নামেই উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

উপজেলার নারী উন্নয়ন ফোরামে পদাধিকার বলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সভাপতি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্যরাও এই ফোরামের সদস্য। নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা নারী উন্নয়ন ফোরামের বিভিন্ন বরাদ্দ আটকে রাখেন।

তারা আরও অভিযোগ করছেন, ভিজিএফের চাল; মাতৃত্বকালীন, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বরাদ্দেও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের সুপারিশ রাখা হয় না। নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের পরিষদের মাসিক সভায় নিয়মিত ডাকা হয় না। অনেক সময় ডাকলেও তাদের কথা আমলে নেয়া হয় না। উপজেলার বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ৩ শতাংশ নারী উন্নয়ন ফোরামের জন্য বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তা ছাড় করেন না। প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াতের জন্য গাড়ি চাইলেও পান না নারী জনপ্রতিনিধিরা। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানকে সেই দায়িত্ব দেয়া হয়।

দল ও ক্ষমতার হাতে জিম্মি

নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো কাজ না পেয়ে বেশির ভাগ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হতাশ। সরকার নারীদের জন্য অলংকারিক হিসেবে এই পদ সৃষ্টি করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার আক্ষেপও ঝরেছে তাদের কণ্ঠে।

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বলেন, ‘পাংশা উপজেলায় সব কাজের নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম। উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজ থেকে শুরু করে সব বরাদ্দ তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। তার কথামতো না চলায় দায়িত্ব নেয়ার প্রায় চার বছর হতে চললেও আমাকে উপজেলা পরিষদের কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। কক্ষ না থাকায় পরিষদের কেরানির কক্ষে গিয়ে মাঝেমধ্যে বসি। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়া হয় না। কোনো বরাদ্দ এলে সেটিও ঠিকমতো দেয়া হয় না। এভাবেই সময় পার করছি। বাকি সময়টা এভাবেই হয়তো পার হয়ে যাবে।’

ওই জনপ্রতিনিধির অভিযোগের বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে দায়িত্ব পাওয়ার আগে থেকেই তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। আগে থেকে উনি যেই কক্ষে বসতেন, এখনো সেভাবেই আছেন বলে জানি। উপজেলায় নতুন ভবন হওয়ার পর ওইভাবে কারও নামে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আর অন্যান্য বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। উপজেলার সব বরাদ্দই জনপ্রতিনিধিরা পেয়ে থাকেন।’

এমপি জিল্লুল হাকিমকে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) একাধিকবার কল দেয়া হলে প্রতিবারই তিনি কেটে দেন।

নারী বলেই পাত্তা মেলে না!

বোয়ালমারী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হজে যাওয়ার পর এক মাসের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই সময় নিয়মিত কাজে স্বাক্ষর করা ছাড়া অন্য কিছু করতে পারেননি।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন, ‘সম্প্রতি ছয় মাস মেয়াদি মাতৃত্বকালীন ভাতা এসেছে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে। প্রতি ইউনিয়ন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০টি করে কার্ড চেয়ারম্যানরা পেয়েছেন। আমি একজন গর্ভবতী মায়ের সব কাগজপত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি সেটি মানেননি।’

আছমা আক্তার বলেন, ‘সব ইউনিয়নে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোর প্রকল্পে ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্তু আমাদের না জানিয়েই চেয়ারম্যান এই প্রকল্পের নিলাম করেছেন। কোনো কাজ আমরা পাব কি না, তা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যের মর্জির ওপর নির্ভর করে।’

করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান নিজেই কাজ করতে না পারার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘উপজেলার সব কাজ সংসদ সদস্য করেন। পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদ রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখি না। চেয়ারম্যান হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন ছাড়া আমারই তেমন কোনো কাজ নেই, সেখানে ভাইস চেয়ারম্যানদের কাজ তো আরও কম।’

চেয়ারম্যানের কাজ করে দেন স্বামী

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউপিতে নির্বাচিত নারী চেয়ারম্যানদের অনেকেরই বাবা বা স্বামী চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচিত হলেও নারী হওয়ায় কাজ করতে গিয়ে নানা বাধার মুখে পড়ছেন তারা। সব কাজে সব সময় নারী চেয়ারম্যানরা উপস্থিত থাকতে না পারায় কারও কারও স্বামী অলিখিত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন মৌসুমী হক সুলতানা। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা, ভিজিএফের চাল বিতরণসহ বেশির ভাগ কাজ দেখভাল করেন তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারী। মামলায় জড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও স্ত্রীর হয়েই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদে শুধু দাপ্তরিক কাজ করেন মৌসুমী হক।

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব হোসেন বলেন, মৌসুমী হক এখানকার নামেমাত্র চেয়ারম্যান। অফিসের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করা ছাড়া তার কোনো কাজ নেই। সব কাজ তার স্বামী করে। এলাকার গ্রুপভিত্তিক রাজনীতিও তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন।

জানতে চাইলে ফজলুল হক ব্যাপারী বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব তো আমার পালন করার সুযোগ নেই। বড় ইউনিয়ন হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়। তখন সেগুলো আমি মীমাংসা করে দিই। মহিলা মানুষ হিসেবে সে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারি মিটিং-সমাবেশ করে। আমি টিআর, কাবিখার কাজগুলো করি। আমার স্ত্রীর সুনাম হলে তো আমারও সুনাম হয়। সে কারণে আমি তাকে সহযোগিতা করি।’

সব সময় এলাকায় থাকতে পারেন না জানিয়ে মৌসুমী হক সুলতানা বলেন, ‘ওই সময় আমার স্বামী কিছু কাজ করেন। আমরা দুজনে সমন্বয় করেই কাজ করি।’

পদে পদে বাধা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাফিয়া পারভীন। গত এক বছর দায়িত্ব পালনে সরকারদলীয় স্থানীয় রাজনীতিকদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানান তিনি। উন্নয়নকাজ নিয়ে তার এলাকার হোসাইন নামে এক ব্যক্তি দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগকারীকে সতর্ক করে তদন্ত শেষ করেছেন তদন্তকারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

সাফিয়া পারভীন বলেন, নারী হিসেবে জনপ্রতিনিধি হওয়াটাই অনেক চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয়ী হওয়ার পরও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা বাধায় পড়তে হয়।

কী বলছে কর্তৃপক্ষ

নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজে বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের আর কোনো কাজ থাকে না। এ বিষয় দেখবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এসব নির্বাচন কমিশনের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে না।’

এই বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, একটা সময় ছিল যখন দেশের কোথাও নারীর অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সচিব থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের বিষয়ে বিস্তারিত আইন ও বিধিমালায় বলা আছে। ওনারা সেভাবেই কার্যক্রম করেন। তবে সময়ের ব্যবধানে আইনের আওতায় নারীদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় কি না, সেটি নিয়ে ভাবনার সুযোগ রয়েছে।’


শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল সোমবার

* জুলাই-আগস্টের গণহত্যা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগামী সোমবার (১২ মে) তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার চিফ প্রসিকিউটর বরাবরে দাখিল করবে আশা করছি। তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, অর্থাৎ ‘ফরমাল চার্জ’ দাখিলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের দায়ে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে আনুষ্ঠানিক বিচারের জন্য ফরমাল চার্জ চলতি সপ্তাহেই দাখিল করা হবে এবং এর মাধ্যমে জুলাই গণহত্যার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।


আ.লীগ নিষিদ্ধকরণ ও সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ যাওয়া নিয়ে আইন উপদেষ্টার বক্তব্য

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় এলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে।’

শুক্রবার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ জঘন্য মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছে। আমি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই খুনের মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর। যা কোনোভাবেই আমার আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছেন নিম্নআদালতের বিচারকরা। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আদালতের বিচারকদের দায়িত্ব বিমানবন্দর পাহারা দেওয়া না বা কারো চলাচলে বাধা দেওয়া না।’

ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমার উত্থাপিত খসড়ার আমিই বিরোধিতা করব এটা কিভাবে সম্ভব? উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোন উপদেষ্টা কী ভূমিকা রেখেছেন এনিয়ে আমাকে, ছাত্র উপদেষ্টাদের বা অন্য কাউকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন।’

তিনি বলেন, সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় তার দায় দায়িত্ব আমাদের প্রতিটি উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নেই। তবে পদ্ধতি নিয়ে সবার নিজস্ব মত থাকতেই পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারবো। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোনো সমস্যা না।’ আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় আসলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি। ইনশাল্লাহ।’


নির্বাচিত নতুন পোপ, রবার্ট প্রভোস্ট

আমেরিকান কার্ডিনাল রবার্ট প্রভোস্ট। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

রোমান ক্যাথলিক গির্জার নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন আমেরিকান কার্ডিনাল রবার্ট প্রভোস্ট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ভ্যাটিকানের কনক্লেভে কার্ডিনালদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছেন তিনি।

নিজের ক্যারিয়ারে পেরুতে ধর্মপ্রচার করে বেড়িয়েছেন রবার্ট প্রভোস্ট। এছাড়া ভ্যাটিকানের প্রভাবশালী বিশপস অফিসেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্যাথলিক গির্জার দুই হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

৬৯ বছর বয়সী এই পোপ নতুন নাম নিয়েছেন লিও চতুর্দশ।

এরআগে ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের চিমন দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হওয়ায় সবাই জেনেছেন যে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন পোপকে স্বাগত জানাতে ভ্যাটিকান সিটিতে বিপুল মানুষের ভিড় জমেছে।

পোপ হওয়ার যোগ্য ১৩৩ কার্ডিনালকে নিয়ে গঠিত কলেজ অব কার্ডিনালস। কোনো ধরনের মনোযোগ নষ্ট হওয়া ছাড়াই যাতে প্রার্থনা ও ধ্যান করতে পারেন, পাশাপাশি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে কারণে ভ্যাটিকানের ভেতরে কার্ডিনালদের আলাদা করে রাখা হয়েছে।

নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। ভোট হওয়ার পর একটি বিশেষ স্টোভে ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অর্থা পোপ নির্বাচিত হননি। আর সাদা ধোঁয়া বের হলে বুঝতে হবে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।

পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল আছেন, যারা পোপ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

আধুনিক সময়ে প্রথম দিনেই পোপ নির্বাচিত হওয়ার নজির নেই। তবে দ্বিতীয় দিনে নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকে বেশি। ২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিস এবং ২০০৫ সালে পোপ বেনেডিক্ট দ্বিতীয় দিনেই নির্বাচিত হয়েছিলেন।

নির্বাচনে এবার অংশ নিয়েছেন ৭০ দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এটি পোপ ফ্রান্সিসের অধীনে গির্জার বৈশ্বিক বিস্তারের ইঙ্গিত বহন করে।


আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লোকে লোকারণ্য শাহবাগ

বিএনপির অপেক্ষায় সারজিস
আপডেটেড ৯ মে, ২০২৫ ২০:১১
ঢাবি প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্লাটফর্মের নেতাকর্মীরা।

আজ শুক্রবার পৌনে পাঁচটায় শুরু হওয়া এই অবরোধ এখনো চলছে। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে শাহবাগ এরিয়া। সবার মুখে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি।

এই অবরোধে যোগ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াত ইসলাম, ছাত্র শিবির, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, সদ্য আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠন।

তবে এর মধ্যেও কিছুটা শূন্যতা অনুভব করছে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সেই শূন্যতা বিএনপির। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম বলেন, বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠন ব্যতীত সকল রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে।

তিনি লিখেন, বিএনপি আসলে জুলাইয়ের ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়। আজকের এই শাহবাগ ইতিহাসের অংশ এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির মানদণ্ড।

এর আগে গতকাল রাত দশটায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার সাথে সংহতি জানিয়ে সেখানে বিএনপি এবং বামপন্থী সংগঠন ছাড়া সেখানে প্রায় সব দল ও সংগঠন উপস্থিত হয়ে সংহতি জানায়।

এরপর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশে মিন্টু রোড়ের ফোয়ারার সামনে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হলে বেলা বারোটার দিকে যমুনার সামনে থেকে সবাই মঞ্চের সামনে চলে আসেন। জুমার নামাজের পর সেখানেই জমায়েত শুরু হয়। মঞ্চে উপস্থিত হয়ে ইসলাম ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনেতিক দল বক্তব্য প্রদান করেন। সাড়ে চারটার দিকে সর্বশেষ বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন শেখ হাসিনা মোদির বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। দেশের হিস্যা জনগণের হাতে তুলে দিতে চাই আমরা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি ভাইরাস নিয়ে আমরা এক মিনিটও বেঁচে থাকতে চাই না। আমাদের একজনেরও যদি শেষ রক্তবিন্দু থাকে তারপরও আমরা এটির জন্য লড়াই চালিয়ে যাবো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে যদি এক বছরও লাগে আমরা এই স্থান ছাড়বো না। বাংলাদেশ উইথ আউট আওয়ামী লীগ যেদিন হবে সেদিনই বাংলাদেশের সম্মৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা শুরু হবে।

এরপর তিনি শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন। বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কর্ণকুহরে আমাদের দাবি পৌঁছছে না। আমরা এখন শাহবাগ অবরোধ করবো। এরপর সেখানেই চূড়ান্ত ফয়সালা হবে।

হাসনাতের এই ঘোষণার পর মিন্টু রোড়ের সামনে থেকে শাহবাগের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বেলা পৌনে পাঁচটায় শুরু হওয়া এই অবরোধ ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা অবস্থায় চলছে। এতে আশেপাশের সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ ভিন্ন রাস্তায় এসব যানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।


বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংক্রান্ত জরুরি ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাকিস্তানের আকাশসীমা পরিহার করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এমতাবস্থায় বিমানের টরেন্টো, রোম এবং লন্ডনগামী ফ্লাইট সমূহের সময়সূচিতে পরিবর্তন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার থেকে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর টরেন্টো, লন্ডন এবং রোম ফ্লাইট সমূহের ফ্লাইটের পরিবর্তিত সময়সূচি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-টরেন্টো ফ্লাইট বিজি ৩০৫ বা ৩০৬ ঢাকা থেকে প্রস্থান ৩ টা ৪৫ মিনিটের পরিবর্তে ৩ টা (৪৫ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে)। তবে টরেন্টো থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

ঢাকা লন্ডন ফ্লাইট বিজি ২০১ বা ২০২ ঢাকা থেকে প্রস্থান ৭ টা ৪০ মিনিটের পরিবর্তে ৭ টা (৪০ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে) এবং লন্ডন থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

শুধু বৃহস্পতিবারের জন্য ঢাকা-লন্ডন, ঢাকা থেকে প্রস্থান ৮ টা ৫০ মিনিটের পরিবর্তে ৮ টা ১০ মিনিটে (৪০ মিনিট অগ্রগামী করা হয়েছে)।

এদিকে ঢাকা-রোম ফ্লাইট বিজি ৩৫৫ বা ৩৫৬ ঢাকা থেকে প্রস্থান ১১ টা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ১০ টা ৪৫ মিনিট এবং রোম থেকে প্রস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

যাত্রীদের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত সময় অনুসারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর চেক-ইন কাউন্টারে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। যাত্রীদের এই সাময়িক অসুবিধার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।


সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশন্ড প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবি-তে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়িয়েছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষন-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রু স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪ মে থেকে পরবর্তী ৬০ দিন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

সমগ্র বাংলাদেশে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অধীন অপরাধগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র বাহিনীকে (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর পর থেকে এই মেয়াদ দুই মাস করে বাড়াচ্ছে সরকার।


দেশের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, রাজারহাট, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল এবং পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর বিভাগের ডিমলায়, ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ ভোর ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ।

ঢাকায় বাতাসের গতি পশ্চিম অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৯ মিনিটে।


এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।

তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে ‘কয়েকটি কথা’ শিরোনামে আজ একটি পোস্টে এই কথা বলেছেন।

তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘একটি দলের এক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না, এটা বলে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা কথা। ক্যাবিনেটে প্রথম মিটিং ছিল আমার। আমি স্পষ্টভাবে এই আইনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল স্বভাবতই। দল হিসেবে বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলে একজন উপদেষ্টার জবাব ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মত পশ্চাৎপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কি-না। এই যুক্তি যিনি দিয়েছিলেন, একটি দলের এক্টিভিস্টরা আজ সমানে তার পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রদের কুপোকাত করতে। অথচ, উনার সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। মিছে বিরোধ লাগানোর অপচেষ্টা করে কোনো লাভ নেই।

বলে রাখা ভালো, দু’জন আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের উপদেষ্টা (একজন ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন) ও আমাদের বক্তব্যের পক্ষে ছিলেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টাও পক্ষে ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কথা হয়েছে। দল হিসেবে লীগের বিচারের প্রভিশন অচিরেই যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন উক্ত উপদেষ্টা। উনাকে ধন্যবাদ।

মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাস টালবাহানা নিয়ে আমরা বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার প্রাক্কালে আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। সমস্যা নেই, আমরাও চাই সবাই স্বীকৃত হোক। কিন্তু, এখন সেটাও হতে দিবেন না। দোষ আমাদেরও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।

পুনশ্চ: আমরা নির্বাচন পেছাতে চাইনা। ডিসেম্বর টু জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।

আপনারা যদি মনে করেন, ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারে না বরং এখান থেকে ওখান থেকে অহি আসলে আমরা কিছু করি। তাহলে আপনারা হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো ছাত্রদের ডিলেজিটিমাইজ করার পরিকল্পনায় আছেন। সেই আগস্ট থেকেই আমরা জাতির জন্য যা ভালো মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। বরং, উক্ত দলকেই আমরা বেশি ভরসা করেছি। সবার আগে উনাদের সাথেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ!

আমরা উক্ত দলকে বিশ্বাস করতে চাই। উক্ত দলের প্রধানকে বিশ্বাস করতে চাই। উনি আমাদের বিশ্বাসের মূল্য দিয়ে লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও প্রাগমাটিক ভূমিকা রাখবেন বলেই আস্থা রাখি। উক্ত দলকে নিয়ে কে কি বলবে জানি না কিন্তু আমরা চাই উক্ত দল ছাত্রদের সাথে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানের শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐকমত্যের নেতৃত্ব দিক। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তি হিসাবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উনাদের সাথে চলবেন।

ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এই প্রজন্মকে হতাশ করবেন না।‘এই প্রজন্ম দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।’

মাহফুজ আলম ২০২৪ এর জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির একজন সমন্বয়ক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মাহফুজ আলম।


আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে : সরকারের বিবৃতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

সকলকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের পক্ষে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে ক্ষোভের বিষয়ে সরকার অবগত। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে।


সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: তদন্ত কমিটি গঠন

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) এই কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল হোসেন।

হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এছাড়া এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে সকালেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুইবার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদ বুধবার শেষ রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আব্দুল হামিদকেও আসামি করা হয়েছে।


লালদিয়ায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে: বিডা চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

লালদিয়ার চরে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনালে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বার্ষিক এফডিআই ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। একটি প্রকল্প থেকেই যদি ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসে, তবে তা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বিডা’র পক্ষ থেকে আমরা এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর ও বে টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে তিনি একথা বলেন।

এরপর তিনি চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা রাজনৈতিক রাজধানী আর চট্টগ্রাম হবে আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী। বাংলাদেশের যে সম্পূর্ণ উন্নয়ন লক্ষ্যের দিকে আমরা এগুচ্ছি, তার মূল অংশ চট্টগ্রাম। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য চট্টগ্রাম একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।’

তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- দেশের মানুষের জন্য, বিশেষ করে চট্টগ্রামের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন সব সরকারের প্রথম এজেন্ডা দেওয়া উচিত আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এসব টার্মিনালকে আমরা যত বেশি বিশ্বমানের করতে পারব, তত বেশি ব্যবসার জন্য কন্ট্রিবিউশন করা যাবে।

লালদিয়ার চরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসবে এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখানে কোনো বিনিয়োগ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস তৈরির সুযোগ আছে। বাংলাদেশকে ম্যানুফেকচারিং হাব করা সরকারের লক্ষ্য। লালদিয়া গ্রিন পোর্ট হবে। ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। বিষয়টি আমরা খুবই সিরিয়াসলি ট্র্যাক করার চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। পোর্ট ক্যাপাসিটি এখন লিমিটেড। ছয় গুণ করার পরও আমরা ভিয়েতনামের ধারে কাছেও যাব না। তাই এক্সপার্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিতে হবে, যাতে কম জায়গায় বেশি অপারেশন করা যায়। বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বন্দরসমূহের উন্নয়ন জরুরি। এজন্য বিশ্বসেরা বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।’

বিডা চেয়ারম্যান জানান, দেশে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য স্থান হিসেবে আনোয়ারা পরিদর্শন করা হয়েছে।

২০২৪ সালে লালদিয়া টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করে এপিএম টার্মিনালস। শুরুতে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা থাকলেও আজ বেজা চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮০০ মিলিয়ন ডলার করা হয়েছে।

এপি মোলার মায়ের্স্ক-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ও সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে বিওটি (বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।


সীমান্ত জেলার পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত ও পা‌কিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের (এসপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সেকশনে বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ ২০২৪-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজিপি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্ত জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের আগেই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। রানার্স আপ হয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)।
প্রতিযোগিতায় পয়েন্ট ১৭৭ এয়ার রাইফেল ওপেন সাইট ১০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মনিরুল ইসলাম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন ফেনী জেলার এএসআই (নিরস্ত্র) এবিএসএম হাসান।
একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল তানিয়া আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল ওপেন সাইট ৫০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিদ ফরহাদ, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির কনস্টেবল শাকিল আহমেদ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল আমেনা আক্তার ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) নীলিমা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর পিস্তল/রিভলভার ২৫ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন সারদা, রাজশাহীর পুলিশ সুপার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, দ্বিতীয় হয়েছেন র‍্যাবের সার্জেন্ট জুবায়ের ও তৃতীয় হয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেদ আহমেদ। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন একই ইউনিটের নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা।
প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (পুরুষ) হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার এবং ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (নারী) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাবের সভাপতি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত আইজিপি ও বাংলাদেশ পুলিশ শুটিং ক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিভিন্ন খাতে আমিরাতের বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে বিভিন্ন খাতে দেশটির বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহনশীলতা ও সহাবস্থানবিষয়ক মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।

এ সময়ে নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। নাহিয়ান বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি বাংলাদেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে এবং আমাদের বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করতে।’

‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই সরকার যে বর্ধিত সংলাপের আয়োজন করেছে, তার আমরা প্রশংসা করি। আমরা বিনিয়োগ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চাই,’ বলেন তিনি।

এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সম্পৃক্ততা এবং সমর্থনকে স্বাগত জানাই, আমরা বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগকেও স্বাগত জানাই।’

ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এখনও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া বাকি আছে, আশা করি, আমরা সম্পৃক্ত থাকব এবং এই সমস্যাগুলি সমাধান করব।’

সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের জন্য বাল্ক ভিসাও ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষ কর্মসংস্থান ভিসার অনলাইন ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে।


banner close