মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫
২১ শ্রাবণ ১৪৩২

দান নয়, পাওনা চায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো: প্রধানমন্ত্রী

রোববার কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৪৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনুদান নয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রকৃত কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তাদের প্রাপ্য চায়।

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোও দর-কষাকষিতে তাদের পক্ষ রাখবে। আমাদের দেশগুলো দান চায় না; আমরা যা চাই তা হলো আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির অধীনে আমাদের পাওনা।’ খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী রোববার কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি ৫: সম্ভাবনা থেকে সমৃদ্ধি) পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দোহা কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশার আরেকটি আশ্বাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এলডিসিতে বাস্তব কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসিতে উত্তরণে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত। তাদের একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তা ভোগ করা উচিত। তাদের উন্নত বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীল সক্ষমতা কীভাবে তৈরি করা যায় তা জানতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে।

তবে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অংশ দ্বিগুণ করার জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর এলডিসির জন্য ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণ টেকসই করার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যম রয়েছে। ‘এলডিসিগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় এবং অনুমানযোগ্য করা উচিত। এলডিসিগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব এবং অর্থপূর্ণ হওয়া দরকার। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের অধিকার এবং মঙ্গলের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা এলডিসিতে ২২৬ মিলিয়ন যুবকদের ব্যর্থ করতে পারি না,’ তিনি যোগ করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি এবং তারপর ইউক্রেনের যুদ্ধ এলডিসি অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, জলবায়ু সংকট এবং কিছু স্বল্পোন্নত দেশে দীর্ঘকাল ধরে টানা সংঘাত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের গল্পের বেশির ভাগ অংশই আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আলোচনা করেছিলাম এবং সহযোগিতার জন্য আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেছি।’ তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতি থেকে আমরা যে শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি তা আমাদের বেসরকারি খাতকে একটি দৃঢ় উৎপাদন ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রিপস চুক্তির অধীনে প্রদত্ত পেটেন্ট মওকুফ সুবিধা স্থানীয়ভাবে আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অপর ডব্লিউটিও চুক্তির অধীনে রেয়াতগুলো আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষুধা ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছি তা আমাদের সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলা করছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মহতী সমাবেশে আপনার সঙ্গে থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি কাতার সরকার ও জনগণকে তাদের উদার আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৪ সালে তার পিতা ও বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হয়েছিল। ওই সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশ তার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরের বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘তার (বঙ্গবন্ধুর) এই উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা অঙ্গীকার করেছি যে বাংলাদেশ এলডিসি শর্তপূরণে অব্যাহতভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে থাকবে। গত পাঁচ দশকে প্রায় সময়ই এলডিসি মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পেরে বাংলাদেশ গর্বিত। আমি ব্রাসেলস ও ইস্তাম্বুলে আগের এলডিসি সম্মেলনগুলোতে যোগ দিয়েছিলাম। বাংলাদেশের এলডিসিতে উত্তরণে তারা সন্তুষ্ট।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা ২০২৬ সালের মধ্যেই স্নাতকে উত্তরণের আকাঙ্ক্ষা করছি। জিডিপি অনুযায়ী বিশ্বের ৫০টি বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশই একমাত্র এলডিসিভুক্ত দেশ। এই উত্তরণের দিকে আমাদের অগ্রযাত্রা-ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নে আমাদের প্রচেষ্টার দ্বারা অর্জিত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, মাত্র এক দশকের মধ্যে তার সরকার দেশের দরিদ্র্যতার হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তিনি আরও বলেন, ‘ঝুঁকি প্রশমন ও জলবায়ু অভিযোজনের ক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মোট বাজেটের ১৬ দশকি ৭৫ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষামূলক পদক্ষেপে ব্যয় করা হয়।’ তিনি আরও জানান, তার সরকার সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে বিনা-খরচে প্রায় ৭ লাখ ঘর করে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লিঙ্গবৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষ স্থানে রয়েছি। আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ২ শতাংশ। আমাদের জনগণের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছরের বেশি।’ তিনি আরও জানান, কোভিড-১৯ মহামারিকালে তার সরকার বাংলাদেশের জিডিপির ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ সমান অর্থ ব্যয়ে ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমনকি ২০২১-২২ সালেও ৭ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি এর স্থিতিস্থাপকতা প্রমাণ করেছে। মাথাপিছু আয় এক দশকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইনে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল ডিজিটাল অর্থনীতি, যোগাযোগ ও লজিস্টিকসের একটি সম্ভাব্য আঞ্চলিক কেন্দ্র।’

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের পরবর্তী ভিশন-২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা।”

সম্মেলনের সভাপতি ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনজিএর সভাপতি সাবা করোসি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সভাপতি লাচেজারা স্টোয়েভা এবং মালাবির প্রেসিডেন্ট ও এলডিসি গ্রুপের চেয়ারপারসন লাজারাস ম্যাকার্থি চাকাওয়েরা বক্তৃতা করেন।


সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আজ উপস্থাপন করা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জুলাই ঘোষণাপত্র আজ বিকেল ৫টায় উপস্থাপন করা হবে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক গণসমাবেশে গণঅভ্যুত্থানের সকল পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বাংলাদেশ টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

এদিকে রবিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই ঘোষণা পত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আগামী মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় জাতির সামনে এটি উপস্থাপন করা হবে।’


অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ২১ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে বাংলাদেশে এ মুহুর্তে চাল ও গম মিলে মোট ২১ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। সরকারের বর্ষপুর্তি উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমকে দেয়া তথ্যে এ মজুদের কথা জানা গেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে সরকারীভাবে ১৯ লাখ ৫৪ হাজার টন চাল এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার টন গম মজুদ আছে। এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মজুদের এই লক্ষ্যমাত্রায় আরো ৫ লাখ টন চাল ও চার লাখ টন গম আমদানীর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

খাদ্যপণ্যের বর্তমান পরিস্থিতি এবং এ বাজার ব্যবস্থায় চালের দাম ডিসেম্বর ২০২৪ এর তুলনায় জুন ২০২৫ পর্যন্ত পাইকারী ও খুচরা বাজারে যথাক্রমে ১.২২ টাকা ও ১.০৪ টাকা কমেছে বলে সরকারী তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারীভাবে এ বছর ৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিকটন ধান ও ১৯ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। গতবছরের তুলনায় চলতি বছর ধান ও চাল মিলে মোট ৪ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বেশি সংগ্রহ করেছে সরকার।

সরকারের কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, জুন ২০২৪ মাসের তুলনায় জুন ২০২৫ মাসে মোটা চালের কেজি প্রতি জাতীয় পাইকারী গড় মুল্য প্রায় ১.৭৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খোলা আটার কেজি প্রতি পাইকারী গড় মুল্য ০.৬৩ টাকা হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে মোটা চালের কেজি প্রতি খুচরা মুল্য ২.১৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আটা খোলা এর খুচরা মুল্য ০.৮৮ টাকা হ্রাস পেয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরে মধুপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও নারায়ণগঞ্জে ৪টি আধুনিক সাইলো নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার ফলে সরকারী খাদ্যশস্য মজুদ ধারন ক্ষমতা ২৩ লাখ ৮৮ হ্জাার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।

এই মুহূর্তে সরকারি গুদামে খাদ্যপণ্য মজুদ আছে ১১ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৮ টন। এর মধ্যে চাল সাড়ে সাত লাখ টন এবং গম চার লাখ ২৮ হাজার ৩৩৫ টন। বাকি খাদ্যপণ্যের মধ্যে ধান মজুদ রয়েছে। গত বছর এই সময়ে খাদ্যপণ্য মজুদ ছিল ১৪ লাখ চার হাজার টন। এর মধ্যে চাল ছিল ১২ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫৪ টন এবং গম ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ২৩৫ টন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা বলেন, এই মজুদকে সন্তোষজনক বলা যাবে না, আবার ঝুঁকিপুর্ণ বলাও ঠিক হবে না। মজুদ আরও বাড়ানো দরকার। এ ব্যাপারে আমাদের বেশ কিছু উদ্যোগ রয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন চাল-গম কেনার চুক্তি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন চাল কেনার টার্গেট আছে। তা পূরণ হবে বলে আশা করছি। পাশাপাশি আমদানি করা যেসব চাল-গম পাইপলাইনে আছে সেগুলো শিগগিরই আমরা পেয়ে যাব। এ ছাড়া সম্প্রতি বন্যায় ফসলের যে ধরনের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়তো হবে না। এদিক দিয়েও বলা যায় এ বছর দেশের খাদ্যশস্য মজুদের পরিমাণ ভাল

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরো জানান, দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় প্রায় ১৮ কোটি মানুষের জন্য খাবার নিশ্চিত করা সরকারের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের মজুদ বাড়াতে হচ্ছে। এখন ২২ লাখ টন খাদ্য মজুদের সক্ষমতা আছে। এটাকে বাড়িয়ে ৩০ লাখ টনে নিয়ে যাওয়া হবে। খাদ্য মজুদের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি খুব বেশি প্রয়োজন।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে সাতটি সাইলো গুদাম নির্মাণাধীন রয়েছে। এগুলোর প্রতিটিতে প্রায় ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য রাখা যাবে। এর মধ্যে দু-একটি সাইলো গুদাম এমন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে, এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। আগের সরকারের একজন মন্ত্রীর ইচ্ছায় টাঙ্গাইলের মধুপুরে ২২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে মালপত্র আনা-নেওয়ার খরচ অনেক বেশি হবে। দাতাগোষ্ঠী ও সরকারি কর্মকর্তারাও রাজি ছিলেন না। সাধারণত এসব সাইলো নির্মাণ করা হয় নদীর পাড়ে বা যেখানে ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু টাঙ্গাইলের পশ্চিমে যমুনা নদী থাকলেও সাইলোটি এমন জায়গায় করা হয়েছে, সেখানে ট্রাক ছাড়া অন্য কোনো বাহনে মালপত্র পরিবহন করা যাবে না। ময়মনসিংহেও প্রায় একই অবস্থা। ময়মনসিংহ সাইলোতে পরে রেলপথ টানা হয়েছে। এগুলো ব্যবহারযোগ্য হলে মজুদ বাড়ানোর সুযোগ হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সরকারী খাতে গম আমদানীর উৎস বহুমুখিকরনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০২৪/২৫ অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্রসহ আর্জেন্টিনা, বুলগেরিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানী করা হয়েছে। চলতি ২০২৫ সালে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারী খাতে গম আমদানীর কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে।

দেশে খাদ্যশস্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারী ও বেসরকারী খাতে আমদানী বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত খাদ্যশস্য মজুদের লক্ষ্যমাত্র ২৬ লাখ টনেরও বেশি রাখা হয়েছে।


কুড়িগ্রাম–চিলমারী রেলপথ আধুনিকায়ন প্রকল্পে অগ্রগতি নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

মাত্র ২৯ কিলোমিটার রেলপথ। কিন্তু এই পথ পাড়ি দিতেই সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী থেকে জেলা শহর কুড়িগ্রাম পর্যন্ত চলাচলকারী একমাত্র লোকাল ট্রেনটি প্রতিদিন মাত্র একবার চলাচল করে, তাও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে। ভাঙাচোরা লাইনে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১০–১৫ কিলোমিটার, যেখানে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলে ৪০–৪৫ কিলোমিটার বেগে।

কুড়িগ্রাম–রমনা রেলরুটে কুড়িগ্রাম, পাঁচপীর, উলিপুর, বালাবাড়ী ও রমনা—এই পাঁচটি স্টেশন থাকলেও কার্যত রেলসেবার মান এখন নাজুক। চিলমারীর রমনা স্টেশনে প্রতিদিন শত শত যাত্রী ট্রেনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন।

৬৫ বছর বয়সী ট্রেনযাত্রী মফির উদ্দিন বলেন, ‘একসময় রমনা স্টেশন ছিল ব্যস্ততম। প্রতিদিন তিন জোড়া ট্রেন চলত। এখন কখনো চলে, কখনো চলে না। তবুও অপেক্ষা করি, কারণ ট্রেনেই সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যাতায়াত হয়।’

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘চিলমারী নদীভাঙন ও দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা। এখানকার অনেক মানুষ কুড়িগ্রাম বা অন্য শহরে গিয়ে দিনমজুরির কাজ করেন। স্বল্প খরচে যাতায়াতের জন্য ট্রেনই তাঁদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু রেললাইন এত খারাপ যে যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেলপথ পুনর্বাসনের একটি প্রকল্প শুরু হলেও কার্যত কোনো অগ্রগতি নেই। দুদফা মেয়াদ বাড়ানোর পরও কাজ হয়নি। চিলমারীকে বরাবরই অবহেলিত রাখা হচ্ছে। আমরা আর বৈষম্য চাই না।’

চিলমারী নৌবন্দরকেন্দ্রিক যাত্রীচাপের কথাও তুলে ধরেন সালাম। ‘প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই বন্দরে আসা–যাওয়া করেন। রেলসুবিধা উন্নত করা গেলে তাঁদের বড় উপকার হতো,’ বলেন তিনি।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, চিলমারী–কুড়িগ্রাম রেলপথ পুনর্বাসন ও আধুনিকায়নের জন্য ২০২৩ সালে দুটি পৃথক প্যাকেজে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কুড়িগ্রাম–উলিপুর ১৯ কিলোমিটার অংশের ব্যয় ধরা হয় ২৯ কোটি টাকা এবং রমনা–উলিপুর ১০ কিলোমিটার অংশে ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

প্রকল্পের আওতায় মাটি ভরাট, প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণ, নতুন রেললাইন ও স্লিপার বসানো এবং ১২টি সেতু–কালভার্ট সংস্কারের কথা ছিল। কাজ শুরুর সময় ছিল ২০২৩ সালের নভেম্বর এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের জানুয়ারি। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ম্যানেজার রুবেল ইসলাম বলেন, ‘আর্থিক সংকটে ভুগছি। রেলওয়ের কাছ থেকে আমাদের কাজের অর্ধেক বিল এখনো বকেয়া। ফলে প্রয়োজনীয় মালামাল কিনতে পারছি না, কাজও এগোচ্ছে না।’

তিনি জানান, ‘কুড়িগ্রাম–উলিপুর অংশে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও রমনা–উলিপুর অংশে কাজ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। আমরা যদি সম্পূর্ণ বিল পেতাম, তাহলে দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হতো।’

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী শিপন ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদার আর্থিক সংকটে থাকায় প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি। তাঁদের বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। আমরা উপরের দপ্তরে জানিয়েছি, যাতে বিল অনুমোদন হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেলপথটির পুনর্বাসন শেষ হলে চিলমারী–কুড়িগ্রাম রুটে দ্রুত গতিতে ট্রেন চালানো যাবে এবং নতুন ট্রেনও যুক্ত করা সম্ভব হবে। চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্প শেষ করার চেষ্টা চলছে।’


জাতি হিসেবে আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ত্যাগ বৃথা যেতে দেয়া যাবে না : শিক্ষা উপদেষ্টা

আপডেটেড ৪ আগস্ট, ২০২৫ ২২:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছে, পঙ্গুত্ববরণ করেছে, দৃষ্টি হারিয়েছে জাতি হিসেবে তাদের এ ত্যাগ বৃথা যেতে দেয়া যাবে না। গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতেদর যেন আমরা ভুলে না যাই।

আজ সায়দাবাদ সংলগ্ন গোলাপবাগ মাঠে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে পালন উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে জুলাই ২৪ পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা উদযাপন ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, এখানে প্রদর্শিত প্রেরণার প্রজন্ম ডকুমেন্টরিতে যা দেখলাম এবং যা শুনলাম তা ভুলে যাবার নয়। প্রতিদিন রাস্তায় বের হলেই দেয়ালে বিভিন্ন লেখা দেখি। বিভিন্ন গ্রফিটিতে নতুন বাংলাদেশ গঠনে তরুণদের প্রত্যয় ও আকাঙ্ক্ষার কথা ফুটে উঠেছে। আমরা যেন তাঁদের এ প্রত্যয় ও আকাঙ্ক্ষার কথা ভুলে না যাই। এসকল লেখাগুলো আমাদের প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেয় জুলুম ও নির্যাতন কথা।

তিন বলেন, একসময় আমাদের দেশে জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। এসব জঙ্গি নাটক সাজিয়ে নিরীহ মানুষদের উপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। সেই সময় আশাহত ছিলাম, মনে হয়েছিল আমরা আর স্বাধীনভাবে চলতে পারব না। কিন্তু এই গণঅভুত্থান আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ও স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, পূর্বের শাসনামলে গুম, খুন, অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে আলেম সমাজ। দাড়ি টুপি দেখলেই তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। চব্বিশের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজ যে আত্মত্যাগ ও অদম্য সাহসিকতা দেখিয়ে তা ভুলে যাওয়ার নয়। সকল পর্যায়ের ছাত্র, জনতা, কৃষক, শ্রমিক সর্বস্তরের জনগণ রাজপথে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল যার ফলে ফ্যসিবাদের বিদায় হয়েছিল। যাত্রাবাড়ী ছিল গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ।

চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং বিভিন্ন ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে পালিত হয়।


জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে জনস্মৃতিতে রাখতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে : উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে জনস্মৃতিতে রাখতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থাসমূহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহের তথ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। সোমবার (৪ঠা আগস্ট) বিকালে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি)-এর আয়োজনে রাজধানীর তথ্য ভবন প্রাঙ্গণে প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রকাশনা উৎসবের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ প্রদর্শনের জন্য এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রকাশনা উৎসবে গণঅভ্যুত্থানের ওপর প্রকাশিত গ্রন্থের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থিরচিত্র, পোস্টার ও গ্রাফিতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

মাহফুজ আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থাসমূহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অনেকগুলো গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। এছাড়া, তথ্য অধিদফতর (পিআইডি), প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি), বাংলাদেশ বেতার, বিটিভিসহ অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা গণঅভ্যুত্থানের দলিলাদি সংরক্ষণ ও প্রচারের কাজ করছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রচার নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বেশ কিছু পর্যালোচনামূলক গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে।

প্রকাশনা উৎসবে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা ডিএফপি প্রকাশিত '৩৬ জুলাই গ্রাফিতিতে বাংলাদেশ (দ্বিতীয় খণ্ড)' এবং 'তারুণ্যের বাংলাদেশ' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফায়জুল হক, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল উপস্থিত ছিলেন।

মোড়ক উন্মোচনের পর উপদেষ্টা প্রকাশনা উৎসবের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।


হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগ এনেছে: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জুলাইয়ে শহীদদের ত্যাগ জাতিকে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো- একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।’

সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের যূথবদ্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

তিনি বলেন, আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আহত সকল জুলাই যোদ্ধা, চিরতরে পঙ্গু হওয়া ও দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল জুলাই যোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল— একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।


জমির সঠিক ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে: ভূমি উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সচিবালয় প্রতিবেদক

অধিগ্রহণকৃত জমি যে কাজের জন্য নেয়া হচ্ছে সে কাজ ব্যতিত অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। জমি ব্যবহৃত নাহলে জেলা প্রশাসকের নিকট সেই জমি ফেরত দিতে হবে। অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত ও বেদখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করা খুবই জরুরি। আমাদের ভূমি দিনে দিনে হ্রাস পাচ্ছে তাই জমির সঠিক ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে। একসময় জেলা,উপজেলা এবং গ্রামে পোস্ট অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ,টেলিগ্রাফ অফিস ছিল সেগুলো কোথায়? সেইসব প্রতিষ্ঠানের জমি উদ্ধার করে অন্ততপক্ষে বনায়ন করা হলেও ভূমিগুলো সরকারের দখলে থাকবে। এই ধরনের জমি পুনরুদ্ধার ও ব্যবহারের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি বলেন; ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

আজ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভূমি উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ‘অধিগ্রহণকৃত অব্যবহৃত ও বেদখল জমি ব্যবহার ও পুনরুদ্ধার’ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ভূমি উপদেষ্টা আরো বলেন; অব্যবহৃত ও বেদখল জমি উদ্ধার করা রাষ্ট্রের জন্য খুবই কল্যাণকর। এতে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করবে,কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে,খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে,ভূমি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে,যা জীবনযাত্রার মান উন্নত in করবে। অব্যবহৃত ও বেদখল জমি উদ্ধার করা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন; অধিগ্রহণকৃত অব্যবহৃত ও বেদখল জমির তথ্য জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে নিতে হবে। এছাড়াও মন্ত্রণালয় ও এর অধিদপ্তর থেকেও অব্যবহৃত ভূমির তথ্য নিতে হবে। উভয় তথ্যf ক্রস চেক করলে প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাবে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমির প্রয়োজন হলেও কিনে নিতে হবে ,নামমাত্র মুল্যে নয়। প্রকৃত মুল্যে কিনতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন; অর্পিত সম্পত্তি ও শত্রু সম্পত্তির ক্ষেত্রে আইনজীবী নিয়োগে আরো শর্তক হতে হবে। অন্যথায় জমিগুলো সব বেদখল হয়ে যাবে। ঢাকা শহরের কয়েক হাজার অর্পিত সম্পত্তি রয়েছে যার অধিকাংশ বেদখলে। এসব ক্ষেত্রে আইনজীবীদের সম্মানি খুবই কম এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে কো অপ্ট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ এর নেতৃত্বে ‘স্টক টেকিং’ কমিটি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এর সিনিয়র সচিব মোঃ এহছানুল হক এর নেতৃত্বে ‘ব্যবহার সংক্রান্ত’ কমিটি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ; সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এর সিনিয়র সচিব মোঃ এহছানুল হক ; সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ;কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান;ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ব্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।


আগামীকাল জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।


শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার সাথে সোমবার (৪আগষ্ট) ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎ করেন। বাংলাদেশ এবং ফিলিস্তিনের শিক্ষাব্যবস্থাকে উভয়ের সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা । উভয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দুজনের মধ্যে অত্যান্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের ছাত্রছাত্রীদেরকে বাংলাদেশে লেখাপড়া করার সুযোগ প্রদান করেছে এ জন্য ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরারকে ধন্যবাদ জানান।

ফিলিস্তিনের শিক্ষা বিস্তারে বাংলাদেশের অবদানকে তারা বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে এবং বাংলাদেশের এ সহযোগতিার জন্য ফিলিস্তিনের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমানে গাজায় যে সংকট চলছে এ সংকটে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত। তিনি জানান বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা অর্জন করে ৪১ জন চিকিৎসক গাজায় আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন এ জন্য ফিলিস্তিনের জনগণ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের এ অবদানকে স্মরণীয় হিসেবে রাখবেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যখন ফিলিস্তিন মুক্ত হবে তখন তারা বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদেরকে ফিলিস্তিনে পড়াশুনার সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে এ অবদানের পরিপূরক হিসেবে বাংলাদেশের এ ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।


মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে বিআইডব্লিউটিসি'র জলযান নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অবস্থিত থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন। শিপইয়ার্ডে দুটিতে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর জন্য নির্মাণাধীন জলযানের কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।

বিআইডব্লিউটিসি'র জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক জলযান ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি নতুন স্লিপওয়ে নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ শিপইয়ার্ডে ১৮টি নৌযান নির্মাণাধীন রয়েছে। পরিদর্শনকালে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা নির্মাণ কাজের গতি ও মান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জের আনন্দ শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করে সেখানে নির্মাণাধীন সী ট্রাক (Sea Truck)-এর নির্মান কাজের গুনগতমান এবং কার্যকর ব্যাবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা শিপইয়ার্ডে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন তাদের স্বাস্থ্যঝুকি কমানো নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সরকার কাজ করছে।

উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিনের ১৮টি নৌযান সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির কাছে হস্তান্তর করা শুরু হবে। এছাড়া, আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন ৪টি সী ট্রাক এর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তিনি দ্বীপাঞ্চল (সন্দীপ, হাতিয়া, মহেশখালী) ও অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকায় নৌযোগাযোগ সুবিধা সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার জনবান্ধব নীতির মাধ্যমে এসব অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে কাজ করছে।

তিনি জানান, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড শিপইয়ার্ড এবং আনন্দ শিপইয়ার্ড শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বিশেষত নাইজেরিয়া এর সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে) জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটাতে পারে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড কর্তৃক অয়েল ট্যাংকার নির্মাণ সম্পন্ন হলে দেশে জ্বালানি পরিবহন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প এখন বিশ্বমানের। আনন্দ শিপইয়ার্ডের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু দেশীয় চাহিদা মেটাচ্ছে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখছে।আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মিত সী ট্রাক ও অন্যান্য জলযান আধুনিক প্রযুক্তি ও স্থানীয় দক্ষতায় তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, এখানকার শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা প্রমাণ করেছেন যে বাংলাদেশে বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ সম্ভব। বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে এই শিল্প আরও সম্প্রসারিত হবে।

পরিদর্শনকালে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোঃ সলিম উল্লাহ, বিআইডব্লিউটিসির প্রকল্প পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম, নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বাংলাদেশে টিকতে পারবে না: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, 'জুলাই থাকবে'- মীর মুগ্ধ মঞ্চ সেই বার্তাই দিচ্ছে। এটি মনে করিয়ে দেয়, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বাংলাদেশে টিকতে পারবে না।

তিনি সোমবার (৪ আগষ্ট) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক বাস্তবায়িত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র সরোবরে নির্মিত “মুগ্ধ মঞ্চ”-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫-১৭ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি। তবে এর অর্থ এই নয় যে ভবিষ্যতেও জনগণ কথা বলতে পারবে না বা শাসকগোষ্ঠী প্রশ্নবিহীনভাবে ক্ষমতায় থাকবে। এই মঞ্চ সেই প্রতিবাদের প্রতীক।

শহীদদের বাবা-মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, "আপনারা যে দাবিগুলো তুলে ধরেছেন, আমরা তা সমর্থন করি। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো বাবাকে আর সন্তানের লাশ কাঁধে বহন করতে হবে না।"

তিনি বলেন, "আমরা আন্দোলন করব, প্রতিবাদ করব। কিন্তু আমাদের বুকে যারা গুলি চালায়—সেই ধরনের পুলিশ বাহিনী আমরা চাই না।" ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "তখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেছিল—রাষ্ট্রের মেরামত দরকার। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তা আরও একবার প্রমাণ করেছে। তাই বলছি—রাষ্ট্রের মেরামত চলবে, এবং তা অব্যাহত রাখতে হবে।"

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান, নারী শহীদ নাঈমা সুলতানার মা, শহীদ জাবিরের বাবা, জুলাই আহত যোদ্ধা আব্দুল আজিজ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।


সরকার টেকসই ও সবুজ পর্যটনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে : শিল্প উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, আমাদের রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ও দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর, সোনারগাঁও, রামপাল, বজ্রযোগিনী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল। যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

তিনি বলেন, বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান কম। অন্য দেশের তুলনায় আমাদের পর্যটনখাত এখনও পিছিয়ে আছে। সরকার টেকসই ও সবুজ পর্যটনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যেখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, পরিবেশগত টেকসই এবং সাংস্কৃতিক সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আজ ঢাকায় একটি হোটেলে “Workshop on Sustainable Practices in Green Tourism” শীর্ষক চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মো: ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও), বাংলাদেশ এবং এশিয়ান প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এপিও), জাপানের যৌথ আয়োজিত এই কর্মশালায় বাংলাদেশসহ ২৪ টিএপিওভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করছে। স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এর মহাপরিচালক মোঃ নুরুল আলম।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, গ্রীন ট্রুরিজম বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল খাত। বিশ্বে ইকো ট্রুরিজমের আকার ৬০০ মিলিয়ন ডলার, যা ছোট কমিউনিটির মধ্যে সীমিত রয়েছে। বাংলাদেশের টেকসইও গ্রীনের উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়েছে।

চার দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক কর্মশালায় ট্রুরিজম, সাসটেইনেবল- ইকো ট্রুরিজম, ক্লাইমেট চেঞ্জ বিষয়ে ১৫ টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে এশিয়ান প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এপিও) এর সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা সাসটেইনেবল ট্রুরিজম বিষয়ে গবেষণা ও ধারণপত্র তুলে ধরবেন।


৫ আগস্ট নিয়ে সরকার সতর্ক, শঙ্কার কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সরকারকে সবসময় সতর্ক থাকতে হয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ৫ আগস্ট নিয়ে সরকার সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, তবে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই।

রবিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘৫ আগস্ট নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। আল্লাহর রহমতে এবং সকলের সহযোগিতায় সব অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সতর্কতাও নেওয়া হয়েছে। সরকারকে সব সময়ই সতর্ক থাকতে হয়। এজন্য নানা সভা আয়োজন করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়।’

বিশেষ অভিযান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই অভিযান দেশব্যাপী চলছে এবং তা নির্বাচনের আগপর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে অনেক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো উদ্ধার হয়নি, সেগুলোর ব্যাপারেও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে পরিবার ও সমাজ— উভয়ের সচেতনতা জরুরি।’ মব সহিংসতা নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মব সহিংসতা আগের তুলনায় কমেছে এবং ধীরে ধীরে আরও কমে যাবে। এ ধরনের ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।’

ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


banner close