মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় রকেট গতিতে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করা সেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
তবে এ ঘটনায় পিবিআইকে দেয়া তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের আদালত এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। তবে পিবিআই প্রধানকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্তের ঘটনায় এসআই মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে গত ৩ এপ্রিল নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুবেল হত্যা মামলা পিবিআই প্রধানকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পুলিশ সুপারের নিচে নয়, পিবিআইয়ের এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন।
গত ১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মরদেহ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। এরপর তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছিল।
আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা ঘোষণা করছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম পড়ে শোনান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আসন্ন নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। এসময় তিনি ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন।
আসন্ন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ঘোষিত তালিকায় তিনটি আসনে নির্বাচনের কথা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে লড়বেন বেগম খালেদা জিয়া।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার তার দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে এই সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সভায় গণভোট কবে হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এবং জুলাই সনদে বর্ণিত প্রস্তাবের যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা রয়েছে—সেসব ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই—সেটাও রাজনৈতিক দলসহ সবার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আসিফ নজরুল জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হয়। ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে—এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ প্রেক্ষিতে গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে, এর বিষয়বস্তু কী হবে এবং জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে—তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই একুশে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা একাডেমি। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বাংলা একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর সময়-নির্ধারণ বিষয়ে সমিতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি কয়েকটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থার পরামর্শও পর্যালোচনা করা হয়। এর মধ্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর ফেব্রুয়ারি মাসেই মেলা আয়োজনের প্রস্তাব সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবসম্মত বলে গৃহীত হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট হওয়ার পরই মেলার তারিখ ঘোষণা করা হবে- সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়।
এ ছাড়া অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আয়োজনের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে বাংলা একাডেমি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলেও এ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে এর আগে ২০২৬ সালের অমর একুশে বইমেলা চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়োজনের সময় ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায় বাংলা একাডেমি।
ওই সময় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ২১ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে যে অমর একুশে বইমেলা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে বইমেলার যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, তা স্থগিত করা হলো।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় ধরনের পরিবর্তন এলো ভোটার তালিকায়। দেশে এখন মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। দুই মাসের ব্যবধানে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন।
গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, আগামী ১৮ নভেম্বর এই সংশোধিত ভোটার তালিকাটি চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে। এই তালিকাকে ভিত্তি করেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো ভোটার তালিকা প্রকাশ করলো। তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। গত দুই মাসে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন। এই মোট ভোটারের মধ্যে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ পুরুষ, ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ নারী এবং ১ হাজার ২৩০ জন হিজড়া। ভোটার হালনাগাদের এই প্রক্রিয়া কমিশনের নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ। সর্বশেষ হালনাগাদ শেষে এই নতুন সংখ্যা নিয়েই নির্বাচন কমিশন ভোটের আয়োজন করবে ইসি।
একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ নভেম্বরের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর এ সংক্রান্ত আর কোনো সংশোধনের সুযোগ থাকবে না।
জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, দাবি-আপত্তি শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নতুন যুক্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন। এ ভোটার তালিকা দিয়ে সংসদ নির্বাচন করা হবে। ১৭ নভেম্বরের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানো যাবে। দাবি-আপত্তি শুধু এ নতুনদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অন্যদেরটা আগে হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা ১৮ নভেম্বর প্রকাশ করা হবে।
এদিকে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। এর আগে গত ৩১ আগস্ট ভোটার সংখ্যার কথা জানিয়েছিল ইসি। সেই তথ্য অনুযায়ী দেশের মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ। তার আগে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৯ কোটি ১১ লাখ।
উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক এবং প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন ও কার্যকর কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। এমন ধারা অব্যাহত থাকায় টিআইবি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জন্মলগ্ন থেকে কমিশনের অকার্যকরতার অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে টিআইবিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের দেওয়া অনেক প্রস্তাব অনুমোদিত খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী গৃহীত হয়নি; যা কমিশনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে গত ৩১ অক্টোবর নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
তিনি বলেন, কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মর্যাদা ও এখতিয়ারে বৈষম্য সৃষ্টি করে, যা কমিশনের অকার্যকরতার অন্যতম কারণ। সব কমিশনারের পদমর্যাদা ও সুবিধার সমতা নিশ্চিত করা জরুরি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চেয়ারম্যান ও কমিশনার বাছাইয়ের পর প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।
একইভাবে কোনো সংস্থার আটক স্থান আইনবহির্ভূত বিবেচিত হলে তা বন্ধ করা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের প্রস্তাবও উপেক্ষিত হয়েছে, যা টিআইবির মতে হতাশাজনক।
তিনি বলেন, কোনো আইন মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থী হলে কমিশনকে তা পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সংশোধনের সুপারিশ করার সুযোগ থাকা উচিত ছিল। পাশাপাশি ধারা ১৪-তে এই আইনকে মানবাধিকারসংক্রান্ত অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়ার বিধান থাকলে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে কমিশনের ভূমিকা শক্তিশালী হতো।
বিবৃতিতে টিআইবি উল্লেখ করে, সব অভিযোগে প্রাথমিক অনুসন্ধান বাধ্যতামূলক রাখার বিধান কমিশনের কাজে দীর্ঘসূত্রতা বাড়াবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারদের জন্য হয়রানি ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তি আরো দুরূহ করবে।
এ ছাড়া কমিশনে বা তদন্ত দলে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত করা, প্রেষণ প্রক্রিয়ায় কমিশনের মতামত বাধ্যতামূলক করা এবং এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে রাখার সুপারিশও বিবেচিত হয়নি বলে টিআইবি জানায়।
সংস্থাটি আরো প্রস্তাব করে, কমিশনের বাৎসরিক আর্থিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত, যেন প্রতিষ্ঠানটির জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা আরও সুসংহত হয়।
টিআইবির মতে, গ্লোবাল অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশনসের মানদণ্ড অনুসারে কমিশনকে স্বাধীন, কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উচিত অধ্যাদেশটি দ্রুত সংশোধন করা।
গণভোট কবে হবে? গণভোটে বিষয়বস্তু কি হবে? জুলাই সনদে ভিন্নমত প্রসঙ্গে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে? এসব বিষয় নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অনেক সহজ হবে।
সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ‘করবী হলে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আসিফ নজরুল বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধান সংশোধন আদেশ চূড়ান্তকরণ, এবং এতে উল্লিখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় উল্লেখ করা হয়, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও সংস্কারের কয়েকটি সুপারিশের বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া গণভোট কখন আয়োজন হবে এবং এর বিষয়বস্তু কি হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। সেজন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ প্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে অর্থাৎ গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে? গণভোটে বিষয়বস্তু কি হবে? জুলাই সনদ এর বর্ণিত ভিন্নমত প্রসঙ্গে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে? তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা মতামত ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অনেক সহজ হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণ করার কোনো সুযোগ নেই, সেটাও সবার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, দেশ খুব সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। গণতন্ত্রের উত্তরণ নির্ভর করছে জাতীয় নির্বাচনের ওপর।
সোমবার সকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, পোস্টাল ব্যালটের অ্যাপ উন্মুক্ত করা হবে ১৬ নভেম্বর। যারা নির্বাচনি দায়িত্বে থাকবেন তারা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিবেন।
সাবেক মুখ্য সচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. কামাল সিদ্দিকী আজ (সোমবার) ভোরে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নাল্লিলিাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
সকালে তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়।
মরহুমের নামাজে জানাজা বাদ আছর গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে মিরপর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসেছে উপদেষ্টা পরিষদ। সোমবার সকাল ১০টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের করবী হলে ব্রিফ করা হবে।
জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যেকোনো দিন গণভোট হতে পারে বলে জানিয়েছে।
আর জামায়াত ও তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ ৮ রাজনৈতিক দল বলছে, নভেম্বরেই এই গণভোট আয়োজন করতে হবে। এদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট আয়োজন হলে তাদের আপত্তি নেই।
এ প্রেক্ষাপটে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্প্রতি জানান, গণভোটের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে।
রাজশাহীতে আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ১৪ মিনিটে। তবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে হালকা সূর্যের দেখা মিলেছে। ভোর থেকে কুয়াশার চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়েছে রাজশাহী।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, এদিন সকাল ৬ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। আর রোববার (২ নভেম্বর) ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গেল বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজশাহী থেকে কয়ক দফা বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই তিন দিনে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এই বৃষ্টির সঙ্গে বয়েছিল বাতাসও। বৃষ্টিপাত থেমে যাওয়ার পরে কুয়াশার সঙ্গে শীত অনুভব করছে রাজশাহীবাসী।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বাবু বলেন, কয়েকদিন আগে বৃষ্টিপাত হলো। বৃষ্টিপাত শেষে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে। সকালে কুয়াশা পড়েছে। এটা শীতের বার্তা দিচ্ছে।
প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও সবাই তা পাবেন না উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার রাজধানীর বনানীতে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচনী আসন বণ্টন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে তফসিল ঘোষণা করবে। এ নিয়ে বিএনপি সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।
তিনি বলেন, ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রস্তুতি চলছে। সব সংসদীয় আসনে একাধিক ও যোগ্য প্রার্থী থাকার পরেও সবাইকে মনোনয়ন দেয়া সম্ভব নয়। যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে ছিলেন, তাদেরকেও আসন দিচ্ছে বিএনপি।
শিগগিরই মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
অনেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মনোনয়ন বঞ্চিতদের দেশ ও জনগণের স্বার্থে, দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। কারণ ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাদের পক্ষে কাজ করে, তাদের বিজয়ী করতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘এমন কোনো আচরণ করবেন না, যাতে পুরো বিএনপি বিব্রত হয়।’
বিএনপির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির বিজয় ঠেকাতে আবারও একটি সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তবে কোনো ষড়যন্ত্র বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
এ সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি দায়িত্বশীল দল হিসেবে শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রাখতে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়েছে। একদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে, অপর দিকে যথাসাধ্য সম্ভব সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন শর্ত জুড়ে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সংকটাপন্ন করে তুলছে। এর পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে কিনা, জনমনে এমন সংশয় ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এমন হবার কথা ছিল না। আগামীর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জনগণের সংশয় সন্দেহ গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপন্ন করে তুলতে পারে। কৌশল ও অপকৌশলের পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হলে অগণতান্ত্রিক বা অপশক্তির কাছে শেষ পর্যন্ত বিনাশর্তে আত্মসমর্পনের পথে হাঁটতে হয় কিনা এমন বিপদের কথাও সব রাজনৈতিক দলগুলোকে স্মরণ রাখার বিনীত অনুরোধ রাখেন।