কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই বলে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তান ভালো ছিল।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদ, বড় বড় নেতারা বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে, তারা এখন বাংলাদেশ হতে চায়। আর বাংলাদেশে বিএনপি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, কিছু বুদ্ধিজীবী ও কিছু মিডিয়া বলে পাকিস্তানই ভালো ছিল, স্বাধীন বাংলাদেশ করে লাভ হয় নাই। এরা দেশের শত্রু, পাকিস্তানের দালাল।
শনিবার সকালে রাজধানীর জুরাইনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের যে পর্যায়ে এখন আছে, সে পর্যায়ে আসতে পাকিস্তানের আরও ১২ বছর লাগবে। কাজেই, যারা বলে পাকিস্তানই ভালো ছিল, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা পাকিস্তানের পত্রিকা পড়ুন, খোঁজখবর নিন। পাকিস্তানে এখন একটি ডিমের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, এক ডলার সমান ২৫০ রুপি। পাকিস্তানে কত মানুষ না খেয়ে থাকে তার খোঁজ নিন।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে ২০০১ থেকে ৬ সালে মঙ্গাপীড়িত এলাকায় প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে থাকত, শত-শত মানুষ না খেয়ে মারা যেতো। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশে একটি মানুষও না খেয়ে থাকেনি, খাদ্যের কষ্ট করেনি।
নির্বাচন ও ইভিএম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে ইভিএম বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন কী বলবে বিএনপি? আমি মনে করি, তারা এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাতে পারতো। আমি বিএনপিকে বলতে চাই, আপনারা ভুলপথে আছেন। আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও আর মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক ছত্রচ্ছায়ায় নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় এসেছিলেন। আপনারা নির্বাচন ছাড়া কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার দায়িত্ব তাদের। কমিশনের নিকট আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সেটি ব্যালটে, ইভিএমে বা যেভাবেই হোক আমাদের আপত্তি নেই। আমরা স্বচ্ছ, সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় যেতে চাই। নিরপেক্ষ নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়, সেটিও আমরা মেনে নেব।
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন ঠিক কবে হবে—এই প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে সন্দেহ, সংশয় তৈরি হয়েছে। এমন পটভূমিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
নির্বাচন কবে হবে সেটা কি এখন আপনি বলতে পারবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ইটস ভেরি ডিফিকাল্ট ফর মি টু রেসপন্ড, বিকজ আই মাইসেলফ ওন্ট নো এক্স্যাক্ট ডেট (সুনির্দিষ্ট তারিখ)। পোলিং ডেটটা জানি না। এপ্রিলে ফার্স্ট হাফে (প্রথমার্ধে) বলা হচ্ছে। দ্যাট কাইন্ড অফ থিং, উইল বি কমিউনিকেট টু আস, উইথ সাম আইডিয়া দ্যাট– প্লিজ গো অ্যাহেড- দিস ইজ দ্য রেঞ্জ।
সরকার নির্বাচন কমিশনকে ভোটের তারিখ জানিয়েছে কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনি যেমন জানেন, আমিও তেমনি জানি যে আইদার ফেব্রুয়ারি, মানে রমজান মাসের আগে অথবা এপ্রিলে। যেটা সব সময় উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলে আসছেন। সেটাই জানি, যেটা আপনি জানেন, দেশবাসী জানে, তার বক্তব্য থেকে। সেটা আমিও জানি।
সরকার ইসিকে কিছু বলেনি যে কবে নির্বাচন হতে পারে বা কোন সময়ের মধ্যে ভোট হতে পারে— এমন পশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, না সেরকম বলে নাই। আমরা ধরে নিচ্ছি, ইট ইজ আওয়ার অ্যাসাম্পশন (আমাদের ধারণা) যে বর্তমানে যে টাইম ফ্রেম বলা হচ্ছে, আইদার আর্লি ফেব্রুয়ারি বিফোর রমাদান, অর ইট মে বি সাম টাইম ইন দ্য ফার্স্ট হাফ অব এপ্রিল। হতে পারে, এপ্রিলের প্রথম দিকে হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই ডিসেম্বরকে টার্গেট করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কারণ তখন তিনি ডিসেম্বর টু জুন বলেছিলেন। এজন্য আমরা ডিসেম্বরকে টার্গেট করে— ফ্রম ডে ওয়ান উই স্টার্টেড প্রিপেয়ারিং আওয়ারসেলভ।
নিয়োগকালে নির্বাচনের টাইমফ্রেম বা সময়সীমা নিয়ে কোনো ধারণা দেওয়া হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, না দেওয়া হয় নাই। বাট আমি ধরে নিয়েছি যে ইলেকশন তো একটা হবে। আমি প্রথমে আমার অফিসারদের সঙ্গে বসেছি, একটা ইলেকশন করতে গেলে কী কী দরকার, কী কী কাজ আমাদের করতে হবে, কী কী কাজ বাকি আছে, তারা আমাদের একটা চার্ট করে দেবেন এবং কোন কাজ করতে কতদিন লাগে সেটা দেবেন। তখন তো আমরা জানি না ডিসেম্বর বা অন্য কোনো টাইমলাইন তো তখনও আসে নাই।
ডিসেম্বরকে লক্ষ্য করে আপনার প্রস্তুতি কবে থেকে শুরু করলেন- এই প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, যখন প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেন; সম্ভবত গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর তিনি যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন, তখন আমি মৌলভীবাজারে ছিলাম। ওখানে বসেই আমি শুনলাম যে ‘আইদার ইট উইল বি ইন ডিসেম্বর, অর ইন জুন’- এটা শুনলাম তার বক্তব্যের মধ্যে।
শোনার পর ভাবলেন কি না যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হ্যাঁ, এইটা শোনার পরে প্রস্তুতি বাড়িয়ে দিলাম আমরা, ডিসেম্বরকে ধরে ব্যাক ক্যালকুলেশন করে। কারণ ইলেকশনের ডেট থেকে অন্তত দুই মাস আগে আমাদের শিডিউল ঘোষণা করতে হয় আমাদের আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুসারে।
তিনি বলেন, কারণ তফসিল ঘোষণ থেকে ভোটের তারিখ পর্যন্ত যে কর্মকাণ্ডগুলো দরকার, তাতে অন অ্যাভারেজ দুই মাস না হলে পারা যায় না। যেমন ধরেন, নমিনেশন ফাইল করার জন্য সময় লাগে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোনো গাইডেন্সও নাই, পরামর্শও নাই, আদেশও নাই, নির্দেশও নাই, নাথিং। আমরা অ্যাবসোলিউটলি ইন্ডিপেনডেন্টলি এই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে কী কথা হয়েছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ছিল মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎকার। কোনো এজেন্ডাভিত্তিক আলোচনার জন্য আমি যাইনি। আমি প্রেসে বলেছিলাম, সৌজন্য সাক্ষাৎ অর্থ এই নয় যে সালাম দিয়ে বসে থাকলাম ৪৫ মিনিট। তারপর আবার চলে আসলাম ওয়ালাইকুম আস সালাম দিয়ে। ইট ডাজ নট মিন দ্যাট।
তিনি আরও বলেন, অভিয়াসলি, উনি হেড অব দ্য গভমেন্ট, তার জন্য একটা নির্বাচন সামনে আছে, নির্বাচনটা আমাকে ডেলিভার করতে হবে, ইসিকে ডেলিভার করতে হবে। অভিয়াসলি, নির্বাচনটা আলোচনার মধ্যে এসে গেছে। শুধু তিনি জানতে চেয়েছেন যে আমাদের প্রিপারেশনের অবস্থা কী, স্ট্যাটাসটা কী, আমরা কতদূর এগিয়েছি, প্রস্তুত কী রকম।
উনি জানতে চেয়েছিলেন, আমি তাকে ডিটেইল জানিয়েছি, আমি কী কী করেছি, কী কী করতেছি, কী কী বাকি আছে বা আমাদের টাইমলাইনটা কী, কখন আমরা শেষ করতে পারব। আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কিত একটা ব্রিফ (ধারণা) তাকে (প্রধান উপদেষ্টাকে) আমি দিয়েছি। কারণ এটা ছিল মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎকার।
কয়েকটি রাজনৈতিক দল বলছে যে নির্বাচন করার মতো পরিবেশ এখন নেই, এ বিষয়ে আপনার কী মত, জানতে চাইলে সিইসি বলেন, অ্যাকচুয়ালি রাজনীবিদদের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা গাইডেড না। রাজনীতিকরা নানা ধরনের কথাবার্তা বলে। কোনো কোনো দল ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলে, পরে আবার ব্যাক ট্র্যাক করে বলছে যে সংস্কারের আগে ভোট হতে পারবে না। নানা ধরনের কথা বলে। এইটা হলো রাজনৈতিক বক্তব্য।
আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতির কথা দলগুলো বলছে, মব ভায়োলেন্স বা দলবদ্ধ সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, সেটার কথা বলছে। এর মাঝে নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জিং হবে। বাট ইট ইজ পসিবল। চ্যালেঞ্জিং, কারণ এখন তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগস্টে যা দেখছিলাম বা গত বছরের ৮ আগস্টে যা দেখছিলাম অনেক ইম্প্রুভ করে গেছে না? অনেক ইম্প্রুভ করছে।
তিনি বলেন, ধরেন নির্বাচন যখন হবে, তখন ওই সময়ের মধ্যে দেখবেন যে সব কিছু শান্ত, অসুবিধা হবে না। বিশেষ করে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ছোট হোক বড় হোক, তারা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে প্রথম থেকেই। কেউ বলে নাই যে আমি আগের মতো নির্বাচন চাই। জনগণ যদি আপনার সঙ্গে থাকে, কোনো রকমের কোনো মব বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আপনাকে তো ক্ষতি করতে পারবে না।
জনগণ তো মব চায় না। কিন্তু সেটা তো নিয়ন্ত্রণে আসেনি এখন পর্যন্ত। দেখা যাচ্ছে তো এটা হচ্ছে নিয়মিত। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কনফিডেন্ট যে ইলেকশন যখন হবে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ব্রিফিং দিয়েছেন, শুধু পুলিশকে নয়, তিনি তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আর্মি থেকে আরম্ভ করে, আর্মি কীভাবে ডেপ্লয়মেন্ট হবে, বিজিবি কীভাবে হবে ইত্যাদি নানাবিধ প্রশ্ন করেছেন, এই চ্যালেঞ্জেসগুলো সামনে রেখে কিন্তু সরকারের যেমন তার নিজস্ব প্রস্তুতি চলছে, আমাদেরও কিন্তু একই রকম প্রস্তুতি চলছে। এই সব চ্যালেঞ্জগুলো কিন্তু আমাদের মাথায়ও আছে। এগুলো অ্যাড্রেস করার জন্য আমরা প্রস্তুত। সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নেব।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে কি না- জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন: আমি মনে করি যে নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, একটা ফ্রি ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন, সেটার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নট বি প্রবলেম, আমি মনে করি।
দেশে এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের ৬০ জেলায় ডেঙ্গু বিস্তারের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে নতুন করে একদিনে ৪২০ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তির খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদিন ১ জন মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪২০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন করে বরিশাল বিভাগে ১১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬০ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জন এবং রংপুর বিভাগে ৩ জন ভর্তি হয়েছেন।
কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসে মৃত্যু হয় যথাক্রমে ১০, ৩, ৭ ও ৩ জনের। মৃত্যু বেড়ে যায় গত জুন মাসে। জুন মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১৯ জনের। তবে চলতি জুলাই মাসে মৃত্যু বেশি হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রথম ১২ দিনেই ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিভাগ ওয়ারি তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ঢাকা বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০। এরপর সবচেয়ে বেশি মারা গেছে বরিশাল বিভাগে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এই বিভাগে এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি বিভাগগুলোতে মারা গেছেন ১২ জন।
মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। সর্বশেষ ৪২০ জনসহ এ বছর এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮৮০ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে জুলাই মাসের ১২ দিনে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮৪ জন। রোগতত্ত্ববিদেরা বলছেন, জুলাইয়ের বাকি দিনগুলোতে ও আগস্ট মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।
এদিকে দেশের ৬০ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র চারটি জেলায় এই বছর এখন পর্যন্ত কোনও ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যায়নি। জেলাগুলো হলো- গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, জয়পুরহাট এবং সুনামগঞ্জ। তবে সংক্রমণের হার অর্থাৎ রোগী বেশি পাওয়া গেছে দেশের ১০ জেলায়। তার মধ্যে পাঁচটি উপকূলীয় জেলা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব জ্যামিতিক হারে বেড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ঢাকাসহ, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর ও চাঁদপুর এবং উপকূলের পাঁচ জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালীতে রোগীর সংখ্যা বেশি। ডেঙ্গু আক্রান্তের ৭৯ শতাংশ ও মৃত্যুর ৮৭ শতাংশ হয়েছে এসব জেলায়। উপকূলের পাঁচ জেলায় আক্রান্ত ৪৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ ও মৃত্যু ৪১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ফোরকাস্টিং মডেল অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, গাজীপুর, পিরোজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁদপুর ও মাদারীপুরে ডেঙ্গু ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ, কারণ অনেকেই বাসায় বা অনিবন্ধিত ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের তথ্য সরকারিভাবে নথিভুক্ত হয় না। এই পরিসংখ্যানগুলো এক গভীর সংকটের দিকেই ইঙ্গিত করছে, পরিস্থিতি যদি এখনই সমাধানে না আনা যায়, তাহলে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে দেশের চারটি সমদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সাথে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পোস্টার ও পোস্টকার্ড প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রোববার পোস্টার ও পোস্টকার্ড প্রকাশ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। প্রকাশিত ১০টি পোস্টারের সবগুলোই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক।
পোস্টার ও পোস্টকার্ড প্রকাশ অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পোস্টকার্ড 'নোটস্ অন জুলাই'-এ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বিপুলসংখ্যক মানুষ পোস্টকার্ডে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-সম্পর্কিত স্মৃতি ও মতামত প্রদান করবেন। এসব পোস্টকার্ড গুরুত্বসহকারে সংরক্ষণ করা হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দপ্তর-সংস্থার কার্যক্রম চলমান উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মাঠপর্যায়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলা তথ্য অফিসসমূহ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, পোস্টার বিতরণ ও প্রদর্শনসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির সকল কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা ও মন্ত্রণালয়ের দপ্তর-সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাসের (৬০ দিন) জন্য বৃদ্ধি করেছে সরকার। যা ১৪ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৩ জুলাই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ (যাদের মধ্যে কোস্ট গার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তারাও অন্তর্ভুক্ত) সারাদেশে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী একটা ফ্যাসিস্ট সরকার, শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছিল। স্বৈরাচার সরকার জোর করে ১৬ বছর ক্ষমতায় টিকে ছিল। মানুষের প্রতি এমন কোনো নির্যাতন নাই যে করে নাই। গুম, খুন, নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাট থেকে শুরু করে ভোটাধিকার হরণ, সন্ত্রাস এমন কোনো অপকর্ম নাই যে ফ্যাসিস্ট সরকার করে নাই। তিন-তিনবার দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। ফলে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। সীমাহীন জুলুম, নির্যাতন, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল।
জুলাই পদযাত্রার ১৩তম দিনে রোববার জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) পিরোজপুর জেলা শাখার আয়োজনে স্থানীয় শহীদ মিনারে এসব কথা বলেন।
সকাল ১১টায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীরা পিরোজপুর সার্কিট হাউস থেকে পদযাত্রা শুরু করে পিরোজপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পথসভায় বক্তব্য দেন। পদযাত্রাটি পিরোজপুর শহরের সিও অফিস থেকে সদর রোড সাধনা ব্রিজ ও পিরোজপুর মূল শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে এসে পথসভায় মিলিত হয় ।
পথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা সারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃরা।
পথসভায় অংশগ্রহণ করতে জেলার সাতটি উপজেলা থেকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে উপস্থিত হয় এবং বৃষ্টিতে ভিজে কেন্দ্রীয় নেতৃদের বক্তব্য শোনেন।
প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিক সহযোগিতা ও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনার কারণে এবার কোন হজ যাত্রীকে এয়ারপোর্টের কাঁদতে হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, কোন হজযাত্রী যেন হজে যাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, এবার সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পেয়ে, কোন হজ এজেন্সির ওপরে একক নির্ভরতা না রেখে, মন্ত্রণালয় থেকেই সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে প্রায় ৮৭ হাজার হজ যাত্রীর সবাইকে সুষ্ঠুভাবে হজ করিয়ে ফেরত নিয়ে আসা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে সবাই পবিত্র হজ্ব পালন শেষে দেশে ফিরেছেন।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যবসায়িক কোন উদ্দেশ্য নেই, হাজীদের সেবা করাই সরকারের একমাত্র ব্রত।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে যাওয়ার পরও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। তিনি হজের কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, বরাবরই প্রধান উপদেষ্টার একটাই নির্দেশনা ছিল যাতে কোন হজ যাত্রী ভোগান্তি শিকার না হয়, কষ্ট না পায়। নির্দেশনা মতো, আমরা সেভাবেই কাজ করে গেছি এবং সফলতা পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, ৮ জুলাই হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় এবং ১০ জুন থেকে হজের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়। ১০ জুলাই হজের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হয়েছে। আজ (রোববার) সকাল পর্যন্ত ৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ৯ জন বাদে সকল হাজী (৮৭,১৪৫ জন ব্যবস্থাপনাসহ) দেশে ফিরেছেন।
তিনি আরো বলেন, যে সকল হাজী সৌদি আরবে চিকিৎসাধীন আছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তাদেরকেও দেশে পাঠানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২ জনকে বিশেষ ব্যবস্থায় মেডিকেল বেডের মাধ্যমে দেশে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে আরো ৫ জনকে মেডিকেল বেডের মাধ্যমে দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে, রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা সাপেক্ষে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রেরিত হজ যাত্রীদেরকে হজ প্যাকেজ অনুযায়ী প্রতিশ্রুত সকল সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বছর ৮৯২ জন হজযাত্রী হারানো গিয়েছিলো, যার মধ্যে ৮৯১ জনকেই খুঁজে পাওয়া গেছে। ৮২ বছর বয়স্ক একজন হজযাত্রীকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমাদের হজ মিশন এখনও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর হজযাত্রী মৃত্যুর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। মোট ৪৫ জন হজযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের সকলেরই নানা ধরণের জটিল রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্তের পূর্ব ইতিহাস রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ (রবিবার) থেকেই সারা দেশে একযোগে চিরুনি অভিযান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি চালাবে। কোথাও কোনো অপরাধী বা বিশৃঙ্খলাকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—আইন যেন কেউ নিজের হাতে তুলে না নেন। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনকে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারাই জড়িত থাকুক না কেন; তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে এবং অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করছে।’
তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই—তা সে যে-দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দেবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা কোনো আপস করব না। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনকে ঘিরে যেসব নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছি, তা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। আমাদের অংশটুকু যথাসময়ে ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের নিরীহ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয় সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এই কথা জানান। এ সময় কমিটির সদস্য শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এনবিআর কর্মকর্তাদের রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এটি নিরীহ আন্দোলন ছিল। পরে এটি সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়। অর্থনৈতিক ক্ষতি করার উদ্দেশ্য হয়ে পড়েছিল। রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত করার একটা উদ্দেশ্য ছিল।'
একটি পত্রিকার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথা বলা হয়েছে। সেখানে আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়েছে। সরকার কিন্তু অপরিসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা আমাদের বলেছেন, আপনারা এতদিন এটাকে (আন্দোলন) কন্টিনিউ করতে দিলেন কেন? এটা ১৫ দিনের মাথায় কেন থামালেন না? নিপীড়নমূলক না হয়ে কীভাবে এটার সমাধান করা যায় সেজন্য উনি বারবার আলোচনা করেছেন, কিন্তু সেটাতে কাজ হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ইতোমধ্যে পাঁচটি সভা করেছে। ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন, আয়কর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, এনবিআর, সংস্কার কমিশন এবং সর্বশেষ ব্যবসায় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট কার্যক্রম দেখব। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের প্রধান বক্তব্য ছিল, এনবিআর অটুট রাখতে হবে; রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়নের যে দুটি ডিভিশন, সেখানে ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ করতে হবে। তবে তারা দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর দুই বিভাগ করার ক্ষেত্রে তাদের কোনো আপত্তি নেই। সংস্কার কমিটির যে বক্তব্য, সেটিও অভিন্ন।’
‘ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই মাস আন্দোলনের কারণে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা এটাও জানিয়েছেন যে প্রতিনিয়ত শুল্ক, আয়কর ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন তাদের আছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে। কিছু কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা (ব্যবসায়ীরা) বলেছেন, এটি ঠিকই আছে, তবে এ বিষয়ে একটু ধীরগতি অবলম্বনের জন্য তারা অনুরোধ করেছেন।’
গত ৩০ জুন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটি গঠনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আরও সদস্য হিসেবে রয়েছেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল করতে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির আহ্বায়ক।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থী যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম জমা না দেন, তবে তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে না। অর্থাৎ ভেরিফিকেশন ছাড়া নিয়োগের সুযোগ থাকছে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা পরিপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম প্রাপ্তির পর তা সরাসরি স্পেশাল ব্রাঞ্চ, পুলিশ অধিদপ্তরে পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম দাখিল না করলে তাকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।’ এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে বিদ্যমান নিয়মে, এই ভেরিফিকেশন ফরম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হতো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সে পদ্ধতি আর অনুসরণ করা হবে না।
পরিপত্রের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করার লক্ষ্যেই এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, আগের প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে পাঠানোর কারণে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছিল। তাই এনটিআরসিএকে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যুক্ত করে সময় কমানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এনটিআরসিএ-এর অধীন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে এক লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগের আবেদন চলছে।
এ আবেদন চলার মধ্যেই গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত পরিপত্রটি জারি করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে এক হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) এই আমের চালানটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে।
নয়াদিল্লি পৌঁছানোর পর আমগুলো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে— মৈত্রীর অংশ হিসেবে।
এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার বিশিষ্টজনদের জন্য ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠানো হয়। আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ৬০টি কার্টনে এসব আম পাঠানো হয়।
প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার মৌসুমি উপহার হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আমসহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকে। এর জবাবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও উপহার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য পাঠায় বিখ্যাত রসালো ‘কুইন’ জাতের আনারস।
চলতি বছরের আম উপহার পাঠানোর কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটি রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার কর্মকর্তাদের কাছে উপহারের চালানটি হস্তান্তর করা হয়।
এই উদ্যোগকে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, যা আগের প্রশাসনের সময়েও চলমান ছিল। এখনো এটি সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের মত আনুষ্ঠানিকভাবে এ আলোচনা শুরু হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগবিধি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
এর আগে, উল্লেখ্য তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।
তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক। চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে- এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।
তিনি সকলের প্রতি কিছুটা ছাড় দিয়ে ও কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা অবস্থার পরিবর্তন করে হলেও এগিয়ে আসুন। না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব। গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এইটুকু বিবেচনা করুন যে, এটা সম্ভব কি-না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নবীনগর-কোম্পানিগঞ্জ রোড়ের পৌর এলাকার আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশে মাটির চাপে ড্রেইন ভেঙে গিয়ে মরণ ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
জানা যায়- জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে নবীনগর- কোম্পানিগঞ্জ সড়কের আলীয়াবাদ বাজারে সড়কের পাশের ড্রেইটি ভেঙে যাওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। ঝুঁকি নিয়েই এ সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করে নবীগর, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবহন। তাই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ সড়ক যাতায়াতকারী যাত্রীদের। আলীয়াবাদ বাজারে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ- পৌরসভার এ ড্রেইনটি দিয়ে আলীয়াবাদ গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ফলে ওই এলাকায় তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। অবিলম্বে ড্রেইনটি নির্মাণ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল ও ফাটল ধরে যাওয়া সড়কের কাজ দ্রুত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান- প্রতিদিন পৌর এলাকারসহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ আসে এ বাজারে। এ ড্রেইনটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিবহণ শ্রমিকরা জানান- ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এ স্থানে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ড্রেনটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রতি দিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নবীনগর পৌরসভার প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন-"সড়কের মালিক সওজ, তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা জানিয়েছেন দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে"।