সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থিদের উত্তেজনার মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময়ে করে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আসলে বুধবার যে অনাকাঙ্ক্ষিখিত ঘটনা ঘটেছে, সে জন্য আমি দুঃখিত ও মর্মাহত। সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। এ রকম জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটবে, এটা আমাদের কাম্য ছিল না। দুই পক্ষের মধ্যে একটা উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশকে তা হ্যান্ডেল করতে হয়েছে। এটা করতে গিয়ে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, সঙ্গে আমার প্রিয় কিছু সাংবাদিক ভাইও আহত হয়েছেন। এ জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমাদের কমিশনার মহোদয়ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতে এই পবিত্র জায়গায় হ্যান্ডেল করতে আমরা আরও সাবধান হব।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আজকে যেমন সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে, আমি মনে করি, তা আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক তদারকির কারণেই হয়েছে। গতকাল সামান্য কিছু ঘটনা ঘটলেও আজকে কিন্তু অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছে। সাদা পোশাকে অনেকেই আছে। আমি মনে করি, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হবে এবং ভোট গণনা শেষে ফল গণনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সবাইকে সতর্ক করব। গতকালের ঘটনায় কিছু মনে না করেন। সাংবাদিক-পুলিশ আমরা একে অপরের সঙ্গে মিলে কাজ করি। আপনাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আমরা কাজ করি। আশা করব, আমরা মিলেমিশে আমাদের পেশাগত কাজ চালিয়ে যাব।’
এ সময় সাংবাদিকরা রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদকে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সঙ্গে যেন দুর্ব্যবহার করা না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।
তারা বলেন, ‘এডিসি হারুনের যেকোনো অপারেশনেই কাজ হচ্ছে সাংবাদিকদের হেনস্তা করা।’ এ সময় তারা বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের মারধর ও হেনস্তা করার কথা উল্লেখ করেন। ডিবিপ্রধান বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এ সময় রমনা জোনের ডিসি শহীদুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট জোনের ডিসি মোমেন, এলআরএফের সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সরোয়ার হোসেন ভূঁঞা, সাবেক সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরণ, সাঈদ আহমেদ খান, অর্থ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার খানসহ এলআরএফের নেতারাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
হারুন অর রশীদের বক্তব্যের পর টেলিফোনে ডিএমপি কমিশনার ল' রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকারের সঙ্গে কথা বলেন। টেলিফোনে সভাপতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়টি দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তুরস্কের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর।
রাষ্ট্রপতি কার্যালয় থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে রাষ্ট্রপতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কূটনৈতিক কোরের ডিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, সংশ্লিষ্ট সচিবসহ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা বিমান বন্দরে রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানান।
সফরকালে ৩ জুন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ।
তুরস্ক সফর শেষে আগামী ৬ জুন রাষ্ট্রপতির দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে পুঁজি করে সংশ্লিষ্টরা নির্বাচনী সুবিধা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বাজেটে পরিচালন ব্যয় বাড়ানোর কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সরকার অ্যাডভান্টেজ পাবে। যেখানে-সেখানে ব্যয় করা যাবে। বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় অনেক কম। অর্থ দিয়ে নির্বাচন পার করার একটি পরিস্থিতি হতে পারে।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাপা চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকে সমানে রেখে নির্বাচনমুখী বাজেট করা হয়েছে। গেল বছরের চেয়ে এবারের বাজেটে ১ লাখ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে। এই বাজেট বাস্তবসম্মত মনে করছি না। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে আছে, এমন বাস্তবতায় যে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট করা হয়েছে তা হয়তো আদায় হবে না। বাজেটে প্রাপ্তি দেখানো হয়েছে অভ্যন্তরীণ ঋণ ও বিদেশি ঋণ। বর্তমান বাস্তবতায় ইচ্ছে করলেই বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ ঋণ পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। ডাইরেক্ট ট্যাক্সের পাশাপাশি সব কিছুতেই ইনডাইরেক্ট ট্যাক্স দেয়া হয়েছে। এতে সাধারণ ও মধ্যবিত্তের কষ্ট বাড়বে। জিনিসপত্রের দাম এমনিতেই উর্ধ্বমুখী। আরও বাড়বে। মানুষের আয় কমেছে কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলবে। এই বাজেটে জনবান্ধব বা কল্যাণমুখী কিছু দেখছি না। নিন্মবিত্ত, নিম্ম মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ যাতে বেঁচে থাকতে পারে তা এই বাজেটে নেই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘এই বাজেট দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা আছে বলে মনে হয় না, তাদের হয়তো অন্য মেকানিজম আছে। এই বাজেটে পরিচালন ব্যয় অনেক বাড়ানো হয়েছে। এই পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে সব কিছুই করা সম্ভব। কৃচ্ছ্র সাধনের জন্য পরিচালন ব্যয় কমানো দরকার। আমরা মনে করি, আগে যা ছিলো তাই বেশি ছিল। যেটা আমাদের বাজেট দিয়ে সার্পোট দেয়া যেতো না। আমাদের উন্নয়ন ব্যয় দেশি ও বিদেশি ঋণ নির্ভর ছিল, এটা এখন আরও বেড়েছে।
বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন ভোট বাড়া বা কমায় কিছু যায় আসে না। স্বাভাবিকভাবে আওয়ামী লীগের ভোট কমার কথা, কারণ জিনিস পত্রের দাম আরও বাড়বে নির্বিঘ্নে বলা যায়। এমনিতেই দেশের মানুষ অতিষ্ঠ, সাধারণ মানুষের রিলিফ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আইএমএফ এর কাছ থেকে ঋণ নেয়ার কারণে যে শর্ত দেয়া হচ্ছে তাতে নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়বে।’
দেশবিরোধী অপশক্তির হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত এবং দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি তাকে হত্যা করে। এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, তখনও স্বাধীনতাবিরোধীরা জঙ্গিগোষ্ঠিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এই দেশবিরোধী অপশক্তির হাতে দেশকে তুলে দেয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টি (জেপি) আয়োজিত ‘নির্ভীক সাংবাদিক ও দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাদেক সিদ্দিকী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেসব দেশবিরোধী অপশক্তি আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশকে পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে তাদের পরাভূত করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সেটি যদি আমরা কার্যকরভাবে করতে পারি, তাহলে আমাদের পক্ষে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায়, মানিক মিয়াদের স্বপ্নের ঠিকানায় আমরা পৌঁছাতে পারবো।’
সদ্য প্রস্তাবিত আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি ২০০৯ সালের বাজেটের তুলনায় সাড়ে ৯ গুণ বেশি। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপির আকার ছিলো ১০০ বিলিয়ন ডলার, আর আজকে জিডিপির আকার হচ্ছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার প্লাস অর্থাৎ প্রায় ১০ গুণ।’
বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানানো প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে দেখবেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে বাজেটের পরে গতানুগতির একটা বক্তব্য দেবে, এটা গত ১৪ বছর ধরে দেখছি। তারা বলে- এই বাজেট উচ্চভিলাষী, বাস্তবায়নযোগ্য না, জনগণের কল্যাণ আনবে না -এইসব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই সকল বাজেট গত ১৪ বছর ধরে আমরা বাস্তবায়ন করেছি, বাস্তবায়নের হার ৯৭ শতাংশ। করোনা মহামারির মধ্যেও সব মিলিয়ে ৯৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।’
সাংবাদিক মানিক মিয়ার স্মৃতিচারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার ইত্তেফাক বন্ধ করে দিয়েছিল, মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তারও করেছে। কতটুকু রোষানল থাকলে সেটি করা হয়! এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক কারণেই, অন্য কোনো অভিযোগ ছিল না। সুতরাং মরহুম মানিক মিয়া আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে, যে পথ ধরেই স্বাধীনতা সংগ্রাম, সেই ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।’
দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন আমাদের সাংবাদিকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, মানুষের মুক্তির জন্য একজন সাংবাদিক বা একটা পত্রিকা যে কি অবদান রাখতে পারে সেটির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছেন মরহুম মানিক মিয়া এবং তার পত্রিকা ইত্তেফাক।’
অনুষ্ঠানে সভাপতি জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মানিক মিয়ার মধ্যে খুব নিবিড় পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলনকে মানিক মিয়া প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে মাঠে ছিলেন বঙ্গবন্ধু আর কলমে ছিলেন মানিক মিয়া।’
কানাডায় পরিচয়। সেখানেই করেন বিয়ে। তবে কাবিননামা তৈরি করেন দেশে এসে। কাবিন ধরা হয় কোটি টাকা। এতে ক্ষুব্ধ হন স্বামী। এক পর্যায়ে তর্ক-বিতর্ক, দাম্পত্য কলহ। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি স্থানে পুঁতে রেখে স্বামী চলে যান কানাডায়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্ত কর্মকর্তা ‘কৌশলী’ হলে সেই কানাডা প্রবাসীই ভিডিও কলে বের করে দেন স্ত্রীর মরদেহ। এমনকি এক পর্যায়ে ওই লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং তার দুই স্বজনকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনও দেখান সেই প্রবাসী।
স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ মাটিচাপা দিয়ে কানাডায় চলে যাওয়া এই ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম। তার বাড়ি রাজধানীর দক্ষিণখানের দক্ষিণ পাড়া সাহেব বাড়ি মোড়ে। হত্যাকাণ্ডের শিকার তার স্ত্রীর নাম আফরোজা আক্তার (৪২)। আশরাফুলের স্বীকারোক্তি অনুসারে, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে তার বাড়ি থেকে আফরোজার মাটিচাপা দেয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ঘটনার রহস্য উন্মোচনের পর আফরোজার ভাই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে আশরাফুলসহ ছয়জনের নামে মামলা করেন। এ মামলায় আশরাফুলের বাবা, ভাই, ভাবী ও খালাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আফরোজা ও আশরাফুল দুজনের কারোরই এটি প্রথম বিয়ে নয়। আফরোজার আগের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। আশরাফুলেরও আগের সংসারে এক ছেলে আছে। আগের সংসারের এক মেয়েকে নিয়ে আড়াই মাস আগে আশরাফুলের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন আফরোজা। দেশে আসার পর তিনি স্বামীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলায়ও যান। সেখান থেকে দক্ষিণখানের বাড়িতে ফেরার পর আফরোজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আশরাফুল। সেই মতে গত ২৬ মে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আফরোজাকে। আর মাটিচাপা দেয়ার পরিকল্পনা সাজান কয়েকজন মিলে। দুদিনের মাথায় ২৮ মে আশরাফুল দেশ ত্যাগ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোছা. রাজিয়া খাতুন বৃহস্পতিবার দৈনিক বাংলাকে বলেন, গত ২৯ মে বহুবার আফরোজাকে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে তার বাবা ও ভাই নীলফামারী থেকে ঢাকায় আসেন। পরে আফরোজার নিখোঁজের বিষয়ে তার ভাই আরিফুল ইসলাম দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির তদন্ত করতে গিয়ে রহস্য উদঘাটন হয়।
এসআই রাজিয়া খাতুন বলেন, “৩০ মে জিডির দায়িত্ব পেয়ে আশরাফুলদের দক্ষিণখানের বাড়ি গিয়ে তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। তখন সবাই বলেন, তারা কিছুই জানেন না। তারা জানান, ছুটি শেষ হওয়ায় আশরাফুল কানাডায় চলে গেছেন। আফরোজা বনানীতে যাওয়ার কথা বলে বের হওয়ার পর থেকে তার সন্ধান তারা পাচ্ছেন না। এছাড়া মাঝে মাঝে তারা কয়েকজন আড়ালে গিয়ে চুপি চুপি কথা বলছিলেন। তাদের আচরণে সন্দেহ হয়। পরে আমি আশরাফুলের বাবার কাছে আফরোজার মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোবাইল ও আফরোজার সন্তান অন্বেষাকে নিয়ে আমার ছেলে কানাডায় চলে গেছে’। এতে আমার সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আশরাফুলের বাবা আফরোজার ভ্যানিটি ব্যাগ বের করে দেন। ব্যাগ খুলে পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড, ওয়ার্ক পারমিট ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সবকিছুই পাওয়া যায়। আফরোজা বাইরে গেলে ব্যাগ নিয়ে গেলেন না কেন? আমার মনে প্রশ্ন জাগে এবং আমার সন্দেহ দৃঢ় হয়।”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাজিয়া খাতুন বলেন, “এক পর্যায়ে আশরাফুলের খালা পান্না চৌধুরী (আইনজীবী) আমাকে বলেন, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন এদের বাঁচাতে হবে’। এ কথা বলে তিনি আমাকে তার ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে কানাডায় আশরাফুলের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। তখন আমার মোবাইল দিয়ে আমি সব কিছু রেকর্ড করি। সেসময় আশরাফুল আমাকে বলেন, ‘আপনি এই মরদেহ উদ্ধার করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবেন। কেউ যেন কিছু বুঝতে না পারে। আপনাকে নগদ ১৫ লাখ টাকা দেব এবং আপনার পরিবারে দুজনকে কানাডায় নিয়ে আসব’। পরে ওই বাড়ির সবাইকে ‘আপনাদের কিছুই হবে না, বিষয়টি আমি দেখব’ বলে আশ্বস্ত করে চলে আসি। এতেই আমার ওপর তাদের আস্থা অনেক বেড়ে যায়।”
রাজিয়া খাতুন বলেন, “পরদিন আশরাফুলের খালা ফোন দিয়ে আমাকে একা যেতে বলেন এবং আশরাফুল আমার সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। আমার টিম দূরে রেখে আমি একা যাই। ওখানে গেলে আশরাফুল কানাডা থেকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আপনি ভিডিও কলে আসেন, মরদেহ কোথায় আছে দেখিয়ে দিচ্ছি’। তখন আমার সঙ্গে কেউ ছিল না। আমি ভিডিও কল অন করি এবং রেকর্ড করতে থাকি। এ সময় আশরাফুল ভিডিও কলে আমাকে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেট থেকে বের হয়ে বাম দিকে যেতে বলেন। এরপর একটি জায়গা দেখিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘এখানেই আফরোজার মরদেহ পুঁতে রেখেছি’। বালি নরম থাকায় আমি কিছুটা খুঁড়তেই আফরোজার দেহের কিছু অংশ দেখতে পাই। তাৎক্ষণিক আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাই। আমাদের টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। এরপর সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়।”
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আশরাফুল আলমের বাবা, ভাই, ভাবী ও খালাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে আফরোজার বড় ভাই আরিফুল ইসলাম কানাডায় থাকা আশরাফুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট বিক্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে হয়েছে, ‘সিগারেটের প্যাকেটে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে কোনো পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না’। যা রাজস্ব আদায় ও তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক। কারণ সিগারেটের প্যাকেটে লেখা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রির মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিবছর প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়।
এ সিদ্ধান্ত সিগারেট কোম্পানির কর ফাঁকি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ এবং রাজস্ব বিভাগের জোরালো মনিটরিং জরুরি। যেকোনো ধরনের মূল্য কারসাজির ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার তামাক কর বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ হাব বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানিয়েছে।
বিএনটিটিপির পাঠানো বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, এবারের বাজেটে নিম্ন স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম মাত্র ৫ টাকা বাড়িয়ে ৪৫ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শলাকায় বৃদ্ধি মাত্র ৫০ পয়সা। এই বৃদ্ধি তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর অবদান রাখবে না। প্রতি শলাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধির সুযোগে তামাক কোম্পানি বাজারে প্রতি শলাকার মূল্য এক টাকা বাড়িয়ে দেবে যা তামাক কোম্পনির অযাচিত মুনাফা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে। নিম্ন স্তরে সম্পূরক শুল্কের হার ৫৭ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশ করা হয়েছে। এখানে বিশেষজ্ঞদের ৬৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সুপারিশ উপেক্ষিত হয়েছে। দেশের প্রায় ৭৭ শতাংশ ধূমপায়ী নিম্ন স্তরের সিগারেট সেবন করে। বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব মেনে এই স্তরের সিগারেটের মূল্য ৫০ টাকা এবং কর হার ৬৫ শতাংশ করা হলে তা ধূমপান কমিয়ে আনা এবং রাজস্ব বৃদ্ধি উভয় ক্ষেত্রে সুম্পষ্ট অবদান রাখতো।
এছাড়া মধ্যম ও উচ্চ স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের মূল্য মাত্র ২ টাকা বাড়িয়ে ৬৭ টাকা ও ১১৩ টাকা এবং অতিউচ্চ স্তরে ১০ শলাকার মূল্য ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। এই ন্যূনতম বৃদ্ধি ধূমপান কমাতে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখবে না। বরং বর্ধিত মূল্য থেকে তামাক কোম্পানির অংশ বৃদ্ধি এবং খুচরা শলাকায় মূল্য বৃদ্ধির ফাঁদে ফেলে তামাক কোম্পানি তার মুনাফা বাড়িয়ে নেবে যা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর যে ঘোষণা তার বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করবে বলেও মনে করে বিএনটিটিপি।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিএনটিটিপির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের যে মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে তামাক কোম্পানির মুনাফা বাড়বে। একইসঙ্গে তা ধূমপান কমিয়ে আনতে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখবে না। যা দেশের জনস্বাস্থ্য পরিস্তিতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের (কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করেছে। তবে এসময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রুমার ছিলোপি পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে ওই গোষ্ঠীর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়। তবে আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটে সেনা টহল দলটি সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণের মুখে পতিত হয়। বিস্ফোরণে আহত এক সেনা সদস্যকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারযোগে দ্রুততার সঙ্গে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক তুজাম (৩০) মারা যান।
আইএসপিআর থেকে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের আরও সম্ভাব্য আইইডি শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল।
দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ সেনা সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে। তাদের এহেন মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের আদেশ পুনঃবিবেচনার দাবি করে দায়ের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরফলে বিচারিক আদালতে এ মামলা চলতে বাধা কাটলো বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। এ আদেশ পুনঃবিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রীর মাফরুজার সিঙ্গাপুরস্থ স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক হিসেবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার জমা করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০১২ সালের ১২ জুন বিচারিক আদালত অভিযোগ আমলে নেন। পরে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত অভিযোগ গঠন করেন। মামলাটি সাক্ষগ্রহণ পর্যায়ে রযেছে। এ অবস্থায় তিনি মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার সে আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর হাফিজ ইব্রাহিম আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগ হাফিজ ইব্রাহিমের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারিক আদালতে কোনো প্রকার মুলতবি ছাড়া মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে আদেশ দেন।
ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। তারা সবাই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে জাগরণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার ব্যানারে গাবতলীর পর্বত এলাকার সড়কে জড়ো হন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেকনিক্যাল থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সড়ক অবরোধে অংশ নেয়া প্রতিবন্ধী চালক জাহিদ বলেন, ‘আমরা ভিক্ষা করতে চাই না, কাজ করে খেতে চাই। তাই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাই। কিন্তু সড়কে বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি হতে হয়। এসব কারণে ৬ দাফা দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি।’
দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আমিনুল বাশার দৈনিক বাংলাকে বলেন, হয়রানি ও ঝামেলামুক্তভাবে রাস্তায় চলতে তাদের ৬ দফা দাবি রয়েছে। তাদের বক্তব্য শুনে সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। অবরোধের কারণে যে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল তা স্বাভাবিক হয়েছে।
রাজধানীর খিলক্ষেত রেল ক্রসিংয়ের পাশে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক (২২) নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রেললাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই যুবক। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
ঢাকা রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. এমদাদ বলেন, খবর পেয়ে গিয়ে খিলক্ষেত রেল ক্রসিংয়ের উত্তর পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় আজ সকালের দিকে ওই যুবক রেললাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান। এখন পর্যন্ত আমরা তার নাম পরিচয় জানতে পারিনি। কোন ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে হয়ত তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১৭ জুলাই আসনটির উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
তিনি বলেন, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন এবং ভোট ১৭ জুলাই। ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।
দীর্ঘদিন রক্তে সংক্রমণজনিত রোগে ভুগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গত ১৫ মে মৃত্যুবরণ করেন ফারুক। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়।
সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। সেই হিসাবে আসনটিতে ১২ আগস্টের মধ্যে উপনির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ছিল। সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হত সমাজী অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী ৬ জুলাই অভিযোগ গঠন শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন এবং সম্রাটের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার আবেদন মঞ্জুর করেন।
সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে অজ্ঞাতে (৬০) এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বসিলা শাহজালাল হাউজিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল ৮টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মনির হোসেন বলেন, মোহাম্মদপুরের বসিলা শাহজালাল হাউসিংয়ের সামনে দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত তাকে ঘোষণা করেন। নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
দেশের চার বিভাগে বজ্রবৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পাশাপাশি তিন অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। এ ছাড়া যেসব অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানায় আবহাওয়া অফিস।
সংস্থাটি জানায়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে সংস্থাটি জানায়, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনীসহ রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে এবং বান্দরবানে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাঙামাটি ও টেকনাফে ১৭ মিলিমিটার।