দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২৯ মে দিন ঠিক করা হয়েছে।
সোমবার মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে না পারায় নতুন দিন ধার্য করা হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া দৈনিক বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। এ জন্য আমরা সময়ের আবেদন করেছি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জ কারাগারের নবনির্মিত ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক মো. আকতারুজ্জামান নতুন দিন ধার্য করেছেন।’
বর্তমানে খালেদা জিয়াসহ এ মামলার মোট আসামি ১০ জন। বাকিরা হলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক কৃষিমন্ত্রী এম কে আনোয়ার, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রো বাংলার সাবেক পরিচালক মুঈনুল আহসান এবং সাবেক জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন।
২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা করে। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়লা উত্তোলনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা সিএমসির সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করায় সরকারের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন করা হয়।
সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার পর সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস ঢাকা অভিমুখে রওনা হয়েছে।
এর আগে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজারে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উদ্ধারকারী কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল হাবিব বলেন, আজ সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজার মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড তেলের ডিপোর পশ্চিম পাশে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হয়। খবর পেয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে পুলিশসহ মোগলাবাজার থানা পুলিশের সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। তবে ট্রেন যোগাযোগ বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সিলেট থেকে কালনী এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই-নিরস্ত্র) পদে বড় পরিসরে নিয়োগে সম্মতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব কাজী লুতফুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাঠামোভুক্ত বিভিন্ন ইউনিটের বিপরীতে ৪ হাজার এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) পদে রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজনে বর্ণিত শর্তে নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।
তবে, চিঠিতে বেশকিছু শর্ত দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো— অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ হতে যাচাইকৃত বেতনস্কেল অনুসরণ করতে হবে; প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে; এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) ৪ হাজার পদ সৃজনের প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে প্রেরণের পূর্বে ৪ হাজার কনস্টেবল পদ বিলুপ্তিকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে, পদসমূহ সৃজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো মোট ৪ হাজার এএসআই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২ হাজার পদে সরাসরি নিয়োগ এবং বাকি ২ হাজার পদে কনস্টেবলদের পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে।
দেশের এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা হলো ২১৫। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭৮২ জন নতুন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ৫০ হাজার ৬৮৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গেল সেপ্টেম্বরে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সংক্রমণ হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে একাধিক জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞ ওই মাসে বলেছিলেন, অক্টোবর বা নভেম্বরে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে। এ মাসের শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। গত রোববার দেশে একদিনে ডেঙ্গুতে নয়জনের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বরও ২৪ ঘণ্টায় নয়জন মারা গিয়েছিলেন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে যে ৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তার মধ্যে দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা হাসপাতালে। বাকি একজনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ৪৯৫ জন পুরুষ এবং ২৮৭ জন নারী।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১২ জন ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার দুই সিটির হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার দুই সিটির বাইরে বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এ বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৪। এর মধ্যে বরগুনার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন।
এদিকে থেমে থেমে রোদ ও বৃষ্টির এমন আবহাওয়া এডিস মশার বংশ বিস্তারে উপযুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন। পাশাপাশি পূজার ছুটিতে বাসাবাড়ি, অফিসে বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে চলতি অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কায় দেখা যাচ্ছে অক্টোবরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দুটোর সংখ্যাই বাড়ছে।
দেশে ২০০০ সালে যখন নতুন করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয়, তখন তা ছিল মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু দিন দিন এটা ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত বছর থেকেই ডেঙ্গু ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৯ জন। আর ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪০।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত যে কোনো সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি উল্লেখ করেন, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চান।
গতকাল সোমবার নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতির (ডিক্যাব) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী আলাপচারিতার সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব দ্বিপক্ষীয় বিষয়, সীমান্ত সমস্যা, পানি বণ্টন সমস্যা এবং ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব স্বীকার করেন, কিছু সমস্যা আছে, যা যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কেবল এই অঞ্চলেই নয়, বিশ্বব্যাপীও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মিশ্রি উল্লেখ করেন, ‘আমরা সকলেই বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কিত ঘোষণা এবং বিবৃতি দেখেছি। আমি বুঝতে পারছি যে, এই বিষয়ে ফেব্রুয়ারির কাছাকাছি একটি সময়সীমা নির্দেশ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ নিজেরাই নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে কথা বলেছে এবং ভারত তাদের সফল আয়োজনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে - এই বিষয়টি ভারতকে উৎসাহিত করেছে।
মিশ্রি বলেন, ‘এটি একটি জনমতের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার হবে এবং বাংলাদেশের জনগণ যে সরকারকেই তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে বেছে নেবে, আমরা তার সঙ্গেই কাজ করব।’
এদিকে ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়টি একটি ‘বিচারিক আইনি প্রক্রিয়া’ এবং এর জন্য দুই দেশের সরকারের মধ্যে ‘যোগাযোগ এবং পরামর্শ’ প্রয়োজন বলে মনে করে নয়াদিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলো পরীক্ষা করছি। আমরা বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’
তিনি বলেন, এর বাইরে তিনি মনে করেন না - এই মুহূর্তে আরও কিছু বলা গঠনমূলক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশিদের এই ধারণা বাদ দেওয়া উচিত যে, ভারতের একজন পছন্দের ব্যক্তি আছে বা তারা একদল লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে অথবা অন্য দলের লোকদের উপেক্ষা করছে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ব্যাংকিং খাতে রিজার্ভ চুরি, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক ও এস আলম গ্রুপের ঋণ জালিয়াতিসহ ব্যাপক লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংক খাত ‘ধ্বংসের’ অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন সাবেক গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক-বর্তমান ১৯ কর্মকর্তা এবং দুজন ভারতীয় কর্মকর্তার নথি তলব করে ফের চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ব্যাংকিং খাতে ঘটে যাওয়া এসব বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত জুনে প্রথম দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদারের নথিসহ ২৩ ধরনের নথি চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তবে সে দফায় কাঙ্ক্ষিত তথ্য না মেলায় গত সেপ্টেম্বরে কমিশন তৃতীয়বারের মতো আবার নথি তলব করে।
এই তলবকৃত নথির তালিকায় রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর টেকনিক্যাল দায়িত্বে থাকা দুজন ভারতীয় কর্মকর্তার নথিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে এখনও সব নথিপত্র হাতে পায়নি বলে জানিয়েছে দুদক।
জানা গেছে, সম্প্রতি গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তাদের প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর, দায়িত্বের পরিধি এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যাদের নাম তালিকায় রয়েছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা, নীতি শিথিলতা এবং অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে তদন্ত চলছে। দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। রিজার্ভ চুরির সময় গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন ড. আতিউর রহমান, যিনি একই বছরের ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন।
এছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল এবং বিএফআইইউয়ের সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহার নামও রয়েছে এ তালিকায়।
বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক (যিনি সম্প্রতি এক মাসের নোটিশে পদত্যাগ করেছেন) এবং আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়। আরও আছেন কমন সার্ভিস বিভাগ-২-এর পরিচালক মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তা মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন।
দুদকের চিঠিতে মসিউজ্জামানের নাম দুইবার এসেছে—একবার অতিরিক্ত পরিচালক, আবার উপপরিচালক হিসেবে—যা একই ব্যক্তিকে নির্দেশ করে বলে জানা গেছে।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় নেওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আসে এবং ফিলিপাইন থেকে প্রায় দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এখনো প্রায় ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারের প্রক্রিয়া ফিলিপাইনের আদালতে চলছে।
রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ও ছাড়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাংকের চারটি বিভাগ—ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম এবং অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং—এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। দুদকের চিঠিতে আরও দুটি ভারতীয় নাগরিকের তথ্য চাওয়া হয়েছে—নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানা। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগে ‘সুইফট’ সংযোগ স্থাপনের কাজ করেছিলেন, আর রাকেশ আস্তানা চুরির পর নিরাপত্তা ভেদ সংক্রান্ত তদন্তে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানের আমলে।
এদিকে গতকাল সোমবার আলাদা এক অনুসন্ধানে দুদক চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে এক দিনেই ৭৭ জন কর্মচারীকে বদলি করার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
গেল ফেব্রুয়ারিতে অভিযান চালিয়ে দুদক রেজাউল করিমের নামে লালমাটিয়ায় ৭ কোটি টাকার দুটি ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে স্ত্রীর নামে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট এবং সাতক্ষীরার তালা থানায় জমি কেনার প্রাথমিক দুর্নীতির উপাদান খুঁজে পেয়েছিল।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আজ সোমবার রিয়াদে স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এই চুক্তিকে দুই দেশের মধ্যে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও অভিবাসন ব্যবস্থার ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরব সরকারের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বলে আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথমবারের মতো সাধারণ কর্মী নিয়োগ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি। এর আগে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কর্মী পাঠানো হতো অনানুষ্ঠানিকভাবে। ১৯৭৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করছেন, যা বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
এর আগে, ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই ও স্বীকৃতি সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে সাধারণ কর্মী নিয়োগে এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি, যা প্রবাসী কর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিক থেকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে দক্ষ, আধা-দক্ষ ও সাধারণ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ, দক্ষতা যাচাই, নিরাপদ অভিবাসন ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তা ও কর্মীর মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, আকামা নবায়ন, এবং সময়মতো এক্সিট ভিসা প্রদানের বিষয়গুলো আরও সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়িত হবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. আসিফ নজরুল সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, যেন কর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে, আকামা নবায়নের দায়িত্ব নিয়োগকর্তারা যথাযথভাবে পালন করে এবং দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন দ্রুত এক্সিট ভিসা পায়।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী প্রেরণের আগে আমরা প্রশিক্ষণ ও স্কিল সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করব। এর মাধ্যমে সৌদি আরব আরও গুণগত শ্রমশক্তি পাবে।’
জবাবে সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের এক গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার অংশীদার। এই চুক্তি শুধু নিয়োগ নয়, মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।’
তিনি কর্মী কল্যাণ, দক্ষতা উন্নয়ন, এবং আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উভয় দেশের মন্ত্রণালয়কে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগে প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন, কর্মী নিয়োগে ডিজিটাল যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালু, নারী কর্মীদের সুরক্ষা এবং অবৈধ দালাল চক্র দমনে যৌথ মনিটরিং সিস্টেম গড়ে তোলার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন, মিশন উপপ্রধান এস. এম. নাজমুল হাসান, শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী, সৌদি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চুক্তি কার্যকর হলে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা আগামী দুই বছরের মধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ২৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন, যারা বছরে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান।
চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীরা দক্ষতা অনুযায়ী ভালো বেতন, উন্নত কর্মপরিবেশ, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা পাবেন। একই সঙ্গে কর্মীদের জন্য একটি যৌথ অনলাইন ডেটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে, যেখানে নিয়োগ ও কর্মচুক্তির তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
এই ঐতিহাসিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সরকার। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দক্ষ কর্মী রপ্তানি শুধু রেমিট্যান্স বাড়াবে না, এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।’ সূত্র: বাসস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব খাতভুক্ত নিয়মিত পদে নিয়োজিত স্থায়ী কর্মচারীগণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন অবসারপ্রাপ্ত কর্মচারী অবসরভাতা ও অবসরজনিত সুবিধাদি পরিকল্পমালা, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ/১৪৩২ বঙ্গাব্দ নীতিগত অনুমোদন করলো ডিএসসিসি পরিচালনা কমিটির ৯ম (নবম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ১১ই আগস্ট ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ৮ম কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ‘অবসরজনিত পেনশন ও আনুতোষিকের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীগণের পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০’ এবং ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী চাকুরি বিধিমালা, ২০১৯’ অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত পরিকল্পমালা নীতিগত অনুমোদনপূর্বক চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডের সড়ক খাতে বরাদ্দকৃত ১৪৮ কোটি টাকার মোট ১২৭টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।
এছাড়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অবসরজনিত বিদায়কালীন এককালীন চার লক্ষ টাকা ও চাকুরিকালীন মৃত্যুতে দাফন/সৎকারের জন্য দশ হাজার এবং পরিবারবর্গকে এককালীন তিন লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বলেন, “বৃষ্টির পানিতে রাস্তার সংস্কার টেকসই হয় না বিধায় প্রলম্বিত বৃষ্টিপাতের জন্য ডিএসসিসির আওতাধীন বিভিন্ন সড়কের মেরামত ও উন্নয়ন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগুলো সংস্কার করা হবে।”
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সোমবার ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের (আইসেস্কো) মহাপরিচালক ড. সালিম এম. আল মালিক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠকে ড. আল মালিক বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস ও তাঁর বিশ্বব্যাপী প্রভাববিস্তারকারী উদ্যোগগুলোর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন চিকিৎসাশাস্ত্রের ছাত্র, স্নাতক শেষের পথে, তখনই প্রথম আপনার ও গ্রামীণ ব্যাংকের কথা শুনেছিলাম। আপনার থ্রি জিরো তত্ত্ব তখন ব্যাংকিং থেকে খেলাধুলা, এমনকি পরিবেশ বৈঠক পর্যন্ত সর্বত্র আলোচিত ছিল। সেটি ছিল সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।’
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রশংসা করে আইসেস্কো মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর আমি বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছি এবং সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে জেনেছি। আপনাদের উদ্যোগের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
ড. আল মালিক বৈঠকে প্রফেসর ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’— শূণ্য দারিদ্র্য, শূণ্য বেকারত্ব এবং শূণ্য নিট কার্বন নিঃসরণ —আইসেস্কোর শিক্ষা, যুব উন্নয়ন ও পরিবেশুবিষয়ক কৌশলগত পরিকল্পনায় যুক্ত করার অনুমতি চান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আপনার তত্ত্বটিকে আমাদের মূল কৌশলের অংশ হিসেবে গ্রহণের অনুমতি চাইতে এসেছি। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মিশনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
আইসেস্কোর চলমান কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, সংস্থাটি সদস্য দেশগুলোকে খাদ্য অপচয় ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সহায়তা করছে। ‘ব্রুনেই, আলজেরিয়া ও নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলো ইতোমধ্যে আমাদের সহায়তায় উদ্যোক্তা কার্যক্রমকে সামাজিক ব্যবসা মডেলে রূপান্তর করেছে,’ বলেন তিনি।
প্রতিক্রিয়ায় প্রফেসর ইউনূস আইসেস্কোর শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ব্যবসা সম্প্রসারণে যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনাকে স্বাগত জানান।
বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর সি. আর. আবরার উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সোমবার বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ)ু এর সভাপতি অ্যালিস মগওয়ে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দুজনের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস মগওয়ের সফরের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় সম্পৃক্ততা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আমি বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। আমি তাঁদের সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি বাংলাদেশে আসতে, কারণ দেশটি এখন এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় অতিক্রম করছে।’
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, ‘প্রতিটি সফর অবহেলিত বিষয়গুলো সামনে আনে এবং আমাদের সেগুলো নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।’
বৈঠকে তিনি তাঁর প্রয়াত বন্ধু আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুর স্মৃতিচারণ এবং ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার প্রতি তাঁদের যৌথ অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন।
গাজার চলমান মানবিক সংকটও আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
অ্যালিস মগওয়ে জানান, গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে এফআইডিএইচ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি গাজা ইস্যুতে প্রফেসর ইউনূসের অবিচল সংহতির প্রশংসা করেন।
মগওয়ে বলেন, ‘প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আপনি এবং আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছেন।’
এফআইডিএইচ সভাপতি গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় গুম ও বিরোধী মত দমনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন । একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখেন।
মগওয়ে বলেন, ‘তরুণরা পরিবর্তনের এক প্রবল তৃষ্ণা দেখাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় আমার চিন্তায় থাকে। আমি প্রতিদিন সকালবেলার প্রার্থনায় দেশটিকে স্মরণ করি।’
বৈঠকে মানবাধিকার সংস্থা অধিকারু-এর সিনিয়র গবেষক তাসকিন ফাহমিনা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস
আয়নার মতো স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চান উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আমরা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে চাই, এটা কোনও কথার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে আমরা মিডিয়াকে পার্টনার হিসেবে পেতে চাই।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আজকের সংলাপ শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। আপনাদের মতামত নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। মিসইনফরমেশন, ডিসইনফেমেশন এড্রেস করার জন্য আপনাদের গুরুত্ব অনেক।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করে ফেলেছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে ফেলেছি। ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার চিহ্নিত করেছি, যাদের অনেকে ভোট দিয়ে যেতো, মিডিয়ায় এমন নিউজ দেখেছি। ৪৩ লাখের বেশি ভোটাযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে পেরেছি। নারী-পুরুষের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারীরা যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করছি। ভোটের দায়িত্বে যারা থাকেন প্রায় ১০ লাখ লোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, সরকারি চাকরিজীবী, হাজতিদের ভোটের আওতায় আনবো। আমরা এবার এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি, আইনে আগেও ছিল। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে পারবো না।
সিইসি বলেন, আমরা একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে এগিয়ে যেতে চাই। একবারে স্বচ্ছভাবে, আয়নার মতো করে নির্বাচন করতে চাই। এর জন্য আপনাদের সহায়তা চাই। আপনাদের পরামর্শ আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটা রেগুলার ট্রান্সপারেন্ট ওয়েতে আগাতে চাই। তাই আমাদের সচিব, কমিশনারদের বলা আছে যাতে তারা নিয়মিত ব্রিফিং করেন।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
দেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদি পশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় রোগটির বিস্তার রোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম শুরু করেছে। অ্যানথ্রাক্স একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত জুনোটিক রোগ, যা গবাদি পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর, স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে গবাদি পশুর টিকাদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদিপশুর তড়কা রোগ প্রতিরোধে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করেছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে আক্রান্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ, অসুস্থ পশু জবাই প্রতিরোধ এবং খামারের প্রতিটি পশুকে টিকার আওতায় আনতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
‘ওয়ান হেলথ’ কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করছেন। অসুস্থ পশু জবাই না করা, মৃত পশুকে খোলা স্থানে বা পানিতে না ফেলা, বরং গভীরভাবে মাটিচাপা দেওয়া এবং যেকোনো পশুজনিত অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত নিকটস্থ ভেটেরিনারি হাসপাতাল বা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাকে অ্যানথ্রাক্সপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অতিসত্বর প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এলআরআই) রংপুর বিভাগে প্রায় ৩০ লাখ অ্যানথ্রাক্স টিকা সরবরাহ করবে, যার মধ্যে রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাতেই ২০ লাখ টিকা প্রেরণ করা হবে।
রংপুর জেলার নয়টি উপজেলায় পীরগাছা (৫৩,৪০০), কাউনিয়া (৩৪,০০০), রংপুর সদর (২৬,৫০০), মিঠাপুকুর (৩৪,৫০০), গংগাচড়া (৪,৮০০), তারাগঞ্জ (৪,৩০০), বদরগঞ্জ (৫,০০০) ও পীরগঞ্জ (৫,০০০) এ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার গরুর শরীরে টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উঠান বৈঠক,পথসভা এবং প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলার ৩৬টি কসাইখানায় গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৩৬টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া গবাদিপশুর শরীরে অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদানের জন্য ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২৬ হাজার ৪০০ গরুর শরীরে টিকা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মৃত গরু পুঁতে ফেলা, টিকাদান, মাইকিং, উঠান বৈঠক এবং লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ৫টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আজ গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দিনব্যাপী সংলাপ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল রোববার ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় টিভি মিডিয়া ও দুপুর আড়াইটায় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে বসবে সংস্থাটি। দুদফায় ৪০ জনের মতো গণমাধ্যম প্রতিনিধির সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
৭ অক্টোবর নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার কথা রয়েছে ইসির। এরপর জুলাই যোদ্ধা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বসবে ইসি। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সংলাপে উঠে আসা মতামত তার কমিশন বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভোটের সংলাপ শুরু করে ইসি। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সংলাপ শুরুর দিন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অর্ধেকেরও বেশি অংশ নেননি। ইসির প্রথম দিনের সংলাপে মোট ৩০ জন করে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের বিষয়ে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল একমত। তবে তাদের দল গণভোট নির্বাচনের আগেই চায়।
গতকাল রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনা চলছে। এই আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন হামিদুর রহমান আযাদ।
গণভোট কবে হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত নয়। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনকে কোনো ধরনের সমস্যা করা ছাড়া নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে এটা হতে পারে। তফসিলের আগেও হতে পারে। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো ধরনের বাধা নেই। জনগণকে একটা জটিল অবস্থায় ফেলে না দিয়ে সহজভাবে এগোলে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, গণভোট হলে এটা কখনো চ্যালেঞ্জ করতে গেলে টিকবে না। পার্লামেন্ট এটাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘গণভোটের রেজাল্ট যদি আমাদের বিপক্ষেও যায়, আমরা এখানে ছাড় দেব। আমরা জনগণের সিদ্ধান্তকে মেনে নেব। এটি নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই নেতা বলেন, গণভোট আগে না পরে, এটা আলোচনার সুযোগ আছে। সবাই গণভোটের পক্ষে একমত হয়েছে। গণভোট আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে একটা নিদের্শনা দিতে হবে। এরপর কমিশন গণভোটের আয়োজন করতে পারবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির।