চুরির অভিযোগে জুলহাস (৩১) ও বিল্লাল হোসেন (২৬) নামে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার সাভার ও চাঁদপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুজনের কাছ থেকে এসময় এক জোড়া হাতের চুড়ি, এক জোড়া কানের দুল, একটি চেইন এবং রূপান্তরিত স্বর্ণসহ মোট ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ এবং বিভিন্ন ধরনের চাবি, রেঞ্জসহ চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন দুই ভাইকে গ্রেপ্তারের তথ্য দৈনিক বাংলাকে জানান।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানার আহাম্মেদনগরে সিরাজুম মুনীরা নামে এক নারীর বাসার তালা ভেঙে আনুমানিক ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করা হয়। পরে সিসিটিভি দেখে জুলহাস ও বিল্লাল সহোদরকে শনাক্ত করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার সাভারের গেণ্ডা বাস স্টেশন থেকে বিল্লালকে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের মতলব থেকে জুলহাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া চোরাই এসব স্বর্ণ রাখার অভিযোগে লিটন বর্মণ নামে এক স্বর্ণ দোকানদারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৫ বছর ধরে চুরি করছিলেন দুই ভাই
পুলিশ জানায়, ভোলার লালমোহন উপজেলার আবু কালামের ছেলে জুলহাস ও বিল্লাল। চুরি শুরু করেন সেই ছোটবেলায়, ২০০৮ সাল থেকে। অর্থাৎ ১৫ বছর ধরে চুরি করছিলেন তারা। তাদেরই দেয়া তথ্যমতে, এই ১৫ বছরে দুই ভাই দুই শতাধিক চুরি করেন। চুরি করেই তারা অন্য জেলায় চলে যেতেন। ফলে অধিকাংশ ঘটনায় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। এত চুরি করলেও তারা ধরা পড়েন ১০ বারের মত। আর মামলা হয়েছে মাত্র তিনটি। অন্যান্য চোরেরা সবকিছু চুরি করলেও জুলহাস-বিল্লাল শুধু স্বর্ণ ও নগদ টাকা চুরি করতেন। কারণ এই দুইটি সহজেই বহনযোগ্য।
শুধু দিনের বেলায় চুরি করতেন জুলহাস-বিল্লাল
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সাধারণত চোরেরা রাতের বেলায় চুরি করলেও ব্যতিক্রম এই দুই সহোদর। তারা চুরি করতেন দিনে। দিনের বেলায় সাধারণত যে সময়টাতে বাচ্চারা স্কুলে থাকে, সেই সময়টাকেই তারা চুরির জন্য বেছে নিতেন। সেই সময় ঘরের পুরুষ সদস্যরা অফিসে থাকেন। আর নারী সদস্যরা বাচ্চার স্কুলে থাকেন। ফলে বাসা পুরো ফাঁকা থাকে। গাড়ি চালানোর সুবাদে আগে থেকেই এমন একটি বাসা টার্গেট করতেন বিল্লাল। পরে জুলহাসসহ এসে টার্গেট করা বাসায় চুরি করতেন।
১১ বছর বয়সে শুরু, ছোট ভাই গুরু
দুই ভাইয়ের মধ্যে জুলহাস বড়, বিল্লাল ছোট। পুলিশের ভাষ্যে, বয়সে ছোট হলেও চুরিতে বড় বিল্লাল। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই চুরি শুরু করেন বিল্লাল। তখনো শুধু স্বর্ণ আর টাকা চুরি করতেন তিনি। পরে তার কাছ থেকেই চুরি শেখেন বড় ভাই জুলহাস। দুই ভাই মিলে চুরি করলে বিল্লাল সবসময়ই বাসা টার্গেট করতেন এবং পাহারায় থাকতেন। আর চুরি করতেন জুলহাস।
৩০ মিনিটেই ২৪ লাখ টাকার চুরি!
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানার আহাম্মেদনগরে সিরাজুম মুনীরার বাসার তালা ভেঙে দুই ভাইয়ের চুরির বর্ণনায় পুলিশ বলছে, বিল্লালের পাহারায় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে জুলহাস ওই বাসার তৃতীয় তলায় ওঠেন। এরপর দরজার তালা ভাঙেন। ঘরের ভেতরে ঢুকে প্রতি আলমারির তালা ভাঙেন, প্রতিটি ওয়ারড্রোবের লক খোলেন। খোলেন প্রতিটি ড্রয়ার। এরপর স্বর্ণের হদিস পেয়ে ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করেন। এসব কিছু করতে জুলহাসের সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট! অর্থাৎ ৩০ মিনিটেই প্রায় ২৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি করেন তিনি!
জামাই চুরি করতেন, শ্বশুর বেচতেন
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, জুলহাসের শ্বশুর মো. আলাউদ্দিন। তিনি থাকেন চাঁদপুরের মতলবে। প্রতিবার চুরি করার পরপরই শ্বশুর বাড়ি চলে যেতেন জুলহাস। জামাইয়ের এই চুরির কথা শ্বশুরের অজানা নয়। কিন্তু তিনি এতে বাধা দেয়া দূরের কথা, উল্টো সহযোগিতা করতেন। জামাই জুলহাস স্বর্ণ চুরি করে তা শ্বশুরের হাতেই তুলে দিতেন। আর শ্বশুর সেই স্বর্ণ বিক্রি করতেন। মিরপুর থেকে চুরি করা স্বর্ণও জুলহাস তার শ্বশুরের হাতেই তুলে দেন। শ্বশুর সেই স্বর্ণ চাঁদপুরের উত্তর মতলবের ছেঙ্গারচর বাজারের একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে দেন! অভিযান চালানোর সময় জামাই জুলহাস গ্রেপ্তার হলেও পালিয়ে যান শ্বশুর আলাউদ্দিন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না। আর কোনো বিচারক তার সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি (হীরক জয়ন্তী) ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি তার প্রয়াত মা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক (যিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং পরবর্তীতে একই বিভাগের শিক্ষিকা ছিলেন) অধ্যাপক ড. সুফিয়া আহমেদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি ছিলেন সেই বিরল প্রজন্মের একজন, যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নৈতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। তার জীবন ছিল নারীর একাডেমিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার নৈতিক শুদ্ধতার প্রতীক, যা এখনো আমাকে প্রভাবিত করে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনে আপনাদের সামনে দাঁড়ানো মানে স্মৃতি ও নিয়তির এক মহামিলনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছরের যাত্রা কেবল একাডেমিক সাফল্যের ইতিহাস নয় বরং এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।
তিনি বলেন, ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না, আর কোনো বিচারক তার সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, আইন হলো কোনো জাতির নৈতিক ইতিহাস, যা ন্যায়ের ভাষায় লেখা হয়; আর ইতিহাস হলো— কেন সমাজকে আরও ভালো হতে হবে, তারই অনুসন্ধান।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না। এটিকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়। আর সময়ের সঙ্গে বিচার বিভাগকে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে তাকে সংস্কার করতে হয়। গত ১৫ মাসে আমরা বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি এবং সেটি এখনো চলমান আছে।
তিনি বলেন, সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, বরং নৈতিক; যাতে প্রতিষ্ঠান ক্ষমতাকে নয়, মানুষকে সেবা দেয়; কর্তৃত্ব বৈধতার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিচার বিভাগ জনগণের আস্থার নৈতিক অভিভাবকে পরিণত হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে— ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ফিলিস্তিন ও থাইল্যান্ড। এই সংযোগের উদ্দেশ্য হলো— আইনের পাশাপাশি ইতিহাস ও দর্শনের আন্তঃবিষয়ক জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে বিশ্বজনীন মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠা করা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আজকের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি কেবল একাডেমিক উদযাপন নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রভাবের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ বারবার প্রমাণ করেছে— ইতিহাস আমাদের মূল্যায়ন করে অর্জনে নয়, বরং প্রচেষ্টার সততা ও নিষ্ঠার মানদণ্ডে। এই বার্তাই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভবিষ্যতের মূলভিত্তি মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসে এর অবদান এবং জ্ঞানচর্চার মানবিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিভাগটির সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা জানান।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস। এতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষকবৃন্দ, এই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক (এলামনাই) শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়।’
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫’- এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আয়োজনে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
দেশ অস্থিতিশীল হলে পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে বলে সতর্ক করেন তারেক রহমান। এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে বাঁচতে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিল। একইভাবে পতিত–পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও বর্তমানে ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করে দেশের গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে কি-না, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গী কারও কারও ভূমিকা দেশে ‘আপনার, আমার, আমাদের’ বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগকে বিনষ্ট করার হয়ত একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গুপ্ত বাহিনীর সেই অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে, একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় ও বহাল রাখা।’ সেজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গীদের সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই ‘একটি শান্তিকামী, সহনশীল, গণমুখী’ রাজনৈতিক দল বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভিন্ন দল, ভিন্ন মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা, এটি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই বিএনপির রাজনীতি বলেও দাবি করেন তিনি।
নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে স্বল্প আয়ের মানুষের সহায়তার জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ এবং তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে ঘোষণা করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং একই সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করে দেশে এবং বিদেশে কাজের ব্যবস্থার পরিকল্পনা আমরা এর মধ্যে হাতে নিয়েছি।’
বাংলাদেশে ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বন্ধনই আমাদের রাষ্ট্র এবং সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য।’ এই বৈচিত্র্যময় সমাজে ঐক্যসূত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে এই বাংলাদেশে আপনার যতটুকু অধিকার আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। কারও বেশি, কারও কম– তা নয়।’ এ সময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন, দক্ষ জনস্বাস্থ্য জনবল তৈরি ও গবেষণায় জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) অবদান অনস্বীকার্য। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগব্যাধি, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি মোকাবেলায় নিপসমকে ভূমিকা রাখতে হবে।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে নিপসমের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় নিপসম জনস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এখন গবেষণায় প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং সংযোগ স্থাপনে জোর দিতে হবে। সংক্রামক-অসংক্রামক ব্যধি ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য গবেষণা বাড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, নিপসম দক্ষ জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী গড়ে তোলার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্ষমতায়ন করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণভিত্তিক নীতি ও কার্যকর হস্তক্ষেপের কৌশল তৈরি করে। যা স্থানীয় ও বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে অবদান রাখছে। নিপসম শুধু একাডেমিক শিক্ষাই নয় বরং স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাতে গুরুপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
সভাপতির বক্তব্যে নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের ৫১ বছরে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা ও সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠার সময় ২টি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে নিপসম। বর্তমানে ৯টি এমপিএইচ প্রোগ্রাম ও ১টি এমফিল কোর্স পরিচালনা করছে। প্রতিবছর নিপসমের অনুষদ ও শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে অসংখ্য থিসিস ও গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করছে। এসব গবেষণা মূলত জনস্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা বিষয়ে নতুন তথ্য ও জ্ঞান তৈরি করে। নিপসম গত পাঁচ দশকে কয়েক হাজার জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী তৈরি করেছে, যারা দেশ-বিদেশে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নিপসমের ২২টি একাডেমিক বিভাগ এবং ৫টি আধুনিক ল্যাবরেটরি (মাইক্রোবায়োলজি, প্যারাসাইটোলজি, বাইয়োকেমিস্ট্রি, এন্টোমোলজি, এবং পেশা ও পরিবেশ) সুবিধা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবায় নিপসম শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ডক্টর অফ পাবিলক হেলথ কোর্স চালুসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পাবলিক হেলথ সেবায় জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ সৃষ্টি প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বের বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের ৯টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাপত্রগুলো স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতি ও প্রোগ্রামের কার্যকারিতা উন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য খাতে উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগে সহায়ক হবে বলে জানানো হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, শিক্ষা বলতে বোঝায় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত আচরণ। শিক্ষার উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করা। একজন মানুষ যেন সমাজের উপযুক্ত মানুষ হয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিত করা।
শনিবার খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ‘প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে পাঠ্যক্রম উভয় মিলে শিশুর নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও যুক্তিভিত্তিক চিন্তার বিকাশ ঘটায়। প্রাথমিক শিক্ষা এ ক্ষেত্রে শিশুর ভাষাগত সাবলীলতা ও গণিতে সাধারণ দক্ষতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপদেষ্টা বলেন, সফল স্কুলের দৃষ্টান্ত থেকে ধারণা নিয়ে বাকি স্কুলগুলো নিজেদের উন্নত করতে পারে। শিখন সাইকোলজি অনুযায়ী ক্লাসের সবাই সমমানের না হয়ে মিশ্র মানের হলে একজন অন্যজন থেকে শিখতে পারে। তিনি শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। শিক্ষকদের সাংগঠনিক নেতৃত্ব ও একাডেমিক নেতৃত্ব প্রদান করে নিজেকে হাজার হাজার শিশুর আদর্শ হিসেবে তুলে ধরার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মিরাজুল ইসলাম উকিল ও খুলনার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরীন আকতার ও সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মোজাফফর উদ্দীন।
নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে মনিফা বেগম (৪৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ঢেলাপীর সংলগ্ন কাদিখোল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মনিফা বেগম সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর এলাকার মোজাফফর হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রেলওয়ে পুলিশ জানায়, সকালে রেললাইনের পাশে কাটা পড়া অবস্থায় নারীর মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। তবে ঠিক কোন সময়ে এবং কোন ট্রেনের নিচে তিনি কাটা পড়েছেন, তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি।
নিহত মনিফা বেগমের মেয়ে মিতু আক্তার (২৫) বলেন, "আমার মা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং প্রায়ই কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং আর ফিরে আসেননি। আজকে সকালে পুলিশের মাধ্যমে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর খবর পাই।"
বিষয়টি নিশ্চিত করে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, "এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।"
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন যথাযথভাবে যাচাই করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি, আপত্তি ও অভিযোগ থাকলে তা দাখিলের আহ্বান করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এক সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন যথাযথভাবে যাচাই করে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি, আপত্তি ও অভিযোগ থাকলে তা দাখিলের আহ্বান করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ শনিবার এক সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানাতে হবে। কারো বিরুদ্ধে কোনো দাবি/আপত্তি/অভিযোগ থাকলে স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে ৬ (ছয়) সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপত্তির শুনানি শেষে তা গ্রহণ বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেবে ইসি। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। গণবিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) পাওয়া যাবে।
পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য ১৬টি বেসরকারি সংস্থা হচ্ছে, এসো জাতি গড়ি (এজাগ), নেত্রকোণা সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এনএসডিও), ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর-ডরপ, হেল্প সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, দীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (ডিএমইউএস), রুরাল ইকোনোমিক সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রেসডো), রাসটিক (রুরাল আনফরচুনেটস সেফটি তালিসম্যান ইল্যুমিনেশন কটেজ, বাঁচতে শেখা, পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা), ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন, মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মাউক), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য চেনা অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান), যুব একাডেমি, এসডিএস (শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি) এবং উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন একইসঙ্গে আরও ১৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/অভিযোগ চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ পরে জানান, প্রাথমিক বাছাইয়ের পর আপত্তি ওঠায় ৭টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। ৬৬টি দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হল। আবেদন করায় আরও ১৬টি সংস্থার বিষয়ে দাবি-আপত্তি জানতে চেয়ে ১৫ কার্যদিবস সময় দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের গোপন বা অবৈধ পারমাণবিক কার্যকলাপের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বিদ্বেষপূর্ণ বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যকে ভারত বিকৃত করে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
এরআগে বিভিন্ন গলমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, যেসব দেশ ‘পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে’ তাদের মধ্যে পাকিস্তানও আছে।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বিকৃত করে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত স্পতই তথ্য বিকৃত করছে এবং ট্রাম্পের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।
পররাষ্ট্র দপ্তর জোর দিয়ে বলেছে, ‘গোপন বা অবৈধ পারমাণবিক কার্যকলাপের অভিযোগ ভিত্তিহীন, বিদ্বেষপূর্ণ এবং ভারতের নিজস্ব দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ থেকে মনোযোগ সরানোর লক্ষ্যে পরিচালিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অংশ।’
পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করে বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামাবাদ সবশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় ১৯৯৮ সালের মে মাসে।
এতে আরো বলা হয়, ‘পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দেয়া প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন করে আসছে।’
ভারতের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তার রেকর্ড নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
হাইকোর্টের নির্দেশে সাপের কামড়ের জন্য দেয়া অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলার হাসপাতালে পাঠাতে সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। শনিবার সকালে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
এর আগে ১৮ আগস্ট সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
১৭ আগস্ট সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে সরবরাহের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরুন্নবী। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে এ রিট করা হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়, সারা দেশে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই পাঁচ মাসে সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। অবকাঠামো ও শিল্প থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে তাদের সেবা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা আমাদের আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি তৈরিতে ব্যাপক অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, একটি বৃহত্তর পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে আইডিইবি এই দক্ষ কর্মীবাহিনীকে লালন-পালন, কারিগরি শিক্ষার প্রচার এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করছে।
‘গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণপ্রকৌশল দিবস-২০২৫ ও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সংগঠনের সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
আইডিইবি প্রতিবছর ৮ নভেম্বর ‘গণপ্রকৌশল দিবস’ পালন করে থাকে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘দক্ষ জনশক্তি-দেশ গঠনের মূল ভিত্তি’।
প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একটি জাতির প্রকৃত শক্তি কেবল তার প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যেই নয়, বরং তার জনগণের জ্ঞান, দক্ষতা ও সৃজনশীলতার মধ্যেও নিহিত।
তিনি বলেন, অব্যাহত প্রতিশ্রুতি, পেশাদারিত্ব এবং উদ্ভাবনের চেতনার মাধ্যমে আইডিইবি’র সদস্যরা আমাদের জাতি গঠনের প্রচেষ্টার অগ্রভাগে থাকবেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং আমাদের জাতীয় আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অবদান রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
প্রধান উপদেষ্টা ‘গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সূত্র: বাসস
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরী এবং ছেলে রাশেদুল ইসলামের নামে থাকা ৮১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
এর মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ১৬টি, তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর ৩৬টি ও ছেলে রাশেদুল ইসলামের ২৯টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন।
তিনি আরও জানান, দুদকের পক্ষে আবেদনটি করেছেন সংস্থাটির উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরী ও ছেলে রাশেদুল ইসলামের নামে উল্লিখিত অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের এই সম্পদ হস্তান্তর অথবা স্থানান্তর বা অন্য কোনো পন্থায় মালিকানা পরিবর্তন করে বা হস্তান্তর করে দেশের বাইরে গিয়ে আত্মগোপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান অবস্থায় যাতে আত্মসাৎকৃত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত না হতে পারে, তার পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত ব্যাংক হিসাবসমূহ অবরুদ্ধ করা একান্ত আবশ্যক বলে এই আবেদন করেছে দুদক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) অক্টোবর মাসে নগরজুড়ে মোট ১ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরভবনে ‘ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ কার্যক্রম’ বিষয়ক এক বিভাগীয় পর্যালোচনা সভা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এ তথ্য জানান।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, গত এক মাসে আমরা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করেছি। অনুরোধ করছি– দয়া করে শহরটিকে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে আর নোংরা করবেন না। আমাদের নগরকর্মীদের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের ৫২টি ওয়ার্ডে পরিচালিত ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ কার্যক্রমের বিস্তারিত পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অঞ্চল-৩ এ সর্বাধিক ২৯ হাজার ৪৪১টি ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অঞ্চল-২ থেকে প্রায় ২৫ হাজার, অঞ্চল-৪ থেকে ১৮ হাজার, অঞ্চল-৫ থেকে ১২ হাজার এবং অঞ্চল-৯ থেকে প্রায় ১১ হাজার ব্যানার ও ফেস্টুন উচ্ছেদ করা হয়েছে।
গত মাস থেকেই ডিএনসিসি নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩০টি স্থানে বিনামূল্যে পোস্টার লাগানোর জন্য নির্ধারিত স্থান ঘোষণা করে। এরপরই অবৈধভাবে স্থাপিত ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন অপসারণে একযোগে অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। ডিএনসিসির আওতাধীন ১০টি অঞ্চলের ৫২টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী এ অভিযান পরিচালিত হয়।
শহর পরিচ্ছন্নতার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
কমিশনের জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, 'নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে ইসির এখন কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই। আমাদের প্রস্তুতি শতভাগ সম্পন্ন। ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হলে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।'
তিনি বলেন, সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বিদেশ থেকে আনা ভোটের কালি এসে পৌঁছেছে। এটি নির্বাচন প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভোটের আগে প্রয়োজনীয় প্রায় সব মৌলিক কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।
দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, 'আইনশৃঙ্খলার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ শুধু নির্বাচনের জন্য নয়, বরং দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। যখন রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তখন থেকেই ভোটের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। ভোটের মাঠে সবাই নেমে গেলে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচিত সরকার ও গণতান্ত্রিক ধারার প্রবর্তন ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়ন আসবে না। তাই এবারের নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।
গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের কারণে জনগণের মধ্যে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে, সেটি কাটিয়ে ওঠাই এবারের কমিশনের প্রধান লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন আব্দুর রহমানেল মাছউদ।
তিনি আরও বলেন, 'ভালো নির্বাচন করা ছাড়া বিকল্প নেই। জাতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের অবশ্যই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এবারের ভোটকে জনগণের জন্য উৎসবে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য।
ইসি সচিবালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বাসসকে জানান, নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, আইন সংশোধন, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ মৌলিক প্রস্তুতির সবকিছুই নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে।
ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩০ জন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। এর আগে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আইন সংশোধনের কাজও সম্পন্ন করেছে ইসি। গত ৩ নভেম্বর সরকার 'গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে যুক্ত হয়েছে বেশ কিছু যুগান্তকারী বিধান।
সংশোধনের মূল দিকগুলো হলো— আদালত ঘোষিত ফেরারি আসামি প্রার্থী হতে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী (সেনা, নৌ, বিমান ও কোস্টগার্ড) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একক প্রার্থীর আসনে ‘না ভোট’ পুনরায় চালু করা হয়েছে। সমান ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে। জোটগত নির্বাচনে নিজ দলের প্রতীকে ভোট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নির্বাচনী জামানত নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। আচরণবিধি লঙ্ঘনের সর্বোচ্চ শাস্তি দেড় লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড।
অনিয়ম প্রমাণিত হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসিকে দেওয়া হয়েছে। আইটি সাপোর্টে পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি যুক্ত হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে অনিয়ম হলে সেটি নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে নির্বাচনের পরও ইসি ব্যবস্থা নিতে পারবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন তিনটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এগুলো হলো— জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্ক্সবাদী) ‘কাঁচি’ এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশেক’ প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। তিন দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইসি চূড়ান্তভাবে দেশের ৬৪ জেলায় ৩০০ আসনে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করেছে। পুরুষদের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং মহিলাদের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি কক্ষসহ মোট ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এবার প্রথমবারের মতো পোস্টাল ভোটিংয়ের সুযোগ থাকছে। এ লক্ষ্যে 'পোস্টাল ভোট রেজিস্ট্রেশন অ্যাপ' চালু করা হচ্ছে। এটি উদ্বোধন করা হবে ১৬ নভেম্বর।
ইসি সচিব জানিয়েছেন, অ্যাপে নিবন্ধন করে প্রবাসী ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। কতদিন পর্যন্ত নিবন্ধন প্রক্রিয়া খোলা থাকবে, সেটি উদ্বোধনের সময় ঘোষণা করা হবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপ শুরু হতে পারে।
সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানানো হবে।
আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, 'আমরা চাই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক উৎসবে পরিণত হোক। জনগণ যেন স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে—এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।' সূত্র: বাসস
আজ ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বর একটি অনন্য এবং ঐতিহাসিক দিন। এদিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস নামে পরিচিত- যেদিন দেশের সেনা সদস্য এবং সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে এক ঐতিহাসিক আন্দোলন গড়ে তোলে, যার ফলশ্রুতিতে শহীদ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান এবং জাতীয় জীবনে এক নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা ঘটে।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে কেবল একটি সামরিক অভ্যুত্থান হিসেবে দেখা যায় না; এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার এক সমাপ্তি, একটি জাতির পুনর্জাগরণের মুহূর্ত। এই দিনে সেনা ও জনতা মিলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, স্বাধীনতার চেতনা ও জাতীয় সংহতির পক্ষে এক অভিন্ন অবস্থান তৈরি করে।
১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর জাতির সামনে ছিল এক বিশাল পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্নির্মাণের পথে নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক অনৈক্য ও প্রশাসনিক অদক্ষতা পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, একদলীয় ‘বাকশাল’ শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা-এসব মিলে রাষ্ট্রব্যবস্থা ক্রমেই অসন্তোষের দিকে গড়ায়।
যা পরবর্তীতে গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতেই আসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর। ইতিহাসে যেটি পরিচিত ‘সিপাহী-জনতার বিপ্লব’ বা ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ নামে।
এই দিনটি কেবল ইতিহাসে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আজও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
দিনটি উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ওইদিন সকাল ৬টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে।
এরপর সকাল ১০টায় দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম এর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। বেলা ৩টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিনই সারাদেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন স্ব স্ব উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করবে। দলটির কেন্দ্রীয় মিডিয়া বিভাগের সদস্য মুজিবুল আলম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানান।
জামায়াত জানায়, দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত ইসলামী। এ উপলক্ষে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সকল মহানগরী ও জেলা শাখাকে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন।