আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ঘাটে যাত্রীর চাপ কম থাকায় ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখী মানুষ অনেকটা আরামদায়কভাবেই বাড়ি যাচ্ছেন। স্বল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে যাত্রী পৌঁছে দিতে লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ছেড়ে যাচ্ছে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি ছুটির প্রথম দিন সকাল থেকেই সদরঘাট নৌপথে ঢাকা ছেড়েছেন অসংখ্য ঘরমুখী মানুষ। সকাল থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট-বড় লঞ্চে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যেতে থাকে সদরঘাটের চিত্র। প্রচণ্ড গরমে দুপুরের দিকে কমে যায় যাত্রীর চাপ। তবে স্বস্তি নিয়ে ঈদযাত্রা করছেন অসংখ্য ঘরমুখী মানুষ। যারা শেষ সময়ে ছুটি পেয়েছেন মূলত এখন তারাই ঢাকা ছাড়ছেন।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে সদরঘাট লঞ্চটার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সদরঘাট থেকে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠিগামী লঞ্চগুলো ছেড়ে গেছে। যাত্রী চাপ থাকলে এদিন ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের কোনো অভিযোগ শোনা যায়নি, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় অনেকে টিকিট কাটেন। এ ছাড়া সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকা-বরিশাল-কাউখালী-তুষখালীগামী লঞ্চের সামনে যাত্রীর জন্য হ্যান্ড মাইক দিয়ে হাঁকডাক করে যাত্রীদের আকর্ষণ করছেন লঞ্চের সুপারভাইজার নাজিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, লঞ্চ বিকেলে ছাড়বে। কেবিন প্রায় অধিকাংশই বুকিং হয়ে গেছে। এখন ডেকের যাত্রী আসছে, টিকিট বিক্রি করছি। এখন যাত্রীদের দেখা না গেলেও বিকেলে ভিড় বাড়বে।
চাঁদপুর রুটের লঞ্চ এমভি আসা-যাওয়া-২-এর স্টাফ শফিকুল ইসলাম বলেন, রাতে চাঁদপুরের যাত্রী অনেক চাপ ছিল। ১২টার পর লঞ্চ আসছিল আর যাত্রী নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আজ সকালেও যাত্রীর চাপ ছিল, দুপুর হওয়ায় এখন সেই চাপ নেই। টুকটাক যাত্রী আসছেন। বিকেলে আবার চাপ বাড়বে।
ঘাটে কথা হয় ভোলা বোরহানউদ্দিনের যাত্রী মো. রাজ্জাকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজ ছুটি পেয়েছি। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে বাড়ি যাচ্ছি। ভেবেছিলাম লঞ্চে ভিড় হবে। তবে সদরঘাটে সেই ভিড় নেই। ভালোই লাগছে। আশা করি, স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারব।
ঢাকা-খেপুপাড়া রুটে চলাচলকারী লঞ্চ এমভি জাহিদ-৪-এর ডেক প্রায় যাত্রী পূর্ণ ছিল। এ লঞ্চের যাত্রী শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমি যাব মুন্সীগঞ্জ। ভোরেই চলে আসছি। গরমে পরে অতিষ্ঠ হয়ে যাব। এ জন্যই আগেভাগে বাড়ি ফেরা।
বরগুনাগামী এমভি পূবালী-১ লঞ্চে পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবী রাতুল হাসান। দৈনিক বাংলাকে তিনি বলেন, সদরঘাটে যাত্রী না থাকলেও ঈদের সময় চাপ থাকবে। সেই চিন্তায় সকালে বেরিয়ে পড়েছি। রাতের যাত্রা আরামদায়ক হলেও রমজানে সবার সমস্যা হয়ে যায়। এখানে কেবিন পেয়েছি, ভাড়াও ঠিক আছে। বেশ আরামেই বাড়ি পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি।
এ বছর ঈদে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কায় দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে গতবারের চেয়ে ২২টি লঞ্চ কম চলাচল করবে। তবে ইতিমধ্যে সদরঘাট টার্মিনালে এসে অগ্রিম টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন নৌপথের অনেক যাত্রী।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। ঈদযাত্রায় এবার কোনো ভাড়া বাড়ানো হবে না। আর যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ লঞ্চ চালু হবে। এসব লঞ্চের কেবিন বুকিং ও ডেকের টিকিট ঘাটে এসেই নিতে পারবেন।
বিআইডব্লিউটিএর সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন বলেন, আগে সদরঘাট থেকে ২০০টি লঞ্চ ছেড়ে যেত, এখন চলাচল করে মাত্র ৪৬টি লঞ্চ। এবার ভাড়া বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই, এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চাঁদপুরসহ স্বল্প দূরত্বের জেলাগুলোতে ৪০টিরও অধিক লঞ্চ ঘাট ছেড়ে গেছে।
এদিকে ঈদযাত্রায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাটে নৌ-পুলিশের টহল দেখা যায়। সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত টহল দিচ্ছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখছি। যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত।’
বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে বুয়েট সংলগ্ন পলাশী গোলচত্বরে আগ্রাসন বিরোধী আট স্তম্ভ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা যেন দলীয় আচরণ বা পক্ষপাতমূলক মনোভাব না দেখাতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, ‘দলীয় বা দলদাসের মতো আচরণ কেউ করতে পারবেন না, সেটা আমরা কঠোরভাবে নিশ্চিত করব। কেউ যদি মনের মধ্যে রাজনৈতিক অভিলাষও রাখেন, সেটার প্রতিফলন কাজের মধ্যে ঘটতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে অ্যাকশন নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আগে এমন একটা সংস্কৃতি ছিল যে কর্মকর্তাদের ওপর চাপ থাকত-একটা নির্দিষ্ট পক্ষে কাজ করতে হবে। এখন সেই পরিবেশ আর থাকবে না। আগে মেসেজ ছিল, আমার পক্ষে কাজ না করলে তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখন মেসেজ হবে-তুমি যদি কোনো পক্ষের হয়ে কাজ কর, তাহলে তোমার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন মেসেজটা একদম স্পষ্ট। আমরা এ কথা একাধিকবার বলেছি এবং বারবার বলবো।’
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা। এজন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ওপর কোনো রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক প্রভাব কাজ করবে না, এটা নিশ্চিত করা হবে। আগে অনেক সময় কর্মকর্তাদের রাতে গিয়ে প্রভাবিত করা হতো, ভয় দেখানো হতো, কিংবা নানা উপায়ে প্ররোচিত করে ভোট আদায় করা হতো। কিন্তু এখন সেই ভয় আর থাকবে না। আমরা যত রকম প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব, সব নেব, যাতে কেউ দলীয় আচরণ করতে না পারে।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হোক। দেশের মানুষ দেখুক, এবার নির্বাচন সত্যিই স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যই হলো, আয়নার মতো স্বচ্ছ একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া।’
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চারজন নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ১০ জন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, যারা সবাই সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের সামনে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আসছে। একদিকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে, অন্যদিকে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ধরনের সরকারের অধীনে আমাদের নির্বাচনে যেতে হচ্ছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে এই নির্বাচনকে আমি জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে দেখছি। দেশের জন্য কিছু করতে চাই। আমাদের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের একটাই লক্ষ্য-একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া। তবে এটি নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সর্বস্তরের জনগণ, গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, নাগরিক সমাজ-সবাইকে সঙ্গে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা আজ উপস্থিত আছেন, সবাই অভিজ্ঞ নির্বাচন কর্মকর্তা ছিলেন। আপনারা জানেন কোথায় কোথায় গ্যাপ থেকে যায়, কোথায় দিয়ে কারচুপি বা ম্যানিপুলেশন হতে পারে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনারা আমাদের পরামর্শ দিন, যেন আমরা আগেভাগে ব্যবস্থা নিতে পারি। নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়, সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
আজকের এই সংলাপে আলোচনার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন বিকেলে নারী নেত্রীদের সঙ্গে আরেক দফা মতবিনিময় সভা করেছে। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সোমবার দেশের প্রধান প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি।
ইসি জানিয়েছে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষক, নারী নেত্রী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দিন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা সংলাপে অংশ নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান এবং নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার পরামর্শ দেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট নয়, এটি একটি জাতীয় দায়িত্ব। আমরা এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে চাই যা আগামী দিনের নির্বাচনগুলোর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই-দেশবাসীর আস্থা ফিরে আনা, একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করা।’ সূত্র: বাসস
ফেনীর সোনাগাজীতে ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীরা পুলিশের একটি শটগান ও ওয়াকিটকি কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করে লুণ্ঠিত অস্ত্র ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম আহাম্মদপুর গ্রামের মৃত হোসেন মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে সোনাগাজী থানার সহকারী উপপরিদর্শক সাইদুর রহমান ও মোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আহাম্মদপুর গ্রামের আবুল হাশেমের দুই ছেলে জাহেদুল ইসলাম রিপন ও রফিকুল ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করতে তাদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেন। একপর্যায়ে আসামিরা পুলিশের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি ও একটি শটগান কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী সার্কেল) ও সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালান। পরে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে আসামি জাহেদুল ইসলাম রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে পুলিশের লুণ্ঠিত শটগান ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। গ্রেপ্তার রিপনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে ৯টি মামলা রয়েছে। পলাতক আসামি আরিফ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মঙ্গলবার উভয়ের এ সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার নামে ৫০০ টাকার ন্যাক্কারজনক ও দুরভিসন্ধিমুলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবীতে মেহেরপুরের গাংনীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে।
মেহেরপুরকুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টার সময় এই মানববন্ধন করে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক পরিষদ ফেডারেশন গাংনী উপজেলা শাখা।
বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক পরিষদ ফেডারেশন গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি ও সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সভাপতি আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদের গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি মোমিনুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খান, পৌর শাখার সভাপতি আজিজুল হক, বামন্দী নিশিপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদুল আলম স্বপন, গাংনী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ভাইসপ্রিন্সিপ্যাল শফিকুল ইসলাম, হোগলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি ও বেসকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সমান লেখাপড়া করালেও সরকারি শিক্ষকরা নানা সুবিধা ভোগ করে আসছে। তাদের সাথে আমাদের সকল কিছুর বিরাট বৈষম্য রয়েছে। সরকার আমাদের বাড়িভাড়া বাবদ ৫০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে আমাদের সাথে তামাশা করেছে। অবিলম্বে এটি বাতিল করে নুন্যতম ২০০০০ হাজার টাকা বরাদ্দ না দিলে শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে মাঠে নামবো।
এবারের নির্বাচন জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এই শেষ সুযোগ। জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ধারাবাহিক সংলাপে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। সংলাপে অন্য চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, দেশের জন্য কিছু করতে এবারের নির্বাচন জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি। এবার জাতিকে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এজন্য সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার বিকল্প নেই।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকে আমরা শুনব যারা নির্বাচন নিয়ে সরাসরি কাজ করেছেন তাদের বক্তব্য। আপনারা জানেন নির্বাচনে কোথায় কোথায় কী কী সমস্যা হয়, কোথায় কোথায় কী কী গ্যাপ রয়েছে। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো বিবেচনা করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা এবার প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া, সরকারি চাকুরিজীবী ও হাজতিদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য নির্বাচনের কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোট দেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়। নারী, পুরুষ ভোটারের পার্থক্য ৩০ লাখ ছিল। সেটা কমিয়ে এনেছি। পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করেছি। একটা মডেল বের করেছি। পারবো কিনা জানি না, তবে আমরা চেষ্টা করব। আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট ও একটা হাইব্রিড পদ্ধতি বের করেছি। এতে প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবি, কয়েদিরা ভোট দিতে পারবেন।
সিইসি বলেন, এবিউজ অব এআই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্রান্তিলগ্নে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। আমার বয়স ৭৩ বছর। আমার আর চাওয়ার কিছু নেই। জীবনে এটা শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি। একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়াই লক্ষ্য। সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা লাগবে। এজন্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— ইসির সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ জকরিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব খন্দকার মিজানুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব মো. নূরুজ্জামান তালুকদার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক উপসচিব মিহির সরওয়ার মোর্শেদ, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (ঢাকা) শাহ আলম, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ফেমার প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক উপসচিব মিছবাহ উদ্দিন, সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মীর মো. শাহজাহান।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারকাজের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার সকালে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়।
এর আগে, এনডিএম-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ গত বছরের (২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে দায়ী।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করছি। এটি পুরোদমে শুরু হলে বিষয়টি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে, তা আমরা তখন জানাতে পারব।
বিরল প্রজাতির পাখি শামুকখোল। গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুকখোল পাখি। নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে বছরের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো এখানে বসবাস করে। সে জন্য গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম হিসেবে। সকালে এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাখিগুলোকে দেখতে আসেন। বলছি, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের কানাইপুকুর গ্রামের কথা। আর এখানে পাখি দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর বট, নিম, তেঁতুল, আম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। এসব গাছে একটা সময় রাতচরা পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর সাদা বকের পর ধীরে ধীরে সেখানে রাজত্ব চলে আসে শামুকখোল পাখির দখলে। প্রায় দুই দশক ধরে শামুকখোল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে এই স্থানটি।
এই শামুকখোল পাখিগুলো গাছের মগডালে নিজেদের আপন খেয়ালে বাসা বেঁধে আসছে। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে বক, কানা বক, শঙ্খ চোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে এর মধ্যে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই নিজের সন্তানের মতো লালন করেন তারা পাখিদের। অন্যদিকে গাছে গাছে পাখিরা ডিম থেকে ফুটাচ্ছে বাচ্চাও।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আসাদুজ্জামান রাশেদ। তিনি বলেন, একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।
কালাই উপজেলা থেকে দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আবুল বাশার লাইফ। তিনি বলেন, শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।
কানাইপুকুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তামিম আহম্মেদ বলেন, পাখিগুলো আমাদের গ্রামকে মুখরিত করে রাখে। কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করি। এপ্রিল মাসের দিকে পাখিগুলো এখানে এসে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর জুন মাসের দিকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়াল শিখতে শিখতে শীত চলে আসে। তখন তারা এখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের অনেক খারাপ লাগে।
এই পাখি কলোনির পৃষ্ঠপোষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই অতিথি পাখিগুলো এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে আসছে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে এই পাখি কলোনি দেখাশোনা করি। এই পাখিগুলো সাধারণত সব জায়গায় বাসা বাঁধে না। এরা আমাদের এখানে বাসা বেঁধেছে এটা আমাদেরও একটা গর্বের বিষয়। এজন্য আমার ভালো লাগা কাজ করে।
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, অতিথি পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। পাখিগুলো যদি অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসা বা কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিনা বেগম বলেন, শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা চলে যায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের দিকে। এরা সাধারণত কলোনিয়াল ভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে এরা অনেক দিন থেকে যায়। সরকারের সহযোগিতা পেলে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দিনব্যাপী এ সংলাপ দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন।
ইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য সংলাপগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এতে চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সকালের অধিবেশনে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
বিকেলের অধিবেশনে নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি। দুটি অধিবেশনে মিলিয়ে মোট ৪০ জন অংশগ্রহণকারী তাদের মতামত ও পরামর্শ দেবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ হয়। গত ৬ অক্টোবর গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেছে ইসি।
আগামী দিনে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গেও বসবে কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সংলাপ থেকে পাওয়া গঠনমূলক পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন লিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
এতে আরও বলা হয়েছে, উপধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।
সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার পর সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস ঢাকা অভিমুখে রওনা হয়েছে।
এর আগে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজারে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উদ্ধারকারী কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল হাবিব বলেন, আজ সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজার মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড তেলের ডিপোর পশ্চিম পাশে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হয়। খবর পেয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে পুলিশসহ মোগলাবাজার থানা পুলিশের সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। তবে ট্রেন যোগাযোগ বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সিলেট থেকে কালনী এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই-নিরস্ত্র) পদে বড় পরিসরে নিয়োগে সম্মতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব কাজী লুতফুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাঠামোভুক্ত বিভিন্ন ইউনিটের বিপরীতে ৪ হাজার এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) পদে রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজনে বর্ণিত শর্তে নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।
তবে, চিঠিতে বেশকিছু শর্ত দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো— অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ হতে যাচাইকৃত বেতনস্কেল অনুসরণ করতে হবে; প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে; এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) ৪ হাজার পদ সৃজনের প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে প্রেরণের পূর্বে ৪ হাজার কনস্টেবল পদ বিলুপ্তিকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে, পদসমূহ সৃজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো মোট ৪ হাজার এএসআই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২ হাজার পদে সরাসরি নিয়োগ এবং বাকি ২ হাজার পদে কনস্টেবলদের পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে।
দেশের এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা হলো ২১৫। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭৮২ জন নতুন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ৫০ হাজার ৬৮৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গেল সেপ্টেম্বরে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সংক্রমণ হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে একাধিক জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞ ওই মাসে বলেছিলেন, অক্টোবর বা নভেম্বরে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে। এ মাসের শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। গত রোববার দেশে একদিনে ডেঙ্গুতে নয়জনের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বরও ২৪ ঘণ্টায় নয়জন মারা গিয়েছিলেন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে যে ৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তার মধ্যে দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা হাসপাতালে। বাকি একজনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ৪৯৫ জন পুরুষ এবং ২৮৭ জন নারী।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১২ জন ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার দুই সিটির হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার দুই সিটির বাইরে বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এ বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৪। এর মধ্যে বরগুনার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন।
এদিকে থেমে থেমে রোদ ও বৃষ্টির এমন আবহাওয়া এডিস মশার বংশ বিস্তারে উপযুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন। পাশাপাশি পূজার ছুটিতে বাসাবাড়ি, অফিসে বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে চলতি অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কায় দেখা যাচ্ছে অক্টোবরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দুটোর সংখ্যাই বাড়ছে।
দেশে ২০০০ সালে যখন নতুন করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয়, তখন তা ছিল মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু দিন দিন এটা ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত বছর থেকেই ডেঙ্গু ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৯ জন। আর ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪০।