শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
৪ পৌষ ১৪৩২

আরাভ খানকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ

রবিউল ইসলাম আপন ওরফে আরাভ খান
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩ ২১:৪৭

পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম আপন ওরফে আরাভ খানকে ফিরিয়ে আনতে সরকার ইন্টারপোলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শনিবার এক অনুষ্ঠানে যোগদানের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আরাভ খানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’

সম্প্রতি দৈনিক বাংলাসহ ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের শিরোনামে এসেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের জুয়েলার্স মালিক আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ওরফে হৃদয়। প্রকাশিত খবর অনুসারে, ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে পুলিশের বিশেষ (এসবি) শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাভ। তিনি কদিন আগে ঢাকার বিভিন্ন অঙ্গনের তারকাদের নিয়ে গিয়ে দুবাইয়ে তার ‘আরাভ জুয়েলার্স’র উদ্বোধন করেছেন।

এদিকে অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি মাহিয়া মাহি ফেসবুক লাইভে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য করেছেন, যার জন্য মামলা হয়েছে। আমি বিষয়টি সম্পর্কে সবকিছু জানি না, আমি এটি শুনেছি। বিষয়টি জানার পর বলতে পারব।’

পুলিশের বিরুদ্ধে মাহির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অবশ্য মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানোর তিন ঘণ্টার মধ্যেই জামিন দিয়েছেন আদালত। মুক্ত হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।


দেশে পৌঁছেছে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় পৌঁছেছে জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীর শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তার মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৩৮৫ ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ‌৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে নিতে সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুপাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেবো। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) নেওয়া হয়, যেখানে প্রাথমিক অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।


সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান রোধ, মাদক ও নারী-শিশু পাচার রোধে বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানেও বিজিবি প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবি সীমান্ত উত্তেজনা ও পুশইন রোধসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল (শনিবার) ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২৫ উদযাপন’ উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বিজিবি দিবস উপলক্ষ্যে বাহিনীর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও গৌরবময় ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী।

তিনি আরও জানান, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে দু’জন বীরশ্রেষ্ঠসহ ১১৯ জনের খেতাবপ্রাপ্তি এবং ৮১৭ শহীদের আত্মত্যাগ বিজিবির ইতিহাসকে মহিমান্বিত করেছে।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশমাতৃকার বৃহত্তর কল্যাণে এ বাহিনীর যে সকল সদস্য বিভিন্ন সময়ে আত্মোৎসর্গ করেছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন তিনি।

ড. ইউনূস বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সূত্র : বাসস


সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারের বিবৃতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজেস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি সংগঠিত অগ্নিসংযোগ এবং জনগণের জানমাল ধ্বংসের সব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সব প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সব নাগরিককে আহ্বান জানানো হচ্ছে-সংঘটিত সব প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন। আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সব কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।

এতে আরো বলা হয়, দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে-এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।

অন্তর্বর্তী সরকার আরো জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরীফ ওসমান হাদি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। তার আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।

সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।


শাহবাগে বিক্ষোভ : হাদি হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্র-জনতার ঢল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজেস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই শাহবাগ এলাকায় মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। দুপুরের পরে ছাত্র-জনতার ঢল নামে সেখানে। এই বিক্ষোভ সমাবেশেই শাহবাগ মোড়ে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা করা হয়।

এসময় আন্দোলনের কারণে শাহবাগ মোড়ে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েমের ঘোষণায় শাহবাগে শুরু হয় আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশ। মৎস্য ভবনমুখী সড়কে ডাকসু সদস্যরা একটি ট্রাকের ওপর অবস্থান নিয়ে নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন। পাশাপাশি জুলাই ভাস্কর্যের পাদদেশে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সদস্যদেরও বিশাল অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এসময় আন্দোলনকারীদের ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি ঘরে ঘরে’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি লড়াই করে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছেন। তারা হাদি হত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এসময় ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাই হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বো না। আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’ তিনি হাদির হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।

ডাকসু নেতা এবি জুবায়ের বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি কোনো সহিংসতার পথে বিশ্বাসী ছিলেন না। মেধা, মনন ও জ্ঞানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলাই ছিল তার আদর্শ। জুবায়ের আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের উসকানি বা সহিংসতায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদ হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে শাহবাগে এসে সমাবেশে যোগ দেন।

গত ১২ ডিসেম্বর রিকশা আরোহী হাদি মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ওই দিন রাতেই তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা শাহবাগে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।


সন্ধ্যায় দেশে ফিরবে ওসমান হাদির মরদেহ, কড়া নিরাপত্তায় ঢাকা বিমানবন্দর

আপডেটেড ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:২৩
নিজেস্ব প্রতিবেদক

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাতবরণ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা শরিফ ওসমান হাদি। তার মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছাবে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি আজ সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার এই অকুতোভয় বীরকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এবং গ্রহণ করতে এক বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে বিমানবন্দর থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নিয়ে আসা হবে।

ফ্লাইট ট্র্যাকার সাইটে জানা যায়, হাদির কফিন বহনকারী উড়োজাহাজটি সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি।

মোটরসাইকেলে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানা যায়, গুলি ওসমান হাদির মাথার ডান দিক থেকে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে।

এই অবস্থার মধ্যেই পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সবশেষ ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।


হাদির মৃত্যু ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ : জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা: রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি হাদির মৃত্যুকে দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসরের জন্য ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে উল্লেখ করেন।

ভাষণের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ’ নিয়ে দেশবাসীর সামনে হাজির হয়েছেন। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান টেলিফোনে তাঁকে এই সংবাদটি জানিয়েছেন।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের এই অমর সৈনিককে মহান রাব্বুল আলামিন শহিদ হিসেবে কবুল করুন—এই দোয়া করি।’ তিনি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবার, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে ঘোষণা দেন, শহিদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে। পাশাপাশি তাঁর অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। ওই দিন দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

ভাষণে তিনি আরও বলেন, আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা দেশের প্রতিটি মসজিদে শহিদ ওসমান হাদির রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।

সিঙ্গাপুর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা হাদির চিকিৎসায় ‘অত্যন্ত আন্তরিকতা ও পেশাদারিত’ দেখিয়েছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি, যিনি একই সঙ্গে একজন চিকিৎসক।

হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ভাষণে ওসমান হাদিকে ‘প্রতিবাদের অনন্য প্রতীক’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি দেশপ্রেম, ধৈর্য ও দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশবাসীর প্রতি ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ওসমান হাদি ছিলেন পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রু।’ তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ করে ভয় দেখানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।

গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শহিদ হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার ইচ্ছা তাঁর ছিল। তিনি বলেন, ‘তাঁর এই মহতী ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেল।’

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই শোকের মুহূর্তে আসুন, আমরা শহিদ শরিফ ওসমান হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করি। ধৈর্য ধারণ করি, অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিই এবং যে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকি। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অবিচলভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এটাই হবে শহিদ হাদির প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা।সূত্র : বাসস


জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ আটকে রাখতে পারবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে তখন কেউ বাধা দিয়ে নির্বাচন আটকে রাখতে পারবে না। নির্বাচন ভালোভাবেই হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার ৫টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও এবং ভবন ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যদি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হয়ে সহাবস্থানে থাকে তাহলে দেশ ও জনগণের জন্য ভালো হবে।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান।

এদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় ওই ঘটনার মূলহোতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘মূল আসামি গ্রেপ্তার হয়নি সত্যি। তবে তার সহযোগী যারা ছিল তারা গ্রেপ্তার হয়েছে।’

এর আগে তিনি সিরাজদীখান কুসুমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, কুসুমপুর উচ্চবিদ্যালযের চার তলা একাডেমিক ভবন, ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের বিদ্যমান একাডেমিক ভবনের ওপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন ও রাজদিয়া আব্দুল জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সৈয়দা নুরমহল আশরাফী ও পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম উপস্থিত ছিলেন।


রাজধানীর হোস্টেলে ঝুলছিল এনসিপি নেত্রীর মরদেহ  

* হতাশা থেকে আত্মহত্যা, ধারণা স্বজনদের * আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন: এনসিপির নেতা রেজা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর জিগাতলার একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম জান্নাত আরা রুমি (৩০)। তিনি ধানমন্ডি থানা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলায়। তার বাবা জাকির হোসেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা ফেসবুক পোস্টে জানান, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হুমকি ও সাইবার বুলিংয়ের কারণে জান্নাত আরা রুমি আত্মহত্যা করেছেন। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, এটি আত্মহত্যা নয় খুন।

হাজারীবাগ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এনসিপির নেত্রী জান্নাত আরা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তিনি জিগাতলার ওই ছাত্রী হোস্টেলের একটি কক্ষে একা থাকতেন।’

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ওই হোস্টেলে যায়। ওসি বলেন, ‘পরিচারিকা ডাকাডাকির পর দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন। এ সময় হার্ডবোর্ডের দরজার ছিটকানি খুলে যায়। পরে পুলিশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় জান্নাত আরার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।’

একই থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, রুমীর বাড়ি নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাসস্ট্যান্ডে। বাবার জাকির হোসেন। রুমী ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ে পড়ালেখা শেষ করেছেন। এরপর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করছিলেন। তবে বর্তমানে কোথায় চাকরি করতেন, নাকি বেকার ছিলেন তা জানাতে পারেননি তিনি।

তবে রুমীর চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান জানান, জিগাতলার ওই বাসার ছাত্রী হোস্টেলে থাকতেন রুমী। তার দুবার বিয়ে হয়েছিল। দুই সংসারই ভেঙে গেছে। দুই সংসারে দুটি সন্তানও রয়েছে রুমীর। দুই সন্তান বাবার কাছে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘শুনেছি রুমীর রুমমেট বাড়িতে গিয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে একাই ছিলেন রুমী। তবে একই ফ্ল্যাটে পাশের রুমে অন্য রুমমেটরা ছিলেন। রাতে গৃহকর্মী পঞ্চম তলায় তাদের ফ্ল্যাটের সামনে গেলে দরজা খোলা দেখতে পান এবং ভেতরে আলো জ্বলতে দেখেন। এরপর উঁকি দিলে রুমীকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনিই সবাইকে ডেকে তোলেন বলে শুনেছি।’

রুমীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তার স্বজনরা বলেন, ‘সাংসারিক বা পারিবারিক বিষয়ে হতাশা থেকে এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন রুমী। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিস্তারিত তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানান তারা।

এদিকে জান্নাত আরার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা। সেখানে তিনি জানান, গত মাসে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের দিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জিয়ার কবর খুঁড়তে চাওয়া রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একজনকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে দিয়েছিলেন জান্নাত আরা। এর পর থেকে আওয়ামী লীগ জান্নাত আরাকে সাইবার বুলিং, হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছিলেন বলে তারেক রেজা তার পোস্টে জানান। ওই পোস্টে তারেক রেজা আরও লেখেন, এ কারণে জান্নাত আরা রাতে আত্মহত্যা করেছে।

ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে তারেক রেজা আরও লিখেছেন, ‘এটাকে আমরা আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন। যারা আমার বোনের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে, তাদের জীবন আমরা শান্তিতে কাটাতে দেব না।’


স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।

অভিযোগ অনুযায়ী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার দায়িত্বকালীন সময়ে অসাধু উপায় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রায় ২২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেন ও দখলে রাখেন।

এছাড়া তদন্তে দেখা যায়, তিনি নিজের নামে পরিচালিত ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৩ টাকা লেনদেন করেছেন।

এ সব অর্থকে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ উৎস গোপন ও রূপান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে শাফি মোদ্দাছির খান জ্যোতি এবং মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খানকেও আসামি করা হয়েছে।

তদন্ত অনুযায়ী, তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ নামে বাড়ি নির্মাণ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অপরাধলব্ধ অর্থের অবৈধ উৎস গোপনে সহায়তা করেন।

দুদকের তদন্তে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মোট নীট সম্পদের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ৫৪৮ টাকা, যার বিপরীতে বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে মাত্র ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৬ টাকা।

এ ঘটনায় আসাদুজ্জামান খান কামাল ও অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় চার্জশিট দাখিল করেছে কমিশন।


শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরু

জেআইসি সেলে গুম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক  

আওয়ামী লীগের শাসনামলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সেই সঙ্গে এই মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করার আদেশ দেন।

এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ এনে প্রসিকিউসন পক্ষে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার ৩ সেনা কর্মকর্তাসহ আসামিদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান তাদের আইনজীবীরা।

আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তার যে তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়, তারা হলেন— প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ এ মামলায় পলাতক অপর আসামিরা হলেন— ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ জন কর্মরত সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। আর্মি অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, দুটি মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে গেছেন এবং বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন।

ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ধারা ৫৪১ (১)-এর ক্ষমতাবলে এবং দ্য প্রিজন অ্যাক্টের ধারা ৩-এর বি অনুসারে ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড-সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত এমইএস বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। গ্রেপ্তার সেনা কর্মকর্তাদের পরবর্তীতে এই কারাগারে রাখা হয়।


না ফেরার দেশে জুলাই বিপ্লবী ওসমান হাদি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন জুলাই বিপ্লবী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি। আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির চিকিৎসা দেখভালের সঙ্গে যুক্ত থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজেও ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়।

পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবেলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

গত ১২ ডিসেম্বর মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন হাদি।

এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওই দিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওসমান হাদি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন বলে জানা যায়। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরেই অপারেশন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিন হাদির শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

ওই সময়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওসমান হাদি যদি রবের ডাকে সাড়া দিয়ে শহীদের কাতারে শামিল হয় সে ক্ষেত্রে পুরো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মজলুম জনতাকে সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতকরণে শাহবাগে জড়ো হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

ইনকিলাব মঞ্চ বলেছে, খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব এবং পুরো বাংলাদেশকে অচল করে দেওয়া হবে। খুনি যদি ভারতে পালিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে যেকোনো মূল্যে তাকে গ্রেপ্তারপূর্বক ফেরত আনতে হবে।


সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির জরুরি অস্ত্রোপচার, পরিবারের অনুমতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখযোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই নেতার জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বার্তার মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে বলা হয়েছে, আল্লাহ যেন তাকে হায়াতে তাইয়্যেবা নসিব করেন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, যদি ওসমান হাদি মারা যান বা শহীদের কাতারে শামিল হন, তবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় স্বাধীনতাকামী জনতাকে শাহবাগে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধসহ প্রয়োজনে পুরো দেশ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় ওই পোস্টে। এছাড়া খুনিরা যদি ভারতে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তবে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকেও হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে নিশ্চিত করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে স্থানান্তর করা হয়।


খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত ও স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি চিকিৎসকদের দেওয়া চিকিৎসা ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারছেন, যা নিয়ে আশাবাদী তার মেডিকেল বোর্ড। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ডা. জাহিদ জানান, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড প্রতিনিয়ত তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এখন পর্যন্ত ম্যাডামকে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তা তিনি গ্রহণ করতে পারছেন এবং গত কয়েকদিনের শারীরিক অবস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। চিকিৎসকরা আশা করছেন, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

খালেদা জিয়ার বর্তমান অসুস্থতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডা. জাহিদ অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের আমলে পরিকল্পিতভাবে তাকে যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এর ফলেই তার শারীরিক জটিলতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এবং বর্তমানে তিনি বেশ কঠিন সময় পার করছেন। তবে তার বয়স ও অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবং ২৭ নভেম্বর থেকে তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন। ডা. জাহিদ দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন, যাতে তিনি আবারও বাংলাদেশের রাজনীতিতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেন।


banner close