শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ কার্তিক ১৪৩২

ডেমরায় গরম রড ঢুকে শ্রমিকের মৃত্যু

প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২২:০৩

রাজধানীর ডেমরায় স্টিল মিলে শরীরে গরম রড ঢুকে আলম (২৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কারখানাটির সুপার ভাইজার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডেমরা বাঁশেরপুল একটি রোলিং স্টিল মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আলম। বিকেলে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত গরম রডের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সেই রড তার বুকে ঢুকে যায়। তার সহকর্মীরা সেই রড কেটে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

মৃত আলমের ভগ্নিপতী ও সহকর্মী মো. জুলহাস জানান, নেত্রকোনা সদর উপজেলার শিমুলজানি গ্রামের ভুট্টু মিয়ার ছেলে আলম। বর্তমানে ওই কারখানাতেই থাকতেন। ৪-৫ বছর যাবত সেখানে কাজ করে আসছিলেন।


জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির এখতিয়ার এই সরকারের নাই: মির্জা ফখরুল

* ‘ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ একপেশে, জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’ * ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপ্রয়োজনীয়–অযৌক্তিক’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত দলটির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
গত বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত বিষয়গুলো কার্যকর করার উদ্দেশে সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ শিরোনামে একটি আদেশ জারি করবে। এরূপ প্রস্তাবিত আদেশের একটি খসড়া সংযুক্তি-২ ও সংযুক্তি-৩-এ সংযোজিত করা হয়েছে। সরকারের এ রকম আদেশ জারি করার এখতিয়ার নেই। সংবিধানের ১৫২ নম্বর অনুচ্ছেদের সংজ্ঞা অনুসারে ‘আদেশ’ আইনের মর্যাদাপ্রাপ্ত। অতএব তা জারি করা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার।
জুলাই সনদের সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত, ভিন্নমত, নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখ করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অর্থাৎ ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ একপেশে। জবরদস্তিমূলকভাবে তা জাতির ওপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক আলোচনা ছিল অর্থহীন। অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সে কারণে সংলাপের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ভিন্নমত পোষণে রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে আমলেই নেয়নি। এই বাস্তবায়ন আদেশে (সুপারিশ) বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পাশাপাশি একই সঙ্গে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। তারা আলাদাভাবে সংসদ সদস্য ও সংবিধান সংস্কার পরিষদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। অর্থাৎ নির্বাচিত জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে অভিহিত হবে। প্রশ্ন হলো, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত ছিল না। আলোচনার জন্য উপস্থাপিত হয়নি। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হওয়ার অবকাশও ছিল না। এ–জাতীয় কোনো সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করতে হলে তা–ও পরবর্তী জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলা হয়েছে, ওই বাস্তবায়ন আদেশ অনুসারে অনুষ্ঠিত গণভোটে যদি ইতিবাচক সম্মতি পাওয়া যায়, তাহলে সংবিধান সংস্কার বিলটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ তার দায়িত্ব পালনে সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠান হওয়ার আগে এ ধরনের আগাম পদক্ষেপ আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়।
গণভোট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রস্তাবিত গণভোট অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। সময় স্বল্পতা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল অঙ্কের ব্যয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ব্যাপক লোকবল নিয়োগসহ একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো বিশাল আয়োজন বিবেচনায় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। একই আয়োজনে ও একই ব্যয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠান করা বাঞ্ছনীয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ উল্লেখিত যেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আইন, বিধিবিধান পরিবর্তন বা সংশোধন দরকার, সরকার তা অধ্যাদেশ জারি ও বিধিবিধান/সংশোধন করে বাস্তবায়ন করতে পারে। যেসব সিদ্ধান্ত নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো অবিলম্বে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করতে পারে। এই প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্য পোষণ করেছে। এ ছাড়া জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য তারা গণভোটে সম্মত হয়েছেন। যেসব বিষয়ে ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে, তার উল্লেখ না রেখে এবং দীর্ঘ আলোচনায় যেসব প্রসঙ্গ আলোচনায় আসেনি, তা অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্য সব সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য বিধায় তারা একমত হতে পারছেন না।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনায় কিছু কিছু বিষয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট সহকারে ঐকমত্য হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, তাতে নোট অব ডিসেন্টের অংশে এই বক্তব্য স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে ভিন্নমত/নোট অব ডিসেন্ট প্রদানকারী কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা উল্লেখ করে যদি জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করে, তাহলে তারা সে মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা কেবল আলোচনার মাধ্যমে প্রণীত সনদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু সেদিন জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত কপি তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। পরবর্তী সময় মুদ্রিত পুস্তক হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদের কপি তারা হাতে পাওয়ার পর দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্মত কয়েকটি দফা তাদের অগোচরে আবার সংশোধন করা হয়েছে। যেমন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে টাঙানো-সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করার বিষয়টি সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। সংবিধানের ১৫০ (২) অনুচ্ছেদ (পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম তফসিল) পুরোপুরি বিলুপ্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল সম্মতি প্রকাশ করেছে। কিন্তু অগোচরে সেটা চূড়ান্ত সনদে সংশোধনী আনা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ ২৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে। পেশ করা চিঠিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাও একজন দস্তখতকারী। এতে ঐকমত্য কমিশন ও সরকার একই অঙ্গ হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এই পত্রে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সংবিধান সংস্কারসংক্রান্ত বিষয়গুলো দুটি বিকল্প পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের ও আইনগত ভিত্তি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি যে এই সব সুপারিশ কেবল জাতিকে বিভক্ত করবে, ঐক্যের বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। মনগড়া যেকোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করলে জাতীয় জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।’
দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ ২০২৪ সালের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে জাতির প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা সবার কাম্য বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম লক্ষ্য হবে, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। এর মাধ্যমে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। আর নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে প্রকৃত অর্থে জাতীয় জীবনের সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিম রহমান ও সালাউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।


নির্বাচনী উৎসবে দেশ: ইসির প্রস্তুতি প্রায় শতভাগ, নজর ভোটার আস্থায়

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে।

রাজধানী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত নির্বাচনযন্ত্র সচল রাখতে যে বিশাল প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজন, তা এখন শেষ পর্যায়ে। কমিশনের ভাষায়-‘ভোটের সব আয়োজন সম্পন্ন, এখন শুধু জনগণের অংশগ্রহণের অপেক্ষা।’

ইসির সূত্রে জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের প্রাথমিক সময়সূচি নির্ধারিত রয়েছে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, আসন সীমানা পুনর্বিন্যাস, নির্র্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, নির্বাচনী বিধান সংশোধনসহ প্রায় সব প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আজ জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ‘আমরা একটি উৎসবমুখর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। এজন্য যেকোনো প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত বা আইনগত প্রস্তুতির ঘাটতি যেন না থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করছি।’

তিনি জানান, ভোটার তালিকা ও কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার হালনাগাদের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর প্রায় ২৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ভোটার ৫২ শতাংশ।

কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন। সারাদেশে ভোট গ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরুষদের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারীদের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি ভোটকক্ষ রাখা হয়েছে।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ শেষ। রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত হলেই শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।’

তিনি জানান, কমিশনের কাজ সময়মতো শেষ করতে ১৮টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টাস্কফোর্স নির্দিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। যেমন- কোনোটি লজিস্টিক, কোনোটি আইটি বা নিরাপত্তা বিষয়ক।

প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আচরণবিধি সংশোধন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) হালনাগাদ, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনাও প্রায় সম্পন্ন। সংশোধিত আরপিও-২০২৫ অনুযায়ী, এবার ‘না ভোট’ পুনর্বহাল করা হয়েছে, ইভিএম ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বাতিল হয়েছে এবং প্রার্থীর সম্পদ, আয় ও কর সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া অনুদানে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার বাধ্যতামূলক, পলাতক আসামিদের প্রার্থিতা নিষিদ্ধ এবং নির্বাচনী জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন বলছে, এই সংস্কারগুলো নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।

ইসি সচিব বলেন, ‘ভোট শুধু সংখ্যার হিসাব নয়, এটি আস্থার বিষয়। সেই আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।’

নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায়ও জোর দিয়েছে কমিশন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভোটের আগে তিন দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পর চার দিনসহ মোট আট দিন মাঠে থাকবে বাহিনী। এতে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ, এক লাখ সেনাসদস্য এবং আনসার-ভিডিপির সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

ইসি জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে যাতে তারা ভোটের সময় নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা রাখতে পারেন।

এছাড়া নির্বাচনকালীন ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষায় প্রথমবারের মতো ‘মিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে কমিশন। এই সেল ভুয়া তথ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর বিভ্রান্তিকর প্রচারণা এবং অনলাইন গুজব পর্যবেক্ষণ করবে। এ বিষয়ে এনটিএমসি, বিটিআরসি, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় একটি সমন্বিত ড্যাশবোর্ড তৈরি হচ্ছে।

প্রবাসী ভোটারদের জন্যও এবার বড় উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত ভোটাররা ডাকে ভোট দিতে পারবেন।

কমিশন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১১টি দেশে ইতোমধ্যে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আগামী বছর আরও আটটি দেশে এই সুযোগ সম্প্রসারিত হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহিতুল হক বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কমিশনের স্বচ্ছতা ও দৃঢ় মনোভাবই জনগণের আস্থা ফেরানোর প্রথম ধাপ। যদি নির্বাচন কমিশন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে, তাহলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব।’

ভোটের প্রযুক্তিগত দিকেও নতুনত্ব আনছে ইসি। ভোটার ডেটাবেইস ও কেন্দ্রীয় সার্ভারে নিরাপত্তা বাড়াতে সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আপগ্রেড করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোটের দিন জেলা পর্যায়ের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে রিয়েল-টাইম আপডেট মনিটর করা হবে ।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এবার আমরা একেবারে প্রক্রিয়াগত ব্যর্থতা শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ডিজিটালি হিসাব থাকবে, যা সরাসরি কমিশনে রিপোর্ট হবে।’

নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। শীর্ষ তিনটি দল প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইসি বলছে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, প্রতীক বরাদ্দের কাজ নভেম্বরেই শেষ হবে। প্রার্থীদের হলফনামা যাচাইয়ের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে, যা এনবিআর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তথ্য যাচাই করবে।

ইসি বলছে, নির্বাচন শুধু প্রশাসনিক আয়োজন নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের উৎসব।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘জনগণ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারেন, তবেই নির্বাচনের সাফল্য সেখানেই। আমরা চাই, প্রতিটি ভোটার যেন নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে ভোট দিতে পারেন।’

জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গ্রামীণ পর্যায়ে গণসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে। রেডিও, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে পোস্টার, ব্যানার ও শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে ভোটারদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য ও প্রচার বিভাগ জানায়, এবার ভোটার সচেতনতা কর্মসূচিতে বিশেষভাবে নারী ও তরুণ ভোটারদের টার্গেট করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই, ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণদের সক্রিয় ভোটার হিসেবে দেখতে। তাদের অংশগ্রহণ বাড়লেই নির্বাচনে প্রাণ ফিরে আসবে।’

সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের চোখ এখন এক জায়গায়- কেমন হয় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। ইসি বলছে, তাদের প্রস্তুতি শতভাগ, আর বাকিটা দেশের জনগণের হাতে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের ভাষায়, ‘এই নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের আরেকটি মাইলফলক হবে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণই এবার প্রকৃত বিজয়ী হবে।’ সূত্র: বাসস


বাজারে ক্ষতিকর রঙ মেশানো ‘মুগ’ ডাল! সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

‘মথ’ নামের এক ধরনের ডালে ক্ষতিকর রঙ মিশিয়ে তা ‘মুগ’ ডাল হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে— এমন তথ্যের ভিত্তিতে সতর্ক করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বিএফএসএ জানায়, ’মথ’ ডাল নামক ডালের সঙ্গে হলুদ রঙ মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বাজারে বিক্রির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এই রঙ খাদ্যে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত নয় এবং এটি মানবদেহের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।”

সংস্থাটি জানায়, গত অর্থবছরে দেশে মুগ ডালের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ মথ ডাল আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে ‘মথ ডাল’ নামে কোনো পণ্য দেখা যায়নি। বরং স্থানীয় বাজার থেকে সংগৃহীত ‘মুগ ডাল’-এর নমুনার অর্ধেকের বেশি রঙ মিশ্রিত পাওয়া গেছে।

বিএফএসএ আরও জানায়, অননুমোদিতভাবে কোনো রঙ খাদ্যে ব্যবহার, সংযোজন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয় করা নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩-এর ২৭ ধারার অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের রঙযুক্ত ডাল আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ ও বিক্রি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে সাধারণ ক্রেতাদেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মুগ ডাল কেনার সময় এর বিশুদ্ধতা যাচাই করতে এবং সন্দেহজনকভাবে উজ্জ্বল রঙ বা অস্বাভাবিক আভাযুক্ত ডাল না কেনার আহ্বান জানানো হয়েছে।


মুরগির মাংস দেখে আনন্দে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল শিশু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। দীর্ঘদিনের অবরোধে বিপর্যস্ত এখানকার জীবনযাপন। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা ও গুলি এড়িয়ে বেঁচে থাকাই যেখানে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে পুষ্টিকর খাবারের দেখা পাওয়া যেন এক স্বপ্নের মতো।

ইসরায়েল যুদ্ধ চলাকালীন মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশে বাধা দেয়। এমনকি ফিলিস্তিনি জেলেদের সাগরে মাছ ধরাও নিষিদ্ধ ছিল। ফলে সাধারণ মানুষ চরম খাদ্যসংকটে পড়েছিল।

গত ১০ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে গাজায়। খুলতে শুরু করে হাটবাজার, শিশুরা দীর্ঘদিন পর মুখ দেখে পুষ্টিকর খাবারের।

এমন এক সময়ে এক ফিলিস্তিনি বাবা দীর্ঘ এক বছর পর সন্তানদের জন্য মুরগির মাংস কিনে আনেন। মুরগি দেখে ঘরে থাকা একটি শিশু আনন্দে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের মাঝে বসে থাকা তিন শিশুর উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে ছোট্ট ঘরটি।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। আলজাজিরা জানায়, শিশুরা মুরগি দেখে “আল্লাহু আকবর” বলে চিৎকার করে এবং বলে, “আল্লাহ মহান, সত্যিই মুরগি!”

অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশুকে আপেলের নাম জিজ্ঞেস করলে সে ভুল করে “তরমুজ” বলে—যুদ্ধের ভয়াবহতায় যেখানে ফলের নামও ভুলে গেছে শিশুরা।

গাজায় চলমান দুই বছরের যুদ্ধের কারণে লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভুগছে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে শত শত শিশু মারা গেছে। কেউ কেউ বেঁচে থাকার জন্য ঘাস ও লতা-পাতা খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বলছে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজা এখন এক নিঃস্ব ভূমি—স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, বাজার, এমনকি শরণার্থী শিবিরও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পুষ্টিকর খাবার আজ ফিলিস্তিনিদের কাছে বিলাসিতা।


১৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হচ্ছে অবৈধ মোবাইল সেট, মিলবে না নেটওয়ার্কও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে আর কাজ করবে না অবৈধ বা আনঅফিসিয়াল পথে আসা কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট। সেদিন থেকেই চালু হতে যাচ্ছে জাতীয় পর্যায়ের ‘ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)’ সিস্টেম, যার মাধ্যমে দেশের সব বৈধ মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর যুক্ত হবে একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজে।

এই সিস্টেম চালু হলে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আমদানি করা কিংবা বিদেশ থেকে আনা ও উপহার পাওয়া মোবাইল সেট বাংলাদেশে নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে না। বৈধভাবে ব্যবহার করতে হলে সেসব ফোনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন যেসব হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, সেগুলো প্রথমে অস্থায়ীভাবে সক্রিয় থাকবে। এরপর এনইআইআর সিস্টেমের মাধ্যমে বৈধতা যাচাই করা হবে। ফোন বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত থাকবে, আর অবৈধ ফোন এক মাস পর নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

তবে বর্তমানে নেটওয়ার্কে সচল সব বৈধ বা অবৈধ হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে।

বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চোরাই ও আনঅফিসিয়াল পথে আমদানিকৃত মোবাইল সেট ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গেছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি অপরাধীরাও এসব ফোন ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে যাচ্ছে।

এই সমস্যা মোকাবিলায় এবং নেটওয়ার্ককে নিরাপদ রাখতে এনইআইআর সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক বলেন, “এই সিস্টেমের মাধ্যমে অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বন্ধ হবে। পাশাপাশি স্থানীয় মোবাইল শিল্প সুরক্ষা পাবে এবং সরকারের রাজস্ব ক্ষতি বন্ধ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এনইআইআর কার্যকর হলে ফোন ক্লোনিং ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে বড় অগ্রগতি হবে। এতে টেলিযোগাযোগ সেবার মানও উন্নত হবে।”

গ্রাহকের ফোন বৈধ কিনা— জানবেন তিন ধাপে

১. *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করুন।

২. ফোনের ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বর লিখে পাঠান।

৩. ফিরতি এসএমএসে জানানো হবে সেটটির নিবন্ধন অবস্থা।

এছাড়া neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটেও হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাই করা যাবে।

বিদেশ থেকে আনা ফোন নিবন্ধনের নিয়ম

বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল রাখতে ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য গ্রাহককে neir.btrc.gov.bd পোর্টালে গিয়ে ‘Special Registration’ সেকশনে IMEI নম্বর, পাসপোর্ট, ভিসা, ক্রয় রশিদ বা কাস্টমস কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।

নতুন ফোন কেনার আগে করণীয়

১৬ ডিসেম্বরের পর নতুন ফোন কেনার আগে গ্রাহকরা ফোনের বৈধতা যাচাই করতে পারবেন। এজন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে—

KYD <space> 15 digit IMEI,

এবং পাঠাতে হবে ১৬০০২ নম্বরে। ফিরতি মেসেজে জানানো হবে ফোনটি বৈধ কিনা।

বৈধ ফোন হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।

চুরি বা হারানো ফোন সহজে ব্লক ও আনলক

নতুন সিস্টেমে গ্রাহকের ফোন চুরি হলে বা হারালে সহজে সেটটি ব্লক করা যাবে। এজন্য neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার বা *USSD চ্যানেল (১৬১৬১#) ব্যবহার করা যাবে।

ইন্টারনেট না থাকলেও অপারেটরের ১২১ নম্বরে কল করে সেবা নেওয়া সম্ভব হবে।

৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি রোধ হবে

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “অবৈধ হ্যান্ডসেটের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এনইআইআর চালুর মাধ্যমে এই ক্ষতি রোধ করা যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালে দেশের ৭৩ শতাংশ ডিজিটাল জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে অবৈধ ডিভাইস ও সিম ব্যবহার করে। নতুন সিস্টেম চালু হলে প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।”

স্থানীয় শিল্পে গতি ও প্রতিযোগিতা বাড়বে

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “এনইআইআর চালু হলে দেশীয় ১৮টি হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।”

তিনি জানান, দেশে এখনও ৩৮ শতাংশ ফিচার ফোন ব্যবহার হচ্ছে, তাই স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

সরকার ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনইআইআর চালু হলে টেলিযোগাযোগ খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এর মাধ্যমে অবৈধ ফোনের ব্যবহার বন্ধ হয়ে রাজস্ব বাড়বে, নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং দেশীয় মোবাইল শিল্প পাবে নতুন গতি।


ঐকমত্য কমিশন জনগণের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছে: মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের ব্যত্যয় হলে দায় ইউনূস সরকারের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে ওই সুপারিশ সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, ততই বিভক্ত বাড়ছে। বিভক্ত হয়ে পড়াটা, এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও উপলব্ধি করতে হবে। মিডিয়াতে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে কতগুলো পক্ষ নিয়ে একেবারে নেমে যাওয়া হয়। প্রতিপক্ষকে একেবারে পুরোপুরি ঘায়েল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গত মঙ্গলবার সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যে বিষয়গুলোতে তারা একমত ছিলেন না, সেখানে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সেই নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক হয়ে তারা লক্ষ্য করলেন, সুপারিশে সেই বিষয়গুলো নেই। নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐক্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন?
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি বলব, জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা।’
এ মুহূর্তে, এই অন্তর্বর্তীকালের সময়টা ঐক্যের সময় বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এখানে ন্যূনতম বিষয়গুলোয় একমত হয়ে একটা রাস্তা ধরা, একটা ট্র্যাক ধরা- সেই জায়গাটাকে বিভক্ত করে ফেলা হচ্ছে। কারা করছেন, কেন করছেন, এটা নিশ্চয়ই সবাই উপলব্ধি করতে পারছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি কথা তারা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চান, যা তারা এর আগেও বলেছেন। তারা মনে করেন, সব সংকটের মূলে যে বিষয়টা আছে, তা হলো, সত্যিকার একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টে এই সব সমস্যাকে সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসবেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। সেভাবে দেশ চলবে। তারা সে কারণেই ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরেই নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। তখন অনেকে বলেছিল, তারা ক্ষমতা চান, সে জন্য অতি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। আজ প্রমাণিত হচ্ছে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে, তত বেশি সেই শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শক্তিশালী হচ্ছে। যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়, এখানে একটা অরাজকতা তৈরি করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি কিন্তু এইবার জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ওয়াদাবদ্ধ। আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে আপনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। সুতরাং আজকে যদি এর থেকে কোনো ব্যত্যয় ঘটে, এর থেকে বাইরে যদি যান, তার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে। এ কথাটা আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই।’
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘হঠাৎ করে তারা সুপারিশে দেখলেন, নোট অব ডিসেন্টের উল্লেখ নেই। এটা তো কোনো ঐকমত্য হয়নি। এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই কমিশন দেবে। তারা জুলাই সনদ সই করেছেন। সনদে নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) লেখা আছে। এটা দলগুলো নিজ নিজ ইশতেহারে দেবে। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, ম্যান্ডেট পাবে, সেই দল নিজস্ব প্রস্তাব অনুযায়ী আপত্তির অংশগুলোর মীমাংসা করবে।’
জুলাই সনদের আদেশ জারি প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘অনেকে দাবি তুলছেন যে আদেশ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা আদেশ দেবেন কোনো ক্ষমতাবলে? সরকার আদেশ দেয়, সেটা রাষ্ট্রপতির নামে যায়, এটা যেকোনো রাষ্ট্রের নিয়ম। রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতীক। যদি প্রধান উপদেষ্টা নিজে এটা জারি করেন, তার মানে তিনি নিজেকে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করছেন এবং কার্যত সংবিধানকে স্থগিত করছেন।’
জোনায়েদ সাকি সতর্ক করে বলেন, ‘ঐকমত্য ছাড়া কেউ কারও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর হবে না। এটা সবার উপলব্ধি করা দরকার।’
প্রকাশনা উৎসবে আরও বক্তব্য দেন চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, লেখক ও সাংবাদিক শাহ্‌নাজ মুন্নী।


ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা হতাশ: সালাহউদ্দিন আহমদ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেল এক সেমিনারে এ কথা জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গত ১৭ তারিখ যে দলিল স্বাক্ষর হয়েছে সেই বিষয়গুলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশে পুরোপুরি নাই। বলা হলো ৪৮টা দফার ওপর গণভোট করা হবে। সেই আলাপ তো হয়নি আমাদের সাথে।
এতদিন তাহলে কেন এত আলোচনা, এত কসরত করা হলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যেগুলো ঐকমত্য হবে সেগুলো বাস্তবায়ন হবে এমন প্রস্তাব ছিল। জুলাই সনদ যেটা স্বাক্ষর হয়েছে সেটা নাই, আছে কমিশন ও দুই-একটি দল যে প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো।
কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা জানিয়ে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে এতে জাতিতে বিভক্তি হবে, অনৈক্য হবে, কোনো ঐকমত্য হবে না। তাদের উদ্দেশ্য কী আমরা জানি না। এর মাধ্যমে তারা কী অর্জন করতে চায় আমরা জানি না।
এছাড়া আরপিও ও জোটের প্রতীক ইস্যুতে সরকারের আচরণকে পক্ষপাতমূলক বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জোটবদ্ধ যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের স্বাধীনতা অনুযায়ী নিজস্ব প্রতীকে বা জোটের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ পেত। কিন্তু হঠাৎ করে একটি অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বলা হলো-জোটবদ্ধ হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, আরেকটি রাজনৈতিক দল সেটিকে সমর্থন করছে। এটা আমরা আশা করি না।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা রাখবে, নিরপেক্ষ আচরণ করবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গভীর হতাশ বলেও জানান তিনি।


সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে ১ নভেম্বর

মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
আপডেটেড ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ০২:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
  1. দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ পর্যটন কেন্দ্র সেন্টমার্টিন ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি। গত বছরের মতো এবারও প্রবাল দ্বীপটি ভ্রমণে পর্যটকদের মানতে হবে সরকারের ১২টি নির্দেশনা।
    কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানান, ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সৌন্দর্য রক্ষা করতে পর্যটকদেরও মানতে হবে নানা নির্দেশনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
    তিনি বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করবে।
    বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম বলেন, সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের জন্য পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। এসব নিশ্চিত করার জন্য ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
    পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, গত বছরের মতো এবারও কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। আইনগত বিধিনিষেধ থাকায় উখিয়ার ইনানী থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার সুযোগ নেই।
    চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি প্রদান বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপনে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
    তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কিছু লোকজন প্রচারণা চালিয়ে আসছিল, উখিয়ার ইনানী থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। এতে পর্যটকরা নানাভাবে বিভ্রান্তিতে পড়ে। এমন আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত সোমবার সরকারি এ সিদ্ধান্তটি এসেছে।
    পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
    এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশ সংকটাপন্ন সেন্টমার্টিনে প্রবাল, শৈবাল, কাছিম, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক মাছ, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, কাঁকড়াসহ ১ হাজার ৭৬ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। অতীতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ, বিপুল পর্যটকের সমাগম ও পরিবেশদূষণের কারণে দ্বীপটি সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে গত ৯ মাস সেন্টমার্টিনে পর্যটকের যাতায়াত বন্ধ থাকায় দ্বীপের জীববৈচিত্র্য বিস্তার ও পরিবেশের উন্নতি হয়েছে।
    পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক বলেন, পর্যটক সীমিত করার উদ্যোগের প্রথম ৯ মাসে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। এখন সৈকতজুড়ে লাল কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকের বংশবিস্তার ঘটেছে। সৈকতে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় না থাকায় মা-কাছিমের ডিম পাড়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।

সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলি লিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছে সরকার।


ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

* ‘নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, হঠাৎ আক্রমণ চলে আসতে পারে’ * ‘যত ঝড়ঝঞ্চাই আসুক না কেন, সেটা অতিক্রম করতে হবে’
ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্নের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদভাবে আয়োজনের জন্য আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়- নির্বাচনকালীন পদায়ন, ট্রেনিং, নিরাপত্তা ইস্যু এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিসইনফরমেশন মনিটরিং।
প্রধান উপদেষ্টা আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালে ভেতরের বা বাইরের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলেও জানান প্রেস সচিব।
ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ঝঞ্চাই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এই আক্রমণ বলতে শুধু শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং সাইবার অ্যাটাক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিজ-ইনফরমেশন (অপতথ্য) ছড়ানোকেও বোঝানো হচ্ছে। যারা পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসর, তারা দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, তা চাইবে না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।’
প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের বিষয়ে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় কর্মকর্তাদের দক্ষতা বিবেচনা করে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বদলি ও পদায়নের বিষয়ে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে এমন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানও শুরু করেছে।
কর্মকর্তাদের নিজ জেলা ও নিকটবর্তী জেলা এবং আত্মীয় পরিজনের কেউ প্রার্থী হলে সেসব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হবে। আগের তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কর্মকর্তাদের বিরত রাখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব পোস্টিং দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে করে তারা পর্যাপ্ত সময় পায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এবং প্রয়োজনীয় ট্রেনিং শুরু করা যায়।
শফিকুল আলম জানান, ‘আজকের (বুধবার) বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিটিংয়ে এআই, ডিসইনফরমেশন, মিসইনফরমেশন নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বৈঠকের একটা বড় কনসার্ন ছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে সেটা কীভাবে দ্রুত ডিবাঙ্ক করা যাবে তা নিয়ে। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো অপতথ্যকে আইডেন্টিফাই করে সেটা যে ‘অপতথ্য’ এটা প্রচার করতে গিয়ে অনেক সময় লেগে যায়। সেই সময়ের মধ্যে অনেক ক্ষতিও হয়ে যায়। এ জন্য একটি সেন্ট্রাল ডিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল ও একটি সেন্ট্রাল কমিউকেশন সেল তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শুধু শহর অঞ্চল বা জেলা পর্যায়ে না, গ্রাম পর্যায়েও মানুষের কাছে যেন ফ্যাক্টচেকিং তথ্যগুলো পৌঁছাতে পারে সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা গুরুত্ব দিয়েছেন।’
অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা অপপ্রচার চালানো হবে। এআই দিয়ে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের সূচনা হওয়া মাত্রই সেটা ঠেকাতে হবে যেন ছড়াতে না পারে।’
নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার-প্রচারণার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতিবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, আইসিটিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, পিএসও লে. জে. কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ডিজি র‌্যাব এ কে এম শহিদুর রহমান, ডিজি কোস্ট গার্ড রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হক, ডিজি আনসার মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এবং গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


আমাদের উন্নয়নের দর্শন বদলাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রাজধানীর আলোকি-তে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘আমাদের উন্নয়নের দর্শন বদলাতে হবে। বড় বড় মেগা প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি নদীভাঙন ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

বুধবার রাজধানীর আলোকি-তে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলে।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন হলে প্রতিটি দুর্বল ও প্রান্তিক মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকবে।’

আ্যনুয়াল কমিউনিটি অব প্র্যাকটিসেস (সিওপি) নেটওয়ার্ক কনভেনশন ২০২৫-এমপাওয়ার উইমেন ফর ক্লাইমেট রিসাইলেন্ট সোসাইটিজ (ফেজ-২) শীর্ষক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহযোগিতা প্রধান ডিপাক এলমার, জাতিসংঘ নারী সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম বক্তব্য রাখেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও টিকে থাকার লড়াই আমাদের হাতেই রয়েছে আর এই টিকে থাকার অনুপ্রেরণা পরিবারে সবচেয়ে বেশি দেন নারীরা।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নারীর অদম্য সাহসেই গড়ে উঠবে জলবায়ু সহনশীল বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীরা ঘরে ও সমাজে প্রতিদিন জলবায়ু সহনশীলতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্যোগে, দারিদ্র্যে কিংবা অনিশ্চয়তায় তারা কখনো হার মানেননি।

উপদেষ্টা বলেন, এই নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় টেকসই পরিবর্তন আনা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিযোজন প্রকল্পগুলোকে বড় আকারে সম্প্রসারণ করতে হবে। স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টাগুলোকেই জাতীয় উন্নয়নের পরিধিতে অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জেলার নারীদের জন্য কাজ করা ১০ জন অদম্য নারীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে, পরিবেশ উপদেষ্টা জলবায়ু অভিযোজনের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এই জাতীয় কনভেনশনে দেশের ১০০টি নারী-নেতৃত্বাধীন নাগরিক সংগঠন অংশ নেয়।


সারাদেশে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে কাজ করছে সমাজসেবা কার্যালয়: ধর্ম উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকে প্রাপ্ত এককালীন আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে সমাজসেবা কার্যালয় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, “বিগত অর্থবছরে সরকার প্রায় ৪ কোটি অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমাজের অনাথ, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও অসহায় মানুষকে সহায়তা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। সরকার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সহায়তা করবে, তবে কোনো সমকামীকে সহায়তা করবে না।”

আজ বুধবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে যুক্ত হবে) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের সনদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকে প্রাপ্ত এককালীন আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, “সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে সরকার সমাজের প্রান্তিক ও অসহায় মানুষের পাশে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে অসহায় রোগীদের ওষুধ কেনার জন্য সরকার প্রতিবছর ২৪ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এতিমখানা ও অনাথ আশ্রমে প্রায় ১৩ হাজার শিশু এবং ৯৭ হাজার প্রতিবন্ধীকে সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে।”

অসহায় মানুষের পাশে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে অনেক সচ্ছল ও প্রভাবশালী মানুষ আছেন। কোনো অসহায় মানুষকে একবেলা আহার করিয়ে যে প্রশান্তি পাওয়া যায়, তা অন্য কোনো কাজে পাওয়া যায় না। তাই সমাজের প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

ইউরোপের উদাহন তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেখানে সকালের নাশতায় কেউ তিনটি বার্গার কিনলে একটি চ্যারিটির জন্য রেখে দেয়— যাতে কোনো অসহায় মানুষ চাইলে সেটি নিতে পারে। আমাদেরও এই মানবিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফরিদুল আলম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের উপপরিচালক ফাহমিদা বেগম, বিভাগীয় উপপরিচালক হাফেজ মো. আমানুল্লাহ এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন প্রমুখ।


আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে এস আলমের মামলা

আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:০৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কোটি কোট টাকা ক্ষতির জন্য আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। সোমবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটসে সালিশি আবেদন দাখিল করা হয়। খবর ফিনান্সিয়াল টাইমসের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলায় তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন, অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার কারণে তার পরিবারের ব্যবসায় ‘শত শত মিলিয়ন’ ডলার ক্ষতি হয়েছে।

আবদেনে এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার পরিবার যুক্তি দিয়েছে, তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সম্পদ জব্দ, বাজেয়াপ্ত এবং মূল্য ধ্বংসের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

এই মামলা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার ক্ষেত্রে একটি বড় ধাক্কা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশ করা একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।

সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর অভিযোগ করেছেন, এস আলম পরিবার দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই টাকাগুলো কোথায়?’

তবে এস আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।

এর আগে এস আলম পরিবারের পক্ষের আইনজীবীরা গত বছরের ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, যদি ছয় মাসের মধ্যে এই সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি না হয়, তবে তারা সালিশি মামলা দায়ের করবেন।

সে সময় নোটিশে কুইন ইমানুয়েল উরকুহার্ট এবং সুলিভানের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার এস আলম পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে এবং সম্পদ জব্দ করেছে, তাদের ব্যবসায়িক লেনদেনের ‘মিথ্যা ও ভুয়া’ তদন্ত পরিচালনা করেছে এবং পরিবারটিকে লক্ষ্যবস্তু (টার্গেট) করে গণমাধ্যমে ‘উস্কানিমূলক প্রচারণায়’ সহযোগিতা করছে। এর ফলে কোম্পানিটির বড় ক্ষতি হয়েছে, যার আনুমানিক পরিমাণ ‘কয়েকশ’ মিলিয়ন’ ডলার।

তবে এস আলম পরিবার ক্ষতিপূরণ হিসেবে কত টাকা দাবি করেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।

সালিশের জন্য এস আলমের আবেদন সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মনসুর এফটিকে বলেন: “যখনই আমাদের কাছে পৌঁছাবে, আমরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব।” ইউনূসের অফিস মন্তব্যের জন্য অনুরোধের জবাব দেয়নি।

আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে এস আলমের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘যখন এটি আমাদের কাছে এসে পৌঁছাবে, আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাব।’

২০০৪ সালে বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির অধীনে এই সালিশ মামলা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এস আলম পরিবারের সদস্যরা ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পান। তারা ২০২০ সালে বাংলাদেশি জাতীয়তা ত্যাগ করেন।

এস আলম পরিবার এর আগে যুক্তি দেখিদিয়েছিল যে, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে, ১৯৮০ সালের বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগ সংক্রান্ত বাংলাদেশের আইন দ্বারা প্রদত্ত অধিকার বলে তাদের সুরক্ষা পাওয়া উচিত।

আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা আহসান মনসুর এর আগে এস আলম ও তার পরিবার এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যাংকগুলো জোরপূর্বক দখলের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এস আলম এবং তার সহযোগীরা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি ব্যাংকে ঋণ এবং বাড়িয়ে দেখানো আমদানি চালানের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন।

আহসান মনসুর আরো বলেন, ‘আমরা বহু পরিমাণ প্রমাণ পেয়েছি, যা থেকে বোঝা যায় যে, তারা কতটা সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।

তবে ওই সালিশি মামলায়, এস আলম পরিবার দাবি করেছে যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে।


অ্যাটর্নি অফিসে ‘ফ্যাসিস্টের দোসরদের’ নিয়োগ বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মরত ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ হিসেবে পরিচিত আইন কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ নামে একটি সংগঠন।

বিক্ষোভের সময়ে তারা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বুধবার (২৯ অক্টোবর ) সকালে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সামনে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

নেতারা বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত অনেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজ করে যাচ্ছেন। এটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের জন্য হয়নি। অবিলম্বে ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।

বক্তারা বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি নতুন নিয়োগের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে আরেকটি তালিকা করা হয়েছে। যেখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাখা হয়েছে। আমরা এই নিয়োগ কার্যকর হতে দেবো না।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দীন, ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান, মিনারা খাতুন লাকী প্রমুখ।


banner close