বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৯ আশ্বিন ১৪৩২

রিজেন্টের মাসুদ পারভেজের জামিন স্থগিত

মাসুদ পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৪২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৩৬

১১ কোটি টাকা পাচার মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিল শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। আদালত আট সপ্তাহের হাইকোর্টের জামিনাদেশ স্থগিত করেছেন বলে জানয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

গত বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে জামিন দিয়েছিলেন। পরে সেই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করে দেন।

মামলা থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করেন সিআইডির উপ পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম হোসেন। প্রায় দেড় বছর তদন্ত শেষে সেই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়। চার্জশিটে সাহেদ ও রিজেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে সর্বমোট ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে কোভিড মহামারি শুরু হলে সাহেদ তার প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের মাধ্যমে রিজেন্ট ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে একটি হিসাবও খোলা হয়। ওই হিসাবটি পরিচালনা করেন মাসুদ পারভেজ ও তার বাবা সিরাজুল করিম। ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ওই হিসাবটিতে সর্বমোট ৩ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ টাকা জমা হয়।

সিআইডির তদন্তে উঠে আসে, সাহেদ জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কোভিড সার্টিফিকেট দেয়ার নামে জনপ্রতি যে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নিতেন, সেসব অর্থ এই হিসাবে জমা হতো। জালিয়াতির অর্থ ও প্রতারণার অর্থ তিনি তার নিজের ও সহযোগীদের নামে ছাড়াও রিজেন্ট হাসপাতাল এবং অস্তিত্বহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৪৩টি হিসাব পরিচালনা করতেন। এসব হিসাবে মোট ৯১ কোটি ৭০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৭ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ৯০ কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৫২৪ টাকা উত্তোলন করেন। বর্তমানে এসব হিসাবে ২ কোটি ৪ লাখ ৩৯ হাজার ১১ টাকা স্থিতাবস্থায় রয়েছে।

পুলিশের দেয়া চার্জশিটে বলা হয়েছে, সাহেদ ও মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীরা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের মাধ্যমে স্থানান্তর-রূপান্তর-হস্তান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর বিভিন্ন ধারায় অপরাধ করেছেন।

বিষয়:

আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে ওরা পুড়িয়ে দিল সেতু ভবন, তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে শেখ হাসিনা

* হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করার নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী *ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ জব্দ, তাপস-ইনুর সঙ্গে কথোপকথন ট্রাইব্যুনালে শোনানো হলো
আপডেটেড ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনকারীদের অবস্থান ড্রোনের মাধ্যমে নির্ণয় করে, ছত্রীসেনা ব্যবহার করে হেলিকপ্টার থেকে বোম্বিং ও গুলিবর্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার ৪টি ফোনকলের রেকর্ড বাজিয়ে শোনানো হয়।

শেখ হাসিনার এই চারটি ফোনালাপের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দুটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের একটি ফোনালাপ রয়েছে।

এতে জুলাই আন্দোলন দমনে লেথাল উইপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করা, আন্দোলনকারীদের তালিকা করে পাকড়াও করা, রাজাকার ট্যাগ দিয়ে তাদের ফাঁসি দেয়া ও মেরে ফেলা, ছত্রীসেনা ব্যবহার করে বোম্বিং করা, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন লাগিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপানো, তাদের জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে প্রপাগাণ্ডা ছড়ানোসহ আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার সব পরিকল্পনার কথা উঠে আসে।

‘আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়েছি। এখন লিথাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে।’ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে এমন কথা বলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে তার এই নির্দেশনা ছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন এই মামলার স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং অফিসার ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল-১ এ দেয়া তার সাক্ষ্যর জবানবন্দি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তিনি এই মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

কথপোকথনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলেন তাপস। এর মধ্যেই শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিটিআরসি-বিটিভি পুড়িয়ে দিয়েছে। এখন ইন্টারনেট বন্ধ। মেশিনপত্র সব পুড়ে গেছে। আমি বলছি যা যা পোড়াতে... আমাদের সেতু ভবন পুড়িয়েছে।’

তখন তাপস বলেন, রাতের বেলায় আরও ব্যাপক আক্রমণ করবে। কারণ আমি দেখলাম রাস্তায় রাস্তায় ওরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে। এ সময় জায়গার নাম জানতে চান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিত্তোরে বনানী-গুলশানের কথা উল্লেখ করেন সাবেক এই মেয়র।

পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ফোনালাপে শেখ হাসিনা নিজেই আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন- ‘আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, যা যা পোড়াতে। ওরা পুড়িয়ে দিলো সেতু ভবন।’ তার মানে আগুন দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত জিনিস না পুড়িয়ে অন্য স্থাপনা পোড়ানো হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন এই মামলার স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং অফিসার ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল-১ এ দেয়া তার সাক্ষ্যর জবানবন্দি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তিনি এই মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে তানভীর জোহা বলেন, তিনি মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিটিআরসি, এনটিএমসি, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর হতে বিভিন্ন অডিও ক্লিপ,ভিডিও ফুটেজ, সিডিআর, আইপিটিআর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ বিধি মোতাবেক মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। এতে শেখ হাসিনার ৬৯টি কথোপকথনের রেকর্ডও রয়েছে। যাতে আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলন দমনে তার পরিকল্পনা ও নির্দেশনার কথা জানাচ্ছিলেন।

এসব ফোনালাপে স্পষ্ট করেই মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়ার কথা বলতে শোনা যায়। আন্দোলনকারীদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই যেন গুলি করা হয় এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

এছাড়া সকালে রাজসাক্ষী হওয়া আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা জবানবন্দি দেন।

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথন

হাসানুল হক ইনু: আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাচ্ছি আর কি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং শনির আখড়াতে...।

শেখ হাসিনা: না, রামপুরা ক্লিয়ার। শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখনো আছে।

ইনু: শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই...।

শেখ হাসিনা: খালি মোল্লা না, সেখানে অনেক মাদ্রাসা। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বলেছি। নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে। আমরা ছত্রীসেনা নামাচ্ছি।

ইনু: ওহ, আচ্ছা।

শেখ হাসিনা: আমি বলছি, ক্যাজুয়ালটির দরকার নাই। ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিক আছে, আকাশ থেকে নামবে৷ কারণ, দুই পাশ দিয়ে ধরবে... ম্যাসেজটা দিয়ে দিতে পারেন।

ইনু: আচ্ছা।

শেখ হাসিনা: ছত্রীসেনা পাঠানো হচ্ছে। ঠিক আছে, হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে। হেলিকপ্টার যাক, ওপর দিয়ে মারবে।

ইনু: আচ্ছা, ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আর কি।

হাসিনা: হুম।

শেখ তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ

শেখ হাসিনা: দরকার নাই, ওটা দরকার নাই। আমি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলছি, ওরা রেডি থাকবে ঠিক আছে! এখনতো আমরা অন্য ইয়ে করতেছি। ড্রোন দিয়ে ছবি নিচ্ছি আর হেলিকপ্টারে, ইয়ে হচ্ছে মানে, কয়েক জায়গায়।

তাপস: তাহলে ওই কিছু ছবি দেখে পাকড়াও করা যায় না রাতের মধ্যে?

শেখ হাসিনা: সবগুলোকে অ্যারেস্ট করতে বলেছি রাতে।

তাপস: হ্যাঁ, পাকড়াও, পাকড়াও করলে ওদেরকে...

শেখ হাসিনা: না, ওটা বলা হয়ে গেছে, ওটা নিয়ে র‍্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই, সবাইকে বলা হইছে যে যেখান থেকে যে কয়টা পারবা ধইরা ফেলো।

তাপস : জ্বি

শেখ হাসিনা: না, ওটা বলা আছে। আর যেখানে গেদারিং দেখবে সেখানে ওই ওপর থেকে, এখন ওপর থেকে করাচ্ছি, অলরেডি শুরু হইছে কয়েকটা জায়গায়।

তাপস: জ্বি

শেখ হাসিনা:…হইয়া গেছে।

তাপস: জ্বি, জ্বি, মোহাম্মদপুর থানার দিকে মনে হয় ওরা যাচ্ছে একটা—আমাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলল।

শেখ হাসিনা: মোহাম্মদপুর থানার দিকে?

তাপস: হ্যাঁ।

শেখ হাসিনা: ওখানে পাঠাইয়া দিক র‍্যাবকে।

তাপস: জ্বি, তাহলে আপনার নির্দেশনা লাগবে, তিনি এখনো মানে…

শেখ হাসিনা: আমার নির্দেশনা দেয়া আছে, ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিছি এখন, এখন লেথাল উইপেন ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সোজা গুলি করবে।


সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

বুধবার ঢাকার তথ্য ভবনে ‘সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজ বুধবার ঢাকার তথ্য ভবনে ‘সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশ চূড়ান্তকরণের আগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়া প্রয়োজন। তিনি আগামী দশ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে লিখিত মতামত ও প্রস্তাব প্রদানের জন্য সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।

সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো সমাধানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

মাহফুজ আলম বলেন, সংবাদপত্রের প্রচারসংখ্যায় যে অসংগতি রয়েছে, তা দূর করতে হবে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের হার বাড়ানো হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বিগত সরকারের আমলে বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৭৫ কোটি। বর্তমানে বকেয়ার পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকা। বিজ্ঞাপন খাতের এই বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

সাংবাদিকদের বেতন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ভালো বেতন নিশ্চিত করা গেলে গণমাধ্যমে বিদ্যমান অনেক সমস্যা কেটে যাবে। তিনি সাংবাদিকদের বেতন যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।

আলোচনাসভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদ্যমান আইনে সাংবাদিকদের শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা আর শ্রমিক হিসেবে থাকতে চান না। সাংবাদিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের কর্তৃত্ব একাধিক মন্ত্রণালয়ে না রেখে শুধু তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে রাখার পক্ষে মত দেন তারা।

আলোচনাসভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।


আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি : প্যারিসের মেয়রকে অধ্যাপক ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে মঙ্গলবার প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো বৈঠক করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নিউইয়র্কে মঙ্গলবার প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে উভয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ক্রীড়া, সামাজিক উদ্যোগ এবং বিশ্বমানবিক সংকট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকালে দুই নেতা বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, ক্রীড়া ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সঙ্কট—বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট সম্পর্কে ব্যাপক মত বিনিময় করেন।

এ সময়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী সাধারণ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, এটি দেশের গণতন্ত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে একটি ভিত্তিমূলক ঘটনা হবে, যা দেশের গণতন্ত্রকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেবে।’

অধ্যাপক ইউনূস প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে সামাজিক ব্যবসায় উদ্যোগ রূপান্তর করতে নেতৃত্ব দেন। প্রধান উপদেষ্টা ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিত সকল অলিম্পিক—বিশেষত আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক—কার্বন নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেন।

মেয়র হিদালগো এই সংকটময় সময়ে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আপনার নেতৃত্বকে গভীরভাবে সম্মান করি। আপনি অসাধারণ কাজ করেছেন, এবং আপনার অঙ্গীকার মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

উভয় নেতা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল বৃদ্ধির জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত এক মিলিয়নের বেশি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের আহ্বান জানান। মেয়র হিদালগো আশা প্রকাশ করেন যে একদিন রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও মর্যাদাসহ তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবেন।

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘জাতিসংঘ আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে, যার উদ্দেশ্য হলো বৈশ্বিক মনোযোগ পুনরুজ্জীবিত করা এবং এর একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজা।’

তিনি মেয়র হিদালগোকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য আন্তরিক আমন্ত্রণ জানান, যা দুই দেশের মধ্যে মানবিক ও সামাজিক ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

বৈঠকে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।


জাতিসংঘে নারী সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী বাধ্যতামূলক জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানান শারমীন এস মুরশিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

তিনি তার ভাষণে বলেন, বর্তমান অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি-৫) অর্জন কঠিন হয়ে পড়ছে। এজন্য তিনি বিশ্বব্যাপী একটি বাধ্যতামূলক ও জবাবদিহিতাপূর্ণ ফোরাম গঠনের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন—শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস, লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীদের এগিয়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তবে সামাজিক রীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও বৈশ্বিক দক্ষতার ঘাটতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চারটি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন তিনি—
১. ২০২৫ সালের মধ্যে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন ও সার্বজনীন সেবা নিশ্চিতকরণ।
২. ২০২৭ সালের মধ্যে নারীর অবৈতনিক কাজের মূল্যায়নে স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট চালু।
৩. রাজনৈতিক দলে অন্তত ৩৩% নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত।
৪. সরকারি প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট সম্প্রসারণ।

তিনি বলেন, “কোনও দেশ একা সফল হতে পারে না। তাই এখন সময় এসেছে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হওয়ার।”

প্রতিনিধিদলে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ফিরোজ উদ্দিন খলিফা, যুগ্মসচিব দিলারা বেগম ও উপসচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমুখ।


শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টার সাথে ওআইসি শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে গতকাল আজারবাইজানের বাকুতে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালক আজার বায়রামভ সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ভিসা এবং অন্যান্য সুবিধা বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সাক্ষাৎকালে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তা প্রদান, অধিকার আদায় ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্তিতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এ বিষয়ে ওআইসি শ্রম কেন্দ্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

এসময় (ওআইসি) শ্রম কেন্দ্রের মহাপরিচালক বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের নাগরিকগণ যেন কাজের জন‍্য অন‍্যান‍্য ওআইসিভুক্ত দেশে আবেদন করতে পারে এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ পেতে পারে সে লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে । এ বিষয়ে তিনি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।

সাক্ষাৎ শেষে শ্রম উপদেষ্টা আজার বায়রামভকে বাংলাদেশের শ্রম খাতে গৃহীত কার্যক্রম এবং শ্রম মানকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে উন্নীতকরণে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান


সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতির মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ।

গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখ মঙ্গলবার সকালে রিয়াদে ৮২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

আজ এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখের মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ এক বিশিষ্ট আলেম এবং ইসলামী চিন্তাধারার একজন পথপ্রদর্শককে হারালো। সারাজীবন ইসলামের সেবায় তাঁর অমূল্য অবদান ও অগাধ ইসলামী পাণ্ডিত্য গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয় থাকবে। ইসলামি বিশ্বে তাঁর অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভূত হবে।’

শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখ বিশ্বখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন। তিনি সৌদি আরবের জেনারেল প্রেসিডেন্সি অব স্কলারলি রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা-এর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি তিনি মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন।

তিনি তাঁর বিশদ জ্ঞান ও নেতৃত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ছিলেন।

তিনি ১৯৬১ সালে রিয়াদে ইমাম মুহাম্মদ বিন সউদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া কলেজে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন এবং ১৯৬৫ সালে আরবি ও ইসলামি শরিয়াহ বিশেষায়ণসহ স্নাতক সম্পন্ন করেন।

১৯৯৯ সালের জুন মাসে সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ ফাহাদ শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখকে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি নিযুক্ত করেন।


সামাজিক উদ্ভাবন বিষয়ক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত সামাজিক উদ্ভাবন বিষয়ক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সামাজিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে অর্থায়ন কার্যকর করা।’ এতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বৈঠকের আয়োজন করে। এতে সামাজিক উদ্ভাবন ও অর্থায়নের নতুন পথ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ধারণা বিনিময় ও সহযোগিতার ওপর জোর দেন।


যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আ. লীগ নেতা জাহিদের বাড়িতে ডিম নিক্ষেপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শরীয়তপুরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসানের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছে এনসিপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা জাহিদ হাসানের বাড়ির প্রধান ফটকে ডিম নিক্ষেপ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন এনসিপি নেতাকর্মীরা।

শরীয়তপুর জেলা এনসিপির সমন্বয়কারী রুহুল আমিন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে বিদেশে পালিয়ে গিয়ে চক্রান্ত করছে।

জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আখতার হোসেনসহ এনসিপির নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যান। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এরই প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছি।

এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুরের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নেতাদের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শরীয়তপুরের ছাত্রজনতা জাহিদের বাড়ির সামনে ডিম ছুড়েছে।

এই জাহিদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বহু নেতা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। তাই তাদের সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৪ থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ে এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।


২৮ সেপ্টেম্বর থেকে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

প্রথমে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. রুহুল আমিন মল্লিক।

গতকাল মঙ্গলবার ইসি সচিবালয়ের পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে ২৮ সেপ্টেম্বর সংলাপের বিষয়ে অনুমোদন চেয়েছি। আনঅফিসিয়ালি বলতে পারি ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। প্রথমে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদের সংলাপের আমন্ত্রণ জানাব। এরপর ধাপে ধাপে অন্যদেরও আমন্ত্রণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনায় (রোডম্যাপ) সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরুর কথা বলা হয়েছে।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, সংলাপ শুরুর এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন আগে অংশীজনদের চিঠি দেওয়া হবে। শুরুতে সুশীল সমাজ, নারী সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপ হবে।

ইসি ঘোষিত কর্মপরিকল্পনায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজ ও নারী সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম সম্পাদক ও সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধি, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সংলাপ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সংলাপ এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে শেষ করার কথাও বলা হয়েছে।

নির্বাচনে অংশীজনদের সঙ্গে কখন থেকে ইসি আলোচনায় বসবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের জানান, রোডম্যাপে চলতি মাসের শেষ দিকে সংলাপে বসার কথা বলা হয়েছে। তাই এই মাসের শেষ দিকে বসার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

বর্তমানে ইসির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। অন্যদিকে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নতুন দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে মোট ১৪৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন জমা দিয়েছে। প্রাথমিক বাছাই শেষে ১২১টি দলের আবেদন বাতিল করা হয়। বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ২২টি দলকে মাঠ পর্যায়ে যাচাইবাছাই করা হয়। এছাড়া আবেদন বাতিল হওয়া দলগুলোকে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে।


অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

বিশ্বকে বদলাতে তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত সোমবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত এবং ভারতের জন্য মনোনীত রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। দেশ এ জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ সার্জিও গোর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে বাণিজ্য, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা, সার্ক পুনরুজ্জীবন, রোহিঙ্গা সংকট এবং ঢাকাকে লক্ষ্য করে পরিচালিত ভ্রান্ত তথ্য প্রচারসহ দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে মার্কিন কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা বজায় রাখার আশ্বাস দেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সার্ক প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকার এ সংস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নকে বহুগুণে এগিয়ে নিতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এছাড়া তিনি নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুততর করতে পারব।’

এদিকে অপর এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বব্যাপী সংঘাতের দীর্ঘস্থায়ী ছায়া শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘সোশ্যাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি’ শীর্ষক জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের এক সাইডলাইন বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আজকের পৃথিবী এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের দাবানল পৃথিবীকে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, বৈষম্য বাড়ছে, সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য সংগ্রাম আমাদের মানবিকতারই পরীক্ষা করছে।’

তিনি বলেন, এই সংকটগুলো আলাদা নয়, পরস্পরের সঙ্গে জড়িত সূতার মতো একে অপরকে টেনে পুরো ব্যবস্থাকেই নাড়িয়ে দিচ্ছে। ‘এটিকে মেরামত করার শক্তি অতীতে ছিল না, তা লুকিয়ে আছে আমাদের কল্পিত ভবিষ্যতে—এবং আজ এখানে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব তাতেই,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যুদ্ধ ও বাস্তুচ্যুতি-সীমান্ত অতিক্রম করে অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করছে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে এবং অসংখ্য মানুষের জীবন ছিন্নভিন্ন করছে। এ পরিস্থিতিতে পুরনো ব্যবস্থায় সমাধান যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন নতুন কূটনীতি, গভীরতর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়নে সমষ্টিগত প্রতিশ্রুতি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশসহ বহু দেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে রয়েছে ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া, জলবায়ু বিপর্যয়ের ঘনঘন আঘাত সামলানো এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করা।

তিনি বলেন, ‘এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের বাজেট সংকোচন বা উন্নয়ন সহায়তা হ্রাস করা হবে বিপরীতমুখী পদক্ষেপ। বরং আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো, কারিগরি সহায়তা প্রদান এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ন্যায়সঙ্গত উত্তরণের নিশ্চয়তা দেওয়া জরুরি।’

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থায় যেখানে মানুষের চেয়ে মুনাফা বেশি গুরুত্ব পায়, সেখানে এসব লক্ষ্য পুরোপুরি অর্জন সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন ব্যবস্থা পরিবর্তন, এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তোলা, যেখানে মানুষের কল্যাণ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও পরিবেশ সুরক্ষা সম্পদের সঞ্চয়ের চেয়ে বড় অগ্রাধিকার পাবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, এই নতুন অর্থনীতির কেন্দ্রে রয়েছে সামাজিক ব্যবসা। এক ডলারের ক্ষুদ্র ঋণ থেকে শুরু হওয়া এই ধারণা আজ বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। স্বাস্থ্য, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা থেকে শুরু করে খেলাধুলা পর্যন্ত নানা খাতে সামাজিক ব্যবসা প্রমাণ করছে যে বিশ্ব সমস্যার সমাধান করেও আর্থিকভাবে টিকে থাকা যায়।

‘এগুলোই প্রমাণ করছে—অন্য এক পৃথিবী সম্ভব। এমন এক পৃথিবী যেখানে বাণিজ্য হবে মানবতার সেবক, প্রবৃদ্ধি সবার জন্য এবং মুনাফার মাপকাঠি শুধু আর্থিক সাফল্য নয়, বরং মানুষের জীবনমানের উন্নতি, কমিউনিটিকে শক্তিশালী করা ও পৃথিবীর আরোগ্য,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, বর্তমান সভ্যতা সীমাহীন ভোগ, শোষণ ও সঞ্চয়ের ধ্বংসাত্মক পথে হাঁটছে, যা মানবজাতির টিকে থাকার ভিত্তি—পৃথিবীকেই ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এজন্য প্রয়োজন নতুন সভ্যতা, যা লোভ নয়, বরং মানবিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ সমাধানের অঙ্গীকারে পরিচালিত হবে।

অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ‘এ নতুন সভ্যতার স্থপতি হবে তরুণ প্রজন্ম। তাদের স্বপ্ন সীমাহীন। আমি প্রায়ই বলি—যেখানে স্বপ্ন নেতৃত্ব দেয়, সেখানেই উদ্ভাবন জন্ম নেয়। যদি আমরা কল্পনা করতে পারি, তবে তা সম্ভব। যদি না পারি, তবে কখনোই হবে না।’

তিনি তরুণদের জলবায়ু পরিবর্তন, বেকারত্ব, দারিদ্র্য ও বৈষম্য মোকাবিলায় সামাজিক ব্যবসায় নিজেদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতনার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে আজই, কাল নয়। বড় স্বপ্ন দেখো, তবে তা বাস্তবায়নে সচেতন পদক্ষেপ নাও।’

বিশ্বকে বদলে দিতে তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি তিন শূন্যের এক পৃথিবীর কথা বলছি— শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ (যাতে দারিদ্র্যের অবসান ঘটে) এবং শূন্য বেকারত্ব (যা সবার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে সম্ভব)।’

তিনি আরও বলেন, শূন্য বর্জ্য (জিরো ওয়েস্ট) ধারণাটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘জিরো ওয়েস্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ। ‘এটি কোনো কল্পনা নয়, ইতোমধ্যেই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।

‘এ কারণেই আমরা তরুণদের সর্বত্র ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ে তুলতে উৎসাহিত করছি—যেখানে প্রত্যেকে থ্রি-জিরো মানুষ হয়ে উঠতে পারে,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, একজন থ্রি-জিরো মানুষ প্রতিশ্রুতি দেয় টেকসইভাবে জীবনযাপন করার, বর্জ্য কমিয়ে আনার এবং সামাজিক উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার। একই সঙ্গে তারা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, সম্পদ বৈষম্য এবং বেকারত্বে কোনো অবদান না রাখার জন্য সচেষ্ট হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যত বেশি মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হবে, এই ক্লাবগুলো রূপ নেবে থ্রি-জিরো পরিবারে, থ্রি-জিরো গ্রামে, থ্রি-জিরো শহরে—এবং একদিন গড়ে উঠবে একটি থ্রি-জিরো বিশ্ব।

‘এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু এক সাথে সেই পদক্ষেপগুলোই বিশ্বকে পাল্টে দিতে পারে।’

তিনি জানান, তিনি সবসময় বিশ্বাস করেছেন যে এই ধরনের ফোরাম কেবল বক্তৃতার জায়গা নয়—এটি অনুপ্রেরণার ক্ষেত্র।

প্রযুক্তির প্রসঙ্গ তুলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ব এখন এক নতুন প্রযুক্তিগত যুগের দ্বারপ্রান্তে—যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডাটা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও নানান উদ্ভাবন মানব অগ্রগতির ধারা পাল্টে দিচ্ছে।’

‘কিন্তু এর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে রয়েছে দায়িত্বও। প্রযুক্তি মানবতার জন্য আশীর্বাদ হবে নাকি অভিশাপ, তা নির্ধারণ করবে আজকের আমাদের সিদ্ধান্ত আর আগামী দিনের নেতৃত্বে আমাদের যে মূল্যবোধ আমরা বপন করব তার ওপর,’ বলেন তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রযুক্তির ভবিষ্যৎকে গড়ে তুলতে হবে বিবেক দিয়ে—প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতার মাধ্যমে। কিছু মানুষের জন্য নয়, বরং সবার জন্য।

তিনি বলেন, ‘আসুন নিশ্চিত করি, নতুন প্রযুক্তির যুগ হোক সহমর্মিতা, ন্যায়বিচার ও সমষ্টিগত অগ্রগতির যুগ।’

বেলজিয়ামের রাণী ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ

নিউইয়র্কে গত সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে বেলজিয়ামের রাণী ম্যাথিল্ড প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। একই অনুষ্ঠানের সময় বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনও অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এছাড়াও, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন।


গুলির নির্দেশ দেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিব

ট্রাইব্যুনালে অডিও রেকর্ড জমা
আপডেটেড ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ হাবিবুর রহমানের এমন নির্দেশনা দেওয়া একটি অডিও শোনানো হয়েছে। অডিওটি দুবার শোনানো হয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৫০তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন মো. কামরুল হাসান। তিনি ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে ওয়্যারলেস অপারেটর কর্মরত আছেন।

জবানবন্দি দেওয়ার শেষ পর্যায়ে কামরুল হাসান ট্রাইব্যুনালকে একটি অডিও রেকর্ড দেন। জবানবন্দিতে কামরুল হাসান উল্লেখ করেন, সেই অডিওতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, তিনি (কামরুল হাসান) এবং অন্যদের বার্তা আদান-প্রদানের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।

জবানবন্দিতে কামরুল হাসান উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই তিনি ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত তার ডিউটি ছিল। বেলা বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের জন্য তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, যার সাংকেতিক কল সাইন ভিক্টর মাইক ওয়ানে (victor mike-1) সর্বোচ্চ বল প্রয়োগের নির্দেশ দেন, চায়নিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করার নির্দেশ দেন। তখন বার্তাবাহক হিসেবে তিনি ও তার দল ওয়্যারলেসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটে ওই বার্তা পৌঁছে দেন।

কামরুল হাসানের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তাঁকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, অডিও বার্তা যেটা শুনলাম, সেখানে উনি (হাবিবুর রহমান) বলেছেন যে জানমাল রক্ষায়, সরকারি সম্পত্তি রক্ষায়, হাঁটু গেড়ে কোমরের নিচে গুলি করতে বলেছেন। বিষয়টিকে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) কীভাবে ব্যাখ্যা করছে?

জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘দেখেন, এই জায়গাটা মামলার আরগুমেন্ট করার জায়গা। গত বছরের ১৭ জুলাই সরকারি ছুটি ছিল। সেদিন আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কেন জনগণের ওপর গুলি করার নির্দেশ দেবেন। সেদিন এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি, যাতে গুলি করতে হবে। কোমরের নিচে, না ওপরে, সেটা অবান্তর।

আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সাক্ষী বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার চায়নিজ রাইফেল ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অডিওতে এ রকম কিছু পাওয়া যায়নি।

জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, চায়নিজ রাইফেলের কথাটা তিনি বলেছেন বা বলেননি, এই বিষয়টা ম্যাটার অব আরগুমেন্ট (যুক্তিতর্কের বিষয়)। তিনি বক্তব্য দিয়েছেন, তারা যখন আরগুমেন্ট করবেন, তখন বিষয়টা ফেস (মোকাবিলা) করবেন।


অন্যায়ের জন্য আ. লীগ বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ ঘটনার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই প্রতিক্রিয়া জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানকে ডিম ছুড়তে দেখা যায়।

এ ঘটনায় মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন। মির্জা ফখরুল তার পোস্টে লিখেছেন, ‘নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে যা ঘটেছে, তা আবারও প্রমাণ করল, আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন সেখানে পৌঁছান। বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

মির্জা ফখরুল তার পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ পর্যন্ত যা করেছে, সবকিছুর বিচার আইনের মাধ্যমে হবে। দল ও দেশের স্বার্থে ধৈর্য ধরুন।’

আখতার হোসেনকে ডিম ছোড়ার ঘটনার পর যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে এসে সোমবার নিউ ইয়র্কের জন. এফ কেনেডি বিমানবন্দরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর উদ্দেশ্যমূলক হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সহযোগী এবং সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই নিন্দনীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক স্পষ্ট ও মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এই বিধ্বংসী রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধান উপদেষ্টা এবং তাঁর সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রতিনিধিদলটিকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং একটি বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়েছিল। তবে, অপ্রত্যাশিত এবং শেষ মুহূর্তের ভিসা-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে প্রতিনিধিদলটিকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প পথে অগ্রসর হতে হয়।

বিমানবন্দরে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখজনকভাবে সেই অনুরোধ রাখেনি।এর ফলে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন।

ঘটনার পরপরই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দ্রুত এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমাদের জানানো হয়েছে যে ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলমান।

এই ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রতিনিধিদলের সকল সদস্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক ঘনিষ্ঠ এবং অবিচ্ছিন্ন সমন্বয় রেখে যাচ্ছে।

আমরা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার প্রতি আমাদের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা, তা বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা এর সীমানার বাইরে হোক, কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


banner close