বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ডেমরায় গরম রড ঢুকে শ্রমিকের মৃত্যু

প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২২:০৩

রাজধানীর ডেমরায় স্টিল মিলে শরীরে গরম রড ঢুকে আলম (২৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কারখানাটির সুপার ভাইজার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডেমরা বাঁশেরপুল একটি রোলিং স্টিল মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আলম। বিকেলে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত গরম রডের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সেই রড তার বুকে ঢুকে যায়। তার সহকর্মীরা সেই রড কেটে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

মৃত আলমের ভগ্নিপতী ও সহকর্মী মো. জুলহাস জানান, নেত্রকোনা সদর উপজেলার শিমুলজানি গ্রামের ভুট্টু মিয়ার ছেলে আলম। বর্তমানে ওই কারখানাতেই থাকতেন। ৪-৫ বছর যাবত সেখানে কাজ করে আসছিলেন।


ছয় দিনের সফরে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০১
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে আজ সকালে দেশটির রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট বুধবার সকাল ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বিমানটি।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয় ধরনের সফর।’

১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর।

গত জানুয়ারিতে নির্বাচনে জয়লাভের পর কোনো দেশে শেখ হাসিনার এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অব ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা দলিল সই হবে।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা-সংক্রান্ত আরও দুটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।

২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে দলিল সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্মানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এই অধিবেশনে একত্রিত করবে।


শুধু আইনশৃঙ্খলায় নয়, মানবিকতায়ও নজির স্থাপন করেছে পুলিশ: ডিএমপি কমিশনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয় বরং মানবিকতায়ও অনন্য নজির স্থাপন করেছে। চলমান তাপপ্রবাহে ডিএমপির পক্ষ থেকে ৫০টি থানা এলাকার বিভিন্ন স্থান যেমন- বাজার, বাস স্টপেজ, মার্কেটসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে সাধারণ শ্রমজীবী, রিকশাচালক ও নিম্ন আয়ের মানুষ নিরাপদ খাবার পানি পান করতে পারেন। মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরেই সারা দেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলছে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সব সময় রাস্তায় থেকে কাজ করেন। রাস্তার ট্রাফিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচণ্ড রোদ বা বৃষ্টি সবকিছু উপেক্ষা করে তাদের কাজ করতে হয়। এমনকি তারা বিশ্রামের সুযোগও পান না। আর চলমান দাবদাহের সময় তৃষ্ণা বা পিপাসার্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। এর বাইরে আমরা কিছু জায়গায় স্থায়ীভাবে পানির ট্রলি দিয়েছি। আর বেশ কয়েকটি জায়গায় ভ্রাম্যমাণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মহানগর এলাকায় যারা রয়েছেন তাদের সেবা দেওয়ার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পক্ষ থেকে ট্রাফিক পুলিশদের খাবার পানি, স্যালাইন, গ্লুকোজ, লেবুর শরবত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে জড়িত থাকে না বরং মানবিক কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। আমি মনে করি, করোনাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মানবসেবা করে বাংলাদেশ পুলিশ সারা বিশ্বে একটি অনন্য নজির স্থাপন করেছে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে। আজকেও শ্রমজীবী মানুষের জন্য ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পানি বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা আশা করি পুলিশ এই কার্যক্রম সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টার একটি অংশ।’

চলমান তাপপ্রবাহে সড়কে দায়িত্বপালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ইউনিফর্ম পরিবর্তন করার কোনো চিন্তা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এমন কোনো চিন্তা নেই। আমাদের যে পোশাক রয়েছে তার বাইরে গিয়ে বিকল্প পোশাক পরিধানের কোনো চিন্তা-ভাবনা এখন আমাদের নেই। তবে যে কালো ছাতাটি রয়েছে সেটির বদলে সাদা ছাতা দেওয়ার হবে, যেন গরম কম লাগে। একই সঙ্গে রোদে বা তাপপ্রবাহে কোনো পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে গেলে সেবা দেওয়ার জন্য পুলিশ হাসপাতাল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

ওই ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (স্টাফ অফিসার টু কমিশনার) মো. এনায়েত করিম, গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তিসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আসনবিন্যাস প্রকাশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার (এমসিকিউ টাইপ) আসনবিন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি টেস্ট আগামী শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকাসহ ৮টি বিভাগীয় শহরের ২১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে হবে। উক্ত পরীক্ষার সময়সূচি, হলভিত্তিক আসন ব্যবস্থা ও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করে এ সংক্রান্ত তথ্যাদি জানা যাবে।

এর আগে, পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনের জন্য ১০৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে সরকার। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আগামী ২৬ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্ট (এমসিকিউ টাইপ) পরীক্ষা ঢাকার ৯৬টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ভেতরের ও বাইরের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকার ৯৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রতিটির জন্য একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলো। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের কন্ট্রোল রুমে অতিরিক্ত আরও ১০ জন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ঢাকার কেন্দ্রগুলোর জন্য নিয়োগ করা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের আগামী ২৩ এপ্রিল বেলা ১১টায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত ব্রিফিং সেমিনারে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। পাশাপাশি পরীক্ষার দিন অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ে রিপোর্ট করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।


মিয়ানমারের কারাগার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। আজ মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।

এ দিন সকালে এসব বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে মিয়ানমারের নৌ-জাহাজ চিন ডুইন সিতোয়ে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজার আসছে।

আগামীকাল বুধবার জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছাবে এবং পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশি ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা আছেন।

ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারের জাহাজটির বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে। সর্বোচ্চ সংখ্যক যাচাই করে বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ও সহজে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনায় দূতাবাস মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত ১৪৪ জন ‘যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন’ তাদেরকে সিতোয়ে কারাগারে আনতে উদ্যোগ নেয়।

পাশাপাশি আরও ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনো কারাভোগরত কিংবা বিচারাধীন, একই সঙ্গে তাদেরও মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরা হয়। যার ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরও দেশে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৩ অক্টোবর দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ করা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে পাঠানো হয়। ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট, সিতোয়ে সেই প্রত্যাবাসনের পর থেকেই মিয়ানমারে অবশিষ্ট বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে পাঠাতে নিরলস কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট, সিতোয়ের প্রতিনিধিরা বিগত কয়েক দিন ধরে সশরীরে অবস্থান করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়, যাচাইকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনা এবং প্রত্যাবর্তনকারীদের ভ্রমণের অনুমতি (ট্রাভেল পারমিট) দেওয়া সংক্রান্ত কাজ করেছেন।


স্ত্রীর সনদবাণিজ্য নিয়ে কিছুই জানেন না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী সেহেলি পারভীনের সার্টিফিকেট-বাণিজ্যের ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রধান হিসেবে সার্টিফিকেট-বাণিজ্যের দায় অবশ্যই আমি এড়াতে পারি না।’

আজ মঙ্গলবার প্রায় তিন ঘণ্টা ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত।’

স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গোয়েন্দা সংস্থা কী তথ্য পেয়েছে, তাও জানি না।’

সার্টিফিকেট-বাণিজ্যের বিষয়ে কারিগরি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থা বের করেছে, এর বেশি কিছু জানি না। সার্টিফিকেটের কাগজ ওয়েবসাইটে পাইনি।’

২০ লাখ টাকা ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এটির তদন্ত চলছে।’

কী পরিমাণ সার্টিফিকেট-বাণিজ্য হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান বলেন, ‘মিডিয়ায় শুনতে পেয়েছি পাঁচ কি সাড়ে পাঁচ হাজার। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই কতগুলো হয়েছে।’

আপনার স্ত্রী বিনা অপরাধে জেল খাটছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বিনা অপরাধেই জেল খাটছে।’

আপনাকে ওএসডি করা হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়ায় একটি সংবাদ চলে আসছে এবং ডিবির কাছে তথ্য আছে, সে জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় আলী আকবর খান দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ। আজ ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। পরে ডিবি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আগারগাঁওয়ের পীরেরবাগ, পাইকপাড়ায় সিস্টেম এনালিস্ট শামসুজ্জামানের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছিল। সেখানে তিনি জাল সনদের কারখানা তৈরি করেছিলেন। তিনি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে সার্টিফিকেটের হাজার হাজার কাগজ এনে জালিয়াতি করতেন! সনদ জালিয়াতির ঘটনায় আমরা ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এর মধ্যে ৫ জন সব দোষ স্বীকার করে এ ঘটনায় আর কারা জড়িত ও দায় রয়েছে সে সম্পর্কে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘সদ্য ওএসডি হওয়া চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, তিনি সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। শামসুজ্জামান ও কারিগরির চেয়ারম্যানের স্ত্রী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য ওএসডি হওয়া চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে আমরা ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’

ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা জানতে চেয়েছি- কীভাবে সার্টিফিকেট চুরির পর ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আপলোড করে অনিয়ম করা হয়েছে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস? তিনি একজন চেয়ারম্যান। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ নিয়ে যাচ্ছে, সিসিটিভি আছে, তারা দেখছেন। তবু এই জালিয়াতি হলো! আবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সার্টিফিকেটগুলোতে স্বাক্ষর করে গেছেন মাসের পর মাস। কলেজগুলোর পরীক্ষার সঙ্গে মিলিয়ে দেখে সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর করার কথা, তিনি সেটি করেননি।’

হারুন বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নজিরবিহীন জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ইতিহাসে শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কলঙ্কিত ও কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার মতো ঘটনা। আমি মনে করি, কারিগরির চেয়ারম্যান দায় এড়াতে পারেন না। কোনো সুযোগ নেই। আমরা এখন দেখব, তিনি আসলে সনদ বিক্রির বিষয়টি জানতেন কি না? তার তো জানার কথা? তিনি তো আসল সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে শিক্ষা ও জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। একটা মানুষ পরিশ্রম করেও ভালো রেজাল্ট করতে পারছে না, সেখানে পড়াশোনা না করেই টাকা দিয়ে আসল সার্টিফিকেট কিনে নিচ্ছে। এটা কাঙ্ক্ষিত নয়।’

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সনদ জালিয়াতির ঘটনায় তার দায় সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রয়োজনে তাকে এক-দুদিনের সময় দেব। তিনি যদি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারেন আর আমরা যদি তার সংশ্লিষ্টতা বা অনৈতিক যোগসাজশের তথ্য-প্রমাণ পাই, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

যারা অন্যায় কাজ করেছেন, রক্ষক যদি ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেন, সরিষার মধ্যে যদি ভূত থাকে, তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান ডিএমপির ডিবিপ্রধান।


ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা পদত্যাগ না করেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। তিনি সাংবাদিকদের আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই আদেশের ফলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের পদত্যাগ করতে হবে না।

কুষ্টিয়া ও সিলেটের দুটি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রশ্নে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের আনা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আদেশ দিলেন উচ্চ আদালত।


দুবাইয়ে বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে এমভি আবদুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯ দিন পর গতকাল সোমবার আমিরাতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৭টায় জাহাজটি সমুদ্রবন্দরের জেটিতে নোঙর করে। কেএসআরএম সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ওই রাতে জাহাজ পরিদর্শনে যান মালিকপক্ষের লোকজন, আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ কর্মকর্তারা।

এ সময় বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় তাদের। তারা জানান, জাহাজের ২৩ নাবিকই সুস্থ রয়েছে।

এদিকে কেএসআরএম গ্রুপের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাতের নেতৃত্বে একটি টিম দুবাই গেছেন। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কেএসআরএম গ্রুপের টিমটি নাবিকদের বরণ করে নেন।

কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, জাহাজটি বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। নাবিকরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন বলেও তিনি জানান।

কেএসআরএম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে নাবিকরা চাইলে বাইরে আসতে পারবে না। কারণ, আরব আমিরাতে প্রবেশের জন্য এখনো তাদের ভিসা হয়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ভিসার জন্য আবেদন করা হবে।

জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, এখন জাহাজের কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর নতুন করে কার্গো ভর্তি করার পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

এদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির আজমান প্রদেশে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেএসআরএম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান।

জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। গতকাল ২২ এপ্রিল এটি নোঙর ফেলে জেটিতে। আগে জাহাজটি ২২ এপ্রিল নোঙর করবে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ। তারা আরও জানিয়েছেন পণ্য খালাসের কার্যক্রম শেষ করার পর শুরু হবে নাবিকদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া। ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টায় জলদস্যু মুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে নাবিকরা।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে সুবিধাজনক স্থানে জাহাজটি নোঙর করায় দস্যুরা। এরপর মুক্তিপণের বিষয়ে দেনদরবার শুরু হয়।


এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) সাংবাদিকদের ওপর অভিনয়শিল্পীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর এই অতর্কিত হামলা হয়। সেখানকার পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত। মিশা-ডিপজলদের আয়োজিত দোয়া মাহফিলের পর এই হামলার ঘটনা হয়।

আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত। এই ঘটনায় শতাধিক সংবাদকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে এরই মধ্যে অসংখ্য পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়েছেন।

কে বা কারা হামলা চালিয়েছে- তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সাংবাদিকদের অভিযোগ এই হামলার পেছনে বেশ কয়েকজন শিল্পী জড়িত। জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন মিশা সওদাগর।

এ ঘটনায় দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিথুন আল মামুন, তার ক্যামেরাম্যানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

ঘটনায় আহত সাংবাদিক মিথুন আল মামুন জানান, তিনিসহ প্রায় ১০/১২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তার নিজের মুঠোফোন হারিয়েছেন এবং অনেকগুলো ক্যামেরাও ভেঙেছে। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের বিনোদন বিভাগের প্রধান লিমন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেই আমরা এসেছিলাম। সংবাদ সংগ্রহের জন্য এফডিসিতে আসি। কিন্তু এইভাবে সহকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।’

এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের রক্তাক্ত হওয়ার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়।

উল্লেখ্য, এই ঘটনার আগে বিএফডিসিতে বিকেল সাড়ে ৫টায় সভাপতি মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ নেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বাকি সদস্যরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।


সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও কাতার দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার ও সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।

চুক্তিগুলো হচ্ছে: বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, বাংলাদেশ সরকার এবং কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, কাতার এবং বাংলাদেশের মধ্যে সমুদ্র পরিবহন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং বাংলাদেশ-কাতার যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা।

চুক্তি ছাড়াও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম), বন্দর (এমব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতার স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়।

এর আগে কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।

তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হন। পরে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।

এরপর তিনি পিএমও ত্যাগ করে বঙ্গভবনে যান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরের সম্মানে বঙ্গভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা সফরে আসেন এবং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং কাতারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

পাশাপাশি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি বাংলাদেশ সরকার ও কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কিউসিসিআই) চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলাদেশ-কাতার জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা-সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি স্বাক্ষর করেন।

পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকেও স্বাক্ষর করেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম) ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

বন্দরের ক্ষেত্রে সহযোগিতায় (এমডব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ) কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্বাক্ষর করেছেন।

অনুষ্ঠানে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানী ঢাকার একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে মিরপুরের কালসি এলাকার বালুর মাঠে পার্কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালসি ফ্লাই ওভার পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে কাতারের আমিরের নামে।

এখন থেকে রাস্তা ও পার্কটি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি অ্যাভিনিউ এবং শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি পার্ক নামে পরিচিত হবে।


শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে এমভি বাঙালি নামে লঞ্চের তৃতীয় তলায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার সময় লঞ্চে কোনো যাত্রী ছিল না।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট।

তিনি জানান, সদরঘাট নদীর ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ও পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।


বাংলাদেশ-কাতারের ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মঙ্গলবার এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।

পাঁচ চুক্তির মধ্যে রয়েছে- উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।

পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।

সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় শেখ হাসিনা ও শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে। আজ সোমবার রাত ৯টায় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিদ্যুৎ বিভাগের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিভাগ জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এর আগে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল গতকাল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।


ফেসবুকের লাইভ শো ফিরিয়ে দিল ৩০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বোনকে

হারিয়ে যাওয়া বড় বোন রাশিদার সাথে ছোট বোন রহিমা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৪১
ইমতিয়াজ সনি

এ যেন রূপকথার কল্পকাহিনি। বাস্তব জীবনের এক অবিশ্বাস্য গল্প! ৩০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বোনকে খুঁজে পাওয়ার গল্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হওয়া একটি ভিডিওর সূত্র ধরে তিন দশক পর দেখা হলো দুই বোনের। অঝোরে কাঁদলেন ওরা। এই কান্না হারানো স্বজনকে ফিরে পাওয়ার। এই কান্না আনন্দের।

হারিয়ে যাওয়া বড় বোনের নাম রাশিদা। তার বর্তমান ঠিকানা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে সোনার বাংলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৫ নম্বর ঘর। আর তাকে খুঁজে পাওয়া ছোট বোনের নাম রহিমা খাতুন।

রহিমার ঠিকানা ঢাকার মোহাম্মদপুরে ইকবাল রোডের একটি বাড়ি। এখানে গৃহকর্মী হিসেবে থাকেন তিনি। তার মায়ের বাড়ির স্থায়ী ঠিকানা কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে। সেখানে থাকেন তার মা মোছাম্মৎ বেগম ও ছোট ভাই ইউনুস।

সন্তানদের ছোট রেখেই মারা যান তাদের বাবা আকুব্বর। এরপর ওদের মা পুনরায় বিয়ে করেন। সেই বাবাও মারা গেছেন সাত বছর আগে।

রাশিদা তার পরিবারের খোঁজ না জানলেও তার অবস্থানস্থলের সঙ্গে মা ও ভাইবোনের দূরত্ব খুব বেশি ছিল না। এক পাশে কুষ্টিয়া, অন্য পাশে সিরাজগঞ্জ। মাঝখানে শুধু পাবনা জেলা।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এনায়েতপুর গ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দূরত্ব ৯৫ কিলোমিটার। গাড়িতে এই দূরত্ব পাড়ি দিতে সময় লাগে মাত্র ৩ ঘণ্টা ১২ মিনিট। অথচ এই পথটুকুর দূরত্ব ঘুচতে লেগে গেছে দীর্ঘ ৩০টি বছর।

এনায়েতপুর গ্রামে ছোট্ট একটি বাড়িতে মা মোছাম্মৎ বেগম, তার দুই মেয়ে সাত বছর বয়সি রাশিদা ও চার বছর বয়সি রহিমা এবং দুই বছর বয়সি ছেলে ইউনুসকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

মা মোছাম্মৎ বেগম সে সময় পরিবারের সদস্যদের দুমুঠো খাবারের সংস্থান করতে বড় মেয়ে রাশিদাকে কাজে পাঠান কুমারখালীর লতিফ নামের এক ব্যক্তির ঢাকার বাসায়। এরপর হঠাৎ একদিন গৃহকর্তা লতিফের কাছ থেকে খবর আসে যে রাশিদা তার ঢাকার বাসা থেকে পালিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। মা আত্মীয়-স্বজনসহ আশপাশের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও মেয়ের খোঁজ পাননি। নিজের নামে থাকা সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে রাশিদাকে খুঁজতে থাকেন মা। একপর্যায়ে সেই টাকাও শেষ হয়ে যায়। আর নিখোঁজই থেকে যান রাশিদা। এই পর্যায়ে নিজ বাড়িতে বসে মেয়ের ফিরে আশায় পথ চেয়ে চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না মায়ের।

ছোট দুই ভাই-বোন রহিমা ও ইউনুস বোড় বোন রাশিদা হারিয়ে যাওয়ার মর্ম না বুঝলেও মায়ের প্রতিটি দিন কাটতে থাকে বড় মেয়ের আশায় পথ চেয়ে থেকে। এভাবেই রাশিদার পথ চেয়ে মায়ের কেটে যায় ৩০টি বছর।

এনায়েতপুর গ্রামের ছোট্ট বাড়িটিতে এখন একাই থাকেন রাশিদার মা। সাত বছর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে দিন কাটে তার। একমাত্র ছেলে ইউনুস থাকে কুষ্টিয়া শহরে। আর ছোট বোন রহিমা কাজ করে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের একটি বাসায়।

যেভাবে রাশিদার খোঁজ পান রহিমা

রহিমা ঢাকায় যে বাসায় কাজ করেন তাদের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়ায়। ঈদের ছুটিতে তারা ঝিনাইদহে যান। আর রহিমা চলে যান কুমারখালীতে। ১৭ এপ্রিল তাদের ঢাকায় ফেরার কথা। তাই ১৬ তারিখে কুমারখালী থেকে ঝিনাইদহে গৃহকর্তার বাসায় অবস্থান করেন রহিমা।

রহিমা এই প্রতিবেদককে জানান, “১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার সময় হঠাৎ আমাদের গ্রাম থেকে এক চাচা ফোনে জানান যে ফেসবুকে আর জে কিবরিয়ার ‘আপন ঠিকানা, পর্ব-৫৭৫’ নামের এক অনুষ্ঠানে হারিয়ে যাওয়া এক মেয়ে আমাদের গ্রামের নাম বলে নাকি আমার বোন দাবি করছে। সে সময় চাচা আমাকে ওই ‘আপন ঠিকানা’ নামের অনুষ্ঠান দেখতে বলেন।”

রহিমা বলেন, ‘এরপর আমি বাসার লোকজনে সহযোগিতায় ফেসবুকের ওই অনুষ্ঠানের ভিডিওটা দেখি। ভিডিওর ওই মেয়েকে প্রথম দেখায়ই আমার বুকের মধ্যে একটা বাড়ি মারে! সব কিছু কেমন যেন ওলট-পালট হয়ে যায়। আমার গা তখন কাঁপছিল! মুখ দিয়ে কোনো কথা আসছিল না।’

‘তবে প্রথম দেখায়ই আমি চিনে ফেলি যে এটা আমারই বড় বোন রাশিদা। চিনব না? আমার রক্ত, আমি এক দেখায়ই চিনব। একদম আমার মতো দেখতে। তা ছাড়া ভিডিওতে সে বলছে তার ছোট বোনের নাম রহিমা, ভাইয়ের নাম ইউনুস, মায়ের নাম বেগম। সবই মিলে যায়।’

রহিমা বলতে থাকেন, ‘তখন সব কিছুই আমার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল। কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। শুধু আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল। আমি কল্পনাও করিনি আমি আমার বড় বোনকে আর খুঁজে পাব!’

‘তখন শুধুই ভাবছিলাম- হারিয়ে যাওয়ার পর আমার বোনের কত কষ্টই না হয়েছে। কত আপদ-বিপদই না তার পার করতে হয়েছে। তখন থেকেই মনের মধ্যে দুমড়ে-মুছড়ে যাচ্ছে, কখন আমি আমার বোনকে সামনা-সামনি দেখতে পাবে? কখন বোনকে একটু জড়িয়ে ধরব? বলেন রহিমা।

রহিমা আরও বলেন, “ওই রাতেই আমাদের বাসা থেকে ফেসবুকের ওই ‘আপন ঠিকানা’ নামের অনুষ্ঠান যারা করেন তাদের মধ্যে তানভীর ও আরিফ নামের দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা আমাদের ঢাকায় যেতে বলেন। এরপর আমি কুমারখালীতে মাকে ফোন করে ঘটনা জানাই।”

এরপর, তানভীর ও আরিফের সঙ্গে কথা অনুযায়ী আর জে কিবরিয়ার ফেসবুক শো ‘আপন ঠিকানা’র মহাখালীস্থ স্টুডিওতে গতকাল সোমবার বিকেলে রহিমার সঙ্গে দেখা হয় ৩০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বড় বোন রাশিদার। প্রথম দেখাতেই দুই বোন পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ সময় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর এনায়েতপুর গ্রামে থাকা রহিমার মা বেগমের সঙ্গেও ভিডিও কলে দেখা ও কথা হয় রাশিদার। সে সময় মা-মেয়ে দু’জনই অঝোরে কাঁদতে থাকেন। ফিরে পাওয়া মেয়েকে উদ্দেশ করে মা বলতে থাকেন- ‘তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়। আমি তোকে ছুঁয়ে দেখব।’

রাশিদা স্টুডিও থেকে বের হয়ে রহিমাকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘তোর তো নাকফুল ছিলো না, এখন তোর নাকে নাকফুল। তুই কত বড় হয়ে গেছিস। আমার ছোট ভাইটাও মনে হয় অনেক বড় হয়ে গেছে। মাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে খুব মন চাচ্ছে।’

৩০ বছর আগে রাশিদার হারিয়ে যাওয়ার গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছোট বেলায় মা যে বাড়িতে আমাকে কাজ করতে পাঠিয়েছিল সেখানে বাসার লোকজন আমাকে খুব মারত। একদিন মেরে তারা আমার মাথা দিয়ে রক্ত বের করে দিয়েছিল। সেদিনই রাগ করে ওই বাসা থেকে পালিয়ে একটা বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার গাড়িতে উঠে বসি।

‘ওই বাসে ওঠার বিশেষ কারণও ছিল। বাসের লোকজন বলছিল যে উল্লাপাড়ায় একটা এনায়েতপুর আছে। সে সময় আমার মনে ছিল যে আমার বাড়িও এনায়েতপুরে। কিন্তু আমার জেলা কুষ্টিয়া, থানা কুমারখালী সেটা তখন মনে ছিল না।’

রাশিদা বলেন, ‘উল্লাপাড়ার এনায়েতপুরে গিয়ে দেখি এটা আমার বাড়ির এনায়েতপুর না। তখন ওই এনায়েতপুরের এক মহিলা তাদের বাড়িতে থাকতে দেয়। তাদেরও কোনো মেয়ে সন্তান ছিল না। এর কিছুদিন পর তারা আমাকে তাদের পারিচিত একজনের ঢাকার শ্যামলীর বাসায় কাজ করতে পাঠায়। সেখানে আমি অনেক বছর থাকি।’

রাশিদা জানান, শ্যামলীর ওই বাসার লোকজন তাকে একসময় বিয়ে দিয়ে দেন। তার স্বামীর বাড়িও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে তিনি উল্লাপাড়ায় চলে যান। তখন থেকে তিনি এখানেই ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারীর সময় আমার স্বামী করোনায় মারা যায়। তারপর সরকার আমার থাকার জন্য এনায়েতপুরের এক আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটা বাড়ি বরাদ্দ দেয়। এখন আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে টিউবওয়েল বসানোর কাজ করে এবং মেঝো ছেলে এতিমখানায় থাকে। আর ছোট সন্তান মেয়েটা আমার সাথেই থাকে। আমি মানুষের বাসায় কাজ করি।’

ফেসবুক শো ‘আপন ঠিকানা’র খোঁজ পেলেন কীভাবে জানতে চাইলে রাশিদা বলেন, ‘আমি যে বাড়িতে কাজ করি ওই বাড়ির মেয়ে আমাকে এই অনুষ্ঠানের খোঁজ দেয়। সেই আমাকে এখানে নিয়ে আসে।’

রাশিদা বলেন, ‘এখন আমার একটাই চাওয়া আমার ভিটেয় (বাড়ি) যাওয়া। আমি আজ সিরাজগঞ্জ চলে যাব। তবে দুই-একদিনের মধ্যেই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কুষ্টিয়ায় মায়ের কাছে যাব। মায়েরে ছুঁয়ে দেখব।’

সবশেষে তিনি বলেন, ‘সামান্য জেলা আর থানার নাম মনে না থাকায় আজ ৩০ বছর আমি আমার পরিবার থেকে আলাদা। আমার শুধু মনে ছিল এনায়েতপুর গ্রামের কথা। কুমারখালীর এনায়েতপুরের খোঁজে বের হয়ে আমি এখনও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আরেক এনায়েতপুরের বাসিন্দা হয়ে আছি।’


banner close