ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) অঞ্চলে পশ্চিমা দেশগুলো যে নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তুলেছে, তাতে বাংলাদেশ আরও বেশি ভূমিকা রাখতে চায়। এ বিষয়ে ঢাকা ও টোকিও একমত হয়েছে। জাপান সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বাগতিক দেশের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার বৈঠকের পর ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
টোকিওতে ওই শীর্ষ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত স্তরে উন্নীত করতে সম্মত হয় বাংলাদেশ ও জাপান। পারস্পরিক সংযোগকেন্দ্রিক উন্নয়নের বিষয়টি মাথায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জাপানি প্রধানমন্ত্রী কিশিদার আমন্ত্রণে টোকিওতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনার চলতি সফরে দুই দেশের মধ্যে আটটি চুক্তি ও সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। শীর্ষ বৈঠক শেষে প্রকাশিত ৯ পৃষ্ঠার যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক ও অন্যান্য অঞ্চলে ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোর অধীনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে মতৈক্যের বিষয়টি প্রথমেই তুলে ধরা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশের গুরুত্বকে স্বীকার করে নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবকাঠামোর উন্নতি হলে এ অঞ্চলে সংযোগ (কানেক্টিভিটি) আরও বাড়বে। আর তা বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের উন্নয়নে সহায়ক হবে।
এ ছাড়া প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা, বেসরকারি শিল্প খাতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন, কৃষি খাতে সহযোগিতা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা (সাইবার সিকিউরিটি) সহযোগিতার বিষয়গুলোও বিবৃতিতে উঠে এসেছে।
আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোর মধ্যে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অবাধ ও উন্মুক্ত থাকার গুরুত্ব এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের শীর্ষ নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আর চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমঝোতার আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা এবং ইউক্রেনের জনসাধারণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা বলেছে ঢাকা ও টোকিও।
ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে মতৈক্য
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর শুরুর এক দিন আগে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বাংলাদেশ। আর তা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে জাপানের কৌশলগত অবস্থানের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে মিলে যায়। ২০১৮ সালে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লেখা এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। পরে গত বছর প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরের সময় দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি ফের উল্লেখ করা হয়।
এবার টোকিওতে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন মেনে জাহাজ বা উড়োজাহাজ চালনায় সবার অধিকার আছে।
কৌশলগত সম্পর্কে পরিবর্তন
ভারত ও চীনের পর জাপানের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত স্তরে উন্নীত করল বাংলাদেশ। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে একটি বড় ঘটনা এবং এটির আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। জাপানের সঙ্গে এই কৌশলগত সম্পর্ক বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ অর্জনে সহায়ক হবে এবং জাপানের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আরও বেশি যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হবে।
প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা
জাপান গত বছর তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল ঘোষণা করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম তারা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বহুগুণ বাড়িয়েছে। জাপানের গৃহীত কৌশল অনুযায়ী, টোকিও এ অঞ্চলের সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করবে। আর বাংলাদেশের বর্ধিষ্ণু অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দায়িত্বশীল আচরণ দেখে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে টোকিও আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তাই জাপান এখন দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতার আলোচনায় গুরুত্ব দিতে চায়। এটিই সমঝোতা স্মারকের লক্ষ্য। এ ছাড়া দুই দেশের কর্মকর্তাদের সফর, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, সেমিনার আয়োজন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে অন্যান্য যেকোনো বিষয় নিয়ে সহযোগিতার বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। সেই অনুযায়ী দুই দেশের দূতাবাসে প্রতিরক্ষা উইং খোলা হবে।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে আধুনিকায়নের উদ্যোগ সম্পর্কে জাপানকে অবহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা সামগ্রী ও প্রযুক্তি হস্তান্তর বিষয়ে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার বিষয়টিকেও স্বাগত জানিয়েছে উভয় পক্ষ।
মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ
বিশ্বের অনেক দেশের মতো জাপানও আনুষ্ঠানিকভাবে এবং প্রকাশ্যে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটির উল্লেখ থেকে বিরত রয়েছে। ঢাকা-টোকিও যৌথ বিবৃতিতে মিয়ানমার পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বক্তব্য থাকলেও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার না করে ‘মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লোকজন’ বলা হয়েছে। বিবৃতিতে মিয়ানমার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে উল্লেখ করা হয় যে, আসিয়ানের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের প্রতি দুই দেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারে গ্রেপ্তার লোকজনের মুক্তি ও গণতন্ত্রের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হলে গোটা অঞ্চল ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াই একমাত্র সমাধান হতে পারে। এ বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন। দুই প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এই সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হিসেবে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি ‘টেকসই, নিরাপদ, স্বতঃস্ফূর্ত ও মর্যাদাপূর্ণ’ প্রত্যাবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
পারস্পরিক সংযোগ ও সহযোগিতা
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের সময়ে জাপানের ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন ‘বিগ-বি ইনিশিয়েটিভে’ যুক্ত হয় বাংলাদেশ। তখন থেকে মাতারবাড়ীকে আঞ্চলিক ‘সংযোগকেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচনা নিয়ে চট্টগ্রামের দক্ষিণ অংশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে জাপান সাহায্য করছে। জ্বালানি ও পণ্য পরিবহনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি মাতারবাড়ীতে সড়ক, রেল ও নৌপথে সংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাপান বড় পরিকল্পনা নিয়েছে। এ জন্য ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের ‘মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ’ নিয়ে কাজ করছে দুই দেশের সরকার। এটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে।
শান্তি সহযোগিতা
জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি সেনা সদস্য পাঠানো দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নেতৃত্ব এবং সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি ২০২২ সালের জন্য জাতিসংঘ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ‘পিস বিল্ডিং সেন্টার’-এর সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। দুই প্রধানমন্ত্রী শান্তি-সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে একমত হয়েছেন। উভয় নেতাই পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘হিরোশিমা অ্যাকশন প্ল্যানের’ সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রধানমন্ত্রী কিশিদার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্ল্যানারি অধিবেশনে গৃহীত ‘স্টেপস টু বিল্ডিং আ কমন রোডম্যাপ টুয়ার্ডস এ ওয়ার্ল্ড ইউদআউট নিউক্লিয়ার উইপনস্’ শীর্ষক প্রস্তাব উত্থাপনে জাপানের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বাংলাদেশের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় দুই প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ও তাদের অর্থায়ন ধ্বংস করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া তারা সন্ত্রাসীদের আন্তঃসীমান্ত চলাচল বন্ধের ওপরও জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী পুনরুল্লেখ করেন যে, তার সরকার সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন, সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে। তার সরকার সাধারণ মানুষের কার্যকরী অংশগ্রহণের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের নেটওয়ার্কগুলো থামাতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বাস্তবায়িত প্রকল্প ও জাপানি ব্যবসায় কর্মরত জাপানিসহ বাংলাদেশে অবস্থানরত সব জাপানি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া তিনি সহিংস সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলারও আহ্বান জানান।
দুই প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তাদের পারস্পারিক সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আইকনিক মসজিদ নির্মাণে ২৪৪ কোটি টাকা দেবে সৌদি সরকার। আটটি আইকনিক মসজিদ নির্মাণে সৌদি সরকারের রাজকীয় অনুদান থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে।
আজ সচিবালয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ এ কথা জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, সৌদি অর্থায়নে আইকনিক মসজিদ নির্মাণের কাজ যথা দ্রুত সম্ভব শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগ থেকে এ মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে জমির প্রস্তাব পাওয়া গেছে। বাকিগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ও বন্ধুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এদেশের প্রায় ৩২ লাখ লোক সৌদি প্রবাসী। তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছেন। ঠিক একইভাবে সৌদি সরকারের ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নে সেদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
আগামীতে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বছর অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীল হজ ব্যবস্থাপনার জন্য ধর্ম উপদেষ্টা সৌদি সরকার ও সেদেশের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।
একইসঙ্গে তিনি আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কতিপয় বিষয়ে সৌদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় ওয়াশরুমের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং মিনার তাঁবুতে বিছানার সাইজ বাড়ানোর বিষয়ে উপদেষ্টা সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত এ সকল প্রস্তাবের বিষয়ে তাঁর দেশের সরকার এবং হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার আশ্বাস দেন।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ উন্নয়নে সৌদি সরকারের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আগামীতে আরো মজবুত ও সুসংহত করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়া হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে আরএফআইডি ট্যাগ সংযোজন, ঢাকায় অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
এসময় ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক ও হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) এর সদস্যপদ পেতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে মালয়েশিয়ার প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মালয়েশিয়ার পিপলস জাস্টিস পার্টির সহ-সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কন্যা নুরুল ইজ্জাহ আনোয়ার।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আসিয়ানের অংশ হতে চাই এবং আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ ২০২০ সালে আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপ অংশীদার হওয়ার জন্য আবেদন করে।
প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আসিয়ানের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা মালয়েশিয়া বাংলাদেশের আবেদন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে, যাতে বাংলাদেশ প্রথমে খাতভিত্তিক সংলাপের অংশীদার এবং পরবর্তীতে এই আঞ্চলিক সংস্থার পূর্ণ সদস্যপদ পেতে পারে।’
সাক্ষাৎকালে নুরুল ইজ্জাহ ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সম্প্রতি সংঘটিত বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের জন্য একটি দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি।’
প্রধান উপদেষ্টা নুরুল ইজ্জাহকে মালয়েশিয়ার পিপলস জাস্টিস পার্টির সহ-সভাপতি হওয়ায় অভিনন্দন জানান।
প্রধান উপদেষ্টা নুরুল ইজ্জাহর সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ছাত্ররা বুকে গুলি খেয়ে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছে। এটি তরুণদের নেতৃত্বাধীন একটি আন্দোলন ছিল, কিন্তু সব শ্রেণির মানুষ এতে অংশ নিয়েছে। ছাত্ররা দেয়াল ও রাস্তা রাঙিয়ে তুলেছে জুলাই বিদ্রোহের চেতনায়।’
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এশিয়া দ্রুত বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৭ বছরের নিচে। এখানে শিল্প গড়ে তুলুন এবং বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করুন। এতে আমাদের দুই দেশের অর্থনীতির উপকার হবে।’
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির সভাপতি রশিদুল ইসলাম রিফাত।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর শাহবাগে চলমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ডাকা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিফাত বলেন, অর্গানোগ্রামের জরুরি মিটিংয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারাদেশের সব কমিটি আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হলো। সংগঠনটির আগামী কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, তা পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে জানানো হবে।
গত ২৫ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত এ কমিটিতে রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশীদ) সভাপতি ও মো. ইনামুল হাসান সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মুঈনুল ইসলাম ও মুখপাত্র পদে সিনথিয়া জাহীন আয়েশা নির্বাচিত হন।
ওইদিন রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করা হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, বাংলাদেশে আর কখনো যেন ভয় ও নিপীড়নের শাসন ফিরে না আসে। একটি দমন-পীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থার পতনের পর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জুলাই বিপ্লব নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের দমনমূলক শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করা হয়। গুম ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। হাজারো রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, ছাত্রনেতা ও সাংবাদিককে অপহরণ, নির্যাতন বা স্থায়ীভাবে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বহু পরিবার আজও জানে না, তাদের সন্তান জীবিত নাকি অচেনা কোন কবরে শায়িত আছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, নির্বাচন, গণমাধ্যম ও ছাত্র আন্দোলনের কণ্ঠ রোধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা অপকৌশল ব্যবহৃত হয়েছিল। কারাগারগুলো অপরাধীদের নয়, দেশপ্রেমিকদের দিয়ে ভরে গিয়েছিল। ফেসবুক পোস্টই ডেকে আনত মাঝরাতের পুলিশি অভিযান। শুধু মত প্রকাশের দায়ে একটি ভালো বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা ছাত্রকে পিটিয়ে আহত কিংবা শহীদ করা হয়েছে।
সম্মেলনে মূলবক্তা ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কূটনীতিক জন এফ. ড্যানিলোভিচ।
সম্মেলনের শুরুতে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের বাবা ও মা তাদের বক্তৃতায় দ্রুত জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানান। ছাত্রনেতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এ সম্মেলনে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, কূটনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীরা বক্তৃতা দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি), ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (সিপিএসআর), ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি, সোচ্চার এবং ইনসাফ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সম্মেলনের আহ্বায়ক হলেন অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ।
বহুল কাঙ্ক্ষিত জুলাই সনদের প্রাথমিক খসড়া তৈরি হয়েছে।
এ কথা জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৯ তম বৈঠকের শুরুতে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশন ইতোমধ্যে একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে এবং বিবেচনার জন্য আগামীকালের মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের কাছে একটি করে খসড়া প্রেরণ করা হবে। সেটি নিয়ে আপনারা নিজেদের রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করার মাধ্যমে আমাদেরকে মতামত জানালে সেগুলো এতে সন্নিবেশিত করা হবে।’
এ সময় তিনি জানান যে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোন মৌলিক আপত্তির বিষয় উত্থাপিত না হলে সেটি নিয়ে বৈঠকে আর আলোচনা করা হবে না।
তিনি জানান, সকলের মতামত পাওয়ার পর সেগুলোকে সন্নিবেশিত করে চূড়ান্ত জুলাই সনদের পটভূমি, প্রাথমিক বক্তব্য সমূহ, অঙ্গীকার এবং প্রক্রিয়ার বিষয় বস্তুগুলো অন্তর্ভুক্ত করে তা রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে তুলে ধরা হবে।
সময়ের স্বল্পতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি সকলকে বলেন, আমাদের আলোচনা যে কোনোভাবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। আলোচনা শেষ করার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শেষ করার পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে চাই। এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, ১০টি বিষয়ে আমরা একধরনের ঐকমত্যে পৌঁছেছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নোট অফ ডিসেন্ট আছে এবং সাতটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিন্তু তা অসমাপ্ত রয়েছে। এবং তিনটি বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন আলোচনা হয়নি।
আজকের আলোচ্য সূচীতে পূর্বের আলোচিত দুটি অসমাপ্ত বিষয় ও পাশাপাশি একটি নতুন বিষয়কে রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাবে আলোচনা করতে চাই, যেন প্রক্রিয়াটাকে নিয়ে সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হতে পারি।
উল্লেখ্য, আজকের বৈঠকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণের প্রস্তাব, পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করছেন।
এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত রয়েছেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদ দ্রুত প্রণয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সকল বিষয়ে ঐকমত্য গড়তে আগামী কিছুদিন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলমান থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অর্থায়নে এবং গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (জিটিআই) এর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ” শীর্ষক ৩২তম কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিটিআই শ্রেণিকক্ষে এ কোর্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি.এম. মুজিবর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।
জিটিআই এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক আইরিন আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিনিয়র কোর্স কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. বেনতুল মাওয়া।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম এবং বাউরেস পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: হাম্মাদুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলাম, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: রোস্তম আলী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. দীন ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোছা: জান্নাতুন নাহার মুক্তা, চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা: মো: সাইদুর রহমান, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো: আসাদুল হক, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম এবং চিফ মেডিক্যাল অফিসার (প্রতিষেধক) ডা: মো: শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. জি.এম. মুজিবুর রহমান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকবৃন্দকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে এই প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিক্ষকতা শুধু ক্লাসরুমেই নয় বরং এটি আরও ব্যাপ্তিময়। এই প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণকারীদের জীবনে খুবই সহায়ক হবে বিধায় নিয়মানুবর্তিতা ও মনোযোগের সঙ্গে এটি সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন।
তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “১৯৭১ ও ২০২৪ দুটোই আমাদের গর্বের জায়গা। ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করতে না পারলে জাতি হিসেবে আমরা এগুতে পারব না।” এজন্য জিটিআই কর্তৃপক্ষকে প্রশিক্ষণের মডিউলে ২০২৪ সালের গণচেতনা সংযোজনের পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, ২৭ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ দিনব্যাপী চলা এ প্রশিক্ষণে ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট ২৫ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করছেন।
ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। রোববার সকালে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।
‘হাই-লেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সলিউশন’ শীর্ষক সম্মেলন চলবে ২৮ ও ২৯ জুলাই। এটি মন্ত্রিপর্যায়ের অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্রান্স এবং সৌদি আরব যৌথভাবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ/আরইএস/৭৯/৮১ রেজ্যুলেশনের (ডিসেম্বর ২০২৪) আলোকে এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।
সম্মেলনের পাশপাশি তৌহিদ হোসেন বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী এবং জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, উপদেষ্টা তৌহিদ আগামী ১ আগস্ট ভোরে দেশে ফিরবেন।
শনিবার মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসস’কে বলেন, উপদেষ্টা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করবেন।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ, নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবনার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করবে।
পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তির লক্ষ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সময়সীমা নির্ধারিত রোডম্যাপ
প্রণয়নের আহ্বান জানাবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
জাতিসংঘের এই সম্মেলনকে গাজা শাসনব্যবস্থা, বাধাহীন মানবিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে বৈশ্বিক ঐকমত্য তৈরির গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সবসময় আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনের পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে আসছে। ১৯৮৮ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর প্রথম দিকের দেশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশ।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় সূচকের পতন হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস--৩০ কমেছে ১৪ পয়েন্ট।
ঢাকার বাজারে ১৪৭ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭১টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ৪৭০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, ঢাকার মতোই সূচকের পতন হয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক কমেছে ২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৪টি কোম্পানির মধ্যে ৬৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৮টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের প্রথমভাগে সিএসইতে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
“পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে মেহেরপুরে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলা। জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সোমবার (২৭ জুলাই) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে মেলার সূচনা হয়।
র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ফিতা কেটে বৃক্ষমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। পরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এক আলোচনা সভা।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোঃ তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল করিম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ তৌহিদুল কবীর, জেলা শিক্ষা অফিসার হজরত আলী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এ জে এম সিরাজুম মুনীর।
বৃক্ষমেলায় ফলজ, বনজ ও ঔষধি প্রজাতির বিভিন্ন গাছের চারা নিয়ে ১৭টি স্টল অংশগ্রহণ করে। মেলাস্থলে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী নির্ধারিত ফরম পূরণ করে যোগ্যতা সম্পন্ন বেসরকারি সংস্থাগুলোকে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে ইসির সিনিয়র সচিব বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।
আজ রোববার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা-২০২৫ অনুসারে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনে আগ্রহী যোগ্যতাসম্পন্ন বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। নিবন্ধিত সংস্থাগুলো পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবে।
আগ্রহী সংস্থাগুলোকে নির্ধারিত ফরম (ইও-১) পূরণ করে ১০ আগস্ট বিকেল ৫টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদন ফরম পাওয়া যাবে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখা (কক্ষ নং-১০৫) এবং ইসির ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd)|
পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আবেদনের জন্য যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে তা হলো - আবেদনকারী সংস্থাকে অবশ্যই বাংলাদেশের কোনো আইনের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে এবং গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। সংস্থার গঠনতন্ত্রে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করার অঙ্গীকার থাকতে হবে।
নিবন্ধনের জন্য সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য যদি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকেন বা নিবন্ধন পেতে আবেদন করা সময়ের মধ্যে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী হন, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধনের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। এ বিষয়ে আবেদনকারী সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় মর্মে আবেদনের সাথে লিখিত হলফনামা জমা দিতে হবে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পেতে আবেদনকারী কোনো সংস্থার নাম যদি জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে হুবহু বা কাছাকাছি মিল থাকে এবং তা যদি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে তবে সে সংস্থাকে নিবন্ধনের অনুপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক কোনো সংস্থার নামে মিল থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার লিখিত অনাপত্তিপত্র আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে সংস্থার গঠনতন্ত্র ও বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড বা পরিচালনা পর্ষদ বা কার্যনির্বাহী কমিটির তালিকা জমা দিতে হবে যা নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত। নিবন্ধন সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি (প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক), নিবন্ধিত অফিসের নাম ও ঠিকানা, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কার্যাবলীর তালিকা, শেষ দুই বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং কোনো দেশি বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনাপত্তিপত্র দাখিল করতে হবে।
জাহাজ ভাঙা শিল্পে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার ব্যাপারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন নৌ ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুরস্থ কবির স্টিল (কেএসআরএম) শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের জাহাজ পুনর্প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, হংকং কনভেনশন অনুসরণ করায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ১৬টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গ্রিন শিপইয়ার্ড সনদ পেয়েছে। পাইপলাইনে আছে আরও কয়েকটি।
যারা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গ্রিন সনদ নিতে পারেনি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে বলেও এ সময় হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ ইয়ার্ড এখনও নিয়মনীতি অনুসরণ করতে পারেনি। বিষয়টি সহজ করতে সরকার সহযোগিতা করবে বলেও ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন উপদেষ্টা।
পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জাহাজ ভাঙা খাতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখায় সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার নির্দেশও দেন তিনি।
ড. সাখাওয়াত আরও জানান, শিপিং খাতের সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য তিনটি নতুন জাহাজ সংগ্রহ করবে সরকার, যা রাজস্ব বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।
পরে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিও পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাজমুল ইসলাম, কেএসআরএমের ডিএমডি মো. করিম উদ্দিন, সারোয়ার জাহান, ডিরেক্টর আব্দুল করিম, সিইও মো. মেহেরুল করিমসহ নৌবাহিনী অফিসাররা।
ইউসুফ হোসেন অনিক,ভোলা: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত অফিস সহকারী মাসুমা বেগমকে (৩৮) ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের কুড়ালিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে জানাযা নামাজ শেষে রুন্দি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহত মাসুমা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের সেলিম রুন্দির স্ত্রী। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দিন তিনি বাচ্চাদের উদ্ধার করতে যেয়ে আগুনে দগ্ধ হন।
এরআগে, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় বার্ন ও সার্জারী ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি। গতকাল মধ্যরাতে মাসুমা বেগমের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি কুড়ালিয়া গ্রামে আসে। মরদেহ বহনকারী গাড়িটি গ্রামে আসলে স্বজনদের আর্তনাদে পুরো এলাকার আকাশ-বাতাস ভাড়ী হয়ে ওঠে। মাসুমার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।
মাসুমার স্বামী সেলিম সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সেলিম জানান, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত ছিলেন। আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জানতে পারি আগুন দগ্ধ হয়ে তার শরীরে ৯০ শতাংশ পুরে গিয়েছে। এরপর টানা ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল দুটি সন্তান ও আমাদের রেখে চলে গেছেন। এখন সবই স্মৃতি।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন স্কুলটি ছুটি হওয়ার পর মাসুমা বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিলেন। এমন সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইচ্ছে করলে সে বাহিরে এসে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু আমাদেরও বাচ্চা আছে সেই চিন্তা থেকে অন্য বাচ্চাদের বাঁচাতে গিয়ে মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন।
এদিন সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামান সহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সকল ধর্মপ্রান মুসল্লিরা মাসুমার জানাযা নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
মাসুমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিম। এসময় তিনি মাসুমার পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশ তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় শ্রমিকরা।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কারখানার কয়েক শ’ শ্রমিক।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিক্ষোভ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া অব্যাহত ছিল। এ ঘটনায় মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষাভরত শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা ও শিল্প পুলিশের বহু সদস্য এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। তাদের সরাতে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।’