শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
২৭ আষাঢ় ১৪৩২

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট

ফাইল ছবি
আপডেটেড
১২ মার্চ, ২০২৩ ১৬:৫০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১২ মার্চ, ২০২৩ ১৬:৪৭

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এটি শুনতে বিব্রতবোধ করেন। ফলে আবেদনটি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। পরে প্রধান বিচারপতির নির্ধারণ করে দেয়া তৃতীয় কোনো বেঞ্চে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।

গত সপ্তাহে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে জারি করা গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৯১-এর ৭ ধারা অনুসারে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে যোগ্য মনোনীত করা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানিয়ে রিট করেছিলাম। ওই রিটটি শুনানি করতে গেলে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি বিব্রতবোধ করেন। এর ফলে রিটটি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেবেন এই বেঞ্চ। এরপর প্রধান বিচারপতি আরেকটি তৃতীয় বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন, সেখানে আমরা শুনানি করব।’

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচন-প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি দাবি করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী। পরে তিনি রিট দায়ের করেন। রিটে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিবাদী করা হয়েছে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৯১-এর ৭ ধারা অনুসারে তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।


আমিন হত্যা মামলায় রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সালমান এফ রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় আমিন (১৬) নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান

তার দেওয়া তথ্যগুলি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে যাচাই বাছাই করবে পুলিশ।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই জাহিদুল ইসলাম তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

আবেদনে তিনি এসব কথা উল্লেখ করেন।

আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলার ঘটনা সংক্রান্তে হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক সালমান এফ রহমানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি।

জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেওয়া তথ্যগুলি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলা তদন্তকালে যাচাই বাছাই করা হবে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পাইলে মামলার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি এ মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এ মামলায় রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিবি পুলিশের এসআই জাহিদুল ইসলাম। আজ রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত বছর ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন গত বছরের ২১ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় ঘটনাস্থলেই মারা যান ভিকটিম মো. আমিন। এ ঘটনার ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯৯ জনকে এজাহারনামীয় করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়।


লালন শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন বেগম খালেদা জিয়া

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ২১:০১
বাসস

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লালনগীতি শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে জানানো কথা বললে প্রিন্স বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতেই হাসপাতালে যান এবং লালন গীতি শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার একজন প্রিয় শিল্পী ফরিদা পারভীন। তার লালন গানের ভক্ত। ফরিদা পারভীনের অসুস্থতার কথা শুনে ম্যাডাম খুবই উদ্বিগ্ন। ম্যাডাম আমাকে বলেছেন, তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে। উনার অবস্থা কেমন, উন্নতি হচ্ছে কিনা জেনে যেন ম্যাডামকে জানাই।

প্রিন্স বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, শিল্পীকেও আইসিইউতে গিয়ে দেখেছি এবং উনার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার উদ্বেগের কথা বলেছি।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, শিল্পীর অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। ম্যাডামকে শিল্পীর সর্বশেষ অবস্থা রাতেই জানিয়েছি। ম্যাডাম বলেছেন, শিল্পীর শারীরিক অবস্থার যেন সবসময় আমরা খোঁজ-খবর রাখি।

সত্তর বছর বয়সী দেশের জনপ্রিয় লালন শিল্পী ফরিদা পারভীন কিডনি, ডায়াবেটিস রোগসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৫ জুলাই থেকে মহাখালীর ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের (আয়শা মোমোরিয়াল হসপিটাল) আইসিইউতে ভর্তি আছেন।

উল্লেখ্য, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ৯ জুলাই হাসপাতালে গিয়ে শিল্পীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিয়েছেন।


‘জুলাই সনদকে’ সংবিধানের মূল নীতির স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপের নিন্দা রিজভীর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সংবিধানের মূল নীতি হিসেবে জুলাই সনদ অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বানকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইতোমধ্যে জুলাই সনদের অনেক বিষয় মেনে নিয়েছে। কিন্তু কেন এটিকে সংবিধানের মৌলিক নীতির অংশ করা হবে?’

আজ শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আব্দুল কুদ্দুসের সুস্থতা কামনা করে জিয়া পরিষদ আয়োজিত নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নামাজের জায়নামাজ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এই মন্তব্য করেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কার সারা দেশে এবং সব সময় অব্যাহত থাকবে। ‘সংস্কার কোনো পর্বতমালার মতো স্থির কিছু নয়। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।’

তিনি বলেন, গণতন্ত্র, রাষ্ট্র বা জনগণের স্বার্থে যখন প্রয়োজন হয়, তখন সংস্কার করা উচিত এবং উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা উচিত।

রিজভী বলেন, ‘এটাই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সংস্কার আগে করতে হবে এবং এটি (জুলাই সনদ) সংবিধানের মৌলিক নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, এই দাবি বিভ্রান্তিকর। এটি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। কেন আপনারা এভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন?’

বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পরিবর্তে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনা ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের দরজা বন্ধ করে জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন। ‘আমাদের এখন সেই বন্ধ দরজাটি আবার খুলতে হবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন করে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে।’

বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল কখনও সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলেনি এবং বাস্তবে সর্বদা এটিকে সমর্থন করেছে। ‘আপনি সংস্কারের নামে যে বিষয়গুলোর কথা বলছেন, তার অনেকগুলো ইতোমধ্যেই বিএনপির ৩১-দফা সংস্কার রূপরেখায় প্রতিফলিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে একটি বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করে আসছে - ন্যায়বিচার, সাম্য, আইনের শাসন এবং প্রকৃত গণতন্ত্র। ‘এই লড়াই রাষ্ট্রের উপর জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধারের জন্য। যখন সেই মালিকানা অস্বীকার করা হয়, তখন এটি ফ্যাসিবাদের পথ খুলে দেয়।’

রিজভী উল্লেখ করেন, জনগণের সরকারকে প্রতিটি পদক্ষেপে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ‘সেই জবাবদিহিতা এখন নেই। আমরা বিশ্বাস করি যে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সমর্থন এবং সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়ে গঠিত হয়েছে— আওয়ামী লীগ ও তার কয়েকটি মিত্র ছাড়া।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা সকলেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন করে চলেছি। কিন্তু এটাও সত্য যে আমরা যদি দুর্ভিক্ষের লক্ষণ দেখতে এবং শুনতে শুরু করি—তাহলে জনগণ আমাদেরও ছাড় দেবে না।’

অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন। ‘মানুষ যদি খাবার কিনে খেতে না পারে, তাহলে এটি দুর্ভিক্ষের স্পষ্ট লক্ষণ। যদি এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়—তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না— তখন পতিত ফ্যাসিস্টরা আনন্দে হাততালি দেবে।

বিএনপি নেতা বলেন, সরকার চাইলে, আওয়ামী লীগের যেসব সহযোগী দেশ ছেড়ে বিপুল অর্থ পাচার করে পালিয়ে গেছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে এবং কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া বন্ধ করতে পারে।

‘অর্থনীতির ভয়াবহ অবস্থার কারণে কারখানা বন্ধ করা উচিত নয়। এটি কেবল একটি বক্তব্যই নয় - মানুষ এখন গুরুত্ব সহকারে ভাবছে যে, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে দেশ দুর্ভিক্ষে পতিত হয় কিনা,’ সতর্ক করেন রিজভী।


জামায়াতের সঙ্গে জোটের সুযোগ নেই, তবে এনসিপির জন্য আলোচনার দরজা খোলা

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৮:৩৯
ইউএনবি

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনি জোট গঠনের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন ঘিরে যে দাবিদাওয়া তুলছে, তা তাদের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাকে দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন যে, অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে নির্বাচনি জোটের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। অতীতে কৌশলগত কারণে আমরা জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছি, কিন্তু এবার তাদের সঙ্গে জোট গঠনের প্রয়োজন অনুভব করছি না।’

তিনি জানান, বিএনপি এখন মূলত সেই দলগুলোর সঙ্গে জোট ও জাতীয় সরকার গঠনে মনোযোগী, যারা একযোগে আন্দোলনে এবং গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। তার কথায়, ‘এখন এর বাইরে কিছু ভাবা হচ্ছে না।’

এনসিপির সঙ্গে সম্ভাব্য জোট গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক জোট নিয়ে আলোচনা চলবে। কী হয় তা সময়ই বলে দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক দলই নির্বাচনের আগে নানা কৌশল গ্রহণ করবে। বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী কৌশল অবলম্বন করে এবং কার সঙ্গে জোট করে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনার প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই আলোচনা অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যেই আলোচনা শেষ হওয়া উচিত ছিল।’

‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক পরিচালনায় কিছু ঘাটতি রয়েছে, যা পুরো প্রক্রিয়াকে সময়সাপেক্ষ করে তুলছে। আশা করি, এই আলোচনা আর বেশি দিন চলবে না। এখন একটা সারসংক্ষেপ ও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার।’

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যত পুনর্প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন কেবল সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ রায়ের অপেক্ষা। আমরা আশা করি, আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনে ইতিবাচক রায় দেবে।

বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চায় জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই কাঠামোর রূপ কিংবা সাবেক প্রধান বিচারপতিকেই প্রধান উপদেষ্টা রাখার বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। এই বিষয়ে বিকল্প নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দল এবং সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব দেবে। যদি আরও ভালো কোনো বিকল্পে একমত না হওয়া যায়, তবে বর্তমান কাঠামোই বহাল থাকবে।’

আসন্ন নির্বাচনে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এই রাজনীতিক বলেন, বাংলাদেশে এই ব্যবস্থার জন্য উপযোগী রাজনৈতিক, সামাজিক ও নির্বাচন সংস্কৃতি নেই।

বিষয়টির তিনি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘পিআর ব্যবস্থায় ভোটাররা সরাসরি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, ভোটদানে নিরুৎসাহিত হন এবং সংসদে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

‘আমাদের ভোটাররা তাদের পরিচিত ও স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু পিআর ব্যবস্থায় এমনও হতে পারে যে, একটি এলাকায় কোনো দল বেশি ভোট পেলেও অন্য এলাকার কাউকে নির্বাচিত করা হয়। এটি জনগণের রায়কে প্রতিফলিত করে না, বরং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’

‘যেসব দেশে পিআর ব্যবস্থা কার্যকর, সেখানে স্থানীয় সরকারগুলোও শক্তিশালী। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এখানে সংসদ সদস্যরা সরাসরি উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত থাকেন। তাই এখানে পিআর কার্যকর হবে না।’

তার মতে, বাংলাদেশে এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো দরকার, যেখানে জনগণ সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। বাংলাদেশ পিআর ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয়। এটি কখনো এখানে প্রয়োগ হয়নি; জনগণও এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয়।

এই নির্বাচন পদ্ধতির আরেকটি সমস্যা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পিআর ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের সুযোগ হারাবেন। কেউ যদি খুব জনপ্রিয়ও হন, কিন্তু কোনো দলে না থাকেন, তাহলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন না। এটি অন্যায় এবং অগণতান্ত্রিক।’

তার মতে, ছোট দলগুলো পিআর চায়, কারণ এতে তারা কম ভোট পেয়েও বেশি আসন পেতে পারে। কিন্তু এর ফলে দুর্বল জোট সরকার গঠিত হয় এবং দেশে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে ওঠে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করা এই নেতা বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই বিএনপি মেনে নেবে না।’

‘কিছু দল বিভিন্ন দাবি করছে। কেউ সংস্কার চায়, কেউ বলছে বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়, কেউ পিআর চায়। এসব বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। কথা বলার অধিকার সবাই রাখে, তবে সেসব বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে।’


জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সম্প্রচার ব্যবস্থা যুগোপযোগী করা হবে

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় বৃহস্পতিবার কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: তথ্য মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সম্প্রচার ব্যবস্থা যুগোপযোগী করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। বৃহস্পতিবার বিকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কেবল টিভি ডিজিটালাইজেশন, টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবাপ্রদান এবং ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্লাটফর্ম-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নবিষয়ক সভায় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপদেষ্টা বলেন, কেবল টিভি ডিজিটালাইজেশন, টিআরপি সেবাপ্রদান এবং ওটিটি প্লাটফর্মের সঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে কোন মন্ত্রণালয় কোন কাজটি করবে সেটি এলোকেশন অব বিজনেস দ্বারা নির্ধারিত।

তিনি দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্প্রচার ব্যবস্থা যুগোপযোগীকরণের ওপর।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সম্প্রচার ব্যবস্থা যুগোপযোগী ও জনবান্ধন করতে প্রযুক্তি মূল্যায়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এই পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, এ বিষয়ে দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।

এর পাশাপাশি লাইসেন্সিং, মনিটরিং ও মনিটাইজেশনের বিষয়েও দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধি এবং কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।


প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কমিশনের আজকের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে—সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন।’

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের এগারোতম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

‘বিদ্যমান সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, প্রধান বিচারপতি হিসেবে কর্মে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠতম একজনকে না করে কর্মে জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে একজন নিয়োগ করা হবে—এই বিষয়ে দুটি মত উপস্থিত আছে। কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,’ যোগ করেন আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে গত ৭ জুলাইয়ের আলোচনায় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার না হয়—এই দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।

আলোচনায় অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধনের ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগের’ জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান অপসারণ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে, এ বিষয়টা আরও সুনির্দিষ্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে আরও কী কী বিষয় সংযুক্ত করা যায়, সেসব আগামী সপ্তাহের আলোচনায় সুস্পষ্ট হবে, বলেন তিনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে রীয়াজ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা কার্যত যতদূর সম্ভব ত্রুটিহীন হয় এবং যে ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এই বিষয়েও আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।


উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দু’টি অধ্যাদেশ এবং তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দু’টি অধ্যাদেশ এবং তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নগরীর তেজগাঁও এলাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে (সিএও) এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপদেষ্টা পরিষদ ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

কাউন্সিল মালয়েশিয়ার জোহর বাহরুতে বাংলাদেশের একটি নতুন কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপনের প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) এর একটি মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য খসড়া সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) প্রস্তাবও সভায় অনুমোদিত হয়েছে।

কাউন্সিল নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকলে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে।

সভায়, দেশের বন্যা পরিস্থিতি এবং পরবর্তীতে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মুসাপুর রেগুলেটর এবং বামনী ক্লোজারের নকশা চূড়ান্তকরণ, ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্তকরণ এবং নোয়াখালীতে খাল পুনরুদ্ধার এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপদেষ্টা পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে।


দুই জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অতিবৃষ্টির কারণে সম্প্রতি ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাগণ বন্যা ও তৎপরবর্তী গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের মতামত ও করণীয় তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মুসাপুর রেগুলেটর ও বামনি ক্লোজার এর নকশা চূড়ান্তকরণ, ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্তকরণ এবং নোয়াখালীর খাল ও ড্রেনেজ অবমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আলোচনা হয়।

এর পাশাপাশি, দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এই দুই জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত, তীর প্রতিরক্ষা ও পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে বলেও উপদেষ্টামণ্ডলীকে অবহিত করা হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দুই জেলায় চলমান বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।


তত্ত্বাবধায়ক সরকার আলোচনা মুলতবি, সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি কমিশন

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ১৫:৪৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্তে না পৌঁছে আপাতত এ বিষয়ে আলোচনা মুলতবির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আলোচনার মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে রাজনৈতিক দলগুলো জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কাঠামোগত বিষয় সংসদের উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষের ওপরে নির্ভরশীল হওয়ায় আগে উচ্চকক্ষের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিগত সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের সঙ্গে বিচার বিভাগকে মেলানোর অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। একইভাবে কোনো উপায় না পেয়ে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করার সিদ্ধান্তও ভালো ফল বয়ে আনেনি।

যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, তাই এর দায়িত্ব সংসদের হাতে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। এ লক্ষ্যে উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ মিলিয়ে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের প্রসঙ্গ এসেছে বলে জানান সাকি।

এই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে কিংবা ভোটের মাধ্যমে র‍্যাংকিং ব্যবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত করবেন।

‘কিন্তু উচ্চকক্ষের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনের কাঠামোগত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি,’ বলেন সাকি।

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নাম এবং ক্ষমতার পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যদি প্রতিবার নির্বাচনের আগে এমন একটি সরকারের প্রয়োজন হয়, তাহলে আসলে দেশের কী সংস্কার হলো—এ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

‘আপাতত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নাম নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন তদারকি সরকার করা উচিত। এই সরকারের একমাত্র কাজ হবে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া। নির্বাচনের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনও এ সরকারের অধীনে করার প্রয়োজন নেই,’ প্রস্তাব দেন রুহিন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একজন বিচারপতির পরিবর্তে দুজনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।

তবে বিগত সরকারের বিচারপতি নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে এবি পার্টির মহাসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘বিচার বিভাগের অনেক বিচারপতি আওয়ামী লীগ আমলের নিয়োগপ্রাপ্ত। এদের অনেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, নিয়োগ পেয়েছে দলীয় স্বার্থ বিবেচনায়। এদের মধ্য থেকে যারা জ্যেষ্ঠ, তাদের প্রধান বিচারপতি করা হলে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ক্ষুণ্ণ হবে।’

প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরো বিচার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে জোর দেন এ রাজনৈতিক নেতা।


চলতি মাসেই ‘জুলাই সনদ’ সম্ভব: আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চলতি মাসের মধ্যেই জুলাই সনদ প্রস্তুত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময়ে রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যে আসার বিষয়েও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের একাদশতম দিনের আলোচনার শুরুতে এসব কথা বলেন তিনি।

‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের মতানৈক্য নেই। সবাই একই উদ্দেশ্যে কাজ করছে এবং এ মাসের মধ্যেই জুলাই সনদ প্রস্তুত সম্ভব হবে’ বলেন আলী রিয়াজ।

যে সব বিষয়ে আলোচনা অগ্রসর হয়েছে, তা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চায় কমিশন বলেও জানান এই শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ের দুমাসের আলোচনায় অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা জাতীয় সনদ তৈরির ক্ষেত্র অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক বিষয়গুলোতে একমত হওয়া প্রয়োজন।’

‘রাষ্ট্রকে এমন একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে, যাতে করে ভবিষ্যতে কখনো ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে না আসে’, যোগ করেন কমিশনের এই সহসভাপতি।

আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত আছেন বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

১১তম দিনের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা—এ তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।


শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে: উপ-প্রেস সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফার শুল্ক বিষয়ক বৈঠকের প্রথম দিন শেষ হয়েছে। আলোচনায় উভয় দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রাধান্য পায় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় দুপক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আলোচনা চলবে শুক্রবারও।

আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, আলোচনা অত্যন্ত বিস্তৃত ছিল। দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ সময় উঠে আসে।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।

ঢাকায় অবস্থান করেও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও আলোচনায় অংশ নেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সিনিয়র প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


আন্দোলন নির্মূলে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি শেখ হাসিনাই দিয়েছিলেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    * ফাঁস হওয়া অডিও যাচাই করে বলছে বিবিসি * ৫ আগস্টে নিহতের ফোনের ভিডিওতে মিলল যাত্রাবাড়ীতে হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ চিত্র

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়, গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।

বিবিসি আইয়ের যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন এবং ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবেন, গুলি করবেন।’

অজ্ঞাতপরিচয় একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।

ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন, এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপ করেন।

চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ফোনালাপের অডিওটি কে ফাঁস করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভের পর থেকে শেখ হাসিনার কলের অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।

গত ১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে। তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পাননি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে, এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছেন।

মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও-সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ, এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।

ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছেন। যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। এটি এমন এক সূচক, যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।

ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর ও শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছেন এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছেন। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণ তারা খুঁজে পাননি।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, রেকর্ডিংগুলো তার (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট ও সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।

টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।

আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিবিসির উল্লেখ করা টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কি না, তা তারা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং এই টেপটিতে কোনো বেআইনি উদ্দেশ্য বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া দিতেও দেখা যায়নি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছেন, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বাংলাদেশের আদালতে বিচার চলছে।

এদিকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হন বলে বিবিসি আইয়ের একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

ঘটনাটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এই হত্যাকাণ্ড সেদিন ঘটেছিল, যেদিন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে টানা ৩৬ দিন ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন, ভারতে পালিয়ে যান।

গত বছর সরকারবিরোধী বিক্ষোভের শেষ দিনে ভয়াবহ ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল, সেটি বের করার জন্য তখনকার শত শত ভিডিও, ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সেগুলো বিশ্লেষণের পাশাপাশি সরেজমিন বেশ কয়েকবার যাত্রাবাড়ীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিবিসি।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানান খবর প্রকাশিত হলেও নির্বিচারে হত্যার ঘটনাটি কীভাবে শুরু ও শেষ হয়েছিল, তাতে কত মানুষ হতাহত হয়েছিলেন, সে সম্পর্কে বিবিসির অনুসন্ধানে এমন কিছু তথ্য ও বিবরণ উঠে এসেছে, যা আগে সেভাবে সামনে আসেনি।

আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাহিনীর একজন মুখপাত্র ঘটনা স্বীকার করেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তৎকালীন পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে অপেশাদার আচরণ করেছিলেন।’

অনুসন্ধান চলাকালে ঘটনার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও বিবিসির হাতে আসে, যেখানে ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিবর্ষণ শুরুর কিছু মুহূর্ত দেখা যায়।

ভিডিওটি এমন একজন আন্দোলনকারীর মুঠোফোন থেকে বিবিসি সংগ্রহ করেছে, যিনি নিজেও সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। নিহত ওই আন্দোলনকারীর নাম মিরাজ হোসেন।

পুলিশ যখন বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে, সেই সময়ের ভিডিও ধারণ করেছেন মিরাজ হোসেন। মুঠোফোন ক্যামেরায় ওই ভিডিওতে মর্মান্তিকভাবে তার জীবনের শেষ মুহূর্তও ধরা পড়েছে।

মিরাজ হোসেনের মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার মুঠোফোনটি খুঁজে পান এবং ফোনে সংরক্ষিত ভিডিওটি বিবিসিকে দেন।

ভিডিওর মেটাডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি শুরু হয়েছিল বেলা ২টা ৪৩ মিনিটে।

ভিডিওটিতে যাত্রাবাড়ী থানার মূল ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে সেনাবাহিনীর একটি দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর হঠাৎই তারা ওই এলাকা থেকে সরে যায়।

এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরের পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারী জনতার ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করেন।

থানার উল্টো দিকে অবস্থিত একটি ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ গুলি চালানো শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে গলির ভেতর দিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

ওই সময়ের আরেকটি ভিডিওতে আহত ব্যক্তিদের শরীরে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে।

অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে, ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।

ঘটনার সময়ের কিছু ড্রোন ভিডিও বিবিসির হাতে এসেছে। ভিডিওর মেটাডেটার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বেলা ৩টা ১৭ মিনিটেও যাত্রাবাড়ী থানার সামনের মহাসড়কে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাচ্ছিল পুলিশ। এরপর তাদের বড় একটি দলকে থানার উল্টো পাশে অবস্থিত একটি অস্থায়ী সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।

ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। ভ্যান, রিকশা ও বাইকে করে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।

পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনো যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ একটি অংশ থানায় আগুন দেয়। এ ঘটনায় পুলিশের কমপক্ষে ছয় সদস্য নিহত হন।

৫ আগস্ট বিকালে পুলিশের নির্বিচার গুলির ঘটনার পর আহত ব্যক্তিদের আশপাশের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা বহু ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন। সেদিন যাত্রাবাড়ীতে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিল।

কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত তখনকার খবর, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সাক্ষাৎকার, হাসপাতালের নথি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টের সত্যতা যাচাই করার পর বিবিসি দেখেছে, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন।

এর বাইরে সেদিন আরও অন্তত ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হন।

৫ আগস্টের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। এর মধ্যে থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে, যিনি হত্যাকাণ্ড চলাকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, তারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

বিবিসিকে এক ই-মেইল বার্তায় বাংলাদেশ পুলিশ বলেছে, তারা ইতিমধ্যে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিরপেক্ষভাবে বিষয়টির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। গণআন্দোলন–সংক্রান্ত যাবতীয় ফৌজদারি মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে, যাতে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।


এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ আজ

যেভাবে দেওয়া যাবে রেজাল্ট
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশিত হবে। ফলাফল শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের পর শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ও এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে। ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ও শিক্ষাবোর্ড সিলেক্ট করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে।

এছাড়া যেকোনো মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে পাসের বছর লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। উদাহরণ: SSC Dha ১২৩৪৫৬ ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে ফল।

উল্লেখ্য, মাদ্রাসা বোর্ডের জন্য বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষরের ক্ষেত্রে Mad এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জন্য Tec লিখতে হবে।

ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবারের মতো এবারও খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবেন। খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে ১১ জুলাই থেকে ১৭ জুলাইয়ের পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

শুধু টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে ওই ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন করার নিয়ম- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে, যেমন-১০১,১০২,১০৩। প্রতি পত্রের জন্য আবেদন ফি হবে ১৫০/- (একশত পঞ্চাশ) টাকা।

গত ১০ এপ্রিল সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১৩ মে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৫ থেকে ২২ মের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী রয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ এক হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ২৯১টি, প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৪টি।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন এবং এক লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ জন ছাত্রী। এই বোর্ডের অধীনে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৭২৫টি। প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৩টি।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সর্বমোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৯২৮ জন।


banner close