আগামী সপ্তাহেই অনলাইনের মাধ্যমে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের আন্তঃউপজেলা ও আন্তঃজেলা বদলি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল চলতি মাসের ২৫ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
এছাড়া চলতি বছরের জুন থেকে ‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্প চালু হবে উল্লেখ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় ‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পটি ২০১০ সালে চালু হয়ে গত বছরের জুনে শেষ হয়। প্রকল্পটি দেশের ১০৪টি উপজেলায় চালু ছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ, বিদ্যালয়ে শতভাগ ভর্তি, নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি, ঝরে পড়া রোধ, যথাসময়ে শিক্ষাচক্র সমাপ্তকরণে প্রকল্পটি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। তাই দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘স্কুল ফিডিং’ কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।
শ্রুতিকটূ ও নেতিবাচক ভাবার্থ সম্বলিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের নাম পরিবর্তন করা হবে বলেও জানান জাকির হোসেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বিদ্যালয়ের নাম শ্রুতিকটূ ও নেতিবাচক ভাবার্থ বহন করে। যা শিশুর রুচি, মনন, বোধ ও পরিশীলিভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অন্তরায়। এ জন্য মন্ত্রণালয় এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত মাসের ২৩ তারিখে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকার পর আগামী মার্চের মধ্যে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুবকর সিদ্দিক ও মো. মোশাররফ হোসেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নামে শ্রম আদালতে হওয়া ‘হয়রানিমূলক’ মামলা খারিজ করে দিয়েছেন প্রথম শ্রম জজ আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম শ্রম জজ আদালতে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিকালে আদালতে বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. মাসুদ আলম উপস্থিত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলাটির বাদী ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর রোডের হোটেল লং বিচ পরিদর্শন করে বাংলাদেশ শ্রম আইন মোতাবেক শ্রমিকদের জন্য সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা না থাকা, নির্ধারিত তথ্যসংবলিত শ্রমিক রেজিস্টার সংরক্ষণ না করা, শ্রমিক বা কর্মচারীদের আইন মোতাবেক ছুটি না দেয়া, রেজিস্টার সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, ধারা ৩০৩(৫) এবং ৩০৭ মোতাবেক প্রথম শ্রম আদালতে মামলা করেন মাসুদ আলম। তিনি এই মামলায় লং বিচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ব্যবস্থাপক জেরাল্ড রেবেরো, সহকারী ব্যবস্থাপক তৌতম ব্রামার নাম উল্লেখ করেন।
সাঈদ খোকনের পক্ষে বিবাদীদের আইনজীবী সেলিম আহসান খান বলেন, ‘মামলায় লং বিচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নাম দেয়া হয়েছে। সেটির মালিকানা বা পরিচালনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাকে হয়রানির উদ্দেশ্যেই এই মামলাটি করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি একটি হয়রানিমূলক মামলা। মামলাটির সঙ্গে তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তাই আদালত আমাদের শুনানি গ্রহণ করে বাদীকে সতর্ক করেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানেরও নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বাজার ও কাঁচা বাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য থাকায় গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজ ও আদার মতো পচনশীল আইটেমগুলোর জন্য আঞ্চলিক স্টোরেজ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপরও জোর দেন।
এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা এবং দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন। এই দুটি সমস্যার সমাধানে কাজ করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।
মূল্যস্ফীতি কমবে বলে তার আগের ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত তা কমেনি, বরং বেড়েছে- যার জন্য সরকার তার উপলব্ধ উপকরণ ব্যবহার করার মতো যা যা প্রয়োজন তা করবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রথম কৌশল হবে এটিকে আরও বাড়তে না দেয়া এবং তারপরে তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এটা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।
মার্কিন ডলার ছাড়া অন্যান্য মুদ্রার সঙ্গে বাণিজ্য পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখনো ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। তবে এটি আবারও ৫০ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে।
আগামী অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে মান্নান বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকতে পারে, তবে সামনে এমন লক্ষ্য রাখা ভুল নয়।
স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পণ্যটি আমদানির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এভাবে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও সঠিক সময়ে বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে।
ইউরোপে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে উল্লেখ করে মান্নান বলেন, আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনা কঠিন হলেও মূল্যস্ফীতি কমাতে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রক্রিয়াটি (সাপ্লাই চেইন) মসৃণ রাখতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে- কোনো ধ্বংসাত্মক উপাদান যেন প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। অন্যথায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত ও চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি (লাইন্স অব ক্রেডিট) রয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রীর ভাষ্যে, শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে কালবিলম্ব বা অবহেলা যাবে না। কারণ এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও কিছু বেসরকারি ব্যাংক রেমিট্যান্স পাঠাতে সরকার নির্ধারিত আড়াই শতাংশের বাইরে কিছু বাড়তি প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে এই হার বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারের বিপুল আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে যে, ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোট চাইতে সরকার দৃঢ় মনোবল নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারবে।
১১৩৮৭ কোটি টাকার ১৮ প্রকল্প অনুমোদন
এম এ মান্নান জানান, একনেক সভায় মোট ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ের ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে, বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে এবং বাকি ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসাবে আসবে।
১৮টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নয়টি নতুন ও নয়টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে একটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে কঠোরতা বজায় রাখতে ও এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছেন।
সভার শুরুতেই একনেক বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য এত চমৎকার বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশটিতে ছয় দিনের সফর দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি, তার পত্নী ড. রেবেকা সুলতানাসহ সফর সঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, কূটনৈতিক কোরের ডিন, বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত, তিন বাহিনীর প্রধান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আইজিপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব এবং অন্য বেসামরিক ও সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এদিন রাষ্ট্রপ্রধান তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার এসেনবোগা বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
বিমানবন্দরে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হক, তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ওয়া তুঙ্গা কাগলি, আঙ্কারার ডেপুটি গভর্নর মুরাত সোয়লুসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাকে বিদায় জানান।
আঙ্কারায় গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাষ্ট্রপতি গত ১ জুন ঢাকা ছাড়েন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বিশ্বের ৭৭টি দেশের নেতা এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে ন্যাটো এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনসহ (ওআইসি) আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে সেখানে ফটো সেশনে যোগ দেন। দুদেশের রাষ্ট্রপ্রতি একে অপরের খোঁজ-খবর নেন।
টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন তুরস্কের নেতা এরদোয়ান।
লোডশেডিং যেভাবে বাড়ছে তাতে ‘জনরোষের’ সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।
বিরোধী সংসদ সদস্যদের এই আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে সপ্তাহ দুয়েক ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার ২০২২–২০২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় সাম্প্রতিক লোডশেডিং পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।
চলতি অর্থবছরে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ৩২ কোটি ৪৬ লাখ চার হাজার টাকা মঞ্জুরি দাবি তোলেন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তার এই দাবিতে ছাঁটাই প্রস্তাব দেন ১০ জন সংসদ সদস্য। তবে আলোচনায় অংশ নেন ছয়জন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘আমাদের ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার কিন্তু করে ফেলেছি ২৬ হাজার মেগাওয়াট। আর আজকে উৎপাদন হচ্ছে ৭ হাজার মেগাওয়াট।’
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘এখন কমবেশি এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। এই লোডশেডিং আরও বাড়বে। বিল পরিশোধের কারণে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিল তো মানুষের বাকি নেই। গ্রাহকরা তো সবাই বিল দিচ্ছেন। তাহলে এই বিল কেন বাকি থাকছে? একটা হতে পারে ক্যাপাসিটি চার্জ। গণমাধ্যমে দেখেছি ৯০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ এসেছে। ২০ হাজার কোটি টাকা নাকি এখনো বাকি আছে। কেন এত ক্যাপাসিটি চার্জ হয়? কেন চুক্তিটা এভাবে করা হলো যে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে। কেন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে খাম্বা ও সঞ্চালন লাইন করা হলো না।’
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ ছিল না, খাম্বা ছিল। এখন বিদ্যুৎ আছে খাম্বা নেই। ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। টাকা সর্টেজ। মানুষ গরমে কষ্ট পাচ্ছে। মোগল আমলে মানুষ যে কষ্টে ছিল এখন তার থেকে বেশি কষ্টে আছে।’
তিনি বলেন, ১৫৩ টি কেন্দ্রের সবগুলোতে কম উৎপাদন হচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যের একটি জায়গা ছিল বিদ্যুৎ। সেটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল। এর থেকে তো আমি মনে করি জনরোষের সৃষ্টি হবে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ বিভাগ হুমকির মধ্যে পড়েছে। কবে যে আবার লোডশেডিং কমবে! এখন যেভাবে বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগামী ১০ বছর পরে আমাদের গ্যাসও শেষ হয়ে যাবে।
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকলে দেশের অগ্রগতি থেমে যাবে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। সমস্ত জায়গায় স্থবিরতা তৈরি হবে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী গোটা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিয়েছেন। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নেই। হঠাৎ করে কী হলো যে বিদ্যুৎ চলে গেল। আগেই যদি কয়লা বা ডিজেল আমদানি করা যেত আজকের এই সমস্যা হতো না। আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। তড়িৎগতিতে আমাদের কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করতে হবে।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে কিন্তু মন্ত্রীর কোনো কথা নেই। কেন? জনগণকে কনভিন্স করতে হবে। গণশুনানি করে বিষয়টি জানাতে হবে। লোডশেডিংয়ে বিষয়ে কেউ বলতে পারেন না। লোডশেডিংয়ের তথ্য জানাতে হবে। কোথায় অব্যবস্থাপনা রয়েছে সেটা দেখতে হবে। এখানে কিন্তু অনেক ঘষেটি বেগম থাকতে পারে। তারা যেন আপনাদের সুনাম নষ্ট করতে না পারে।
ছাঁটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কোভিড আমাদের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে। একটি করেছে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। আরেকটি করেছে স্বাস্থ্যগতভাবে মেমোরিটা লস করে দিয়েছে। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কারণ আমরা খুব দ্রুত ভুলে যাই। ১৬ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। সেখান থেকে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি।
বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট ‘আকস্মিক’ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে ২০ থেকে ২২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারি। তার জন্য দরকার জ্বালানি। দুই-তিন বছর কোভিডে আক্রান্ত ছিল সারাবিশ্ব। প্রত্যেকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর আসলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সারাবিশ্বের সমস্ত কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছিল। গ্যাস ও তেল পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপরও আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চেষ্টা করেছি কীভাবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি রাখা যায়। বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে এবং থাকবে। আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সক্ষমতা। আমরা কত সাশ্রয়ে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ দিতে পারব। সেটা ভবিষ্যতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। বিশ্বের বাজার কখন, কী হবে ধারণা করা যাচ্ছে না। নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি পাব কি পাব না, নিজেদের জ্বালানির সর্বোত্তম ব্যবহার করছি আমরা। সেটা ভবিষ্যতে ব্যবহারের পরিকল্পনার জন্যও অর্থ লাগে। এক একটি কূপ খননের জন্য লাগে ৯ থেকে ২১ মিলিয়ন ডলার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দিনের বেলায় ১২ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারি। পিক আওয়ারে সন্ধ্যা বেলায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি। দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং বর্তমানে চলছে। আরেক সংসদ সদস্য বলছেন আমরা প্রচার করছি না। কিন্তু আমি বারবার আসছি, প্রচার করছি। ওয়েবসাইটে দিয়েছি, বিজ্ঞাপন প্রচার করছি। আমরা কষ্টটা সকলের সঙ্গে ভাগ করতে চেয়েছি। সকলকে জানিয়েছি কোথায়, কীভাবে হবে। মিডিয়াতে বলা হয়েছে বারবার। লোডশেডটা আকস্মিক, এটা বেশিদিন থাকবে না। এই আকস্মিকতার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।
নসরুল হামিদ বলেন, ৭১ বিলিয়ন ডলার পাওনার তথ্য ভুল। পাওনা আছে অবশ্যই, সেটা আমরা অবশ্যই জোগান দিচ্ছি। সকলের সহযোগিতায়। অনেকেই বিল দিচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের বিল বাকি আছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। আমাদের একজন সংসদ সদস্য বলছেন, আমরা বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছি। অনেকেই বিল দিচ্ছে না, কেন হল? সেটা হল করোনা কারণে। করোনার সময় আমরা বিল নেইনি। আমরা বলেছি মাসকে মাস বিল নিচ্ছি না। আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। যাতে মানুষ অস্বিস্থিতে না পড়ে। আমরা প্রতিবছর জ্বালানি খাতে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছি। তেলে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু গ্যাসে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা সবমিলিয়ে। এই বছরে ২৪ থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি যাবে খালি বিদ্যুৎ খাতে। আমরাতো সমন্বয় করতে পারতাম। কিন্তু সেটা করিনি। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন সকলের কাছে যাতে বিদ্যুতটা পৌঁছায়। এ কারণে আমি মনে করি সকলকে ধৈর্যধারণ করতে হবে।
বর্তমান সংকটের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা সময়মতো কয়লার জন্য এলসি করতে পারিনি। বৈশ্বিক ব্যবস্থা ও বর্তমানে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সবকিছুর উপর চিন্তা করে আমরা সময়মতো কয়লাটা আনতে পারি নাই। যার কারণে পায়রার এ অবস্থা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্ল্যান্ট চালু করে দেব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হবে, পায়রা চালু হবে। রামপাল চলছে। এসএস পাওয়ার চালু হয়ে যাবে। আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনছি। আরও নিয়ে আসব। কিন্তু কিছু কিছু জায়গা আমাদের যে সমস্যা হচ্ছে সেটা হচ্ছে বৈশ্বিক জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের অর্থের যোগানটা সমস্যা হয়ে গেছে। এটা বেশি দিনের জন্য না। আমরা মনে করি ১৫ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আপনারা সকলেই একটু ধৈর্য ধরেন। বিশ্বের দিকে ও নিজের দেশের দিকে তাকিয়ে যদি আমরা ধৈর্য ধরি তাহলে যে সমস্যাটা দেখতে পারছি সেটা পার হতে পারব।
মধ্যরাতে বিশাল বিদ্যুতের ব্যবহার হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটা আগে ছিল না। অটো রিকশা সাড়ে তিনহাজারের মত বিদ্যুৎ নিয়ে যায়। আমরাতো বন্ধ করেনি। সেগুলোও চালু রেখেছি। সাধারণ মানুষ যাতে সেটা ব্যবহার করতে পারে। ৪০ লক্ষের মতো অটো রিকশা আছে দেশে। আমরা তাদের ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ করছি। সবাই বলছি একটু ধৈর্য ধরুন। এই মাসের মধ্যে সমাধান করতে পারব।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত হলো নতুন কোচ। কোরিয়া থেকে আনা নতুন মিটারগেজ কোচ দিয়ে মঙ্গলবার থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী পরিবহন শুরু করে করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
মঙ্গলবার সকাল ৭টায় কোরিয়ান এই অত্যাধুনিক কোচ যুক্ত করে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে। দুটি গার্ড কোচসহ ট্রেনটি চলছে ১৮টি কোচ নিয়ে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে থেকে জানানো হয়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের বর্তমান রেকটি (সম্পূর্ণ কোচ) পরিবর্তন করে কোরিয়ান তৈরি ১৮টি কোচ দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। এই ট্রেনে মোট আসনসংখ্যা ৮৯০। তবে ভাড়ার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। এসব কোচ যুক্ত করার মাধ্যমে যাত্রীসেবার মান বাড়বে।
রেলকে গতিশীল করতে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১৫০টি মিটারগেজ কোচ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ প্রকল্পে আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় চালানে ১৫টি করে মোট ৩০টি মিটারগেজ কোচ এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশে ।
প্রকল্পে চুক্তি অনুযায়ী, ১৫০টি মিটারগেজ কোচ সরবরাহ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ কোম্পানি সংশিন আরএসটি-পসকো ইন্টারন্যাশনাল। নতুন এই ১৫০ কোচ কিনতে ব্যয় হচ্ছে ৬৫৮ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এসব কোচ আমদানিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক।
আমদানি করা নতুন রেল কোচগুলো স্টেইনলেস স্টিল বডি এবং বায়ো-টয়লেট সংযুক্ত। স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক, স্বয়ংক্রিয় ফোল্ডিং ডোরসহ রয়েছে আধুনিক নানা সুবিধা।
দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের একটি দল।
দুদকের অনুসন্ধান নথি বলছে, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ মিলেছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিছুর রহমানসহ করপোরেশনের কতিপয় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও মিলেছে।
এ দুটি অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাহাঙ্গীরকে তলব করে দুদক। গত ২১ ও ২২ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করা হলে তিনি সময়ের আবেদন করেছিলেন। আবেদন গ্রহণ করে তাকে সময় দেয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘কে বা কারা অভিযোগ করেছেন, তাদের ঠিকানা বা হদিস নেই। কাগজের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। দুদক একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। গত ২১ মে তারা আমাকে ডেকেছিল। আজকেও তারা আমাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছিল। আমি দুদক ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এখানে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের নাটক সাজানো হয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে ৬ থেকে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সেই জায়গায় কাগজের মধ্যে লিখে দিয়েছে, সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ! যত মিথ্যা, পচা, অন্যায়-অনিয়মের কথাগুলো লেখা হয়েছে। কে বা কারা লিখেছে সেটার কোনো তথ্য নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুদক আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে। তারা বলেছে, অভিযোগের সত্য-মিথ্যা জানি না, অভিযোগ এসেছে তা আমরা যাচাই-বাছাই করছি, জানতে চাই। আমি লিখিতভাবে জবাব দিয়েছি। আমি বলেছি, অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট। সর্বশেষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখানো হয়েছে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।’
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমিও ন্যায়বিচার চাই। আমার নামে ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখানো হয়েছে। আমি ন্যায়বিচারের স্বার্থে আজ কয়েক শ সিগনেচার দিয়েছি। আমি বলেছি, আমার যে রাষ্ট্রীয় সিগনেচার আছে তা যাচাই-বাছাই করা হোক, প্রয়োজনে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হোক বা যারা বিশেষজ্ঞ তাদের মতামত নেও হোক।’
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ২০২১ সালের নভেম্বরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে সরকার।
এবারের সিটি নির্বাচনের আগে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করলেও দল তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি। নৌকার মনোনয়ন পান আজমত উল্লা খান। জাহাঙ্গীর বিদ্রোহ করে নিজের ও মায়ের নামে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কিন্তু ঋণখেলাপির অভিযোগে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। আওয়ামী লীগও তাকে ফের বহিষ্কার করে। তবে মা জায়েদা খাতুনকে ভোটের লড়াইয়ে জেতাতে উদ্যোগী হন তিনি। শেষ পর্যন্ত জায়েদা খাতুন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র অনড় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন্সের পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সেদেশের কংগ্রেসের ছয় সদস্যের চিঠি দেয়ার বিষয়টি হোয়াইট হাউস অবগত।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জন কিরবি এ কথা জানান। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারাইন জ্যাঁ পিয়ের সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।
এতে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি দিয়ে ছয় কংগ্রেসম্যান অনুরোধ করেছেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানানো হয়েছে সেখানে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?’
জবাবে কিরবি বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় এবং এই যোগাযাযোগের (চিঠি পাঠানো) বিষয়েও আমি অবগত। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার লক্ষ্যে আমরা অনড় অবস্থানেই আছি। এই দায়বদ্ধতা থেকেই সম্প্রতি পররাষ্ট্র দপ্তর ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের (অবাধ ও সুষ্ঠু) নির্বাচন আয়োজনে বাধাদানকারীদের ভিসা দেয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।’
গত ২ জুন নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য বব গুড। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বাকি কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।
চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
চিঠিটির বিষয়ে সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে ছয় কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এরকম চিঠি অতীতেও এসেছে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে আসতে পারে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এই ধরনের কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে।’
বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম বা শক্তির কাজ করার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তাদের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন বাংলাদেশের মানুষ আমাদের শক্তি।’
রাজধানীর হাজারীবাগে লিচুর বিচি গলায় আটকে অনিক (১০) নামে বাকশক্তিহীন এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বাসায় লিচু খাওয়ার সময় গলায় আটকে গেলে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। চিকিৎসক দুপুর ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে হাজারীবাগের গজমহল পুরাতন থানা এলাকার ওই ভাড়া বাসায় থাকতো। তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদীতে।
শিশুটির মা পারভিন আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে বাকশক্তিহীন। সকালে ওকে খাওয়ানোর জন্য আমি কয়েকটি লিচু ছিলে রাখি। আমি বারান্দায় গেলে ওই ফাঁকে সে নিজেই বাটি থেকে লিচু নিয়ে মুখে দেয়, এসময় গলায় লিচুর বিচি আটকে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে আনলেও চিকিৎসক জানান সে মারা গেছে।’
অনিকের বাবা আরেক বিয়ে করে পাঁচ বছর আগে অন্যত্র চলে গেছে জানিয়ে পারভিন আরও বলেন, ‘ছেলেটাকে আমি খুব কষ্ট করে লালন-পালন করেছি। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো?’
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বিষয়টি হাজারীবাগ থানাকে জানানো হয়েছে।
দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে এক মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত বলেছেন, ‘কারাগারে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশ গরিব। এ জন্য কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে এ গরিব মানুষগুলোকে বাঁচান।’
আদালত বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। মানুষের সেবার জন্য ক্ষমতা ব্যবহার করুন।’
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। আর কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রথমে আদালত জানতে চান কারাগারে কতজন চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী বলেন, ‘১২৫ জন। আদালত বলেন, ‘এই ১২৫ জন দিয়ে বাদ বাকি কীভাবে কাভার করছেন?’ কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী বলেন, ‘কাজ চলছে।’
এ সময় আদালত বলেন, ‘কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারের অবস্থা তো আরও খারাপ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে আপনারা বের হতে পারছেন না। এটা যে স্বাধীন দেশ তা মনেই হয় না। শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকলেও ডিভিশন পান অনেকেই। গরিব মানুষদের বাঁচান।’
পরে আদালত কারা অধিদপ্তরের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। আপনি রিকুইজিশন দেবেন।’
এরপর আদালত শুনানি মুলতবি করেন।
বাগেরহাটের মোংলা বন্দর দিয়ে আবারও গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে পোল্যান্ডের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মারেস্ক কিনঝো। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বন্দরের ৫ নম্বর জেটি থেকে গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই ২০ ফিটের ১০টি কনটেইনার নিয়ে ছেড়ে যায় জাহাজটি।
পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই ঢাকার গার্মেন্টস পণ্য মোংলা বন্দর দিয়ে রপ্তানি শুরু হয়। পদ্মা সেতু চালুর পর সর্বপ্রথম গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি শুরু হয় গত বছরের ২৭ জুলাই। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার পঞ্চম চালানে গার্মেন্টস পণ্য গেল বিদেশে।
এর আগে মোংলা বন্দর দিয়ে পোল্যান্ড ও ইউরোপে যায় ঢাকার গার্মেন্টস পণ্য। এ ছাড়া আগামী ২২ জুন এমভি ‘মারস্ক মংল’ নামক আরেকটি জাহাজে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব মো. মাকরুজ্জামান বলেন, গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে দক্ষিণবঙ্গের যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম উল্ল্যেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্যতম। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ বন্দর দিয়ে রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। তাই দূরত্ব কম হওয়াতে রাজধানীসহ আশপাশের শিল্প কলকারখানার মালিকরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে মোংলা বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডেলিং দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় এবং পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমে যাওয়ায় সময় ও অর্থ দুইয়েরই সাশ্রয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে ঝুঁকে পড়েছেন।
তিনি জানান, মোংলা বন্দরে দ্রুত জাহাজ হ্যান্ডেলিং, জেটির অভ্যন্তরে কনটেইনার স্টাফিং সুবিধা, পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট সুবিধা ও নিরাপদ বন্দর হওয়ায় ব্যবসায়ীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে মোংলা বন্দর।
দিনে অপরিবর্তিত থেকে রাতে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমনটি জানায় রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী ও পাবনার ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া সারা দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতে সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বান্দরবানে ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাঙামাটিতে ১৪ মিলিমিটার।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাজে অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দুদক কার্যালয়ে আসেন তিনি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে কমিশন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, সকাল ১০টার আগেই জাহাঙ্গীরের একজন আইনজীবী দুদক কার্যালয়ে আসেন। এরপর এসে হাজির হন জাহাঙ্গীর।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে জাহাঙ্গীর আলমকে গত ১৬ মে নোটিশ দেয় দুদক। এ ছাড়া আলাদা নোটিশে ২১ ও ২২ মে হাজির হয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আলী আকবর।
গত ১৮ মে দুদকের তলবে হাজির হতে এক মাস সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে কোনো জবাব না পেয়ে ২১ মে দুদকে উপস্থিত হয়ে সময় চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আসেন তিনি। পরে দুদক তাকে চলতি মাসের ৬ ও ৭ তারিখ দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলে।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৮ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় এ পেঁয়াজের ট্রাক প্রবেশ করে। এ ছাড়া মঙ্গলবার আরও ১০ ট্রাকের মতো পেঁয়াজ প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা। খবর বাসসের।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খাঁন জানান, প্রতি টন পেঁয়াজ ২২০ মার্কিন ডলার থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। দেশীয় পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। এ সুযোগে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় উঠে।
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়াই অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব হবে এবং সাধারণ মানুষ ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের তথ্য কর্মকর্তা শান্ত হাওলাদার জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ৮ ট্রাক পেঁয়াজ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আরও ৮ থেকে ১০টি ট্রাক প্রবেশ করতে পারে।