মেট্রোরেলের আরও দুই স্টেশন চালু হচ্ছে আগামীকাল। শুক্রবার থেকে উত্তরা দক্ষিণ ও শেওড়াপাড়া স্টেশন খুলে দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়তে যাচ্ছে ট্রেন চলাচলের সময়। এতদিন সকালে চার ঘণ্টা চললেও আগামী ৫ এপ্রিল থেকে ছয় ঘণ্টা চলবে ট্রেন। নতুন সময় অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এর আগে গত ১৫ মার্চ মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১১ নম্বর স্টেশন খুলে দেয়া হয়। বর্তমানে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সাতটি স্টেশনে ট্রেন থামছে। এই পথে মোট ৯টি স্টেশন আছে।
এম এ এন ছিদ্দিক জানান, জুলাই মাস থেকে মেট্রোরেল পুরোদমে চলাচল শুরু করবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলবে। আগের মতোই ট্রেন চালানোর আধা ঘণ্টা আগে স্টেশন খুলবে এবং বন্ধ হবে।
ডিমটিসিএলের এই কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার পর্যন্ত আয় হয়েছে ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই সময়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার। খরচ হয়েছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার মতো। খরচের বেশির ভাগ গিয়েছে বিদুৎ খাতে। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ, বেতন ও অন্যান্য খাতে খরচ রয়েছে।
মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হয় উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশনের মধ্য দিয়ে। তখন মাঝের অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেন থামত না। পরের ধাপে পর্যায়ক্রমে উত্তরা সেন্টার, পল্লবী ও মিরপুর-১০ স্টেশন চালু হয়েছে। চলিত মাসে আগারগাঁও-দিয়াবাড়ী অংশের বাকি আরও স্টেশন চালু হতে যাচ্ছে।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘আমরা দেশবাসীকে কথা দিয়েছিলাম মার্চের মধ্যে সব স্টেশন খুলে দেয়া হবে। আমরা সেই কথা রাখতে পেরেছি। এখন উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে সব স্টেশন চালু হচ্ছে। প্রথম দিকে নতুন চালু হওয়া স্টেশনগুলোও বর্তমানের নিয়মিত সময়ে চালু হবে। এপ্রিলের পাঁচ তারিখ থেকে সময় বাড়বে। জুলাই থেকে পুরোদমে শুরু হবে মেট্রোরেল চলাচল। তখন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ট্রেন চলবে।
তিনি আরও বলেন, ‘মেট্রোরেল লাইন-৬-এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ। এক্সিট ও এন্ট্রির নির্মাণকাজ চলছে। প্রকল্পের অধীনে নতুন করে কোনো জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না।’
৩৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা খরচ করে রাজধানীর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ এখনো চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি ২০১২ সালে হাতে নেয় সরকার। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এই পথের প্রথমাংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার চালু করা হয়। দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল ২০২৩ সালের শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিতাংশ ২০২৫ সালে চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজে গিয়ে সেখানে নির্যাতনের শিকার ১২ নারী গৃহকর্মী দেশে ফিরেছেন। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অনুসন্ধান ও প্রচেষ্টায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
শনিবার রাতে ওই নারীদের ফিরে আসার তথ্য জানিয়েছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
তিনি জানান, গত মাসে একজন নারী ভুক্তভোগীর স্বামী বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী ৬ মাস আগে এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ করতে সৌদি আরবে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। লোকমুখে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এপিবিএনের সহযোগিতা চান। একইসঙ্গে যে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তার স্ত্রী সৌদিতে গেছেন সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এরপর এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দল বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে।
জিয়াউল হক আরও জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী কোথায় কী অবস্থায় আছেন সে বিষয়েও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এরপর অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সি সৌদি থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়া ১২ নারী ভুক্তভোগীকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। অভিযোগ জানানো ব্যক্তির স্ত্রীসহ নির্যাতনের শিকার ১২ নারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শনিবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
এপিবিএন পুলিশ সুপার জানান, বিমানবন্দরে পৌঁছলে এপিবিএন তাদের রিসিভ করে। এ সময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রকল্পের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। দেশে ফিরে আসা নারীদের কাছ থেকে এপিবিএনের তদন্ত দল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান যে তারা প্রত্যেকেই বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাভেল এজেন্সিসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এপিবিএন-এর এই কর্মকর্তা।
ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
শুকনো খাদ্য, তাঁবু, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ মোট ১২০ টন ত্রাণসামগ্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজে শনিবার চট্টগ্রাম থেকে ইয়াংগুনের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এসব ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করা হয়। ত্রাণ পরিবহনকারী জাহাজটি আগামী ৫ জুন ইয়াংগুন বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের জন্য এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অতীতে ২০১৫ সালে বন্যা এবং ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘নার্গিস’-পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ মিয়ানমারের জনগণের জন্য জীবন রক্ষাকারী ত্রাণসামগ্রী প্রেরণ করেছিল। বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে আসছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী কোভিড অতিমারি এবং তুরস্ক ও আফগানিস্তানে সংঘটিত ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় বাংলাদেশ ত্রাণসামগ্রী এবং চিকিৎসা দল প্রেরণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে এসব মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
রাজধানীর লালবাগের আজিমপুর কবরস্থানের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা (৭০) এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বেলা আড়াই টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
লালবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হোজাইফা হোসেন জানান, খবর পেয়ে আজিমপুর কবরস্থানের এক ও ২ নং গেটের মাঝামাঝি জায়গা থেকে অজ্ঞাতনামা বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই বৃদ্ধকে মৃত দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থজনিত কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে ওই বৃদ্ধকে তিন দিন আগে কেবা কারা আজিমপুর কবরস্থানে পাশে ফেলে রেখে যায়। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে পরিচয় জানার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে।
রুমালে মুখ ঢেকে ও মাথায় ক্যাপ পরে ছদ্মবেশে ফল ব্যবসায়ীর বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা, সোনা ও মোবাইল লুটের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৯ মে রাজধানীর পুরান ঢাকার কতোয়ালীর একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তাররা হলেন, ওমর ফারক ও শরিফ মাহমুদ।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার ওমর ফারুক ওই ব্যবসায়ীর আড়তে শ্রমিকের কাজ করতেন। তার নেতৃত্বেই এ লুটের ঘটনা ঘটে।
গত শুক্রবার কুমিল্লার মেঘনা থানার হরিপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের দুল ও সোনার চেইন উদ্ধার করা হয়।
কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, গত ২৯ মে বাবুবাজারের হায়বৎনগর লেনের একটি বাসায় এই লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রুমাল দিয়ে মুখ বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পড়ে দুই ব্যক্তি তার বাসায় ঢোকে। এ সময় বাসায় তার অসুস্থ মা ও স্ত্রী ছিলেন। স্ত্রীকে জখম করে বাসায় রাখা ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা, সোনার গহনা ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায় তারা।
শাহিনুর রহমান আরও বলেন, মামলা তদন্তের সময় ঘটনাস্থলের আশপাশের ৫০ থেকে ৬০টি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে গ্রেপ্তার দু’জনকে চিহ্নিত করা হয়। পরে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করে কুমিল্লার মেঘনা থানার হরিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, আগে ওমর ফারুক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর ফলের আড়তের ১ মাস কাজ করেছেন। তিনি জানতেন প্রতি দিনের লেনদেনের টাকা বাসায় নিয়ে রাখা হতো। মূলত তারই পরিকল্পনায় এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার দুজনকে শনিবার আদালতে পাঠিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত তাদের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ভারতের উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই জন বাংলাদেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত দুইজন উড়িষ্যায় দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
আন্দালিবি ইলিয়াস বলেন, ওই দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি কারও নিহত হওয়ার খবর এখনও তাদের কাছে নেই।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে চারজনের ব্যাপারে তাদের পরিবার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ওই চারজন এখন পর্যন্ত নিখোঁজ। আমরা চেষ্টা করছি তাদের খোঁজখবর নেয়ার।’
উপ-হাইকমশনার জানান, বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের একটি দল দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর ৩টার দিকে হাওড়ার নিকটবর্তী শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উড়িষ্যার বালেশ্বরে পৌঁছায়, আধ ঘণ্টা পর বাহানগা বাজারের কাছে ২৩ কামরার ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রকাশিত গেজেটে ১০টি আসনে পরিবর্তন এসেছে। কয়েকটি সংসদীয় আসনে উপজেলা স্থানান্তর করা হয়েছে। কোথাও আবার একটি ইউনিয়ন অন্য সংসদীয় আসনে যুক্ত করা হয়েছে। এক আসনে ওয়ার্ড অন্য আসনে যুক্ত সামান্য পরিবর্তনও আনা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত গেজেটে এবং কমিশনের প্রকাশিত খসড়া বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নুরুল হুদা কমিশন ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে গেজেট প্রকাশ করে। তবে আউয়াল কমিশন পরিবর্তন আনেন মাত্র ১০টি সংসদীয় আসনে।
বিদায়ী নুরুল হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া সংসদীয় আসনের সীমানা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া সীমানা হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। পরে ৩৮ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের ওপর ১৮৬টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলো চার ধাপে শুনানি শেষ করেছে ইসি।
সীমানার আপত্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৮৩টি আবেদন জমা পড়ে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে। রাজশাহী থেকে ৪৪টি, বরিশাল থেকে ২৯টি, ঢাকা অঞ্চল থেকে ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এ ছাড়া খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে ৫টি করে আবেদন করা হয়। তবে সিলেট ও রংপুর অঞ্চল থেকে কোনো আবেদনই জমা পড়েনি। শুনানি শেষে আপত্তি যাচাই বাছাই করে পহেলা জুন চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
এর আগে ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের পর ২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য সংসদীয় আসনে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়ে শতাধিক আসনে সীমানা পরিবর্তন আনে। পরে কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনে।
যে ১০ আসনে পরিবর্তন: গাজীপুর- ২, গাজীপুর- ৫ আসন। কুমিল্লা-১, কুমিল্লা-২ আসন। নোয়াখালী-১, নোয়াখালী-২ আসন। ফরিদপুর-২, ফরিদপুর- ৪ ও পিরোজপুর-১, পিরোজপুর- ২ সংসদীয় আসনে পরিবর্তন এসেছে। যার মধ্যে পিরোজপুর ১,২ এবং কুমিল্লা ১,২ ফরিদপুর ২ ও ৪ আসনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া নোয়াখালী ১ এবং ২ আসন এবং গাজীপুর ২ ও ৫ সংসদীয় আসনে সামান্য পরিবর্তন এসেছে। বাকি ২৯০টি আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিলো পিরোজপুর-১ সংসদীয় আসন। এই আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে নেছারাবাদ উপজেলা বাদ দিয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে ইন্দুরকানী উপজেলা আগে পিরোজপুর-২ আসনের অংশ ছিল।
এদিকে নেছারাবাদ উপজেলা পিরোজপুর-২ সংসদীয় আসনের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার দুই উপজেলার সংযোজন বিয়োজনের ফলে এই দুই সংসদীয় আসনে বড় পরিবর্তন এসেছে।
দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা নিয়া গঠিত কুমিল্লা ১ সংসদীয় আসন থেকে মেঘনা উপজেলাকে বাদ দেয়া হয়েছে। অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তিতাস উপজেলাকে। অর্থাৎ তিতাস ও দাউদকান্দি নিয়ে কুমিল্লা-১ আসন গঠিত হয়েছে।
হোমনা ও তিতাস উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা- ২ আসন থেকে তিতাস উপজেলা বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে মেঘনা উপজেলাকে। যার ফলে হোমনা ও মেঘনা নিয়ে নতুন কুমিল্লা- ২ আসন গঠিত হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড যা আগে গাজীপুর- ৫ সংসদীয় আসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল তা পরিবর্তন এনে গাজীপুর- ২ সংসদীয় আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। যার ফলে গাজীপুর- ৫ সংসদীয় আসনে সামান্য পরিবর্তন আসে।
এছাড়া ফরিদপুর-২ আসন থেকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বাদ দেয়া হয়েছে। বাদ দেয়া কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ফরিদপুর- ৪ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে ফরিদপুর- এবং ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনে পরিবর্তন এসেছে।
সেনবাগ উপজেলা ও সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও, নাটেশ্বর ও আম্বর নগর নিয়ে গঠিত ছিল নোয়াখালী- ২ সংসদীয় আসন। এবার এই তিন ইউনিয়ন ছাড়াও সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নকে নোয়াখালী-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে। এই বজরা ইউনিয়নটি আগে নোয়াখালী ১ সংসদীয় আসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যার ফলে নোয়াখালী-১ ও নোয়াখালী- ২ সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আসে।
ভারতের ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েক শ মানুষ হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ শোক জানানো হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজ্যটির বালেশ্বর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আরেকটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পণ্যবাহী আরও একটি ট্রেনও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩৮ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহতের খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেন এ দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
শনিবার সকালে ওড়িশার মূখ্য সচিব প্রদীপ কুমার জেনা জানান, উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। আশপাশের জেলাগুলোর সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনটি এনডিআরএফ ইউনিট, চারটি ওডিশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ইউনিট, ১৫টির বেশি ফায়ার রেসকিউ দল, ৩০ জন চিকিৎসক, ২০০ পুলিশ সদস্য এবং ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে রয়েছে।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি লেক থেকে অজ্ঞাতনামা এক কিশোরের (১৫) ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের শেষ মাথায় লেকের বাইতুল আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে পাঠিয়েছি।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি। ওই কিশোর গোসল করার উদ্দেশে লেকের পানিতে নেমেছিল। নামার পর সে পানিতে তলিয়ে যায়। লেকের পাড়ে তার স্যান্ডেল এবং শার্ট পাওয়া গেছে। পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট।’
এসআই আব্দুল্লাহ বলেন, ‘নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। আমরা সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দিয়েছি। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়ত কিশোরের পরিচয় জানা যেতে পারে।’
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় একটি বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শফিকুল ইসলাম জনি (৪২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা এম বাহার বলেন, নিজ ঘরে রাতে ইলেকট্রিকের কাজ করার সময় মাল্টিপ্লাগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেঝেতে পড়ে ছিল জানি। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার গাওদিয়া গ্রামে। ।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানাকে জানানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে চালু হলো ই-পাসপোর্ট। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার।
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন ও ভালো কাজের মাঝে বঙ্গবন্ধুর হাতের ছাপ আছে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ই-পাসপোর্টে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতার পাশাপাশি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি পাসপোর্টের মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের পাসপোর্টকে পৃথিবীর প্রথম সারির পাসপোর্টের মানে উন্নীত করায় প্রধনমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এম আল্লামা সিদ্দিকী।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ার এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের নিহত সদস্যদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ ও নিরাপদ করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এর আগে আরও ২৩টি মিশনে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে এবং ২৩টি মিশনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আবু তাহের মল্লিক বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা উদ্বেলিত হই। ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের বহির্প্রকাশ। তিনি সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলদেশি, ই-পাসপোর্ট চালু উপলক্ষে সফররত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তা এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এ হাইকমিশনে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) পাসপোর্ট চালু ছিল। ই-পাসপোর্ট আবেদন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য শীঘ্রই বাংলাদেশ হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিন বিন ইসমাইলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তারা মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্নয়ন, কর্মীদের সামগ্রিক সুরক্ষা, রিক্যালিব্রেশন এবং শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, মিনিস্টার (লেবার) নাজমুস সাদাত সেলিম, মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রাজলিন জুসোহসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে অবদান রাখছে। কর্মীদের দক্ষতার মানোন্নয়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এরপর বিকাল ৩টায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমারের আরেকটি বৈঠক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আরও সুষ্ঠু ও নিরাপদ স্বল্পতম সময়ে হাউজমেইড ও সিকিউরিটি গার্ডসহ অধিক সংখ্যক কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল জাইনি উজাং এবং মো. খোরশেদ আলম খাস্তগীর, মো. নাজমুস সাদাত সেলিমসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
বিনা অনুমতিতে গাছ কাটলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিলে ‘লেটস সেভ দ্য প্ল্যানেট’ শিরোনামে প্রাণ-আরএফএলের উদ্যোগে দেশজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাছের বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। আমি বারবার বলেছি গাছ কাটলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সড়কের বিদ্যমান গাছগুলো না কেটেই উন্নয়নকাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। আমি জানতে পেরেছি, মিরপুরের টেকনিক্যাল ক্রসিংয়ে সড়ক বিভাজক নির্মাণকালে ঠিকাদার কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেছেন। যেহেতু ঠিকাদার সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা অমান্য করে গাছ কেটেছেন, তাই তাকে ডিএনসিসিতে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুজন প্রকৌশলীকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। এ পদক্ষেপ সব ঠিকাদার ও বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য একটি কঠোর বার্তা। গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন নয়।’
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা গাছ কাটতে চাইলে সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে। আমরা পরিবেশবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ করে সম্ভব হলে অনুমোদন দেব। অনুমোদন ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কোনো গাছ কাটা যাবে না।’
প্লাস্টিক বোতল প্রতিনিয়ত পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক বোতলে পণ্য বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে। তারা ব্যবসা করে পরিবেশের দূষণ করবে, এটা হতে পারে না।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিজেরাই পরিবেশের ক্ষতির জন্য দায়ী। পরিবেশের ক্ষতি করায় এখন পরিবেশ তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি হয় না। দেশজুড়ে তীব্র গরম। বিশেষ করে ঢাকা শহর হিট আইল্যান্ডে পরিণত হয়েছে। হিট হচ্ছে সাইলেন্ট কিলার। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে পরিবেশকে বাঁচাতে হবে।’
নগরবাসীকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘সম্ভাব্য সব জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। অনেকে বলতে পারেন ঢাকা শহরে গাছ লাগানোর জায়গা নেই। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে খালের পাড়ে, সড়ক বিভাজকে ও ফুটপাতে বৃক্ষরোপণের কার্যক্রম শুরু করেছি। ক্লিনিং ও গ্রিনিংয়ের পাশাপাশি আমি ফিডিংয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। খালের পাড়ে ফলের গাছ লাগানো হবে যেন মানুষ খেতে পারে। হর্টিকালচার ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের থেকে রাস্তার মিডিয়ান ও ফুটপাতের জন্য গাছের তালিকা নিয়েছি। ফুটপাতে যেন পাখিরা বসতে পারে, সে ধরনের গাছ লাগানো হবে।’
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে সীমান্তসহ অন্যান্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৮২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা মূল্যের চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে। শুক্রবার বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়, জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ২০ কেজি ৫৬৯ গ্রাম সোনা, ৮৮ কেজি ৬৯৪ গ্রাম রূপা, এক লাখ ৫১ হাজার ৬৪৫টি কসমেটিকস সামগ্রী, দুই হাজার ৭৬৬টি ইমিটেশন গহনা, ২১ হাজার ৪৮১ পিস শাড়ি, এক হাজার ২৭৫টি থ্রি পিস, শার্টপিস, চাদর, কম্বল, তিন হাজার ৯১১টি তৈরি পোশাক, এক হাজার ৯২৪ ঘন ফুট কাঠ, ছয় হাজার ৬৬ কেজি চা পাতা, এক লাখ ১৬ হাজার ৪৩০ কেজি কয়লা, দুই হাজার ২৫৯ কেজি কারেন্ট ও সুতার জাল, এক লাখ ৬৫ হাজার ৮৯৩ ঘনফুট পাথর, ১০টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান, ১১টি পিকআপ, পাঁচটি প্রাইভেটকার, ২৫টি সিএনজি ও ইজিবাইক এবং ১১৬টি মোটরসাইকেল।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৮টি পিস্তল, ৮টি ম্যাগাজিন, ৭টি বিভিন্ন প্রকার গান, ১০০ কেজি সালফার, ৪টি বিস্ফোরক স্টিক, ৭টি ডেটোনেটর এবং ৪০ রাউন্ড গুলি।
এছাড়া, গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ২১০ পিস ইয়াবা, ২৮ কেজি ৭১০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২৭ কেজি ৮৬০ গ্রাম হেরোইন, ২২ হাজার ৬১৪ বোতল ফেনসিডিল, ২৩ হাজার ৬৮২ বোতল বিদেশি মদ, ৩ হাজার ২৭ ক্যান বিয়ার, ২ হাজার ৫৬৭ কেজি গাঁজা, ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩৯ হাজার ৫২০টি নেশা জাতীয় ইনজেকশন, ২ হাজার ৪৪৭টি অ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা (যৌন উত্তেজক) ট্যাবলেট, ৬ হাজার ৬৬১টি ইস্কাফ সিরাপ, ৬৯৮ বোতল এমকেডিল /কফিডিল, ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪১ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ, ২ কেজি ৪৪৫ গ্রাম কোকেন এবং ১ লাখ ৬০ হাজার ১৬৮টি অন্যান্য ট্যাবলেট।
বিজিবির বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত মাসে সীমান্তে বিভিন্ন মাদক পাচার ও চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২২০ জনকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার অভিযোগে ৩১ জন বাংলাদেশি, ৪ জন ভারতীয় এবং ২৮ জন মিয়ানমার নাগরিককে আটক করা হয়ে। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।