সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩১ ভাদ্র ১৪৩২

বেড়েছে সুবিধা, বারবার তালিকা কাটছাঁটে ক্ষোভ

আপডেটেড
২৬ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৫৫
শহীদুল ইসলাম
প্রকাশিত
শহীদুল ইসলাম
প্রকাশিত : ২৬ মার্চ, ২০২৩ ১২:৪৫

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়েছে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন তারা সব থেকে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় সম্মানীর পাশাপাশি চিকিৎসা, সন্তানদের পড়াশোনা, বিশেষ ঋণ এবং রাষ্ট্রীয় গণপরিবহনে যাতায়াতে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন তারা। খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আরও কিছু সুবিধা দিচ্ছে সরকার।

এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পরও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বারবার এই তালিকা কাটছাঁট হওয়ায় অনেকের রাষ্ট্রীয় সম্মানী পাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরও যাচাই-বাছাইয়ের সময় ঝামেলায় পড়েছেন অনেকে।

২০০০ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে অসচ্ছল ৪০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মাসে ৩০০ টাকা করে ভাতা দেয়া ‍শুরু করে সরকার। পরবর্তী সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা দেয়া শুরু হয়। প্রথম দিকে এই ভাতার পরিমাণ কম থাকলেও ধাপে ধাপে তা বাড়ানো হয়। ভাতার সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার আওতা বাড়ায় সরকার।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা, বছরে ১০ হাজার টাকা করে দুটি উৎসব ভাতা, ২ হাজার টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা এবং ৫ হাজার টাকা বিজয় দিবস ভাতা পান। অর্থাৎ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অন্য সুযোগ-সুবিধা বাদে বছরে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সব সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ এবং সরকার-নির্ধারিত ২৩টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বছরে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা পান। চিকিৎসা চলাকালে আরও টাকার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সুপারিশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দেয়া হয়। মুমূর্ষু রোগীর জরুরি অপারেশন ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিবেচনা অনুযায়ী অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্যই ভূতাপেক্ষ অনুমোদন নিতে হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতালে বছরে ১০ হাজার, জেলা হাসপাতালে ২০ হাজার এবং বিভাগীয় হাসপাতালে ২৫ হাজার টাকা খরচ করা যাবে। জটিল রোগীর ক্ষেত্রে আয়ন-ব্যয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল বছরে একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্য বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য জীবিত অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এককালীন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নামে ৩০ হাজারটি বাসস্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৫ হাজার বীর নিবাসের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা পঙ্গুত্বের ধরন অনুযায়ী মাসে ৪৫ হাজার, ৩৫ হাজার, ৩০ হাজার এবং ২৭ হাজার টাকা করে ভাতা পান। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার মাসে ৩০ হাজার টাকা এবং বীরশ্রেষ্ঠ ৩০ হাজার, বীর উত্তম ২৫ হাজার, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীকরা মাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৫ হাজার টাকা করে বিজয় দিবস ভাতা এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার এবং সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর পরিবার ২ হাজার টাকা করে নববর্ষ ভাতা পাচ্ছেন।

যুদ্ধাহত/খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ/মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দুই সন্তান বছরে ১ হাজার ৬০০ টাকা শিক্ষা ভাতা, দুই মেয়ের বিয়ের জন্য ১৯ হাজার ২০০ টাকা করে, বিদেশে চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা এবং সব ধরনের বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ দাফন বা সৎকারের খরচ সরকার দেয়। এ ছাড়া হুইলচেয়ারে চলাচলকারী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের জন্য মাসে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পথ্য বিল বাবদ মাসে ৩ হাজার ১২২ টাকা করে দেয়া হচ্ছে।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিনা ভাড়ায় রেলে প্রথম শ্রেণিতে যাতায়াত করতে পারেন। বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব রুটে ইকোনমিক ক্লাসে বছরে দুবার যাতায়াতের সুযোগ পান তারা। এ ছাড়া এই পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিআরটিসি বাস ও বিআইডব্লিউটিসির জলযানের প্রথম শ্রেণিতে বিনা ভাড়ায় যাতায়াত, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন সেতু পারাপারে গাড়ির টোল মওকুফ, বিআইডব্লিউটিসির ফেরিতে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স বিনা ভাড়ায় পারাপার এবং ভিআইপি কেবিনে ভ্রমণ, পর্যটন করপোরেশনের হোটেল ও মোটেলে বিনা ভাড়ায় বছরে দুই রাত সপরিবারে থাকা এবং জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ডাকবাংলোয় বছরে দুই দিন সপরিবারে অবস্থান করতে পারেন তারা।

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর পরিবার এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের রেশন হিসেবে চাল, ডাল, আটা, চিনি ও তেল দেয়া হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের মেধাবী পুত্র-কন্যা, পুত্র-কন্যার পুত্র-কন্যা এবং পরবর্তী প্রজন্মের এইচএসসি উত্তীর্ণদের উচ্চশিক্ষার জন্য মাসে ১ হাজার টাকা করে পাঁচ বছর বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি দেয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ ঋণ কর্মসূচির আওতায় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হচ্ছে।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধান গেজেট আকারে জারি করে সরকার। এই প্রবিধান অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পুরো বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স এবং পানি ও পয়োনিষ্কাশন বিল মওকুফ সুবিধা পাবেন।

এ ছাড়া দেশের সব যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মৃত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার দুই বার্নার গ্যাস বিল এবং পুরো বাড়ির বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করে দেবে সরকার।

রাষ্ট্রের সক্ষমতা বেড়েছে বলেই সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা ধাপে ধাপে বাড়িয়েছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতার সুফল আমরা পাচ্ছি। এ জন্য সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হচ্ছে। রাষ্ট্রের যেহেতু সক্ষমতা আছে, তাই রাষ্ট্র তাদের বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে যাতে অর্থের অভাবে অবহেলিতভাবে জীবনযাপন করতে না হয় আমরা তা নিশ্চিত করছি, রাষ্ট্র সব সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে আছে।

বারবার যাচাই-বাছাইয়ে ক্ষোভ

১৯৯৮ সালের আগ পর্যন্ত পাঁচবার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা চূড়ান্ত রূপ পায়নি। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক মমিনউল্লাহ পাটোয়ারীর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রথমবারের মতো একটি তালিকা করে। ওই তালিকাটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদে লাল বই নামে সংরক্ষিত রয়েছে। ওই তালিকায় ১ লাখ ৫৪ হাজার জনের নাম থাকলেও সবার নামে গেজেট ছিল না।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিগত চারদলীয় জোট সরকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে দায়িত্ব না দিয়ে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সা’দত হুসাইনের নেতৃত্বে চারজন সচিব ও খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি করে। ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০০২ সালের ৪ মার্চ সশস্ত্র বাহিনীর ৩৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধার নামে বিশেষ গেজেট এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধার নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়। বিএনপি সরকার নতুন করে আরও ৪৪ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়ে মোট ১ লাখ ৯৮ হাজার জনের নামে গেজেট প্রকাশ করে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ৭২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকায় সন্নিবেশিত করা হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে অভিযোগ তোলেন তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম। ২০০৯ সালের ১৩ মে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার, বীরঙ্গনাদের দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করছে সরকার।

সিরাজগঞ্জের একজন মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সর্বশেষ যাচাই-বাছাইয়ে আমার নাম বাদ দেয়া হয়। পরে উপজেলা পর্যায়ে একজনকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে তালিকায় নাম ওঠাতে হয়েছে। আমি তো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এর পরও আমাকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার হুমকি দিয়ে ঘুষ নেয়া হয়েছে।’

মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে থাকলেও এখনো অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ভিড় করতে দেখা যায়। ব্যাগে করে অনেকগুলো কাগজপত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসেছিলেন রেজাউল করিম। তার বাবা আগে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পেলেও অনেক দিন থেকে সেই ভাতা পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি। রেজাউল বলেন, ‘উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা কোনো সমাধান দিতে পারেননি। তাই মন্ত্রণালয়ে কাজগপত্র জমা দিতে এসেছি।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, শেষ ধাপের যাচাই-বাছাইয়ে যারা বাদ পড়ছেন তাদের অনেকেই মন্ত্রণালয়ে আসছেন। কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের পথ বলে দিচ্ছেন। মন্ত্রীও তাদের সঙ্গে কথা বলে নিজেই কাগজপত্র পরীক্ষা করে করণীয় বলে দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবারের যাচাই-বাছাইকে শেষ হিসেবে দেখছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ। এখন কিছু আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। আগামী জুনের মধ্যে সব আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা প্রকাশ করা হবে, সেটিই হবে চূড়ান্ত তালিকা।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি এরপর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা আর যাচাই-বাছাইয়ের দরকার হবে না। তবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর হয়তো দেখা যাবে ২০০-৪০০ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়তে পারেন। আবার এমনও হতে পারে, মুক্তিযুদ্ধ করেননি এমন ২০০-৫০০ জনের নাম তালিকায় ঢুকে যাবে। সেসব বিষয় পুনরায় যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে আর কোনো যাচাই-বাছাই হবে না। সংশ্লিষ্ট উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মাধ্যমে এসব যাচাই-বাছাই করা হবে। কারণ উপজেলা পর্যায়ের তথ্য-উপাত্ত ও তাদের প্রত্যয়নের আলোকেই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।’


সমাজ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে তরুণদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তরুণদের মেধা, শক্তি এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আহ্বান জানাই, তোমাদের মেধা, শক্তি এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজের ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখো।

তোমাদের সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হোক। আমি বিশ্বাস করি, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই আর অমীমাংসিত থাকতে পারবে না।’

আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণামূলক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ১২ তরুণের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

তিনি বলেন, ‘আজ আমরা তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন করছি। এটিই আমাদের জাতির চালিকাশক্তি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যখন একটি দেশের যুবসমাজ সক্রিয় থাকে, উদ্যমী এবং উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখতে পারে না।’

তরুণদের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি আজ কেবল শিক্ষাক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। তারা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এই তরুণরাই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তরুণরাই যুগে যুগে এ দেশের ইতিহাস রচনা করেছে।’

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চলার পথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে—কখনো তা জনস্বাস্থ্যের সংকট, কখনো শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ, আবার কখনো পরিবেশগত বিপর্যয়। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে হতাশ না হয়ে বরং আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

আমি আশা করি, এ কাজেও আমাদের তরুণরা নেতৃত্ব দেবে।’

স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবা কেবল আর্তমানবতার কল্যাণেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আত্ম-উন্নয়ন, চরিত্র গঠন এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশের এক আদর্শ মাধ্যম। আমরা চাই, আমাদের তরুণেরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই থেমে থাকবে না; সমাজের নীতি নির্ধারক, উদ্ভাবক এবং পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবেও নিজেদের গড়ে তুলবে।’

পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই পুরস্কার কেবল একটি স্বীকৃতি নয়, এটি তোমাদের জন্য একটি উদাত্ত আহ্বান। তোমরা আরও সাহসী হও, আরও নেতৃত্ব দাও এবং সমাজের কল্যাণে নতুন ধারণা ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করো।’

তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ইতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তোমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অনেক পরিবর্তন আনতে পারে। স্বাস্থ্যখাতে তোমাদের একটি ক্ষুদ্র উদ্যোগ হাজারো শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে পারে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সামান্য প্রচেষ্টা দেশের শিক্ষার মানকে বহুদূর এগিয়ে নিতে পারে। পরিবেশ রক্ষায় তোমাদের সম্মিলিত প্রয়াস আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমি জানি, স্বেচ্ছাসেবা বা যে কোনো মহৎ উদ্যোগের পথ মসৃণ নয়। সময়, অর্থ এবং মানসিক চাপের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। এর মধ্য দিয়েই আমাদের ধৈর্য, সহনশীলতা এবং নেতৃত্বের মতো মহৎ গুণাবলি অর্জন করতে হবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা তোমাদের নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা এবং সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে দেখতে চাই। তোমাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ একটি উন্নত, মানবিক এবং উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এবং পুরস্কার বিজয়ী সুরাইয়া ফারহানা রেশমা বক্তব্য রাখেন।


অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে তথ্য দেওয়ার আহবান

আপডেটেড ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:৩২

সম্প্রতি জানা যায় যে, কিছু অসাধুচক্র দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অনুপ্রবেশ করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৩ মাসে বিজিবি ১৬টি দেশি-বিদেশি পিস্তল, ০২টি রিভলভার, ০২টি এসএমজি, ০৫টি রাইফেল, ১৬টি দেশীয় বন্দুক, ০৩টি শর্টগান, ০৩টি মর্টার শেল, ০৮টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ২৭টি অন্যান্য অস্ত্র, ২১টি ম্যাগাজিন এবং ১০০৩ রাউন্ড বিভিন্ন অস্ত্রের গোলাবারুদ জব্দ করেছে।

সীমান্ত দিয়ে দেশে অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে বিজিবির গোয়েন্দা তৎপরতা ও আভিযানিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির টোল ফ্রি ০১৭৬৯৬০০৫৫৫ নাম্বারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করা যাচ্ছে।


প্রধান উপদেষ্টা ১২ তরুণকে ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করলেন 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ ১২ তরুণকে ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করেছেন। স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণামূলক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ বছর পাঁচটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে তরুণদের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারও রয়েছেন।


দুপুরের মধ্যে ১০ জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার আভাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের ১০ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ থাকবে এমন আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খিলজি রোডে ‘পিকেএসএফ’র নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ছবি : পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানুষ কারো চাকরি করার জন্য জন্মায়নি, মানুষের জন্ম উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য। তাই দেশে এমন আর্থিক ব্যবস্থা আমাদের গড়ে তুলতে হবে যেন সবাই উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পায়।

আজ রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খিলজি রোডে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মানুষ কারো চাকরি করার জন্য আসে নাই। মানুষের জন্ম হয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে সবাই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।’

তিনি বলেন, এখনকার প্রজন্ম আগের মতো নয়। এখন গ্রামের ছেলেমেয়েরাও অনেক কিছু বোঝে, জানে, নিজস্ব চিন্তাভাবনায় সমৃদ্ধ। কাজেই এদের জন্য এমন একটি আর্থিক ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে তারা নিজস্ব উদ্যোগে কাজ করতে পারে, চাইলে এককভাবে কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি একটি কাঠামো তৈরি করতে পারি যেখানে মানুষ নিজের উদ্যোগ শুরু করতে পারবে, এমনকি চাইলে বিনিয়োগকারী হিসেবেও যুক্ত হতে পারবে—তাহলে এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন সম্ভব।’

অধ্যাপক ইউনূস মনে করেন, যে কেউ চাইলে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতে পারবে, আবার ইচ্ছা করলে ব্যক্তি উদ্যোগেও এগিয়ে যেতে পারবে। এমনকি কেউ চাইলে বিনিয়োগ সংগ্রহ করে নিজ এলাকায় উদ্যোগ পরিচালনা করতে পারবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সামনে অগ্রসর হতে চাই। পরীক্ষামূলকভাবে দেখা যেতে পারে কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ। কিন্তু ইতোমধ্যে কয়েক লাখ উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে, যাদের অনেকে ছেলে-মেয়ে মিলে দলগতভাবে কাজ করছে।’ তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে এর সম্প্রসারণ ঘটানো সম্ভব।

পিকেএসএফ-এর জন্ম ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকিয়ে ইউনূস বলেন, এর সূচনা হয়েছিল অনেকটা ঘটনাচক্রে। ‘বিশ্বব্যাংক ২০ কোটি টাকা দিচ্ছিল, তা নিয়ে নানা পর্যায়ে চিঠিপত্র চালাচালি হচ্ছিল। আমি বলেছিলাম, এই চিঠিগুলো সংরক্ষণ করা হোক, এগুলো ইতিহাস। এই টাকা ঘিরেই সরকার, পরিকল্পনা কমিশন, দাতা সংস্থা—সবাই মিলে মতবিনিময় করেছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ পর্যন্ত নিজে তাতে যুক্ত হয়েছেন।’

ড. ইউনূস বলেন, এই ২০ কোটি টাকা না এলে পিকেএসএফ হয়তো গঠিত হতো, কিন্তু এভাবে হতো না। তিনি জানান, সেসময় গঠন করা হয় একটি কমিটি, যার সভাপতি হন তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী এবং আমি নিজে সদস্য হই। প্রস্তাবনার ভিত্তিতে একটি নাম ঠিক হয়—পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, প্রাথমিকভাবে পিকেএসএফ যে উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল, তা সময়ের সঙ্গে আরও বিস্তৃত হয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় কাঠামোগত ও নীতিগত চ্যালেঞ্জ এসেছে। বিশেষ করে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) এর-সঙ্গে কিছু দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যেটা দূর করা জরুরি।

তিনি বলেন, ‘আমরা তো মাইক্রোক্রেডিট দিচ্ছি না। আমরা অংশীদার হই উদ্যোক্তার সঙ্গে। তাই এই কাঠামোকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, এখন সময় এসেছে এমন একটি আর্থিক কাঠামো দাঁড় করানোর, যেখানে প্রতিষ্ঠান নয়, ব্যক্তি উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে হবে। ‘আমরা ব্যবসার পার্টনার হতে চাই। কেউ যদি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আসে, আমরা তার সঙ্গে অংশীদার হব। শুধু ঋণ নয়—সোজা বিনিয়োগ। সে যদি পাঁচ লাখ টাকা চায়, আমরা দেব। তবে বিনিময়ে আমাদের শেয়ার থাকবে।’

এই মডেলে উদ্যোক্তা সফল হলে ধীরে ধীরে পুরো মালিকানা নিজের হাতে নিতে পারবে—এই ধারণার ভিত্তিতে তিনি একটি কাঠামো প্রস্তাব করেন, যেটি যৌথ মালিকানা থেকে সম্পূর্ণ মালিকানায় রূপান্তরযোগ্য।

তিনি বলেন, ‘সে যদি ভালো করে, তাহলে আমাদের অংশ ক্রয় করে নিয়ে নিতে পারবে। আমরা চাই সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সহায়তা করতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তালিকা করে রাখিনি, কিন্তু বহু রকমের উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে। প্রযুক্তি এখন বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। সে যে পথেই যেতে চায়, সেই সুযোগ করে দিতে হবে।’

বর্তমান আইন কাঠামো যে প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠেছিল তা আজকের বাস্তবতায় অনেকাংশে প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে এমন মন্তব্য করে ইউনূস বলেন, ‘৮০ দশকের যে আইন, তা আজকের উদ্যোক্তা ব্যবস্থার সাথে খাপ খায় না। বিশেষ করে পিকেএসএফ-এর নিজস্ব আইন, সেটাকে সংস্কার করে সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। নানামুখী কর্মসূচি সংযোজনের সুযোগ আছে।’

তিনি বলেন, ‘এই ভবনের যাত্রা হোক পিকেএসএফ-এর নতুন দিগন্তের সূচনা। দীর্ঘ ৩৫ বছরের যাত্রায় যা অর্জিত হয়েছে, তা একটি শক্ত ভিত। এখন সময় এসেছে বড় পরিসরে যাওয়ার।’

তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘টাকার কোনো অভাব হবে না। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের ওপর আস্থা আছে। আমরা যদি একটি সমন্বিত ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেম দাঁড় করাতে পারি, তাহলে সত্যিকারের উদ্যোক্তা তৈরির যে স্বপ্ন—তা বাস্তবায়ন সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ,পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বক্তব্য রাখেন।


বৃষ্টি আরও কত দিন থাকবে জানাল আবহাওয়া অফিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে ঢাকাসহ সারাদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। এই বৃষ্টি আরও এক সপ্তাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে সারা দেশে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামী ১৯ তারিখ পর্যন্ত চলতে থাকতে পারে। এরপর আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, এই সময়ে বৃষ্টিপাত কোথাও কমবে আবার বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে তেলেঙ্গা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।

আজ রোববার সকাল ৯টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় রাজধানী ঢাকায় বাতাস দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

আজ রোববার সন্ধ্যা ৬ টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে।

ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সক্রিয় দক্ষিণ বা পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।

সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

আজ রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনার ইশ্বরদীতে; ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে; ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে চট্টগ্রামে দেশের সর্বোচ্চ ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া রাঙামাটিতে ৮৭, সন্দ্বীপে ৮০ এবং তেঁতুলিয়ায় ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় উপস্থিত থাকছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ কমিশনের সভায় উপস্থিত থাকবেন।

দুপুর তিনটায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে 'জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫' বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।

কমিশনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা দুপুর ৩টায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে উপস্থিত হবেন।

সেখানে তাঁর বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান করার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা সভাকক্ষ ত্যাগ করার পর কমিশনের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচনা শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি পরে ব্রিফ করবেন।


রাস্তা অবরোধ করার অধিকার কারো নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরের সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রাস্তা অবরোধ করার অধিকার কারো নেই। তারা লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে রাখছে। এটা কোনো অবস্থায় বরদাশত করা হবে না। তারা যদি আজকের মধ্যে এটা সমাধান না করে, তাহলে আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হব।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফরিদপুরের এই দুই ইউনিয়নের কারণে বিভিন্ন জেলার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ফরিদপুরে দুটি ইউনিয়ন আগে যে সংসদীয় আসনে ছিল, সেখান থেকে অন্য আসনে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।

এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এটা নির্বাচন কমিশন করেছে। যুক্তি-তর্কে সবকিছু শোনার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়েই এলাকার লোকজনের মধ্যে একটা ক্ষোভ।

তিনি বলেন, এটা নিয়ে আসলেই যদি তাদের ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা যথাযথ চ্যানেলে জানানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই দুটি ইউনিয়নে কতজন লোক, আর কতজন ভোটার? অথচ তারা লাখ লাখ লোককে জিম্মি করে রাখছে। এটা কোনো অবস্থায় বরদাশত করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, কোর কমিটির সভায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

দু-একটি নির্বাচন হয়ে গেল, এসব বিষয়েও একটু আলোচনা হয়েছে। পুলিশের প্রশিক্ষণ এবং আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছিনতাই, চুরি-ডাকাতিসহ সীমান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।


টানা ৪ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ৪ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। আগামী ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এ ছুটি পাবেন তারা।

২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ১ অক্টোবর (বুধবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। আর ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সাধারণ ছুটি।

পরের দুদিন ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সবমিলিয়ে ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে সরকারি কর্মচারীদের।

উল্লেখ্য, সাধারণত সরকারি কর্মচারীদের ঈদে তিন দিন করে ও দুর্গাপূজায় একদিন ছুটি থাকে। তবে কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে তা বাড়ানো হয়েছিল।

তবে ২০২৫ সালের দুই ঈদ মিলিয়ে মোট ১১ দিন ছুটি এবং শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি দুই দিন অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ছুটির তালিকা অনুমোদন করা হয়। সে অনুযায়ী ছুটির তালিকা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।


১১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৬ হাজারের বেশি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১১ বছরে দেশে সড়কে ৬২ হাজার ৬১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৬৯০ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৭ জন।

গতকাল শনিবার যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, শুধু ঢাকায় প্রতিদিন যানজটে নষ্ট হচ্ছে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্ষতি ৯৮ হাজার কোটি টাকা, জ্বালানি অপচয় ১১ হাজার কোটি টাকা, আর যানজটের কারণে সংসার ভাঙার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাই সড়কে প্রতি বছর হাজারও প্রাণহানি রোধ ও ভয়াবহ যানজট নিরসনে নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নত গণপরিবহন অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, গত এক দশকের বেশি সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট ও দূষণে দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক কাঠামো মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরিবহন খাতে দুর্নীতি ও ভুল নীতির কারণে পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, গত ১১ বছরে দেশে সড়কে ৬২ হাজার ৬১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৬৯০ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৭ জন। শুধু ঢাকায় প্রতিদিন যানজটে নষ্ট হচ্ছে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্ষতি ৯৮ হাজার কোটি টাকা, জ্বালানি অপচয় ১১ হাজার কোটি টাকা, আর যানজটের কারণে সংসার ভাঙার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির এই মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ যানজট শুধু সময় ও অর্থনৈতিক ক্ষতিই করছে না; নাগরিকদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতাও বিপন্ন করছে। এতে উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ নানা রোগ বাড়ছে। একই সঙ্গে উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ ও পারিবারিক অশান্তি দেখা দিচ্ছে। শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে এবং টিনএজদের বিপথগামিতার অন্যতম কারণও যানজট ও বেকারত্ব।

দেশের অধিকাংশ চালকের লাইসেন্স নেই জানিয়ে আলোচনা সভায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শরিফ রফিকুজ্জামান বলেন, লাইসেন্সহীন ও মাদকাসক্ত চালকরা যাতে গাড়ি চালাতে না পারেন, সে বিষয়ে সরকারকে কঠোর হতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সোজা করে সড়ক সংস্কার না করলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে না।

রফিকুজ্জামান আরও বলেন, বাসভাড়ার সঙ্গে যাত্রীদের কাছ থেকে ইন্স্যুরেন্সের টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা কোনোদিন এই সুবিধা পান না। ক্ষতিগ্রস্তদের পাওনা আদায়ে যাত্রীসাধারণকে আরও সচেতন হতে হবে।

গণঅধিকারের মুখপাত্র ফারুক খান বলেন, তারা চান, যাত্রী কল্যাণ সমিতি শক্তিশালী হয়ে সব সিদ্ধান্ত প্রণয়নে অংশগ্রহণ করবে, যাতে তাদের দাবি বাস্তবায়িত হয়। কোনো দল বা সরকারের বিরুদ্ধে নয়, জনগণের পক্ষের কথা তারা বলতে চান। তাদের লক্ষ্য হলো- যাত্রীদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা, সৎ ও ন্যায়সংগতভাবে দাবি পূরণ করা।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক রয়, যাত্রীকল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।


৩ জন বেকারের ১জন স্নাতক ডিগ্রিধারী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকার। প্রতি তিনজন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী। আর দুই বছরের বেশি বেকার এমন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪–এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সেখানে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি এবং বেশ সময় ধরে বেকার থাকার প্রবণতা দেখা গেছে।

দেশে বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকার বসে আছেন। তারা একেবারে চাকরি পাচ্ছেন না কিংবা পছন্দমতো চাকরি পাচ্ছেন না। মেস করে থাকেন, মানবেতর জীবনযাপন করেন, আর একটি সম্মানজনক চাকরির জন্য দিন গোনেন। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে যারা পরিবারের সঙ্গে থাকেন, নানা টানাপোড়েন তাদের অসহায় করে তোলে, মানসিক চাপে থাকেন সবসময়।

গত বছর শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। মূলত চাকরি পাওয়া নিয়ে হতাশা থেকেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ওই আন্দোলন গড়ে তোলেন।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশের চলমান সংস্কার আলোচনায় রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংস্কারকেও প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বিশেষ তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে কী কী করা উচিত, আলোচনায় থাকা দরকার।

প্রতি ৩ জনে ১ জন বেকার উচ্চশিক্ষিত

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার।

সার্বিকভাবে কয়েক বছর ধরে দেশে বেকারের মোট সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিত। কিন্তু খারাপ খবর হলো, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে এখন প্রতি তিনজন বেকারের মধ্য একজন উচ্চশিক্ষিত। তারা বিএ কিংবা এমএ ডিগ্রি নিয়েও শোভন চাকরি পাচ্ছেন না।

২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, ওই বছর চার লাখের মতো স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার ছিলেন। আট বছর পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ লাখ। এর মানে আট বছরের ব্যবধানে উচ্চশিক্ষিত বেকার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

উচ্চশিক্ষিত তরুণেরা বেশি দিন বেকার থাকেন

১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই বয়সসীমার মধ্যে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে ২ বছরের বেশি সময় ধরে বেকার থাকেন ১৭ শতাংশের বেশি তরুণ বেকার। এই হার অন্য ডিগ্রিধারীর চেয়ে বেশি। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ২ বছরের বেশি সময় বেকার থাকেন ৮ শতাংশের বেশি বেকার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন তরুণদের মধ্যে বেকারের হার ১ শতাংশের মতো।


নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন অধ্যাপক ইউনূসের

আপডেটেড ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪২
বাসস

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ।

আজ এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার নিজের পক্ষ থেকেও আমি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার নিয়োগে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, নেপালের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসেবে সুশীলা কার্কির দায়িত্বগ্রহণকে বাংলাদেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।

তিনি বলেন, ‘একজন দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল ও এর দৃঢ়চেতা জনগণ শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন।

বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত ও পূর্ণ আরোগ্য কামনা করি।’

অধ্যাপক ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তাঁর নেতৃত্বে আরও জোরদার হবে।

তিনি সুশীলা কার্কির সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।


যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি ২২ শতাংশ বৃদ্ধি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাল্টা শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে গত মাসে। এর আগে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই (সাত মাসে) এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এই হার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৪৯৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে রপ্তানি হয়েছে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি।

গত ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানির ওপর সংশোধিত পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করে। গত ৭ আগস্ট এই শুল্কহার কার্যকর হয়। সংশোধিত হার অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসেছে। ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে হারটি দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। আর ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও পাকিস্তানের পাল্টা শুল্কের হার ১৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত চীনের পণ্যে পাল্টা শুল্ক ৩০ শতাংশ।

একাধিক তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বলেন, চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটা অংশ বাংলাদেশে আসছে। ছয় থেকে আট মাস ধরে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। পাল্টা শুল্কের কারণে সামনের মৌসুম থেকে আরও বাড়তি ক্রয়াদেশ আসতে পারে। যদিও কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের একটি অংশ বহন করতে রপ্তানিকারকদের চাপ দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে চীন শীর্ষস্থানে থাকলেও উভয় দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে সেই জায়গাটি দখলে নিয়েছে ভিয়েতনাম। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভিয়েতনাম ৯৪৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। শুধু জুলাইয়ে ভিয়েতনাম ১৬৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ে চীন ৬৯২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। শুধু জুলাইয়ে চীন ১১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম। শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে চীনের রপ্তানিই সবচেয়ে বেশি কমেছে।

অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক ভারত চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৩৩১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ২৬৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বাংলাদেশের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ায়। তখন থেকেই চীন থেকে অল্প অল্প ক্রয়াদেশ সরছে। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অনেকে বাংলাদেশে বাড়তি ক্রয়াদেশ দেওয়া শুরু করে। সে জন্য দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশের শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অনন্ত গ্রুপ। গত অর্থবছরে শিল্প গ্রুপটির ছয়টি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ৪৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।


banner close