মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

নারী জনপ্রতিনিধি পদ যেন ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’

হাসান মেহেদী
প্রকাশিত
হাসান মেহেদী
প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:৫১

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে, ‘একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।’

বিধিমালায় এমন ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তৃণমূলের নারী জনপ্রতিনিধিদের বাস্তব অবস্থার প্রতিধ্বনি শোনা গেল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগমের কণ্ঠে। চার বছর হলো নির্বাচিত হয়েছেন; অথচ এখন পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে বসার একটা জায়গাও পাননি তিনি। তার অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই এতদিন কোনো কাজও জোটেনি। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি এই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।

নিজের পদ নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ার‌ম্যান মাছুমা আক্তারের কণ্ঠেও ফুটে উঠল আক্ষেপ- ‘আসলে এই পোস্ট তৈরির কোনো মানে হয় না। এটি শুভঙ্করের ফাঁকি! মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কোনো স্বাক্ষর ক্ষমতা নেই। সামান্য পরিমাণ ভাতা দেয়া হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেয়া হলেও গাড়ি সুবিধা না থাকায় যেতে পারি না। বরাদ্দ না থাকায় অনুষ্ঠানে গিয়েও কিছু দিতে পারি না। অথচ তারাই আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।’

এ রকম নানা অভিযোগ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নারী জনপ্রতিনিধিদের। তারা বলছেন, আইন ও বিধিমালায় নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের পরিধি নির্ধারণ করা আছে। এর পরও দেশের বেশির ভাগ নারী জনপ্রতিনিধির আসলে কোনো কাজ নেই, দাপ্তরিক কাজে আনুষ্ঠানিক মতামত দেয়া ছাড়া। এ নিয়ে আপত্তি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে আইনে নারী জনপ্রতিনিধিদের বেশ কিছু ক্ষমতা দেয়া থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একই অবস্থা স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আওতাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও।

নারী জনপ্রতিনিধি কতজন

২০২১ সালে ৪ হাজার ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৪ হাজার ১১৪টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। তবে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, সেই তথ্য কমিশনের কাছে নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, অন্তত ৫০টি ইউপিতে নারীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪১ জন আওয়ামী লীগ, একজন জাতীয় পার্টির এবং অন্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ২৬ জন নারী চেয়ারম্যান জয়ী হয়েছিলেন।

উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এবং জাতীয় তথ্য বাতায়নে বলা আছে- ‘একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান, একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রত্যেক ইউপির চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী সদস্যগণ এবং উপজেলার এলাকাভুক্ত পৌরসভা থাকলে তার মেয়রকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হবে।

জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন উপজেলা আছে ৪৯৫টি আর উপজেলা পরিষদ আছে ৪৯২টি এবং ইউনিয়ন পরিষদ আছে ৪ হাজার ৫৭১টি। কাজেই এসব পরিষদে কমপক্ষে ৪৯২ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রতি ইউপিতে সংরক্ষিত আসনে তিনজন করে মোট ১৩ হাজার ৭১৩ জন নারী ইউপি সদস্য রয়েছেন। এর বাইরে সংরক্ষিত আসন ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে কতজন নারী জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। তাই দেশে অন্তত ১৫ হাজার নারী জনপ্রতিনিধি তো আছেনই, সে হিসাব প্রায় স্পষ্ট। কিন্তু দৈনিক বাংলার অনুসন্ধান বলছে, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা এই বিপুলসংখ্যক নারী জনপ্রতিনিধিকে বানিয়ে আসলে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ বানিয়ে বসিয়ে রেখেছে।

অভিযোগ, আক্ষেপ, হতাশা

নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নারীর সংখ্যা বাড়লেও তাদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে না। সরকার আইন করে জনপ্রতিনিধিদের কাজ ভাগ করে দিলেও সেটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।

তারা বলছেন, নির্বাচিত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারী জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় রাজনীতির নানা সমীকরণ, পুরুষ চেয়ারম্যানদের আধিপত্য ও বাধায় দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্যদের বেশির ভাগই স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় দায়িত্ব পালনে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের ওপরই তাদের নির্ভর করতে হয়। আইনের বিধিমালায় থাকা দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুই জানেন না সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্যরা।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ৮ নম্বর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য নাজমিন নাহার বলেন, ‘নারী সদস্য হিসেবে তেমন কোনো কাজ আমাদের থাকে না। এলাকার মানুষ মেম্বার হিসেবে জানে, সম্মান করে এটাই পাওয়া। ইউনিয়নের সব কাজ চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যরাই করেন।’

স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের নারী জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের অন্তত ২০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন মেম্বার-চেয়ারম্যানের অবস্থা নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয় দৈনিক বাংলার পক্ষ থেকে। বিধি অনুযায়ী, ১৭টি স্থায়ী কমিটির কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের। দেখা গেছে, এসব কমিটিতে নাম থাকলেও কাজের বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয় না। টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় যে বরাদ্দ আসে তার ২০ শতাংশ পায় উপজেলা পরিষদ। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ৮ শতাংশ, ইউএনও ৬ শতাংশ এবং দুজন ভাইস চেয়ারম্যান বাকি ৬ শতাংশ বরাদ্দ পান। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ওই বরাদ্দ দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করছেন নারী জনপ্রতিনিধিরা। তারা আরও বলছেন, একই দলের অনুসারী না হলে বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দও ঠিকমতো পান না উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা।

বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের নারী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পরও স্থানীয় রাজনীতিবিদের কারণে তাদের কোণঠাসা হয়ে থাকতে হয়। পরিষদের পুরুষ সদস্যরাও সব সময় সহযোগিতা করেন না। উন্নয়নমূলক কাজে পুরুষ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হলে বরাদ্দকৃত অর্থের হিসাব ঠিকমতো দেন না। তখন এর দায় চেয়ারম্যানের ওপর বর্তায়।

এদিকে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যদের দাবি, তাদের ক্ষমতাও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ইচ্ছার কাছে জিম্মি। বেশির ভাগ নারী সদস্য স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কেও জানেন না। এই সুযোগে পুরুষ মেম্বাররাও তাদের ওপর ছড়ি ঘোরান। যার কারণে চেয়ারম্যান ও পুরুষ সদস্যদের সব সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয়া ছাড়া তাদের কিছু করার থাকে না।

আইন অনুযায়ী কাজ করতে না পেরে হতাশার কথা জানিয়েছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১৫ বছর ধরে নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের জন্য কিছুই করতে পারি না। ১৫ বছরে পাঁচটি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গেও আমি যুক্ত থাকতে পারিনি। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদ শুধুই অলংকার হিসেবে রাখা হয়েছে।’

আইনে যা আছে

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য ও আর্থিক সুবিধা) বিধিমালায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বের বিষয়ে বলা হয়েছে, একাধিক স্থায়ী কমিটির সভাপতি হতে পারবেন; চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হলে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তারা।

এ ছাড়া পরিষদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা ও মাতৃমঙ্গল সেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া; স্যানিটেশন ও সুপেয় পানীয় জলের সরবরাহের ব্যবস্থা; মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নে করণীয় চিহ্নিত; কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন ও বিকাশে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ; আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক ও বাল্যবিবাহ রোধে জনমত গড়ে তোলা; গবাদিপশু এবং মৎস্যসম্পদের উন্নয়ন; সমবায় সমিতি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকি; সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশ নেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব ও সুপারিশ দেয়ার বাইরেও সরকার ও চেয়ারম্যান কোনো কাজ দিলে সেগুলো করতে হবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের।

বিধিমালায় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলির বিষয়ে বলা হয়েছে, ওয়ার্ডের সভায় উপস্থিত থেকে তারা উপদেষ্টার কাজ করতে পারবেন। পরিষদের ১৩টির বেশি স্থায়ী কমিটির মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্প যেমন- টেস্ট রিলিফ (টিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা), বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) উন্নয়ন বরাদ্দ, থোক বরাদ্দসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হবেন। তিনজন প্যানেল চেয়ারম্যানের মধ্যে কমপক্ষে একজন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের মধ্য থেকে হতে পারবেন।

এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যরা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়নকাজের তদারকি, মহিলাদের বৃত্তিমূলক ও আয়বর্ধক কর্মসূচির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক ও অ্যাসিড নিক্ষেপ নিরোধ, বাল্যবিবাহ রোধসহ বিবাহ নিবন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ; গ্রাম আদালতের বিচারক প্যানেলে থাকা, ওয়ার্ডের জনগণের সম্পত্তি সংরক্ষণসহ ২১টি কাজের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে।

নামেই উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

উপজেলার নারী উন্নয়ন ফোরামে পদাধিকার বলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সভাপতি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্যরাও এই ফোরামের সদস্য। নারী জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা নারী উন্নয়ন ফোরামের বিভিন্ন বরাদ্দ আটকে রাখেন।

তারা আরও অভিযোগ করছেন, ভিজিএফের চাল; মাতৃত্বকালীন, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বরাদ্দেও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের সুপারিশ রাখা হয় না। নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের পরিষদের মাসিক সভায় নিয়মিত ডাকা হয় না। অনেক সময় ডাকলেও তাদের কথা আমলে নেয়া হয় না। উপজেলার বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ৩ শতাংশ নারী উন্নয়ন ফোরামের জন্য বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তা ছাড় করেন না। প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াতের জন্য গাড়ি চাইলেও পান না নারী জনপ্রতিনিধিরা। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানকে সেই দায়িত্ব দেয়া হয়।

দল ও ক্ষমতার হাতে জিম্মি

নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো কাজ না পেয়ে বেশির ভাগ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হতাশ। সরকার নারীদের জন্য অলংকারিক হিসেবে এই পদ সৃষ্টি করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার আক্ষেপও ঝরেছে তাদের কণ্ঠে।

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বলেন, ‘পাংশা উপজেলায় সব কাজের নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম। উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজ থেকে শুরু করে সব বরাদ্দ তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। তার কথামতো না চলায় দায়িত্ব নেয়ার প্রায় চার বছর হতে চললেও আমাকে উপজেলা পরিষদের কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। কক্ষ না থাকায় পরিষদের কেরানির কক্ষে গিয়ে মাঝেমধ্যে বসি। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়া হয় না। কোনো বরাদ্দ এলে সেটিও ঠিকমতো দেয়া হয় না। এভাবেই সময় পার করছি। বাকি সময়টা এভাবেই হয়তো পার হয়ে যাবে।’

ওই জনপ্রতিনিধির অভিযোগের বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি এখানে দায়িত্ব পাওয়ার আগে থেকেই তিনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। আগে থেকে উনি যেই কক্ষে বসতেন, এখনো সেভাবেই আছেন বলে জানি। উপজেলায় নতুন ভবন হওয়ার পর ওইভাবে কারও নামে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আর অন্যান্য বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। উপজেলার সব বরাদ্দই জনপ্রতিনিধিরা পেয়ে থাকেন।’

এমপি জিল্লুল হাকিমকে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) একাধিকবার কল দেয়া হলে প্রতিবারই তিনি কেটে দেন।

নারী বলেই পাত্তা মেলে না!

বোয়ালমারী উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হজে যাওয়ার পর এক মাসের জন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই সময় নিয়মিত কাজে স্বাক্ষর করা ছাড়া অন্য কিছু করতে পারেননি।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন, ‘সম্প্রতি ছয় মাস মেয়াদি মাতৃত্বকালীন ভাতা এসেছে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে। প্রতি ইউনিয়ন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০টি করে কার্ড চেয়ারম্যানরা পেয়েছেন। আমি একজন গর্ভবতী মায়ের সব কাগজপত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি সেটি মানেননি।’

আছমা আক্তার বলেন, ‘সব ইউনিয়নে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোর প্রকল্পে ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্তু আমাদের না জানিয়েই চেয়ারম্যান এই প্রকল্পের নিলাম করেছেন। কোনো কাজ আমরা পাব কি না, তা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যের মর্জির ওপর নির্ভর করে।’

করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান নিজেই কাজ করতে না পারার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘উপজেলার সব কাজ সংসদ সদস্য করেন। পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদ রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখি না। চেয়ারম্যান হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন ছাড়া আমারই তেমন কোনো কাজ নেই, সেখানে ভাইস চেয়ারম্যানদের কাজ তো আরও কম।’

চেয়ারম্যানের কাজ করে দেন স্বামী

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউপিতে নির্বাচিত নারী চেয়ারম্যানদের অনেকেরই বাবা বা স্বামী চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় নির্বাচিত হলেও নারী হওয়ায় কাজ করতে গিয়ে নানা বাধার মুখে পড়ছেন তারা। সব কাজে সব সময় নারী চেয়ারম্যানরা উপস্থিত থাকতে না পারায় কারও কারও স্বামী অলিখিত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন মৌসুমী হক সুলতানা। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা, ভিজিএফের চাল বিতরণসহ বেশির ভাগ কাজ দেখভাল করেন তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারী। মামলায় জড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও স্ত্রীর হয়েই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদে শুধু দাপ্তরিক কাজ করেন মৌসুমী হক।

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব হোসেন বলেন, মৌসুমী হক এখানকার নামেমাত্র চেয়ারম্যান। অফিসের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করা ছাড়া তার কোনো কাজ নেই। সব কাজ তার স্বামী করে। এলাকার গ্রুপভিত্তিক রাজনীতিও তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন।

জানতে চাইলে ফজলুল হক ব্যাপারী বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব তো আমার পালন করার সুযোগ নেই। বড় ইউনিয়ন হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা তৈরি হয়। তখন সেগুলো আমি মীমাংসা করে দিই। মহিলা মানুষ হিসেবে সে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারি মিটিং-সমাবেশ করে। আমি টিআর, কাবিখার কাজগুলো করি। আমার স্ত্রীর সুনাম হলে তো আমারও সুনাম হয়। সে কারণে আমি তাকে সহযোগিতা করি।’

সব সময় এলাকায় থাকতে পারেন না জানিয়ে মৌসুমী হক সুলতানা বলেন, ‘ওই সময় আমার স্বামী কিছু কাজ করেন। আমরা দুজনে সমন্বয় করেই কাজ করি।’

পদে পদে বাধা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাফিয়া পারভীন। গত এক বছর দায়িত্ব পালনে সরকারদলীয় স্থানীয় রাজনীতিকদের বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানান তিনি। উন্নয়নকাজ নিয়ে তার এলাকার হোসাইন নামে এক ব্যক্তি দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগকারীকে সতর্ক করে তদন্ত শেষ করেছেন তদন্তকারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

সাফিয়া পারভীন বলেন, নারী হিসেবে জনপ্রতিনিধি হওয়াটাই অনেক চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয়ী হওয়ার পরও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা বাধায় পড়তে হয়।

কী বলছে কর্তৃপক্ষ

নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজে বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের আর কোনো কাজ থাকে না। এ বিষয় দেখবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এসব নির্বাচন কমিশনের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে না।’

এই বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গত মঙ্গলবার মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, একটা সময় ছিল যখন দেশের কোথাও নারীর অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সচিব থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারী জনপ্রতিনিধিদের কাজের বিষয়ে বিস্তারিত আইন ও বিধিমালায় বলা আছে। ওনারা সেভাবেই কার্যক্রম করেন। তবে সময়ের ব্যবধানে আইনের আওতায় নারীদের আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় কি না, সেটি নিয়ে ভাবনার সুযোগ রয়েছে।’


রাজধানীতে ফেলানী অ্যাভিনিউর নামফলক উন্মোচন ডিএনসিসির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটি ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২০১১ সালে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মরণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই সড়কের নামফলক উন্মোচন করে।

এই নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। আমাদের বোন ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রাণ দিয়েছিল। তার ওপর সংঘটিত নিষ্ঠুরতা প্রতিদিন আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সড়কের নামকরণ। একইসঙ্গে আমরা বিশ্বের বিবেকের কাছে তুলে ধরতে চাই, সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ এখনও বাংলাদেশের সীমান্তে ঘটছে। এই কারণেই বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিজয় দিবসে ফেলানীর নামে এই সড়কের উদ্বোধন করেছে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে নিজেদের সম্মান বজায় রাখার প্রতীক ও প্রতিবাদ হিসেবেই ফেলানীর নামে এই সড়কের (গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়ক) নামকরণ করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের যেকোনও দেশের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা আমাদের মানবিক মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখেই কথা বলবো। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সেই মানবিক মর্যাদার শিক্ষাই দেয়।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রি. জে. মঈন উদ্দীন, ডিএনসিসি সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এস এম শফিকুর রহমানসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘বিএমইউ’―এর পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানান কর্মসূচি পালন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া-মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে বিএমইউ প্রশাসন। এছাড়া জাতীয় এই দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিএমইউ হাসপাতালের রোগীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

এছাড়াও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিএমইউ ক্যাম্পাসে স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করা হয়। ওই দিন বিএমইউর বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলের সম্মুখ প্রাঙ্গণে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী পালন করা হয় এবং পরিচালক (হাসপাতাল) অফিসের উদ্যোগে বিএমইউ এর টিএসসিতে নিম, লেবু, কাঁঠালসহ ফলজ, বনজ ও ওষুধি বৃক্ষরোপণ করা হয়।

বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক শ্রেষ্ঠ এই বিজয়ের দিনে আজ ১৬ ডিসেম্বর সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিনবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানগণ, শিক্ষক, অফিস প্রধানগণ, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

সেখানে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজদ, বিজয় দিবসকে জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, মহান বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হলো একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। আমার বৃটিশ শাসন ও শোষণ থেকে, পাকিস্তানী শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত হয়েছি কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন এবং বিজয়ের ৫৪ বছর বছরেও আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশ আজো গড়ে তুলতে পারিনি। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার।

জাতীয় এসকল কর্মসূচীতে বিএমইউ এর মাননীয় ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ইরতেকা রহমান, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার শফিকুল হাসান রতন, পরিচালক (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ) মোঃ মাসুদ রানা, মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের একান্ত সচিব-১ নিউরোসার্জন বিশেষজ্ঞ ডা. মোঃ রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, অতিরিক্ত পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ডা. মোঃ শাহিদুল হাসান বাবুল, উপ-রেজিস্ট্রার (আইন, অতিরিক্ত দায়িত্ব) দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ, ডা. মোঃ আকবর হোসেন, উপ-রেজিস্ট্রার সাবিনা ইয়াসমিন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়ের একান্ত সচিব ২ মোঃ লুৎফর রহমান, উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ ইয়াহিয়া খাঁন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ হুমায়ুন কবীর, সহকারী পরিচালক মাহামুদুল হাসান, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবু নাজির, কর্মকর্তা শামীম আহম্মদ, মোঃ ইলিয়াস খাঁন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিজিবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকার পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরসহ বাহিনীর সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটসমূহে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়

দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবির সকল স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী (Major General Mohammad Ashrafuzzaman Siddiqui) অংশগ্রহণ করেন। সকাল ০৭:৪৫ ঘটিকায় বিজিবি মহাপরিচালক মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিজিবি’র একটি সুসজ্জিত চৌকষ দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পিলখানাসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। পিলখানায় আয়োজিত কেন্দ্রীয় প্রীতিভোজে বিজিবি মহাপরিচালক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল ইউনিটের মসজিদে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য, জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং বাহিনীর উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও একাত্মতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গ এবং বিজিবি’র স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বিজিবি সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। বিজিবি পরিচালিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠান যেমন-টি টুয়েন্টি ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি ও হা-ডুডু টুর্নামেন্ট এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া সকাল ১১.০০ টা থেকে বিকেল ০৪.০০ টা পর্যন্ত হাতিরঝিলে অ্যাস্ফিথিয়েটারে বিজিবি অর্কেষ্টা এবং ব্যান্ডদল কর্তৃক সংগীত ও বাদ্য পরিবেশন করা হয়।

দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবি’র বিভিন্ন স্থাপনায় বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয় এবং সকল ইউনিটের গেইট ও গেইট সংলগ্ন সড়কের আশেপাশের এলাকা ও স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা, বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হয়।


নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিনিধি

নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মোঃ মাহমুদুল হাসান, এনডিসি এঁর নেতৃত্বে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নগর ভবনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবস অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ রাসেল রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজয় দিবসের সকালে নগর ভবনে আলোচনা, সাংস্কৃতিক, চিত্রাঙ্কন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ডিএসসিসি পরিচালিত সংগীত ও নৃত্য শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে উপর্যুক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডিএসসিসি প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রশাসক একাত্তর ও চব্বিশের বীর শহিদগণের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, "বাঙালি জাতি মুক্তিকামী-বীরের জাতি, যখনই অন্যায় হয়েছে, বৈষম্য হয়েছে, জুলুম হয়েছে, তখনই বিপ্লব হয়েছে, বিজয় অর্জিত হয়েছে।" অতীতে বার বার বিজয় অর্জিত হলেও বিজয়ের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল সম্পূর্ণভাবে ভোগ করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বৈষম্যহীন ও বাসযোগ্য নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে একাত্তর ও চব্বিশের ফল ঘরে তুলতে প্রত্যেককে নাগরিক দায়িত্ব পালনের শপথ নিতে হবে।"

এছাড়া, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে ডিএসসিসি পরিচালিত ৬ টি মসজিদ ও মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি, ডিএসসিসি পরিচালিত মহানগর জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের দুপুরে প্রীতিভোজ পরিবেশন করা হয়েছে। এছাড়া, নগর ভবন জাদুঘর ও কলাবাগান শিশুপার্ক জনসাধারণের জন্য দিনব্যাপী বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়৷


হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফয়সালের সহযোগী কবির ৭ দিনের রিমান্ডে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির ওরফে ‘দাঁতভাঙা কবির’কে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামানের আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে কবিরকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় এর আগে মূল অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু ও বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকেও ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার পথে রাজধানীর পল্টন মডেল থানার বক্স কালভার্ট এলাকায় হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দেশে প্রাথমিক চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদী ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের অভিযোগ করেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্র ও নির্দেশনার অংশ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে।


হাদির সবশেষ শারীরিক অবস্থা জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি ঘটলেও বর্তমানে তা স্থিতিশীল রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর তার কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর তার অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও দুপুর ৩টার দিকে তার ভাইয়ের বরাতে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার সুস্থতার জন্য আরও একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন, তবে তার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি এখনো সেই অস্ত্রোপচারের জন্য অনুকূল হয়ে ওঠেনি।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।


জবিতে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে বাধা: প্রতিবাদে রাজাকারদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের পতাকা এঁকে তা পদদলিত করার কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে রাজাকারদের প্রতীকী ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করে ঘৃণা প্রকাশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে তারা ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও একদল শিক্ষার্থী তাতে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হোসেন ও ইসলামি ইতিহাস বিভাগের সাদ আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখো মানুষকে হত্যাকারী পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হওয়াটা দুঃখজনক। তারা প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও কেন পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনে বাধার সম্মুখীন হতে হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে বাধা দেওয়ার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন। রাতভর উপাচার্যের গাড়ি আটকে রাখার পর ভোর পাঁচটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলে উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।


সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ এবং বাংলাদেশ বেতারে তার এই ভাষণ একযোগে সম্প্রচার করা হবে।

এর আগে দিনের শুরুতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা। ভোর ৬টা ৫৬ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায়। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং পরে দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় প্রধান বিচারপতির পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করে বাংলাদেশের বিশ্ব রেকর্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবসে এক অনন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর উদ্যোগে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার একসঙ্গে জাতীয় পতাকা হাতে স্কাই ডাইভিং করে এই ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর সংলগ্ন প্যারেড গ্রাউন্ডে এই ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে। এটিই বর্তমানে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করার রেকর্ড।

‘টিম বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে ৫৪ জন সাহসী প্যারাট্রুপার এই প্রদর্শনীতে অংশ নেন। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি সশরীরে প্রত্যক্ষ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রেকর্ড গড়ার এই আয়োজনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে এক মনোমুগ্ধকর ফ্লাইপাস্ট মহড়াও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিমানবাহিনীর বিভিন্ন বিমান ও হেলিকপ্টার আকাশে কসরত প্রদর্শন করে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই ‘এয়ার শো’ ও বিশ্ব রেকর্ড গড়ার দৃশ্য দেখতে তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। সকাল থেকেই আগারগাঁও সংলগ্ন বিমানবন্দরের ফটকে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে উৎসুক জনতা এই বর্ণাঢ্য আয়োজন উপভোগ করেন।


রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বিপিএম। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তারা এই শ্রদ্ধা জানান।

প্রথমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। এরপর পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আইজিপি বাহারুল আলম এবং পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জত আলী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) নেতৃবৃন্দও ফুল দিয়ে বীর শহীদদের স্মরণ করেন।


বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধিতে বিজিবির শ্রদ্ধা নিবেদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যশোরের শার্শার কাশিপুর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠের সমাধিস্থলে বিজিবি মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। যশোর ব্যাটালিয়নের (৪৯ বিজিবি) ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে গার্ড অব অনার প্রদান ছাড়াও বীর শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ, বিশেষ মোনাজাত এবং উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

এ সময় যশোর ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর নূর উদ্দিন আহমাদসহ বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের আত্মত্যাগ ও অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিজিবির পক্ষ থেকে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।


বিজয় উদযাপনে সাভারের স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই লাল-সবুজের পতাকা হাতে শিশু থেকে বৃদ্ধ—সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজারো মানুষ শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে সেখানে সমবেত হন।

দিনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদদের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পরই প্রধান ফটক সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপরই ফুল হাতে জনতার বাঁধভাঙা স্রোত প্রবেশ করতে থাকে মূল বেদির দিকে।

অনেকেই দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে এবং নীরবতা পালন করে শহীদদের স্মরণ করেন। আশুলিয়া থেকে পরিবার নিয়ে আসা মাহফুজুর রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই দেশ ও স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী বীরদের শ্রদ্ধা জানাতেই তিনি ছুটে এসেছেন। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শোয়াইব রহমান বন্ধুদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আবেগ ও সম্মান জানাতেই তাদের এই আগমন। বিজয়ের উল্লাসের পাশাপাশি শহীদদের ত্যাগের মহিমাও এদিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতি।


হাদিকে হত্যাচেষ্টা: দীর্ঘ পরিকল্পনার ছক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি কয়েক মাসের দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হামলার আগের রাতে মূল অভিযুক্ত ফয়সাল ও আলমগীর সাভারের আশুলিয়ার একটি রিসোর্টে অবস্থান করেন। সেখানে তাদের মনোরঞ্জনের জন্য নারী সঙ্গীর ব্যবস্থাসহ বিনোদনের আয়োজন করেছিল মাস্টারমাইন্ডরা। পরদিন শুক্রবার সকালে তারা ঢাকায় ফিরে জুমার নামাজের পর হাদির ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান। পল্টন থানায় দায়ের করা এই মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে গতকাল শুটার ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু এবং রিসোর্টে থাকা বান্ধবী মারিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব, যাকে ভিডিও ফুটেজে হাদির আশেপাশেই দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে, হামলাকারীদের সীমান্ত পার হতে সহায়তার অভিযোগে শেরপুরের সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি ও পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ডিবি।

এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার ও সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে এবং তিনি হাদির সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।


banner close