রোববার, ৮ জুন ২০২৫
২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কর্মচারীদের আত্তীকরণে হচ্ছে নতুন আইন

আপডেটেড
১৩ মার্চ, ২০২৩ ১৫:১৩
শহীদুল ইসলাম
প্রকাশিত
শহীদুল ইসলাম
প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০২৩ ১১:২৫

২০২০ সালে সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ করে দেয়ার পর পাটকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু বসে বসে বেতন নিচ্ছেন সরকারি পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) আড়াই হাজার কর্মচারী। উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারীদের আত্তীকরণে বর্তমান আইন ও বিধিমালায় তাদের অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে আত্তীকরণের সুযোগ নেই। ফলে বিজেএমসির কর্মচারীদের আত্তীকরণ করতে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত কর্মচারী আত্তীকরণ আইন-২০২৩’-এর খসড়া অনুমোদনের জন্য তোলার কথা রয়েছে। এই আইন পাস হলে বিজেএমসির প্রায় দুই হাজার শ্রমিককে আত্তীকরণ করা হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

২০১৬ সালে প্রণীত উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ আইন ছিল। ২০১৮ সালে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন করে এই আইনের মধ্যে উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারীদের আত্তীকরণের বিধান যুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ২০১৬ সালের আইনটি বাতিল করে সরকার। সরকারি চাকরি আইনের আলোকে ২০২০ সালে জারিকৃত উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারীদের আত্তীকরণ করা হচ্ছিল।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি চাকরি আইন এবং উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী বিজেএমসির কর্মচারীদের আত্তীকরণের কোনো সুযোগ নেই। এর ফলে কাজ না থাকলেও বিজেএমসির আড়াই হাজারের বেশি কর্মচারী বসে বসে বেতন পাচ্ছেন। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনসহ এ ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত কর্মচারীদের আত্তীকরণ করতে এখন নতুন আইন করা হচ্ছে।

জাতীয়করণকৃত পাটকলগুলো নিয়ন্ত্রণ, পরিদর্শন ও সমন্বয় করতে বাংলাদেশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান (জাতীয়করণ) আদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী বিজেএমসি প্রতিষ্ঠা করে সরকার।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ গতকাল রোববার রাতে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের কর্মচারীদের আত্তীকরণ করতে যাওয়ার সময় দেখা যায় কোনো আইনেই তা কাভার করে না। ফলে নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। আইনটি প্রণয়ন হলে এটি কমন আইন হয়ে যাবে।’

বিজেএমসিতে আড়াই হাজারের ওপর কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাদের মধ্য থেকে কতজনকে আত্তীকরণ করা হতে পারে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেননি পাটসচিব। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের কর্মকর্তা দরকার, সেসবের সঙ্গে কতজন ম্যাচ করে এবং আমরা কতজনকে রাখব- এসব বিষয় নিয়ে এখনো বলার সময় হয়নি। আপাতত বিজেএমসি দিয়ে আত্তীকরণ শুরু করব।’

নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর পদ প্রশাসনিক পুনর্গঠন, জনবল যৌক্তিককরণ বা অন্য কোনো বিলুপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা ক্ষেত্রমতে সংশ্লিষ্ট সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বিলুপ্ত পদে কর্মরত কর্মচারীদের উদ্বৃত্ত ঘোষণা করতে পারবে।

উদ্বৃত্ত ঘোষণাকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে উদ্বৃত্ত ঘোষিত কর্মচারীকে উদ্বৃত্ত ঘোষণার আদেশ জারির ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আত্তীকরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব কর্মচারীকে সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে আত্তীকরণ করবে।

উদ্বৃত্ত কর্মচারীরা উদ্বৃত্ত হওয়ার আগে যে স্কেলে বেতন পেতেন তার সমান স্কেলের বেতনেই আত্তীকরণ করতে হবে জানিয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, আত্তীকরণ করার পর কোনো কর্মচারীকে আগের থেকে কম বেতন-ভাতা এবং অবসর সুবিধা দেয়া যাবে না। উদ্বৃত্ত কর্মচারীকে কোনো পরীক্ষা বা যাচাইয়ে অংশ নিতে হবে না। কোনো নির্দিষ্ট যোগ্যতা, চাকরির মেয়াদ বা কোনো নির্দিষ্ট বয়সসীমারও প্রয়োজন হবে না। কোনো কর্মচারীকে কোনো পদে একবার আত্তীকরণ করা হলে তা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং তিনি অন্য কোনো পদে পুনরায় আত্তীকরণের জন্য বিবেচিত হবেন না।

খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারি অন্যান্য কর্মচারীর মতোই সময়ে সময়ে জারিকৃত বিধান দিয়ে আত্তীকৃত কর্মচারীদের জ্যেষ্ঠতা, বেতন ও পেনশন নির্ধারিত হবে। এই আইন পাস হলে সরকার সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর্মচারী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে কৃত কোনো কাজ বা জারিকৃত আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। এই আইনের অধীনে কোনো কার্যাবলি নিয়ে মামলা বা অন্য কোনো আইনগত পদক্ষেপও নেয়া যাবে না।

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি হচ্ছে

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি গঠন করতে নতুন একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার। আজকের মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি আইন উত্থাপনের কথা রয়েছে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, পরিকল্পনামন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে এই কর্তৃপক্ষের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর। পরিচালনা পর্যদকে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও আইনি কাঠানো প্রণয়ন; কর্তৃপক্ষ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক নীতি প্রণয়ন, উন্নয়নসংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করতে হবে।

এই আইন পাস হলে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিকে দেশের সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনের প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ, পরিবীক্ষণ, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান করতে হবে। বাংলাদেশ ই-গভর্মেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) বিধিমালার প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব আনা, ই-জিপি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং ই-জিপিসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ও তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণ; আদর্শ দরপত্র প্রস্তাব বা দলিল এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলের নমুনা প্রস্তুত করে তা অনুমোদন দিয়ে বিতরণও করতে হবে এই কর্তৃপক্ষকে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, যেসব ক্রয়কারীর ওপর পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন প্রযোজ্য তাদের কাছ থেকে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য, দলিল ও নথিপত্র তলব করতে পারবে এই কর্তৃপক্ষ। সরকারি কেনাকাটায় কোনো ব্যত্যয় হলে তা সংশোধনে কোনো ক্রয়কারীকে ক্রয়-প্রক্রিয়ার পরিবর্তন ও সংশোধন করার পরামর্শ, সুপারিশ অথবা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দিতে পারবে এই কর্তৃপক্ষ। একজন অতিরিক্ত সচিবকে এই কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে।


মানিকগঞ্জে যমুনার গর্ভে বিলীন তিনতলা স্কুলভবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টি ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা,বাঘুটিয়া,চরকাটারী ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ফলে প্রবল ¯্রােত ভাঙ্গনে করাল গ্রাসে শনিবার ঈদের দিন দুপুরে বাচামারা ইউনিয়নের নিজ ভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলা পাকা ভবন নদী গর্ভে তলিয়ে যায় । সেই সাখে গত এক সপ্তাহে কয়েক শত ঘরবাড়ি বসতভিটা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । স্কুল ভবন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় ঐ বিদ্যালয়ের কমলমতি ছাত্র/ছাত্রীদের লেখা পড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।

নদীপাড়ের মানুষ স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করলেও বর্ষার শুরুতেই তাদের ভাঙন আতঙ্ককে প্রহর ঘুনতে হচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ে ভাঙন শুরু হলে ঘরবাড়ি বসতভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।স্থানীয় পানি উন্নয়ন অফিস ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফালানোর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে,মানিকগঞ্জের বুক চিরে বয়ে গেছে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী, গাজীখালিসহ ১৪টি নদী।ভাঙন আতঙ্ক নদী পাড়ের মানুষেরে এযেন নিত্য দিনের সঙ্গি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ে ভাঙন শুরু হলে ঘরবাড়ি বসতভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

জানা গেছে,দৌলতপুর উপজেলার চর কালিয়াপুর,বাঘুটিয়া, ভারাঙ্গা,রংদারপাড়া,বিষ্ণপুর,রামচন্দ্রপুর,আবুডাঙ্গা পূর্বপাড়া,চরকাটারি বোর্ডঘর বাজার,চরকাটারি সবুজসেনা হাইস্কুল,বাচামারা ইউনিয়নের চরভারাঙ্গা সরকার পাড়া,মজম শেকের পাড়া,বাচামারা পশ্চিম পাড়া,উত্তরখন্ড,সুবুদ্ধি,বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পাচুরিয়া , বাঘুটিয়া বাজার,পারুরিয়া বাজার,রাহাতপুর, জিয়নপুর ইউনিয়নের বৈন্যাঘাট,লাউতাড়া,লাউতাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্র ,চকবাড়াদিয়া, চকমিরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গা রামচন্দ্রপুর,রামচন্দ্রপুর নতুন পাড়া, হাতকোড়া খলসী ইউনিয়নের চরমাস্তল,বিষ্ণপুর খাঁপাড়া,পার মাস্তলসহ ২৮ টি এলাকা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ।

দৌলতলপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো : গোলাম ইয়াছিন জানান,রাহুতপুর এলাকায় বালুমহল ইজারার নাম করে বাঘুটিয়া এলাকায় নদী থেকে বালু উত্তলোন করায় প্রতি বছর ভাঙন দেখা দেয়।এতে আমাদের গ্রামের কয়েকশ পরিবারকে অপূরনীয় ক্ষতির মূখে পড়তে হয়।বালু না কাটলে আমাদের এলাকায় নদী কিছুটা কম ভাঙবে।

বাচামারা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো: ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, নদীতে প্রবল ¯্রােত ২/৩ দিনে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । চোখের পলকে নিজ ভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলা পাকা ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে তলিয়ে গেলো । ভাঙনরোধে সরকারের কাছে ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তিনি।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, নদীপাড়ের ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলোর ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফালানোর কার্যক্রম শুরু করা হবে।এছাড়া নদী ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক প্রকল্প গ্রহণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি চলমান রয়েছে ও কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিয়ান নুরেন জানান, শুক্রবারে নিজভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নদী ভাঙ্গনের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে জরুরী ভিত্তিতে স্কুল ভবন নিলাম দেয়া যায় কিনা ব্যবস্থা প্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল । উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন কিন্তু ভাঙ্গনের ফলে ভবনটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় কোন কুলকিনারা করতে পারেনি । খ্বর পেয়েছি ঈদের দিন ভবনটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ।


ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের একাংশের স্ক্রিনশট
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ অবসান করতে চান যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ সিদ্দিক। তাই অধ্যাপক ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরের সময় তাঁর সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনেছে কর্তৃপক্ষ। গত বছরের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে শোরগোল হয়েছে। এর মধ্যে টিউলিপ কিংবা তাঁর মায়ের (শেখ রেহানা) বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের প্লট নেওয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ রয়েছে।

টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর টিউলিপের আইনজীবীরা বলেছেন, এসব অভিযোগ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। এর কোনো ভিত্তি নেই। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছে না বলেও অভিযোগ টিউলিপের।


ঈদের ফিরতি যাত্রায় রেলযাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পবিত্র ঈদুল আজহার পর ট্রেনের ফিরতি যাত্রায় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার জন্য নাগরিকদের অনুরোধ জানিয়েছে। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ঈদ–পরবর্তী ট্রেনযাত্রায় সব যাত্রীকে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।


১৩ জেলায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা, হতে পারে বৃষ্টিও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিন রাজধানীসহ দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। আবার গতকালই দেশের অন্তত ১৩ জেলায় বয়ে গেছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ রোববার এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এরই সঙ্গে কিছু স্থানে বৃষ্টিও হতে পারে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসবে আজ। এটি বাড়তে পারে আগামী বুধবার থেকে।

গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ রোদে ঝলমলে ছিল। কিন্তু দুপুর ১২টার দিক থেকেই আকাশে মেঘ জমে। দুপুর ১২টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল বেলা তিনটা পর্যন্ত রাজধানীতে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এটি গতকালের দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি। গতকাল সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় সিরাজগঞ্জের তাড়াশে—৩৪ মিলিমিটার। গতকাল বগুড়া, ময়মনসিংহ ও বরিশালের কিছু স্থানেও বৃষ্টি হয়। তবে এই বৃষ্টির মধ্যেও গতকাল খুলনা বিভাগের সর্বত্র এবং রাজশাহী, রংপুর ও পঞ্চগড় জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় খুলনায়—৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর এখন কম সক্রিয়। তাতে এখন বৃষ্টির প্রবণতা কমে এসেছে।

গত মে মাসের শেষ এবং চলতি মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। মে মাসের শেষে বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয়। এরই মধ্যে ২৪ মে নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত এক সপ্তাহ আগে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। এ দুয়ের প্রভাবে বৃষ্টি বাড়তে থাকে। বৃষ্টি বাড়লেও গরম কিন্তু কমছে না। এর কারণ প্রসঙ্গে বাতাসের প্রচুর আর্দ্রতার কথা জানায় আবহাওয়া অফিস।


এবারও চামড়া নিয়ে হতাশা, দাম ওঠেনি হাজারও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাজধানীতে চামড়ার দাম প্রতি ফুটে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে তার প্রভাব পড়েনি বাস্তবে, আগেরবারের মতো এবারও কম দামে গরুর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

প্রতি বর্গফুট গরুর চমড়ার দাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও চামড়া বিক্রি হয়েছে গতবারের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, কুরবানিদাতাদের থেকে তারা সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন এবং ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়।

উত্তরার চামড়া ব্যবসায়ী হেফাজ উল্লাহ বলেন, ‘কুরবানিদাতাদের থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া সংগ্রহ করে রীতিমতো বিপদে পড়তে হয়েছে। এই এলাকায় ভালো মানের চামড়ার দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা। এর ওপরে কোনোভাবেই চামড়া বিক্রি করা যায়নি।’

বাড্ডার চামড়া ব্যবসায়ী সিরজা বলেন, ‘কাঁচা চামড়ার চাহিদা এবারও তলানিতে। ভালো দামে চামড়া বিক্রি করতে পারিনি। একটি ভ্যান আর দুইজন লেবার নিয়ে যে খরচ হয়েছে তার তুলনায় মুনাফা হয়নি বললেই চলে। সারাদিনের কষ্ট বৃথা।’

খিলক্ষেতের চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন, ‘আগে জানলে এত দাম দিয়ে চামড়া কিনতাম না। প্রতিবারই ট্যানারি মালিকরা চামড়ার দাম দিতে অনাগ্রহ দেখায়। এতে আমাদের মধ্যেও দাম দিয়ে চামড়া কেনার প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।’

তবে এ ব্যাপারে ট্যানারি পরিচালক ও এজেন্টরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণ দেয়া প্রস্তুতকৃত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ট্যানারি থেকে কাঁচা চামড়া কেনায় দাম কম পড়েছে। তবে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় সব চামড়া কেনা হয়েছে; এমন তথ্য ভুল দাবি করেছেন তারা। অনেক ভালো মানের চামড়া ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়ও কেনা হয়েছে বলে জানান ট্যানারি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, গতবারের মতো এবারেও ছাগলের চামড়া চাহিদা নেই বললেই চলে। অনেকেই বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে দিয়েছেন, অনেকক্ষেত্রে দাম উঠেছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

এবারের ঈদে সবমিলিয়ে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিকরা যার সিংহভাগ সংগ্রহ হয়েছে ঈদের প্রথম দিনেই।


ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত

ঈদুল আজহার নামাজ শেষে দুই শিশু কোলাকুলি করছে, জাতীয় ঈদগাহর সামনে থেকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং ত্যাগের মহিমায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব হচ্ছে ঈদুল আজহা যা কোরবানির ঈদ হিসেবেও সমাদৃত। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের আদর্শে উদ্ভাসিত করে আসছে।

শনিবার সকালে সারা দেশে মুসল্লিরা নিজ নিজ এলাকার ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজের আগে খতিবগণ খুতবায় কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

রাজধানী ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে সাতটায় পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা ও আশপাশের হাজার হাজার মুসল্লি এই নামাজে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির এবং মুসমি উম্মাহর কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদ জামাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন।

অন্যদিকে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাতটায়। এরপর পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের নামাজ শেষ করেই পশু জবাই দিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন নগরবাসী। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্ররা পশু জবাইয়ে অংশ নিয়েছে। প্রতিবেশীরা একে অপরের গরু জবাই দিতে সহযোগিতা করেছেন। বাড়ির সামনের রাস্তায়, গাড়ির গ্যারেজ এবং কেউ কেউ খোলা মাঠে পশু কোরবানি দেয়।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।

ঈদের পরবর্তী দু’দিন অর্থাৎ আগামীকাক সোমবার আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। কোরবানির পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ গরিব-মিসকিনদের মাঝে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিতরণ করতে হয় এবং এক ভাগ নিজের জন্য রাখা যায়।

স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা উদ্‌যাপিত হয়। এদিন সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদন করেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বেশকিছু গ্রামসহ বিশ্বের বহু দেশে শুক্রবার ঈদুল আযহা উদ্‌যাপিত হয়।

কিশোরগঞ্জ থেকে বাসস সংবাদদাতা জানান, উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল আযহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

চট্টগ্রাম থেকে বাসস অফিস জানায়, নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে পবিত্র ঈদুল আযহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় আয়োজিত জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব সৈয়দ আলাউদ্দিন আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী। পরে তিনি দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।

একইস্থানে সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আহমদুল হক।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শাহী জামে মসজিদ, হজরত শেখ ফরিদ (রহ.) চশমা ঈদগাহ মসজিদসহ নগরের বিভিন্ন এলাকাতেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

দিনাজপুর থেকে বাসস সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত জামাতে সারা দেশ থেকে মুসল্লিরা অংশ নেন। এই জামাতে ইমামতি করেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন হাফেজ মাওলানা মো. মাহফুজুর রহমান।

জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মারুফাত হুসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নেন।

ময়মনসিংহ থেকে বাসস সংবাদদাতা জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের আনন্দে ময়মনসিংহে উদ্‌যাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। জেলার প্রায় আড়াই হাজার মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের জামাত।

সকাল সাড়ে সাতটায় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত। এতে ইমামতি করেন আঞ্জুমান ঈদগাহ মসজিদের ইমাম হাফেজ মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সকাল সাড়ে আটটায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান।

ঈদের প্রধান জামাতে অংশগ্রহণ করেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই বিপ্লবে নিহতদের মাগফিরাত কামনা করা হয়।


পশুর চামড়া নিয়ে হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাজারে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে সংরক্ষণ সংকট, লবণের অপ্রতুলতা এবং সিন্ডিকেটের প্রভাব— সব মিলিয়ে আবারও দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে দেশের কাঁচা চামড়ার বাজারে।

পোস্তায় গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ছাগলের চামড়া ১০ টাকা!

ঈদের দিন সকাল থেকেই রাজধানীর পোস্তায় আসতে থাকে চামড়া। ঢাকার বিভিন্ন থানা, শহরতলি ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গরু, খাসি ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করে একে একে হাজির হন এই ঐতিহ্যবাহী চামড়ার হাটে। কিন্তু দাম শুনে অনেকেই হতবাক।

মাঝারি আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০০ টাকা, আর বড় আকারেরটি ৮৫০ টাকায়। ছাগলের চামড়ার অবস্থা আরও শোচনীয়— প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়, অনেক জায়গায় আবার ফেলে দিতেও দেখা গেছে।

একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘এক হাজার ২০০টা চামড়া আছে। বিক্রি হয়নি। সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। গতবার তো ৯০০–১০০০ টাকা দিয়েছিল। এবার চরম ক্ষতিতে যাচ্ছি।’

সরকার ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি বর্গফুটে ৬০–৬৫ টাকা, আর ঢাকার বাইরে ৫৫–৬০ টাকা। তবে বাস্তব বাজারে এই মূল্য কার্যকর হচ্ছে না বললেই চলে।

এদিকে আড়তদাররা বলছেন, কাঁচা চামড়ার গায়ে গুটি বা দাগ পড়ার কারণে ট্যানারিরা আগ্রহ হারাচ্ছে। একজন আড়তদার বলেন, ‘গুটির মতো দাগ দেখলে ট্যানারিওয়ালারা দামই দেয় না। শ্রমিক, লবণ, গাড়িভাড়া— সবকিছু মিলিয়ে খরচ বেড়েছে। ভালোমানের চামড়া ছাড়া লাভ থাকে না।’

অন্যদিকে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, এখন শুধুমাত্র ঢাকার চামড়াই পাওয়া যাচ্ছে, বাইরের জেলার চামড়া এখনও আসেনি। ফলে সরবরাহ কম থাকলেও মানসম্পন্ন চামড়ার অভাব দেখা দিয়েছে।


জুলাই সনদ ঘোষণাপত্র ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা করা নির্বাচনের সময় নির্ধারনকে 'ইতিবাচক' বলছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিজ এলাকা কুমিল্লার দেবিদ্বারে জুলাই শহীদদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এর আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলে যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন, তা ইতিবাচক। তবে, তার আগে জুলাই সনদ এবং ঘোষণাপত্র অবশ্যই দিতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য তিনটি গরু কোরবানি করেন এনপিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। পরে বৃষ্টির মধ্যে শহীদ রুবেল ও সাব্বিরের পরিবারের জন্য কোরবানির মাংস নিয়ে যান তিনি। এ সময় তিনি শহীদ পরিবারের খোঁজ খবর নেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদরা দেশ গড়ার জন্য জীবন দিয়েছেন। তাই দেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের আছে। দেশ গড়ার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শহীদেরা দেশের স্বার্থে জীবন দিয়েছেন, তাই আমাদেরও দল-মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের স্বার্থেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।


কাঁচা চামড়া পাচার ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির কড়া অবস্থান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া পাচার রোধে সীমান্ত এলাকাগুলোতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরীফুল ইসলাম গহমাধ্যমকে জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কাঁচা চামড়া পাচার ও ভারতে পুশ-ইনের যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঈদ মৌসুমে কাঁচা চামড়া পাচার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন বাস্তবতায় সীমান্তজুড়ে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

পাশাপাশি, ভারতের দিক থেকে যেকোনো পুশ-ইন ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে সীমান্তরক্ষী এই বাহিনী।

বিজিবির পিআরও আরও জানান, ঈদের দিনেও ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিজিবির সদস্যরা। টহল ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া যাতে বৈধ বাণিজ্য চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে, সেজন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে বিজিবি।

জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে বিজিবি দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ঈদ মৌসুমজুড়েই তারা সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে বলে জানানো হয়।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

আজ শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তারা সাক্ষাৎ করেন। তার সঙ্গে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নজমুল হাসান ও তার সহধর্মিণীও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

এর আগে, সকালে অধ্যাপক ইউনূস জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। তিনি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঈদের জামাতে অংশ নেন।

ঈদের নামাজে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং ঢাকায় অবস্থানরত মুসলিম দেশগুলোর কূটনীতিকসহ হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসলিম।

তার আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে অধ্যাপক ইউনূস পবিত্র ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা ধারণ করে বৈষম্যমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা পবিত্র ঈদুল আজহার ত্যাগের শিক্ষা ধারণ করি এবং জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

এ সময় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে তাঁর দেশবাসী এবং বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের ধারাবাহিক সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন তিনি।


সারা দেশে আজ পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে বিশ্বের অনেক দেশের মতো আজ শনিবার (৭ জুন) সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব এটি।

ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সৌদি আরবসহ অনেক দেশের একদিন পর আজ বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। মূলত চন্দ্র মাস জিলহজ্বের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয় সারা বিশ্বে। ঈদের আগে সৌদি আরবে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন হাজীরা।

এদিন সকল মুসলিমরা সকালেই ঈদের জামাতে নামাজ আদায় শেষে কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করছেন। তবে ওজর থাকলে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায়।

জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশই ৬ জুন ঈদ উদযাপন করেছে। ভৌগোলিক কারণে কয়েক ঘণ্টা আগে ও পরে ইউরোপ, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায়, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আফ্রিকার অনেক দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা ঈদ উদযাপন করেছেন।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মরক্কো, মৌরিতানিয়া, ব্রুনেই এবং মালয়েশিয়ায় ঈদ উল আযহা উদযাপিত হচ্ছে আজ। তবে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলার কিছু জায়গার মুষ্টিমেয় মুসলিম সৌদি আরবের সঙ্গে মিলিয়ে গতকাল শুক্রবার (৬ জুন) ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন।

ঈদুল আজহায় জামাতে কোটি কোটি মুসল্লি অংশগ্রহণ করে থাকেন দেশের ঈদগাহগুলোতে। তবে সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ হলো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ। এর পরই রয়েছে দিনাজপুরের গোড় এ শহীদ ময়দান মাঠ। এসব ঈদগাহে লাখ লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে ঈদের জামাতে অংশ নেন।

দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় হয় জামাত। এতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আজহায় পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায় এবং পরবর্তী চারটি জামাত যথাক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে শেষ জামাত।

তবে এবার ঈদের দিনে আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (৭ জুন) সারাদেশে বৃষ্টির পাশাপাশি তাপমাত্রা বাড়তে পারে।


জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ শনিবার ঈদুল আজহার দিন সকাল সাড়ে ৭টায় নামাজ শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও নামাজ আদায় করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানসহ অনেকে।

নামাজে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। জামাতে অংশ নিতে সকাল ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ঈদগাহ মাঠে আসেন।

নামাজ শেষে খুতবা পাঠ করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। এর আগে আলোচনায় দেশ ও মুসলিম জাতির কল্যাণে দোয়া করেন তিনি।


আজ পবিত্র ঈদুল আজহা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আজ ৭ জুন শনিবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। আমাদের দেশে এটি কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। ঈদুল আজহা মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর হয়ে আসছে। আজ সকালে মুসল্লিরা কাছাকাছি ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারা।

ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে ঈদের জামাতে নামাজ পড়বেন। সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।

এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন।

স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করেছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিলিয়ে পৃথিবীর বহু দেশ গতকাল ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে।

ঈদুল আজহা হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। হযরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হযরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবাই সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।

সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিধারণ করেই হযরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে ঈদুল আজহার ছুটি গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হয়েছে। ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

এর আগে গত ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সে অনুযায়ী দুই শনিবার (১৭ ও ২৪ মে) অফিস খোলা ছিল। নির্বাহী আদেশে দু’দিন ছুটির ফলে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সবমিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটিতে আছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

সংবাদ মাধ্যমেও ঈদ উপলক্ষে পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ঈদুল আজহার যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। ঈদের ছুটিতে দেশের সব সিএনজি এবং ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাত্রী হয়রানিসহ যে কোন ভোগান্তির খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।


banner close