রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ব্রিফিংয়ে জানান, সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি তার কাতার সফরের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। এছাড়া তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চলছে। রবিবার (১৮ মে) সকাল ৯টা থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে নগর ভবনের সামনে আসেন তার সমর্থকরা।
তারা নগর ভবনের ফটকগুলোয় অবস্থান নিয়েছেন, ভেতরের বিভিন্ন ফটকে ঝুলিয়েছেন তালা। এতে নগর সংস্থার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এ সময়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা গেছে ইশরাক সমর্থকদের।
এর মধ্যে রয়েছে- ‘শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘শপথ নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’ প্রভৃতি। এ সময়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তারা।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা শফিউর রহমান নামের এক বিএনপিকর্মী বলেন, ‘ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করা হচ্ছে। আর এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
সূত্রাপুর থেকে আসা জেহাদ হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ইশরাক। মেয়র হিসেবে দ্রুত দায়িত্বে আমরা তাকে দেখতে চাই।’
‘সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, কেন তাকে এখনো শপথ গ্রহণ করানো হচ্ছে না? শপথ যত দিন পড়ানো হবে না, ততো দিন আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। যদি এটা নিয়ে কোনো টালবাহানা হয়, আমরা আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো,’ বলেন তিনি।
এরআগে শনিবার ইশরাককে মেয়র পদে শপথ পড়াতে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা হয়েছে। পরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ইশরাকের সমর্থকরা। ডিসেম্বরে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কাজ চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি ভবনে।
নিজেকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠিও দেন ইশরাক হোসেন। এরপর সন্ধ্যায় ডাকেন সংবাদ সম্মেলন।
এক সাংবাদিক ইশরাকের কাছে জানতে চান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সঙ্গে তার কোনো বিরোধ আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই।’
তবে এই কর্মসূচির কারণে দাপ্তরিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অফিসে ঢুকতে পারছি না। এ কারণে আমরা সাইটগুলো পরিদর্শন করছি, উন্নয়নমূলক কাজগুলো সরেজমিনে দেখছি।’
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। তাকে রাজধানী ভাটারা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলায় রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নুসরাত ফারিয়াকে ইমিগ্রেশন থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আমার থানায় মামলা রয়েছে। তাকে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়নি।’
‘যতটুকু জানতে পেরেছি, তাকে ডিবি অফিসে নেওয়া হচ্ছে। তবে তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে, সেটা নিশ্চিত নই,’ বলেন তিনি।
২০২৩ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া, বান্দরবান জেলাসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
গতকাল (শনিবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাঙামাটিতে ১২১ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটে ৯৪, কুতুবদিয়ায় ৭৫, কক্সবাজারে ৭৩ এবং গোপালগঞ্জ ও সৈয়দপুরে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মে দিন ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। আজ পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিচারক নতুন এদিন ধার্য করে আদেশ দেয়।
এর আগে ১০ এপ্রিল আদালত মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল।
শেখ হাসিনা-পুতুল ছাড়াও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অপর ১৬ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনসম্মত পারিশ্রমিক না হওয়া সত্ত্বেও, আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩নং রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেন।
প্রতারণামূলক অবৈধ পারিতোষিক দেওয়া ও নেওয়া এবং অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও বেআইনি অনুগ্রহ প্রদর্শনের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার যে অধিকার রয়েছে তা পূর্ণাঙ্গরূপে ভোগ করতে প্রস্তুত রয়েছি।
সম্প্রতি বিএনপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা খলিলুর রহমানকে বিদেশি নাগরিক বলে অভিযোগ করার পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপি নেতার অভিযোগের জবাবে ড. খলিলুর রহমান আজ বাসসকে বলেন, ‘এই অভিযোগ প্রমাণের দায়ভার অভিযোগকারীর ওপর বর্তায় এবং প্রয়োজনে তা আদালতে প্রমাণ করতে হবে।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমি একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমার পূর্ণাঙ্গ অধিকার ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’
সম্প্রতি বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান একজন বিদেশি নাগরিক।
গেজেট হলেও মেয়র হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে এখনও শপথ না পড়ানোয় নগর ভবন হিসেবে পরিচিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয়ের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে গতকাল শনিবার তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলন ও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। গতকাল তারা ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয়ের সব গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা ৬৫টি তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে নগর ভবনের দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে এখনও উদ্যোগ না নেওয়ায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তার সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় নগর ভবনের সামনে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগর ভবন থেকে সচিবালয় এবং প্রেসক্লাব হয়ে পুনরায় নগর ভবনে সামনে এসে শেষ হয়।
ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকেই নগর ভবনের কার্যক্রম মূলত বন্ধ। এ ভবনে থাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরাও ভবনে ঢুকতে পারছেন না। তাদের আনা-নেওয়ার জন্য গাড়িও করপোরেশন থেকে বের হতে পারছে না। এই দুই দিন ভবনের ফটক থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে। শুধু আঞ্চলিক অফিসের কার্যক্রম আর নগর ভবনের বাইরের কার্যক্রম চলছে।’
পরে নগর ভবনের সামনে এক সমাবেশে বিক্ষুব্ধ ঢাকাবাসীর পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান। তিনি জানান, রোববারও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন ঢাকাবাসী।
বিক্ষোভ থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তার সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২য় দিনের মতো একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন নগরের বাসিন্দারা। সেদিন নগরভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি চলে। সেই কর্মসূচিতে নগরবাসীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নগরভবনের সামনে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তারা ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই বিক্ষোভ করেছেন।
শান্তিপূর্ণ এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নগরের বাসিন্দারা বলছেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনো শপথ করানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা চাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ঢাকা গড়তে ইশরাকের মতো জনবান্ধব মেয়র প্রয়োজন।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যতদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো না হবে, ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এ সময় ইশরাক অভিযোগ করে বলেন,নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের ২০ দিন পার হলেও সরকার মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি তাকে ঢাকা ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ পাঠ করাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘গেজেট প্রকাশ হওয়ার পরও স্থানীয় সরকার বিভাগ আমাকে শপথ পড়ানোর জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। আমি চাই দ্রুত সময়ে শপথ পড়িয়ে আদালতের রায় রাস্তবায়ন করুন।’
সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হচ্ছে যে, ধানের শীষের প্রার্থীর প্রতি বৈষ্যম করা হচ্ছে। এই মামলাটি ছিল নৌকার প্রার্থীর শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে…তাদের পক্ষ হয়ে এখন কারা এই মামলায় বাধাদান করতে পারে? তাহলে তারা সেই দোসরদেরই লোক হয়ে গেলো… তাই না। আমি দোষ দেবো ওই দোসরদেরকে, আমি অন্য কাউকে দোষ দেবো না। আমি সকল পক্ষ যারা এখানে রেসপনসেবল পার্টি রয়েছেন সবাইকে বলব, যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে আপনারা আদালতের রায় কার্যকর করুন, রায়টি বাস্তবায়ন করুন..।’
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াকে নগর ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি এই আন্দোলনের ঘোষণা দেই নাই, আদেশ-নির্দেশনা কিছুই দেই নাই। সেক্ষেত্রে আমি তাদেরকে (আন্দোলনকারীদের) অবশ্যই আমি বলব, তারা যাতে এমন কিছু না করে যেটাতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি আমি তাদের আন্দোলন করার অধিকারকে আমি না বলতে পারি না। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কেউ যদি আন্দোলন করে আমি তাদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার রাখি না।’
শপথ গ্রহণের বিলম্বে কোনো রাজনৈতিক দলকে দোষী করছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে ইশরাক বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো এক ব্যক্তি বা সরকারকে দোষারোপ করছি না। আমরা এটা সমাধান চাচ্ছি...এটাই। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই। তাদের (উপদেষ্টাদের) ৯৯ শতাংশের সাথে আমরা কোনোদিনই দেখাও হয়নি, পরিচয়ও নাই। সেজন্য এই প্রশ্নটি একেবারেই অবান্তর।’
আদালতের রায়ের বিস্তারিত তুলে ধরে ইশরাক বলেন, ‘গেজেট প্রকাশের ২০ দিন হয়ে গিয়েছে এখন পর্যন্ত আমাকে শপথ গ্রহণ করানোর জন্য কোন ধরনের পদক্ষেপ বর্তমান সরকার নেয় নাই যেটি কিনা এখতিয়ারে পড়ে.. বর্তমান সরকার বলতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে বোঝানো হচ্ছে যেখানে নির্বাচন কমিশন থেকে এই নির্দেশনাটি গেজেটসহ স্থানীয় সরকার বিভাগে অর্থাৎ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হয়। পাঠানোর পর তারা আরেকটি যে কাজ করে সেটিকে আইনের দৃষ্টিতে অনেকেই বলেছে এটি বেআইনি সেটি হলো তারা পাল্টা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে লিখে সেখানে একাধিক একটা রেফার দিয়ে বলার চেষ্টা করে যে এখানে আপিল করবে কিনা। অথচ নির্বাচন কমিশন কিন্তু তার যে আইনজীবী প্যানেল রয়েছে তার যে বিজ্ঞ আইনজীবীরা রয়েছেন এবং তার যে প্রক্রিয়া রয়েছে সেটি সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ কমিশন মিলেই কিন্তু সিদ্ধান্ত দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ফেলেছে। অতএব এখানে একটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কি নির্বাচন কমিশনকে অলমোস্ট নির্দেশনা দিতে পারে কিনা সেই বিষয়টি এখন প্রশ্ন হিসেবে চলে এসেছে। সো এখানে আমরা দেখছি যে নির্বাচন কমিশনের উপর ইতোমধ্যেই এই সরকার এক ধরনের হস্তক্ষেপ শুরু করেছে।’
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কথা উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপরে এরকম হস্তক্ষেপ হলে সেটি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কি ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে সেটা নিয়ে জনগণ এখন সংকিত হয়ে পড়েছে। এদের এই বর্তমান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে এই উপদেষ্টা পরিষদের অধীনে একটি সঠিক সুস্থ নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে কিনা সেটা নিয়ে জনমনে এখন শুধু সন্দেহ না, তারা এখন স্পষ্টতই দেখতে পারছে এটি সম্ভব নয়।’
শপথ পাঠ নিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এই ব্যাপারেও নির্বাচন কমিশনও পাল্টা উত্তর দিয়েছে যে তারা সম্পূর্ণ আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে কোন কোন গ্রাউন্ডে কিভাবে তারা এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে এবং গ্যাজেটটি প্রকাশ করেছে। সেটি পাওয়ার পরে আইন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তারা এখন কালক্ষেপণ করার জন্য আবারো চিঠি দিয়েছে। এখন কোথায় দিয়েছে সেটা বলতে পারছি না। কেউ বলছে, আইন মন্ত্রণালয় দিয়েছে… কেউ বলছে সলিসিটর অফিসে দিয়েছে। নানা ধরনের কালক্ষেপনের আশ্রয় তারা নিয়েছে। এটির মধ্যে দিয়ে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে একটি সরকারের ভেতরে একটি সরকার রয়েছে যারা এখন দলীয় আচরণ করছে। তারা একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য তাদের পলিসি অনুযায়ী তারা কাজ করে চলেছে। কারণ এর মাঝে আরেকটি ঘটনা আপনারা দেখতে পাবেন। যে এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) থেকে তারা বিবৃতি দেয় সেখানে বলা হয় যে এরকম এই রায়ের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় এমনকি যে বিচারক তার ব্যাপারেও বিষোদগার করা হয় যেটি কিনা অত্যন্ত দুঃখজনক সেটা আমরা আওয়ামী লীগ আমলে দেখতে পেয়েছি যে, তাদের পক্ষে কোন রায় না গেলে সেটা বিচারকদের উপরে তারা টার্গেট করতো বিচারকদের বিষয়ে প্রথমে তারা হুমকি-ধামকি দিত। পরবর্তীতে অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলত।’
আমি ইশরাক কি ফ্যাসিস্টদের পক্ষে ছিলাম এমন প্রশ্ন তুলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে এনসিপি যদি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার বা গণঅভ্যুত্থানের ফসলের সরকার হয়ে থাকে। আমি ইশরাক হোসেন, আমি কি শেখ হাসিনার পক্ষের কেউ ছিলাম? নাকি শেখ হাসিনার বিপক্ষে আন্দোলনটাও কম করেছি? নাকি শেখ হাসিনার মধু খেয়ে আমি রাজনীতি করেছি? সেটার জবাব জনগণ জানে কিভাবে দিতে হয় এই সরকারকে প্রয়োজন সম্মত দিয়ে দিবে তো আমার বিপক্ষে কেন তার কারণ হচ্ছে জাস্ট বিকজ আমি বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং তারা চাচ্ছে যে তাদের নিজস্ব দলীয় ব্যক্তিদেরকে প্রশাসক হিসেবে বসাবে এবং আগামী নির্বাচনের সময় একটা ফায়দা লুটবে এবং বর্তমানে যে অর্থনৈতিক লুটপাট চলছে নগরভবন কেন্দ্রিক এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি বিভিন্ন বিল সবকিছুতে সেগুলা চলমান রাখার জন্য তারা এখন আমাকে বাধা প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এই আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হচ্ছে উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, ‘‘আমরা আইনি বিষয়ে জোরালোভাবে জোর দিচ্ছি। অন্য কোন কিছু আমরা করছি না। আমরা কোন আন্দোলনের দলীয় ঘোষণাও দেই নাই, কিছুই করি নাই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা প্রতিবাদ করছে। এটা জনগণের অধিকার। তারা প্রতিবাদ করতেই পারে এবং করেই যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব মশিউর রহমান ও ইশরাকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তহেরুল ইসলাম ত্রৌহিত ও অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাধারণ মানুষের চলাচল ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকার বেশ কিছু সড়কে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার (১৮ মে) থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।
শনিবার (১৭ মে) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কচুক্ষেত সড়ক, বিজয় সরণি থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ জাহাংগীর গেট সংলগ্ন এলাকা, বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার সংলগ্ন এলাকা, সৈনিক ক্লাব মোড়, ভাষানটেক, মাটিকাটা, ইসিবি চত্বর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এরআগে রাজধানীতে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, বিচারপতি ভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, সুপ্রিমকোর্টের প্রধান ফটক, মাজার গেট, জামে মসজিদ গেট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ ও ২–এর প্রবেশ গেট, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের সামনে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ডিএমপি অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায় ও প্রতিবাদ কর্মসূচির নামে যখন-তখন সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আবারও অনুরোধ জানায় ডিএমপি।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা প্রদান করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব এবং সরকার এ বিষয়ে বদ্ধপরিকর। বিশেষ করে নারীদের সাইবার নিরাপত্তা প্রদান এবং সাইবার সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।
আজ শনিবার ঢাকার আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি ভবনে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ২০২৫’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এসময় উপদেষ্টা বলেন, ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ এ ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং, ইন্টারনেট যেন সর্বস্তরের জনগণ ব্যবহার করতে পারে সেজন্য মূল্য যুক্তিসঙ্গতভাবে কমিয়ে আনতে হবে। আইআইজি পর্যায়ে দাম কমিয়েছে সরকার যার সুফল গ্রাহকরা দুই-এক মাসের মধ্যে পাবেন বলে জানান তিনি। এছাড়াও শিক্ষা খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু কৃষি-স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার আরো বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন আসিফ মাহমুদ।
উপদেষ্টা আরো বলেন, বিশ্বে অন্যতম ভাইব্রেন্ট এবং ইনোভেটিভ খাত হচ্ছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, এই সেক্টরে আমাদের তরুণ এবং নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। আরএমজি সেক্টরে যেমন নারীরা বিশেষ অবদান রেখে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করেছে, সেভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেক্টরে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানোর বিষয়ে তাগিদ দেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।
জেলা থেকে থানা, ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত জনগণ তাদের মৌলিক সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি বা ঘুষ বাণিজ্যের শিকার না হয় এবং সকল কার্যক্রমকে জনবান্ধব করে গড়ে তোলার জন্য হিউম্যান টাচ উঠিয়ে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সকল কার্যক্রম নিয়ে আসবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে হ্যাকাথন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। টেলিকম সেবা প্রদানকারী সংস্থাকে ই-লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে ই-সেবার শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়াও রবি আজিয়াটা কর্তৃক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের ডিজিটাল ছড়ি বিতরণ করা হয়। পরে উপদেষ্টা বিটিআরসি ভবনের নিচতলায় টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাত নির্ভর ইনোভেশন কাজের প্রদর্শনীগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন।
‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষের সমতায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ২০২৫’ উদ্যাপন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আইটিইউ এর মহাসচিব এর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের ন্যাশনাল রেডিওলজিক্যাল সেফটি ডিভিশনের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন পাকিস্তানের আগের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পাঞ্জাবে অবস্থিত একটি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ধ্বংস হওয়ার পর এলাকাটিতে রেডিয়েশন সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। খবর সামা টিভির।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পর ঘাঁটির তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাঁচ কিলোমিটার এলাকার মানুষ যেন দরজা-জানালা বন্ধ রেখে ঘরের ভেতরে অবস্থান করে, এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল। এই রেডিওলজিক্যাল ঝুঁকি জননিরাপত্তা ও পরিবেশ দূষণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছিল।
জানা গেছে, ১০ মে পাকিস্তানের একটি হামলায় এ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা নিয়ে পাকিস্তান শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল। এবার ভারতের নিজস্ব রেডিওলজিক্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিল, যা ইসলামাবাদের অবস্থানকে আরও জোরাল করল। তবে এখনো ভারতের সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ এই প্রতিবেদন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বা রেডিয়েশন ছড়িয়ে পড়ার মাত্রা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি।
‘পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত’
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত। এ মন্তব্য এমন এক সময় করা হলো যখন দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষ থেকে মাত্রই শান্তিচুক্তিতে পৌঁছেছে।
গত সপ্তাহে ভারত পাকিস্তানে ‘জঙ্গি ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যা ছিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে একটি হামলার জবাব। উভয় দেশ পরস্পরের আকাশসীমায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠানোর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত একটি সমঝোতায় পৌঁছায় তারা।
কাশ্মীরের শ্রীনগরে সেনাদের উদ্দেশে ভাষণে রাজনাথ সিং বলেন, এ রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিদ্রোহী একটি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র নিরাপদ আছে কি? তিনি বলেন, আমি মনে করি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।
এ মন্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে বলেছে, ভারতের এ বক্তব্য তাদের ‘অনিরাপত্তা’ প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য, আইএইএ (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি) হচ্ছে জাতিসংঘের একটি সংস্থা, যা বিশ্বের পরমাণু কর্মসূচিগুলো তদারকি করে যেন সেগুলো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে ব্যবহৃত হয়।
ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়ে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। দীর্ঘদিনের বৈরিতার কারণে এই অঞ্চল বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পারমাণবিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় উপাদানের চুরি এবং অবৈধ লেনদেনের ঘটনা বারবার ঘটেছে। যা একটি সক্রিয় কালোবাজারের অস্তিত্বের ইঙ্গিত দেয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আইএইএর কাছে আহ্বান জানিয়েছে, ভারতের পারমাণবিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করা হোক। একই সঙ্গে, ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই উদ্যোগটি কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে বাগেরহাটের মোংলায় নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ ও স্লিপওয়ের উদ্বোধন শেষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। এর আগে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, কোস্টগার্ডের সদস্যদের প্রত্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় নানা প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনসমূহে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে হয়। এই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আজ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ও প্রযুক্তি নির্ভর বোট ওয়ার্কশপ উদ্বোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সংযোজনের মাধ্যমে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। উপদেষ্টা এসময় নবনির্মিত বোট ওয়ার্কশপ কোস্টগার্ডের পাশাপাশি মোংলা বন্দর, নৌবাহিনী, বিজিবি, নৌ পুলিশ এবং বনবিভাগের বোটসমূহের মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে একটি প্রযুক্তি নির্ভর 'মেরামতের হাব' হিসেবে অবদান রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কোস্ট গার্ডকে একটি যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নৌ বহরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইনশোর পেট্রোল ভেসেল, ফ্লোটিং ক্রেন এবং টাগ বোট সংযুক্ত করা হয়েছে। কোস্ট গার্ডের আধুনিকায়নে বুলেট প্রুফ হাই স্পিড বোট, সারভাইল্যান্স ড্রোন, দ্রুতগামী জাহাজ ও বোটের সংযুক্তির কার্যক্রম চলমান, যা পশ্চিম জোনেও অন্তর্ভুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, কোস্ট গার্ডকে প্রযুক্তিনির্ভর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক হেলিকপ্টারও সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সকল উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বভৌমত্ব এবং উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতে অধিকতর কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, অতি সম্প্রতি কোস্টগার্ড গোপনে দেশের অভ্যন্তরে পুশ-ইন করা ৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উদ্ধার করেছেন এবং ভবিষ্যতে পুশ-ইন রোধে সর্বদা তৎপর রয়েছেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সমুদ্রে অবস্থানরত থেকে জাহাজে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে জেলেদের বিনিময় কাজ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন, যা তাদের পেশাদারিতেরই প্রমাণ। তিনি এসময় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সদা জাগ্রত থেকে কার্যকরী ভূমিকা পালনের জন্য কোস্ট গার্ড সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, কোস্ট গার্ডকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা খুব তাড়াতাড়ি আরও ৫টি বড় ধরনের বোট কেনার প্রস্তাব করেছি, যা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। তাছাড়া প্রয়োজন সাপেক্ষে অদূর ভবিষ্যতে কোস্ট গার্ডের জন্য হেলিকপ্টার ক্রয় করা হবে।
সুন্দরবনে জলদস্যুদের নতুন করে উৎপাত প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, জলদস্যুর উৎপাত বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটতে দেওয়া হবে না। জলদস্যু বা বনদস্যু যে ধরনের দস্যুই থাকুক না কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে হকার মো.সাগর হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
শনিবার চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম।
এসময় তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ১২ মে রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন এই মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্ত্বরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন বিকেল ৪টায় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এই ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা বিউটি আক্তার। এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার ৪৯ নং এজাহারনামীয় আসামি মমতাজ বেগম।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে আজ শনিবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হওয়া প্রথম ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে টি-স্পোর্টস চ্যানেল।
এই ম্যাচে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে খেলতে নামবেন লিটন দাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিটন। গত বছরের ডিসেম্বরে ক্যারিবিয়ান মাটিতে অনুষ্ঠিত সিরিজটি টাইগারদের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ছিল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি লিটন। তারপরও অধিনায়ক হিসেবে নিজ দলের সামর্থ্য দেখিয়েছেন তিনি। ফলে লিটনের ওপর আস্থা রাখে টিম ম্যানেজমেন্ট। এতে এই ফরম্যাটে স্থায়ীভাবে অধিনায়কের গুরুদায়িত্ব পান লিটন।
এই সিরিজকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করবেন জানিয়ে লিটন বলেন, দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের পথে সংযুক্ত আরব আমিরাত সিরিজ একটি ধাপ হবে।
দেশ ছাড়ার আগে লিটন বলেছিলেন, ‘অবশ্যই আমরা এই সিরিজ (সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে) জিততে চাই। আসলে, আমাদের লক্ষ্য সবসময় একই। আমরা যেকোনো খেলায় জিততে চাই। আমরা একটি দল হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য চাই। আমরা একটি শক্তিশালী দল গড়ে তুলতে চাই। যারা যেকোনো কন্ডিশনে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জিততে পারে।’
শক্তি এবং ক্রিকেট সংস্কৃতির দিক থেকে দুই দলের মধ্যে যে পার্থক্য আছে, তা বিবেচনা করে এই সিরিজ সহজেই জেতা উচিত বাংলাদেশের।
এখন পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলে সবগুলোই জিতেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা।
নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খুব বেশি ভালো নয়। ১৮২ ম্যাচ খেলে ৭১টিতে জয় এবং ১০৭টিতে হেরেছে টাইগাররা।
আবর আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের দুই ম্যাচ জিততে পারলে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে বাংলাদেশের। কারণ ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে টাইগাররা।
ধারণা করা হচ্ছে, লিটনের অফ ফর্ম তার অধিনায়কত্বের উপর চাপ ফেলতে পারে। কিন্তু এটিকে খুব বেশি আমলে নিচ্ছেন না লিটন। তিনি জানান, অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ফর্মে ফিরতে ভূমিকা রাখবে।
লিটন বলেন, ‘কোনো চাপ নেই। অধিনায়ক না থাকার সময়েও কখনো কখনো আমার পারফরমেন্স খারাপ ছিল, এখন যে খারাপ হবে তা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা (অধিনায়কত্ব) বড় প্লাস পয়েন্ট হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি যারা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে, এমনকি যদি তারা কিছু দিনের জন্য ব্যর্থ হয়, ফলাফল আসবেই। আমি সেই জায়গায় আছি। আমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছি যাতে ফলাফল আমার পক্ষে আনতে পারি।’
দলের সতীর্থদের পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে খেলার আহ্বান জানান ৩০ বছর বয়সি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে যেতে হলে ক্রিকেটারদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা ভালো খেললেই দল এগিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ দল : লিটন দাস (অধিনায়ক), মাহেদি হাসান, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম।
সংযুক্ত আরব আমিরাত দল : মুহাম্মদ ওয়াসিম (অধিনায়ক), আলিশান শরাফু, আরিয়ানশ শর্মা, আসিফ খান, ধ্রুব পরাশার, ইথান ডি’সুজা, হায়দার আলী, মতিউল্লাহ খান, মুহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ, মুহাম্মদ জোহাইব, মুহাম্মদ জুহাইব, রাহুল চোপড়া, সাগির খান, সঞ্চিত শর্মা এবং সিমরঞ্জিত সিং।
এই ঢাকা এই কলকাতা- প্রায় এক দশক ধরে এভাবেই চলছে দুই বাংলার আলোকিত তারকা জয়া আহসানের ব্যস্ততা। তবে শুরু থেকেই ঢাকার চেয়ে টালিগঞ্জের সিনেমাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে আসছেন এই অভিনেত্রী ও প্রযোজক। কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করে যেমন দর্শক ও সুধী মহলের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করছেন, তেমনি প্রতি বছরেই একাধিকবার বগলদাবা করে নিচ্ছেন সেখানকার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। গত বছরের শেষের দিকে মুক্তি পায় জয়া আহসান অভিনীত বাংলাদেশি সিনেমা ‘নকশীকাঁথার জমিন’। প্রায় পাঁচ মাসের ব্যবধানে আবারও প্রেক্ষগৃহে হাজির হলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী। গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ‘জয়া আর শারমিন’ সিনেমাটি। করোনাকালীন সময়ে নির্মিত সিনেমাটি প্রায় ৫ বছর পর আলোর মুখ দেখল। এর মাধ্যমে চলতি বছরে প্রথম সিনেমা মুক্তি পেল জয়ার। সিনেমাটি প্রদর্শিত হচ্ছে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখা, মহাখালীর এসকেএস হল, ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার এবং কেরানীগঞ্জের লায়নস সিনেমা হলে।
মুক্তির প্রথম দিনে গতকাল সিনেমাটি দেখতে দর্শকের সঙ্গে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় হাজির হয়েছিলেন জয়া আহসান ও তার টিম। সিনেমা দেখা শেষে এক ফেসবুক পোস্টে জয়া আহসান লেখেন, ‘আজ সকাল থেকে জয়া আর শারমিনকে দর্শকরা যে এত মিষ্টি করে গ্রহণ করছেন এই ব্যাপারটা শিল্পী হিসেবে জয়া আর শারমিনের একজন প্রযোজক হিসেবে আমার জন্য খুব খুব খুব আনন্দের। এমন ছোট ছোট গল্পগুলোই যে সবাইকে টানছে, আমরা সবাই যা বলতে চেয়েছি তা শুনতে চাচ্ছে, সেটাই বড় প্রাপ্তি।’
এর আগে জয়া জানিয়েছিলেন, যারা সিনেমাটি দেখবেন করোনার সময়ে ফিরে যাবেন। জয়া আহসান আরও বলেন, তখন অনেকেই মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। অনেকেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। আমরা বেঁচে গেলেও অস্থির একটা সময় পার করে এসেছি। সে সময় শুটিং করা কতটা কঠিন ছিল?
পিপলু আর খান পরিচালিত সিনেমাটির গল্প গড়ে উঠেছে দুই নারীকে নিয়ে। জয়া একজন অভিনেত্রী; অন্যজন তার সহকারী। করোনা মহামারির কারণে বাইরের জগতের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা দুজন গৃহবন্দি জীবন কাটাতে বাধ্য হয় দীর্ঘ সময়। প্রথম দিকে তাদের সম্পর্কটা ছিল পেশাগত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পর্কের পরিধি বাড়তে থাকে। একসঙ্গে রান্না, গল্প করা, পুরোনো স্মৃতিচারণা-সবকিছুতেই তারা একে অপরের সঙ্গী হয়ে ওঠে। তারপরও এ ঘনিষ্ঠতার মধ্যে ছিল অদৃশ্য এক দেয়াল। জয়ার তারকাখ্যাতি এবং শারমিনের সাধারণ জীবনের ফারাক একটা সময় তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তোলে। সম্পর্কের উত্থান-পতনের গল্পই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়।
জয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান এবং শারমিন চরিত্রে মহসিনা আক্তার। সিনেমার সহপ্রযোজক হিসেবেও আছেন জয়া। দীর্ঘদিন মঞ্চে অভিনয় করা মহসিনা আক্তারকে এবারই প্রথম দেখা যাবে বড় পর্দায়। একটি বিশেষ চরিত্রে আছেন অভিনেত্রী তানজিম সাইয়ারা তটিনী। সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন নুসরাত ইসলাম মাটি ও পিপলু আর খান। প্রযোজনা করেছেন পিপলু আর খান ও জয়া আহসান।
সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে নির্মাতা পিপলু আর খান বলেন, ‘কোভিডের সময়ে এক বাড়িতে আটকে পড়া দুই নারী নিজেদের জন্য তৈরি করে নেয় ছোট্ট এক জগৎ। কিন্তু বাইরের ভীতিকর বাস্তবতায় তা ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে, ফাটল ধরতে শুরু করে তাদের ভেতরকার সম্পর্কেও। বন্ধুত্ব, ভয়, সাহস আর হারানোর অনুভূতির মধ্যে গড়ে ওঠা এক আন্তরিক আখ্যান জয়া আর শারমিন।’